----- Forwarded Message -----
From: Gonojagoron Moncho <projonmochottar@gmail.com>
To:
Sent: Friday, April 26, 2013 4:12 PM
Subject: সাভার ট্র্যাজেডির মধ্যেও অনড় হেফাজত ও জামায়াতী চক্র / চট্টগ্রামে প্রখ্যাত আলেমের ওপর হামলা চালিয়েছে
From: Gonojagoron Moncho <projonmochottar@gmail.com>
To:
Sent: Friday, April 26, 2013 4:12 PM
Subject: সাভার ট্র্যাজেডির মধ্যেও অনড় হেফাজত ও জামায়াতী চক্র / চট্টগ্রামে প্রখ্যাত আলেমের ওপর হামলা চালিয়েছে
সাভার ট্র্যাজেডির ঘটনায় পুরো জাতি যখন শোকে মুহ্যমান, অসংখ্য সাধারণ শ্রমিকের করুণ মৃত্যুতে সারাদেশের মানুষ যখন শোকে স্তব্ধ তখনও ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত সেই হেফাজত ও জামায়াতীচক্র। রাজনৈতিক বিভেদ ও দাবির কথা ভুলে একে একে কর্মসূচী স্থগিত করে শোকার্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন আন্দোলনে থাকা বিভিন্ন দল, সংগঠন এমনকি যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবিতে জেগে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চও। নিজেদের অগ্রযাত্রার পথে হেফাজতসহ উগ্রবাদীদের থাবা সত্ত্বেও শোক প্রকাশ করে মহাসমাবেশ স্থগিত করেছে নারী সমাজ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাওয়ের মতো বৃহৎ কর্মসূচীও যেখানে স্থগিত করেছে চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন সেখানে সঙ্কট তৈরিতেই ব্যস্ত হেফাজত-জামায়াত। দেশজুড়ে শোকের মধ্যে শুক্রবার চট্টগ্রামের মহাসমাবেশ বন্ধ করা দূরে থাক উল্টো সেখান থেকে প্রখ্যাত আলেম আল্লামা জালাল উদ্দিন আল কাদেরীকে অবরুদ্ধ করে তার ওপর হামলা চালিয়েছে। এদিকে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের কয়েক নেতাই চালাচ্ছেন হেফাজাতের আন্দোলন।
এদিকে জামায়াতকে সুবিধা করে দেয়ার নানা দাবি তোলার আন্দোলনের কারণে হেফাজতে ইসলাম আর 'অরাজনৈতিক' নেই। অভিযোগ উঠেছে, হেফাজতের নেতৃত্বে থাকা বিএনপি-জামায়াত জোটের পাঁচ নেতাই মূলত চালাচ্ছেন হেফাজতের কার্যক্রম। জামায়াত-বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এরাই হেফাজতের ব্যানারে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টায় ব্যস্ত। হেফাজতের পাঁচ নেতার তৎপরতার ফলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকে 'নাস্তিক' ঘোষণা করেন আল্লামা শফী। এখন এই পাঁচ নেতা আসন্ন ঢাকা অবরোধ কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে শফীর মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় হারাম এবং ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের 'নাস্তিক ও মুরতাদ' ঘোষণা আদায়ের চেষ্টা করছেন। অভিযোগ উঠেছে, এই নেতারা আসলে ১৮ দলীয় জোটের এ্যাসাইনমেন্ট বাস্তবায়নেই ব্যস্ত। এই পাঁচ নেতা হলেন- হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ও ঢাকা কমিটির সদস্যসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, হেফাজতের ঢাকা কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমি এবং কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহি। অভিযোগ পাওয়া গেছে, এই নেতাদের মধ্যে তিনজন আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন লাভেরও আশ্বাস পেয়েছেন ১৮ দলীয় জোট থেকে। বাকি দুজনও পেয়েছেন নানা সুবিধার আশ্বাস। তবে কেবল এই ব্যক্তিরাই নয়, হেফাজতের ব্যানারে বিএনপি-জামায়ায়াতের হয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে আরও কয়েক নেতার বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক সংগঠন বলে দাবি করা হলেও পুরোপুরি রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে মূলত হেফাজতে ইসলাম। আর এই রাজনৈতিক কর্মকা-ে যোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও বাম দল বিরোধী সব শক্তি। হেফাজতের আন্দোলনে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের তরুণদের। এই তরুণ প্রজন্মের সবাইকে গড়ে 'নাস্তিক' ঘোষণা করে মানুষের ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগাতে মরিয়া এখন হেফাজতে ইসলাম। কারণ এই তরুণরাই তাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ১৮ দলীয় জোটের ধর্মভিত্তিক দলের নেতারা। আর হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন জারি রাখতে সিংহভাগ টাকা ঢালছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের সঙ্গে দূরতম সম্পর্ক নেই দাবি করা হলেও হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা। জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম নগর শাখার নেতাদের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কয়েক নেতার নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে, হচ্ছে টাকার লেনদেনও। হেফাজতের সমাবেশে সেøাগান উঠছে সাঈদীর মুক্তির দাবিতে পুলিশসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, হেফাজতে ইসলাম এবং ১৮ দলীয় জোটের কয়েক নেতার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণও পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ২০১০ সালে সরকারের নারীনীতির প্রতিবাদ জানাতেই মূলত হেফাজতে ইসলাম নামের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী অধ্যক্ষ আল্লামা শাহ আহমদ শফী। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারেই ১৮ দলীয় জোট ইসলামবিরোধী কর্মকা- বন্ধের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেমেছে। হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে নেতৃত্বে আছেন ১৮ দলীয় জোটভুক্ত সকল ইসলামী দলের নেতারা। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শফীর পরই অন্য নেতাদের অবস্থান। তাঁদের কেউ নায়েবে আমির, কেউ যুগ্ম মহাসচিব বা অন্য পদে আছেন। অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির পদে আছেন নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি জঙ্গীবাদের দায়ে অভিযুক্ত মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপি সমর্থিত জাতীয় ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল মান্নান, ঢাকার তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং জামায়াতে ইসলামীর রুকন জয়নাল আবেদীন, সম্মিলিত ওলামা-মাশায়েখ সংগ্রাম পরিষদের সেক্রেটারি ইসলামী দলগুলোর সমন্বয়কারী এবং চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর রুকন অধ্যক্ষ মাওলানা মিয়া মুহাম্মদ হোসাইন শরীফ এবং আছেন চট্টগ্রামের লিয়াজোঁ কমিটির আহ্বায়ক ও নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি আব্দুর রহমান চৌধুরী। জানা গেছে, কওমি মাদ্রাসা কেন্দ্রিক অধিকাংশ আলেম জামায়াতবিরোধী হওয়া সত্ত্বেও এই নেতারাই ১৩ দফায় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং মওদুদীর বই সরকারীভাবে বাজেয়াফত করার দাবি রাখতে দেননি। এরাই বিভিন্নভাবে শফির ছেলে মাওলানা আনাসের মাধ্যমে সংগঠনকে জামায়াতী ঘরানা বানিয়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেক আলেম ওলামা। তাঁরা বলছেন, হেফাজত জামায়াত-বিএনপির একটি সংগঠন হয়ে গেছে। এটা কোন অরাজনৈতিক সংগঠন নয়। এদিকে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে টাকা ঢালছে জামায়াত। অভিযোগ উঠেছে, হেফাজতে ইসলাম এবং জামায়াতে ইসলামীর চার নেতা আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত। তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। রাষ্ট্রীয় অন্য একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন চাঙ্গা রাখতে জামায়াতে ইসলামী টাকা দিচ্ছে বলে আমরা জেনেছি। এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। ঠিক এমন এক পরিস্থিতিতে হেফাজত দেশে ১৮ দল বিশেষত জামায়াতকে রক্ষায় কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাভারের মর্মান্তিক ঘটনার পরও রাজধানীসহ সারাদেশে আর শুক্রবার চট্টগ্রামে হেফাজতের মহাসমাবেশের নামে জামায়াত-শিবিরকে নিয়ে মহড়া দেয়ার পর ক্ষুব্ধ ইসলামী দলগুলোও।
কেবল তাই নয়, দেশজুড়ে শোকাবহের মধ্যেই শুক্রবার জুমার নামাজের পর মহাসমাবশের নামে জামায়াত-শিবিরকে নিয়ে নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতিব ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা জালালুদ্দিন আলকাদেরীর ওপর হামলা করেছে হেফাজত নেতারা। ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম ও রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে সুন্নী সম্প্রদায়। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে রাজধানী জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় বিক্ষোভ করেছে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত। প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন। সংবাদ সম্মেলন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে জঙ্গীবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করতে চায় বলে অভিযোগ করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা'আত নেতারা। সংগঠনটির ব্যাপারে সরকারকে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ারও দাবি জানান তারা। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সমাবেশে আসা হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা আল্লামা জালালুদ্দিন আল কাদেরীকে লাঞ্ছিত করে। এ সময় তাঁকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত ও তরিকত ফেডারেশন বলেছে, ওয়াহাবী-মওদুদীরা এর আগেও বার বার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে হামলা করেছে। এসব করে পার পেয়ে যাওয়াতে এরা বার বার দেশের মসজিদের সম্মানিত খতিবদের মসজিদে হামলা করে জঙ্গীবাদী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে দেশ জঙ্গীবাদীদের দখলে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নেতারা বলেছেন, জাতি আবারও দেখল হেফাজতীদের এজিদি আচরণ। ৬১ হিজরীতে এজিদ বাহিনী ইমাম হোসাইনকে শহীদ করে ক্ষান্ত হয়নি। তারা মক্কার হেরম, মসজিদে নববী শরীফে হামলা, রক্তপাত ও জুলুমের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আবারও সেই পুরনো চেহারায় ধরা পড়েছে নব্য এজিদি হেফাজতী-ওহাবীরা। শোকাবহ আবহের মধ্যে জামায়াত-হেফাজতের ফায়দা লোটার চেষ্টায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ নজিবুল বশর মাইজভা-ারী ও মহাসচিব লায়ন এমএ আউয়াল বলেন, সাভার ট্র্যাজেডির ঘটনায় পুরো জাতি যখন শোকে মুহ্যমান তখনও ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত হেফাজত ও জামায়াতীচক্র। এটা জামায়াতের সংগঠন। সকলে যখন কর্মসূচী বন্ধ করছে শোকার্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছে সেখানে এই অপশক্তি দেশজুড়ে ধর্মীয় সহিংসতা চালানোর ফায়দা লুটছে।
এদিকে জামায়াতকে সুবিধা করে দেয়ার নানা দাবি তোলার আন্দোলনের কারণে হেফাজতে ইসলাম আর 'অরাজনৈতিক' নেই। অভিযোগ উঠেছে, হেফাজতের নেতৃত্বে থাকা বিএনপি-জামায়াত জোটের পাঁচ নেতাই মূলত চালাচ্ছেন হেফাজতের কার্যক্রম। জামায়াত-বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এরাই হেফাজতের ব্যানারে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টায় ব্যস্ত। হেফাজতের পাঁচ নেতার তৎপরতার ফলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকে 'নাস্তিক' ঘোষণা করেন আল্লামা শফী। এখন এই পাঁচ নেতা আসন্ন ঢাকা অবরোধ কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে শফীর মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় হারাম এবং ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের 'নাস্তিক ও মুরতাদ' ঘোষণা আদায়ের চেষ্টা করছেন। অভিযোগ উঠেছে, এই নেতারা আসলে ১৮ দলীয় জোটের এ্যাসাইনমেন্ট বাস্তবায়নেই ব্যস্ত। এই পাঁচ নেতা হলেন- হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ ও ঢাকা কমিটির সদস্যসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, হেফাজতের ঢাকা কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমি এবং কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহি। অভিযোগ পাওয়া গেছে, এই নেতাদের মধ্যে তিনজন আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন লাভেরও আশ্বাস পেয়েছেন ১৮ দলীয় জোট থেকে। বাকি দুজনও পেয়েছেন নানা সুবিধার আশ্বাস। তবে কেবল এই ব্যক্তিরাই নয়, হেফাজতের ব্যানারে বিএনপি-জামায়ায়াতের হয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে আরও কয়েক নেতার বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক সংগঠন বলে দাবি করা হলেও পুরোপুরি রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে মূলত হেফাজতে ইসলাম। আর এই রাজনৈতিক কর্মকা-ে যোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও বাম দল বিরোধী সব শক্তি। হেফাজতের আন্দোলনে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের তরুণদের। এই তরুণ প্রজন্মের সবাইকে গড়ে 'নাস্তিক' ঘোষণা করে মানুষের ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগাতে মরিয়া এখন হেফাজতে ইসলাম। কারণ এই তরুণরাই তাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ১৮ দলীয় জোটের ধর্মভিত্তিক দলের নেতারা। আর হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন জারি রাখতে সিংহভাগ টাকা ঢালছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের সঙ্গে দূরতম সম্পর্ক নেই দাবি করা হলেও হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা। জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম নগর শাখার নেতাদের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কয়েক নেতার নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে, হচ্ছে টাকার লেনদেনও। হেফাজতের সমাবেশে সেøাগান উঠছে সাঈদীর মুক্তির দাবিতে পুলিশসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, হেফাজতে ইসলাম এবং ১৮ দলীয় জোটের কয়েক নেতার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণও পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ২০১০ সালে সরকারের নারীনীতির প্রতিবাদ জানাতেই মূলত হেফাজতে ইসলাম নামের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী অধ্যক্ষ আল্লামা শাহ আহমদ শফী। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারেই ১৮ দলীয় জোট ইসলামবিরোধী কর্মকা- বন্ধের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেমেছে। হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে নেতৃত্বে আছেন ১৮ দলীয় জোটভুক্ত সকল ইসলামী দলের নেতারা। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা শফীর পরই অন্য নেতাদের অবস্থান। তাঁদের কেউ নায়েবে আমির, কেউ যুগ্ম মহাসচিব বা অন্য পদে আছেন। অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির পদে আছেন নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি জঙ্গীবাদের দায়ে অভিযুক্ত মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপি সমর্থিত জাতীয় ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল মান্নান, ঢাকার তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং জামায়াতে ইসলামীর রুকন জয়নাল আবেদীন, সম্মিলিত ওলামা-মাশায়েখ সংগ্রাম পরিষদের সেক্রেটারি ইসলামী দলগুলোর সমন্বয়কারী এবং চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর রুকন অধ্যক্ষ মাওলানা মিয়া মুহাম্মদ হোসাইন শরীফ এবং আছেন চট্টগ্রামের লিয়াজোঁ কমিটির আহ্বায়ক ও নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি আব্দুর রহমান চৌধুরী। জানা গেছে, কওমি মাদ্রাসা কেন্দ্রিক অধিকাংশ আলেম জামায়াতবিরোধী হওয়া সত্ত্বেও এই নেতারাই ১৩ দফায় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং মওদুদীর বই সরকারীভাবে বাজেয়াফত করার দাবি রাখতে দেননি। এরাই বিভিন্নভাবে শফির ছেলে মাওলানা আনাসের মাধ্যমে সংগঠনকে জামায়াতী ঘরানা বানিয়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেক আলেম ওলামা। তাঁরা বলছেন, হেফাজত জামায়াত-বিএনপির একটি সংগঠন হয়ে গেছে। এটা কোন অরাজনৈতিক সংগঠন নয়। এদিকে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে টাকা ঢালছে জামায়াত। অভিযোগ উঠেছে, হেফাজতে ইসলাম এবং জামায়াতে ইসলামীর চার নেতা আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত। তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। রাষ্ট্রীয় অন্য একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন চাঙ্গা রাখতে জামায়াতে ইসলামী টাকা দিচ্ছে বলে আমরা জেনেছি। এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। ঠিক এমন এক পরিস্থিতিতে হেফাজত দেশে ১৮ দল বিশেষত জামায়াতকে রক্ষায় কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাভারের মর্মান্তিক ঘটনার পরও রাজধানীসহ সারাদেশে আর শুক্রবার চট্টগ্রামে হেফাজতের মহাসমাবেশের নামে জামায়াত-শিবিরকে নিয়ে মহড়া দেয়ার পর ক্ষুব্ধ ইসলামী দলগুলোও।
কেবল তাই নয়, দেশজুড়ে শোকাবহের মধ্যেই শুক্রবার জুমার নামাজের পর মহাসমাবশের নামে জামায়াত-শিবিরকে নিয়ে নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতিব ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা জালালুদ্দিন আলকাদেরীর ওপর হামলা করেছে হেফাজত নেতারা। ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম ও রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে সুন্নী সম্প্রদায়। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে রাজধানী জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় বিক্ষোভ করেছে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত। প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন। সংবাদ সম্মেলন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে জঙ্গীবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করতে চায় বলে অভিযোগ করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা'আত নেতারা। সংগঠনটির ব্যাপারে সরকারকে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ারও দাবি জানান তারা। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সমাবেশে আসা হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা আল্লামা জালালুদ্দিন আল কাদেরীকে লাঞ্ছিত করে। এ সময় তাঁকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত ও তরিকত ফেডারেশন বলেছে, ওয়াহাবী-মওদুদীরা এর আগেও বার বার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে হামলা করেছে। এসব করে পার পেয়ে যাওয়াতে এরা বার বার দেশের মসজিদের সম্মানিত খতিবদের মসজিদে হামলা করে জঙ্গীবাদী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে দেশ জঙ্গীবাদীদের দখলে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নেতারা বলেছেন, জাতি আবারও দেখল হেফাজতীদের এজিদি আচরণ। ৬১ হিজরীতে এজিদ বাহিনী ইমাম হোসাইনকে শহীদ করে ক্ষান্ত হয়নি। তারা মক্কার হেরম, মসজিদে নববী শরীফে হামলা, রক্তপাত ও জুলুমের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আবারও সেই পুরনো চেহারায় ধরা পড়েছে নব্য এজিদি হেফাজতী-ওহাবীরা। শোকাবহ আবহের মধ্যে জামায়াত-হেফাজতের ফায়দা লোটার চেষ্টায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ নজিবুল বশর মাইজভা-ারী ও মহাসচিব লায়ন এমএ আউয়াল বলেন, সাভার ট্র্যাজেডির ঘটনায় পুরো জাতি যখন শোকে মুহ্যমান তখনও ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত হেফাজত ও জামায়াতীচক্র। এটা জামায়াতের সংগঠন। সকলে যখন কর্মসূচী বন্ধ করছে শোকার্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছে সেখানে এই অপশক্তি দেশজুড়ে ধর্মীয় সহিংসতা চালানোর ফায়দা লুটছে।
__._,_.___