Banner Advertiser

Sunday, September 14, 2014

Re: [mukto-mona] এ কে খন্দকারের ‘ভেতরে বাইরে’ কেবল বিভ্রান্তি



My friend MMR Jalal who maintains a website on Bangladesh 's independence movement has revealed to me few interesting facts. Poet Shamsur Rahman, Justice Habibur Rahman, and Badruddin Umar have said that Mujib ended his speech chanting Joy Pakistan. I was in the meeting and I am sure he did not do that. When challenged both the Rahmans admitted that their memory might have betrayed them. Not surprisingly Unar had heard it himself. Abul Mansur Ahmed wrote in one of his articles that it was the first time (March 7, 1971) that Mujib did not finish his speech by chanting Pakistsn Zindabad. The fact that Khandkar was not made minister this time might have provoked him to take revenge. 

Sent from my iPhone

On Sep 14, 2014, at 7:13 PM, "Shah Deeldar shahdeeldar@yahoo.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com> wrote:

 

Had he said 'Joi Pakistan', he would have been booed by that huge public given the anti Pakistani sentiment of that time. Khondoker is either lying or somebody  else put the words in the book to make it controversial and marketable.
-SD
 
"I speak for the trees, for the trees have no tongues."
-Seuss



On Sunday, September 14, 2014 6:18 PM, "ANISUR RAHMAN anisur.rahman1@btinternet.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com> wrote:


 
Let me put some genuine facts - not speculations, not conjectures. My eldest brother was the senior most Naval officer (holding the rank of a Captain) in the Pakistan Navy. Another brother was the senior most PIA Captain. Both of them were laid off around January 1971. They did not have to apply for a leave, they were just told that for their own sake, they should stop being involved in military activities in Pakistan. The real reason was that Pakistani military high command did not trust Bengali officers any more. If a Bengali military officer (Army, Navy and Air Force) applied for an extended leave, it was given most promptly and gladly. So, I think, A K Khandokar's narrative that he had first ten days holiday, followed by a three months leave is entirely believable. 
But what is not believable is that Sheikh Mujibur Rahman or anybody else could use the expression 'Joy Pakistan'. It is the most ludicrous expression. If somebody had to express support or sympathy to Pakistan, he would say 'Pakistan Zindabad', not 'Joy Pakistan'. It is like saying, 'Ishhar Hafez', instead of 'Allah Hafez' or 'Khoda Hafez'. A K Khandokar's concoction is nothing but a blatant lie. Moreover, at the race course on 7th March when the whole nation was at the height of nationalistic zeal and the demand for some sort of declaration for independence was at fever pitch, Mujibur Rahman would be raving mad to say anything like 'Pakistan Zindabad', let alone 'Joy Pakistan'. 

- AR


From: "Jiten Roy jnrsr53@yahoo.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com>
To: "mukto-mona@yahoogroups.com" <mukto-mona@yahoogroups.com>
Sent: Sunday, 14 September 2014, 18:27
Subject: Re: [mukto-mona] এ কে খন্দকারের 'ভেতরে বাইরে' কেবল বিভ্রান্তি

 


The last part of this review is very important to understand Mr. Khondakar's role as a Mukti-joddhya.

Mr. Khondokar, being an officer in the Pakistan Air Force, asked for extended leave of absence for 3 months at a time when Pakistani Army was preparing for an all-out battle against rebellious Bangalis in the east. The logical conclusion is that he had to produce a very convincing reason for his extended leave of absence; otherwise, it would not be granted leave so easily. Usual procedure in the Army under an emergency condition is – to call up all on leave Army reserves and officials to report to the base, and get ready for the forthcoming battle. How did he get his extended leave approved so easily, when Pakistani Army knew he might join rebels, which, as per record, he did?

You see, these are the issues new government of Bangladesh, after independence, should have investigated, right after independence,  before handing out high ranking positions and 'Khetabs' to people. This is a very critical step in which Mujib-government failed miserably.
Mujib-government gave out ranking positions and 'Khetabs' to anyone for just being present, in person, in some Mukti-Joddhya camps in India. There was no investigation to verify achievement or activity of these individuals in the camp. Many of those officers revealed their true identities within 3 years. In case of Mr. Khodakar, it took more than 40 years. I think, he could not leave with his duplicity any longer, and did not want to die with his false image as an ardent Mukti-joddhya, who was fighting for the independence or even believed in it.

Also, the topic of 'Joy Pakistan' along with 'Joy Bangla' at the end of Sheikh Mujib's speech will be important for someone who is trying to show that Sheikh Mujib was thinking about the wellbeing of Pakistan at that time. If this line of thought was true, it will be an absurd thought in his mind, because 'Joy Bangla' implies a defeat for Pakistan. These two phrases could not coexist in the same sentence of his speech. So, it is implausible that he will say something like Joy Pakistan in the same sentence.
Also, I get perplexed when I see so much publicity surrounding a book by Taj Uddin's daughter. As far as I understand, this is a book about the memory of a minor little girl. She writes about her father's activity as a lead political leader. In order to believe in her accounts, we have to believe that her father was discussing politics with her, and she had the intellect to comprehend them all. This is where I stop. I can't believe in the authenticity of her accounts. But, that did not stop media-intellectuals to dive in it.
It seems, Bangladeshi politics thrive on concocted stories much more than real ones, because real stories hurt many people.

Jiten Roy




On Saturday, September 13, 2014 2:11 PM, "SyedAslam Syed.Aslam3@gmail.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com> wrote:


 
রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ৩০ ভাদ্র ১৪২১
এ কে খন্দকারের 'ভেতরে বাইরে' কেবল বিভ্রান্তি
শামসুদ্দিন পেয়ারা
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এ কে খন্দকারের '১৯৭১ : ভেতরে বাইরে' বইটি পড়ে মনে হবে না নতুন কিছু জানলাম। ভূমিকার প্রথম পাতাতেই যদিও তিনি লিখেছেন '... মুক্তিযুদ্ধের অনেক ইতিহাসই আমার জানা আছে, যা অনেকেই জানেন না বা তাঁদের জানার সুযোগ ছিল না।'
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তো একটাই। তিনি 'অনেক ইতিহাস' কোথায় পেলেন সেটা একটা প্রশ্ন। হতে পারে সেটা তাঁর ভাষিক দুর্বলতা। বলতে চেয়েছেন, 'অনেক কাহিনী' তিনি জানেন। তবে সেই 'কাহিনী'গুলো যে কি তা বই পড়ে জানার জো নেই। যা লিখেছেন তা বহুজনে বহু আগে বহুবার লিখে ফেলেছেন। খন্দকার সাহেব নিছকই জাবর কেটেছেন। 
তাঁর নোটগুলো হারিয়ে গেছে, স্মৃতির ওপর নির্ভর করে লিখেছেন, আর সহায়তা নিয়েছেন কিছু প্রকাশিত গ্রন্থ, গ্রন্থকার ও দলিলের। যেসব বই ও দলিলের রেফারেন্স দিয়েছেন সেগুলোও সবারই পড়া- অর্থাৎ যারা পড়তে আগ্রহী।
যে তিনটি বিষয় তিনি জোর দিয়ে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন সেগুলো হচ্ছে ১. বঙ্গবন্ধু তাঁর ৭ মার্চের ভাষণ শেষ করেছিলেন 'জয় পাকিস্তান' বলে; ২. আওয়ামী লীগের কোন যুদ্ধপ্রস্তুতি ছিল না; ৩. শেখ মুজিব স্বাধীনতা চাননি, তাই ২৫ মার্চ রাতে তাজউদ্দীনের চাপাচাপি সত্ত্বেও স্বাধীনতা ঘোষণা করেননি। 
এগুলো কোন নতুন কথা নয়। এসব বলে বলে এক শ্রেণীর রাজনীতিবিদ মুখে ফেনা তুলে ফেলেছেন সেই ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকে। তারা যখন এসব বলে বলে ক্লান্ত হয়ে বসে পড়েছেন তখনই খন্দকার সাহেব ৪২ বছর অপেক্ষার পরে সেই চুপসে যাওয়া রাজনৈতিক বকাবাজদের হাতে পুরনো হাতিয়ারগুলো পুনরায় ধরিয়ে দিলেন। এসব হাতিয়ার যে বহু ব্যবহারে ভোঁতা হয়ে গেছে এবং এসবে যে ইতোমধ্যে মরচে ধরে গেছে সেটা তাঁর জানা উচিত ছিল। তবে বইটি ভাল বিক্রি হবে বলে মনে হয়। এ জন্য জাতীয় সংসদের কয়েক সদস্য জনাব খন্দকারের ধন্যবাদার্হ। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের এ অঞ্চলের ইতিহাস, ভূগোল, রাজনীতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক, আন্তঃধর্ম মনোভাব- বলতে গেলে জীবনের প্রায় সব কিছুই নানাভাবে বদলে দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার অতীতকে এমনভাবে ভেঙ্গেচুরে তছনছ করে দিয়েছে যা ১৯৫০-৬০-এর দশকের রাজনৈতিক নেতা-দার্শনিক কিংবা ষড়যন্ত্রকারী কারও ভাবনার মধ্যে ছিল না অথচ এই এতবড় ঘটনাটির অনেক দিকই এখনও অজ্ঞাত এবং অর্ধজ্ঞাত রয়ে গেছে। 
এর অনেক কারণের মধ্যে একটি কারণ হচ্ছে যারা এ মহাকা-ের কুশীলব তাদের অধিকাংশ এ বিষয়টির ওপরে তেমন বিশদ কিছু লিখে যাননি। তাদের অনেকেই এখন মৃত। অতএব, তারা তাদের স্ব স্ব অভিমত ও অভিজ্ঞতা কারও সঙ্গে ভাগাভাগি না করেই চিরপ্রস্থান করেছেন। তারা কি ভেবেছিলেন, তারা কি করেছিলেন, তার কোন কিছু আমাদের আর জানার সুযোগ নেই। ফলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এমনকি তারও বহু আগে থেকে শুরু হওয়া আমাদের মুক্তি সংগ্রামের লিপিবদ্ধ ইতিহাস একটি অবিচ্ছিন্ন ধারায় প্রবাহিত হয়নি। মাঝে মাঝে এমন সব অজানা খানা-খন্দক রয়ে গেছে যেখানে কেবল যে হোঁচট খেতে হয় তা নয়, কোন কোনটিতে একবারে হুমড়ি খেয়ে পড়তে হয় অথচ এ পথ একদা আমরা নির্বিঘেœই পার হয়ে এসেছিলাম। তখন তা খুবই মসৃণ ছিল।
পেশাদার সৈন্যরা একটি জনযুদ্ধকে কোন্ দৃষ্টিতে দেখেন এবং কিভাবে তার মূল্যায়ন করেন এ কে খন্দকারের বইটি তার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ। 
বইটির যৌক্তিকতা হিসেবে শুরুতেই (পৃঃ ২৩) তাঁর মন্তব্য : ১৯৬৯ সালের মার্চ থেকে মুক্তিযুদ্ধ যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ভারতে যাবার আগ পর্যন্ত তাঁর চোখের সামনে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে প্রকাশিত গ্রন্থগুলোতে খুব কম উঠে এসেছে। 
এরপরে যে ঘটনাগুলোর উল্লেখ তিনি করেছেন, যেমন: লারকানায় ভুট্টোর সঙ্গে ইয়াহিয়ার গোপন আলোচনা (যার উল্লেখ বঙ্গবন্ধু তাঁর ৭ মার্চের ভাষণে করেছেন), বাঙালীদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে পাকিস্তানীদের অনিচ্ছা, পিআইএর বিমান ভর্তি করে পাকিস্তান থেকে বেসামরিক পোশাকে নিয়মিত সৈন্য নিয়ে আসা, মুজিব-ইয়াহিয়া-ভুট্টো আলোচনা নিয়ে জনমনে কৌতূহল, এ ধরনের আলোচনার ফলাফল কী হতে পারে তা নিয়ে দেশবাসীর উদ্বেগ ও নানা ধরনের বিভ্রান্তি, সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায়ে অনেক আগে থেকে 'যুদ্ধপ্রস্তুতি'র অভাব- ইত্যকার নানা বিষয়। 
লিখেছেন : 'আমি এমন কোন তথ্য পাইনি, যাতে মনে করতে পারি যে রাজনৈতিক পন্থা ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগের নেতারা বিকল্প পন্থা হিসেবে অন্য কোন উপায় ভেবে রেখেছিলেন' (পৃঃ ২৭)। এ ছাড়া ১ মার্চ ইয়াহিয়ার বক্তৃতায় জাতীয় সংসদের অধিবেশন অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য পিছিয়ে দেয়া এবং তার প্রেক্ষিতে ওই দিন থেকেই সারাবাংলায় অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অসহযোগ আন্দোলন শুরুর ঘোষণার পর সত্যি কথা বলতে কি, আমরা রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে কোন নির্দেশ পাইনি। এ বিষয়ে রাজনৈতিক নেতারা আমাদের কিছু জানাননি। যদি কেউ বলেন যে, তখন আওয়ামী লীগের নেতারা যুদ্ধের নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তবে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলতে হয় যে তা সঠিক নয়। অন্তত আমি কোন নির্দেশনা পাইনি' (পৃঃ ২৯-৩০)।
বড়ই দুঃখের কথা। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে তাদের একচ্ছত্র নেতা শেখ মুজিবুর রহমান, সে সময় এত কিছু করছিলেন অথচ কেন যে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ঢাকা বেইসের প্রশাসনিক ইউনিটের অধিনায়ক (গ্রুপ ক্যাপ্টেন) এ কে খন্দকার সাহেবকে যুদ্ধপ্রস্তুতির ব্যাপারে কোন কিছুই অবগত করালেন না- সেটা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক বিশাল প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে থাকবে। তবে তিনি লিখেছেন : 'শোনা যায়, মার্চ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমানে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ছাত্ররা নিজ উদ্যোগে পুরনো ৩০৩ রাইফেল দিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করার প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেছিল' (পৃঃ ৩০)।
একই প্যারাগ্রাফে লিখেছেন: 'যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া শত্রুকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে আমাদের ভীষণ ক্ষতি হয়েছিল। এ ব্যাপক ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হতো যদি বাঙালী সেনা সদস্যদের রাজনৈতিক উচ্চমহল থেকে চলমান পরিস্থিতি ও সম্ভাব্য আক্রমণ সম্পর্কে যথাসময় অবহিত করা হতো এবং তা প্রতিহত করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়া হতো' (পৃঃ ৩০)।
এ পর্যন্ত হয়ত ঠিকই ছিল। কিন্তু ওই ৩০নং পৃষ্ঠার শেষাংশে এসে খন্দকার তাঁর প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করলেন সরাসরি তার টার্গেট লক্ষ্য করে। অসহযোগ আন্দোলনের বর্ণনা দিলেন এভাবে :
'এ সময়ে যে লুটপাট শুরু হয়েছিল তা আমি প্রত্যক্ষ করেছি। ... অবাঙালীরা নিরাপত্তাহীনতার জন্য ঢাকা ছেড়ে যখন অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এলাকা বা পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যাচ্ছিল, তখন রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাদের সোনার-গহনা, টাকা-পয়সা ও মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী লুট করে নিয়ে গিয়েছিল বাঙালীরা' (পৃঃ ৩০)। এহেন মিথ্যা কথা ও অপবাদের ছড়াছড়ি ২৩২ পৃষ্ঠার বইটির প্রায় সর্বত্র। 
আমি এতে দোষের তেমন কিছু দেখি না। খন্দকার তো তখন পাকিস্তান সশস্ত্রবাহিনীর একজন অনুগত ভৃত্য। আর পাঁচজন পাক সেনা ওই সময়ের ঘটনাবলী যেভাবে বুঝেছেন ও ব্যাখ্যা করেছেন খন্দকার সাহেবও সেটাই করেছেন। সেটাই স্বাভাবিক। 
তবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার পরেও তিনি বাঙালীদের এই 'লুটতরাজ' দেখে দেখে কেবল হাহুতাশ করেছেন। 'মুক্তিযুদ্ধকালেও এ ধরনের কিছু অপরাধমূলক বাঙালী দুষ্কৃতকারীদের সংবাদ আমরা পেতাম' ... (পৃঃ ৩১)। 
খন্দকারের পুরো বই ঘেঁটে এর ভিন্ন চিত্রটি কোথাও পাওয়া যায় না। বিহারীদের হাতে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, আমিনবাজার, পাহাড়তলী, আমবাগান, ঝাউতলা, সৈয়দপুর, খালিশপুরসহ সারা বাংলাদেশে যে হাজার হাজার নিরীহ বাঙালী নিহত হলো, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ধরে খন্দকার সে খবর পাননি। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করলে চলবে না। কারণ, তখন তো তিনি কলকাতায় আওয়ামী নেতাদের মাঝখানেই বসবাস করছিলেন। তাঁর বই থেকে জানতে পারি থিয়েটার রোডে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের পাশের ঘরেই তিনি থাকতেন। এ ছাড়া রক্তপিপাসু পাকিস্তানী হায়েনাদের নয় মাসব্যাপী নারকীয় হত্যাকা-ের উল্লেখও তাঁর বইতে নেই। আছে কেবল ২৭ মার্চ কারফিউ শিথিল করা হলে নিজের স্ত্রী ও সন্তানদের সামরিক গাড়িতে করে আজিমপুর থেকে ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে যাওয়ার সময় পথে-ঘাটে পড়ে থাকা ২৫ মার্চ রাতের গণহত্যার শিকার হাজারো লাশের কথা। 
'২৭ মার্চ সকালে ওদের (স্ত্রী, পুত্র, কন্যা) নিয়ে আসার জন্য নিজেই জীপ চালিয়ে আজিমপুর যাই। পথে রাস্তার দুই পাশে ভয়ঙ্কর ও বীভৎস দৃশ্য দেখি। চারদিকে শুধু লাশ আর লাশ। কালো পিচের রাস্তা রক্তে লাল হয়ে গেছে। ... স্ত্রীকে রাস্তার ডানে বামে তাকাতে নিষেধ করি এবং ছেলেমেয়েরাও যেন না তাকায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলি। কারণ রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা বীভৎস সব লাশ থেকে তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে (পৃঃ ৫১)।
২৭ মার্চ যেমন স্ত্রী ও পুত্র কন্যাদের রাস্তায় পড়ে থাকা লাশের থেকে চোখ অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখতে বলেছিলেন তেমনি যুদ্ধের গোটা নয় মাস তিনিও পাকিস্তানী সৈন্যদের হাতে নিহত লাখ লাখ মানুষের স্তূপাকার লাশ থেকে পরম নির্লিপ্ততায় তাঁর চোখ দুটো সরিয়ে রেখেছেন। বইটির কোথাও পাকিস্তানীদের হামলা, হত্যা, নারী নির্যাতন, লুণ্ঠন এসবের কোন উল্লেখ নেই। কেবল আছে বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতার কোন ঘোষণা দেননি তা প্রমাণের প্রাণান্তকর চেষ্টা। চট্টগ্রাম বেতার থেকে বেতার কর্মীদের ও চট্টগ্রামের জনপ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নানের পঠিত বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা বহুবার প্রচারিত হলেও একদিন পরে রাস্তা থেকে ডেকে এনে মেজর জিয়াউর রহমানকে দিয়ে পাঠ করানো ঘোষণাটিই যে আসল ঘোষণা এ নিয়ে তাঁর মনে কোন দ্বন্দ্ব নেই। '... এবং ২৭ মার্চ সন্ধ্যার কিছু আগে তা (জিয়ার কণ্ঠে) পুনঃপ্রচারিত হয়। আর এভাবেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রকাশ ঘটল' (পৃঃ ৫৯)। তিনি আরও লিখেছেন : 'সেই সঙ্কটময় মুহূর্তে জিয়ার ভাষণটি বিভ্রান্ত ও নেতৃত্বহীন জাতিকে কিছুটা হলেও শক্তি ও সাহস যোগায়' (পৃঃ ৬১) ।
জিয়া কিসের 'ভাষণ' দিয়েছিলেন সেটা আমাদের কারও জানা নেই। তাঁকে একটা স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করতে বলা হয়েছিল। চালাকি করে তিনি সেটাতে নিজেকে রাষ্ট্রপতি বলে ঘোষণা করে দেন। পরে আওয়ামী লীগ ও বেতার কর্মীদের ধমকানিতে সেটা পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ঘোষণাটি পাঠ করেন। 
আর আছে বঙ্গবন্ধু 'জয় পাকিস্তান' বলে ৭ মার্চের ভাষণ শেষ করার সেই বানোয়াট গল্প, যা ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর জিয়াউর রহমানকে ঘিরে গড়ে ওঠা স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের হাতে রচিত হয়েছিল। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে খন্দকার সাহেব নিজেও সেই চক্রের সুবিধাভোগীদের প্রথম কাতারের একজন। জিয়াউর রহমানের গোটা আমল (১৯৭৬-৮২) তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। এরশাদের আমলে ১৯৮২-৮৬ পর্যন্ত ছিলেন ভারতে রাষ্ট্রদূত। ১৯৮৬ থেকে '৯০ পর্যন্ত ছিলেন এরশাদের পরিকল্পনা মন্ত্রী। আবার ১৯৯৬-২০০১ এবং ২০০৮-১৪ সালে আওয়ামী লীগের টিকেটে জাতীয় সংসদের সদস্য এবং ২০০৮-১৪ সময়ে শেখ হাসিনা সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী। সেলুকাস ..., সেলুকাস..., সেলুকাস...!
এ কে খন্দকারের বইতে জানার মতো আর কিছু নেই। আছে সুযোগ পেলেই মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদগার। বইটি পড়লে মনে হয় সেক্টর কমা-াররা এবং তাদের ক্যাম্পে বসে রেশন খাওয়া আর বেতন তোলা সৈন্যরাই বুঝি বা দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়েছে। কয়েক লাখ মুক্তিফৌজ আর ভারতীয় সৈন্যবাহিনী নিছক আঙ্গুল চোষা ছাড়া আর কোন কাজ করেনি। 
বইটির শুরুতে তরুণ গবেষক ড. গাজী মীজানুর রহমানের কাছে খন্দকার সাহেব কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। শুনতে পাই খন্দকার সাহেব বয়সের কারণে এখন চোখে দেখেন না, কানেও শোনেন না। তাছাড়া বাংলা ভাষাটা নাকি কখনও তাঁর তেমন নিয়ন্ত্রণে ছিল না। এ থেকে ধারণা করা যায় তরুণ গবেষক সাহেব হয়তবা তাঁর নিজস্ব মতামতকেও বইটির নানা স্থানে খন্দকারের মতামত হিসেবে চালিয়ে দিয়ে থাকলেও থাকতে পারেন। এই তরুণ গবেষক সম্পর্কেও আমাদের জানা দরকার।
১৯১ পৃষ্ঠায় খন্দকার লিখেছেন পাকিস্তানী পক্ষত্যাগ করা সৈন্যরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে যুদ্ধ করতে রাজি ছিল না। তারা ভারতীয় সৈন্যদের নিজেদের চাইতে অযোগ্য মনে করত। ভারতীয় সৈন্যদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগের অন্ত ছিল না। 
খন্দকারের এই মন্তব্য থেকে বোঝা যায় কেন ৩ ডিসেম্বরের আগে সেক্টর কমান্ডারদের নেতৃত্বে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কেবলমাত্র ভারতের মাটিতে সীমাবদ্ধ হয়েছিল। 
খন্দকার সাহেবের মতো আরও যারা আছেন তাদের জিজ্ঞেস করা দরকার, ৩ ডিসেম্বর ভারত যখন যুদ্ধ ঘোষণা করল এবং ১৭০০ মাইল সীমান্তের সব পয়েন্ট দিয়ে ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়ল, তার আগে পর্যন্ত তাঁর সেক্টর কমান্ডাররা বাংলাদেশের কতটুকু জায়গায় নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন? কোথায় কার কাছে শুনে শুনে বিএলএফ (মুজিব বাহিনী) সম্পর্কে আজগুবি সব কথা লিখেছেন। সুজন সিং উবান কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের মেজর জেনারেল ছিলেন না। তিনি ছিলেন এক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার। শেখ ফজলুল হক মণি, সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমদের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি বিএলএফ প্রতিষ্ঠা করেন। বিএলএফ-এর নেতৃত্ব ছিল ওই চারজনের হাতে। উবান ছিলেন প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রের যোগানদাতা। তিনি জেনারেল উবান হিসেবে পরিচিত, কারণ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ারকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বলা হতো, যেমনটি ইদানীং আমাদের দেশেও হয়েছে। 
বইটি নিয়ে হৈ চৈ শুরু হওয়াতে খন্দকার সাহেব কিঞ্চিৎ বিচলিত বলে শুনেছি। এও শোনা যাচ্ছে যে বইটির দ্বিতীয় সংস্করণে 'জয় পাকিস্তান' আর থাকছে না। 
আরও একটা কথা না বলে পারছি না। ২৫ মার্চের নৃশংস হত্যাকা-ের পর বাঙালী অফিসার ও সৈন্যরা যখন মুক্তিযুদ্ধে শরিক হওয়ার জন্য ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে পালাচ্ছে সে সময়ে ২৭ মার্চ খন্দকার সাহেব কি কারণে আজিমপুরে তাঁর ভায়রা ভাইয়ের নিরাপদ বাসা থেকে স্ত্রী ও পুত্র-কন্যাদের ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে এলেন এটা আমার মাথায় ঢুকছে না। 
পরদিন অর্থাৎ ২৮ মার্চেই তিনি ১৫ দিনের ছুটি নিলেন যুদ্ধে যাওয়ার জন্য। কিন্তু যেতে পারলেন না। ১৮ বা ১৯ এপ্রিল ফিরে এসে ফের কাজে যোগ দিলেন। এর দিনদশেক পরেই তিনি আবার ছুটি চাইলেন। কর্তৃপক্ষ জানতে চাইল, কতদিনের? তিনি বললেন, তিন মাস। অমনি মঞ্জুর হয়ে গেল তিন মাসের ছুটি। 
পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কি এভাবেই ছুটি দেয়া হতো? ১৫দিন ছুটি ভোগের দশদিন পরে আবার তিন মাস! ছুটি প্রার্থীকে জিজ্ঞেস করে? তাও আবার কখন? যখন বাঙালী সৈনিকরা পাকবাহিনী থেকে পালাবার সুযোগ খুঁজছে তখন। 
আরও একটা ব্যাপার একটু খতিয়ে দেখার আছে। ওই যে তিন মাসের ছুটি তিনি নিলেন, সেটা কার কাছ থেকে নিলেন? ঢাকার বেইস কমান্ডারের কাছ থেকে নয়, নিলেন একেবারে পাকিস্তান এয়ারফোর্সের প্রধানের কাছ থেকে তখন। দেখি তিনি কি লিখেছেন। 
'(১৫ দিন ছুটি ভোগের পর) চাকরিতে যোগদান করার দিনদশেকের মধ্যে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল এ রহিম খান ঢাকায় আসেন। তিনি আসার পর আমি আবার ছুটির দরখাস্ত করি। আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আমি ক'দিনের ছুটি চাই? আমি বললাম যে আমার কমপক্ষে তিন মাসের ছুটি লাগবে। তারা আমার ছুটি অনুমোদন করল' (পৃঃ ৭৬)।
যারা ছুটি দিল, তারা কি কেবল ছুটিই দিয়েছিল, নাকি সঙ্গে কোন দায়িত্বও?

লেখক : সাংবাদিক
প্রকাশ : রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ৩০ ভাদ্র ১৪২১ 
Also read:

খন্দকার থেকে খন্দকার, অন্ধকার থেকে অন্ধকার

সময় : 8:32 pm । প্রকাশের তারিখ : September 8, 2014
 
'সব শালা কবি হতে চায়'
মুহম্মদ শফিকুর রহমান
ঢাকা ॥ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪
লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
প্রকাশ : শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ২৯ ভাদ্র ১৪২১

alt

মুক্তিযুদ্ধের আরও একটি ফরমায়েশি ইতিহাস

একে খন্দকার স্বাধীনতার এত পরে এসেও নিশ্চিতভাবে জানেন না ছাত্ররা সেদিন সশস্ত্র যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি...

 অন্ধকারে খন্দকার | উপ-সম্পাদকীয় | কালের কণ্ঠ
W. Avey mvBwq` :
 

 এই বইটির প্রকাশ কি একটি সমন্বিত চক্রান্তের অংশ?  (১ )
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
লন্ডন ৯ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, ২০১৪ ॥
প্রকাশ : বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ২৬ ভাদ্র ১৪২১

এই বইটির প্রকাশ কি একটি সমন্বিত চক্রান্তের অংশ (২)
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪, ২৭ ভাদ্র ১৪২১

Related:

ÔÔGK †Lv›`Kv‡i i¶v †bB, Av‡iK †Lv›`Kvi wK Zvi †`vmi?Ó
 B‡ËdvK, Ave`yj Mvd&dvi †PŠayix
¯'vbxq mgq : 1020 N›Uv, 07 †m‡Þ¤^i 2014

http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/sub-editorial/2014/09/07/2288.html


Note: On February 22, 1971 the generals in West Pakistan took a decision to crush the Awami League and its supporters. It was recognized from the first that a campaign of genocide would be necessary to eradicate the threat: "Kill three million of them," said President Yahya Khan at the February conference, "and the rest will eat out of our hands." (Robert Payne, Massacre [1972], p. 50.) On March 25 the genocide was launched. The university in Dacca was attacked and students exterminated in their hundreds. Death squads roamed the streets of Dacca, killing some 7,000 people in a single night. It was only the beginning. "Within a week, half the population of Dacca had fled, and at least 30,000 people had been killed. 
..........e½eÜy Ô¯^vaxbZv †NvlYv KijvgÕ K_vwU ejvi m‡½ m‡½ Zviv wbi¯¿ RbZvi Dci Suvwc‡q co‡Zv| GB †NvlYv‡K Ôwew"QbœZvev`x †NvlYvÕ AvL¨v w`‡q Zviv IBw`bB MYnZ¨v ïi" Ki‡Zv| e½eÜy `¶ †mbvcwZi g‡Zv nvbv`vi‡`i GB my‡hvM †`bwb|

Related:










__._,_.___

Posted by: Subimal Chakrabarty <subimal@yahoo.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___