বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০১৩, ২৭ চৈত্র ১৪১৯
হেফাজতের সমাবেশ নিয়ে ভয়ঙ্কর নীলনক্সা
শিবির ও জঙ্গীদের দেয়া হয় অস্ত্র বোমা দেশীয় গ্রেনেড ॥ অপকৌশল বুঝতে পেরেই শাপলা চত্বরে স্থায়ী অবস্থান নেননি নেতৃবৃন্দ
ফিরোজ মান্না ॥ হেফাজতের কর্র্মীদের দিয়ে বর্ম তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে জামায়াত ও বিএনপি। তারা হেফাজতের মঞ্চে গিয়ে একত্মতা প্রকাশ করলেও শেষপর্যন্ত হেফাজতের নেতাকর্মীরা মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে সময় মতো উঠে যায়। বিএনপি-জামায়াত চেয়েছিল অনির্দিষ্টকালের জন্য হেফাজতের নেতাকর্মীদের দিয়ে স্থায়ী মঞ্চ করবে। কিন্তু হেফাজতকে দিয়ে মঙ্গলবার হরতাল পালন করতে বাধ্য করেছে জামায়াত-বিএনপি আর কিছু করাতে পারেনি। বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে হেফাজতে ইসলাম হরতাল পালন করে জামায়াত-বিএনপির টাকা হালাল করেছে মাত্র। সরকারের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচী নিয়ে ইতিবাচক আলোচনার কারণে তারা মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে উঠে গেছে। তা না হলে এই হেফাজতে ইসলামকে দিয়ে অনেক রক্তপাত ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল বিএনপি-জামায়াতের। এই পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় বিএনপি ও ছাত্রশিবির টানা তিন দিনের হরতাল কর্মসূচী পালন করছে। বিএনপি-জামায়াতের অপকৌশল বুঝতে পেরেই হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বর ছেড়েছে। একটি গোয়েন্দা সংস্থা এমন খবর দিয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হেফাজতের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়। সমাবেশ নির্ধারিত সময় দশটায় শুরু করে তারা। সমাবেশে প্রায় দুই লাখ বিশ হাজার আলেম-ওলামার সমাগম ঘটে। লাগাতার অবস্থানের কর্মসূচীর পূর্বপ্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও হেফাজতে ইসলাম ৬ এপ্রিল শাপলা চত্বরে অবস্থান করেনি। হেফাজতের লংমার্চের প্রতি সমর্থন প্রদান করা বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে খাদ্য ও পানীয়র পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও জামায়াত-শিবির কর্তৃক সম্ভাব্য নাশকতার বিষয়টি মাথায় রেখে হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী থেকে তারা পিছু হটেন। হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ কর্মসূচীকে ব্যবহার করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও এর শরিক জামায়াত রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার কৌশল হিসেবে নেয়ার বিষয়টি বিজ্ঞ আলেম সমাজ পূর্ব থেকে আঁচ করতে পেরে তাদের কর্মসূচী সংক্ষিপ্ত করেন। একই সঙ্গে খাবার, পানীয় ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক উপকরণাদির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও শাপলা চত্বরের মতো বৃহত্তম সড়কে স্থান এবং পর্যাপ্ত টয়লেট/পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার কথা বিবেচনায় এনে শাপলা চত্বরে লাগাতার অবস্থান থেকে হেফাজতে ইসলাম সরে আসে। এতে বিএনপি-জামায়াত হেফাজতে ইসলামকে ব্যবহার করে রাজনীতির যে নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। বিএনপি-জামায়াত হেফাজতে ইসলামকে আর্থিক সহায়তাসহ সকল প্রকার সহযোগিতা দিলেও হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী পালন না করায় বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতারা হেফাজতে ইসলামের ওপর প্রচ- ক্ষিপ্ত হয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে হেফাজতে ইসলামের ৮ মার্চের হরতাল কর্মসূচীতে বিএনপি-জামায়াত সমর্থন প্রদান করেনি।
নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তির দাবি, সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাসসহ ১৩টি দাবিতে হেফাজতে ইসলামের আমির বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আল্লামা আহম্মদ শফী সারাদেশের আলেম ও ইসলামী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে গত ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেন। যে কোন মূল্যে লংমার্চ সফল করার লক্ষ্যে তারা সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। ১৮ দলের পূর্ণ সমর্থন ও জাতীয় পার্টির সমর্থন পাওয়ার পরেও তারা শাপলা চত্বরে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি অবস্থান করেননি। তাদের দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল, ট্রাইব্যুনাল বাতিল, গ্রেফতারকৃত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তিসহ নানাবিধ দাবিতে যখন জামায়াত-শিবির দেশব্যাপী জ্বালাও-পোড়াও, পুলিশের ওপর আক্রমণসহ ব্যাপক সহিংসতা ও নাশকতা চালাচ্ছে ঠিক তখনই হেফাজতে ইসলাম কর্তৃক ঘোষিত লংমার্চ কর্মসূচী সাধারণ জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, ভয় ও সংশয়ের সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু এই কাজটি বিএনপি-জামায়াত হেফাজতকে দিয়ে করাতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা কর্মসূচী পরিবর্তন করে একদিনের হরতাল কর্মসূচী দিয়েছে। এই হরতাল কর্মসূচী জামায়াত-বিএনপির মুখ রক্ষার কর্মসূচী ছিল। হেফাজতে ইসলাসমকে দিয়ে যে কাজটি করতে পারেনি বিএনপি-জামায়াত সেই কাজটি করছে টানা তিন দিনের হরতাল দিয়ে।
গোয়েন্দা সংস্থাটি বলেছে, সরকারকে মুসলিম বিশ্বের কাছে হেয়পতিপন্ন করা এবং বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে জামায়াত-শিবিরের ফ্যাসিবাদী কায়দায় ৬ এপ্রিলের লংমার্চে ভয়াবহ হামলা, ব্যাপক নাশকতা, সহিংসতা এমনকি হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। নাশকতার পাশাপাশি আল্লামা আহম্মদ শফী এবং হেফাজতে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারীদের হত্যা করাসহ জান ও মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করার মধ্য দিয়ে সারাদেশের কওমি মাদ্রাসাসহ অন্যান্য ইসলামী সংগঠনগুলোকে সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার করে সরকার পতনের সহিংস আন্দোলন সৃষ্টি করবে যার ফলে পরিকল্পনা অনুযায়ী যুদ্ধাপরোধের বিচার বাধাগ্রস্ত হবে। হেফাজতে ইসলামের লংমার্চে সহিংসতা ও নাশকতার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের পলাতক নেতাকর্মী এবং জামায়াত-শিবিরের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগের কয়েকটি অঞ্চলে গোপন বৈঠক করে 'অপারেশন হেফাজতে ইসলাম লংমার্চ' নামে কমিটি গঠন করে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্রশিবির এবং নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনের কয়েকটি প্রশিক্ষিত ক্যাডার গ্রুপকে এ কমিটির অন্তর্ভুক্ত করে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। কমিটির নেতৃত্বে ছাত্রশিবির এবং জঙ্গী সংগঠনের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা লংমার্চে অংশগ্রহণ করে একপর্যায়ে ব্যাপক নাশকতা চালাবে এবং কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করবে। নাশকতা ও কিলিং অপারেশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ছাত্রশিবিরসহ নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনের ক্যাডারদের হাতে শতাধিক শক্তিশালী হাতবোমা ও ককটেলসহ ৫০-৬০টি দেশীয় গ্রেনেড এবং ৮০-৯০টি রিভলবার ও পিস্তল সরবরাহ করা হয়। যে কোন মূল্যে অপারেশন সফল করার লক্ষ্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছিল।
সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে প্রচলিত রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে জামায়াত ইসলামী নামক রাজনৈতিক সংগঠনটি ধর্মের নামে রাজনৈতিক ব্যবসা শুরু করছে। ধর্মের লেবাসে সাধারণ মানুষদের বিভ্রান্ত করে ধর্মপ্রাণ ও সরলমনা মানুষদের ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করছে। এই দলটি সাধারণ মানুষের ভোটে বা সমর্থনে কখনও রাষ্টক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারবে না জেনে তারা এ ধরনের গর্হিত কাজে লিপ্ত। রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার মাধ্যমে যাদের সমস্ত বিপ্লব এবং জিহাদ করার ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি দলটি দেশের জন্য কিছু দিতে না পারলেও তারা দেশ ও দেশের মানুষের সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গীবাদ উপহার দিয়েছে। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে দলটির সঙ্গে সম্পৃক্ত কতিপয় নেতা/সদস্য যাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জেএমবি, হুজির মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী জঙ্গীগোষ্ঠী, যা তাদের দ্বারা সংঘটিত বোমাবাজিতে এদেশের অগণিত লোক নিহত ও অনেকে আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। জামায়াতে ইসলাম নামক এ ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ছদ্মাবরণে সৃষ্টি হয়েছিল শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই, মুন্সী আব্দুল হান্নান, জাভেদ ইকবাল প্রকাশ, মোহাম্মদ মাসুম বিন আব্দুল হাই, আরিফুল ইসলাম, ওমর শরীফ, আল মারুফ রাসেল, রবিউল আলম কিশোর, ইয়াহিয়া, মাওলানা তাজ উদ্দিন, ড. আসাদুল্লাহ আল গালীব, মোঃ সেলিম উল্লাহ ও নুরুল ইসলামের মতো দুর্ধর্ষ জঙ্গী। উল্লেখিত ব্যক্তিরা নিষিদ্ধঘোষিত জেএমবি, হুজি এবং হিযবুত তাহ্রীরের মতো জঙ্গী সংগঠনের সদস্য। ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে এরা কোন না কোনভাবে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।
ফিরোজ মান্না ॥ হেফাজতের কর্র্মীদের দিয়ে বর্ম তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে জামায়াত ও বিএনপি। তারা হেফাজতের মঞ্চে গিয়ে একত্মতা প্রকাশ করলেও শেষপর্যন্ত হেফাজতের নেতাকর্মীরা মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে সময় মতো উঠে যায়। বিএনপি-জামায়াত চেয়েছিল অনির্দিষ্টকালের জন্য হেফাজতের নেতাকর্মীদের দিয়ে স্থায়ী মঞ্চ করবে। কিন্তু হেফাজতকে দিয়ে মঙ্গলবার হরতাল পালন করতে বাধ্য করেছে জামায়াত-বিএনপি আর কিছু করাতে পারেনি। বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে হেফাজতে ইসলাম হরতাল পালন করে জামায়াত-বিএনপির টাকা হালাল করেছে মাত্র। সরকারের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচী নিয়ে ইতিবাচক আলোচনার কারণে তারা মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে উঠে গেছে। তা না হলে এই হেফাজতে ইসলামকে দিয়ে অনেক রক্তপাত ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল বিএনপি-জামায়াতের। এই পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় বিএনপি ও ছাত্রশিবির টানা তিন দিনের হরতাল কর্মসূচী পালন করছে। বিএনপি-জামায়াতের অপকৌশল বুঝতে পেরেই হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বর ছেড়েছে। একটি গোয়েন্দা সংস্থা এমন খবর দিয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হেফাজতের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়। সমাবেশ নির্ধারিত সময় দশটায় শুরু করে তারা। সমাবেশে প্রায় দুই লাখ বিশ হাজার আলেম-ওলামার সমাগম ঘটে। লাগাতার অবস্থানের কর্মসূচীর পূর্বপ্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও হেফাজতে ইসলাম ৬ এপ্রিল শাপলা চত্বরে অবস্থান করেনি। হেফাজতের লংমার্চের প্রতি সমর্থন প্রদান করা বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে খাদ্য ও পানীয়র পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও জামায়াত-শিবির কর্তৃক সম্ভাব্য নাশকতার বিষয়টি মাথায় রেখে হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী থেকে তারা পিছু হটেন। হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ কর্মসূচীকে ব্যবহার করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও এর শরিক জামায়াত রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার কৌশল হিসেবে নেয়ার বিষয়টি বিজ্ঞ আলেম সমাজ পূর্ব থেকে আঁচ করতে পেরে তাদের কর্মসূচী সংক্ষিপ্ত করেন। একই সঙ্গে খাবার, পানীয় ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক উপকরণাদির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও শাপলা চত্বরের মতো বৃহত্তম সড়কে স্থান এবং পর্যাপ্ত টয়লেট/পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার কথা বিবেচনায় এনে শাপলা চত্বরে লাগাতার অবস্থান থেকে হেফাজতে ইসলাম সরে আসে। এতে বিএনপি-জামায়াত হেফাজতে ইসলামকে ব্যবহার করে রাজনীতির যে নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। বিএনপি-জামায়াত হেফাজতে ইসলামকে আর্থিক সহায়তাসহ সকল প্রকার সহযোগিতা দিলেও হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী পালন না করায় বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতারা হেফাজতে ইসলামের ওপর প্রচ- ক্ষিপ্ত হয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে হেফাজতে ইসলামের ৮ মার্চের হরতাল কর্মসূচীতে বিএনপি-জামায়াত সমর্থন প্রদান করেনি।
নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তির দাবি, সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাসসহ ১৩টি দাবিতে হেফাজতে ইসলামের আমির বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আল্লামা আহম্মদ শফী সারাদেশের আলেম ও ইসলামী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে গত ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেন। যে কোন মূল্যে লংমার্চ সফল করার লক্ষ্যে তারা সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। ১৮ দলের পূর্ণ সমর্থন ও জাতীয় পার্টির সমর্থন পাওয়ার পরেও তারা শাপলা চত্বরে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি অবস্থান করেননি। তাদের দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল, ট্রাইব্যুনাল বাতিল, গ্রেফতারকৃত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তিসহ নানাবিধ দাবিতে যখন জামায়াত-শিবির দেশব্যাপী জ্বালাও-পোড়াও, পুলিশের ওপর আক্রমণসহ ব্যাপক সহিংসতা ও নাশকতা চালাচ্ছে ঠিক তখনই হেফাজতে ইসলাম কর্তৃক ঘোষিত লংমার্চ কর্মসূচী সাধারণ জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, ভয় ও সংশয়ের সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু এই কাজটি বিএনপি-জামায়াত হেফাজতকে দিয়ে করাতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা কর্মসূচী পরিবর্তন করে একদিনের হরতাল কর্মসূচী দিয়েছে। এই হরতাল কর্মসূচী জামায়াত-বিএনপির মুখ রক্ষার কর্মসূচী ছিল। হেফাজতে ইসলাসমকে দিয়ে যে কাজটি করতে পারেনি বিএনপি-জামায়াত সেই কাজটি করছে টানা তিন দিনের হরতাল দিয়ে।
গোয়েন্দা সংস্থাটি বলেছে, সরকারকে মুসলিম বিশ্বের কাছে হেয়পতিপন্ন করা এবং বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে জামায়াত-শিবিরের ফ্যাসিবাদী কায়দায় ৬ এপ্রিলের লংমার্চে ভয়াবহ হামলা, ব্যাপক নাশকতা, সহিংসতা এমনকি হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। নাশকতার পাশাপাশি আল্লামা আহম্মদ শফী এবং হেফাজতে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারীদের হত্যা করাসহ জান ও মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করার মধ্য দিয়ে সারাদেশের কওমি মাদ্রাসাসহ অন্যান্য ইসলামী সংগঠনগুলোকে সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার করে সরকার পতনের সহিংস আন্দোলন সৃষ্টি করবে যার ফলে পরিকল্পনা অনুযায়ী যুদ্ধাপরোধের বিচার বাধাগ্রস্ত হবে। হেফাজতে ইসলামের লংমার্চে সহিংসতা ও নাশকতার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের পলাতক নেতাকর্মী এবং জামায়াত-শিবিরের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগের কয়েকটি অঞ্চলে গোপন বৈঠক করে 'অপারেশন হেফাজতে ইসলাম লংমার্চ' নামে কমিটি গঠন করে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্রশিবির এবং নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনের কয়েকটি প্রশিক্ষিত ক্যাডার গ্রুপকে এ কমিটির অন্তর্ভুক্ত করে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। কমিটির নেতৃত্বে ছাত্রশিবির এবং জঙ্গী সংগঠনের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা লংমার্চে অংশগ্রহণ করে একপর্যায়ে ব্যাপক নাশকতা চালাবে এবং কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করবে। নাশকতা ও কিলিং অপারেশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ছাত্রশিবিরসহ নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনের ক্যাডারদের হাতে শতাধিক শক্তিশালী হাতবোমা ও ককটেলসহ ৫০-৬০টি দেশীয় গ্রেনেড এবং ৮০-৯০টি রিভলবার ও পিস্তল সরবরাহ করা হয়। যে কোন মূল্যে অপারেশন সফল করার লক্ষ্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছিল।
সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে প্রচলিত রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে জামায়াত ইসলামী নামক রাজনৈতিক সংগঠনটি ধর্মের নামে রাজনৈতিক ব্যবসা শুরু করছে। ধর্মের লেবাসে সাধারণ মানুষদের বিভ্রান্ত করে ধর্মপ্রাণ ও সরলমনা মানুষদের ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করছে। এই দলটি সাধারণ মানুষের ভোটে বা সমর্থনে কখনও রাষ্টক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারবে না জেনে তারা এ ধরনের গর্হিত কাজে লিপ্ত। রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার মাধ্যমে যাদের সমস্ত বিপ্লব এবং জিহাদ করার ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি দলটি দেশের জন্য কিছু দিতে না পারলেও তারা দেশ ও দেশের মানুষের সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গীবাদ উপহার দিয়েছে। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে দলটির সঙ্গে সম্পৃক্ত কতিপয় নেতা/সদস্য যাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জেএমবি, হুজির মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী জঙ্গীগোষ্ঠী, যা তাদের দ্বারা সংঘটিত বোমাবাজিতে এদেশের অগণিত লোক নিহত ও অনেকে আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। জামায়াতে ইসলাম নামক এ ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ছদ্মাবরণে সৃষ্টি হয়েছিল শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই, মুন্সী আব্দুল হান্নান, জাভেদ ইকবাল প্রকাশ, মোহাম্মদ মাসুম বিন আব্দুল হাই, আরিফুল ইসলাম, ওমর শরীফ, আল মারুফ রাসেল, রবিউল আলম কিশোর, ইয়াহিয়া, মাওলানা তাজ উদ্দিন, ড. আসাদুল্লাহ আল গালীব, মোঃ সেলিম উল্লাহ ও নুরুল ইসলামের মতো দুর্ধর্ষ জঙ্গী। উল্লেখিত ব্যক্তিরা নিষিদ্ধঘোষিত জেএমবি, হুজি এবং হিযবুত তাহ্রীরের মতো জঙ্গী সংগঠনের সদস্য। ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে এরা কোন না কোনভাবে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।
বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০১৩, ২৭ চৈত্র ১৪১৯
Related:
বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০১৩, ২৭ চৈত্র ১৪১৯
হেফাজতের নারীবিরোধী অবস্থানে ফুঁসে উঠছে নারী সমাজ
বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০১৩, ২৭ চৈত্র ১৪১৯
Also read:
হেফাজতের হুমকির পর ॥ নারী কি বন্দী হবে?
০ হেফাজতের নেতারা এক যুগ ধরে জামায়াতের সঙ্গে রাজনীতি করছে
০ অপরাজেয় বাংলা ভেঙ্গে ফেলা হবে- নেজামী
০ হেফাজতের অধিকাংশ দাবি সংবিধান পরিপন্থী ও রাষ্ট্রবিরোধী- ড. কামাল
০ অপরাজেয় বাংলা ভেঙ্গে ফেলা হবে- নেজামী
০ হেফাজতের অধিকাংশ দাবি সংবিধান পরিপন্থী ও রাষ্ট্রবিরোধী- ড. কামাল
জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥
__._,_.___