রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০১৪, ২২ পৌষ ১৪২০
খালেদা জিয়ার ঔদ্ধত্য ক্ষমার অযোগ্য
শাহজাহান মিয়া
'এ যে মহিলা, এখন মুখটা বন্ধ কেন? দেশ কোথায়, গোপালী? এরা সবাই গোপালী। গোপালগঞ্জ বলে কিছু থাকবে না। গোপালগঞ্জ জেলার নামই বদলিয়ে দেব, বুঝছেন?' গত ২৯ ডিসেম্বর তাঁর বাসার সামনে"রুদ্রমূর্তি ধারণ করে প্রচ- উন্মত্ততায় এক নিশ্বাসে পুলিশের উদ্দেশে এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাগুলো বলেছেন বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জের প্রতি এমন চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ উক্তি দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে শুরু হয়ে যায় নজিরবিহীন তোলপাড়। দেশের সর্বস্তরের মানুষ ক্ষোভে-বিক্ষোভে ফেটে পড়ে প্রচ- আক্রোশে। বাংলাদেশের স্থপতি স্বপ্নদ্রষ্টার জন্মস্থানের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন ও কটূক্তির প্রতিবাদে সৃষ্ট নিন্দার ঝড় দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে আছড়ে পড়ছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান সম্পর্কে খালেদা জিয়ার এই ঘৃণ্য মন্তব্যের মাধ্যমে শুধু জাতির জনকের প্রতিই তাঁর অবমাননা প্রকাশ পায়নি, স্বাধীনতার এই মহানায়কের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার ফসল দেশটিকেও সমভাবে অবমাননা করা হয়েছে। বিশাল হৃদয়ের অধিকারী কালজয়ী এই মহান পুরুষটির জন্যই আজ বাঙালী জাতি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের অধিকারী। লোক দেখানো ভাবে তাই জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে পাকিস্তানের প্রেমে বিভোর খালেদা জিয়া অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তিকামী বাঙালীর প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জনগণের প্রতিও চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছেন।
বাংলাদেশ সরকারের তিনবার (একবার অবশ্যই ভুয়া) বেগম খালেদা জিয়া নিশ্চয়ই
২৯ ডিসেম্বর তার কুশীলবদের নিয়ে প্রণীত নীল-নকশা অনুযায়ী সারাদেশ থেকে রাজধানী ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে আহূত সমাবেশে তার নিজ দল ও তার জোটের বড় শরিক জামায়াতে ইসলামের লোকজন জড়ো করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়ে ম্যাডামের মাথা ঠিক ছিল না বলেই সবাই মনে করছেন। তাই তিনি তার বাসার সামনে দায়িত্বরত মহিলা পুলিশ সদস্যদের ওপরও চড়াও হয়ে তাদের একজনকে বেয়াদব বলে গালি দিয়ে তার বহির্প্রকাশ ঘটিয়েছেন। অবশ্য বেয়াদব শব্দটি উচ্চারণ তাঁর জন্য কোন নতুন বিষয় নয়। তিনি ১৯৯১-১৯৯৬ সালের পার্লামেন্টের অধিবেশনে সংসদ নেত্রী হয়েও বিরোধীদলের এক বিজ্ঞ সদস্যকে বেয়াদব বলেছিলেন। একজন সদস্যকে 'চোরের মতো পালিয়ে যাচ্ছে' বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
মহিলা পুলিশদের ওপর তার খবরদারি, গালাগালি ও গলাবাজি ওখানেই শেষ হয়নি। তাদের 'চুপ বেয়াদব' বলেও তার রাগ কমেনি। ধমকের সুরে এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, 'আপনাদের অফিসার কোথায় গেল? আসলো না? তাঁকে বলবেন আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাই। বুঝেছেন? কি, বোঝেননি কথাটা? এটা তো বাংলা ভাষা। নাকি অন্য কোন ভাষায় কথা বলতে হবে আপনাদের? বুঝেছেন? দেশকে ভালবাসলে সার্বভৌমত্ব রক্ষার এ কর্মসূচীতে বাধা দিতেন না। গোলামী বাদ দেন। গোলামী ও দালালী করবেন না।' ন্যূনতম শালীনতাবোধ ভুলে গিয়ে একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে বিরোধীদলীয় নেত্রী মহিলা পুলিশদের সঙ্গে যে ন্যক্কারজনক আচরণ করে তিনি তার ঘৃণ্য মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার নিন্দা জানানোর ভাষা কারও নেই। সবাই হতভম্ব। বিস্ময়ে হতবাক। একি করলেন খালেদা জিয়া!
এই বিষয়টি কারও কাছেই পরিষ্কার হচ্ছে না যে আর কোন ভাষায় তিনি কথা বলতে পারতেন। বিরোধীদলীয় নেত্রীর যে শিক্ষাগত যোগ্যতা তাতে তাঁর পক্ষে আর কোন কোন ভাষায় কথা বলা সম্ভব ছিল সে কথা ভেবেই সবাই আকুল। ইংরেজী তো দূরের কথা, বাংলা ভাষায়ই তো তার পক্ষে সঠিকভাবে কথা বলা দুরূহ ব্যাপার। তবে তিনি উর্দুতে অবশ্যই বলতে পারতেন। কারণ এ ভাষাটিতে তাঁর পারদর্শী হওয়ার কথা। শুনেছি পাকিস্তান আমলে এবং পরেও এ ভাষাটিতেই তার পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে পছন্দ করতেন। স্বাচ্ছন্দ্যবোধও করতেন। ভারতে জন্ম বলে তিনি হয়ত হিন্দী ভাষাটিও একেবারে ভুলে যাননি। আরেকটি ছিল লাঠির ভাষা বা প্রচ- উত্তেজিত হয়ে হুমকি-ধমকি প্রদানের ভাষা। লাঠির মতো তর্জনী তুলে যেভাবে পুলিশ সদস্যদের তিনি শাসিয়েছেন, তাতে সে কাজটিও করা হয়ে গেছে। এর আগে সংলাপে বসার জন্য গত ২৬ অক্টোবর তারিখ প্রধানমন্ত্রী টেলিফোন করলে ৩৭ মিনিট ধরে দু'জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত কথোপকথনের সময় বেগম জিয়ার যুদ্ধংদেহী ও আগ্রাসী মনোভাবের একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ দেশবাসী পেয়েছিল। দীর্ঘ ৩৭ মিনিটের ৭ মিনিটও প্রধানমন্ত্রী কথা বলতে পারেননি। দীর্ঘ ৩০টি মিনিটই বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে তার আগ্রাসী কথার বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। বাঙালী জাতি সেদিন খালেদা জিয়ার আক্রমণাত্মক আচরণের প্রকৃষ্ট প্রমাণ পেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরকম অনাহুত প্রচন্ড আগ্রাসন সহ্য করে কি করে যে মাথা ঠা-া রেখে ধৈর্য্য ধারণ করতে পেরেছিলেন সেটা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।
বিষয়টি বুঝতে আমি একেবারেই অক্ষম ও অপারগ হয়ে যাই যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি খালেদা জিয়ার পাহাড়সম শ্রদ্ধাবোধ থাকার কথা। কিন্তু সেই খালেদা কেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি অকারণে বার বার অশ্রদ্ধা প্রকাশ করে চলেছেন। কারণ, কথাটি দেশের মানুষের কাছে ধ্রুবতারার মতো সত্য যে যখন সঙ্গত কারণে জিয়াউর রহমান তাঁর স্ত্রী বেগম জিয়াকে বাংলাদেশ হওয়ার পরে নিজ ঘরে যায়গা দিতেন না বলে সেদিনের পুতুল (আজকের বিরোধীদলীয় নেত্রী) বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর ধানম-ির বাসায় গিয়ে বসে থাকতেন সেই বাঙালী জাতির গৌরব মহান নেতার সঙ্গে দেখা করার জন্য। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের কাছে সব শুনে সেদিনই বঙ্গবন্ধু জিয়াউর রহমানকে ডেকে আজকের খালেদাকে তাঁর স্বামীর হাতে উঠিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, 'এই জিয়া কি শুনছি, যা, আর যেন কিছু না শুনি। 'ও' আমার মেয়ের মতো।' বঙ্গবন্ধু সেনাবাহিনীর তৎকালীন প্রধান জেনারেল এম এ জি ওসমানীকেও ডেকেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষায় কর্ণেল ওসমানীর (বঙ্গবন্ধু তাঁকে এভাবেই ডাকতেন) সঙ্গে আলাপ করে জিয়াউর রহমানকে খুশি রাখার জন্য সেনাবাহিনীতে প্রথমবারের মতো ডেপুটি চীফ অব স্টাফ পদটি সৃষ্টি করা হয়েছিল। খালেদা জিয়া এখন বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু দিবসে ঘটা করে জন্মদিনের কেকও কাটেন। যদিও এদেশের মানুষ তাঁর একাধিক জন্মদিনের কথা জেনে ফেলেছেন। কিন্তু তাঁর জন্মদিন কোন হিসেবেই ১৫ আগস্ট নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পিতৃস্নেহের পরম পরশে সিক্ত করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়াকে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকার পরিবর্তে সেই খালেদা জিয়া কৃতঘœতার ঘৃণ্য স্বাক্ষর রেখে চলেছেন বিশাল হৃদয়ের অধিকারী এই মানুষটির প্রতি।
তাই দেশব্যাপী আজ ধিক্কার উঠেছে, তার এই হিংস্র ও অশালীন বক্তব্যের বিরুদ্ধে। চারদিকে আজ সমস্বরে কথাটি বলা হচ্ছে, 'গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু না থাকলে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে খালেদার সংসার করাই হতোনা। আজ সেই মহান বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থানের নামকেই পরিবর্তন করতে চান খালেদা জিয়া।' বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বলেই বাংলাদেশ নামক দেশটির জন্ম হয়েছিল। বাংলাদেশ হয়েছিল বলেই একজন সাধারণ গৃহিণী থেকে খালেদা জিয়া স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছেন। কিন্তু তারপরও তিনি তৃপ্ত নন। কারণ, তিনি তার প্রিয় পাকিস্তানের কথা এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারেন না। তার সমস্ত সত্তা ও অস্তিত্ব জুড়েই রয়েছে পাকিস্তান আর পাকিস্তান।
বর্তমান সরকার ও সরকার প্রধানের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে বেগম জিয়া ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতর পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করেন। সেই ঘটনায় শেখ হাসিনা জড়িত ছিলেন বলে তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, 'আজ আমার বাড়ির সামনে এত ফোর্স। এতগুলো অফিসার যে মারল, ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করল, সেদিন হাসিনার এই ফোর্স কোথায় ছিল? কেন সে ফোর্স পাঠায় নাই? আসলে সে নিজেই জড়িত ছিল এই হত্যাকা-ের সঙ্গে, সেজন্যই।'
আচমকা সংঘটিত এই রক্তক্ষয়ী, জঘন্য ঘটনার দ্রুত অবসানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধৈর্য, রাজনৈতিক পরিপক্কতা ও দক্ষতার অনন্য স্বাক্ষর রেখেছিলেন। বিদ্রোহের অবসান ঘটাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের সুচিন্তিত ও প্রত্যয়ী পদক্ষেপ, কৌশল ও বিচক্ষণতা দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছিল। অথচ প্রায় দু'দিন নিশ্চুপ থেকে হঠাৎ তার স্বভাব-সুলভ কায়দায় বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া পিলখানায় সংঘটিত ঘটনার জন্য সরকারের ওপর চড়াও হন। তিনি বিডিআর বিদ্রোহে ষড়যন্ত্রের কথা বলে সেই ভারতীয় জুজুর জিকির তুলেছিলেন।
বেগম জিয়ার কথামতো সেনাবাহিনী পাঠিয়ে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের প্রচেষ্টা হতো ভয়াবহ। উভয় পক্ষেই ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটত। সেনাবাহিনী অবশ্যই বিডিআর বিদ্রোহীদের পরাভূত করে বিডিআর সদর দফতর দখলে নিতে পারত। কিন্তু ওখানে রক্তগঙ্গা বয়ে যেত। এমনকি আশপাশে বসবাসকারী হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ছাড়াও তাদের সহায়-সম্পত্তি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতো। সেই বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক ও বাস্তব। বিডিআর জওয়ানরা এমন জঘন্য হত্যাকা-ে মেতে উঠেছিল কেন? ঘটনা শুরু হওয়ার মাত্র ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে ঠা-া মাথায় নৃশংস নিধনযজ্ঞের মিশন শেষ করে ফেলা হয়েছিল। অর্থাৎ বিডিআরের দাবি-দাওয়াকে পুঁজি করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল স্বার্থ হাসিলের নিদারুণ নিষ্ঠুর খেলায় মেতে উঠেছিল। ওটা ছিল একটি গভীর ষড়যন্ত্র। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে মহাজোটের মহাবিজয় এবং বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামায়াত জোটের গ্লানিকর পরাজয়ের পর পরই ঐ মহাষড়যন্ত্রটি ফাঁদা হয়েছিল বলে অনেকের ধারণা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের দোসররা কখনই হাত-পা গুটিয়ে বসে ছিল না। তারা মোক্ষম সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিরাট বিজয়ের পরই তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়। বিজয়ী শেখ হাসিনার সরকার জনগণের দাবির মুখে তাদের নির্বাচনী ওয়াদা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করার আগেই এই সরকারকে তছনছ করে দেয়ার পরিকল্পনা থেকেই এই ষড়যন্ত্রের শুরু। তাদের পরিকল্পনা ছিল সুদূরপ্রসারী। দেশের দু'টি সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বিবাদ-সংঘর্ষ লাগিয়ে দেশের সামরিক শক্তি খর্ব করাও ছিল এ ঘৃণ্য গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য। কিন্তু যেভাবেই হোক, তাদের সে আশা পূরণ হয়নি।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে বেগম জিয়া বলেন, '১৫৪টা সিট আনকনটেস্টেড হয়ে যায়? আর বাকি রয়েছে কি? বাকিগুলোও করে ফেলবে।' আনকনটেস্টেড হয়ে যাওয়া এদেশে নজিরবিহীন কিছু নয়। আপনার সরকারের সময় ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও সম্ভবত ৪৮ জন সংসদ সদস্য বিনাপ্রতিদ্বন্দি¦তায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। কোন কোন দল যদি জোট বেঁধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাহলে সাংবিধানিক ধারা সমুন্নত রাখার জন্য অন্যান্য অনেক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেই পারে।
একটি কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, বেগম জিয়ার জাতীয়তাবাদী দলের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বা না করা বড় প্রশ্ন নয়। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশে সৃষ্টি করে তাদের বিশেষ করে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রেসক্রিপশন মোতাবেক তার নিজ দলের অংশগ্রহণ না করাই তার কাছে বড় প্রশ্ন। যাতে তার এবং পাকিস্তানের বড় দোসর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করা যায়। আমাদের দেশের কিছু মুখচেনা বুদ্ধিজীবীর কাছে বিষয়টি যত তাড়াতাড়ি পরিষ্কার হবে দেশের মঙ্গলও তত তাড়াতাড়ি নিশ্চিত হবে। কারণ, কেউ সংঘাত চায় না। সবাই চায় শান্তি। শান্তিই সবার কাম্য।
লেখক : সাংবাদিক।
বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান সম্পর্কে খালেদা জিয়ার এই ঘৃণ্য মন্তব্যের মাধ্যমে শুধু জাতির জনকের প্রতিই তাঁর অবমাননা প্রকাশ পায়নি, স্বাধীনতার এই মহানায়কের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার ফসল দেশটিকেও সমভাবে অবমাননা করা হয়েছে। বিশাল হৃদয়ের অধিকারী কালজয়ী এই মহান পুরুষটির জন্যই আজ বাঙালী জাতি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের অধিকারী। লোক দেখানো ভাবে তাই জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে পাকিস্তানের প্রেমে বিভোর খালেদা জিয়া অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তিকামী বাঙালীর প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জনগণের প্রতিও চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছেন।
বাংলাদেশ সরকারের তিনবার (একবার অবশ্যই ভুয়া) বেগম খালেদা জিয়া নিশ্চয়ই
২৯ ডিসেম্বর তার কুশীলবদের নিয়ে প্রণীত নীল-নকশা অনুযায়ী সারাদেশ থেকে রাজধানী ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে আহূত সমাবেশে তার নিজ দল ও তার জোটের বড় শরিক জামায়াতে ইসলামের লোকজন জড়ো করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়ে ম্যাডামের মাথা ঠিক ছিল না বলেই সবাই মনে করছেন। তাই তিনি তার বাসার সামনে দায়িত্বরত মহিলা পুলিশ সদস্যদের ওপরও চড়াও হয়ে তাদের একজনকে বেয়াদব বলে গালি দিয়ে তার বহির্প্রকাশ ঘটিয়েছেন। অবশ্য বেয়াদব শব্দটি উচ্চারণ তাঁর জন্য কোন নতুন বিষয় নয়। তিনি ১৯৯১-১৯৯৬ সালের পার্লামেন্টের অধিবেশনে সংসদ নেত্রী হয়েও বিরোধীদলের এক বিজ্ঞ সদস্যকে বেয়াদব বলেছিলেন। একজন সদস্যকে 'চোরের মতো পালিয়ে যাচ্ছে' বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
মহিলা পুলিশদের ওপর তার খবরদারি, গালাগালি ও গলাবাজি ওখানেই শেষ হয়নি। তাদের 'চুপ বেয়াদব' বলেও তার রাগ কমেনি। ধমকের সুরে এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, 'আপনাদের অফিসার কোথায় গেল? আসলো না? তাঁকে বলবেন আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাই। বুঝেছেন? কি, বোঝেননি কথাটা? এটা তো বাংলা ভাষা। নাকি অন্য কোন ভাষায় কথা বলতে হবে আপনাদের? বুঝেছেন? দেশকে ভালবাসলে সার্বভৌমত্ব রক্ষার এ কর্মসূচীতে বাধা দিতেন না। গোলামী বাদ দেন। গোলামী ও দালালী করবেন না।' ন্যূনতম শালীনতাবোধ ভুলে গিয়ে একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে বিরোধীদলীয় নেত্রী মহিলা পুলিশদের সঙ্গে যে ন্যক্কারজনক আচরণ করে তিনি তার ঘৃণ্য মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার নিন্দা জানানোর ভাষা কারও নেই। সবাই হতভম্ব। বিস্ময়ে হতবাক। একি করলেন খালেদা জিয়া!
এই বিষয়টি কারও কাছেই পরিষ্কার হচ্ছে না যে আর কোন ভাষায় তিনি কথা বলতে পারতেন। বিরোধীদলীয় নেত্রীর যে শিক্ষাগত যোগ্যতা তাতে তাঁর পক্ষে আর কোন কোন ভাষায় কথা বলা সম্ভব ছিল সে কথা ভেবেই সবাই আকুল। ইংরেজী তো দূরের কথা, বাংলা ভাষায়ই তো তার পক্ষে সঠিকভাবে কথা বলা দুরূহ ব্যাপার। তবে তিনি উর্দুতে অবশ্যই বলতে পারতেন। কারণ এ ভাষাটিতে তাঁর পারদর্শী হওয়ার কথা। শুনেছি পাকিস্তান আমলে এবং পরেও এ ভাষাটিতেই তার পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে পছন্দ করতেন। স্বাচ্ছন্দ্যবোধও করতেন। ভারতে জন্ম বলে তিনি হয়ত হিন্দী ভাষাটিও একেবারে ভুলে যাননি। আরেকটি ছিল লাঠির ভাষা বা প্রচ- উত্তেজিত হয়ে হুমকি-ধমকি প্রদানের ভাষা। লাঠির মতো তর্জনী তুলে যেভাবে পুলিশ সদস্যদের তিনি শাসিয়েছেন, তাতে সে কাজটিও করা হয়ে গেছে। এর আগে সংলাপে বসার জন্য গত ২৬ অক্টোবর তারিখ প্রধানমন্ত্রী টেলিফোন করলে ৩৭ মিনিট ধরে দু'জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত কথোপকথনের সময় বেগম জিয়ার যুদ্ধংদেহী ও আগ্রাসী মনোভাবের একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ দেশবাসী পেয়েছিল। দীর্ঘ ৩৭ মিনিটের ৭ মিনিটও প্রধানমন্ত্রী কথা বলতে পারেননি। দীর্ঘ ৩০টি মিনিটই বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে তার আগ্রাসী কথার বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। বাঙালী জাতি সেদিন খালেদা জিয়ার আক্রমণাত্মক আচরণের প্রকৃষ্ট প্রমাণ পেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরকম অনাহুত প্রচন্ড আগ্রাসন সহ্য করে কি করে যে মাথা ঠা-া রেখে ধৈর্য্য ধারণ করতে পেরেছিলেন সেটা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।
বিষয়টি বুঝতে আমি একেবারেই অক্ষম ও অপারগ হয়ে যাই যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি খালেদা জিয়ার পাহাড়সম শ্রদ্ধাবোধ থাকার কথা। কিন্তু সেই খালেদা কেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি অকারণে বার বার অশ্রদ্ধা প্রকাশ করে চলেছেন। কারণ, কথাটি দেশের মানুষের কাছে ধ্রুবতারার মতো সত্য যে যখন সঙ্গত কারণে জিয়াউর রহমান তাঁর স্ত্রী বেগম জিয়াকে বাংলাদেশ হওয়ার পরে নিজ ঘরে যায়গা দিতেন না বলে সেদিনের পুতুল (আজকের বিরোধীদলীয় নেত্রী) বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর ধানম-ির বাসায় গিয়ে বসে থাকতেন সেই বাঙালী জাতির গৌরব মহান নেতার সঙ্গে দেখা করার জন্য। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের কাছে সব শুনে সেদিনই বঙ্গবন্ধু জিয়াউর রহমানকে ডেকে আজকের খালেদাকে তাঁর স্বামীর হাতে উঠিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, 'এই জিয়া কি শুনছি, যা, আর যেন কিছু না শুনি। 'ও' আমার মেয়ের মতো।' বঙ্গবন্ধু সেনাবাহিনীর তৎকালীন প্রধান জেনারেল এম এ জি ওসমানীকেও ডেকেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষায় কর্ণেল ওসমানীর (বঙ্গবন্ধু তাঁকে এভাবেই ডাকতেন) সঙ্গে আলাপ করে জিয়াউর রহমানকে খুশি রাখার জন্য সেনাবাহিনীতে প্রথমবারের মতো ডেপুটি চীফ অব স্টাফ পদটি সৃষ্টি করা হয়েছিল। খালেদা জিয়া এখন বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু দিবসে ঘটা করে জন্মদিনের কেকও কাটেন। যদিও এদেশের মানুষ তাঁর একাধিক জন্মদিনের কথা জেনে ফেলেছেন। কিন্তু তাঁর জন্মদিন কোন হিসেবেই ১৫ আগস্ট নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পিতৃস্নেহের পরম পরশে সিক্ত করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়াকে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকার পরিবর্তে সেই খালেদা জিয়া কৃতঘœতার ঘৃণ্য স্বাক্ষর রেখে চলেছেন বিশাল হৃদয়ের অধিকারী এই মানুষটির প্রতি।
তাই দেশব্যাপী আজ ধিক্কার উঠেছে, তার এই হিংস্র ও অশালীন বক্তব্যের বিরুদ্ধে। চারদিকে আজ সমস্বরে কথাটি বলা হচ্ছে, 'গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু না থাকলে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে খালেদার সংসার করাই হতোনা। আজ সেই মহান বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থানের নামকেই পরিবর্তন করতে চান খালেদা জিয়া।' বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বলেই বাংলাদেশ নামক দেশটির জন্ম হয়েছিল। বাংলাদেশ হয়েছিল বলেই একজন সাধারণ গৃহিণী থেকে খালেদা জিয়া স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছেন। কিন্তু তারপরও তিনি তৃপ্ত নন। কারণ, তিনি তার প্রিয় পাকিস্তানের কথা এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারেন না। তার সমস্ত সত্তা ও অস্তিত্ব জুড়েই রয়েছে পাকিস্তান আর পাকিস্তান।
বর্তমান সরকার ও সরকার প্রধানের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে বেগম জিয়া ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতর পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করেন। সেই ঘটনায় শেখ হাসিনা জড়িত ছিলেন বলে তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, 'আজ আমার বাড়ির সামনে এত ফোর্স। এতগুলো অফিসার যে মারল, ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করল, সেদিন হাসিনার এই ফোর্স কোথায় ছিল? কেন সে ফোর্স পাঠায় নাই? আসলে সে নিজেই জড়িত ছিল এই হত্যাকা-ের সঙ্গে, সেজন্যই।'
আচমকা সংঘটিত এই রক্তক্ষয়ী, জঘন্য ঘটনার দ্রুত অবসানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধৈর্য, রাজনৈতিক পরিপক্কতা ও দক্ষতার অনন্য স্বাক্ষর রেখেছিলেন। বিদ্রোহের অবসান ঘটাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের সুচিন্তিত ও প্রত্যয়ী পদক্ষেপ, কৌশল ও বিচক্ষণতা দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছিল। অথচ প্রায় দু'দিন নিশ্চুপ থেকে হঠাৎ তার স্বভাব-সুলভ কায়দায় বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া পিলখানায় সংঘটিত ঘটনার জন্য সরকারের ওপর চড়াও হন। তিনি বিডিআর বিদ্রোহে ষড়যন্ত্রের কথা বলে সেই ভারতীয় জুজুর জিকির তুলেছিলেন।
বেগম জিয়ার কথামতো সেনাবাহিনী পাঠিয়ে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের প্রচেষ্টা হতো ভয়াবহ। উভয় পক্ষেই ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটত। সেনাবাহিনী অবশ্যই বিডিআর বিদ্রোহীদের পরাভূত করে বিডিআর সদর দফতর দখলে নিতে পারত। কিন্তু ওখানে রক্তগঙ্গা বয়ে যেত। এমনকি আশপাশে বসবাসকারী হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ছাড়াও তাদের সহায়-সম্পত্তি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতো। সেই বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক ও বাস্তব। বিডিআর জওয়ানরা এমন জঘন্য হত্যাকা-ে মেতে উঠেছিল কেন? ঘটনা শুরু হওয়ার মাত্র ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে ঠা-া মাথায় নৃশংস নিধনযজ্ঞের মিশন শেষ করে ফেলা হয়েছিল। অর্থাৎ বিডিআরের দাবি-দাওয়াকে পুঁজি করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল স্বার্থ হাসিলের নিদারুণ নিষ্ঠুর খেলায় মেতে উঠেছিল। ওটা ছিল একটি গভীর ষড়যন্ত্র। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে মহাজোটের মহাবিজয় এবং বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামায়াত জোটের গ্লানিকর পরাজয়ের পর পরই ঐ মহাষড়যন্ত্রটি ফাঁদা হয়েছিল বলে অনেকের ধারণা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের দোসররা কখনই হাত-পা গুটিয়ে বসে ছিল না। তারা মোক্ষম সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিরাট বিজয়ের পরই তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়। বিজয়ী শেখ হাসিনার সরকার জনগণের দাবির মুখে তাদের নির্বাচনী ওয়াদা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করার আগেই এই সরকারকে তছনছ করে দেয়ার পরিকল্পনা থেকেই এই ষড়যন্ত্রের শুরু। তাদের পরিকল্পনা ছিল সুদূরপ্রসারী। দেশের দু'টি সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বিবাদ-সংঘর্ষ লাগিয়ে দেশের সামরিক শক্তি খর্ব করাও ছিল এ ঘৃণ্য গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য। কিন্তু যেভাবেই হোক, তাদের সে আশা পূরণ হয়নি।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে বেগম জিয়া বলেন, '১৫৪টা সিট আনকনটেস্টেড হয়ে যায়? আর বাকি রয়েছে কি? বাকিগুলোও করে ফেলবে।' আনকনটেস্টেড হয়ে যাওয়া এদেশে নজিরবিহীন কিছু নয়। আপনার সরকারের সময় ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও সম্ভবত ৪৮ জন সংসদ সদস্য বিনাপ্রতিদ্বন্দি¦তায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। কোন কোন দল যদি জোট বেঁধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাহলে সাংবিধানিক ধারা সমুন্নত রাখার জন্য অন্যান্য অনেক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেই পারে।
একটি কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, বেগম জিয়ার জাতীয়তাবাদী দলের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বা না করা বড় প্রশ্ন নয়। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশে সৃষ্টি করে তাদের বিশেষ করে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রেসক্রিপশন মোতাবেক তার নিজ দলের অংশগ্রহণ না করাই তার কাছে বড় প্রশ্ন। যাতে তার এবং পাকিস্তানের বড় দোসর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করা যায়। আমাদের দেশের কিছু মুখচেনা বুদ্ধিজীবীর কাছে বিষয়টি যত তাড়াতাড়ি পরিষ্কার হবে দেশের মঙ্গলও তত তাড়াতাড়ি নিশ্চিত হবে। কারণ, কেউ সংঘাত চায় না। সবাই চায় শান্তি। শান্তিই সবার কাম্য।
লেখক : সাংবাদিক।
প্রকাশ : রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০১৪, ২২ পৌষ ১৪২০
__._,_.___