বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৯ ভাদ্র ১৪২১
বিএনপি ও তারেক রহমানের রাজনীতির ভবিষ্যত
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
পয়লা সেপ্টেম্বর সোমবার বিএনপি বা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হলো। এবারের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন দলের নেত্রী খালেদা জিয়া তার স্বামী দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতে গেলেও ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় উপস্থিত হতে পারেননি। দলের সূত্র থেকে জানা যায়, তিনি নানা রোগব্যাধি ও বয়সাধিক্যের ভার আর সামাল দিয়ে উঠতে পারছেন না। দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য, দেশের সব পত্র-পত্রিকা এমনকি বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল বাংলা দৈনিক 'প্রথম আলো'তে পর্যন্ত বলা হয়েছে, বর্তমানের মতো এমন দুর্দিন বিএনপির আর কখনও আসেনি।
এই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে যে বৈশিষ্ট্যটি এবার সবচাইতে বেশি চমক সৃষ্টি করেছে, তা হলো একটি খবর। খবরটি হলো, বিএনপির 'নির্বাহী নেতা' তারেক রহমান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। খবরটির সত্যাসত্য এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি। কিন্তু লন্ডনের বাংলাদেশী মহলে তা জোরেশোরে ছড়িয়ে পড়েছে এবং বাংলাদেশেও একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকে তা প্রকাশিত হয়েছে। বিএনপি বা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তার কোন প্রতিবাদ এখন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
বিএনপির এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে এই দলটির এবং তার ভাবী নেতা তারেক রহমানের রাজনীতির ভবিষ্যত সম্পর্কে একটা আভাস পাওয়া যায়। বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল মিডিয়াগুলোর মতেও এই ভবিষ্যত ভাল নয়। কোন কোন মিডিয়ায় তো স্পষ্টই বলা হয়েছে, বিএনপির এমন দুর্দিন আর কখনও আসেনি। কথাটা বিএনপির নেতারাও প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছেন। পয়লা সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় দলের ভারবাহী (বহুদিন ধরে তিনি ভারপ্রাপ্ত) মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, 'এই দুর্দিন সারা বাংলাদেশের।'
তিনি সম্ভবত বোঝাতে চেয়েছেন, তার দলের দুর্দিন বলে যাকে বলা হচ্ছে তা সারা দেশের দুর্দিন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এই দুর্দিন টের পাচ্ছে না; বরং ঢোলের বাদ্য থামলে যেমন মানুষ শান্তি পায় তেমনি আন্দোলনের নামে বিএনপির সন্ত্রাসের রাজনীতি বন্ধ হতেই দেশের মানুষ বহুকাল পর একটু শান্তি ও স্বস্তিতে দিন কাটাচ্ছে। ফলে রমজানের পর আন্দোলনের হাঁকডাক দিয়ে বিএনপি জনগণের কাছ থেকে সাড়া পায়নি। এখন কোরবানির ঈদের পর আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে।
গোঁদা পা দিয়ে লাথি মারার ইচ্ছা একজন মানুষের যতই থাকুক, তার শক্তির পরিমাপ আগে করতে হবে। বিএনপি গত সাধারণ নির্বাচনে যোগ না দিয়ে এখন জনবিচ্ছিন্ন এবং কোমর ভাঙ্গা। বিএনপির 'পারিবারিক আত্মীয়' এবং লেঠেল জামায়াত এখন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। তারা নিজেদের কোন ইস্যু ছাড়া কেবল বিএনপিকে বাঁচাতে মাঠে নামবে না। এই অবস্থায় ফখরুল মির্জা এবং দলের দু'চারজন পাতি নেতার গলাবাজি ছাড়া বর্তমান রাজনীতিতে মূলধন বলতে বিএনপির আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
বিএনপির কোন নীতি নেই এবং কোন সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচীও নেই।
জিয়াউর রহমানকে শহীদ বানিয়ে, আওয়ামী লীগের বিরোধিতার নামে স্বাধীনতার মূল আদর্শগুলোর বিরোধিতা এবং কারণে অকারণে ভারতবিদ্বেষী প্রচার দ্বারা একটি রাজনৈতিক দল তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না। এতদিন বিএনপি টিকে রয়েছে দেশী-বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহল প্রচারণার সাহায্যে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে 'আপোসহীন নেত্রী' হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার যে ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল, সেই ভাবমূর্তির সাহায্যে। তাছাড়া ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে নিহত জিয়াউর রহমানের বিধবা স্ত্রী হিসেবেও খালেদা জিয়ার প্রতি মানুষের সহানুভূতি আছে।
এই সহানুভূতিকে বেগম জিয়া কাজে লাগিয়েছেন। নিহত স্বামীর জন্য তার মনে যতটা শোক, তার চাইতে চোখে শোকাশ্রু বহায়েছেন অনেক বেশি। কিন্তু তার তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলেও জিয়া হত্যার তদন্ত বা জিয়াউর রহমানের প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচারের ব্যবস্থা করেননি। জেনারেল এরশাদের প্রতি তিনি প্রচণ্ড ক্রোধ দেখিয়েছেন তার স্বামী হত্যার হোতা হিসেবে। এমনকি এই ক্রোধের শিকার হয়ে জেনারেল এরশাদকে ক্ষমতা ত্যাগের পর দীর্ঘকাল জেল খাটতেও হয়েছে। কিন্তু এই জেনারেলকেই তিনি আবার ক্ষমতার স্বার্থে কাছে টেনে নেন এবং একই মঞ্চে বসে সভা-সম্মেলন করেন।
এক সময় আওয়ামী লীগবিরোধী মঞ্চে একটা চমৎকার সম্মিলন ঘটেছিল। একাত্তরের ঘাতক জামায়াত, বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন বলে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনা যায়, সেই জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি এবং জিয়াউর রহমানের হত্যা চক্রান্তে যুক্ত ছিলেন বলে যাকে সন্দেহ করা হয় সেই জেনারেল এরশাদ (জেনারেল মঞ্জু হত্যা মামলারও যিনি ছিলেন অভিযুক্ত)। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অভিযুক্ত ঘাতকদের এক সময়ের এই 'মহাসম্মিলনী' আর কখনও ঘটেনি।
দু'শ' বছর আগে নবাবী আমলে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা চক্রান্তের নায়কদের নিয়ে গঠিত মহাসম্মিলনীতে ঘসেটি বেগমের নেতৃত্ব দেয়ার মতো এ যুগে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঘাতক ও দালালদের মহাসম্মিলনীতে নেতৃত্বদানেও খালেদা জিয়া নজির স্থাপন করেছেন। কিন্তু নীতি বর্জিত রাজনীতি কখনও টেকে না। অভিযুক্ত ঘাতকদের মহাসম্মিলনীও টেকেনি। '৭১-এর পর গত বছর (২০১৩) দেশময় সন্ত্রাস ছড়িয়েও জামায়াত এখন নিষ্ক্রিয় না হলেও নির্বীর্য। এরশাদ সাহেবের এখন না ঘরকা না ঘাটকার দশা। অন্যদিকে সাধারণ নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি যে চরম বোকামি করেছে, তার ফলে তার অবস্থা হাঁটুভাঙ্গা দ'য়ের মতো। সাপুড়ে বাঁশি বাজাচ্ছে। কিন্তু সাপ ঝাঁপি থেকে বের হচ্ছে না।
বেগম জিয়া কখনও জনগণকে তার দলের বা তার নেতৃত্বের ক্ষমতার উৎস করে তোলেননি। তার ক্ষমতার প্রধান উৎস ছিল দু'টি। ক্যান্টনমেন্ট এবং লায়েক হওয়ার পর পুত্র তারেক রহমান। ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি তার হাতছাড়া হয়েছে এবং পুত্র তারেককেও নানা গুরুতর অপরাধের মামলার আসামি হয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে। তার দেশে ফেরার সাহস নেই। তিনি বিদেশে বসে কিছু ভাড়াটে গবেষক যোগাড় করে ইতিহাসবিদ সেজেছেন। তিনি একদিকে নতুন নতুন ঐতিহাসিক তথ্য আবিষ্কার করে লোক হাসাচ্ছেন এবং অন্যদিকে মা'কে দেশে তার রাজনীতির খুঁটি হিসেবে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিএনপির অস্তিত্ব ও ঐক্য ধরে রাখার জন্য বেগম জিয়া পুত্র তারেককে দলের নেতাকর্মীদের নাকের ডগায় মূলোর মতো ঝুলিয়ে রেখেছেন। তাদের হয়ত বোঝাতে চাইছেন, তোমাদের ভয় নেই। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে কি হবে, দলকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তারেক রহমান আছেন। তিনি প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য যথাসময়ে 'মহানায়কের' বেশে দেশে ফিরবেন।
এই আশায় বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীরা চাতক পাখির মতো তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রতীক্ষায় বসে আছেন। কিন্তু 'মহানায়ক' সুস্থ শরীরে সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন, সৌদি আরবে যাচ্ছেন; কিন্তু দেশে ফিরছেন না। ফলে বিএনপির তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত হতাশা ক্রমে বাড়ছে। খবর প্রকাশিত হয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে দলে দলে বিএনপি-কর্মী দল ছাড়ছেন। অনেকে আওয়ামী লীগেও চলে যাচ্ছেন। দলের এই দুর্দিনের ছায়াই পড়েছে এবারের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারেননি।
নীতিহীন দলের নেতৃত্বেও যদি ভাঙন ধরে তাহলে দল টেকে না। খবরটি যদি সত্য হয় যে, খালেদা জিয়া ক্রমশ অসুস্থতা ও বয়সাধিক্যে দলকে নেতৃত্বদানে সক্ষমতা হারাচ্ছেন এবং অন্যদিকে তারেক রহমান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভের চেষ্টা শুরু করেছেন সে দেশেই স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য। অর্থাৎ তিনি দেশে ফিরে মামলা-মোকদ্দমার মোকাবেলা করতে চান না এবং নিশ্চিত কারাবাসও এড়াতে চান, তাহলে বিএনপির আগামী কোন সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হওয়া দূরের কথা, তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই দুরূহ হবে। হতাশ ও দিকভ্রষ্ট নেতা-কর্মীরা অনেকে অন্য দলে চলে যাবেন। ভাসানী ন্যাপ ও জাসদের মতো বিএনপি নানা স্পিøন্টার্স গ্রুপে ভাগ হবে এবং শেষ পর্যন্ত সাইনবোর্ডসর্বস্ব দল হয়ে দাঁড়াবে। মুসলিম লীগ ভেঙে অনেক মুসলিম লীগ তৈরি হওয়ার মতো বিএনপি ভেঙে অনেক বিএনপি গঠিত হলেও বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।
বেগম খালেদা জিয়া যদি অসুস্থতাবশত দলকে নেতৃত্ব দিতে না পারেন এবং তারেক রহমানও দেশে ফেরার সাহস না দেখিয়ে বিদেশেই স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করেন, তাহলে আগামী সাধারণ নির্বাচনে বিএনপির জয়ী হওয়া দূরের কথা, ওই সময় পর্যন্ত দলটির বর্তমান দুর্দিন আরও কতটা ঘনায় তা দেখার রইল। আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজ তো গত ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের পর থেকেই হৈ চৈ তুলেছেন এই নির্বাচনের বৈধতা নেই। জনসাধারণ এই নির্বাচন মেনে নেয়নি। কিন্তু মিডিয়ার জনসমীক্ষায় দেখা যায় এখন অন্য চিত্র।
ঢাকার যে 'ঢাকা ট্রিবিউন' ইংরেজী দৈনিকটি কিছুকাল আগে খবর ছেপেছিল যে, দেশের মানুষ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে খুশি নয়, তারা তাড়াতাড়ি আরেকটি সাধারণ নির্বাচন চায়; সেই 'ট্রিবিউন' দু'দিন আগে একটি জনমত জরিপের ফল প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, দেশের ৭৭ ভাগ মানুষ বর্তমান সরকারের কাজে খুশি। তারা তাড়াতাড়ি আরেকটি নির্বাচন চায় না। বরং চায় এই সরকার তাদের পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করুক। তাড়াতাড়ি আরেকটি নির্বাচন হলে তারা মনে করে, দেশে আবার সন্ত্রাস, অরাজকতা, রাজনৈতিক গুম-খুন দেখা দেবে। মানুষের জীবনে শান্তি ও স্বস্তি থাকবে না।
এই জনমত সমীক্ষার ফলও বিএনপি ও তারেক রহমানের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য অশনি সঙ্কেতস্বরূপ। তার সম্পর্কে লন্ডনের বাজারে নানা গুজব। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ছয় বছরের বেশি সময় যাবত তিনি বিদেশে রাজার হালে বসবাস করছেন। তার এই অর্থের উৎস কি? তার সম্পর্কে অভিযোগ, তিনি শুধু বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যই চেষ্টা করছেন না, দেশী-বিদেশী একাধিক ব্যবসায়ী কার্টেলের সঙ্গে জড়িত হয়ে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে এবং অসত্য প্রচারণায় দু'হাতে অর্থ ঢেলে দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা ও অরাজকতা সৃষ্টি করতে চান।
দেশে ফিরে রাজনীতি করার সাহস তার নেই। দেশে ফিরবেন নাও মোটে। তাতে দেশে তার দল গোল্লায় যাক তাতে তার মাথা ব্যথা নেই। তিনি বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রের ঘুঁটি চালবেন। বিএনপির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষেও তিনি আবার লন্ডনে বসে 'বাণী' প্রচার করেছেন। তাতে বিএনপির সাধারণ নেতা-কর্মীদের জন্য কোন কর্মসূচী ও দিক নির্দেশনা নেই। আবার তিনি ভাড়াটে গবেষকদের সাহায্যে ইতিহাসবিদ সেজেছেন এবং তার পিতা জেনারেল জিয়াউর রহমান যে কত বড় পুণ্যাত্মা ছিলেন তার 'গবেষণাম-িত' বিবরণ দিয়েছেন। বর্তমান রেখে তারেক এখন অতীতাশ্রয়ী। সম্ভবত তার রাজনীতিও অতীতমুখী হয়েছে। অতীতমুখী মানুষের শেষ পরিণতি অতীতের অতলেই শেষ পর্যন্ত তলিয়ে যাওয়া। তারেক রহমানের জন্য সম্ভবত সেই পরিণতিই অপেক্ষা করছে।
বিএনপির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় নেত্রীবিহীন অনুষ্ঠান এবং লন্ডনে বসে তারেক রহমানের 'ইতিহাস চর্চা' দল এবং তারেক রহমানের রাজনীতির ভবিষ্যত সম্পর্কে কোন সম্ভাবনার আভাস দেয় না। কিন্তু দেশে দ্বিদলীয় সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রয়োজন। বিএনপি যদি দেশে এই প্রয়োজন মেটাতে চায় তাহলে তাকে চক্রান্ত ও মিথ্যা ইতিহাস চর্চার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পাকিস্তানের আইএসআইয়ের অভিশপ্ত কব্জা থেকে মুক্ত হতে হবে।
আমাকে বাংলাদেশের এক সাংবাদিক বন্ধু একটি চমৎকার কথা বলেছেন, তিনি বলেছেন, "যেদিন দেখবেন বেগম খালেদা জিয়া আর বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিবসে বিশাল কেক কেটে নিজের বানোয়াট জন্মদিনের অশ্লীল উৎসব আর করছেন না, জানবেন বিএনপি সেদিন আইএসআইয়ের কব্জা থেকে মুক্ত হয়েছে।"
আমার অধিক মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
[লন্ডন, ২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, ২০১৪]
এই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে যে বৈশিষ্ট্যটি এবার সবচাইতে বেশি চমক সৃষ্টি করেছে, তা হলো একটি খবর। খবরটি হলো, বিএনপির 'নির্বাহী নেতা' তারেক রহমান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। খবরটির সত্যাসত্য এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি। কিন্তু লন্ডনের বাংলাদেশী মহলে তা জোরেশোরে ছড়িয়ে পড়েছে এবং বাংলাদেশেও একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকে তা প্রকাশিত হয়েছে। বিএনপি বা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তার কোন প্রতিবাদ এখন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
বিএনপির এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে এই দলটির এবং তার ভাবী নেতা তারেক রহমানের রাজনীতির ভবিষ্যত সম্পর্কে একটা আভাস পাওয়া যায়। বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল মিডিয়াগুলোর মতেও এই ভবিষ্যত ভাল নয়। কোন কোন মিডিয়ায় তো স্পষ্টই বলা হয়েছে, বিএনপির এমন দুর্দিন আর কখনও আসেনি। কথাটা বিএনপির নেতারাও প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছেন। পয়লা সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় দলের ভারবাহী (বহুদিন ধরে তিনি ভারপ্রাপ্ত) মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, 'এই দুর্দিন সারা বাংলাদেশের।'
তিনি সম্ভবত বোঝাতে চেয়েছেন, তার দলের দুর্দিন বলে যাকে বলা হচ্ছে তা সারা দেশের দুর্দিন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এই দুর্দিন টের পাচ্ছে না; বরং ঢোলের বাদ্য থামলে যেমন মানুষ শান্তি পায় তেমনি আন্দোলনের নামে বিএনপির সন্ত্রাসের রাজনীতি বন্ধ হতেই দেশের মানুষ বহুকাল পর একটু শান্তি ও স্বস্তিতে দিন কাটাচ্ছে। ফলে রমজানের পর আন্দোলনের হাঁকডাক দিয়ে বিএনপি জনগণের কাছ থেকে সাড়া পায়নি। এখন কোরবানির ঈদের পর আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে।
গোঁদা পা দিয়ে লাথি মারার ইচ্ছা একজন মানুষের যতই থাকুক, তার শক্তির পরিমাপ আগে করতে হবে। বিএনপি গত সাধারণ নির্বাচনে যোগ না দিয়ে এখন জনবিচ্ছিন্ন এবং কোমর ভাঙ্গা। বিএনপির 'পারিবারিক আত্মীয়' এবং লেঠেল জামায়াত এখন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। তারা নিজেদের কোন ইস্যু ছাড়া কেবল বিএনপিকে বাঁচাতে মাঠে নামবে না। এই অবস্থায় ফখরুল মির্জা এবং দলের দু'চারজন পাতি নেতার গলাবাজি ছাড়া বর্তমান রাজনীতিতে মূলধন বলতে বিএনপির আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
বিএনপির কোন নীতি নেই এবং কোন সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচীও নেই।
জিয়াউর রহমানকে শহীদ বানিয়ে, আওয়ামী লীগের বিরোধিতার নামে স্বাধীনতার মূল আদর্শগুলোর বিরোধিতা এবং কারণে অকারণে ভারতবিদ্বেষী প্রচার দ্বারা একটি রাজনৈতিক দল তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না। এতদিন বিএনপি টিকে রয়েছে দেশী-বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহল প্রচারণার সাহায্যে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে 'আপোসহীন নেত্রী' হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার যে ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল, সেই ভাবমূর্তির সাহায্যে। তাছাড়া ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে নিহত জিয়াউর রহমানের বিধবা স্ত্রী হিসেবেও খালেদা জিয়ার প্রতি মানুষের সহানুভূতি আছে।
এই সহানুভূতিকে বেগম জিয়া কাজে লাগিয়েছেন। নিহত স্বামীর জন্য তার মনে যতটা শোক, তার চাইতে চোখে শোকাশ্রু বহায়েছেন অনেক বেশি। কিন্তু তার তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলেও জিয়া হত্যার তদন্ত বা জিয়াউর রহমানের প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচারের ব্যবস্থা করেননি। জেনারেল এরশাদের প্রতি তিনি প্রচণ্ড ক্রোধ দেখিয়েছেন তার স্বামী হত্যার হোতা হিসেবে। এমনকি এই ক্রোধের শিকার হয়ে জেনারেল এরশাদকে ক্ষমতা ত্যাগের পর দীর্ঘকাল জেল খাটতেও হয়েছে। কিন্তু এই জেনারেলকেই তিনি আবার ক্ষমতার স্বার্থে কাছে টেনে নেন এবং একই মঞ্চে বসে সভা-সম্মেলন করেন।
এক সময় আওয়ামী লীগবিরোধী মঞ্চে একটা চমৎকার সম্মিলন ঘটেছিল। একাত্তরের ঘাতক জামায়াত, বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন বলে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনা যায়, সেই জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি এবং জিয়াউর রহমানের হত্যা চক্রান্তে যুক্ত ছিলেন বলে যাকে সন্দেহ করা হয় সেই জেনারেল এরশাদ (জেনারেল মঞ্জু হত্যা মামলারও যিনি ছিলেন অভিযুক্ত)। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অভিযুক্ত ঘাতকদের এক সময়ের এই 'মহাসম্মিলনী' আর কখনও ঘটেনি।
দু'শ' বছর আগে নবাবী আমলে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা চক্রান্তের নায়কদের নিয়ে গঠিত মহাসম্মিলনীতে ঘসেটি বেগমের নেতৃত্ব দেয়ার মতো এ যুগে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঘাতক ও দালালদের মহাসম্মিলনীতে নেতৃত্বদানেও খালেদা জিয়া নজির স্থাপন করেছেন। কিন্তু নীতি বর্জিত রাজনীতি কখনও টেকে না। অভিযুক্ত ঘাতকদের মহাসম্মিলনীও টেকেনি। '৭১-এর পর গত বছর (২০১৩) দেশময় সন্ত্রাস ছড়িয়েও জামায়াত এখন নিষ্ক্রিয় না হলেও নির্বীর্য। এরশাদ সাহেবের এখন না ঘরকা না ঘাটকার দশা। অন্যদিকে সাধারণ নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি যে চরম বোকামি করেছে, তার ফলে তার অবস্থা হাঁটুভাঙ্গা দ'য়ের মতো। সাপুড়ে বাঁশি বাজাচ্ছে। কিন্তু সাপ ঝাঁপি থেকে বের হচ্ছে না।
বেগম জিয়া কখনও জনগণকে তার দলের বা তার নেতৃত্বের ক্ষমতার উৎস করে তোলেননি। তার ক্ষমতার প্রধান উৎস ছিল দু'টি। ক্যান্টনমেন্ট এবং লায়েক হওয়ার পর পুত্র তারেক রহমান। ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি তার হাতছাড়া হয়েছে এবং পুত্র তারেককেও নানা গুরুতর অপরাধের মামলার আসামি হয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে। তার দেশে ফেরার সাহস নেই। তিনি বিদেশে বসে কিছু ভাড়াটে গবেষক যোগাড় করে ইতিহাসবিদ সেজেছেন। তিনি একদিকে নতুন নতুন ঐতিহাসিক তথ্য আবিষ্কার করে লোক হাসাচ্ছেন এবং অন্যদিকে মা'কে দেশে তার রাজনীতির খুঁটি হিসেবে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিএনপির অস্তিত্ব ও ঐক্য ধরে রাখার জন্য বেগম জিয়া পুত্র তারেককে দলের নেতাকর্মীদের নাকের ডগায় মূলোর মতো ঝুলিয়ে রেখেছেন। তাদের হয়ত বোঝাতে চাইছেন, তোমাদের ভয় নেই। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে কি হবে, দলকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তারেক রহমান আছেন। তিনি প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য যথাসময়ে 'মহানায়কের' বেশে দেশে ফিরবেন।
এই আশায় বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীরা চাতক পাখির মতো তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রতীক্ষায় বসে আছেন। কিন্তু 'মহানায়ক' সুস্থ শরীরে সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন, সৌদি আরবে যাচ্ছেন; কিন্তু দেশে ফিরছেন না। ফলে বিএনপির তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত হতাশা ক্রমে বাড়ছে। খবর প্রকাশিত হয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে দলে দলে বিএনপি-কর্মী দল ছাড়ছেন। অনেকে আওয়ামী লীগেও চলে যাচ্ছেন। দলের এই দুর্দিনের ছায়াই পড়েছে এবারের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারেননি।
নীতিহীন দলের নেতৃত্বেও যদি ভাঙন ধরে তাহলে দল টেকে না। খবরটি যদি সত্য হয় যে, খালেদা জিয়া ক্রমশ অসুস্থতা ও বয়সাধিক্যে দলকে নেতৃত্বদানে সক্ষমতা হারাচ্ছেন এবং অন্যদিকে তারেক রহমান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভের চেষ্টা শুরু করেছেন সে দেশেই স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য। অর্থাৎ তিনি দেশে ফিরে মামলা-মোকদ্দমার মোকাবেলা করতে চান না এবং নিশ্চিত কারাবাসও এড়াতে চান, তাহলে বিএনপির আগামী কোন সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হওয়া দূরের কথা, তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই দুরূহ হবে। হতাশ ও দিকভ্রষ্ট নেতা-কর্মীরা অনেকে অন্য দলে চলে যাবেন। ভাসানী ন্যাপ ও জাসদের মতো বিএনপি নানা স্পিøন্টার্স গ্রুপে ভাগ হবে এবং শেষ পর্যন্ত সাইনবোর্ডসর্বস্ব দল হয়ে দাঁড়াবে। মুসলিম লীগ ভেঙে অনেক মুসলিম লীগ তৈরি হওয়ার মতো বিএনপি ভেঙে অনেক বিএনপি গঠিত হলেও বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।
বেগম খালেদা জিয়া যদি অসুস্থতাবশত দলকে নেতৃত্ব দিতে না পারেন এবং তারেক রহমানও দেশে ফেরার সাহস না দেখিয়ে বিদেশেই স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করেন, তাহলে আগামী সাধারণ নির্বাচনে বিএনপির জয়ী হওয়া দূরের কথা, ওই সময় পর্যন্ত দলটির বর্তমান দুর্দিন আরও কতটা ঘনায় তা দেখার রইল। আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজ তো গত ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের পর থেকেই হৈ চৈ তুলেছেন এই নির্বাচনের বৈধতা নেই। জনসাধারণ এই নির্বাচন মেনে নেয়নি। কিন্তু মিডিয়ার জনসমীক্ষায় দেখা যায় এখন অন্য চিত্র।
ঢাকার যে 'ঢাকা ট্রিবিউন' ইংরেজী দৈনিকটি কিছুকাল আগে খবর ছেপেছিল যে, দেশের মানুষ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে খুশি নয়, তারা তাড়াতাড়ি আরেকটি সাধারণ নির্বাচন চায়; সেই 'ট্রিবিউন' দু'দিন আগে একটি জনমত জরিপের ফল প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, দেশের ৭৭ ভাগ মানুষ বর্তমান সরকারের কাজে খুশি। তারা তাড়াতাড়ি আরেকটি নির্বাচন চায় না। বরং চায় এই সরকার তাদের পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করুক। তাড়াতাড়ি আরেকটি নির্বাচন হলে তারা মনে করে, দেশে আবার সন্ত্রাস, অরাজকতা, রাজনৈতিক গুম-খুন দেখা দেবে। মানুষের জীবনে শান্তি ও স্বস্তি থাকবে না।
এই জনমত সমীক্ষার ফলও বিএনপি ও তারেক রহমানের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য অশনি সঙ্কেতস্বরূপ। তার সম্পর্কে লন্ডনের বাজারে নানা গুজব। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ছয় বছরের বেশি সময় যাবত তিনি বিদেশে রাজার হালে বসবাস করছেন। তার এই অর্থের উৎস কি? তার সম্পর্কে অভিযোগ, তিনি শুধু বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যই চেষ্টা করছেন না, দেশী-বিদেশী একাধিক ব্যবসায়ী কার্টেলের সঙ্গে জড়িত হয়ে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে এবং অসত্য প্রচারণায় দু'হাতে অর্থ ঢেলে দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা ও অরাজকতা সৃষ্টি করতে চান।
দেশে ফিরে রাজনীতি করার সাহস তার নেই। দেশে ফিরবেন নাও মোটে। তাতে দেশে তার দল গোল্লায় যাক তাতে তার মাথা ব্যথা নেই। তিনি বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রের ঘুঁটি চালবেন। বিএনপির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষেও তিনি আবার লন্ডনে বসে 'বাণী' প্রচার করেছেন। তাতে বিএনপির সাধারণ নেতা-কর্মীদের জন্য কোন কর্মসূচী ও দিক নির্দেশনা নেই। আবার তিনি ভাড়াটে গবেষকদের সাহায্যে ইতিহাসবিদ সেজেছেন এবং তার পিতা জেনারেল জিয়াউর রহমান যে কত বড় পুণ্যাত্মা ছিলেন তার 'গবেষণাম-িত' বিবরণ দিয়েছেন। বর্তমান রেখে তারেক এখন অতীতাশ্রয়ী। সম্ভবত তার রাজনীতিও অতীতমুখী হয়েছে। অতীতমুখী মানুষের শেষ পরিণতি অতীতের অতলেই শেষ পর্যন্ত তলিয়ে যাওয়া। তারেক রহমানের জন্য সম্ভবত সেই পরিণতিই অপেক্ষা করছে।
বিএনপির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় নেত্রীবিহীন অনুষ্ঠান এবং লন্ডনে বসে তারেক রহমানের 'ইতিহাস চর্চা' দল এবং তারেক রহমানের রাজনীতির ভবিষ্যত সম্পর্কে কোন সম্ভাবনার আভাস দেয় না। কিন্তু দেশে দ্বিদলীয় সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রয়োজন। বিএনপি যদি দেশে এই প্রয়োজন মেটাতে চায় তাহলে তাকে চক্রান্ত ও মিথ্যা ইতিহাস চর্চার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পাকিস্তানের আইএসআইয়ের অভিশপ্ত কব্জা থেকে মুক্ত হতে হবে।
আমাকে বাংলাদেশের এক সাংবাদিক বন্ধু একটি চমৎকার কথা বলেছেন, তিনি বলেছেন, "যেদিন দেখবেন বেগম খালেদা জিয়া আর বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিবসে বিশাল কেক কেটে নিজের বানোয়াট জন্মদিনের অশ্লীল উৎসব আর করছেন না, জানবেন বিএনপি সেদিন আইএসআইয়ের কব্জা থেকে মুক্ত হয়েছে।"
আমার অধিক মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
[লন্ডন, ২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, ২০১৪]
প্রকাশ: বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ১৯ ভাদ্র ১৪২১
__._,_.___