Banner Advertiser

Friday, January 29, 2016

Re: [mukto-mona] শহীদের সংখ্যা এবং আমাদের অর্ধশত বুদ্ধিজীবী by মুহম্মদ জাফর ইকবাল




Since those 50 (so called) intellectuals questioned the official number of the death toll in the liberation struggle, they should be assigned the task of finding out the exact number death within a year. They need to be able to authenticate their number beyond reasonable doubt.
If they fail to do so, they should be given either a choice of self-deportation to some other countries or make them sign promissory notes - not to question this number ever again as long as they live in Bangladesh.
There are individuals who put much more weight to the work of any fair-skinned people. These fools forget that liberation struggle was a direct conflict with CIA interests in the region, and fair-skinned CIA supporters will always try to discredit the genocidal history of the struggle to hide their misdeeds. 
Sarmila Bose claimed that she did some research on this subject. Do you know who provided the fund? It's reasonable to assume that either CIA or Pakistan could provide the fund, since they have the vested interest in the project.

Jiten Roy



From: "'Jamal G. Khan' M.JamalGhaus@gmail.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com>
To: mukto-mona@yahoogroups.com
Sent: Thursday, January 28, 2016 10:57 PM
Subject: [mukto-mona] শহীদের সংখ্যা এবং আমাদের অর্ধশত বুদ্ধিজীবী by মুহম্মদ জাফর ইকবাল

 

শহীদের সংখ্যা এবং আমাদের অর্ধশত বুদ্ধিজীবী

মুহম্মদ জাফর ইকবাল০০:২৯, জানুয়ারি ২৯, ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবালকিছুদিন আগে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন তাদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে, একেক জায়গায় সংখ্যা একেক রকম। বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য শুনে মনে হতে পারে বাংলাদেশের গণহত্যার একটা সঠিক সংখ্যা থাকা উচিত ছিল। সংখ্যাটি ত্রিশ লাখ না হয়ে ঊনত্রিশ লাখ বায়ান্নো হাজার ছয়শ' পঁয়ত্রিশ জন কিংবা ত্রিশ লাখ তেত্রিশ হাজার তিনশ' একুশ জন। এরকম একটি সঠিক সুনির্দিষ্ট সংখ্যা হলে তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হতো। যেহেতু সংখ্যাটি এভাবে নেই তাই এটাকে নিয়ে তার সন্দেহ প্রকাশ করার অধিকার আছে। সংখ্যাটাকে বিতর্কিত বলা যেতে পারে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে পৃথিবীর কোনও বড় হত্যাকাণ্ড বা গণহত্যার সংখ্যাই কিন্তু সুনির্দিষ্ট নয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের মতো এত বড় একটা বিষয় যেটাকে নিয়ে গবেষণার পর গবেষণা হয়েছে সেখানেও মৃত্যুর সংখ্যা সুনির্দিষ্ট নয়। বলা হয় ৫০ থেকে ৮০ মিলিয়ন (কিংবা পাঁচ থেকে আট কোটি)। নিউক্লিয়ার বোমা ফেলা হলে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে সেটা সঠিকভাবে অনুমান করার জন্য আমেরিকা কিছু শহর বেছে নিয়েছিল এবং সেখানে তারা আগে থেকে অন্য কোনও বোমা ফেলেনি। ক্ষয়ক্ষতির এরকম সুনির্দিষ্ট হিসাব বের করার প্রস্তুতি নেওয়ার পরও হিরোশিমা কিংবা নাগাসাকিতে কতজন মানুষ মারা যায় সেটি সুনির্দিষ্ট নয়। বলা হয় হিরোশিমাতে নব্বই হাজার থেকে দেড় লাখ এবং হিরোশিমাতে চল্লিশ হাজার থেকে আশি হাজার লোক মারা যায়। চীনের রাজধানীর নানকিংয়ে জাপানিদের গণহত্যা পৃথিবীর একটি নৃশংসতম গণহত্যা। গবেষকরা এখনো সেই সংখ্যাটি সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেন না, তাদের হিসাবে সংখ্যাটা দুই থেকে তিন লাখের ভেতরে। নাসি জার্মানিতে ইহুদিদের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা হিসাবে পঞ্চাশ থেকে ষাট লাখ ধরে নেওয়া হয়। মাঝে মাঝেই গবেষকরা সংখ্যাটাকে দেড় থেকে দুই কোটি বলে থাকেন। সাম্প্রতিক গণহত্যার মাঝে রুয়ান্ডাতে টুটসিদের ওপর হত্যাকাণ্ডটি সবচেয়ে আলোচিত। এত সাম্প্রতিক ঘটনা তথ্য আদান-প্রদানেও কতরকম আধুনিক প্রযুক্তি তারপরও হত্যাকাণ্ডের সংখ্যাটি সুনির্দিষ্ট নয়, বলা হয়ে থাকে সেখানে পাঁচ থেকে ছয় লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। সোজা কথায় বলা যায় একটা বড় ধরনের হত্যাকাণ্ডে কখনই সঠিক সংখ্যাটা বলা যায় না।
হত্যাকাণ্ডের এরকম পরিসংখ্যান দেখে আমরা মোটেও অবাক হই না। কারণ আমরা সবাই জানি হত্যাকারীরা তালিকা করে হত্যাকাণ্ড ঘটায় না এবং হত্যা করার পর তারা সেই তালিকা প্রকাশও করে না। কাজেই সবাই একটা আনুমানিক সংখ্যা বলে থাকেন। আমাদের বাংলাদেশের বেলাতেও তাই হয়েছে। একটা আনুমানিক সংখ্যা বলা হয়েছে। একাত্তর সালে প্রায় এক কোটি শরণার্থী দেশ ছেড়ে চলে যায়। তাদের একটা বড় অংশ রোগে-শোকে মারা গেছে, তাদের সংখ্যাটা ধরা হলে একাত্তরে শহীদের সংখ্যা খুব সহজেই ত্রিশ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
যারা গণহত্যা করে তারা কখনোই স্বীকার করতে চায় না যে তারা গণহত্যা করেছে। আর্মেনিয়ানরা প্রায় একশ' বছর ধরে চেষ্টা করে আসছে তবুও তুরস্ককে স্বীকার করাতে পারেনি যে তারা গণহত্যা করেছে। পাকিস্তানও বলতে শুরু করেছে তারাও বাংলাদেশে গণহত্যা করেনি। যারা স্বীকার করতে বাধ্য হয় তারাও সবসময় চেষ্টা করে সংখ্যাটাকে ছোটো করে দেখাতে। আমাদের বাংলাদেশের উদাহরণটি সবচেয়ে বিচিত্র। একাত্তর সালে জামায়াতে ইসলামী সরাসরি পাকিস্তান মিলিটারির সঙ্গে এ দেশে গণহত্যা করেছে, তাই তারা চেষ্টা করে সংখ্যাটাকে কমিয়ে আনতে। সেজন্য তাদের কুযুক্তির কোনও অভাব নেই। সবচেয়ে হাস্যকর যুক্তিটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু নাকি সাক্ষাত্কার দিতে গিয়ে তিন লাখ বলতে গিয়ে ভুলে তিরিশ লাখ বলে ফেলেছিলেন। যার অর্থ তিন লাখ পর্যন্ত হত্যা করা কোনও ব্যাপার নয়। তিরিশ লাখ হলে একটু বেশি হয়ে যায়, তাই সেটাকে মেনে নেওয়া যাবে না। জামায়াতে ইসলামীর ব্যাপারটা আমরা খুব ভালোভাবে বুঝি কিন্তু আমি আমাদের বুদ্ধিজীবীদের ব্যাপারটা এখনো বুঝে উঠতে পারিনি। রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা যখন গণহত্যার সংখ্যাটি গ্রহণ করে নিয়েছি এবং সেই সংখ্যাটি যেহেতু একটা আনুমানিক এবং যৌক্তিক সংখ্যা তখন সেই সংখ্যাটিতে সন্দেহ প্রকাশ করা হলে যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের অসম্মান করা হয় সেটি তারা কেন বুঝতে পারেন না? পৃথিবীর বড় বড় ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত সংখ্যা এবং আনুমানিক সংখ্যার মাঝে যদি বিশাল ফারাক থাকে এবং সেগুলো নিয়ে যদি আমাদের বুদ্ধিজীবীরা কখনো কোনও প্রশ্ন না করেন তাহলে তারা কেন আমাদের দেশের গণহত্যার সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যুদ্ধাপরাধীদের সাহায্য করার জন্য এতো ব্যস্ত হয়ে যান? কিছুদিন আগে আমাদের দেশের পঞ্চাশ জন বুদ্ধিজীবী মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আমাকে একইসঙ্গে বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং আহত করেছিলেন। তার কারণ যখন এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তখন প্রকৃত সংখ্যাটির জন্য তাদের গবেষকসুলভ আগ্রহ প্রকাশ পায় না। পাকিস্তানি মিলিটারির নৃশংসতাকে খাটো করে দেখানোর ইচ্ছাটুকু প্রকাশ পায়।
যে দেশের বড় বড় বুদ্ধিজীবী মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন করেন সেই দেশে খালেদা জিয়ার মতো একজন সেটাকে আরও এক কাঠি এগিয়ে নিয়ে গেলে আমাদের অবাক হবার কিছু নেই। পাকিস্তানের জন্য তার মমতা আছে। একাত্তরে তিনি পাকিস্তানিদের সঙ্গে মিলিটারি ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন। শুধু যে খালেদা জিয়া এই দেশের শহীদদের অসম্মান করেছেন তা নয়, তার দলও খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে সমর্থন করে গেছে। দলটির মাথা থেকে আরও উদ্ভট কিছু বুদ্ধি বের হয়েছে সেটি হচ্ছে জরিপ করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যাটি বের করে ফেলা। জরিপ করে মানুষের পছন্দ-অপছন্দের কথা জানা যায় কিন্তু একটি তথ্য বের করে ফেলা যায় সেটি আমি জন্মেও শুনিনি।
 
২.
আমি অনেকদিন থেকে ভেবে এসেছি বইমেলায় আগে আমি আমার কিছু প্রিয় বই নিয়ে লিখবো। নতুন এবং অপরিচিত লেখকদের পাঠকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবো। কখনোই সেটা হয়ে ওঠেনি। তবে এবারের বইমেলার আগে আমার সেই সুযোগটি এসেছে। যখন এই দেশে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীরা এক ধরনের বিতর্ক শুরু করেছেন ঠিক তখন আমার হাতে একটি বই এসেছে, বইটির নাম: 'ত্রিশ লক্ষ শহীদ: বাহুল্য নাকি বাস্তবতা'। বইয়ের লেখকের নাম আরিফ রহমান। (বইটির প্রকাশকের নামটি দিতে পারলে ভালো হতো কিন্তু আমি যখনই এই লেখাটি লিখছি তখন পর্যন্ত বইয়ের লেখক জানে না বইটি এই বছর কোথা থেকে পুনর্মুদ্রণ হবে!)। আরিফ কমবয়সী তরুণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং মুক্তিযুদ্ধকে সে হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করেছে। যখন এই দেশের বড় বড় বুদ্ধিজীবী মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করছে তখন সে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তার মতো করে গবেষণা করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে যারা কুযুক্তি, অপযুক্তি দিতে থাকে তাদের একটা জবাব দেবার চেষ্টা করেছে!
আমি এই বইটির জন্য একটা ভূমিকা লিখে দিয়েছি, ভূমিকাটি এরকম:
 
১৯৭৮ সালের দিকে আমি যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমার পিএইচডি করছি তখন স্টিভ মোজলে নামে একজন গবেষক মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে গবেষণা করার জন্য বাংলাদেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বাংলাদেশ সম্পর্কে বাস্তব কিছু ধারণা নেওয়ার জন্য সে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনে আমাকে খুঁজে বের করেছিল। নতুন ভাষা শেখার তার এক ধরনের বিস্ময়কর প্রতিভা ছিল এবং আমি তাকে কাজ চালানোর মতো বাংলা শিখিয়ে দিয়েছিলাম। বাংলাদেশের জন্য তার এক ধরনের মমতার জন্ম হয়েছিল তাই একাধিকবার এখানে ফিরে ফিরে এসেছে।
 
স্টিভ মোজলের সঙ্গে আমার এক ধরনের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল, বাংলাদেশ নিয়ে তার অভিজ্ঞতা সে আমাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বলতো। তার একটি কথা শুনে সে সময়ে আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম। সে বলেছিল, ১৯৭১ সালে তোমাদের দেশে যে ভয়ংকর গণহত্যা, ধর্ষণ, ধ্বংসযজ্ঞ, দেশত্যাগ, গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে সেটা এত অবিশ্বাস্য যে আজ থেকে দশ-বিশ বছর পর পৃথিবীর কেউ এটি বিশ্বাস করবে না। মুক্তিযুদ্ধের পর তখন মাত্র সাত-আট বছর পার হয়েছে, আমি তাই স্টিভ মোজলের কথা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। তাকে বলেছিলাম এটি একটি ঐতিহাসিক সত্য, এই সত্যটির কথা পৃথিবীর মানুষ ভুলে যাবে এটি কিছুতেই হতে পারে না।
মুক্তিযুদ্ধের চার যুগ পার হওয়ার আগেই আমি হঠাৎ করে আবিষ্কার করছি স্টিভ মোজলের ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। পৃথিবীর কিছু কিছু গণহত্যা পশ্চিমা জগৎ জোর গলায় প্রচার করতে চায়, কিছু গণহত্যা নিয়ে তাদের আগ্রহ নেই। আইরিশ চ্যাংয়ের লেখা 'রেপ অব নানকিং' বইটির ভূমিকা পড়লে মনে হয় তিনি যেন আমাদের দেশের ঘটনাটি নিয়েই তার হতাশা ব্যক্ত করছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিকমানের গবেষণা বলতে গেলে কিছু হয়নি বরং শর্মিলা বসুর মতো জ্ঞানপাপীদের দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে গবেষণা করানো হচ্ছে। আমাদের দেশের সত্যটুকু আমাদেরই প্রচার করার কথা কিন্তু এই দেশে মিলিটারি শাসনের সময় ঠিক তার উল্টো ব্যাপারটি হয়েছে। একাধিক প্রজন্মের জন্ম হয়েছে যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস না জেনে বড় হয়েছে। অপপ্রচার বিশ্বাস করেছে এবং চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর পরও তারা সত্যকে খুঁজে বের না করে নাকীকান্না কেঁদে অনুযোগ করেছে প্রকৃত সত্য না বলে তাদেরকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে বলে তারা জানে না একাত্তরে কী হয়েছিল। আমরা হঠাৎ করে আবিষ্কার করেছিলাম এই দেশের কয়েক প্রজন্মকে আবার নতুন করে পাকিস্তানি মিলিটারি আর তাদের এদেশীয় অনুচরদের গণহত্যা, ধর্ষণ আর ধ্বংসযজ্ঞের কথা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব আর অর্জনের ইতিহাস আবার নতুন করে বলতে হচ্ছে। এই ব্যাপারে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখার কথা কিন্তু আমাদের খুবই দুর্ভাগ্য এই দেশের সকল বুদ্ধিজীবী সেই দায়িত্ব পালন করতে রাজি না। 'নিরপেক্ষতা', 'বাকস্বাধীনতা' এরকম বড় বড় শব্দ ব্যবহার করে তারা মুক্তিযুদ্ধের প্রতিষ্ঠিত সত্যগুলোর মূল ধরে টানাটানি শুরু করেছেন।
ঠিক কী কারণ জানা নেই সাদা চামড়ার প্রতি আমাদের দেশের অনেক বুদ্ধিজীবীর এক ধরনের দাসসুলভ আনুগত্য আছে। বছর খানেক আগে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মানুষের সংখ্যা নিয়ে একজন সাংবাদিকের উক্তির জন্য তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত শাস্তি দিয়েছিল, এই দেশে এরকম ঘটনা কিংবা এর কাছাকাছি ঘটনা অনেকবার ঘটেছে কিন্তু কখনোই আমাদের বুদ্ধিজীবীরা সেটা নিয়ে ব্যস্ত হননি। কিন্তু সম্ভবত এবারের মানুষটির সাদা চামড়া হওয়ার কারণে একজন নয়, দুজন নয়, পঞ্চাশ জন বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবী তার পেছনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেলেন। তাদের অত্যন্ত সুলিখিত বক্তব্যের চাঁছাছোলা বাংলা অনুবাদ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মানুষের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে একটা বিতর্ক তৈরি করার অধিকার দিতে হবে। এই বিষয়গুলো আমাকে আহত করে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বনামধন্য এতোজন বুদ্ধিজীবীর বিবৃতিকে অস্বীকার করার সাধ্যি কার আছে?
 
এর পরের ঘটনাটি অবশ্যই রীতিমতো কৌতুকের মতো। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যখন এই বুদ্ধিজীবীদের তাদের বিবৃতিকে ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিয়েছে তখন হঠাৎ করে প্রায় সকল বুদ্ধিজীবীর আদর্শ এবং অধিকারের জন্য বুক ফুলিয়ে সংগ্রাম করার সাহস উবে গেলো এবং তারা বিনা শর্তে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য রীতিমতো হুড়োহুড়ি শুরু করে দিলেন। এই দেশের যে বুদ্ধিজীবীরা এরকম একটি বিষয়ে এরকম কঠিন বিবৃতি দিয়ে চোখের পলকে নিজেদের পিঠ বাঁচানোর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা শুরু করে দেন তাদের জন্য নিজের ভেতরে সম্মান বোধ বজায় রাখা খুব কঠিন।
যে বুদ্ধিজীবীরা এই দেশের তরুণ প্রজন্মকে দিকনির্দেশনা দেবেন তারাই যদি উল্টো তাদেরকে বিভ্রান্ত করতে শুরু করেন তাহলে আমার হতাশা অনুভব করা উচিত ছিল কিন্তু আমি বিন্দুমাত্র হতাশ নই। তার কারণ একদিকে আমি যেরকম বিভ্রান্ত খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবীদের দেখছি ঠিক সেরকম অন্যদিক দিয়ে নতুন প্রজন্মের কিছু তরুণকে দেখছি যাদের ভেতর নিজের দেশ নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি নেই। মাতৃভূমির জন্য ভালোবাসায় তাদের কণামাত্র খাদ নেই। তারা তরুণ কিন্তু অন্য অনেক তরুণের মতো তারা শুধু আবেগকে পুঁজি করে কথা বলে না। তারা তাদের আগ্রহের বিষয় নিয়ে লেখাপড়া করে গবেষণা করে। যারা মুক্তিযুদ্ধকে নিজের চোখে না দেখেও সেটিকে শুধু মস্তিষ্কে নয় হৃদয়েও ধারণ করে। যারা এই দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করেছে। 'আরিফ রহমান' ঠিক সেইরকম একজন তরুণ, যে কাজটি এই দেশের বড় বড় গবেষকদের করা উচিত ছিল সেই কাজটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হয়েও সে করে ফেলার সাহস পেয়েছে। 'ত্রিশ লক্ষ শহীদ: বাহুল্য নাকি বাস্তবতা' নামে একটি বইয়ের ভেতরে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মানুষের সংখ্যা এবং আনুষঙ্গিক যেসব বিষয় নিয়ে এই দেশে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হয় সেই বিষয়গুলো নিয়ে লিখেছে। সম্ভাব্য সকল তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছে, বিশ্লেষণ করেছে এবং সেটি গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেছে। এই বইটিতে সে অসংখ্য তথ্যসূত্র দিয়েছে, অনেক ছবি সংযোজন করেছে, তালিকা তুলে ধরেছে। দেশদ্রোহীর যে দলটি এককভাবে মিথ্যাচার করে যে মিথ্যাগুলোকে প্রায় বিশ্বাসযোগ্য করে ফেলেছিল আরিফ রহমান সেই মিথ্যাগুলো সবার সামনে প্রকাশ করে দিয়েছে। যারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একাডেমিক গবেষণা করবেন তারাও এই বইয়ের অনেক তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন। আমি আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এই তরুণ গবেষক মুক্তিযুদ্ধকে নিজের গবেষণার বিষয় হিসেবে ধরে নিয়ে ভবিষ্যতে আরও কাজ করবে, পৃথিবীর তথ্য ভাণ্ডারে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একাডেমিক গবেষণায় যে শূন্যতা আছে সেই শূন্যতা পূরণ করবে।
পঞ্চাশ জন 'নিরপেক্ষ' বুদ্ধিজীবী আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আমাকে যেটুকু মর্মাহত করেছিল একজন তরুণ ছাত্র আরিফ রহমান একা আমার মনের সেই পুরো কষ্টটুকু দূর করে দিয়েছে।
তার জন্য আমার অভিনন্দন। তার জন্য আমার ভালোবাসা।
 
লেখক: কথাসাহিত্যিক, শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট






__._,_.___

Posted by: Jiten Roy <jnrsr53@yahoo.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___