Banner Advertiser

Monday, February 17, 2014

[mukto-mona] বিএনপি-জামায়াতের আল কায়েদা কানেকশন : আল কায়েদা নেতা গোপন সফরকালে তারেক ও নিজামীর সঙ্গে বৈঠক করেন



মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৪, ৬ ফাল্গুন ১৪২
বিএনপি-জামায়াতের আল কায়েদা কানেকশন
০ হেফাজত নেতা মুফতি ইজহারুল স্বীকৃত আল কায়েদা
০ জোট আমলে আল কায়েদা নেতা গোপন সফরকালে তারেক ও নিজামীর সঙ্গে বৈঠক করেন 
০ আল কায়েদা লস্কর-ই-তৈয়বা নেতা বাংলাদেশে গ্রেফতার হয়েছেন
বিভাষ বাড়ৈ ॥ 'দাওয়াত' নামের মাসিক ইসলামী পত্রিকায় নিজেই এক সময় আফগানিস্তানে আল কায়েদা, তালেবানদের সঙ্গে কাজ করার কথা লিখেছিলেন আজকের বিএনপি-জামায়াত জোট ও হেফাজত নেতা মুফতি ইজহারুল ইসলাম। ১৯৯৮ সালের অক্টোবর-নবেম্বর সংখ্যায় ইজহারের লেখা 'তালেবান আফগানিস্তানের জান্নাত দেখে এলাম' শীর্ষক প্রবন্ধে আফগানিস্তানে সফর ওসামা বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে বৈঠকের তথ্য নিজেই দিয়েছেন। একই বছর বাংলাদেশের সক্রিয় আল কায়েদার সংগঠন হরকাতুল জিহাদের হয়ে আফগানিস্তান গিয়েছিলেন আরেক জঙ্গী নেতা হাবিবুর রহমান ওরফে বুলবুলি মোল্লা। সেখানে আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে বৈঠক করে দেশে ফিরে বাংলাদেশে তালেবাদ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান দাবি তুলেছিলেন। সিলেটে তখন 'ইসলামী বিপ্লব' নামে বিশেষ বুলেটিন প্রকাশ করে আল কায়েদা, তালেবানের পথ ধরে জিহাদের কথা তুলে ধরেছিলেন আজকের আলোচিত বুলবুলি হুজুর। এ দুই জঙ্গী নেতাই দেশে জামায়াত-হেফাজত নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে সক্রিয় আছেন উগ্র তালেবানী রাষ্ট্র কায়েমে। 
তবে কেবল এ দুজনই নয়, বাংলাদেশে প্রায় ১৭ বছর ধরে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদা ও তালেবানের হয়ে কাজ করার তথ্য-প্রমাণ আছে অসংখ্য নেতার বিরুদ্ধে। যারা প্রত্যেকেই জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কেউ কেউ এক সময় জামায়াত থেকে আলাদা হয়ে নিজেরাই আল কায়েদা ও তালেবানের সহযোগী হিসেবে সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে জিহাদের ডাক দিয়েছেন। অধিকাংশ শীর্ষ নেতাই প্রথম দিকে দাপটের সঙ্গে এসব তথ্য দেশী-বিদেশী পত্রিকায় ছবিসহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু আজকের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তারা বাইরে নিজেদের ধোয়া তুলসী হিসেবে দাবি করলেও এখন আরও বেশি সক্রিয় জঙ্গীবাদী কর্মকা-ে। দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য, বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গীদের বিভিন্ন সময় দেয়া জবানবন্দী ও সাক্ষাতকার এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য। জানা গেছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের পর আল কায়েদার টার্গেট এখন বাংলাদেশ। আল কায়েদা পাকিস্তানের জঙ্গী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা ও বাংলাদেশের জঙ্গী সংগঠন জেএমবি এবং হুজিসহ বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের সহায়তায় বাংলাদেশে সক্রিয়। বাংলাদেশের সক্রিয় সকল জঙ্গী সংগঠনেরই রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে জামায়াত। তবে এক্ষেত্রে বিএনপি বিশেষত তারেক রহমানের সঙ্গে জঙ্গী সংগঠনগুলোর সরাসরি সম্পর্ক থাকার খবর আছে দেশ-বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থানগুলোর হাতে। ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর আল কায়েদার দায়িত্ব পান আইম্যান আল জাওয়াহিরিবিগত বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট আমলে বাংলাদেশে এ আল কায়েদা নেতা নিরাপদেই একাধিকবার সফর করেছেন বলে আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোতেও সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। ফাসইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিই, টাইম ম্যাগাজিনের মতো প্রভাবশালী একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এসব তথ্য। আল কায়েদা নেতা সফরকালে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের আশীর্বাদ নিয়েই বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের বৈঠক ছাড়াও যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী আর তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানা যায়। এসব বিষয় নিয়ে বহুবার প্রশ্ন উঠলেও আজ পর্যন্ত জামায়াত ও বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হয়নি। 
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আফগানিস্তান থেকে ফিরে আসা দুই নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম (বাংলাভাই) এবং শায়খ রহমান রাজনৈতিক দল গঠন করে জঙ্গীবাদী তৎপরতা শুরু করে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় আফগান-ফেরত শ' শ' জঙ্গী। আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের আর্থিক সহায়তায় তারা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাংগঠনিক ভিত্তি তৈরি করে, বিভিন্ন সময় যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই দুই জঙ্গী নেতাই মৃত্যুদ-ের আগে দেয়া জবানবন্দীতে বলেছেন তাদের সঙ্গে জামায়াতের সম্পৃক্তরার কথা। 
আল কায়েদা ও তালেবানের হয়ে বাংলাদেশে তৎপরতার বিষয়ে জানা গেছে, জঙ্গী নেতাকর্মীরা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ছত্রছায়ায় চরমপন্থী সদস্যদের উৎখাতের নামে রাজশাহী অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। তাদের এ কর্মকা- নিয়ে মিডিয়া সরব হলেও সরকার ছিল পুরোপুরি নীরব। সরকারের রহস্যজনক নীরবতা নিয়েও গণমাধ্যমে প্রশ্ন তোলা হয়। তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার রাজশাহী অঞ্চলে জঙ্গী নেতা বাংলাভাইয়ের বর্বরতার কথা তুলে ধরে নজর কাড়েন দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমের। তখন অনেক গণমাধ্যমও শেখ হাসিনার কথায় শুরুতে কান দেননি। একপর্যায়ে ২০০৪ সালে জঙ্গী তৎপরতা নিয়ে একের পর এক রিপোর্ট বের হয় গণমাধ্যমে। সাংবাদিকদের কাছে দেয়া এক সাক্ষাতকারে সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই স্বীকার করেন, সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সহায়তায় রাজশাহী অঞ্চলে সে তার কর্মকা- পরিচালনা করছে। এখান থেকেই তাদের কর্মকা- বিস্তৃত হতে থাকে সারাদেশে। জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশের (জেএমজেবি) প্রধান বাংলাভাই নিজে সাংবাদিকদের সাক্ষাতকার দিয়ে তার কর্মকা- সম্পর্কে জানান দিলেও তখন সরকার জঙ্গী তৎপরতার উপস্থিতি পুরোপুরি অস্বীকার করে। তখন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজেই বলেছেন, 'বাংলাভাই মিডিয়ার সৃষ্টি। বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব নেই।' এ সময় জঙ্গী নেতারা সরকারের সহায়তায় রাজনৈতিক নেতাদের মতো চলা ফেরাতেই কেবল সীমাবন্ধ ছিলেন না। বাংলাভাই তার অফিসে তারেক রহমানের ছবি টাঙ্গিয়ে বৈঠক করতেন এবং তারেক রহমানকে বাংলাভাই ডাকতেন 'মামা' বলে। তবে বাংলাভাই মিডিয়ার সৃষ্টি বলে জঙ্গীদের আড়াল করার খালেদা জিয়ার চেষ্টার কিছুদিন পরই ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৪টি জেলায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে জেএমজেবি ও জেএমবি তাদের সরব উপস্থিতির জানান দেয়। এ ঘটনাটি জাতিকে স্তম্ভিত ও বিস্মিত করে। জঙ্গীরা ভেতরে ভেতরে যে নিজেদের কতটা সংগঠিত করেছিল, তার প্রমাণ তারা দিয়েছিল সারাদেশে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে। অবশ্য পরে ২০০৬ সালের ৪ এপ্রিল টাইম ম্যাগাজিনে এক সাক্ষাতকারে বেগম জিয়া জনরোশ এড়াতে দাবি করেন, 'দেশে জঙ্গী আছে তা ১৭ আগস্টের আগে জানতাম না। ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পরই জানতে পেরেছি।' 
জেএমজেবির মতো জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) চট্টগ্রাম থেকে যাত্রা শুরু করে। তারপর সারাদেশে তাদের কর্মকা- বিস্তৃত করে। জেএমবির নেতৃত্ব দেন শায়খ রহমান। একপর্যায়ে দুটি দল অভিন্ন কর্মসূচী নিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। এ দুই দলকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে বিএনপি-জামায়াত জোট। জোট সরকারের তৎকালীন মন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু জঙ্গী-সংশ্লিষ্টতায় অভিযুক্ত। এ ছাড়া স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জেএমবি ও জেএমজেবির কর্মকা- পরিচালনায় সার্বিক সহায়তা দিয়েছে। বাংলাভাই ১৯৮০ সালে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছিল। তার আগে সে সেখানে জঙ্গী প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। শায়খ রহমানও সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। এরাই বাংলাদেশে জঙ্গীগোষ্ঠীকে সংগঠিত করে। তাদের সহায়তা করে জোট সরকারের কিছু লোক। জোট সরকারের পুরো সময়টাতেই জঙ্গীদের তৎপরতা নিয়ে গণমাধ্যম সক্রিয় থাকলেও সরকার ছিল পুরোপুরি নীরব। জঙ্গীদের গ্রেফতারে উদ্যোগ তো নেয়ইনি, উপরন্তু ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে নানা সহযোগিতা পেয়েছে। জঙ্গীদের সমর্থন প্রদান এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের উদাসীনতার সমালোচনা করেন সাংসদ আবু হেনা। এই অপরাধে ২০০৫ সালের ২৩ নবেম্বর তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। জামায়াতের অনেক নেতা দল থেকে বেরিয়ে আবার অনেকে দলে থেকে জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ১১ জানুয়ারি দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার জঙ্গীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এ কারণে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সারাদেশে জঙ্গীবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। একই সঙ্গে জঙ্গীদের দুই শীর্ষ নেতা বাংলাভাই ও শায়খ রহমানকে গ্রেফতার করতে র্যাব ব্যাপক তৎপরতা চালায়। ২০০৬ সালের ২ মার্চ সিলেট থেকে র্যাব শায়খ আবদুর রহমানকে গ্রেফতার করে। এর তিন দিন পরই র্যাব রাজশাহী থেকে ৫ মার্চ বাংলাভাইকে গ্রেফতার করে। তারা বিভিন্ন স্থানে জঙ্গী হামলার কথা স্বীকার করে এবং জবানবন্দীতে জানিয়েছেন, আল কায়েদা, তালেবানের হয়ে কিভাবে বাংলাদেশে জঙ্গী তৎপরতা চালিয়েছেন। দুজনেই জানিয়েছেন, দেশে তাদের ছাড়া হিসেবে কিভাবে জামায়াত কাজ করেছে, জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে কিভাবে যুক্ত ছিলেন। বাংলাভাই এ জানায়, 'জামায়াত নারী নেতৃত্ব (খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব) মেনে নিয়ে কাজ করার জন্য একপর্যায়ে দলটিকে ছেড়ে পৃথক জঙ্গী সংগঠনের নামে কাজ করেন তিনি। 
কেবল বাংলাভাই আর শায়ক আব্দুর রহমানই নয়, আল কায়েদা ও আফগানিস্তারে প্রশিক্ষণ নেয়ার বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর শত তথ্য। বেরিয়ে এসেছে এক সময়ে আফগানিস্তনে আল কায়েদার শীর্ষ নেতা লাদেন, মোল্লা ওমর ও জওয়াহিরির সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গী নেতাদের বৈঠকের নানা তথ্য। আল কায়েদার আশীর্বাদ নিয়ে কিভাবে বাংলাদেশে জঙ্গী নেতারা তালেবানী রাষ্ট্র কায়েমে কাজ করছে তাও জানা যায় আজ রাজনীতির নামে সক্রিয় সেই উগ্রবাদী নেতাদের নিজেদের বক্তব্য থেকেই। এসব নেতাদের নিজস্ব সংগ্রহশালা ও দেশী-বিদেশী গণমাধ্যম ঘেটে জানা যায়, এরা প্রত্যেকেই এ মুহূর্তে সক্রিয়। বিএনপি-জামায়াত জোটের আলোচিত জঙ্গী নেতার নাম মুফতি ইজহারুল ইসলাম। কিছুদিন আগেও চট্টগ্রামের তার মাদ্রাসায় সরকার উৎখাতে ব্যবহার করার জন্য বোমা ও গ্রেনেট তৈরির সময় বিস্ফোরণে কয়েকজন নিহত হয়। জঙ্গী তৎপরতার অভিযোগে কয়েকবার গ্রেফতার হয়েছেন মুফতি ইজহার। রাউজানের একটি গোপন আস্তানায় জঙ্গী প্রশিক্ষণের অভিযোগে ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে তাকে সর্বশেষ গ্রেফতার করে টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। র্যাবের তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় চট্টগ্রামের রাউজান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইন মামলায় মুফতি ইজহারসহ হুজির আট প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেয়া হয়। আদালতে মামলার নথিতে তদন্ত কর্মকর্তা তখন উল্লেখ করেছিলেন, দেশে নাশকতামূলক কর্মকা- চালাতে হুজির প্রশিক্ষকের সহযোগিতা ও মদদ দিয়ে নগরীর লালখানবাজার আল জামেয়াতুল ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল এবং নেজামে ইসলামী পার্টির সভাপতি মুফতি ইজহার রাউজানে দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনা করছে। হুজির সদস্যদের এ ক্যাম্পে রাতের আঁধারে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ২০১০ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাউজান গোদারপাড় পাহাড়ী এলাকা থেকে হুজির পাঁচ প্রশিক্ষককে গ্রেফতার করা হলে পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে তাদের নির্দোষ দাবি করে মুক্তির দাবি জানান মুফতি ইজহার। ওইদিনই লালখানবাজার মাদ্রাসা থেকে ইজহারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে ঢাকায় র্যাবের ইন্টারোগেশন সেলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আফগানিস্তানে তৎকালীন শাসক মোল্লা ওমরসহ তালেবানী নেতা ও বাংলাদেশের মুফতি হান্নানের সঙ্গে তার যোগাযোগ থাকার কথা স্বীকার করেন। আফগানিস্তানে মোল্লা ওমরের সঙ্গে তার সাক্ষাত হওয়ার কথা জানান জিজ্ঞাসাবাদে। ঘটনাস্থলে তখন মুফতি ইজহারসহ গ্রেফতার হওয়া হুজির প্রশিক্ষকরা বিস্ফোরক তৈরি ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিছু প্রশিক্ষকের মাধ্যমে নিষিদ্ধ হুজির সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর প্রমাণ মেলে। মাসিক দাওয়াত নামে একটি মাসিক ইসলামী পত্রিকায় ১৯৯৮ সালের অক্টোবর-নবেম্বর মাসে মুফতি ইজহারের লেখা 'তালেবান আফগানিস্তানের জান্নাত দেখে এলাম' শীর্ষক প্রবন্ধে আফগানিস্তানে সফর ও মোল্লা ওমরের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য রয়েছে। চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী ছাড়াও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের নেতৃবৃন্দ জনসভাও বহুবার বলেছেন, লালখানবাজারে উগ্রবাদী এ নেতার মাদ্রাসায় জঙ্গী প্রশিক্ষণ হয়। যেখান থেকে ২০ হাজার লোক আফগানিস্তান যুদ্ধে গেছে। ফিরে আসে ১০ হাজার। ইসলামী দলগুলোর পক্ষ থেকে তথ্য-প্রমাণ নিয়ে এই অভিযোগ বহুবার তোলা হয়েছে। দু'একবার আটক হওয়া ছাড়া অপরাধের শাস্তির কোন উদাহরণ দেখেনি সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে ঢাকায় মার্কিন ও ভারতীয় দূতাবাসে হামলা করার জন্য পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার কাছ থেকে ১০ হাজার মার্কিন ডলার নিয়েছিলেন। আল কায়েদা, পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা ও হরকাতুল জিহাদের সঙ্গে মুফতি ইজাহার ও তার পুত্র হারুন ইজাহারের সঙ্গে গভীর যোগাযোগ রয়েছে বলেও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব এবং বাংলাদেশে জঙ্গী জিহাদী সুলতান যওক নদভী ১৯৮৮ সালে আন্তর্জাতিক হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীর আমন্ত্রণে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তান সফরে যান এবং তালেবাদ মুজাহিদ বাহিনীর একাধিক ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। সেখানে সফরকালীন সময়ে আল কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। লাদেনের কাছে তালেবান মুজাহিদদের সঙ্গে সশস্ত্র ট্রেনিং প্রশিক্ষণ শেষে জিহাদে অংশগ্রহণ করেন। আফগানিস্তানের কয়েকটি প্রদেশে বিভিন্ন সেক্টরে জিহাদ শেষে তালেবানের শীর্ষ নেতাদের ও আল কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে বাংলাদেশে সশস্ত্র জিহাদ সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা এবং পরামর্শ করেন। দেশে ফিরে তিনি বাংলাদেশকেও একটি তালেবান রাষ্ট্র বানানোর পরিকল্পনায় কওমী মাদ্রাসাগুলোতে জঙ্গী প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেন। হেফাজত নেতা সুলতান যওক নদভী আফগান থেকে দেশে ফিরে আফগানিস্তান সফর ও সশস্ত্র জিহাদে অভিজ্ঞতার ওপর একটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ লিখেছেন। যা আরবী ও বাংলায় প্রকাশিত হয়েছে। 'রিহলাতী ইলা আরদিল জিহাদ' নামক বইটির বাংলা অনুবাদ 'দেখে এলাম জিহাদের ভূমি' নামে বের হয়। এই জঙ্গী নেতা তার বইয়ে নিজেই লিখেছেন, আলোচনায় ওসামা বিন লাদেন বলেন, 'বাংলাদেশী মাওলানা আপনার জিহাদী বক্তব্য শুনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমার বিশ্বাস আফগানিস্তানের মতো বাংলাদেশেও একদিন আফগানের মতো সশস্ত্র জিহাদের প্রয়োজন হবে। সে জিহাদে আল কায়েদার পক্ষ থেকে অস্ত্র, অর্থ দিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। আপনাদের দায়িত্ব হলো নিজ দেশে গিয়ে জিহাদের প্রস্তুতি নেয়া। আপনার বক্তব্য থেকে বুঝতে পারলাম বাংলাদেশ একটি জিহাদের দাওয়াত প্রচারের উর্বর ভূমি। আপনাদের মাধ্যমেই আল কায়েদার কার্যক্রম ওই দেশে পরিচালনা করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। মোবারকবাদ জানিয়ে আমি এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফিজ।' হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় অন্যতম নেতা আল কায়েদার প্রধান সাবেক ওসামা বিন লাদেনের শিষ্য হিসেবেই এদেশের জঙ্গীদের গডফাদার হিসেবে কাজ করছে মাওলানা হাবিবুর রহমান। আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামের দাওয়াতের মাধ্যমে পাকিস্তান হয়ে আফগানযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সশস্ত্র প্রশিক্ষণ শেষে যুদ্ধের ময়দানে কয়েকটি সেক্টরে দায়িত্ব পালন করেন। ইসলামী বিপ্লব পত্রিকার এক সাক্ষাতকারে হাবিবুর রহমান বলেন, 'আমার আফগানিস্তান সফরের সৌভাগ্য হয়েছিল হরকাতুল জিহাদিন ইসলামী (ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ওংষধসরপ গড়াবসবহঃ)-এর দাওয়াতে বিশিষ্ট সমাজসেবী, পরিচালক ভাই মাওলানা শহীদুল ইসলামের আবেগপূর্ণ আহ্বানে। ২ মার্চ ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রিত ডেলিগেট, সেদিন যারা আফগান রণাঙ্গন সফরে গিয়েছিলেন তারা হচ্ছেন- শায়খুল হাদীস আজীজুল হক সাহেব ঢাকা, মাওলানা আতাউর রহমান খান সাহেব কিশোরগঞ্জ, মাওলানা সুলতান যওত সাহেব চট্টগ্রাম, মাওলানা আব্দুল মান্নান সাহেব ফরিদপুর, মাওলানা হাবিবুল্লাহ সাহেব নোয়াখালী এবং আমি মুহম্মদ হাবিবুর রহমান সিলেটসহ মোট ৯ জন। গেল বছর রাজধানীর মতিঝিলে হেফাজতের জঙ্গী সমাবেশে সিলেট থেকে কয়েক হাজার মাদ্রাসার ছাত্রকে নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন আল কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত এ নেতা। 
আরেক জঙ্গী নেতা মুফতি শহীদুল ইসলাম। যিনি এখন হেফাজত জামায়াতের সঙ্গে সরকারবিরোধী রাজনীতিতে ব্যস্ত। ট্রেনিং শেষে আফগান যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের জঙ্গীদের সঙ্গে আফগান যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৮৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারিতে সোভিয়েত বাহিনী আফগানিস্তান ত্যাগ করে। পরে বাংলাদেশী মুজাহিদসহ বিভিন্ন দেশের জঙ্গী মুজাহিদদের বড় অংশ তাদের নিজ দেশে ফিরে যান। ১৯৮৯ সালের মার্চ মাসে হরকাতের প্রতিষ্ঠাতা কমান্ডার আবদুর রহমান ফারুকী ঢাকায় হরকাতুল জিহাদ আল-ইসলামী বাংলাদেশের ঘোষণা দেন। তখন ফারুকীর সফর সঙ্গী ছিলেন আফগান ফেরত মুজাহিদ বর্তমানে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মুফতি শহিদুল ইসলাম। জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসিম উদ্দিন আল কায়েদা নেটওয়ার্কের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি বাংলা টিমকে আল কায়েদার আদর্শে উদ্বুদ্ধ করেছেন, তাঁর অনুসারীদের নিয়ে সশস্ত্র জিহাদ এবং কথিত 'নাস্তিক ব্লগার'দের হত্যার মিশনেও নেমেছিলেন? গণজাগরণ মঞ্চের শুরুর দিকে ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পল্লবীতে নিজ বাসার সামনে ব্লগার শহীদ রাজীব হায়দার হত্যাকা-ের পর জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহর নাম প্রথম জানা যায়। 
সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদা ও লস্কর-ই- তৈয়বার সক্রিয় নেতা ও সদস্যরা বাংলাদেশে ধরা পড়ছে। তারা তাদের জঙ্গী নেটওয়ার্কের কথা স্বীকার করছে। নিরাপত্তা বিশ্লেশকরা স্পষ্ট করেই বলছেন, আল কায়েদার টার্গেট এখন বাংলাদেশ। আল কায়েদা পাকিস্তানের জঙ্গী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা ও বাংলাদেশের জঙ্গী সংগঠন জেএমবি এবং হুজির সহায়তায় বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়েছে। জামায়াত শিবিরের সহায়তায় জেএমবি ও হুজির সঙ্গে সম্মিলিতভাবে আল কায়েদার বাংলাদেশে জঙ্গী হামলা চালানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভৌগোলিক কারণে ও প্রতিশোধ গ্রহণের বিষয়ে বাংলাদেশে আত্মঘাতী এবং জঙ্গী হামলার জন্য আল কায়েদা নিরাপদ ও সুবিধাজনক দেশ হিসেবে বেছে নিচ্ছে। নিরাপত্তা ও সামরিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আব্দুর রশিদ বলছিলেন, বাংলাদেশে যত জঙ্গী সংগঠনের নেতা আছে তা জামায়াত থেকে উৎপত্তি। ৪০ থেকে ৪২টি জঙ্গী সংগঠন আছে। এর মধ্যে ১০ থেকে ১২টি জঙ্গী সংগঠন সক্রিয়। আবদুর রশীদ বলেন, আল কায়েদা সরাসরি বাংলাদেশে কাজ না করলেও তাদের আদেশের অনুসারী জঙ্গী সংগঠন বাংলাদেশে আছে। শীর্ষ আল কায়েদা নেতার আহ্বানে তারা যে উজ্জীবিত হবে তা বলা যায়। ইসলামপন্থী ছোট ছোট জঙ্গী সংগঠনগুলো জিহাদের ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে পারে বলেও তিনি মনে করছেন। বলেন, আল কায়েদা আমাদের মুক্তিযুদ্ধকেও অপমান করেছে। তবে স্বাধীনতা বিরোধীরা তাদের সঙ্গে অনেক আগে থেকেই একাত্মতা ঘোষণা করেছে। আর স্বাধীনতা বিরোধীরাই যে এসব জঙ্গীর মদদদাতা তা নিয়ে কোন সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই বলেও তিনি মনে করেন। লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলছিলেন, ১৫ বছর ধরে আমরা তথ্য-প্রমাণসহ বলে আসছি দেশে আল কায়েদার হয়ে কাজ করছে জামায়াতসহ তার সমমনা উগ্রবাদীরা দলগুলো। কাজেই ঘৃণ্য এই অপশক্তি দেশকে আর একটি আফগানিস্তান বা পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করার আগেই দেশ থেকে তাদের নির্মূল করতে হবে। আজ তথ্য-প্রমাণসহ কর্মকা- পরিষ্কার করে দিয়েছে আল কায়েদা নেতা। এখন সরকারের উচিত হবে অবিলম্বে জামায়াত-হেফাজতসহ সকল উগ্রবাদী জঙ্গী সংগঠন নিষিদ্ধ করা। তা না হলে দ্রুতই বাংলাদেশ আল কায়েদার ঘাঁটিতে পরিণত হবে। শাহরিয়ার কবির বলেছেন, আল কায়দার সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গী ও জামায়াতের সম্পর্ক নতুন কিছু নয়, এটি নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ সম্পর্ক আফগান জিহাদের সময় থেকে। হরকাতুল জিহাদের ১১৬ জন শীর্ষ নেতা প্রত্যক্ষভাবে আফগানিস্তানে জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ট্রেনিং নিয়েছেন।
প্রকাশ :মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৪, ৬ ফাল্গুন ১৪২


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___