।।২৩মার্চ,১৯৭১-বিদ্রোহের রাত এবং মুস্তাফামনোয়ার ও ফাহমিদা খাতুন।।
১৯৭১-এর সেই রাতটি ছিল বাঙ্গালী জাতির জীবনে একটি বিশাল বিদ্রোহের--গণমাধ্যমের পক্ষ হতে
পাকিস্হানকে অস্বীকার করার রাত। দিনটি ১৯৪৭'র পর "পাকিস্হান দিবস" হিসেবে পালিত হয়ে অাসছিল।
পূর্ববাংলায় শেষ পালিত হয় ১৯৭০সালে।
১৯৭১এর ১মার্চ হতেই যে উত্তাল বিদ্রোহের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে সারা বাঙলায়--তা বাঙ্গালীর জীবনে প্রথম
সম্মিলিত উত্থান এনেছিল।সবার ভেতরে কম্পন তুলেছিল চাই স্বাধীনতা। সারাদেশ জুড়ে চলছে তারই প্রস্তুতি।
৭মার্চের ডাক শুনে স্হির করে নিয়েছিল বাঙ্গালী যে যার কর্তব্য।পাকিস্হানের প্রতি অসহযোগ চলছে সর্বত্র।
পাকিস্হান টেলিভিশন কর্পোরেশন ঢাকা ততোদিনে পরিণত হয়েছে ঢাকা টেলিভিশন কেন্দ্র। দেশপ্রেম,আন্দোলন
সংগ্রাম তার অনুষ্ঠান জুড়ে। ডিআইটিভবনে তখন পাকি সেনা ক্যাম্প।
২৩মার্চ"পাকিস্হান দিবসে" রাত দশটার পর শুধু "আগুন" নিয়ে গান প্রচার হতে থাকে ।লাইভ অনুষ্ঠান।।
সেলিনা মালেক চৌধুরী গাইছেন- "ওরে আগুন আমার ভাই"।ইফপাত আরা দেওয়ান গাইতে থাকেন-
"যদি তোর ভাবনা থাকেফিরে যা না"।ডাকসুর তখন সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সংস্কৃতি সংসদের সম্পাদক
ইকবাল আহমদ গাইছেন-"উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে"।এরপর কোরাসে-
" বুক বেঁধে তুই দাঁড়া দেখি"। শিল্পীদেরকে ক্যামেরার কায়দায় সংখ্যায় অগণ্য করে তোলা হচ্ছিল ।খানিক পর পরই গানট বাজছিল।
অনুষ্ঠানের পরিকল্পক নির্দেশনা ক্যামেরায় তখন সবার প্রিয় চিত্রকর-গায়ক-নাটকনির্মাতা-টিভির প্রযোজক কবি গোলাম
মোস্তফা তনয় মুস্তাফা মনোয়ার(ফেবু বন্ধূ সত্তরোর্ধ ফরিদা মজিদের মন্টু মামা)।সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেইছেন-অনুষ্ঠান শেষে
প্রতিদিনের মতো পাকিস্হানের পতাকা প্রদর্শনের নিয়ম ভঙ্গ করবেন এবং পাকিস্হান দিবসকে অস্বীকার করা লক্ষ্য।
ক্যামেরার সামনে এলেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা,কাজী মোতাহার হোসেনের কন্যা ফাহমিদা খাতুন।তিনি গেয়ে
চলেছেন-"আজি বাংলাদেশের হূদয় হতে"।দীর্ঘ গানটি তিনি ফিরে ফিরে গাইছিলেন।গানটিতে মন্দির শঙ্খ,ললাট নেত্র
ইত্যাকার শব্দ থাকায় পাকি সেনা কর্মকর্তারা ক্ষিপ্ত হতে থাাকে। ফোন করে ডিআইটি ভবন উড়িয়ে দেবার হুমকি দিতে
থাকে--ক্যাম্পের সেনারা স্টেনগান নিয়ে স্টুডিওর দরজায়।বাইরে ততক্ষণে ট্যাংক মোতায়েনও করা হয়েছে।
"মন্টু"র লক্ষ্য পূরণ হতে চলেছে তখন।ফাহমিদা গানটি টেনে টেনে গেয়ে রাত ১২টা পার করে দিলেন।
নিয়মানুযায়ী রাত ১২টায় অধিবেশন শেষ হতো জাতীয় সংগীতের সাথে পতাকা প্রদর্শন দিয়ে। কিন্তু ২৩মার্চ
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন ৩২নং বাড়িতে-তার মানে পাকিস্হান মৃতপ্রায়।আর পাকিসেনারা পতাকা
দেখানো না হলে চুরমার করে দেবার সর্বশেষ হুমকি দেয়।
রাত ১২টা ১০মিনিটে ঘোষণা হলো আজ ২৪ মার্চ। আমাদের অধিবেশন শেষ হলো।তারপর পাকি পতাকা দেখানো হলো।
সেই মন্টু মুক্তিযুদ্ধের সম্মানিত সৈনিক ছিলেন। মুজিবনগরেসহ অনেক বড় ভূমিকা রেখেছেন।২৫মার্চের পর ফাহমিদাকে
হানাদাররা খুঁজেছিলো। রবীন্দ্রসংগীতের এই শিল্পীর অবদান বিশাল।১৯৭০সালে কবি শামসুর রাহমান তাঁকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন।
৪৩বছর আগের এই বীরেরা এখনো জীবিত। আমরা অকর্মার ধাড়ি বলে তাদের আজো সম্মানিত করি নি। তাদের নিয়ে প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করা হয় নি।
বীরযোদ্ধা মুস্তাফা মনোয়ার ও শিল্পী ফাহমিদা খাতুনকে ৪৩ বছর পর হলেও জানাই টুপিখোলা স্যালুট।
১৯৭১-এর সেই রাতটি ছিল বাঙ্গালী জাতির জীবনে একটি বিশাল বিদ্রোহের--গণমাধ্যমের পক্ষ হতে
পাকিস্হানকে অস্বীকার করার রাত। দিনটি ১৯৪৭'র পর "পাকিস্হান দিবস" হিসেবে পালিত হয়ে অাসছিল।
পূর্ববাংলায় শেষ পালিত হয় ১৯৭০সালে।
১৯৭১এর ১মার্চ হতেই যে উত্তাল বিদ্রোহের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে সারা বাঙলায়--তা বাঙ্গালীর জীবনে প্রথম
সম্মিলিত উত্থান এনেছিল।সবার ভেতরে কম্পন তুলেছিল চাই স্বাধীনতা। সারাদেশ জুড়ে চলছে তারই প্রস্তুতি।
৭মার্চের ডাক শুনে স্হির করে নিয়েছিল বাঙ্গালী যে যার কর্তব্য।পাকিস্হানের প্রতি অসহযোগ চলছে সর্বত্র।
পাকিস্হান টেলিভিশন কর্পোরেশন ঢাকা ততোদিনে পরিণত হয়েছে ঢাকা টেলিভিশন কেন্দ্র। দেশপ্রেম,আন্দোলন
সংগ্রাম তার অনুষ্ঠান জুড়ে। ডিআইটিভবনে তখন পাকি সেনা ক্যাম্প।
২৩মার্চ"পাকিস্হান দিবসে" রাত দশটার পর শুধু "আগুন" নিয়ে গান প্রচার হতে থাকে ।লাইভ অনুষ্ঠান।।
সেলিনা মালেক চৌধুরী গাইছেন- "ওরে আগুন আমার ভাই"।ইফপাত আরা দেওয়ান গাইতে থাকেন-
"যদি তোর ভাবনা থাকেফিরে যা না"।ডাকসুর তখন সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সংস্কৃতি সংসদের সম্পাদক
ইকবাল আহমদ গাইছেন-"উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে"।এরপর কোরাসে-
" বুক বেঁধে তুই দাঁড়া দেখি"। শিল্পীদেরকে ক্যামেরার কায়দায় সংখ্যায় অগণ্য করে তোলা হচ্ছিল ।খানিক পর পরই গানট বাজছিল।
অনুষ্ঠানের পরিকল্পক নির্দেশনা ক্যামেরায় তখন সবার প্রিয় চিত্রকর-গায়ক-নাটকনির্মাতা-টিভির প্রযোজক কবি গোলাম
মোস্তফা তনয় মুস্তাফা মনোয়ার(ফেবু বন্ধূ সত্তরোর্ধ ফরিদা মজিদের মন্টু মামা)।সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেইছেন-অনুষ্ঠান শেষে
প্রতিদিনের মতো পাকিস্হানের পতাকা প্রদর্শনের নিয়ম ভঙ্গ করবেন এবং পাকিস্হান দিবসকে অস্বীকার করা লক্ষ্য।
ক্যামেরার সামনে এলেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা,কাজী মোতাহার হোসেনের কন্যা ফাহমিদা খাতুন।তিনি গেয়ে
চলেছেন-"আজি বাংলাদেশের হূদয় হতে"।দীর্ঘ গানটি তিনি ফিরে ফিরে গাইছিলেন।গানটিতে মন্দির শঙ্খ,ললাট নেত্র
ইত্যাকার শব্দ থাকায় পাকি সেনা কর্মকর্তারা ক্ষিপ্ত হতে থাাকে। ফোন করে ডিআইটি ভবন উড়িয়ে দেবার হুমকি দিতে
থাকে--ক্যাম্পের সেনারা স্টেনগান নিয়ে স্টুডিওর দরজায়।বাইরে ততক্ষণে ট্যাংক মোতায়েনও করা হয়েছে।
"মন্টু"র লক্ষ্য পূরণ হতে চলেছে তখন।ফাহমিদা গানটি টেনে টেনে গেয়ে রাত ১২টা পার করে দিলেন।
নিয়মানুযায়ী রাত ১২টায় অধিবেশন শেষ হতো জাতীয় সংগীতের সাথে পতাকা প্রদর্শন দিয়ে। কিন্তু ২৩মার্চ
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন ৩২নং বাড়িতে-তার মানে পাকিস্হান মৃতপ্রায়।আর পাকিসেনারা পতাকা
দেখানো না হলে চুরমার করে দেবার সর্বশেষ হুমকি দেয়।
রাত ১২টা ১০মিনিটে ঘোষণা হলো আজ ২৪ মার্চ। আমাদের অধিবেশন শেষ হলো।তারপর পাকি পতাকা দেখানো হলো।
সেই মন্টু মুক্তিযুদ্ধের সম্মানিত সৈনিক ছিলেন। মুজিবনগরেসহ অনেক বড় ভূমিকা রেখেছেন।২৫মার্চের পর ফাহমিদাকে
হানাদাররা খুঁজেছিলো। রবীন্দ্রসংগীতের এই শিল্পীর অবদান বিশাল।১৯৭০সালে কবি শামসুর রাহমান তাঁকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন।
৪৩বছর আগের এই বীরেরা এখনো জীবিত। আমরা অকর্মার ধাড়ি বলে তাদের আজো সম্মানিত করি নি। তাদের নিয়ে প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করা হয় নি।
বীরযোদ্ধা মুস্তাফা মনোয়ার ও শিল্পী ফাহমিদা খাতুনকে ৪৩ বছর পর হলেও জানাই টুপিখোলা স্যালুট।
__._,_.___