Banner Advertiser

Thursday, February 13, 2014

[mukto-mona] Fwd: Bangladesh under the grips of power hunger [1 Attachment]

[Attachment(s) from Zahid Hasan included below]



Dear Editor,

Please be kind enough to publish my attached writing to your newspaper and oblige thereby.

Regards

Zahid Hasan

Riyadh, Saudi Arabia

দেশ এখন স্বৈরাচার ও বাটপারের দখলে

৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের আগে তখন সংবিধানের দোহাই দিয়ে দশম সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংলাপের সময় নাই বলে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের লোকজন জোরালোভাবে যুক্তি দেখিয়েছিল। বলেছিল, এটা এখন একটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন, "সংবিধান অনুযায়ী" ৫ই জানুয়ারীই নির্বাচন করতে হবে, এখন আর ১০ম নির্বাচন নিয়ে সংলাপের সুযোগ নাই, নির্বাচনের পর ১১তম নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আসলে এই প্রস্তাব দিয়ে বা যুক্তি দেখিয়ে শেখ হাসিনা সরকার তখন বিরোধী দলের আন্দোলন থামিয়ে এবং বিদেশী চাপ থেকে মুক্ত হয়ে কোনরকমে ৫ই জানুয়ারী নির্বাচনটা করার ফন্দিই করেছিল। তার সত্যতা এখন স্পষ্ট। শেখ হাসিনা ও তার দলের লোকেরা ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের পর বিরোধী দলের সাথে নতুন নির্বাচনের জন্য আলোচনার উদ্যোগ না নিয়ে বরং নির্বাচনের আগের সুর ধরেছে, তারা সেই তাদের স্বভাবসূলভ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিরোধী দলকে আগের মত টিটকারী করে বলছে বি,এন,পি'র আন্দোলনের ফানুস ফুটা হয়ে গেছে, বি,এন,পি'র আন্দোলনের মুরদ দেশবাসী দেখেছে, ইত্যাদি, ইত্যাদি। তারা ও তাদের দোষররা বলছে বি,এন,পি'র আন্দোলনের সাথে সাধারন মানুষের সম্পৃক্ততা নাই বা ছিলনা বলে তাদের আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। ৫ই জানুয়ারীর পর সরকার গঠন করে হাসিনা সরকার এখন আর একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সহসা বিরোধী দলের সাথে আলোচনার আগ্রহ দেখাচ্ছেনা, এমনকি মন্ত্রীদের ( বিশেষ করে যারা বিগত সরকারে মন্ত্রী হয়ে ৫ বছর লুট-পাট করার সুযোগ পায়নি )  প্রায় সবাই বলাবলি করছে তারা ৫ বছরের জন্যই নির্বাচিত হয়েছে, সুতরাং ৫ বছরের আগে আর কোন নির্বাচন নয় এবং এ ব্যাপারে বিরোধী দলের সাথে কোন আলোচনাও নয়। আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলামতে ২ দিন আগে শেখ হাসিনার পাশে বসেই বেশ স্পষ্ট ও জোরালোভাবেই বলে দিল নির্বাচন হবে ২০১৯ সালের ফেব্র"য়ারী মাসে এবং সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনেই, কোন চাপের কাছে মাথা নত করে সরকার মধ্যবর্তি নির্বাচন দিবেনা এবং বিরোধী দলের সাথে এ নিয়ে কোন আলোচনাতেও বসবেনা। শেখ হাসিনার উপস্থিতিতেই যখন এমন কথা উচ্চারিত হলো তবে এটাই যে শেখ হাসিনারও কথা তাও স্পষ্ট হয়ে গেল। 
হাসিনা সরকারের তরফ থেকে ৫ই জানুয়ারীর আগে যে অযুহাত দেখানো হয়েছিল সংবিধানের বাধ্যবাধকতার জন্য তাদেরকে ৫ই জানুয়ারী নির্বাচন করতেই হবে অথচ নবম সংসদের মেয়াদ ছিল ২৪ জানুয়ারী পর্যন্ত, হাতে তখনও আরো প্রায় ২০/২৫ দিন সময় থাকার পরেও বিরোধী জোটের সাথে আলোচনার কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাছাড়া শেখ হাসিনা কর্তৃক সংশোধিত বর্তমান সংবিধানের অন্য এক ধারাতে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে ২৪ জানুয়ারীর পরের ৯০ দিনের মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ ছিল, যেহেতু সংবিধানে এমন ব্যবস্থার কথা উল্লেখ ছিল সেহেতু সংসদ ভেঙ্গে দিলে পরবর্তি সময়ে কে বা কোন্ সরকার ৩ মাসের জন্য দেশ পরিচালনা করবে তারও নিশ্চয়ই সমাধান ছিল, না থাকলেও তা আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করা যেত। দেশের বহু বিশিষ্ট জন ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সবার কাছে গ্রহনযোগ্য এবং সব দলেরর অংশগ্রহনের ভিত্তিতে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে ২৪ জানুয়ারীর পরের ৯০ দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য শেখ হাসিনা সরকারের কাছে বার বার অনুরোধ ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই যে মাথায় কাজ করছে যেভাবেই হউক প্রধানমন্ত্রিত্বটা আমার চাই এবং তা সম্ভব হলে ২০২১ ( স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তি পালনের নেশায় ) সাল পর্যন্ত তাই যেভাবেই হউক, যত শক্তি প্রয়োগ করেই হউক, একতরফা নির্বাচনই হউক ৫ই জানুয়ারীই নির্বাচন করতে হবে এটাই ছিল শেখ হাসিনার শেষ কথা ও ইচ্ছা। দেশী বিদেশী সকলের বিরোধীতা ও সমালোচনাকে উপেক্ষা করে ( কেবল ভারতের সমর্থন পেয়ে )  শেখ হাসিনা গায়ের জোরে ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশবাসীকে বুঝিয়ে দিল "জোর যার মুল্লুক তার"। এই হলো শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের গনতান্ত্রিক ও আদর্শিক রাজনীতির বৈশিষ্ট্য।
আসল কথা হলো ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা ও তার দলের লোকজন যেমন বিরোধী দলের সাথে আলোচনা বা সমঝোতায় যেতে চায়নি এবং পুনরায় ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য বিরোধী দল তথা বি,এন,পিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছে তেমনি এখনও বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে বিরোধী জোটের সাথে আলোচনা না করার কৌশল অবলম্বন করে শীঘ্রই আর একটা গ্রহনযোগ্য নির্বাচন না দিয়ে ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পায়তারা করছে। অর্থাৎ শেখ হাসিনা ও তার দলের বা জোটের লোকজনের বর্তমান অবস্থান ও মানষিকতা এবং আলোচনার ব্যাপারে বিরোধী দলের কাছে অপ্রত্যাশিত ও নতুন নতুন শর্ত দিয়ে একটা ২ নম্বরী নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে, এটা আজ দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট - যা রীতিমত দেশবাসীর সাথে এমনকি তাদের নিজেদের সাথেও বেইমানী, বাটপারী ও প্রতারনার সামিল।  
শেখ হাসিনা ও তার দলের লোকেরা বরবরই বলে আসছিল সংবিধান মোতাবেকই তাদের নির্বাচন করা ছাড়া আর কোর বিকল্প ছিলনা। কিন্তু ৫ই জানুয়ারীর আগে আগের সরকারের মন্ত্রীদের পদত্যাগ প্রক্রিয়া, কথিত সর্বদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা, নবম সংসদের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও এম,পিদের বহাল রেখে দশম সংসদ নির্বাচন করা, নির্বাচনের পর আগের এম,পিদের পদত্যাগ ও নবম সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া, উৎকোচ বা ঘুষ হিসেবে পছন্দমত আসন সংখ্যা ও মন্ত্রীত্ব দেওয়ার গোপন অংগীকার করে একটা অনুগত বিরোধী দল তৈরী করা, কথিত বিরোধী দলকে সরকারেও অন্তর্ভূক্ত রেখে নতুন মন্ত্রীসভা গঠন করার ক্ষেত্রে সংবিধানের কোন্ ধারা বা বিধি অনুসরন করা হয়েছে ?  শেখ হাসিনার ইচ্ছাতেই যা ইচ্ছা তাই করা হয়েছে ও হচ্ছে, অর্থাৎ শেখ হাসিনার ইচ্ছাটাই এখন আওয়ামী লীগের কাছে বাংলাদেশের সংবিধান। মূখে মূখে এরা সবাই পাশ্চাত্যের গনতন্ত্রের ( শুধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে )  উদাহরন দেয়, কিন্তু পৃথিবীর কোথাও কি উদাহরন দেওয়ার মত এমন বিরোধী দলের নজীর আছে ? যদি সব দলের অংশগ্রহনের ভিত্তিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ন নির্বাচনে জয়লাভ করে আসা কোন বিরোধী দলের বেলায় সরকারের তরফ থেকে এমন আত্মীয়তা করা হত তাও মেনে নেয়া যেত। পতিত স্বৈবরাচার ও  ( স্ববিরোধী আচরন ও ভূমিকার দ্বারা প্রমানিত ) আজন্ম মিথ্যাবাদী এরশাদ যখন ঘোষণা দিল সে এই পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেনা তখন এরশাদকে আটকিয়ে রেখে তার স্ত্রীকে ফুসলিয়ে তার দলের কিছু বেইমান ও লোভী চরিত্রের লোকদেরকে ঘুষ হিসেবে মন্ত্রীত্ব দেওয়ার ওয়াদা করে ভোটরবিহীন ও প্রার্থীবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে এম,পি বানিয়ে একটা বিরোধী দল দাড় করিয়ে সংসদ ও সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ প্রমান করল ক্ষমতা ধরে রাখার বা যাওয়ার জন্য তারা কত নীচে নামতে ও কত নির্লজ্জ হতে পারে।  দেশে কোন দূর্যোগপূর্ন পরিবেশও বিরাজমান নাই যে জাতীয় বা সর্বদলীয় সরকার গঠন করতে হবে। বর্তমান সরকারকে তারা যে সর্বদলীয় সরকার  বলছে দেশের প্রায় ৪০% লোকের প্রতিনিধিত্বকারী দলের অংশগ্রহন ছাড়া এটা জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকার হয় কিভাবে ? অথবা এ সরকারের প্রতি কি ৪০% লোকের প্রতিনিধিত্বকারী বিরোধী দলের সমর্থন রয়েছে ?  অতএব বলা যায়, বাংলাদেশ এখন স্বৈরাচার ও বাটপারের দখলে চলে গেছে। 
২ নম্বরী নির্বাচন করে সরকার গঠন করলেও শেখ হাসিনা ও তার দলের লোকেরা মুখে যত কথাই বলুক অন্তর্জ্বালা ও হীনমন্যতায় তারা সারক্ষনই জ্বলছে। তদুপরি ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনে কি শুধু বি,এন,পিই আসে নাই ? দেশে ৪২টা দল নিবন্ধিত থাকা সত্তেও শুধুমাত্র হাসিনার মহাজোট সরকারে থাকা কয়েকটা দল ও হালুয়া-রুটির আশায় এক ব্যক্তির একদল বহুধা-বিভক্ত জাতীয় পার্টির নির্লজ্জ ও বেহায়া ( এরশাদের সাবেক সহচর হিসেবে ) আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং বি,এন,পিকে ভাঙ্গার কুমতলব নিয়ে সেবাদাস নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে রাতারাতি তৈরী করা বি,এন,এফ ছাড়া আর কোন দল হাসিনার প্রহসনের নির্বাচনে অংশ নেয়নি, এমনকি যারা বি,এন,পি জোটে নাই এবং আওয়ামী ঘরনার দল বলে পরিচিত সেই বামপন্থি কয়েকটা দলও এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। যে কারণে ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন হয়েছে ভোটার ও প্রার্থীবিহীন নির্বাচন। এমন নির্বাচনের পর নির্লজ্জের মত সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা গনতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নীতি-আদর্শ সব বিসর্জন দিয়ে কথিত ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগকে একটা স্বৈরাচারী দল হিসেবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে নতুনভাবে পরিচিত করেছে। বিরোধী জোটের দাবীকে উপেক্ষা করে বা উড়িয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের সমস্ত শক্তি ও ক্ষমতাকে ব্যবহার করে এবং দলীয় ক্যাডারদের সশস্ত্র পেশী শক্তিকে মাঠে নামিয়ে সম্পূর্ন গায়ের জোরে বিগত ৫ই জানুয়ারী ভোটারবিহীন এমনকি প্রার্থীবিহীন একটা একতরফা ও প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করে দেশ ও জাতিকে এটাই আবার প্রমান করে বা বুঝিয়ে দিল যে আওয়ামী লীগ একটা ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারী ও অগনতান্ত্রিক দল। শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগে এক সময় অত্যন্ত ঔদ্ধত্য ও অহংকার নিয়ে হুংকার ছাড়ল যে সংবিধান থেকে সে একচুলও সরবেনা, অর্থাৎ সংবিধান অনুযায়ী সে প্রধানমন্ত্রী থেকে তার সরকারের অধীনেই নির্বাচন করবে এবং এর জন্য যা করা দরকার সে তাই করবে, প্রয়োজনে স্বৈরাচারী কায়দায় বিরোধী জোটের আন্দোলন দমাতে যত কঠোর হতে হয় ততই কঠোর হবে। তার ঐ দাম্ভিক্যপূর্ন উক্তির পর বাস্তবেও তাই দেখা গেল।

সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ আছে সংসদ সদস্যরা  নির্বাচিত হবে সুষ্ঠু এবং জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে। দশম সংসদের সদস্যরা কি জনগনের প্রত্যক্ষ ভোট বা সরাসরি অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়েছে ( যে কারণেই হউক ) ? দশম সংসদ নির্বাচন কি সুষ্ঠু হয়েছে ? তাহলে সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন হলো কোথায় ? যে কারণেই হউক ( প্রাকৃতিক দূর্যোগ বা অন্য প্রার্থীর মৃত্যুবরন ছাড়া ) ১৫৪ জন সংসদ সদস্য যদি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত এবং বাকী ১৪৬ আসনের সদস্যরা যদি মাত্র ১০-১৫% ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয় তবে সে নির্বাচন কি গ্রহনযোগ্য ও গনতান্ত্রিক ?  তাহলে যে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, যে নির্বাচনে ভোটাররা সরাসরি ভোট দিয়ে সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত করেনি, যে নির্বাচন গনতান্ত্রিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়নি সে নির্বাচন কিভাবে সংবিধান মোতাবেক হল ? যে নির্বাচন প্রধান বিরোধী দল বর্জন করেছে এবং একতরফা ও প্রহসনের নির্বাচন বলে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে, যে নির্বাচন সব দল বিশেষ করে প্রধান বিরোধী দলের অংশগ্রহন ছাড়া হচ্ছে বলে এর গ্রহনযোগ্যতা ও গনতান্ত্রিক নির্বাচনের বৈশিষ্ট্য না থাকার কারণে যখন পৃথিবীর সকল গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সংস্থা তাদের পর্যবেক্ষক পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সরকার যদি রাষ্ট্রের সমস্ত শক্তি ও দলীয় সশস্ত্র ক্যাডারদের নিয়োজিত করে সম্পূর্ন গায়ের জোরে এমন একটা একতরফা ও প্রহসনের নির্বাচন করে তবে সে নির্বাচন কি সুষ্ঠু ও বৈধ নির্বাচন ? সংবিধানে নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন করতে হবে বলে বা নির্বাচন প্রহনযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে ন্যূনতম ভোটার উপস্থিতির কথা সংবিধানে লেখা নাই বলে কি গায়ের জোরে প্রধান বিরোধী দলের অংশগ্রহন ছাড়া একতরফা এবং দেশের মানুষের ও সারা দুনিয়ার কাছে অগ্রহনযােগ্য ও যেন-তেন একটা লোক-দেখানো নির্বাচন করলেই তা সংবিধান, আইণসম্মত ও বৈধ নির্বাচন হয়ে যাবে ?  একটা সুষ্ঠু, গ্রহনযোগ্য ও গনতান্ত্রিক নির্বাচনের কি কোন স্বীকৃত মানদন্ড বা শর্ত নাই ?  শুধু নির্বাচনের দিন নির্বাচন নামক একটা নাটক মঞ্চস্থ করলেই কি তা সংবিধানসম্মত হয়ে যায় ? যদি তা না হয় তবে যুক্তি ও ন্যায়সংগত কারণে এই নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সরকারও বৈধ ও গ্রহনযোগ্য হতে পারেনা। যতভাবেই বলা হউক "যদি কেউ নির্বাচনে না আসে তবে সরকার কি করবে", "সরকার কি নির্বাচন না করে দেশে সাংবিধানিক সংকট তৈরী করবে" ? এই কথা বলে পার পাওয়া যাবেনা। বরং বলতে হবে, জানতে হবে, মানতে হবে কেন কেউ ( প্রধান বিরোধী দল ) নির্বাচনে আসলনা, কি কারণে নির্বাচন বর্জন করল, সবার অংশগ্রহনের জন্য কি সমঝোতায় পৌছা যেতনা ? নির্বাচন কি সংবিধান মোতাবেক ২৪শে জানুয়ারীর পরের ৯০ দিনে করা যেতনা ?  তার যৌক্তিক উত্তর খুজতে ও দিতে হবে, তবেই নির্বাচনের ও বর্তমান সরকারের বৈধতা ও গ্রহনযোগ্যতার যৌক্তিকতা পাওয়া যাবে।  নির্বাচনের পর প্রতিবেশী "বিশেষ বন্ধু" রাষ্ট্রসহ শুধু কয়েকটা দেশের স্বীকৃতি বা অভিন্দন যোগাড় করে আনতে পারলেই কি গায়ের জোরে প্রধান বিরোধী দলের অংশগ্রহন ছাড়া একতরফা এবং সারা দুনিয়ার কাছে অগ্রহনযােগ্য, প্রার্থীহীন, ভোটারহীন ও যেন-তেন একটা লোক-দেখানো নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তি সরকার সংবিধান, আইণসম্মত ও বৈধ হয়ে যাবে ? এ দেশে ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্টের পরের সরকারকেওতো তাৎক্ষনিকভাবে বহু দেশ স্বীকৃতি দিয়েছিল, ১৯৮২-৯০ সালের স্বৈর সরকারের সাথেওতো পৃথিবীর সব দেশ সম্পর্ক রেখেছিল, পাকিস্তানের জেনারেল পারভেজ মোশাররফের সরকার, ইসরাইল ও একসময়ের বিতর্কিত ও নিন্দিত দক্ষিন আফ্রিকার সরকারকেওতো পৃথিবীর বড় বড় গনতান্ত্রিক দেশ স্বীকৃতি দিয়েছিল ও তাদের সাথে সব রকমের সম্পর্ক রেখেছিল এবং এখনও রাখছে। এটা আন্ত-রাষ্ট্রীয় ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট সম্পর্কের একটা বৈশিষ্ট্য বা কূটনৈতিক শিষ্টচার। এই উদাহরন দেখিয়ে কি নিজ দেশে গায়ের জোরে প্রধান বিরোধী দলের অংশগ্রহন ছাড়া একতরফা এবং সারা দুনিয়ার কাছে অগ্রহনযােগ্য, প্রার্থীহীন, ভোটারহীন ও যেন-তেন একটা লোক-দেখানো নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তি সরকারকে বৈধ ও সাংবিধানিক বলা যাবে ? ক্লাশের সব ছাত্র-ছাত্রীর অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে পরীক্ষার সব নিয়ম-কানুন মেনে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করা আর অটো-প্রমোশন পেয়ে বা পেশী শক্তি দেখিয়ে বা "বড় মুরুব্বীর" সুপারিশ নিয়ে পাশ করার অর্থ ও মর্যাদা কি এক জিনিষ ? 
সব দলের বিশেষ করে প্রধান বিরোধীদলের অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ন নির্বাচন করে যদি জিতে আসত তবে সেটা হত প্রকৃত বিজয় এবং কেবল তখনই নির্বাচিত হওয়ার এমন আত্মতুষ্টি ও গর্ব করার যৌক্তিকতা ও গ্রহনযোগ্যতা থাকত। ভবনের ফাউন্ডেশন যদি মজবুত না হয় অর্থাৎ তিন তলার ফাউন্ডেশনের উপর যদি ৫ তলা বানানো হয় তবে সে ভবন যেহেতু একসময় ধ্বসে পড়বেই সেহেতু অধিকাংশ জনগনের মেন্ডেট তথা ভোটের সমর্থন না নিয়ে যদি ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার মানষিকতা নিয়ে সরকার গঠন করা হয় তবে সে সরকারের ভবিষ্যত ও আয়ূ:কালও যে কোনসময় নি:শেষ হয়ে যেতে পারে, ক্ষমতার নেশায় অন্ধ শেখ হাসিনা ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা তা ভাবতে অক্ষম।
এছাড়া শেখ হাসিনা নিজেই এবার ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন করে প্রমান দিল যে ( তথাকথিত গনতান্ত্রিক পন্থায় ) ক্ষমতায় থেকে নিজের দলীয় সরকারের অধীনে সরকার বদলের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয়না। ৫ বছর ক্ষমতায় থেকে আইণ-শৃংখলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে যেভাবে দলীয়করন করা হয়েছে নির্বাচনে তাদেরকে স্বীয় স্বার্থে সেভাবে কাজে লাগিয়েছে, ক্ষমতাসীন সরকার হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে স্বীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে পেরেছে, একতরফা ও অর্দ্ধেক ( মাত্র ১৪৬ টা ) আসনে নির্বাচন করার জন্য এত বাহিনী মাঠে থাকা সত্তেও সেনাবাহিনীকে নামানো হয়েছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার আগে থেকে শুরু করে তফসিল ঘোষণার পরেও নির্বাচনের ২ দিন আগ পর্যন্ত শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়েছে, নির্বাচন কমিশন কোন আপত্তি করেনি। আগের সরকার ও এম,পিরা সব বহাল থেকে পূর্ন ক্ষমতা ও দাপটের সাথে আর একটা নতুন নির্বাচনে অংশগ্রহন করার সুযোগ পেয়েছে, ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায় বেপরোয়াভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট দিয়ে ৩০% এর উপরে ভোটার উপস্থিতি হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, প্রধান বিরোধী দল না থাকা সত্তেও সতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীরাও জেতার জন্য ভোটকেন্দ্র দখলসহ নির্বাচন সংক্রান্ত যত অনিয়ম ও কারচুপি আছে ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনে সবই করেছে। আর যদি প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহন করত তবে সরকারী দল জেতার জন্য ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনকে কারচুপির নির্বাচনের একটা মাইলফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে বাংলাদেশে নির্বাচনের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করত। এতে আবারও বিরোধী দলের দাবীর যৌক্তিকতাই প্রমানিত হল। যদি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ একটা সরকারের অধীনে নির্বাচন হত তবে প্রধান বিরোধীদলসহ সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহন করত, ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে পারতনা, ভোটারের উপস্থিতিও ৮০-৯০% হত, দেশী - বিদেশী সব জায়গা থেকেই পর্যবেক্ষরা আসত, অর্থাৎ সবার কাছে গ্রহনযোগ্য একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমূখর নির্বাচন হত। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করায় নির্বাচনটা যেমন এর মূল্য ও মর্যাদা হারিয়েছে দেশের মানুষও ৫ বছর অপেক্ষার পর আনন্দঘন ও উৎসবমূখর পরিবেশে স্বতর্স্ফূত একটা নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। 
আওয়ামী লীগের শাসনামলে এটাই স্পষ্ট করা হয়েছে যে অপরাজেয় সহিংসতাই হলো যে কোন দাবী আদায়ের মূল শক্তি, আলাপ-আলোচনা, সমঝোতা বা গনতান্ত্রিক ও অহিংস আন্দোলন বা পন্থায় দাবী আদায়ের কোন সুযোগ আওয়ামী লীগের দলীয় সংবিধানে বা বৈশিষ্ট্যে নাই। যদি আওয়ামী লীগ ও এর নেত্রী গনতান্ত্রিক ও অহিংস রাজনীতি বা মূল্যবোধে বিশ্বাসী হত তবে পঞ্চোদশ সংশোধনীর পর বি,এন,পি জোট যখন এর বিরোধিতা করে হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে তার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেনা বলে স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দিয়েছিল এবং তখন থেকে শান্তিপূর্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে রাজপথে আন্দোলন শুরু করেছিল শেখ হাসিনা বা তার সরকার এ ব্যাপারে বিরোধী জোটের সাথে তখন থেকেই শান্তিপূর্ন পন্থায় অর্থাৎ সংলাপ বা আলোচনার মাধ্যমে একটা সমঝোতায় পৌছতে পারত। কিন্তু তা না করে শেখ হাসিনার সরকার প্রথম থেকেই বিরোধী জোটের আন্দোলনকে বানচাল ও দমন করার নীতি অনুসরন করতে থাকে। তারা মনে করেছে তাদের কাছে রাষ্ট্রের সকল শক্তি ও ক্ষমতা আছে, বিরোধী জোটের দাবীর বা তাদের আন্দোলনের কাছে সরকারকে কখনও মাথা নত করতে হবেনা। তাই ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের আগ পর্যন্তও দেশী বা বিদেশী মহলের পরামর্শ বা চাপ থাকা সত্তেও শেখ হাসিনা সরকার বিরোধী জোটের সাথে সংলাপের ব্যাপারে নমনীয় হয়নি। হাসিনা সরকার তার সমস্ত রাষ্ট্রীয় ও দলীয় শক্তি নিয়োজিত করেও ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনে উল্লেখ করার মত ন্যূনতম সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত ও নির্বাটনটাকে গ্রহনযোগ্য করতে পারেনি। অথচ এমন হাস্যকর নির্বাচনের পরেও শেখ হাসিনা, তার দলীয় লোকজন ও সমর্থক গোষ্টি নির্বাচনের ফলাফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কৃত্রিম আনন্দ-উল্লাসে মেতে আছে। পরবর্তিতে ভোটারহীন ও বিতর্কিত নব-নির্বাচিত দশম সংসদের এম,পিদের শপথ গ্রহনের পর শেখ হাসিনা নতুন সরকার গঠন করে ( অন্তত "খালেদা জিয়ার সমান সমান" যাতে বলা যায় তৃতীয়বারের মত প্রধানমন্ত্রী হয়েছে ) এখন পর্যন্ত দারুন আনন্দ উল্লাসে দিন কাটাচ্ছে। অথচ এই প্রধানমন্ত্রীর মসনদটা ধরে রাখতে বিগত ১ বছর যাবত তাকে দেশের কত শত লোকের রক্ত পার হয়ে, কত শত শহস্র কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংশ করে আসতে হয়েছে সেজন্য তার কোন মনোকষ্ট আছে বলে নির্বাচন পরবর্তি তার চলন-বলন ও কর্মকান্ডে মোটেও মনে হচ্ছেনা। 
এ দেশের জনগনের নিশ্চয়ই মনে আছে শেখ হাসিনা যখন গত বছর জাতিসংঘে ভাষণ দিতে গিয়েছিল তখন নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে বলেছিল সে দেশের স্বার্থে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতেও রাজী আছে। এরপর থেকে ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন পর্যন্ত সারা দেশের জনগন যখন আন্দোলনের আগুনে ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছিল ততক্ষন পর্যন্ত দেশের মানুষ শেখ হাসিনার দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের কোন নমুনা দেখতে পারলনা, এমনকি তার ঐ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মর্মার্থটাও বুঝতে পারলনা। তবে ৫ই জানুয়ারীর তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ বুঝতে পারল শেখ হাসিনা শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য বা গদি ধরে রাখার জন্য নীতি-আদর্শ, লজ্জা-শরম, বিবেক-বিবেচনা বিসর্জনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ত্যাগ করতেও  দ্বিধা করেনা। 
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেশবাসী অবশ্যই ভুলে যায়নি নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা একবার বলেছিল তার কাছে দেশ ও দেশের মানুষের সুখ শান্তিটাই বড়, প্রধানমন্ত্রীত্ব সে চায়না বা এটা তার কাছে বড় নয়। কিন্তু ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমানিত হল দেশ ও দেশের মানুষের সুখ শান্তির চেয়ে তার কাছে প্রধানমন্ত্রীত্বটাই সবচেয়ে বেশী আকর্ষনীয় ও বড়। 
দেশের বিগত ১ বছরের চলমান সংকট ও নির্বাচন সংক্রান্ত সবকিছুর জন্য সেই একই রেকর্ড বি,এন,পি-জামায়াত জোটের সহিংসতা ও সন্ত্রাসই দায়ী বলে সে নিজে ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা বলে বেড়াচ্ছে। অথচ এর পেছনে তার উগ্র ক্ষমতার নেশা, একরোখা, অনমনীয় ও একগুয়েমী মনোভাব এবং রাষ্ট্রীয় ও দলীয় শক্তি প্রয়োগ করে যেভাবেই হউক রাষ্ট্রক্ষমতা আবার করায়াত্ব করার যে মানষিকতা বহুলাংশেই দায়ী তা স্বীকার করতে বা মানতে নারাজ। বিরোধী জোট দাক্ষী আদায়ের জন্য গনতান্ত্রিক ও অহিংস আন্দোলনের পথ ছেড়ে কেন অগনতান্ত্রিক বা সহিংস আন্দোলনে যেতে বাধ্য হল তা কেউ বলছেনা। শেখ হাসিনা ও তার দলের লোকেরাতো প্রকাশ্যই বলে যাচ্ছে আন্দোলন করে এ সরকারের কাছ থেকে বিরোধী দল কোন দাবী আদায় করতে পারবেনা, অথচ হাসিনা সরকার বিরোধী দলের দাবীর ব্যাপারে সংলাপেও বসছেনা বা তাদের গনতান্ত্রিক বা অহিংস আন্দোলনকেও পাত্তা দিচ্ছেনা। যদি বিরোধী দল রাজপথে ( আওয়ামী লীগের মত ) চরম সহিংসতা করে সরকারী শক্তিকে পরাজিত করতে পারত তবে তাদের দাবী আদায় হত। ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা দেশবাসীকে তাই বুঝিয়ে দিল "জোর যার মুল্লুক তার"। এই হলো শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের গনতান্ত্রিক ও আদর্শিক রাজনীতির বৈশিষ্ট্য। 

স্বাধীনতার পর থেকে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার পরিপন্থি অগনতান্ত্রিক ও স্বৈবরাচারী কায়দায় একদল  ( শুধু আওয়ামী লীগ ) দ্বারা দেশ শাসন করার যে মানষিকতা ও প্রবনতা আওয়ামী লীগ ও এর দোষরদের মধ্যে জন্ম নিয়েছিল এখনও তাদের ধমনীতে ও চিন্তা-চেতনায় সেই একই রক্ত ও মানষিক স্রোতধারা বহমান। তাই তারা এ দেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোন বিরোধী দলের অস্তিত্বকে মেনে নিতে পারছেনা। আওয়ামী মহল থেকে এখন অভিযোগ করা হচ্ছে ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনে বি,এন,পি আসে নাই তাই নির্বাচন একতরফা হয়েছে, বিরোধী জোটের দাবী ছিল নির্বাচনকালে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীত্বে আওয়ামী লীগের দলীয় সরকারের পরিবর্তে একটা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন - যা অবশ্যই একটা যুক্তিসংগত দাবী। যে কারণে বি,এন,পি জোট নির্বাচনে আসেনি তা দেশের মানুষের কাছে পরিস্কার থাকলেও আওয়ামী মহল তা জেনেও না জানার ভান করছে। সরকার এও বলছে শরীক দল জামায়াতের বিরোধীতার কারণে ও চাপে বি,এন,পি নির্বাচনে আসেনি বা আসতে পারেনি। কত খোড়া ও হাস্যকর কথাবার্তা ! , শেখ হাসিনা যদি বিরোধী জোটের সাথে সমঝোতা করে একটা নির্দলীয়, নিরপেক্ষ বা সে নিজে প্রধান না থেকে একটা সর্বদলীয় সরকার গঠন করে নির্বাচন করত আর তখন যদি বি,এন,পি নির্বাচনে না আসত তবে এই অভিযোগ করা যেত। বরং এটা করা হলে বি,এন,পি জোটের সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহন করত একমাত্র জামায়াত ছাড়া, কারণ তাদের নিবন্ধন নাই বলে তারা নির্বাচনে আসতে পারতনা, তখন জামায়াত একঘরে ও তাদের আন্দোলন নিয়ে একা হয়ে যেত। বরং বলা যায় শেখ হাসিনার সরকারই কোন সমঝোতায় না গিয়ে বি,এন,পিকে নির্বাচন থেকে দূরে রেখেছে যাতে এখন এমন কল্পিত অভিযোগ করা যায়। 
এখন শেখ হাসিনা ও তার দলের লোকরা বলছে বিরোধী দল নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলায় এবং নির্বাচনের দিন সহিংসতা করায় ৫ই জানুয়ারী ভয়ে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যায়নি। কথাটা হয়ত আংশিক সত্য, তাহলেত বিরোধীদল তাদের আন্দোলনে সফল হয়েছে বলা যায়, তারা নির্বাচন / ভোট প্রতিহত করতে পেরেছে।  কিন্তু ঢাকা শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল সবচেয়ে বেশী এবং ঢাকায় বিরোধী দলের আন্দোলন বা সহিংসতাও ছিলনা, তাহলে ঢাকায় ভোটারের উপস্থিতি কেন ৫-১০% হল ? শুধু তাই নয় দেশের ৪২টা কেন্দ্রে একটা ভোটও পড়েনি, সেসব এলাকায় কি সরকারী দলের একজন সমর্থক বা প্রার্থীরাও ছিলনা ? আসলে দেশের অধিকাংশ মানুষ সরকারী দলের অধীনে একতরফা নির্বাচন স্বেচ্ছায় বর্জন করেছে - এ সত্যটা শেখ হাসিনার দল মানতে চায়না। আর নির্বাচন প্রতিহত করার আন্দোলনের ঘটনা কি এ দেশে এবারই হয়েছে ?  এরশাদের সময় ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের নির্বাচনও প্রধান দলগুলো বর্জন ও প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছিল, ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্র"য়ারীর নির্বাচন আওয়ামী লীগ বর্জন ও স্পষ্ট ভাষায় প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছিল, এমনকি ২০০৭ সালের নির্বচনও আওয়ামী লীগ বর্জন ও প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু কোন নির্বাচনই প্রতিহত হয়নি, বাধাগ্রস্ত হয়েছে, গায়ের জোরে সব সরকারই নির্বাচন একটা করে সরকারও গঠন করেছিল, শুধু ২০০৭ সালে আওয়ামী লীগের সহিংস আন্দোলনের এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করায় খালেদা জিয়ার ততকালীন কথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন করতে পারেনি। এ ছাড়া উল্লেখিত অন্য সব নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার গ্রহনযোগ্য হয়নি এবং বেশীদিন ক্ষমতা ধরেও রাখতে পারেনি। সুতরাং নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলে অগনতান্ত্রিক আন্দোলনের ঘোষণা কেবল এবারই এবং শুধুু বি,এন,পিই দেয়নি। এমন ঘটনার ইতিহাস ইতিপূর্বে আওয়ামী লীগও রচনা করে এসেছে।
১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বি,এন,পি নেতারা আন্দোলনের সময় রাস্তায় নেমেছে, পুলিশের আঘাতে রক্তাক্তও হয়েছে, কিন্তু এবারের হাসিনা সরকার  তার পুলিশ ও র‌্যাব-বিজিবিকে নির্বিচারে গুলি করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করার অনুমতি দিয়েছে । বিরোধী নেতা-কর্মীরা এবার হয়ত রাস্তায় নেমে আওয়ামী লীগ, যুব লীগ, ছাত্র লীগ ও আওয়ামী যুব মহিলা লীগের মত চরম সহিংসতা প্রদর্শন করতে পারেনি, কিন্তু তা বিরোধী দলের আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা নাই এটা প্রমান করেনা। বিরোধী দলের দাবী ছিল একটা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, এই দাবীর সাথে বিরোধী দলের সকল নেতা-কর্মী বলতে গেলে সারা দেশের অধিকাংশ জনগনের সমর্থন ছিল, হাসিনা সরকার যদি এই ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন দিত বা বিরোধী দলের এই দাবীর প্রতি জনগনের সমর্থন আছে কিনা রেফারেন্ডাম দিয়ে তা যাচাই করত তবে বুঝতে পারত বিরোধী দলের আন্দোলন তথা দাবীর প্রতি দেশের অধিকাংশ জনগনের সম্পৃক্ততা আছে কি নাই, রাজপথের সন্ত্রাস বা সহিংসতায় লোসমাগমকে জনসম্পৃক্ততা বলা যায়না-যে কাজে কেবল আওয়ামী লীগই অভ্যস্থ ও পারদর্শী। তাই আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারী, অগনতান্ত্রিক ও আক্রমনাত্মক আচরন এ দেশের সকল দল ও জনগনকে হয়ত সহসাই সন্ত্রাসী হতে বাধ্য করবে। 
বর্তমান শেখ হাসিনার দালাল ও স্বার্থান্বেষী মহল বলছে ৫ই জাুনুয়ারী যখন একটা নির্বাচন হয়েই গেছে এবং সরকারও গঠিত হয়ে গেছে সুতরাং তড়িঘড়ি করে এই মূহুর্তে দেশে আর একটা নির্বাচন দেওয়ার বা ব্যবস্থা করার কোন প্রয়োজন নাই, তাদের কুপরামর্শ হলো সরকারের উচিত এখন দেশের আইণ-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দেশের অবস্থা স্থিতিশীল রাখার দিকে মনযোগ দেওয়া। কিন্তু এসব স্বার্থান্বেষী জ্ঞানপাপীরা বুঝেও বুঝতে চায়না ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের আগে দেশে আইণ-শৃংখলা পরিস্থিতি ও স্থিতিশীলতা কেন ও কি কারণে বিনষ্ট হয়েছিল। বিরোধী জোটের সাথে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ৫ই জানুয়ারীর আগে কি সমঝোতা হয়ে গিয়েছিল ? নির্বাচনটা কি সর্বদলের অংশগ্রহনের ভিত্তিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ন হয়েছিল ? বিরোধী জোট কি নির্বাচনটা মেনে নিয়েছিল ? অর্থাৎ আইণ-শৃংখলা পরিস্থিতি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হতে পারে এমন করণগুলো কি দূর হয়ে গেছে ? বিরোধী দলের সাথে কি সংকট নিরসন হয়ে গেছে ? যদি তা না হয়ে থাকে তবে গায়ের জোরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর ( নির্বাচনের আগের প্রতিশ্র"তি বা ঘোষণা মোতাবেক ) এখন সরকার যদি শীঘ্রই আর একটা নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য এখনই বিরোধী জোটের সাথে আলোচনায় না বসে ( ৫ বছরের জন্য ক্ষমতায় বসে গেছি মনে করে ) দেশ পরিচালনার দিকে মনোযোগ দেয় তবে বিরোধী জোট কি বসে বসে তামাসা দেখবে বা আঙ্গুল চুষবে ?  সরকারের স্বৈর শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তারা কিছু করতে পারুক বা না পারুক দেশকে অস্থিতিশীল ও জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ধ্বংশের দিকে নিয়ে যেতে বাধ্যত হবেই। এ অবস্থা কি বর্তমান সরকারকে নির্বিঘেœ দেশ চালাতে দিবে ? দেশের শান্তি-শৃংখলা ও স্থিতিশীলতার পূর্বশর্তই হলো যে রাজনৈতিক সমঝোতা বা স্থিতিশীলতা স্বার্থান্বেষী দালাল গোষ্টি কি এটা বুঝতে অক্ষম, নাকি মনে করছে স্বৈরাচারী কায়দায় শক্তি প্রয়োগ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা যাবে ? আসলে এরা বুঝেও সরকারকে এমন আত্মঘাতি ও দেশ-বিরোধী কুপরামর্শ দিচ্ছে, এমন কুপরামর্শ দিয়ে সেই সময়ের দালালরাও শেখ মুজিবকে স্বৈরাচারী ও বাস্তববর্জিত পন্থায় দেশ চালাতে উৎসাহিত করেছিল। এখন তার কন্যা শেখ হাসিনাকেও একই পথে ধাবিত করার অপ্রপয়াস চালাচ্ছে। শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে বুঝতে হবে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যানের জন্য সবার আগে এই মূহুর্তের সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন দেশের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করা এবং তা করতে হবে রাজনৈতিক তথা গনতান্ত্রিক পথে ও ভাষায়, শক্তি প্রয়োগ করে ( র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও কোন বিশেষ বন্ধু রাষ্ট্রের সহায়তায় )  কোন সমাধান হবেনা। পৃথিবীর কোন শাসকই কেবল নিজের কিছু সমর্থকের উপর ভর করে বা কোন বিশেষ বন্ধু রাষ্ট্রের সহায়তায় দেশের অধিকাংশ মানুষের মতামত বা গনতান্ত্রিক মূল্যবোধকে বিসর্জন দিয়ে শেষ পর্যন্ত শক্তি প্রয়োগ করে বেশীদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি এবং খুবই জঘন্য ও নির্লজ্জ পরিনতির মধ্য দিয়ে বিদায় নিতে হয়েছে ( তার প্রমান খুজতে হলে বেশী দূরে বা পেছনে যেতে হবেনা ) । এত করে যখন ঢাক-ঢোল পেটানো হচ্ছে যে বিগত ৫ বছর মহাজোট সরকার দেশের অভূতপূর্ন উন্নয়ন করেছে, জনগন যখন তাদের ভাষায় যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রশ্নে হাসিনা সরকারের পেছনে সব ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে তাহলে জনগনইতো ঐ সরকারকে আবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাবে, জনগনের উপর যদি সত্যিই আস্থা থাকে তবে শেখ হাসিনার উচিত নির্বাচনকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বহাল রেখে তার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন না করে একটা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে জনপ্রিয়তা যাচাই করা। বি,এ,পি জোট আবার ক্ষমতায় আসলে এ দেশে জঙ্গীবাদ কায়েম হবে, দূর্নীতি হবে - এ জুজুর ভয় দেখিয়ে বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে হবে-এটা কোন গনতান্ত্রিক মানষিকতা নয়, এটা হলো অগনতান্ত্রিক স্বৈরাচারী মানষিকতা। শেখ হাসিনার বিগত ৫ বছরে তার যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কি এ দেশে জঙ্গীবাদের চেয়েও আরো ভয়ংকর সন্ত্রাসবাদ কায়েম করেনি ?  তার বিগত আমলে র‌্যাব-পুলিশের গুম ও ক্রস-ফায়ারের ঘটনা কি মানবতাবিরোধী জঙ্গীবাদের চেয়ে কোন অংশে কম ? তার সরকারের বিগত আমলে বড় বড় র্দূর্নীতির ঘটনা ঘটেছে, তার মন্ত্রীরা ও এম,পিরা যে দূর্নীতি করেছে তার প্রমানতো তারা নিজেরাই দিয়েছে এবং তাদের বিচারের জন্য তদন্তও শুরু হয়েছে।  কাজেই জনগনের নাম ভাঙ্গিয়েই যখন রাজনীতি করা হয় এবং জনগনের উপর যদি সত্যিকার আস্থা থাকে তবে জনগন কাকে ক্ষমতায় বসাবে কাকে ক্ষমতা থেকে সরাবে এর বিচারের ভার নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের  ব্যবস্থা করে জনগনের উপরই ছেড়ে দেওয়া  হলো ক্ষমতাসীন একটা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব ( যেহেতু সংবিধান অনুযায়ী জনগনই হলো সার্বভৌম ও রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক ) ও গনতান্ত্রিক সংস্কৃতির দায়বদ্ধতা। যদি জনগন তার বিগত সরকারের উন্নয়নের ধারা ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের কাজ অব্যাহত রাখতে চায় তবে শেখ হাসিনার দলকেই আবার ভোট দিয়ে জিতায়ে আনবে, তাহলে ৫ই জানুয়ারীর প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রহসনের নির্বাচনের কলংক থেকেও তারা মুক্ত  হতে পারবে, দেশেও শান্তি-শৃংখলা ফিরে আসবে।

লেখক : জাহিদ হাসান
রিয়াদ, সউদী আরব।









__._,_.___

Attachment(s) from Zahid Hasan | View attachments on the web

1 of 1 File(s)



****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___