----- Forwarded Message -----
From: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>
To: Khobor <khabor@yahoogroups.com>; notun Bangladesh <notun_bangladesh@yahoogroups.com>; chottala@yahoogroups.com
Sent: Saturday, May 11, 2013 1:20 AM
Subject: [notun_bangladesh] খালেদার সিদ্ধান্ত ভুল, হাসিনার সঠিক - এবিএম মূসা
From: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>
To: Khobor <khabor@yahoogroups.com>; notun Bangladesh <notun_bangladesh@yahoogroups.com>; chottala@yahoogroups.com
Sent: Saturday, May 11, 2013 1:20 AM
Subject: [notun_bangladesh] খালেদার সিদ্ধান্ত ভুল, হাসিনার সঠিক - এবিএম মূসা
খালেদার সিদ্ধান্ত ভুল, হাসিনার সঠিক
| এবিএম মূসাইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা ট্রাস্ট, আল-আরাফাহ্ ব্যাংক হেফাজতি নাশকতায় অর্থ জুগিয়েছে
আমি ৩/৪ মাস ধরে অসুস্থ, লেখালেখিতে সময় দিতে পারছি না। টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোয় যতটা সম্ভব না যাওয়ার চেষ্টা করছি। এই সময়ে আমাদের রাজনীতিতে অনেক কিছু ঘটে গেছে। এরমধ্যে একদিন চ্যানেল আই'র টকশোয় গিয়েছিলাম। মতিউর রহমানের উপস্থাপনার প্রতি আমার দুর্বলতা আছে। টেলিভিশন টকশোয় আমার বক্তব্যে সবসময় হাসিনা সরকারের সমালোচনা থাকে। কিন্তু গতকাল আমি এই সরকারের প্রশংসা করেছি হেফাজত ও ধর্মাশ্রয়ী সামপ্রদায়িক গোষ্ঠীকে শক্তহাতে দমন করার জন্য। মহাজোট সরকারের অনেক কিছুই সমর্থন করি না সত্য; তার মানে এই নয়, দেশে তালেবান সরকার চাই। হেফাজতি নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযানে দুঃখজনক প্রাণহানি ঘটলেও উপযুক্ত সময়ে সরকারের এই অভিযানকে আমি সমর্থন করি। কারণ তারা অবরোধ ও সমাবেশের নামে হত্যাসহ যে নৈরাজ্যকর অবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালিয়েছিল, তাতে আরও বেশি প্রাণনাশের আশঙ্কা ছিল। বাংলাদেশকে ধ্বংস করার ফন্দি এঁটেছিল এই হেফাজত। গত রোববার ঢাকা অবরোধের নামে এর নমুনা দেখিয়েছে সংগঠনটি।
মাদ্রাসা শিক্ষার সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা জাকাত ও কুরবানির চামড়া বেচা অর্থ, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দানের অর্থের ওপর নির্ভরশীল। মাদ্রাসা শিক্ষাকে এসব কিছুর নির্ভরশীলতা থেকে মুক্ত করে পুরোপুরি সরকারের নজরদারি, অনুদান প্রদানের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত। তাদের বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক শিক্ষার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমিকভাবে পুনর্বাসিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বর্তমান অসাম্প্রদায়িক সরকারকেই নিতে হবে। এর জন্য দশ বা বিশ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। শুধু কুরবানির পশুর চামড়া বেচা অর্থ, জাকাত ও ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল হলে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা সমাজের বৃহত্তর কোনও উপকারে আসবে না। আর সে-কারণেই তাদের দিয়ে যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করিয়ে নেওয়া সম্ভব। আর হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে দেশে এখন সেটাই হচ্ছে। আমি নাম ধরে বলতে পারি, ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা ট্রাস্ট, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক নাশকতার অর্থ জুগিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহার করেছে। হেফাজতের নেতারা এসব প্রতিষ্ঠানের অর্থে মাদ্রাসার কচি-কচি শিক্ষার্থীদেরই অধিক ব্যবহার করেছে। এমনকী মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। ওইসব শিশু-কিশোরদের অভিভাবকের উচিত, হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যামামলা দায়ের করা। নিজেদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরই জানমালের হেফাজত করতে পারেন না যে কওমি আলেমরা, তারা ইসলামের কী হেফাজত করবেন?
স্বাধীনতার পর ধর্মের নামে সুবিধা নেওয়া সাম্প্রদায়িক শক্তি গর্তে ঢুকে গিয়েছিল। বিএনপি তাকে গর্ত থেকে বের করে নিয়ে এসেছে। বড় দু'দল এদের দুধকলা দিয়ে পুষেছে। এখন এরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। দেশকে বাঁচাতে হলে প্রথমেই এদের অবৈধ অর্থের জোগান বন্ধ করতে হবে।
ধর্মের নামে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশের পেছনে বিএনপি জামায়াতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ ছিল। খালেদা জিয়া দলের নেতা-কর্মীদের শাপলা চত্বরে সমবেত হেফাজতিদের পাশে থাকার নির্দেশও দেন। যদিও হেফাজতের ১৩ দফা দাবির সঙ্গে জামায়াত কী বিএনপি একমত কিনা, তার সুস্পষ্ট কোনও ঘোষণা নেই। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এইসব দাবি বাস্তবায়ন করবে কিনা, সে সম্পর্কেও কোনও বিবৃতি নেই। তা হলে প্রশ্ন হচ্ছে, কেন হেফাজতের আন্দোলনকে বিএনপি সমর্থন করছে? সমর্থন এ জন্যে যে, হেফাজত আওয়ামী লীগের শত্রু, তাই তাদের সমর্থন দিয়ে যদি কোনও ফায়দা নেওয়া যায়। এক্ষত্রে, আমি বলব, ভুল করেছে দলটি— ভুল করেছেন এর চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত সঠিক।
হেফাজত ইসলামের অভ্যুদয় হল কীভাবে? এ অভ্যুদয়ের মূলে কারা? আমার মনে হয়, যারা ফ্রাঙ্কেনস্টাইন তৈরি করেছিল, তাদেরই এখন ফ্রাঙ্কেনস্টাইন দমনে মাঠে নামতে হয়েছে। এক্ষেত্রে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল ভুল করেছে। রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাব দেখিয়েছে।
প্রথমত, হেফাজতের অভ্যুত্থান কাদের মদদে ঘটেছে, সরকারকেই তাদের খুঁজে বের করতে হবে। ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। স্বাধীনতার প্রধান দুটি ভিত্তি হচ্ছে অসামপ্রদায়িকতা ও গণতন্ত্র। বর্তমানে এ দুটি ভিত্তিই বিপন্ন। বর্তমান সরকারের প্রতি, তাদের শাসন কাজের প্রতি আমার শত অভিযোগ থাকলেও একটি ব্যাপারে আমি এ সরকারকে সমর্থন জানিয়েছি, আর তা হল সামপ্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অবস্থান। গত কয়েকদিনে যা ঘটে গেল, সেটাকে আমি একটা সামপ্রদায়িক শক্তির অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ বলে মনে করি। সে কারণে নিহতদের ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন থাকার পরও আমি এই অভিযানকে সমর্থন করি। আমি মনে করি, প্রথম থেকেই যদি সামপ্রদায়িক শক্তির পুনঃ অভ্যুত্থানে প্রশ্রয় দেওয়া না হত, তাহলে দেশে আজ সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হত না।
আমার মতে, গত কয়েক বছরে শেখ হাসিনা সরকারের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পরিচালনায় ব্যর্থতার কারণেই সামপ্রদায়িকতা এবং গোঁড়া ধর্মাশ্রয়ী রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটেছে। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্যে সামপ্রদায়িকতার বিষধর সাপটিকে ক্ষণিকভাবে নিবৃত্ত করা গেলেও নির্মূল করা যাবে না। সাপের মাথা ভাঙলেও লেজের বিষ থেকেই যাবে। আমি সরকারকে বলব, শুধু শক্তি ব্যবহার না করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল ভিত্তি গণতান্ত্রিক চেতনার অধিকার পরিষ্কার করতে হবে। তবে এই কদিনের সংঘর্ষে আমার মতে, প্রধান বিরোধী দল বিএনপি রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সামপ্রদায়িক অভ্যুত্থানকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন দেওয়ার কারণে যারা আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে বিএনপির দিকে তাকিয়েছিলেন, তাদের অনেকে সেখান থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এজন্য আমি বেগম খালেদা জিয়ার পরামর্শদাতাদের দায়ী করছি। আমি মনে করি, এই সামপ্রদায়িক ঘটনা বিএনপির প্রতি জনসমর্থনে ফাটল ধরাচ্ছে। গত চার বছর ধরেই আমি দলটিকে বলে আসছি, জামায়াতের কাঁধে সওয়ার হবেন না এবং জামায়াতকে আপনাদের প্রভাবান্বিত করতে দেবেন না। দুর্ভাগ্যবশত বিএনপির অভ্যন্তরের একটি কুচক্রীমহল এখন গৃহশত্রুর কাজ করছে।
আমার আরও অনেক কিছু বলার ইচ্ছা ছিল, অসুস্থ শরীরে সেসব গুছিয়ে বলতে পারছি না। তারপরও আজকে আমার শেষ কথা হচ্ছে বিএনপির উদ্দেশে— নানা অপকর্ম, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ইত্যাদির কারণে সরকারের প্রতি যে বিরূপ মনোভাব গড়ে উঠেছিল, তার সুযোগ নিয়ে বিএনপি যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারত, তা আর সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। খালেদা জিয়ার প্রজ্ঞাবান পরামর্শদাতাদের প্রতি আমার বক্তব্য হচ্ছে, শত বাধা সত্ত্বেও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এ সরকারের কথিত অপকর্ম মোকাবিলা করুন। আর সরকারের প্রতি অনুরোধ, সন্ত্রাস মোকাবিলায় আরও অধিক বিজ্ঞতার পরিচয় দিন। তাহলে হারানো জনসমর্থন ফিরে আসতে পারে।
__._,_.___