বুধবার, ২০ মার্চ ২০১৩, ৬ চৈত্র ১৪১৯
ম্যাডামের এই রুদ্রমূর্তির কারণ কী!
শাহজাহান মিয়া
দুর্ভাগ্য এ দেশের মানুষের, আমাদের এক শ্রেণীর রাজনীতিকের মধ্যে মিথ্যা বলার ঝোঁকটা একটু বেশিই লক্ষ্য করা যায়। এই মিথ্যাচারের বেসাতিতে তাঁদের প্রতি সাধারণ মানুষের কি বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় সেদিকে তাঁদের কোনরূপ ভ্রƒক্ষেপ নেই। তাঁরা তাঁদের এই ন্যক্কারজনক কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন অবলীলাক্রমে। দেশে ইসলাম রক্ষার ঠিকাদারিতে নিয়োজিত জামায়াত ও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তাদের বিশ্বস্ত দোসর বিএনপি নেতা-নেত্রীদের মধ্যেই এই প্রবণতাটা বেশি মাত্রায়ই দেখা যাচ্ছে। খালেদা জিয়া নিজেই এই জঘন্য মিথ্যাচারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে মানুষ মনে করছে। এই মুহূর্তে মিথ্যাচারের প্রকোপটা তাঁদের মধ্যে মহামারীর আকার ধারণ করেছে। গত মাসের শেষ দিক থেকে জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা কোন কোন স্থানে তাদের অপকর্মের বিশ্বাসী সাথী বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর যে নারকীয় তা-ব চালিয়ে তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে এবং তাঁদের মন্দির ভেঙ্গেছে তা এদেশের মানুষের কাছে একেবারেই পরিষ্কার। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৫ মার্চ মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর জেলার লৌহজং উপজেলার একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হিংস্র হানাদার পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে বাংলার দামাল ছেলেদের অবিস্মরণীয় বীরত্বের স্মৃতিবিজড়িত হলদিয়া ইউনিয়নের গোয়ালিমান্দ্রা গ্রামে কালীমন্দির ভেঙ্গে ফেলে। গত ১৫ মার্চ বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দলবল নিয়ে কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণ করতে সন্ত্রাসী-দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কালীমন্দির দেখতে যান। তিনি যখন মন্দির পরিদর্শন করছিলেন তখন মন্দিরের দরজার উপরের দিকে 'জামায়াত-শিবির ও বিএনপির হাত থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষা কর' লেখা সম্মিলিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আটটি পোস্টার টাঙ্গানো ছিল। পোস্টারে লিখিত স্পষ্ট বক্তব্যের মাধ্যমেও ম্যাডাম খালেদা জিয়া ঐ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মনের কথাটি বোঝার কোন চেষ্টাই করেননি। মন্দির পরিদর্শন শেষে তিনি কালীমন্দিরসংলগ্ন মাঠে এক জনসভায় ভাষণ দেন।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গোয়ালিমান্দ্রা ও তার আশপাশ এলাকা বিক্রমপুরবাসীর কাছে হানাদার পাকিস্তানী সৈন্যদের মৃত্যু-উপত্যকা বলে খ্যাত ছিল। তাই দুঃখে মনটা ভরে যায় যে বিএনপি নেত্রী চরম মিথ্যাচারটি করলেন লৌহজং, শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলাসহ বিক্রমপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথায় মহিমান্বিত পবিত্র এই এলাকাটিতে। তাঁর মিথ্যা ও বানোয়াট ভাষণে এলাকাটি এখন অপবিত্রই হয়ে গেলো। ১৯৭১ সালের জুলাই-আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সময়ে গোয়ালিমান্দ্রা ও তার আশপাশ এলাকায় সংঘটিত তিনটি ভয়ঙ্কর যুদ্ধে বাংলার বীর যোদ্ধারা ৭২ জন পাকিস্তানী সৈন্য খতম করেছিলেন। কোন একটি সুনির্দিষ্ট এলাকায় মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে যুদ্ধকালীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এত পাকিস্তানী সেনা নিধন একটি বড় ঘটনা। গোয়ালিমান্দ্রার রণক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বিপুল সংখ্যায় তাঁর প্রাণের বন্ধু পাকিস্তানীদের প্রাণহানিও ঐ এলাকায় গিয়ে তাঁর প্রচ- ক্ষোভ প্রকাশ ও মিথ্যাচার করার কারণ হতে পারে বলেও অনেকেই মনে করছেন। তিনি মুখে যাই বলুন না কেন, মনেপ্রাণে বেগম জিয়া এখনও শতভাগ পাকিস্তানী। যাই হোক, অকুতোভয় বাংলার দামাল ছেলেদের মহান বীরত্বগাথা এখনও এলাকাবাসী শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। বাঙালীদের এই কৃতিত্বপূর্ণ যুদ্ধে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এদের মধ্যে অবশ্যই সর্বাগ্রে উল্লেখ করতে হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এই পত্রিকার সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট ঢালী মোয়াজ্জেম হোসেনের নাম। গোয়ালিমান্দ্রায় ঢালী মোয়াজ্জেম কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে এক পর্যায়ে পকিস্তানীদের বিরুদ্ধে মুখোমুখি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। জীবনবাজি রেখে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শন করে যুদ্ধে পাক সেনাদের পর্যুদস্ত করার অনন্য কৃতিত্বের জন্য তাঁদের অনেক আগেই পদক পাওয়া উচিত ছিল বলে আজো অনেকে মনে করেন। কিন্তু তাঁরা এখনো কোন পদক পাননি। অসামান্য বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য আরো অনেকের নাম শ্রদ্ধাভরে উল্লেখ করা উচিত। এ মুহূর্তে যাদের নাম মনে পড়ছে তাঁরা হলেন : আবদুস শহীদ সেন্টু, সোলায়মান চৌধুরী, মীর মোশাররফ হোসেন, গনি, ফরহাদ, আওলাদ হোসেন টুকু, হারুন-উর-রশিদ ও ওহাব। এর কিছুদিন পরে পাকিস্তানীরা দু'তিনটি স্থানে উপর্যুপরি মার খেয়ে প্রতিশোধের স্পৃহায় মত্ত হয়ে ঢাকা থেকে দু'টি লঞ্চ বোঝাই করে শতাধিক সৈন্য নিয়ে ভারি কামান ও অন্যান্য ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গোয়ালিমান্দ্রা হাটে এসে নোঙ্গর ফেলে। ওদের লক্ষ্য ছিল খাল দিয়ে দক্ষিণে অবস্থিত পদ্মার পারে লৌহজং থানায় পৌঁছা। প্রথমেই এই হায়েনারা গান-পাউডার ছিটিয়ে হাটটি জ্বালিয়ে দেয়। ঐ বছর ২৫ অক্টোবর মোতাবেক রমজান মাসের তিন তারিখ বিক্রমপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা ৯৭ জন মুক্তিযোদ্ধা হলদিয়ায় জড়ো হয়ে গ্রামটির উত্তর মাথায় গাছ-গাছালির আড়ালে খালের দু'পাশে অবস্থান নেই। আমাদের টার্গেট ছিল খাল দিয়ে যাওয়ার সময় কাছে থেকে ওদের লঞ্চ আক্রমণ করে পাকিস্তানীদের ভবলীলা সাঙ্গ করে দেয়া। অন্যান্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র ছাড়াও আমাদের কাছে তিনটি হালকা মেশিনগান ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের এই সমাবেশে সেন্টু ও ইকবাল হোসেন ছাড়াও সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ঢালী মোয়াজ্জেম হোসেন। উল্লেখ করা উচিত ঐ এ্যামবুশে আমি ছাড়াও এ সময়ের একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক দৈনিক যুগান্তরে কর্মরত স্বপন দাশগুপ্ত এবং টঙ্গিবাড়ি উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জলসহ আরো বেশ কয়েকজন ছিলেন। আমার সঙ্গে আরো ছিলেন করারবাগের হুমায়ুন, শাহআলম, ইউনুস এবং ডহরীর নিয়াজ ও গফুর। ধুরন্ধর পাকিস্তানীরা আমাদের শক্ত অবস্থানের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাদের কিছু সদস্য লঞ্চ থেকে নেমে ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে গামবুট পরে খালের পার দিয়ে হেঁটে গ্রামের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এক পর্যায়ে ওরা আমাদের রাইফেলের নাগালের মধ্যে চলে আসে। আমার হাতে ছিল একটা স্টেনগান। একটা ছোট গ্রুপের দায়িত্ব ছিল আমার ওপর। না, কিছু করার উপায় ছিল না। সঙ্গতকারণেই, হাইকমান্ড নির্বিকার। এরিমধ্যে, আমাদের উপরে দেখা গেল যুদ্ধবিমান। তাই তিন দিন এ্যামবুশ করে থাকার পর নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমাদের সবাইকে স্থান ত্যাগ করতে হয়। হলদিয়া, গোয়ালিমান্দ্রা এবং আরো উত্তরে শেখেরনগর এলাকা মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় বিজয়ে মানুষের কাছে ঐ এলাকাটি হয়ে উঠেছিল পুণ্যভূমি। শেখেরনগরেই দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আতিকউল্লাহ খান মাসুদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী সৈন্য বোঝাই একটি লঞ্চ ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে গোয়ালিমান্দ্রায় মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শুরু হয়েছে। গোয়ালিমান্দ্রায় মন্দিরে হামলা হওয়ার আগের দিন আমি গর্বভরে প্রেসক্লাবে অনেককেই বলতেছিলাম, "আমাদের প্রিয় বিক্রমপুরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকবে। কারণ, ওখানে জামায়াতে ইসলামের তেমন কোন প্রভাব নেই। একাত্তরেও আমাদের এলাকায় জামায়াতের কোন তা-ব দেখা যায়নি। পাঠক নিশ্চয়ই ভুলে যাননি, ২০০৫ সালের ১৭ জুলাই দেশের ৬৩টি জেলার পাঁচ শতাধিক স্থানে একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হলেও মুন্সীগঞ্জ জেলায় কোন বোমাবাজি হয়নি। সেজন্যই সাহস করে কথাটি বলেছিলাম। একজন ছোটখাটো মুক্তিযোদ্ধা ও দেশের একজন নিষ্ঠাবান সংবাদকর্মী হিসেবে এলাকার লোকজনের কাছ থেকে যা জানতে পেরেছি তাতে এটুকু জোর দিয়েই বলা যায় যে বিএনপি কর্মীরাই গোয়ালিমান্দ্রায় এ অঘটনটি ঘটিয়েছে। অথচ, ম্যাডাম মুখস্থ বলে ফেললেন, 'মন্দিরে হামলার সঙ্গে সরকারী লোকই জড়িত।' তিনি আরও বলেছেন, "সরকার কাউকে না ধরে মন্দিরে হামলার জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।" সরকারের পক্ষ থেকে মন্দির ভাঙ্গার জন্য সুস্পষ্টভাবে বিএনপিকে দায়ী করে কেউ কিছু বলেছে বলে আমার জানা নেই। তবে এখন বিএনপি নেত্রী যদি ইস্যু তৈরির লক্ষ্যে মনগড়া নিজেদের ওপর দোষ নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন তাহলে তো কারও কিছু করার নেই। গোয়ালিমান্দ্রায় তিনি একটি অগ্রিম উক্তি করে বসেছেন যে, 'তারা (সরকারি দলের লোক) এখন হয়তো মসজিদ ভেঙ্গেও নতুন ইস্যু সৃষ্টি করতে পারে। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।' বেগম জিয়ার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, অচিরেই হয়তো আমরা মসজিদ ভাঙ্গার মতো দুঃখজনক ঘটনার কথা জানতে পারব। যদিও আমরা গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পবিত্র কোরআন শরীফ পোড়ানোর ঘটনা টিভিতে দেখেছি। তাই খালেদা জিয়ার এমন ঘৃণ্য বক্তব্যের পর এখন তাঁর দলের লোকেরাই মসজিদ ভাঙ্গার কাজে জামায়াত-শিবিরের আগে অগ্রণী হয়ে উঠতে পারে। আমি যতদূর জানি, আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। সকালবেলা পবিত্র কোরান শরীফ পাঠ করে তাঁর দিনের কাজ শুরু করেন। এই সত্যটি শেখ হাসিনার দলের নেতা-কর্মীরা খুব ভাল করেই জানেন। যে যাই বলুক, বঙ্গবন্ধু কন্যার দলের লোকদের পক্ষে আর যাই হোক, মসজিদ-মন্দির ভাঙ্গার মতো পাপকার্যে নিমগ্ন হওয়া অসম্ভব। এটা অচিন্ত্যনীয়।
বেগম জিয়ার সাম্প্রতিক বক্তব্যে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে নিরপেক্ষ মনোভাবের অনেককেই এখন বলতে শোনা যাচ্ছে, ম্যাডামের মাথায় বোধ হয় কোন সমস্যা দেখা দিয়ে থাকতে পারে, তা নাহলে অপেক্ষাকৃত চুপচাপ ও ভাবগম্ভীর প্রকৃতির মানুষটি হঠাৎ এতটা উগ্র মূর্তি ধারণ করতে পারেন না। আর সে কারণেই তিনি আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছেন। এর আগে শাহবাগ চত্বরে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হওয়া তরুণ প্রজন্মের সদস্যদের কর্মকা-কে ফ্যাসিবাদী বলে অভিহিতকারী খালেদা জিয়া এখন শাহবাগ চত্বরকে 'নাস্তিক চত্বর' বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। এই জঘন্য উক্তিটি তিনি সেদিন মুন্সীগঞ্জের গোয়ালিমান্দ্রায়ই করেছিলেন। তিনি আরো বলেছেন, শাহবাগের 'নষ্ট ও নাস্তিক' তরুণরা নিরপেক্ষ নয়। ম্যাডাম, ওরা নষ্ট বা নাস্তিক কোনটাই নয়। ওরা ধর্মপ্রাণ। ধর্মবিদ্বেষী নয়। শাহবাগের উচ্চশিক্ষিত ভদ্রঘরের ছেলেমেয়েরা বার বার বলার চেষ্টা করেছে যে তাদের আন্দোলন-সংগ্রাম কোন ধর্মের বিরুদ্ধে তো নয়ই এমনকি কোন দলের বিরুদ্ধেও নয়। কারণ, ওরা কোন দলের নয়, ওরা দেশের সূর্যসন্তান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ এই তরুণদের একটাই দাবি একাত্তরের ঘাতক ও ধর্ষকদের ফাঁসি। ওদের এই সুস্পষ্ট দাবি যদি ওদের নিরপেক্ষতা ম্লান করেছে বলে কোন ব্যক্তি বা দলের কাছে মনে হয়ে থেকে থাকে তাহলে সেটা তাদের ব্যাপার। ১৯৭১ সালে সরকারে চাকরি করায় বেগম জিয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে রাজাকার বলেছেন। মহীউদ্দীন খান আলমগীর না হয় পাকিস্তান সরকারের চাকরি করেছেন। কিন্তু ম্যাডাম খালেদা জিয়া তো একাত্তরে পাকিস্তানী সেনা ছাউনিতে আরাম-আয়েশে দিন গুজরান করেছেন। তাহলে মহীউদ্দীন খান রাজাকার হলে, খালেদা জিয়া তো রাজাকারের রাণী হয়ে যান। গত ১৬ মার্চ মানিকগঞ্জে প্রদত্ত ভাষণে মনে হয়েছে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় এসেই গেছে। তিনি বলেছেন, এ সরকার পুলিশ দিয়ে ১৭০ জন মানুষ হত্যা করেছে। ৭/৮ জন পুলিশ প্রাণ হারিয়েছেন এটা তাঁর হিসেবে নেই। পুলিশের হামলায় মাত্র কয়েকজন মারা গেলেও আর সবাই মারা গেছেন জামায়াত-শিবির ও বিএনপি কর্মীদের হাতে। আগামীতে ক্ষমতায় এসে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করে শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি করে বিচার করার হুঙ্কার ছেড়েছেন ম্যাডাম। তিনি বলেছেন, "আরো জোরালে আন্দোলন করে এ সরকারকে বিদায় করতে হয়ত আরও কিছু মানুষের প্রাণ যাবে।" দেশের স্বার্থে এ ক্ষতি মেনে নেয়ার পরামর্শও তিনি দিয়েছেন। কতটা নির্মম, নিষ্ঠুর, পাষাণহৃদয় হলে তিনি প্রকাশ্য জনসভায় এমন কথা বলতে পারেন তা বলাই বাহুল্য। যাই হোক, চূড়ান্ত বিচারের মালিক আল্লাহ গাফুরুর রাহিম। দেশের ভাল-মন্দ বিচারের মালিক জনগণ। কোন দৈব-দুর্বিপাক না ঘটলে, জনগণই বিচার করবেন কারা ক্ষমতায় থাকবেন এবং কারা ক্ষমতায় আবার আসবেন।
লেখক : মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও কলামিস্ট
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গোয়ালিমান্দ্রা ও তার আশপাশ এলাকা বিক্রমপুরবাসীর কাছে হানাদার পাকিস্তানী সৈন্যদের মৃত্যু-উপত্যকা বলে খ্যাত ছিল। তাই দুঃখে মনটা ভরে যায় যে বিএনপি নেত্রী চরম মিথ্যাচারটি করলেন লৌহজং, শ্রীনগর ও সিরাজদিখান উপজেলাসহ বিক্রমপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথায় মহিমান্বিত পবিত্র এই এলাকাটিতে। তাঁর মিথ্যা ও বানোয়াট ভাষণে এলাকাটি এখন অপবিত্রই হয়ে গেলো। ১৯৭১ সালের জুলাই-আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সময়ে গোয়ালিমান্দ্রা ও তার আশপাশ এলাকায় সংঘটিত তিনটি ভয়ঙ্কর যুদ্ধে বাংলার বীর যোদ্ধারা ৭২ জন পাকিস্তানী সৈন্য খতম করেছিলেন। কোন একটি সুনির্দিষ্ট এলাকায় মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে যুদ্ধকালীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এত পাকিস্তানী সেনা নিধন একটি বড় ঘটনা। গোয়ালিমান্দ্রার রণক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বিপুল সংখ্যায় তাঁর প্রাণের বন্ধু পাকিস্তানীদের প্রাণহানিও ঐ এলাকায় গিয়ে তাঁর প্রচ- ক্ষোভ প্রকাশ ও মিথ্যাচার করার কারণ হতে পারে বলেও অনেকেই মনে করছেন। তিনি মুখে যাই বলুন না কেন, মনেপ্রাণে বেগম জিয়া এখনও শতভাগ পাকিস্তানী। যাই হোক, অকুতোভয় বাংলার দামাল ছেলেদের মহান বীরত্বগাথা এখনও এলাকাবাসী শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। বাঙালীদের এই কৃতিত্বপূর্ণ যুদ্ধে অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এদের মধ্যে অবশ্যই সর্বাগ্রে উল্লেখ করতে হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এই পত্রিকার সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট ঢালী মোয়াজ্জেম হোসেনের নাম। গোয়ালিমান্দ্রায় ঢালী মোয়াজ্জেম কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে এক পর্যায়ে পকিস্তানীদের বিরুদ্ধে মুখোমুখি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। জীবনবাজি রেখে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শন করে যুদ্ধে পাক সেনাদের পর্যুদস্ত করার অনন্য কৃতিত্বের জন্য তাঁদের অনেক আগেই পদক পাওয়া উচিত ছিল বলে আজো অনেকে মনে করেন। কিন্তু তাঁরা এখনো কোন পদক পাননি। অসামান্য বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য আরো অনেকের নাম শ্রদ্ধাভরে উল্লেখ করা উচিত। এ মুহূর্তে যাদের নাম মনে পড়ছে তাঁরা হলেন : আবদুস শহীদ সেন্টু, সোলায়মান চৌধুরী, মীর মোশাররফ হোসেন, গনি, ফরহাদ, আওলাদ হোসেন টুকু, হারুন-উর-রশিদ ও ওহাব। এর কিছুদিন পরে পাকিস্তানীরা দু'তিনটি স্থানে উপর্যুপরি মার খেয়ে প্রতিশোধের স্পৃহায় মত্ত হয়ে ঢাকা থেকে দু'টি লঞ্চ বোঝাই করে শতাধিক সৈন্য নিয়ে ভারি কামান ও অন্যান্য ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গোয়ালিমান্দ্রা হাটে এসে নোঙ্গর ফেলে। ওদের লক্ষ্য ছিল খাল দিয়ে দক্ষিণে অবস্থিত পদ্মার পারে লৌহজং থানায় পৌঁছা। প্রথমেই এই হায়েনারা গান-পাউডার ছিটিয়ে হাটটি জ্বালিয়ে দেয়। ঐ বছর ২৫ অক্টোবর মোতাবেক রমজান মাসের তিন তারিখ বিক্রমপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা ৯৭ জন মুক্তিযোদ্ধা হলদিয়ায় জড়ো হয়ে গ্রামটির উত্তর মাথায় গাছ-গাছালির আড়ালে খালের দু'পাশে অবস্থান নেই। আমাদের টার্গেট ছিল খাল দিয়ে যাওয়ার সময় কাছে থেকে ওদের লঞ্চ আক্রমণ করে পাকিস্তানীদের ভবলীলা সাঙ্গ করে দেয়া। অন্যান্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র ছাড়াও আমাদের কাছে তিনটি হালকা মেশিনগান ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের এই সমাবেশে সেন্টু ও ইকবাল হোসেন ছাড়াও সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ঢালী মোয়াজ্জেম হোসেন। উল্লেখ করা উচিত ঐ এ্যামবুশে আমি ছাড়াও এ সময়ের একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক দৈনিক যুগান্তরে কর্মরত স্বপন দাশগুপ্ত এবং টঙ্গিবাড়ি উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জলসহ আরো বেশ কয়েকজন ছিলেন। আমার সঙ্গে আরো ছিলেন করারবাগের হুমায়ুন, শাহআলম, ইউনুস এবং ডহরীর নিয়াজ ও গফুর। ধুরন্ধর পাকিস্তানীরা আমাদের শক্ত অবস্থানের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাদের কিছু সদস্য লঞ্চ থেকে নেমে ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে গামবুট পরে খালের পার দিয়ে হেঁটে গ্রামের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এক পর্যায়ে ওরা আমাদের রাইফেলের নাগালের মধ্যে চলে আসে। আমার হাতে ছিল একটা স্টেনগান। একটা ছোট গ্রুপের দায়িত্ব ছিল আমার ওপর। না, কিছু করার উপায় ছিল না। সঙ্গতকারণেই, হাইকমান্ড নির্বিকার। এরিমধ্যে, আমাদের উপরে দেখা গেল যুদ্ধবিমান। তাই তিন দিন এ্যামবুশ করে থাকার পর নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমাদের সবাইকে স্থান ত্যাগ করতে হয়। হলদিয়া, গোয়ালিমান্দ্রা এবং আরো উত্তরে শেখেরনগর এলাকা মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় বিজয়ে মানুষের কাছে ঐ এলাকাটি হয়ে উঠেছিল পুণ্যভূমি। শেখেরনগরেই দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আতিকউল্লাহ খান মাসুদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী সৈন্য বোঝাই একটি লঞ্চ ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে গোয়ালিমান্দ্রায় মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শুরু হয়েছে। গোয়ালিমান্দ্রায় মন্দিরে হামলা হওয়ার আগের দিন আমি গর্বভরে প্রেসক্লাবে অনেককেই বলতেছিলাম, "আমাদের প্রিয় বিক্রমপুরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকবে। কারণ, ওখানে জামায়াতে ইসলামের তেমন কোন প্রভাব নেই। একাত্তরেও আমাদের এলাকায় জামায়াতের কোন তা-ব দেখা যায়নি। পাঠক নিশ্চয়ই ভুলে যাননি, ২০০৫ সালের ১৭ জুলাই দেশের ৬৩টি জেলার পাঁচ শতাধিক স্থানে একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হলেও মুন্সীগঞ্জ জেলায় কোন বোমাবাজি হয়নি। সেজন্যই সাহস করে কথাটি বলেছিলাম। একজন ছোটখাটো মুক্তিযোদ্ধা ও দেশের একজন নিষ্ঠাবান সংবাদকর্মী হিসেবে এলাকার লোকজনের কাছ থেকে যা জানতে পেরেছি তাতে এটুকু জোর দিয়েই বলা যায় যে বিএনপি কর্মীরাই গোয়ালিমান্দ্রায় এ অঘটনটি ঘটিয়েছে। অথচ, ম্যাডাম মুখস্থ বলে ফেললেন, 'মন্দিরে হামলার সঙ্গে সরকারী লোকই জড়িত।' তিনি আরও বলেছেন, "সরকার কাউকে না ধরে মন্দিরে হামলার জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।" সরকারের পক্ষ থেকে মন্দির ভাঙ্গার জন্য সুস্পষ্টভাবে বিএনপিকে দায়ী করে কেউ কিছু বলেছে বলে আমার জানা নেই। তবে এখন বিএনপি নেত্রী যদি ইস্যু তৈরির লক্ষ্যে মনগড়া নিজেদের ওপর দোষ নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন তাহলে তো কারও কিছু করার নেই। গোয়ালিমান্দ্রায় তিনি একটি অগ্রিম উক্তি করে বসেছেন যে, 'তারা (সরকারি দলের লোক) এখন হয়তো মসজিদ ভেঙ্গেও নতুন ইস্যু সৃষ্টি করতে পারে। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।' বেগম জিয়ার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, অচিরেই হয়তো আমরা মসজিদ ভাঙ্গার মতো দুঃখজনক ঘটনার কথা জানতে পারব। যদিও আমরা গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পবিত্র কোরআন শরীফ পোড়ানোর ঘটনা টিভিতে দেখেছি। তাই খালেদা জিয়ার এমন ঘৃণ্য বক্তব্যের পর এখন তাঁর দলের লোকেরাই মসজিদ ভাঙ্গার কাজে জামায়াত-শিবিরের আগে অগ্রণী হয়ে উঠতে পারে। আমি যতদূর জানি, আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। সকালবেলা পবিত্র কোরান শরীফ পাঠ করে তাঁর দিনের কাজ শুরু করেন। এই সত্যটি শেখ হাসিনার দলের নেতা-কর্মীরা খুব ভাল করেই জানেন। যে যাই বলুক, বঙ্গবন্ধু কন্যার দলের লোকদের পক্ষে আর যাই হোক, মসজিদ-মন্দির ভাঙ্গার মতো পাপকার্যে নিমগ্ন হওয়া অসম্ভব। এটা অচিন্ত্যনীয়।
বেগম জিয়ার সাম্প্রতিক বক্তব্যে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে নিরপেক্ষ মনোভাবের অনেককেই এখন বলতে শোনা যাচ্ছে, ম্যাডামের মাথায় বোধ হয় কোন সমস্যা দেখা দিয়ে থাকতে পারে, তা নাহলে অপেক্ষাকৃত চুপচাপ ও ভাবগম্ভীর প্রকৃতির মানুষটি হঠাৎ এতটা উগ্র মূর্তি ধারণ করতে পারেন না। আর সে কারণেই তিনি আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছেন। এর আগে শাহবাগ চত্বরে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হওয়া তরুণ প্রজন্মের সদস্যদের কর্মকা-কে ফ্যাসিবাদী বলে অভিহিতকারী খালেদা জিয়া এখন শাহবাগ চত্বরকে 'নাস্তিক চত্বর' বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। এই জঘন্য উক্তিটি তিনি সেদিন মুন্সীগঞ্জের গোয়ালিমান্দ্রায়ই করেছিলেন। তিনি আরো বলেছেন, শাহবাগের 'নষ্ট ও নাস্তিক' তরুণরা নিরপেক্ষ নয়। ম্যাডাম, ওরা নষ্ট বা নাস্তিক কোনটাই নয়। ওরা ধর্মপ্রাণ। ধর্মবিদ্বেষী নয়। শাহবাগের উচ্চশিক্ষিত ভদ্রঘরের ছেলেমেয়েরা বার বার বলার চেষ্টা করেছে যে তাদের আন্দোলন-সংগ্রাম কোন ধর্মের বিরুদ্ধে তো নয়ই এমনকি কোন দলের বিরুদ্ধেও নয়। কারণ, ওরা কোন দলের নয়, ওরা দেশের সূর্যসন্তান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ এই তরুণদের একটাই দাবি একাত্তরের ঘাতক ও ধর্ষকদের ফাঁসি। ওদের এই সুস্পষ্ট দাবি যদি ওদের নিরপেক্ষতা ম্লান করেছে বলে কোন ব্যক্তি বা দলের কাছে মনে হয়ে থেকে থাকে তাহলে সেটা তাদের ব্যাপার। ১৯৭১ সালে সরকারে চাকরি করায় বেগম জিয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে রাজাকার বলেছেন। মহীউদ্দীন খান আলমগীর না হয় পাকিস্তান সরকারের চাকরি করেছেন। কিন্তু ম্যাডাম খালেদা জিয়া তো একাত্তরে পাকিস্তানী সেনা ছাউনিতে আরাম-আয়েশে দিন গুজরান করেছেন। তাহলে মহীউদ্দীন খান রাজাকার হলে, খালেদা জিয়া তো রাজাকারের রাণী হয়ে যান। গত ১৬ মার্চ মানিকগঞ্জে প্রদত্ত ভাষণে মনে হয়েছে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় এসেই গেছে। তিনি বলেছেন, এ সরকার পুলিশ দিয়ে ১৭০ জন মানুষ হত্যা করেছে। ৭/৮ জন পুলিশ প্রাণ হারিয়েছেন এটা তাঁর হিসেবে নেই। পুলিশের হামলায় মাত্র কয়েকজন মারা গেলেও আর সবাই মারা গেছেন জামায়াত-শিবির ও বিএনপি কর্মীদের হাতে। আগামীতে ক্ষমতায় এসে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করে শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি করে বিচার করার হুঙ্কার ছেড়েছেন ম্যাডাম। তিনি বলেছেন, "আরো জোরালে আন্দোলন করে এ সরকারকে বিদায় করতে হয়ত আরও কিছু মানুষের প্রাণ যাবে।" দেশের স্বার্থে এ ক্ষতি মেনে নেয়ার পরামর্শও তিনি দিয়েছেন। কতটা নির্মম, নিষ্ঠুর, পাষাণহৃদয় হলে তিনি প্রকাশ্য জনসভায় এমন কথা বলতে পারেন তা বলাই বাহুল্য। যাই হোক, চূড়ান্ত বিচারের মালিক আল্লাহ গাফুরুর রাহিম। দেশের ভাল-মন্দ বিচারের মালিক জনগণ। কোন দৈব-দুর্বিপাক না ঘটলে, জনগণই বিচার করবেন কারা ক্ষমতায় থাকবেন এবং কারা ক্ষমতায় আবার আসবেন।
লেখক : মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও কলামিস্ট
__._,_.___