এদের আর সুযোগ দেয়া যায় না!
সুমি খান
আমার জন্ম একটি ধর্মনিরপেক্ষ বা সেক্যুলার পরিবারে; যেখানে ধর্ম অথবা প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা এসব নিয়ে কখনও কোন বাড়াবাড়ি বা নিপীড়ন ছিল না। মনের আনন্দে পড়েছি আর ফাঁকিবাজি করেছি। এর কারণ ছিল, আমার মা-বাবা দু'জনের পরিবারই সেক্যুলার ছিল। চার-পাঁচ প্রজন্ম আগেও ধর্ম নিয়ে কোন ধরনের বাড়াবাড়ি কাউকে পোহাতে হয়নি। মুক্তচিন্তা আর মুক্ত আনন্দে বেড়ে উঠেছে ভাই-বোন সবাই। তবে এও সত্যি, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেক্যুলারিজমের পাশাপাশি ধর্মান্ধতা গেড়ে বসেছে এই প্রজন্মের জীবনাচরণে! পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব যাবে কোথায় আর!
আমাদের শৈশব এবং কৈশোরে যাদের কাছে আরবী শিক্ষা গ্রহণ করেছি, তাদের আচরণ ছিল প্রকৃত শিক্ষাগুরুর মতো অত্যন্ত স্নেহশীল এবং মায়াময়। এখনও সেই শিক্ষাগুরু আমাদের পারিবারিক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে এলে মায়ের কাছে আমার খোঁজ নেন। পথেঘাটে তার সঙ্গে দেখা হলে বিনম্র শ্রদ্ধায় তার পা ছুঁয়ে সালাম করতে ছুটে যাই। আমি এবং আমার দু'ভাই যখন হুজুরের কাছে পড়তে বসতাম, কখনও তার আচরণে অথবা কথায় কোন বৈষম্য পাইনি। আমার মনে পড়ে না- কখনও বেত হাতে তিনি আমাদের পড়তে বসিয়েছেন। আমার পোশাক, জীবনাচরণ নিয়ে কোন রকমের মন্তব্য করেননি কখনও। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন ইসলাম ধর্মের মূল বাণীÑ শান্তি এবং মানব সভ্যতার বিকাশ এবং প্রগতি। তার চোখে ছিল পিতৃসুলভ অপত্য স্নেহ, যা এখনও অমলিন। এই শিক্ষাগুরু আর আজ যারা ইসলামের পবিত্রতাকে কলঙ্কিত করছেন জামায়াত-হেফাজতি আহমদ শফী, সাঈদী, গোলাম আযম, নিজামী, সাকা চৌধুরী এবং তাদের অনুসারীরাÑ তাদের মধ্যে ফারাক আকাশ আর পাতাল। তারা বিপন্ন করে তুলেছেন মুক্তচিন্তা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিকে। সঙ্কটময় করে তুলেছেন এদেশের স্বাভাবিক জনজীবনকে।
বড় হয়ে দেখেছি আমাদের শিক্ষাগুরুরা একেবারেই ব্যতিক্রম। তাদের অনেকেই অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত, বিকৃত রুচির; লোভী এবং প্রবঞ্চক। এর প্রত্যক্ষ প্রমাণ আহমদ শফী। যার বিকৃত বাণী এখন বিশ্বজুড়ে নিন্দিত। মুক্তচিন্তা আর সভ্যসমাজ প্রতিষ্ঠায় যারা জীবন উৎসর্গ করেছে বা এখনও করছে, তারাই এদের টার্গেট।
বেগম রোকেয়া বলেছিলেন, 'আমি কারসিয়ং ও মধুপুর বেড়াইতে গিয়া সুন্দর সুদর্শন পাথর কুড়াইয়াছি উড়িষ্যা ও মাদ্রাজে সাগরতীরে বেড়াইতে গিয়া বিচিত্র বর্ণের বিবিধ আকারের ঝিনুক কুড়াইয়া আনিয়াছি। আর জীবনে ২৫ বছর ধরিয়া সমাজ সেবা করিয়া কাঠমোল্লাদের অভিসম্পাত কুড়াইয়াছি।'
বেগম রোকেয়া থেকে জাহানারা ইমাম এদের টার্গেট। এরাই তো একাত্তরে ইসলামের নামে ঘরে ঘরে নারীদের বর্বরোচিতভাবে ধর্ষণ, নির্যাতন এবং তিরিশ লাখ নিরীহ বাঙালীকে হত্যা করেছিল। এক কোটি মানুষকে দেশছাড়া করেছিল ইসলাম রক্ষার নামে। বিজয়ের দু'দিন আগে একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে এ দেশকে মেধাশূন্য করার সুপরিকল্পিত নীলনক্সার বাস্তবায়ন করেছিল 'ইসলাম রক্ষা'র নামে। অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত, ডক্টর মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ফেরদৌসী মজুমদার, মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবির, ডা. ইমরান এইচ সরকার তাদের ভাষায় 'নাস্তিক, 'মুরতাদ' । যাতে নিরীহ ধর্মভীরু মানুষকে এদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দিয়ে এই দেশটিকে পাকিস্তান, আফগানিস্তান অথবা সোমালিয়ার মতো অন্ধকার দেশে পরিণত করা যায়।
আমার মতো ক্ষুদ্র একজন সংবাদকর্মীও বার বার এই অন্ধকারের শক্তির অন্যায় মিথ্যাচার, মৃত্যু পরোয়ানা, হুমকি আর আক্রমণের শিকার হয়েছি। কেন? ইসলামের যাবতীয় শুদ্ধতার ক্ষমতা কি এদের হাতে? আমাদের অতি সাধারণ জীবনটি এভাবে বিপন্ন করে তোলার অধিকার এদের কে দিয়েছে?
নেপোলিয়ন বলেছিলেন, 'আমায় একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব।' আর এই তথাকথিত বিশেষ একটি 'আলেম' সমাজ দেশের উদীয়মান সুপ্রতিষ্ঠিত নারীসমাজকে চারদেয়ালে বন্দী রাখলেই যেন এদের সব খায়েশ পূর্ণ হয়ে যায়! বেগম রোকেয়া আক্ষেপ করে লিখেছিলেন, 'স্বামী যখন পৃথিবী হইতে সূর্য ও নক্ষত্রের দূরত্ব মাপেন, স্ত্রী তখন একটা বালিশের ওয়াড়ের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ সেলাই করিবার জন্য মাপেন। স্বামী যখন কল্পনার সাহায্যে সুদূর আকাশে গ্রহ-নক্ষত্রমালা বেষ্টিত সৌরজগতে বিচরণ করেন, সূর্যম-লের ঘনফল তুলাদ-ে ওজন করেন এবং ধূমকেতুর গতি নির্ণয় করেন, স্ত্রী তখন রন্ধনশালায় বিচরণ করেন, চাউল ডাল ওজন করেন এবং রাঁধুনীর গতি নির্ণয় করেন। সুশিক্ষার অভাবে নারীরা যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন না।' আহমেদ শফী নারীকে সেভাবেই দেখতে চান। দেখতে চান পুরুষের যৌনতা আর শয্যার আজ্ঞাবাহী হিসেবে মাত্র। তার এই অশ্লীল বাক্যের বক্তৃতা শুনে তার প্রতি ঘেন্নায় থুথু ছিটাতে ইচ্ছে হয়। এদেশে অন্যায়ের বিচার নেই বলেই এখনও মুক্ত হাওয়ায় ঘুরে বেড়াতে পারে এই ধর্মান্ধ, মধ্যযুগীয় চিন্তাধারার লালনকারী দল!!
হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফী নারীদের পোষ্য, নির্জীব বস্তু হিসেবে গণ্য করেন। যা তার বক্তব্যে সুস্পষ্ট। তিনি সকল পুরুষকে আহ্বান জানিয়েছেন তার মতো কুৎসিত অশ্লীলভাবে নারীদের দিকে তাকাতে। কলঙ্কিত করলেন এ সমাজের পুরুষদেরÑ যারা কারো বাবা, ভাই ,স্বামী অথবা সন্তান; যারা নিষ্পাপ দৃষ্টিতে তাদের মা, বোন, স্ত্রী অথবা কন্যাকে শ্রদ্ধা এবং ভালবাসায় পাশে রেখেছেন সুখ-দুঃখের সাথী করে; যাদের সহযোগিতায় এই সমাজ এগিয়েছে এতটা পথ।
স্বাধীনতা, শিক্ষা ও চাকরি সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ, সভ্যতা ও উন্নয়নবিরোধী মন্তব্য করেছেন মওলানা শফী। ইন্টারনেটে প্রকাশিত একটি ওয়াজ মাহফিলে ভিডিওচিত্রে তার এ বক্তব্য এখন দেশে-বিদেশে চরম নিন্দিত-সমালোচিত হচ্ছে।
শফীর সহযোদ্ধা একাত্তরের ঘাতকদের কথা উল্লেখ না করলেই নয়। এদের অন্যতম পালের গোদা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়াকে উদ্দেশ করে অনেক তির্যক, অশ্লীল মন্তব্য করেছেন বার বার। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে সাকা চৌধুরী বিএনপিতে যোগ দেয়া নিয়ে অনেক অশ্লীল কথা বলেছিলেন, যার সবটাই ছিল খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে। বলেছিলেন, 'তালাক দেয়া বিবিকে আমি ঘরে তুলি না।- কুকুরে লেজ নাড়ে, না লেজে কুকুর নাড়ে।' বেগম খালেদা জিয়া জানেন, রাজনীতিতে শেষ কথা নেই। তাই নিজেকে 'কুকুর' বলে মেনে নিয়েই কাছে টেনে নেন সেই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে; পরবর্তীতে তার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা বানান তাকে! যুদ্ধাপরাধী রাজাকার সাকা চৌধুরীকে ওআইসি'র মহাসচিব হিসাবে দাঁড় করানোর মধ্য দিয়ে ইসলাম ধর্মকে ব্যঙ্গ করার ধৃষ্টতা দেখান বেগম জিয়া। আর এখন তিনি আবার শফীকে সঙ্গে নিয়ে ধর্মের নামে নতুন করে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের খেলা শুরু করেছেন। এর পরিণতি থেকে তিনি নিজেও কি রক্ষা পাবেন? তাকে দেখেও যে ৯৩ বছরের শফীর তেঁতুলের মতো লোভনীয় মনে হতে পারে- সেটা কি তিনি বুঝতে পারছেন না? (চলবে)
আমাদের শৈশব এবং কৈশোরে যাদের কাছে আরবী শিক্ষা গ্রহণ করেছি, তাদের আচরণ ছিল প্রকৃত শিক্ষাগুরুর মতো অত্যন্ত স্নেহশীল এবং মায়াময়। এখনও সেই শিক্ষাগুরু আমাদের পারিবারিক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে এলে মায়ের কাছে আমার খোঁজ নেন। পথেঘাটে তার সঙ্গে দেখা হলে বিনম্র শ্রদ্ধায় তার পা ছুঁয়ে সালাম করতে ছুটে যাই। আমি এবং আমার দু'ভাই যখন হুজুরের কাছে পড়তে বসতাম, কখনও তার আচরণে অথবা কথায় কোন বৈষম্য পাইনি। আমার মনে পড়ে না- কখনও বেত হাতে তিনি আমাদের পড়তে বসিয়েছেন। আমার পোশাক, জীবনাচরণ নিয়ে কোন রকমের মন্তব্য করেননি কখনও। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন ইসলাম ধর্মের মূল বাণীÑ শান্তি এবং মানব সভ্যতার বিকাশ এবং প্রগতি। তার চোখে ছিল পিতৃসুলভ অপত্য স্নেহ, যা এখনও অমলিন। এই শিক্ষাগুরু আর আজ যারা ইসলামের পবিত্রতাকে কলঙ্কিত করছেন জামায়াত-হেফাজতি আহমদ শফী, সাঈদী, গোলাম আযম, নিজামী, সাকা চৌধুরী এবং তাদের অনুসারীরাÑ তাদের মধ্যে ফারাক আকাশ আর পাতাল। তারা বিপন্ন করে তুলেছেন মুক্তচিন্তা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিকে। সঙ্কটময় করে তুলেছেন এদেশের স্বাভাবিক জনজীবনকে।
বড় হয়ে দেখেছি আমাদের শিক্ষাগুরুরা একেবারেই ব্যতিক্রম। তাদের অনেকেই অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত, বিকৃত রুচির; লোভী এবং প্রবঞ্চক। এর প্রত্যক্ষ প্রমাণ আহমদ শফী। যার বিকৃত বাণী এখন বিশ্বজুড়ে নিন্দিত। মুক্তচিন্তা আর সভ্যসমাজ প্রতিষ্ঠায় যারা জীবন উৎসর্গ করেছে বা এখনও করছে, তারাই এদের টার্গেট।
বেগম রোকেয়া বলেছিলেন, 'আমি কারসিয়ং ও মধুপুর বেড়াইতে গিয়া সুন্দর সুদর্শন পাথর কুড়াইয়াছি উড়িষ্যা ও মাদ্রাজে সাগরতীরে বেড়াইতে গিয়া বিচিত্র বর্ণের বিবিধ আকারের ঝিনুক কুড়াইয়া আনিয়াছি। আর জীবনে ২৫ বছর ধরিয়া সমাজ সেবা করিয়া কাঠমোল্লাদের অভিসম্পাত কুড়াইয়াছি।'
বেগম রোকেয়া থেকে জাহানারা ইমাম এদের টার্গেট। এরাই তো একাত্তরে ইসলামের নামে ঘরে ঘরে নারীদের বর্বরোচিতভাবে ধর্ষণ, নির্যাতন এবং তিরিশ লাখ নিরীহ বাঙালীকে হত্যা করেছিল। এক কোটি মানুষকে দেশছাড়া করেছিল ইসলাম রক্ষার নামে। বিজয়ের দু'দিন আগে একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে এ দেশকে মেধাশূন্য করার সুপরিকল্পিত নীলনক্সার বাস্তবায়ন করেছিল 'ইসলাম রক্ষা'র নামে। অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত, ডক্টর মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ফেরদৌসী মজুমদার, মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবির, ডা. ইমরান এইচ সরকার তাদের ভাষায় 'নাস্তিক, 'মুরতাদ' । যাতে নিরীহ ধর্মভীরু মানুষকে এদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দিয়ে এই দেশটিকে পাকিস্তান, আফগানিস্তান অথবা সোমালিয়ার মতো অন্ধকার দেশে পরিণত করা যায়।
আমার মতো ক্ষুদ্র একজন সংবাদকর্মীও বার বার এই অন্ধকারের শক্তির অন্যায় মিথ্যাচার, মৃত্যু পরোয়ানা, হুমকি আর আক্রমণের শিকার হয়েছি। কেন? ইসলামের যাবতীয় শুদ্ধতার ক্ষমতা কি এদের হাতে? আমাদের অতি সাধারণ জীবনটি এভাবে বিপন্ন করে তোলার অধিকার এদের কে দিয়েছে?
নেপোলিয়ন বলেছিলেন, 'আমায় একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব।' আর এই তথাকথিত বিশেষ একটি 'আলেম' সমাজ দেশের উদীয়মান সুপ্রতিষ্ঠিত নারীসমাজকে চারদেয়ালে বন্দী রাখলেই যেন এদের সব খায়েশ পূর্ণ হয়ে যায়! বেগম রোকেয়া আক্ষেপ করে লিখেছিলেন, 'স্বামী যখন পৃথিবী হইতে সূর্য ও নক্ষত্রের দূরত্ব মাপেন, স্ত্রী তখন একটা বালিশের ওয়াড়ের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ সেলাই করিবার জন্য মাপেন। স্বামী যখন কল্পনার সাহায্যে সুদূর আকাশে গ্রহ-নক্ষত্রমালা বেষ্টিত সৌরজগতে বিচরণ করেন, সূর্যম-লের ঘনফল তুলাদ-ে ওজন করেন এবং ধূমকেতুর গতি নির্ণয় করেন, স্ত্রী তখন রন্ধনশালায় বিচরণ করেন, চাউল ডাল ওজন করেন এবং রাঁধুনীর গতি নির্ণয় করেন। সুশিক্ষার অভাবে নারীরা যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন না।' আহমেদ শফী নারীকে সেভাবেই দেখতে চান। দেখতে চান পুরুষের যৌনতা আর শয্যার আজ্ঞাবাহী হিসেবে মাত্র। তার এই অশ্লীল বাক্যের বক্তৃতা শুনে তার প্রতি ঘেন্নায় থুথু ছিটাতে ইচ্ছে হয়। এদেশে অন্যায়ের বিচার নেই বলেই এখনও মুক্ত হাওয়ায় ঘুরে বেড়াতে পারে এই ধর্মান্ধ, মধ্যযুগীয় চিন্তাধারার লালনকারী দল!!
হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফী নারীদের পোষ্য, নির্জীব বস্তু হিসেবে গণ্য করেন। যা তার বক্তব্যে সুস্পষ্ট। তিনি সকল পুরুষকে আহ্বান জানিয়েছেন তার মতো কুৎসিত অশ্লীলভাবে নারীদের দিকে তাকাতে। কলঙ্কিত করলেন এ সমাজের পুরুষদেরÑ যারা কারো বাবা, ভাই ,স্বামী অথবা সন্তান; যারা নিষ্পাপ দৃষ্টিতে তাদের মা, বোন, স্ত্রী অথবা কন্যাকে শ্রদ্ধা এবং ভালবাসায় পাশে রেখেছেন সুখ-দুঃখের সাথী করে; যাদের সহযোগিতায় এই সমাজ এগিয়েছে এতটা পথ।
স্বাধীনতা, শিক্ষা ও চাকরি সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ, সভ্যতা ও উন্নয়নবিরোধী মন্তব্য করেছেন মওলানা শফী। ইন্টারনেটে প্রকাশিত একটি ওয়াজ মাহফিলে ভিডিওচিত্রে তার এ বক্তব্য এখন দেশে-বিদেশে চরম নিন্দিত-সমালোচিত হচ্ছে।
শফীর সহযোদ্ধা একাত্তরের ঘাতকদের কথা উল্লেখ না করলেই নয়। এদের অন্যতম পালের গোদা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়াকে উদ্দেশ করে অনেক তির্যক, অশ্লীল মন্তব্য করেছেন বার বার। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে সাকা চৌধুরী বিএনপিতে যোগ দেয়া নিয়ে অনেক অশ্লীল কথা বলেছিলেন, যার সবটাই ছিল খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে। বলেছিলেন, 'তালাক দেয়া বিবিকে আমি ঘরে তুলি না।- কুকুরে লেজ নাড়ে, না লেজে কুকুর নাড়ে।' বেগম খালেদা জিয়া জানেন, রাজনীতিতে শেষ কথা নেই। তাই নিজেকে 'কুকুর' বলে মেনে নিয়েই কাছে টেনে নেন সেই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে; পরবর্তীতে তার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা বানান তাকে! যুদ্ধাপরাধী রাজাকার সাকা চৌধুরীকে ওআইসি'র মহাসচিব হিসাবে দাঁড় করানোর মধ্য দিয়ে ইসলাম ধর্মকে ব্যঙ্গ করার ধৃষ্টতা দেখান বেগম জিয়া। আর এখন তিনি আবার শফীকে সঙ্গে নিয়ে ধর্মের নামে নতুন করে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের খেলা শুরু করেছেন। এর পরিণতি থেকে তিনি নিজেও কি রক্ষা পাবেন? তাকে দেখেও যে ৯৩ বছরের শফীর তেঁতুলের মতো লোভনীয় মনে হতে পারে- সেটা কি তিনি বুঝতে পারছেন না? (চলবে)
এদের আর সুযোগ দেয়া যায় না! - 2
এদের আর সুযোগ দেয়া যায় না! -৩ (শেষাংশ)
__._,_.___