Banner Advertiser

Tuesday, May 12, 2015

[mukto-mona] বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফের ঋণের জালে জড়িয়ে দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বিপন্ন




বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফের ঋণের জালে জড়িয়ে দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বিপন্ন

দুটি আলাদা প্রতিষ্ঠান হলেও আইএমএফের অর্থনৈতিক নীতিই অনুসরণ করে বিশ্বব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে এ দুটি সংস্থার প্রধান কার্যালয় রাস্তার এপার-ওপার। দুই সংস্থার বোর্ড একত্রে বসে সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ব অর্থনীতিতে তাদের ভূমিকা কী হবে। ইংরেজিতে একটি কথা আছে, 'ওয়ান-সাইজ-ফিটস-অল'- একই জামা সবার গায়ে চড়ানো। এটিই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড বা আইএমএফ) নীতি। ঋণগ্রহীতা দেশটি ইউরোপের (এককালের!) কথিত ধনী দেশ হোক, দক্ষিণ আমেরিকার সন্ধিক্ষণের উন্নয়নশীল কোনো অর্থনীতি হোক, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উদীয়মান বাঘ হোক অথবা বাংলাদেশের মতো কথিত 'স্বল্প আয়ের' দেশ হোক- আইএমএফের নীতি একই। আর সেটা হলো, সংশ্লিষ্ট দেশটির অর্থনীতিকে সঙ্কুচিত করা বা এর গতি কমানো। মূল্যস্ফীতির জুজু সংস্থাটির প্রধান অস্ত্র। এটি কমানোর কথা বলে সংস্থাটি এমন এমন শর্ত চাপিয়ে দেয়, যা মানতে গিয়ে জনজীবনে নেমে আসে দুর্ভোগ, জনপ্রিয়তা হারায় ক্ষমতাসীন সরকার।
আর্জেন্টিনায় ছয় সপ্তাহে পাঁচ রাষ্ট্রপতি বিদায় নিয়েছিলো। সম্প্রতি ইতালিতে সরকার বদলে গেছে, কৃচ্ছসাধনের আইন পাস করে তীব্র জনরোষের মুখে পড়েছে গ্রিস সরকার। 
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে আইএমএফের তেমন কোনো ভূমিকা নেই। ১৯৯৭ সালে 'এশিয়ান ক্রাইসিস'-এর কবলে পড়া এই অঞ্চলের দেশগুলোকে 'সহায়তা' করতে এগিয়ে আসে সংস্থাটি। ফর্মুলা সেই একটাই। অধিক মুনাফার আশায় স্বল্পমেয়াদে বিপুল বিনিয়োগ এসেছিল ওই দেশগুলোর শেয়ারবাজার, বিপণিবিতান, আবাসনসহ নানা খাতে। মুনাফাসহ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সেই 'হট মানি' রাতারাতি তুলে নেয়ার প্রতিযোগিতায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল দেশগুলোর অর্থনীতি। দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ ওই অঞ্চলের দেশগুলোতে তখন বাজেট ঘাটতি ছিল না, মূল্যস্ফীতি ছিল ৪ শতাংশ বা তারও কম। তবু তাদেরকে দেয়া হলো ঋণের সুদের হার বাড়ানো, মূল্যস্ফীতি ও সরকারি ব্যয় কমানোর চাপ, যা ওইসব দেশের জনজীবনে ঘনীভূত অর্থনৈতিক সমস্যার নেতিবাচক প্রভাবকেই প্রলম্বিত করেছে। কৃচ্ছসাধন করতে গিয়ে সঙ্কুচিত হয়ে পড়লো দেশগুলোর অর্থনীতি। যে সমস্যা ছিল শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার, তার আঁচ গিয়ে লাগলো রাশিয়ায়ও। সঙ্কট থেকে মন্দার পথে গেল থাইল্যান্ড, সেখানে খেলাপি ঋণ বাড়লো ৪০ শতাংশ। বেকারত্ব বাড়লো ইন্দোনেশিয়ায়।
আরো জানা যায়, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আইএমএফের যেটুকু ঋণ পাওয়া যায় তা চলে যায় বিদেশী দায় মেটাতেই। যা থাকে তা হলো নতুন ঋণ, যা পুরনো ঋণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে 'বোঝার উপর শাকের আঁটির মতো' অর্থনীতিতে চেপে থাকে। বাংলাদেশের মতো স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে যেখানে সরকারি ব্যয় এমনিতেই কম, যেখানে কর্মসংস্থান ও উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য অবকাঠামো নির্মাণে দরকার সরকারি-বেসরকারি বিপুল বিনিয়োগ, সেখানে আইএমএফের ক্রমাগত চাপ থাকে ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরা, যা অর্থনীতির গতিও কমিয়ে দেয়।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, আইএমএফের মূল কাজ ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের দেশগুলোর ব্যালেন্স অব পেমেন্টের ছোটখাটো সমস্যার সমাধান করা। বিগত বিংশ শতাব্দীর সত্তর দশক নাগাদ সে প্রয়োজন ফুরিয়ে গেল ইউরোপের। তখন আইএমএফ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কর্মকা- বিস্তৃত করলো। মূল উদ্দেশ্য বিওপি সমস্যা সমাধানের নামে দেশগুলোতে সরকারি কর্মকা- সঙ্কুচিত করা, তাদের অভ্যন্তরীণ শিল্পের বিকাশ রুদ্ধ করে বিদেশী বহুজাতিক কম্পানির বাজার সম্প্রসারিত করা। সংস্থাটির প্রচারণার প্রথম লক্ষ্য সরকারি খাত, শিল্প, ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনায় সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা, বেসরকারিকরণ ও কাঠামোগত সংস্কারের নামে সরকারের ভূমিকা কমানো। সরকারি ব্যয় কমানোর নামে সামাজিক খাতে সরকারের অংশগ্রহণ কমিয়ে আনা। আর ঋণের সুদের হার বাড়িয়ে দেশী বিনিয়োগ প্রায় অসম্ভব করে বিদেশী পুঁজি, পণ্য ও সেবার পথ প্রশস্ত করা- যা ছিল রিগ্যান-থ্যাচার প্রশাসনের 'নিওলিবারেলিজম'-এর মূল দর্শন।
১৯৮২ সালে দায়ে পড়ে আইএমএফের ঋণ নিয়েছিল মেক্সিকো। সেই ঋণ তিনগুণ হয়ে ১৯৯৪ সালে দাঁড়ায় ৫০ বিলিয়ন ডলার, যার জন্য সঙ্কট উত্তরণ (নধরষড়ঁঃ) সহায়তা নিতে হয়েছিল এ দেশটিকে। একই পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলকেও। ঋণমুক্ত হওয়ার জন্য আইএমএফের অর্থ নিয়েছিল, পরে ঋণে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে সেই জাল ছিন্ন করলো দেশগুলোর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব।
২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আইএমএফের নতুন ঋণ প্রকল্প ছাড়াই চলেছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি। তখন মূল্যস্ফীতি, বাজেট ঘাটতিও কম ছিল, জিডিপি প্রবৃদ্ধিও অব্যাহত ছিল। ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে পোভার্টি রিডাকশন অ্যান্ড গ্রোথ ফ্যাসিলিটি (পিআরজিএফ) কর্মসূচির আওতায় ৬২ কোটি ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি দেয় আইএমএফ। এর শর্ত হিসেবে ভাসমান মুদ্রা বিনিময় হার, বৈদেশীক মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ১২৫টি শাখা কমানো, রূপালী ব্যাংক বিক্রি করা, সোনালী, জনতা, অগ্রণীকে কম্পানি করে ব্যক্তি খাতে ছেড়ে দেয়ার পথ তৈরি করার মতো কাজগুলো করিয়ে নেয়। এরপরও ৪৯ কোটি ডলারের বেশি হাতে পায়নি বাংলাদেশ।
এরপর ২০০৬ সালে এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) নামের আরেকটি কর্মসূচি আনে আইএমএফ। এ কর্মসূচির অনুষঙ্গ পলিসি সাপোর্ট ইন্সট্রুমেন্টের (পিএসআই) কঠিন শর্তে বিরক্তি প্রকাশ করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির তখনকার প্রেসিডেন্ট ড. কাজী খলীকুজ্জমান ২০০৭ সালে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলো, 'আমরা আইএমএফ চাই না, তারা কালই চলে যেতে পারে।' অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেছিলো, 'আইএমএফকে বিদায় জানানোর কথা চিন্তা করার সময় এসেছে। আমরা আরেকটি পিআরজিএফ চাই না। এ ধরনের চুক্তিতে নীতি গ্রহণে দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করতে হয়।
স্বাধীনতার চার দশক পেরিয়ে এসেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে কতটুকু স্বাধীন হতে পেরেছে- এমন একটি প্রশ্ন হুট করে কেউ করে ফেললে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এটা যে এই সময়ের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে, তা অস্বীকার করারও উপায় নেই। একাত্তরে আমরা রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আজো আসেনি। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না থাকলে একটি জাতি কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। দেশের অর্থনীতি মজবুত করতে গিয়ে অনেক সময় বিদেশী ঋণের প্রয়োজন হয়। সেই বিদেশী ঋণ নিতে গিয়ে হাত পাততে হয় বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের মতো আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলোর কাছে। ঋণদাতা সংস্থাগুলো এই সুযোগ নিয়ে থাকে। সাহায্যের নামে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে আরোপ করে কঠিন শর্ত। উন্নয়ন কর্মকা- অব্যাহত রাখতে এর বিকল্প হাতে থাকে না। ঋণদাতা সংস্থার শর্ত মানতে গিয়ে বাংলাদেশকে নতুন করে শর্তের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত হতে হয়। সংস্কারসহ প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য নানামুখী শর্ত মেনে নিতে হয়। এই শর্তের চাপ গিয়ে পড়ে ভোক্তা পর্যায়ে, সাধারণ মানুষের উপর। এখন যেমন ভর্তুকি প্রত্যাহারের চাপ সইতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
আইএমএফ কিংবা বিশ্বব্যাংককে যতই আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা বলা হোক না কেন, আসলে দুটি সংস্থাই নিজেদের তহবিল বৃদ্ধির ব্যবসা করে। এই ব্যবসা করতে গিয়ে দরিদ্রতর দেশগুলোকে উন্নয়নের ফাঁদে ফেলা হয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বেই আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের এই ফাঁদ পাতা আছে। তাদের 'ইকোনমিক হিটম্যান' ছড়ানো আছে বিশ্বজুড়ে। যেকোনো দেশে কেমন করে ঋণ দেয়া হবে বা সেই দেশকে কেমন করে ঋণের ফাঁদে ফেলা হবে, তার ছক আগে থেকেই তৈরি করা থাকে। দেশভেদে ছক বদলে দেয়া হয়। এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে বিশ্বব্যাংকেরই সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ নোবেল বিজয়ী জোসেফ ই স্টিগলিজের উদ্ধৃতি। সে বলেছে, আইএমএফের অর্থনীতিবিদদের সব কিছুই গোপন। তারা চায় না বহিরাগতরা তাদের কাজ নিয়ে কিছু বলুক। বাইরে তারা খোলামেলা নীতির কথা বললেও নিজেরা দরকষাকষি করে গোপনে। কোনো একটি দেশে গিয়ে পাঁচতারা হোটেলে থেকে কয়েক দিন বা সপ্তাহের মধ্যেই সে দেশের জন্য তারা একটি কর্মসূচি তৈরি করে ফেলে, যা ওই দেশের মৌলিক চাহিদা বা আর্থসামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কোনো দেশভিত্তিক আইএমএফ টিম আগে থেকেই কর্মসূচির খসড়া তৈরি করে রেখেছে কিংবা এক দেশের প্রোগ্রাম হুবহু অন্য দেশের জন্য চালিয়ে দিয়েছে- এমন নজিরও আছে।
বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফের ঋণের জালে জড়িয়ে দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বিপন্ন হওয়ার উদাহরণ যেমন আছে, তেমনি এ দুই সংস্থার জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসার উদাহরণও আছে। 
পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের নানা বাহানার পর এ দুই সংস্থার কার্যক্রম দেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। বাংলাদেশের এখন কী করা উচিত? অনেকে মনে করে, বাংলাদেশকে এখন থেকেই ধীরে ধীরে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের উপর নির্ভরতা কমাতে হবে। তবে অর্থনৈতিক মুক্তির নতুন পথে চলতে হলে অবশ্যই প্রয়োজন রাজনৈতিক সততা। সেখানে বাংলাদেশ নিষ্ঠার পরিচয় দিতে পারলেই অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন সম্ভব। বিশ্বের অন্যান্য দেশ পারলে, কেন বাংলাদেশ পারবে না?



__._,_.___

Posted by: mon rosu <monrosu13@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___