শিবির 'নিয়ন্ত্রিত' ছাত্রাবাসে অভিযান, রাইফেলসহ ৯ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার
চট্টগ্রাম ব্যুরো, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2015-03-18 08:41:35.0 BdST Updated: 2015-03-18 14:47:03.0 BdST
ইসলামী ছাত্র শিবিরের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম কলেজের দুটি ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের পাশাপাশি ৭২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটকরা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বুধবার ভোররাতে চট্টগ্রাম কলেজের সোহরাওয়ার্দী ও শেরেবাংলা ছাত্রাবাসে অভিযান চালানো হয় বলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত জানান।
তিনি বলেন, রাত ২টা থেকে ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ছাত্রাবাস দুটিতে অভিযান চালিয়ে ৭২ শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়।
অভিযান চলাকালে ছাত্রাবাসের পাশে চট্টগ্রাম কলেজের স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় একটি গর্তে শিবিরের ব্যানারে মোড়ানো অবস্থায় একে-২২ রাইফেলসহ নয়টি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়।
এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- একটি থ্রি নট থ্রি রাইফেল, তিনটি পিস্তল, তিনটি একনলা বন্দুক, একটি দোনলা বন্দুক, ১০০ রাউন্ড গুলি ও পাঁচটি রকেট ফ্লেয়ার।
চট্টগ্রাম কলেজে অভিযান শেষে সামনের মহসিন কলেজে যায় পুলিশ, যে কলেজেও দীর্ঘদিন ধরে শিবিরের জোরালো তৎপরতা রয়েছে।
ওই কলেজের মহসিন মুসলিম ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালিয়ে নাশকতায় জড়িত কাউকে ধরতে না পারলেও পাশের একটি পাহাড়ি গুহা থেকে আট শিবির কর্মীকে আটকের কথা জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এ সময় কলেজ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান থেকে পেট্রোল, বিস্ফোরক দ্রব্য ও হাতবোমা তৈরির সরঞ্জাম, ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
অভিযান চলাকালে সকাল ১০টার দিকে মহসিন কলেজে আসেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম মহানগরীতে সংঘটিত বিভিন্ন নাশকতার ঘটনায় জড়িতরা চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজে আশ্রয় নিতে পারে ধারণা থেকে এ অভিযান চালানো হয়।
চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাস থেকে উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, "একে-২২ রাইফেল সাধারণত সেনাবাহিনী ব্যবহার করে প্রশিক্ষণের জন্য।
"এগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এনে কিন্তু এখানে পুরো ক্যান্টনমেন্ট বানিয়ে রাখা হয়েছে।"
এসব অস্ত্র সংগ্রহ ও সেগুলো রাখার সঙ্গে শিক্ষকরাও জড়িত কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান নগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা জানান।
গত ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াত জোটের চলমান অবরোধে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগ ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
এই সময়ে সারা দেশে নাশকতায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।
নাশকতায় জড়িতদের ধরতে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এর আগে গত ৮ মার্চ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় একটি দুর্গম পাহাড়ে ছাত্র শিবিরের তিনটি আস্তানা থেকে ৭০টি পেট্রোল বোমা, ৫০টি হাতবোমা, ১২টি ধারালো অস্ত্র, চারটি আগ্নেয়াস্ত্র, ২৪টি গুলি ও তিনটি রকেট ফ্লেয়ার উদ্ধার করে পুলিশ।
অবরোধ-হরতালে মহাসড়কে নাশকতার জন্য সেখানে শিবির কর্মীরা এসব আস্তানা তৈরি করেছিল বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়।
ওই বাসা থেকেও শিবিরের গঠনতন্ত্র ও ইসলামী ছাত্রী সংস্থার কাগজপত্রসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার এক সপ্তাহ আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় দুর্গম পাহাড় থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও জঙ্গি প্রশিক্ষণের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
যেখানে নিয়মিত জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো বলে র্যাবের পক্ষ থেকে সে সময় জানানো হয়।
http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article940704.bdnews
RELATED STORIES
পাহাড়ের গুহায় মিলল ৮ শিবির কর্মী
2015-03-18 10:30:50.0
সীতাকুণ্ডে পাহাড়ে শিবিরের আস্তানায় অস্ত্র গুলি বোমা
2015-03-08 08:52:03.0
__._,_.___