Banner Advertiser

Sunday, September 14, 2014

[mukto-mona] Paki Spy.



Please Read.....
মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মবেশে পাকিস্তানী গুপ্তচর ওয়ারিশরাও পাকিস্তানী
সরদার সিরাজুল ইসলাম
৭৫-এর পরর্বতীতে ভক্তরা তাকে ঘোষক দাবি করত। এতে মেজর জিয়ার অনাগ্রহ ছিল না। এতে অতি উৎসাহী ছিলেন চৈনিকরা, বিশেষ করে দৈনিক বাংলা-বিচিত্রাসহ কতিপয় মিডিয়া। কারণ চৈনিকদের উৎসাহের কারণ ছিল ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে যেহেতু চীন ছিল পাকিস্তানের পক্ষে সেহেতু এ দেশের চৈনিকরা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। যার প্রমাণ ভাসানী ন্যাপের সম্পাদক মশিউর রহমান যাদু মিয়া, আনোয়ার জাহিদ (কলাবরেটর আইনে গ্রেফতার), এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে যুদ্ধ করেছে হক, তোহা গ্রুপের আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি। যাদের সমর্থন করতেন বদরউদ্দিন ওমর। যিনি এখনও কতিপয় সংবাদপত্রে কলাম লিখে মুজিবের শ্রাদ্ধ করছেন, জামায়াতের পক্ষে সাফাই গাইয়ে মুলত বিএনপিকে ধোয়া তুলসি পাতা বানাতে চেষ্টা করছেন। আজ তাকালে দেখা যায় যে, সেই ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী শুধু জামায়াত নয়, চৈনিকরা এখন বিএনপির কণ্ঠস্বর। ভুলে থাকার কথা নয়, বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে চীনের স্বীকৃতি দেয়ায় বাম নেতা জিয়া অতি প্রিয় এনায়েতউল্লাহ খান লিখেছিলেন, এতদিনে দেশ স্বাধীন হলো। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরে জিয়াপুত্রের বক্তব্যের সঙ্গে ৭৫ সালের এনায়েতউল্লাহ খানের বক্তব্যের একটি মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 
এখন তাঁর স্ত্রী, পুত্ররা দাবি করছেন যে জিয়াই নাকি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি। এ প্রসঙ্গে আসার আগে সঠিক তথ্য তুলে ধরার আগে বলতে হয় যে, ম্যাডাম খালেদা তিনি এবার স্বীকার করছেন, তিনি ভারতে যাননি চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন, সেখান থেকে কিভাবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে স্থানান্তর হলেন তার বর্ণনা- যদিও এ ধরনের বর্ণনাভিত্তিক একটি লেখা সংবাদিক মঞ্জুর আহমেদ (মার্কিন প্রবাসী) অনেক আগেই লিখেছেন। তার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আগমনের কারণ ছিল জেনারেল জানজুয়ার আতিথেয়তা গ্রহণের। উল্লেখ্য যে, ১৯৯২ সালে উক্ত জানজুয়া মারা গেলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সকল প্রটোকল ভঙ্গ করে সেই জানজুয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় শোকবার্তা পাঠিয়েছিলেন। এটা স্পষ্ট ছিল, তিনি পাকিস্তানের আতিথেয়তা, পাকিস্তানের পক্ষে এবং মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষেই সক্রিয় ছিলেন। উচিত ছিল পাক বাহিনী আত্মসমর্পণের সঙ্গে সঙ্গে তাকেও পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়া। আসলে জিয়াউর রহমান অনিচ্ছাকৃতভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে বাধ্য হয়েছিলেন। তার কোন অঙ্গীকার ছিল না বাঙালী ও এই ভূখ-ের প্রতি। কেননা সে ছিল অবাঙালী এবং পাকিস্তানের অনুগত। পাকিস্তানীদের প্রতি তার অতিভক্তির কিছু তথ্য প্রথমেই উল্লেখ করা যেতে পারে। ১৯৪৭ সালে তিনি ছিলেন কলকাতায়। ভারত বিভক্তির সময় বাঙালী মুসলমানরা ঢাকায় এবং অবাঙালীরা পাকিস্তান চলে যায়। জিয়া পরিবার গেলেন করাচীতে। সেখানে স্কুল শিক্ষা শেষে ১৯৫২ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬০ সালে তিনি বিয়ে করেন খালেদা বেগমকে। ১৯৬৫'র পাক-ভারত যুদ্ধে তার বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বের পদক 'হিলাল-ই-জুুরাত' খেতাবপ্রাপ্ত হন। (সূত্র : উইকিপিডিয়া ও পাক ডিসেন্স ফোরাম-আবুল খায়ের, জনকণ্ঠ ৩০/০৩/১৪)
জনকণ্ঠে একই কলামে আবুল খায়ের আরও লিখেছেন, '১৯৬৮-৬৯-এ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে খ্যাত রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্যের মামলায় পাকিস্তান সামরিক সরকারের কৌঁসুলি কর্নেল মুস্তাফিজুর রহমানের সহকারী ছিলেন। কথিত আছে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সামরিক সরকারের পক্ষে কথা আদায়ে এই দু'জন বঙ্গবন্ধুকে জেরা ও নির্যাতন করেন। (সূত্র : জেনারেল জিয়ার রাজনীতি, আবীর আহাদ)।" (উল্লেখ্য, উক্ত কর্নেল মুস্তাফিজকে জিয়া করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী ও খুনী আব্দুল আলিমকে রেলমন্ত্রী।) সে যাই হোক বা যেমন করেই হোক তিনি মুক্তিযোদ্ধার লেবাস পরেছিলেন যে পাকিস্তানী চক্রান্তে কৌশল হিসেবে তার ৭৫ পরবর্তীতে দিনের মতো পরিষ্কার হয়েছে, খুলে গেল তার মুখোশ ফেলে দিলেন জয়বাংলা, ফিরে গেলেন জিন্দাবাদ-এ। অনেকেই বলেন, জিয়াকে বঙ্গবন্ধু বীরউত্তম খেতাব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর খুনী ডালিমও বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্ত। এদের খেতাব দেয়ার পিছনে মূল উদ্যোক্তা ছিল জে. ওসমানী। যিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা বঞ্চিত হয়েছে পুরস্কার থেকে। আর যারা পুরস্কৃত হয়েছেন তাদের অনেকেই পাকিস্তানী গুপ্তচর। ইতোপূর্বে একটি লেখায় আমি দাবি জানিয়েছিলাম যারা জয় বাংলা বর্জন করেছে তাদের খেতাব বাতিল করতে হবে। 
দীর্ঘ ৪৩ বছর পরে তার পুত্র এবং স্ত্রী যখন দাবি করেন যে জিয়া প্রথম রাষ্ট্রপতি অর্থাৎ ৭৫ পরবর্তীতে জিয়া রাষ্ট্রপতি পদ দখল করার আগে এদেশ স্বাধীন ছিল না বলেই তারা এই দৃষ্টতা দেখাতে সাহস পাচ্ছে। 
বঙ্গবন্ধু জাতির জনক এবং ঘোষক। তিনি ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চ বন্দী হওয়ার পূর্বে যে চূড়ান্ত ঘোষণা দেন তা প্রতিষ্ঠিত সত্য, দালিলিক তথ্য দ্বারা প্রমাণিত সরাবিশ্বে প্রচারিত ঘোষণাটি ছিল এরূপ: 
This may be my last massage from today Bangladesh is independent. I call upon the people of Bangladesh where ever you are might be and with whatever you have, to resist the army of occupation to the last. Your fight must go until the last solder of the Pakistan Army is expelled from the soil of Bangladesh and final victory is achieved.

বঙ্গবন্ধুর উল্লেখিত ঘোষণা সমগ্র দেশে ওয়ারলেস এবং টিএন্ডটির মাধ্যমে প্রচারিত হয় ২৬ মার্চের প্রথম প্রহর থেকেই। চট্টগ্রামে এই তথ্য পৌঁছে রাত ১২টা নাগাদ এবং তা সূত্রে সে রাতেই লিফলেট বিতরণ এবং মাইকে মাইকিং বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার বাণী প্রচার করা হয়। ২৬ মার্চ দুপুর পৌনে ২টায় চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ জেলা সম্পাদক এম এ হান্নান চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র (যা বন্ধ ছিল তা খুলে) স্বকণ্ঠে এই ঘোষণা প্রদান করেন কালুরঘাট ট্রান্সমিটিং সেন্টার থেকে। 
এছাড়া উল্লেখ্য, ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে ছাত্রনেতৃবৃন্দ (নূরে আলম সিদ্দিকী, শাহজাহান সিরাজ, আব্দুল কুদ্দুস মাখন, আসম রব এবং অন্যান্য) যে স্বাধীনতার ইস্তেহার পাঠ করেন তাতে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক হিসাবে উল্লেখ রয়েছে। 
মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য দেশের প্রতিষ্ঠাতা প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের গঠিত মুজিব নগর সরকার ১০/৪/১৯৭১ তারিখে সরকার গঠন এবং শপথ গ্রহণ কালে ২৬/৩/৭১ থেকে কার্যকর যে আনুষ্ঠানিক 'স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র' দলিলটি বিধিবদ্ধ করেন তাতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে,"...
...যেহেতু এইরূপ বিশ্বাসঘাতক (পাকিস্তানের) আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জনগণের আত্ম নিয়ন্ত্রণের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ তারিখে ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বাংলাদেশের মর্যাদা ও অখ-তা রক্ষার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান"...
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তফসিল অনুচ্ছেদ ১৫০ ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলী অংশের উপ-অনুচ্ছেদ ৩(১) সংবিধানের উৎস হিসাবে স্বীকৃত এবং সংবিধান প্রণেতা গণপরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত যা পরবর্তীতে কেউ বর্জন বা পরিমার্জন করেননি। এর ফলে স্বাধীনতার ঘোষক বিষয়টি মীমাংসিত। বঙ্গবন্ধু ব্যতীত অন্য কাউকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা অসাংবিধানিক এবং রাষ্ট্রদ্রোহ। কিন্তু এই অংশটি ৩১/১২/১৯৯৮ এবং ৩০/৫/২০০০ তারিখে সংশোধিত সংবিধানের পৃষ্ঠা ১৮২ অথবা ৯০ তে সংবিধানের সঙ্গেই সংযুক্ত ছিল। কিন্তু বিগত ২০০৪ সালে জামায়াত-বিএনপি জোট সরকার সংবিধানের উক্ত পৃষ্ঠাটি বাদ দিয়ে পুনর্মুদ্রণ করে সংবিধানের অঙ্গচ্ছেদ ঘটিয়েছে যা রাষ্ট্রদ্রোহ। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত তা বাতিল এবং জিয়ার শাসনকালের অবৈধ ঘোষণা এবং জিয়াকে ঠা-া মাথার খুনী হিসাবে শনাক্ত করা হয়েছে। ২০১১ সালে কোর্টের আদেশে এবং সংসদে সংশোধিত সংবিধানে এসব দলিল ৭ই মার্চের ভাষণ এখন সংবিধানের অংশ। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, জামায়াত জোট সরকারের আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ ১৯৮৩ সালে ইধহমষধফবংয ঊৎধ ড়ভ ঝযবরশয গঁলরনঁৎ জধযসধহ গ্রন্থে উক্ত ঘোষণাপত্রটি সংযোজনী হিসাবে মুদ্রিত রয়েছে। অথচ এ ধরনের জঘন্য অপরাধ ঐসব 'শিক্ষিত' ব্যক্তিরাই এই জনপদে গত ঊনচল্লিশ বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছে। এতদ্বসত্ত্বে¡ও জিয়াকে যারা স্বাধীনতার ঘোষক এবং সর্বশেষ ২৬/৩/১৪ তারিখে দাবি করেন তাদের অবগতির জন্য জিয়ার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং বেতার কেন্দ্রে গমনের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা নাগরিক দায়বদ্ধতা। মেজর জিয়া ২৭শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে চট্টগ্রাম বেতারে ভাষণ দেন কিন্তু পরবর্তীতে বিশেষ করে ১৯৯১ সালে বিএনপি নির্বাচনী ইস্তেহারে তারিখটি ২৭-এর বদলে ২৬ দাবি করেন। এখনও তাই চলছে বরং জঘন্য মাত্রায়। ২৫-২৭ মার্চ মেজর জিয়া কোথায় কি করছিলেন? কখন, কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান এবং বেতার কেন্দ্রে গমন, ইতিহাসের এই সব প্রাসঙ্গিক তথ্যসমূহ লিপিবদ্ধ রয়েছে জিয়া লিখিত দুটি প্রবন্ধ
(ক) সেদিন চট্টগ্রামে যেমন করে স্বাধীনতার লড়াই শুরু হয়েছিল- দৈনিক বাংলা ২৫/২৬ শে মার্চ ১৯৭২ (স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : নবমখ- পৃ. ৪০-৪৫)।
(খ) একটি জাতির জন্ম-সাপ্তাহিক বিচিত্রা ২২ মার্চ, ১৯৭৪।
জিয়ার এসব প্রবন্ধে "বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির জনক" এবং "৭ই মার্চের ভাষণ গ্রীন সিগনাল" বলে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। মেজর জিয়া ছাড়াও তার তৎকালীন সহকর্মী ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লে. জে. মীর শওকত আলী বীরউত্তম, লে. শমশের মবিন চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার হারুন আহম্মদ চৌধুরী, মেজর এনাম, মেজর রফিক-উল-ইসলাম বীরউত্তম, মে. জেনারেল এমএসএ ভূইয়া প্রমুখ ৮ জন সেনা কর্মকর্তার লিখিত বক্তব্য রয়েছে জেনারেল জিয়া কর্তৃক ১৯৭৭ সালে নিযুক্ত তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প দ্বারা সংকলিত "বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল (মোট ১৬ খ-) নবম খ-ের" পৃ. ৪০-১২৭ পৃষ্ঠায়। মেজর জিয়ার ইউনিট ছিল চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের ৫ মাইল দূরে ষোলশহর টিসিবি গুদাম, বর্তমানে শপিং কমপ্লেক্স। সংশ্লিষ্ট দলিলসমূহে বর্ণিত তথ্যাদি দেখে বলা যায় যে, ২৫ তারিখ সন্ধ্যা থেকে বাঙালীরা বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের সড়ক ও জনপথে বেরিকেড এবং সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসের যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল তার বিরুদ্ধে মেজর ইউনিটের অবস্থান ছিল। জিয়ার ভাষায় "২৫শে মার্চ (৭১) রাত সাড়ে এগারোটায় সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসের জন্য ষোলশহর ইউনিট থেকে বন্দরে রওনা হন। কিন্তু আগ্রাবাদে (প্রকৃত স্থান পাঠানটুলী ১১তলা সাধারণ বীমা ভবন) রাস্তার বেরিকেড সরিয়ে সরিয়ে যেতে তার দেরি হচ্ছিল। এক পর্যায়ে তার সৈনিকসহ ট্রাক থেমে পরে।" আওয়ামী লীগ নেতা ডা. জাফর "বঙ্গবন্ধু ঘোষিত স্বাধীনতা রক্ষার জন্য বাঙালী সৈনিকদের আহ্বান জানালে ডিউটি অফিসার ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান তাকে আগ্রাবাদ থেকে ইউনিট ফেরত আসতে বাধ্য করে। এরপর জিয়ার ভাষায়, "শুরু হলো বিদ্রোহ। রাত তখন দুটো" (২৬শে মার্চ)। ইউনিটে এসে জিয়া কি করেন তা বিধৃত রয়েছে লে. (অব) শমশের মবিন চৌধুরীর (অবসরপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব) এবং ম্যাডাম খালেদার উপদেষ্টা) ভাষায় (নবম দলিল খ- পৃ. ৫৯) :
"মেজর জিয়াউর রহমানের নির্দেশে সবাইকে এক জায়গায় একত্রিত করা হলো। মেজর জিয়াউর রহমান টেবিলের উপর উঠে বক্তৃতা করলেন। তিনি বললেন, "আজ থেকে আমি অষ্টম বেঙ্গলের কমান্ডিং অফিসার। আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণের সংকল্প ঘোষণা করলাম। এবং আমার নির্দেশেই সব কিছু চলবে। আপনারা সবাই আমার সাথে থাকবেন। এখন এখানে থাকা আমাদের জন্য নিরাপদ নয়। আমরা সবাই কালুরঘাটের দিকে যাব। যেখানে গিয়ে আমরা বিঅরগানাইজ করব।" 
এরপর 'নিরাপদ' আশ্রয়ের সন্ধানে ইউনিটের জোয়ানরা শেষ রাতে রেল লাইন দিয়ে পদব্রজে এবং মেজর জিয়া জীপে কালুরঘাট ব্রিজ পার হয়ে বোয়াখালী থানার করইলডাংগা গ্রামে পাহাড়ের পাদদেশে আশ্রয় নেন ২৬ মার্চ ভোরে অর্থাৎ তারা শহর থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। শমশের মবিনের ভাষায়, "আমরা বিশ্রাম নিলাম এবং রি-অরগানাইজ করলাম। ২৬শে মার্চ এভাবে কেটে গেল।"
মেজর জিয়ার বেতার কেন্দ্রে গমন ও ভাষণ প্রদানের তথ্য রয়েছে জিয়া সহ উল্লিখিত সেনা কর্মকর্তাদের লেখায় এবং তারিখটি ২৭ মার্চ। কর্নেল ওয়ালী আহম্মদ জীবনের শেষ নেই গ্রন্থ (পৃ. ৯৭) তারিখটি ২৭ মার্চ। বলা নিষ্প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট স্থানটি ছিল পাক-বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কিভাবে বেতার কেন্দ্রে গেলেন তা এসব লেখায় অনুপস্থিত। ২৭ মার্চ সকালে বেতার কর্মী বেলাল মোহাম্মদ বেতার কেন্দ্রে পাহারার জন্য জিয়ার সন্ধানে যান এবং পটিয়া থানায় রোস্ট দিয়ে ব্রেকফাস্ট এবং স্বাধীন বাংলা বেতারের অনুষ্ঠান প্রভাবিত জিয়ার সাক্ষ্য পান। সেখান থেকে ৩টি লরিতে জওয়ান এবং ১টি জীপে জিয়াকে বেতার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন বিকেল ৫টা নাগাদ (স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পৃ. ৫৮-৫৯)। বেলাল মোহাম্মদের এই তথ্যের প্রতিবাদ কেউ করেননি।
মেজর জিয়ার ভাষায়- (মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর- শামসুর হুদা চৌধুরীর পৃষ্ঠা-৪৩)।
"২৭শে মার্চ শহরের চারদিকে বিক্ষিপ্ত লড়াই চলছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় রেডিও স্টেশনে এসেছিলাম। এক টুকরা কাগজ খুঁজছিলাম। হাতের কাছে একটি একসারসাইজ খাতা পাওয়া গেল। তার একটি পৃষ্ঠায় দ্রুত স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম ঘোষণার কথা লিখলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে তার প্রচার করা হলো। ২৮শে মার্চ সকাল থেকে পনেরো মিনিট পর পর ঘোষণাটি প্রচার করা হলো।" স্বাধীনতার ঘোষক কে এই বিতর্কের পরিসপাপ্তি টানাই জিয়ার তৎকালীন বিশ্বস্ত সহচর পরবর্তীতে বিএনপি নেতা লে. জে. মীর শওকত আলীর ১৯৮১ সালে প্রদত্ত একটি সাক্ষাতকারের সংশ্লিষ্ট অংশের উদ্ধৃতির মাধ্যমে (বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : ৯ম খ- ১২০-২১ পৃ.)
"প্রঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা বেতারে কখন প্রচারিত হয়েছে বলে আপনি বলতে চান?
উঃ এটা একটি বিতর্কিত প্রশ্ন। বেতারে স্বাধীনতা ঘোষণা যেটা নিয়ে সব সময় বিতর্ক চলতে থাকে যে জেনারেল জিয়া করেছেন, না আওয়ামী লীগ থেকে করেছেন, আমার জানামতে সব চাইতে প্রথম বোধহয় চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে হান্নান ভাইর কণ্ঠই লোকে প্রথম শুনেছিলেন। এটা ২৬শে মার্চ '৭১ অপরাহ্ন দুটো দিতে হতে পারে। 
কিন্তু যেহেতু চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের প্রেরক যন্ত্র খুব কম শক্তিসম্পন্ন ছিল, সেহেতু পুরা দেশবাসী সে কণ্ঠ শুনতে পাননি। কাজেই যদি বলা হয়, প্রথম বেতারে কার বিদ্রোহী কণ্ঠে স্বাধীনতার কথা উচ্চারিত হয়েছিল, তাহলে আমি বলল, চট্টগ্রামের হান্নান ভাই সেই বিদ্রোহী কণ্ঠ। তবে এটা সত্য যে পরদিন অর্থাৎ ২৭শে মার্চ, ৭১ মেজর জিয়ার ঘোষণা প্রচারের পরই স্বাধীনতা যুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেয়।" এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট বেতার ঘোষণাস্থলে জেনারেল জিয়া কোন স্মৃতিস্তম্ভ না করে মেজর জিয়ার অষ্টম বেঙ্গল ইউনিটটি যেখানে ছিল সেখানে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পরে একটি পার্ক তৈরি করেন। এর ফলকটি নিম্নরূপ :
বিপ্লব উদ্যান 
এখানে বীর চট্টলার অধিবাসীবৃন্দ এবং ৮ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালী অফিসার, জুনিয়র কমিশনড অফিসার ও সৈনিকরা মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বের নিরপরাধ বাঙালীদের উপর পাকিস্তান সরকারের বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে ২৬ মার্চ ৭১ তারিখে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। 
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য
রাষ্ট্রপতি লে. জে. জিয়াউর রহমান
বি, ইউ, পিএসসি-
১৯শে এপ্রিল, ১৯৭৯ ইং।
জিয়া লিখে গেছেন তারিখটি ২৭, এখনরা বলছেন ২৬ শে মার্চ। জিয়ার ভাষায়, বঙ্গবন্ধু জাতির জনক, ওরা মানে না। মিথ্যাবাদী কে? কে আছে জিয়ার সেই ভাষণে যে তার বাজে না? তাহলে শোনা যাক জিয়ার কণ্ঠে :
"The govt. of the Sovereign state of Bangladesh, on behalf of our great leader, the supreme Commander of Bangladesh, Sk. Mujibur Rahman, we hereby proclaim the Independence of Bangladesh................
উল্লেখিত প্রামাণ্য দলিল সাক্ষ্য দেয় জিয়ার বেতার ভাষণের ৩০ ঘণ্টা পূর্বে এমএ হান্নান বেতার ভাষণ দেন। এর পূর্বেই কুমিল্লায় ২৩ মার্চ '৭১ তারিখ খালেদ মোশারফ এবং জয়দেবপুরে ১৯ মার্চ '৭১ মেজর শফিউল্লাহ/মঈনুল হোসেন চৌধুরী প্রতিরোধ যুদ্ধে বাঙালীর পক্ষে অবস্থান নেয়। ঢাকা/ চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাকবাহিনীর রাত সাড়ে ১০টায় বাঙালীদের উপর আক্রমণ শুরু করলেও ২৫ মার্চ রাত দুটো পর্যন্ত সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস এবং পাক সেনাদের বিরুদ্ধে সড়ক ও জনপথে বাঙালীর দেয়া বেরিকেড পরিষ্কার পাকবাহিনীর পক্ষে কর্তব্যরত ছিলেন। আগ্রাবাদে বেরিকেড না থাকলে জিয়া বন্দরে পৌঁছে যেতেন। রাত দুটো পর্যন্ত ষোলশহরে এসে শহর নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। অথচ এই শহরে বিডিআর এ কর্মরত ক্যাপ্টেন রফিক মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ২৫ মার্চ রাত ৯টা থেকে এবং শহরেই পাকবাহিনীর প্রতিরোধে ব্যস্ত ছিলেন। ২৭ তারিখ সন্ধ্যায় বেতার ভাষণের সময় তার ভাষায়, শহরের চারদিকে বিক্ষিপ্ত লড়াই "প্রমাণ দেয় যে তার ঘোষণার পূর্বেই বাঙালীরা প্রতিরোধ (যেখানে তিনি ছিলেন না)। উল্লেখ্য, প্রশ্নের আদৌ নিষ্পত্তি হয়নি জিয়ার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ স্বতঃফূর্ত ছিল না তার প্রেক্ষাপটে বলা যায় যে, বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন, তোফায়েল থেকে শুরু করে আওয়ামী, ছাত্রলীগ এবং সকল সংসদ সদস্যদের সামরিক আদালতে একতরফা বিচার হয়েছিল কিন্তু জিয়ার কণ্ঠস্বর পাকবাহিনী শুনেছিল এবং একজন ডেজার্টার আর্মি হিসাবে তার কোর্ট মার্শাল হয়নি। অর্থাৎ পাক বাহিনী তাকে শত্রু মনে করেনি এবং সে যে শত্রু ছিল না বরং পাকিস্তানী এজেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিল তার প্রমাণ ৭৫-এর পরবর্তীতে নয়, বরং ১৯৭১ সালে জিয়া যখন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে তার স্ত্রীর দেখাশোনার জন্য পাকবাহিনীকে অনুরোধ করেন তখন তার জবাবে পাকবাহিনী থেকে বলা হয়েছিল, তারা শুধু তার স্ত্রীর হেফাজত করছেন না বরং জিয়াকে যে দায়িত্ব পাকবাহিনী দিয়েছেন তিনি সফলভাবে পালন করছেন বলে পাকবাহিনী সন্তুষ্ট। আসলে ইতিহাসে আপোসের কোন সুযোগ নেই। সেক্টর কমান্ডার জিয়াকে বঙ্গবন্ধু তার প্রাপ্য পাওনা বীরউত্তম খেতাব দিয়েছেন। ম্যাডাম খালেদাকে তার স্বামীর কাছে ফিরিয়ে দিয়ে পিতার দায়িত্ব পালন করেছেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রতি জিয়া-খালেদার আচরণের 'পুরস্কার' ইতিহাসের কাছে ছেড়ে দেয়া ভাল। পরিশেষে একটি কথা না বলে পারা যাচ্ছে না যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় সবচাইতে উপকৃত ব্যক্তি হচ্ছে খালেদা জিয়া। ৭২-এ যদি বঙ্গবন্ধু খালেদাকে গ্রহণে জিয়াকে বাধ্য না করতেন তাহলে আজ তিনি তার দুই সুপুত্রকে নিয়ে কোথায় থাকতেন। যে শেখ হাসিনা সেই সময় তাদের সাহায্য করেছিলেন তাকে বার বার হত্যা করার জন্য চেষ্টা চালানো এ কেবল পাকিস্তানী বিশ্বস্ত বেইমানদের পক্ষেই সম্ভব।



 



__._,_.___

Posted by: Nurul Bachchu <bachchuhaq13@yahoo.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___