Banner Advertiser

Tuesday, March 3, 2015

[mukto-mona] লেখক ও প্রকৌশলী অভিজিৎ রায় || খোরশেদ আলম



মঙ্গলবার ৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে রাত ৮ টা ০৮ মিনিটে প্রকাশিত

লেখক ও প্রকৌশলী অভিজিৎ রায় || খোরশেদ আলম

লেখক ও প্রকৌশলী অভিজিৎ রায় || খোরশেদ আলমবাংলাদেশপ্রেস ডেস্ক || অভিজিৎ রায় একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বাংলাদেশী-মার্কিন প্রকৌশলী, লেখক ও ব্লগার। তিনি বাংলাদেশের মুক্ত চিন্তার আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জন্ম গ্রহন করেন। অভিজিৎ রায় পেশায় একজন প্রকৌশলী ছিলেন কিন্তু তিনি তার স্ব-প্রতিষ্ঠিত সাইট মুক্তমনায় লেখালেখির জন্য পরিচিত। ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশে বইমেলা থেকে বের হওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে আহত করে।

জঙ্গিবাদীদের হাতে নৃশংসভাবে অভিজিৎ রায়ের হত্যার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা মিডিয়াগুলো তীব্র নিন্দার ঝড় তোলেন। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের নামকরা লেখকেরা তার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মানব বন্ধন করেন। তার হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সহযোগিতার জন্য আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই বাংলাদেশেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সম্প্রতি তার হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন আসামী জঙ্গিবাদী ফারাবীকে র‍্যাব গ্রেফতার করে ডিবি কার্যালয়ে সোপর্দ করে। 

অভিজিৎ রায়ের পিতা একুশে পুরস্কার বিজয়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ড. অজয় রায়। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক অজয় রায়ের দুই পুত্র। এর মধ্যে অভিজিৎ রায় বড়। ছোট ছেলে স্ত্রী নিয়ে ঢাকাতেই থাকেন বাবা-মা'র সঙ্গে। দুই ভাই-ই অসম্ভব মেধাবী ছিলেন শিক্ষা জীবনে। অভিজিৎ এর মা দীর্ঘদিন ধরে পেরালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী। এদিকে অভিজিৎ-এর নৃশংস হত্যাকাণ্ড এবং বন্যার আহত হওয়ার বিচার চেয়ে প্রথম থেকেই মিডিয়ায় বেশ সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছেন শিক্ষাবিদ অজয় রায়। 

প্রকৌশলী অভিজিৎ রায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। এসএসসি ও এইচএসসি পাসের পর ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হন অভিজিৎ। যন্ত্র প্রকৌশলে লেখাপড়ার পর কর্মজীবন শুরু করেন অটবিতে। চাকরিরত অবস্থায় বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে সিঙ্গাপুরে যান অভিজিৎ। পিএইচডি সম্পন্ন করার পরে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে তিনি জিপিএস প্রযুক্তির গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। অভিজিতের লেখা ৯ টি বই প্রকাশ পেয়েছে। 

তার প্রকাশিত বইগুলো হল-
১. আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী' (২০০৫)
২. মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে (২০০৭)
৩. স্বতন্ত্র ভাবনা : মুক্তচিন্তা ও বুদ্ধির মুক্তি (২০০৮)
৪. সমকামিতা: বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান (২০১০)
৫. অবিশ্বাসের দর্শন (২০১১)
৬. বিশ্বাস ও বিজ্ঞান (২০১২)
৭. ভালবাসা কারে কয় (২০১২)
৮. শূন্য থেকে মহাবিশ্ব (২০১৪)
৯. ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো: এক রবি-বিদেশিনীর খোঁজে (২০১৫)

অন্যদিকে, অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা (৩৫) নিয়মিত ব্লগে লেখার পাশাপাশি এনালাইসিস্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। একমাত্র কন্যা তৃষা আহমেদ (১৮) লেখাপড়া করেন সেখানে। 'এ' লেভেল শেষ করার পর সমপ্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন তিনি।

অভিজিৎ রায়ের অকাল মৃত্যুর পর সম্প্রতি তৃষা তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন-'আমার বয়স যখন ৬ বছর, তখন আমার মায়ের সঙ্গে সম্পর্কের শুরু তার। এরপর গেল ১২ বছরে ক্রমে তিনি আমার বন্ধুতে, আমার নায়কে, আমার আদর্শে, বিশ্বস্ত নির্ভরতায়, আমার নাচের সংগীতে এবং আমার বাবায় পরিণত হন।' 

এতে তার বাবার হত্যাকারীদের বিচার হবে কিনা এ নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন রাফিদা আহমেদ বন্যার প্রথম পক্ষের সন্তান তৃষা। প্রথম সংসারে বিচ্ছেদ ঘটার পর প্রায় ১৩ বছর আগে ২০০২ সালে 'মুক্তমনা' ব্লগসহ বিভিন্ন ব্লগে লেখালেখির সুবাদে পরিচয়-সখ্য-প্রেম হয় অভিজিৎ-বন্যার। এক বছর পর ২০০৩ সালে ছ'বছর বয়সী কন্যা তৃষাকে নিয়ে বন্যা সংসার গুছান যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায়। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অভিজিৎ-বন্যা দু'জন দুই ধর্মের হলেও তাদের বিশ্বাস ছিল মূলত মানবধর্মে। বিজ্ঞান এবং নিরীশ্বরবাদ নিয়ে অভিজিৎ-বন্যা দু'জনই লিখেছেন অসংখ্য ব্লগ। 

উল্লেখ্য, অভিজিৎ ২০০২ সালের দিকে সমমনা কয়েকজন লেখকদের নিয়ে তৈরি করেন মুক্তমনা সাইট ও সাইটের ৮ জন নিয়ন্ত্রককের একজন ছিলেন। ২০০৭ সালে মুক্তবুদ্ধি, বিজ্ঞানমনস্কতার প্রসার আর মানবাধিকার ও সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সম্যক অবদান রাখার প্রেক্ষিতে তার মুক্তমনা সাইট অর্জন করেছে 'শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্মৃতি পদক'। তবে ধর্মের অসারতা, মৌলবাদিতা ও ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কারের লেখালেখির কারনে তিনি যথেষ্ট আলোচিত হয়েছিলেন। 

হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণকারী অভিজিৎ নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তার এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, "আমি কোন ধর্মে বিশ্বাসী নই। কিন্তু আমার আশেপাশের বহু কাছের মানুষজন বন্ধু-বান্ধবই মুসলিম। তাদের উপর আমার কোন রাগ নেই, নেই কোন ঘৃণা। তাদের আনন্দের দিনে আমিও আনন্দিত হই। তাদের উপর নিপীড়ন হলে আমিও বেদনার্ত হই। প্যালেস্টাইনে বা কাশ্মীরে মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর অত্যাচার হলে তাদের পাশে দাঁড়াতে কার্পণ্যবোধ করি না। অতীতেও দাঁড়িয়েছি, ভবিষ্যতেও দাঁড়াবো। এটাই আমার মানবতার শিক্ষা"।

এদিকে অনেকটা একই সুরে বাবার মৃত্যুর পর কন্যা তৃষা তার ফেইসবুক স্ট্যটাসে লিখেছেন, 'ইসলামী মৌলবাদীরা তাকে (অভিজিৎ) ছুরির আঘাতে হত্যা করেছে। ওই ঘটনায় আমার মা-ও গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদি বলি এই ঘটনায় আমি আতঙ্কিত বা মর্মাহত, তাহলে কম বলা হবে। পরিস্থিতি যত 'খারাপ' হোক না কেন পৃথিবীকে 'ভালো' জায়গায় পরিণত করতে 'যুক্তির লড়াই' শেষ হয়ে যাবে না।' 

একই স্ট্যাটাসে তৃষা আরও লিখেন, 'আমার বাবা ছিলেন একজন বিশিষ্ট লেখক। বিজ্ঞান এবং নিরীশ্বরবাদ বিষয়ে লেখার জন্য মূলত তিনি পরিচিত ছিলেন। তিনি আমাকে কখনোই প্রচলিত শান্তশিষ্ট অথবা বিনয়ী হতে বলেননি। তিনি আমাকে শিক্ষিত, উদ্যোগী এবং সাহসী হতে শিখিয়েছেন। তিনি আমাকে যা শিখিয়ে গেছেন, যে ভালবাসা দিয়ে গেছেন তা আমি সবসময় মনে রাখব। আমি তোমাকে খুবই ভালবাসি বাবা। প্রতিটি জিনিসের জন্যই তোমাকে ধন্যবাদ।' তৃষা বলেন, ওই ঘটনাটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রই শুনতে পারে কারণ বাংলাদেশ পাওয়ারলেস। এটি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং সেখানে কোন আইনশৃঙ্খলা নেই। আমি গভীরভাবে সন্দিহান যে খুনিরা বিচারের আওতায় আসবে কিনা।

অভিজিৎ-বন্যা দম্পতির ঘনিষ্ঠ বন্ধু শুদ্ধ স্বর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী আহমেদ রশিদ টুটুল বলেন, অভিজিৎ-বন্যা দু'জনই আমার ভাল বন্ধু। আমাদের সঙ্গে পরিচয় ব্লগে লেখালেখির মধ্য দিয়ে। সত্যি বলতে আমরা সারাক্ষণ তর্ক-বিতর্কে মেতে থাকতাম নিজেদের বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে। আড্ডায়-ফোনে-ব্লগে আমরা লেখালেখির মধ্যে ডুবে থাকতাম। যার ফলে পারিবারিক বিষয়গুলো নিয়ে আগ্রহ প্রকাশের সুযোগ থাকতো না। বন্ধু হিসেবে আমার কাছে এটুকু স্পষ্ট ছিল, ওরা দু'জন সংসার জীবনে খুব সুখে ছিল। মানুষ হিসেবে দু'জনই অসম্ভব সাদা মনের। দু'জনই অসম্ভব মেধাবী।

ওদের ব্যক্তিগত বিষয়ে আমার জানার আগ্রহ কিংবা পরিধি এটুকুই। এদিকে একই তথ্য জানতে কথা হয় ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের বর্তমান সভাপতি অনিমেষ রহমানের সঙ্গে। তিনিও খানিক এড়িয়ে গিয়ে একই কথা বলেন। অন্যদিকে, বাবার নৃশংস মৃত্যু আর আহত মা রাফিদা আহমেদ বন্যার খবর পেয়ে গতকাল পর্যন্ত তৃষা ঢাকায় আসেননি। নিরাপত্তাহীনতার কথা বিবেচনা করেই পারিবারিক সিদ্ধান্তে তৃষাকে ঢাকায় আসতে বারণ করা হয়েছে। 

মৃত্যুর পরও অভিজিতের ফেইসবুক একাউন্টটি খোলা থাকলেও সেটি এখন অপারেট করছেন অন্য কেউ। যার ফলে ওই একাউন্টের নাম বদলে লেখা আছে 'রিমেম্বরিং অভিজিৎ রায়'। এই একাউন্টে ২৬শে ফেব্রুয়ারির পর আর নতুন কোন গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট নেই, আপডেটও নেই। অভিজিৎ মৌলবাদী ও জঙ্গিবাদীদের আক্রোশের শিকার হয়ে অকালেই চলে গেছেন না ফেরার দেশে!

খোরশেদ আলম, বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক, উপ-সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রেস





__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___