Banner Advertiser

Thursday, November 14, 2013

[mukto-mona] ক্ষমতার মাদক অতি ভয়ানক



ক্ষমতার মাদক অতি ভয়ানক

হা সা ন হা ফি জ
পাপ বাপকেও ছাড়ে না। এই রচনায় বিরস বদনে যা বয়ান করতে চলেছি, তা বড়ই মর্মান্তিক। পিতার লোভের ভয়ঙ্কর পরিণতির কথা জানাব। চরমতম মূল্য দিতে হলো পুত্রকে। পিতা একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। ডাঁটিয়াল মাদক ব্যবসায়ী। দিনে অন্তত ৩৫ লাখ টাকা লাভ হয় এই মাদক ব্যবসা থেকে। সেই মাদকের কারণেই প্রাণ হারাতে হলো পুত্র বিপ্লবকে। তার বয়স হয়েছিল মাত্র ২৪ বছর। গলায় ফাঁস দিয়ে নিজেই নিজের ভবলীলা সাঙ্গ করেছে সে।
ঘটনা নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের। বিপ্লব ছিল মাদকসেবী। তাকে সুস্থ করার নামে শাসন করা হতো। এই শাসনের অজুহাতে পিতা ব্যাপক নির্যাতন করতেন পুত্রকে। সম্প্রতি ওকে বেধড়ক মারপিট করা হয়। হুমকি দেয়া হয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানোর। বিপ্লব বেছে নেয় আত্মহননের পথ। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের দ্বিতীয় স্ত্রীর (তালাকপ্রাপ্তা) একমাত্র পুত্র ছিল সে। পুলিশ সুপার বলেছেন, লাশ দেখেছেন তিনি। গলায় ফাঁস লাগিয়ে মরেছে বিপ্লব। সুইসাইডাল কেস। পরিবারে অনেক অশান্তি ছিল তাকে ঘিরে। বিপ্লবের বিয়ে নিয়েও বড় ধরনের গোলমাল ছিল।
ঘটনার খুঁটিনাটি একটু জানবার চেষ্টা করব আমরা। বিপ্লবদের বাড়ির খুব কাছেই রয়েছে একটি পেট্রোল পাম্প। লাগোয়া গলিতে দিবানিশি চলে মাদকের বেচাকিনি। ওই পরিবারের মালিক তার আব্বাজান। মাদক মাগনা নিয়ে সেবন করত বিপ্লব। এক পর্যায়ে তা বন্ধ হয়ে গেল। বিক্রেতাকে মাগনা বেচতে নিষেধ করে দিয়েছেন বিপ্লবের বাবা। কী আর করা! নেশা তো ছাড়া যায় না। ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা, সিগারেট। কত স্বাদ! রঙিন ফুর্তি। নেশার টাকা না জুগিয়ে উপায় নাই। কিনে খেতে হচ্ছে যেহেতু। বিপ্লবের সঙ্গী-সাথী পাঁচ পাঁচজন। সক্কলের খানা খাদ্য (ভাত মাছ না, নিশার বস্তু) জোগান দিতে দরকার ম্যালা টাকা-পয়সা। দৈনিক ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা। ছয় জনের এই বাহিনী বেকার পাট্টি। আয়-রোজগার নাই কারোই। টাকা-পয়সা পেতে বাঁকা পথ ধরতে হয় তাই। লোকজনকে অপহরণসহ নানা রকমের অপকর্ম। ব্যবসায়ী ও আগন্তুকদের আটকে ফেলতো ওরা। মোটা অঙ্কের চান্দা আদায়ের বন্দোবস্তি। নিত্যদিনের ঘটনা এসব। অপকর্মের যে হোতা, খুবই মজবুত ওর খুঁটি। প্রবল ক্ষমতাধর লোকের ছাওয়াল। তার বিরুদ্ধে ট্যাঁ ফো করবার উপায় নাই। কার ঘাড়ে ক'টা মাথা? প্রতিবাদ করবার সাহসই ছিল না কারো। মামলা ঠুকে দেয়া তো দূর অস্ত। গ্রুপটির অপরাধের মাত্রা, তীব্রতা বাড়তে থাকে। হয়তো সেটাই ছিল স্বাভাবিক।
শিমরাইল মোড় থেকে দু'জনকে আটকে দেড় লাখ টাকা আদায় করা হয়। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কানে যায় এ খবর। বিপ্লবসহ পাঁচজনকে পাকড়াও করা হয়। অ্যাকশনে গেলেন কাউন্সিলর সাহেব। এক ভাগিনাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেন। এক ভাতিজাকে তুলে দেন বড় ভাইয়ের হাতে। পড়শির এক পুত্রকে সোপর্দ করেন পুলিশের কাছে। চালাক-চতুর অপর এক ভাতিজা পানিতে ঝাঁপ দেয়। সে সক্ষম হয় পালিয়ে যেতে। বাকি রইল নিজ পুত্র। বিপ্লব। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে খবর দেয়া হলো। বিপ্লব চেঁচিয়ে এর প্রতিবাদ করে। নিরাময় কেন্দ্রে যাবে না বলে জানায়। এক পর্যায়ে বাপকে গালাগাল শুরু করে সে। ওয়ার্ড কমিশনার বিপ্লবের ঘরের জানালা ভেঙে ফেলেন। পিস্তলের গুলিতে পুত্রকে খুন করতে উদ্যত হন। লোকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বুঝিয়ে সুজিয়ে শান্ত করেন। পরে বিছানার চাদর গলায় পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে পড়ে বিপ্লব বেচারা। তার চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে না। এতে সন্দেহ হয় লোকজনের। কী ব্যাপার? কোনো সাড়া-শব্দ নেই কেন? খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা গেল, বিপ্লব ঝুলছে। ঘরের দরজা ভেঙে তাকে নেয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু বৃথাই। ডাক্তার ঘোষণা করলেন, বিপ্লব মৃত।
এক সময় নম্র-ভদ্র ছেলে ছিল সে। ছিল মেধাবীও। পড়াশোনা করেছে ভারতের দার্জিলিংয়ে। খালাতো বোনের প্রেমে পড়ে সে। চার বছর আগে বিয়ে করে তাকে। পালিয়ে গিয়ে এই বিয়ে করতে হয়। ৮/৯ মাস বিভিন্ন জায়গায় পলাতক থেকে সংসার জীবন-যাপন করে তারা। একরকম ভালোই চলছিল। হঠাত্ দৃশ্যপটে পিতার আবির্ভাব। তিন বছর আগে জোর খাটিয়ে ডিভোর্স করানো হয়। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বিপ্লব। নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে সে। আরম্ভ হয় অন্ধকারের জীবন। ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা ও সিগারেট সেবন চলতে থাকে এন্তার। মা কাছে নেই। আপনজন বলতেও কেউ নেই পাশে। ক্রমে ক্রমে বেপরোয়া মরিয়া হয়ে ওঠে বিপ্লব। তার নেশাসঙ্গীও জুটে যায় কয়েকজন।
সিদ্ধিরগঞ্জের ওই অঞ্চলে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার মাদক খুচরা ও পাইকারি বেচা-বিক্রি হয়। বাউ রে! সোনার বাংলায় এরকম আরো কত কত সিদ্ধিরগঞ্জ আছে? আমরা জানি না। জানতে চাই কি আদৌ? 'জানার কোনো শেষ নাই/জানার চেষ্টা বৃথা তাই'। সত্যজিত্ রায়ের বিখ্যাত ফিল্ম 'হীরক রাজার দেশে'তে এই সংলাপটি ছিল। আমাদের মাদক ভুবন সম্পর্কেও কথাটি প্রযোজ্য।
মাদক-ব্যবসায়ীরা বড়ই শেয়ানা। প্রতাপশালীও। তারা সব ক্ষেত্রেই 'ম্যানেজ' করতে ওস্তাদ। সে এক বিশাল কায়কারবার। বড়ই শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। এ সংক্রান্ত তথ্য নাড়াচাড়া করতে গিয়ে 'তবদা' লেগে গেল। কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হওয়া যাকে বলে। মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট আছে। এটা কম-বেশি সকলেরই জানা। সিদ্ধিরগঞ্জে এক চেয়ারম্যান হচ্ছেন পালের গোদা। অবৈধ আয়ের ভাগ তিনি বণ্টন করেন নানা স্তরে। মহা উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের কর্মকর্তা পর্যন্ত এই লিস্টির আওতায় আছেন। প্রতি মাসে উেকাচ হিসেবে ১৮০টি খামে পুরে তা পাঠানো হয়। 'তেনাদের' কাছে। তেনারা দেশ জাতির কর্ণধার, বাহিরে বাহিরে ধোয়া তুলসীপাতা সদৃশ। একেকখানা খামে একেক অঙ্কের মালপানি (মানে টাকা)। পৃথিবীটা কার বশ? টাকার বশ। টাকায় নাকি বাঘের চোখও মেলে। এক এক খামে বন্দি করা হয় ১০ হাজার থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত। অঙ্ক শুনে ভিরমি খাওয়ার জোগাড় হবে পাবলিকের।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসির কাছে। তার বক্তব্য : বিপ্লবের মৃত্যুর বিষয়ে থানায় কোনো মামলা হয়নি। ওই চেয়ারম্যানের কাজকর্ম সম্পর্কে কেউ কোনো অভিযোগ করে না। সুতরাং কোনো পদক্ষেপও নেয়া যায় না।
আমরা বলব, বিপ্লবের মৃত্যু অবশ্যই দুঃখজনক। মর্মান্তিক। একটি মেধাবী প্রাণ অকালে ঝরে গেল। নষ্ট হলো একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনাও। বিপ্লবের মৃত্যুতে আমরা ব্যথিত। মাদকের সর্বনেশে ছোবল থেকে আমাদের তরুণদের মুক্ত করতে হবে। এই বেদনাদায়ক ঘটনা থেকে আমরা যেন এই শিক্ষণই নেই।
দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এক্ষণে অতীব ভয়ঙ্কর। আমরা এক অগ্নিগর্ভ সময় পার করছি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার তাদের মেয়াদের শেষপ্রান্তে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া সব মন্ত্রীই পদত্যাগ করেছেন। তারপরও দেশ-জাতির কল্যাণে (!) 'দায়িত্ব' পালন করে চলেছেন পদত্যাগী মন্ত্রীরা। সত্যি সেলুকাস! কী বিচিত্র এই দেশ। চলছে টানা হরতালের স্পেল। সামনে ঘনায়মান আরও বিপদ। আরও অনিশ্চয়তা, অন্ধকার ও রক্তপাত অপেক্ষমাণ। সংবিধানের নামে মুখে ফেনা তুলে ফেলছে সরকার। অথচ নির্বিচারে অবলীলায় লঙ্ঘন করে চলেছে সংবিধান। একে 'জাতীয় মশকরা' বলে অভিহিত করেছে জাতীয় একটি সংবাদপত্র। আরেকটি সংবাদপত্রে শিরোনাম হয়েছে 'পদত্যাগের পরও তারা মন্ত্রী প্রশাসনে অস্বস্তি। '
আমরা দেখতে পাচ্ছি রাষ্ট্রক্ষমতা অত্যন্ত ভয়ানক এক প্রকার মাদক। এই নেশায় বুঁদ হলে আর বাঁচা-গতি নাই। ইয়াবা ফেনসিডিল এই আগুনে কারা পুড়ছে? জনগণ। ব্যাক্কল জনগণ ছাড়া আর কে বা পুড়বে? শেষ পরিণতি কী? আমরা জানি না। আল্লাহ পাক জানেন। একমাত্র আল্লাহই আমাদেরকে মহাজোটীয় মহা মুসিবত থেকে রেহাই দিতে পারেন। নিরাশ আঁধারে খোদা তুমি হে আশার নূর।
লেখক : কবি ও সাংবাদিক
hasanhafiz51@gmail.com


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___