শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০১৪, ২৭ পৌষ ১৪২০
নির্বাচন, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সুশীলদের বিশাল ক্রোধ এবং তারপর
(দ্বিতীয় কিস্তি)
আওয়ামী বিরোধী সুশীলদের কথা বলতে হয় এ প্রসঙ্গে। আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তিশালী কয়েকটি দল বা জোট থাকুক তা আমাদের কাম্য। কিন্তু তাদের হতে হবে বাংলাদেশপন্থী। পাকিস্তানপন্থী নয়। জামায়াত পাকিস্তানপন্থী শুধু নয়, আইএসআইয়ের ডিকটাট কার্যকর করতে চায় তারা বাংলাদেশে। বিএনপি ও তাদের প্রবল সমর্থনের মাধ্যমে সে এজেন্ডা কার্যকরের অংশীদার। অতএব তারা পাকিস্তানপন্থী বা রাজাকারপন্থী। সুশীলরা আওয়ামী বিরোধিতার নামে সমর্থন করে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের এজেন্ডাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে পার্থক্য করে বটে তারা, যেমন, নির্বাচনের প্রবল বিরোধী ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম। তিনি যুদ্ধাপরাধ বিচারের একনিষ্ঠ সমর্থক। নির্বাচন প্রশ্নে কারও দ্বিমত থাকতেই পারে কিন্তু তা যখন জামায়াত-বিএনপি পক্ষকে শক্তিশালী করে তখন তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কমিউনিস্ট পার্টি যেমন আবারও এক মারাত্মক ভুল করেছে নির্বাচনের বিরোধিতা করতে গিয়ে জামায়াত-বিএনপির ভাষায় কথা বলে। মূল স্রোত থেকে কমিউনিস্ট পার্টি শুধু দূরে সরে নয়, বাস্তবে তার সদস্যদের কাজ করাও কষ্টসাধ্য করে তুলল। তবে এতে আমরা অবাক নই। অতীতেও এরকম অনেক সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছে এবং পরে নিজেদের 'ভুল' স্বীকার করেছে।
যাক, সুশীলদের কথা বলছিলাম। তারা প্রথম থেকেই নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধিতা করেছে। জামায়াতী বা পাকিস্তানীরা নির্বাচনে না এলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে কেন? বিএনপি যদি জামায়াতের মতো আচরণ করে তাহলে নির্বাচনে না এলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে কেন? এসব প্রশ্ন কেউ তোলেনি। তুললে বিতর্কটা আরও জমে উঠত। তবে, একটি কথা বলে রাখা ভাল সুশীল ও মিডিয়া তাদের জামায়াতপক্ষীয় বললে তারা অপমানিত বোধ করে। বিএনপি বললে, ক্ষুব্ধ হয় কিন্তু অতোটা অপমানিত বোধ করে না। তবে, নিজেদের তারা নিরপেক্ষ স্বাধীনচেতা, রাষ্ট্রের সেবক নয়, রক্ষক হিসেবে পরিচিত করে এসেছে এবং করে।
নিজেদের এরা ভাবে দুর্নীতির উর্ধে, যুক্তিবাদী এবং জাহির করার চেষ্টা করে নিজেদের জ্ঞানী হিসেবে। কিন্তু অতীত ঘাঁটলে দেখা যাবে এরা সবাই কোন না কোন সময় ছিল সেনাপ্রিয়, অর্থবিত্তের ভিত্তি তখনই এবং আমলাতান্ত্রিক শাসনে 'মূল্যায়িত'। এদের একটি অংশের মধ্যে ভারত-বিদ্বেষ তীব্র, অন্যদের তেমন নয়, কিন্তু মনের গহীনে লুকিয়ে আছে তা। তবে, পাকিস্তান বিষয়ে তারা নিশ্চুপ বা নিশ্চুপ থাকার চেষ্টা করে, কারণ তারা যে রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে আরাম পায় সে জন্য আইএসআইয়ের ডিকটাটে চলে বলে অনুমিত। তবে এ অংশের ইংরেজীতে কী যেন বলে সফিসটিকেটেড অংশ বাইরে একটা মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা ভাব এনে ঐ ভাবটা যথাযথভাবে লুকিয়ে রাখে। ভাবটা এমনÑ গোমরা আমাকে বিএনপি-জামায়াতী ভাবÑ এতটা ঠিক নয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো এ ধরনের অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চরিত্রটি এই নির্বাচন উন্মোচন করেছে।
জামায়াতে ইসলামীর চরিত্র ১৯৫০ সাল থেকেই সবার জানা। এর বিচার-বিশ্লেষণের দরকার নেই। সাম্প্রতিক এর কর্মকা- দেখে ১৯৭১-পরবর্তী জেনারেশন নিশ্চয় বুঝতে পারছে ১৯৭১ সালে তারা কী করেছিল। জেনারেল জিয়ার কাছে তারা অতীব কৃতজ্ঞ। কেননা তিনি তাদের রাজনীতি করার শুধু নয় রাষ্ট্রে সম্মানের সঙ্গে পুনর্প্রতিষ্ঠা করে জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন যার খেসারত আমরা এখন দিচ্ছি। বাংলাদেশে স্বাধীনতা পক্ষের শক্তি ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির স্রষ্টা তিনি। ১৯৭৫ সাল থেকে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল এখন তা সরাসরি সংঘাতে রূপ নিতে যাচ্ছে। এ দ্বন্দ্ব এতদিন কসমেটিকসের আড়ালে ঢাকা পড়েছিল। এখন কসমিটিকিসেও সেই ক্ষত ঢাকা পড়ছে না। কোন সুশীলকে এ কথা বলতে শুনবেন না। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছেন জেনারেল জিয়া। অধ্যাপক এমাজউদ্দিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক, প্রায়ই রাষ্ট্র ও আদর্শ সম্পর্কে পরামর্শ দেন। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাইয়ীদ আলোকিত মানুষ তৈরির কাজে ঘর্মাক্ত। কয়েকদিন আগে দেখলাম শেখ হাসিনাকে তিনি স্বৈরাচারী বলেছেন। মাহফুজ আনামও নিরন্তর একই ধরনের ইঙ্গিত করেছেন। অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বর্তমান সরকারের দ্বন্দ্বের কথা সারা বিশ্ব জানে। তিনি প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে মানা করেছেন। ইদানীং শফিউল আলম মজুমদার ও সুজনের কথা শোনা যাচ্ছে। তার ও তার প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য একই রকম। এরা কি এ কথা স্বীকার করে প্রকাশ্যে বলতে পারবেন জিয়া যে ক্ষতি করে গেছেন তার খেসারত আমরা দিচ্ছি। বাংলাদেশে পাকিস্তানী শাসন ফের ফিরিয়ে এনেছিলেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালকে মনে করতেন তিনি ১৯৪৭-এর ধারাবাহিকতা এবং ১৯৭১ বিচ্যুতি! আমি নিশ্চিত এ বিষয়ে তারা আমার সঙ্গে একমত হবেন না। হতে পারেন না। পার্থক্যটা সেখানেই।
অনেকের মতে, এ নির্বাচনে টাকা খরচ করে সেনাবাহিনী নামানো উচিত ছিল না বা প্রয়োজন ছিল না। সাতক্ষীরা এবং অন্য জায়গায় যখন মানুষ খুন হচ্ছে, অরাজকতা চরমে তখন সবাই ভেবেছিলেন নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীকে সেখানে যাওয়ার নির্দেশ দেবেন এবং তারা এই খুনী ও অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের শায়েস্তা করতে পারবে। হাইওয়ে খোলা থাকবে। দুঃখের কথা সেনাবাহিনী তাতে ব্যর্থ হয়েছে। ২০০১ সালে দেখেছি, গ্রামেগঞ্জে গিয়ে সেনারা বিনা কারণে আমাদের পিটিয়েছে। বিএনপিকে জেতানোর তাবৎ কৌশল গ্রহণ করেছে। আমরা আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলকে সেভাবে জেতানোর বিপক্ষে কেননা তা অনুচিত। কিন্তু, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তো তাদের নামানো হয়েছিল। এ সরকার থেকে তারা এত পেয়েছে যে, সরকারের সামরিকরণ হয়েছে বললে অত্যুক্তি হবে না। হাশেম খান উত্তরা থেকে আমাকে বলছিলেন, তিনি ভোট দিতে গিয়েছেন। সেখানে লাইনে দাঁড়ানো কয়েক জনের সঙ্গে সহিংসতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। একজন বললেন, গোলযোগপূর্ণ এক এলাকার সদর রাস্তায় টহলদার সেনাদের এক অফিসারকে জিজ্ঞেস করছিলেন, তারা সহিংসতা প্রতিরোধ করছেন না কেন? অফিসারটি মৃদু হেসেছেন। সেনাবাহিনী, অনেকের মতে, যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এত মানুষের ক্ষতি হতো না। সংখ্যালঘু ও ভোটারদের বাড়িঘর পুড়ত না। যাক, ভেতরের ব্যাপার জানি না। সাধারণের মনোভাব জানালাম মাত্র। তাদের ধারণা যা মিথ্যা নয়, শান্তি রক্ষার চেয়ে তারা নগদে বেশি উৎসাহী এবং গার্মেন্টসের মতো এখন সেনারা রফতানিযোগ্য বিশেষ গণ্য। সেভাবে বিবেচনা করলে দুঃখ থাকবে না। হতাশও হতে হবে না।
(চলবে)
আওয়ামী বিরোধী সুশীলদের কথা বলতে হয় এ প্রসঙ্গে। আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তিশালী কয়েকটি দল বা জোট থাকুক তা আমাদের কাম্য। কিন্তু তাদের হতে হবে বাংলাদেশপন্থী। পাকিস্তানপন্থী নয়। জামায়াত পাকিস্তানপন্থী শুধু নয়, আইএসআইয়ের ডিকটাট কার্যকর করতে চায় তারা বাংলাদেশে। বিএনপি ও তাদের প্রবল সমর্থনের মাধ্যমে সে এজেন্ডা কার্যকরের অংশীদার। অতএব তারা পাকিস্তানপন্থী বা রাজাকারপন্থী। সুশীলরা আওয়ামী বিরোধিতার নামে সমর্থন করে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের এজেন্ডাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে পার্থক্য করে বটে তারা, যেমন, নির্বাচনের প্রবল বিরোধী ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম। তিনি যুদ্ধাপরাধ বিচারের একনিষ্ঠ সমর্থক। নির্বাচন প্রশ্নে কারও দ্বিমত থাকতেই পারে কিন্তু তা যখন জামায়াত-বিএনপি পক্ষকে শক্তিশালী করে তখন তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কমিউনিস্ট পার্টি যেমন আবারও এক মারাত্মক ভুল করেছে নির্বাচনের বিরোধিতা করতে গিয়ে জামায়াত-বিএনপির ভাষায় কথা বলে। মূল স্রোত থেকে কমিউনিস্ট পার্টি শুধু দূরে সরে নয়, বাস্তবে তার সদস্যদের কাজ করাও কষ্টসাধ্য করে তুলল। তবে এতে আমরা অবাক নই। অতীতেও এরকম অনেক সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছে এবং পরে নিজেদের 'ভুল' স্বীকার করেছে।
যাক, সুশীলদের কথা বলছিলাম। তারা প্রথম থেকেই নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধিতা করেছে। জামায়াতী বা পাকিস্তানীরা নির্বাচনে না এলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে কেন? বিএনপি যদি জামায়াতের মতো আচরণ করে তাহলে নির্বাচনে না এলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে কেন? এসব প্রশ্ন কেউ তোলেনি। তুললে বিতর্কটা আরও জমে উঠত। তবে, একটি কথা বলে রাখা ভাল সুশীল ও মিডিয়া তাদের জামায়াতপক্ষীয় বললে তারা অপমানিত বোধ করে। বিএনপি বললে, ক্ষুব্ধ হয় কিন্তু অতোটা অপমানিত বোধ করে না। তবে, নিজেদের তারা নিরপেক্ষ স্বাধীনচেতা, রাষ্ট্রের সেবক নয়, রক্ষক হিসেবে পরিচিত করে এসেছে এবং করে।
নিজেদের এরা ভাবে দুর্নীতির উর্ধে, যুক্তিবাদী এবং জাহির করার চেষ্টা করে নিজেদের জ্ঞানী হিসেবে। কিন্তু অতীত ঘাঁটলে দেখা যাবে এরা সবাই কোন না কোন সময় ছিল সেনাপ্রিয়, অর্থবিত্তের ভিত্তি তখনই এবং আমলাতান্ত্রিক শাসনে 'মূল্যায়িত'। এদের একটি অংশের মধ্যে ভারত-বিদ্বেষ তীব্র, অন্যদের তেমন নয়, কিন্তু মনের গহীনে লুকিয়ে আছে তা। তবে, পাকিস্তান বিষয়ে তারা নিশ্চুপ বা নিশ্চুপ থাকার চেষ্টা করে, কারণ তারা যে রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে আরাম পায় সে জন্য আইএসআইয়ের ডিকটাটে চলে বলে অনুমিত। তবে এ অংশের ইংরেজীতে কী যেন বলে সফিসটিকেটেড অংশ বাইরে একটা মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা ভাব এনে ঐ ভাবটা যথাযথভাবে লুকিয়ে রাখে। ভাবটা এমনÑ গোমরা আমাকে বিএনপি-জামায়াতী ভাবÑ এতটা ঠিক নয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো এ ধরনের অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চরিত্রটি এই নির্বাচন উন্মোচন করেছে।
জামায়াতে ইসলামীর চরিত্র ১৯৫০ সাল থেকেই সবার জানা। এর বিচার-বিশ্লেষণের দরকার নেই। সাম্প্রতিক এর কর্মকা- দেখে ১৯৭১-পরবর্তী জেনারেশন নিশ্চয় বুঝতে পারছে ১৯৭১ সালে তারা কী করেছিল। জেনারেল জিয়ার কাছে তারা অতীব কৃতজ্ঞ। কেননা তিনি তাদের রাজনীতি করার শুধু নয় রাষ্ট্রে সম্মানের সঙ্গে পুনর্প্রতিষ্ঠা করে জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন যার খেসারত আমরা এখন দিচ্ছি। বাংলাদেশে স্বাধীনতা পক্ষের শক্তি ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির স্রষ্টা তিনি। ১৯৭৫ সাল থেকে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল এখন তা সরাসরি সংঘাতে রূপ নিতে যাচ্ছে। এ দ্বন্দ্ব এতদিন কসমেটিকসের আড়ালে ঢাকা পড়েছিল। এখন কসমিটিকিসেও সেই ক্ষত ঢাকা পড়ছে না। কোন সুশীলকে এ কথা বলতে শুনবেন না। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছেন জেনারেল জিয়া। অধ্যাপক এমাজউদ্দিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক, প্রায়ই রাষ্ট্র ও আদর্শ সম্পর্কে পরামর্শ দেন। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাইয়ীদ আলোকিত মানুষ তৈরির কাজে ঘর্মাক্ত। কয়েকদিন আগে দেখলাম শেখ হাসিনাকে তিনি স্বৈরাচারী বলেছেন। মাহফুজ আনামও নিরন্তর একই ধরনের ইঙ্গিত করেছেন। অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বর্তমান সরকারের দ্বন্দ্বের কথা সারা বিশ্ব জানে। তিনি প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে মানা করেছেন। ইদানীং শফিউল আলম মজুমদার ও সুজনের কথা শোনা যাচ্ছে। তার ও তার প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য একই রকম। এরা কি এ কথা স্বীকার করে প্রকাশ্যে বলতে পারবেন জিয়া যে ক্ষতি করে গেছেন তার খেসারত আমরা দিচ্ছি। বাংলাদেশে পাকিস্তানী শাসন ফের ফিরিয়ে এনেছিলেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালকে মনে করতেন তিনি ১৯৪৭-এর ধারাবাহিকতা এবং ১৯৭১ বিচ্যুতি! আমি নিশ্চিত এ বিষয়ে তারা আমার সঙ্গে একমত হবেন না। হতে পারেন না। পার্থক্যটা সেখানেই।
অনেকের মতে, এ নির্বাচনে টাকা খরচ করে সেনাবাহিনী নামানো উচিত ছিল না বা প্রয়োজন ছিল না। সাতক্ষীরা এবং অন্য জায়গায় যখন মানুষ খুন হচ্ছে, অরাজকতা চরমে তখন সবাই ভেবেছিলেন নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীকে সেখানে যাওয়ার নির্দেশ দেবেন এবং তারা এই খুনী ও অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের শায়েস্তা করতে পারবে। হাইওয়ে খোলা থাকবে। দুঃখের কথা সেনাবাহিনী তাতে ব্যর্থ হয়েছে। ২০০১ সালে দেখেছি, গ্রামেগঞ্জে গিয়ে সেনারা বিনা কারণে আমাদের পিটিয়েছে। বিএনপিকে জেতানোর তাবৎ কৌশল গ্রহণ করেছে। আমরা আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলকে সেভাবে জেতানোর বিপক্ষে কেননা তা অনুচিত। কিন্তু, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তো তাদের নামানো হয়েছিল। এ সরকার থেকে তারা এত পেয়েছে যে, সরকারের সামরিকরণ হয়েছে বললে অত্যুক্তি হবে না। হাশেম খান উত্তরা থেকে আমাকে বলছিলেন, তিনি ভোট দিতে গিয়েছেন। সেখানে লাইনে দাঁড়ানো কয়েক জনের সঙ্গে সহিংসতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। একজন বললেন, গোলযোগপূর্ণ এক এলাকার সদর রাস্তায় টহলদার সেনাদের এক অফিসারকে জিজ্ঞেস করছিলেন, তারা সহিংসতা প্রতিরোধ করছেন না কেন? অফিসারটি মৃদু হেসেছেন। সেনাবাহিনী, অনেকের মতে, যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এত মানুষের ক্ষতি হতো না। সংখ্যালঘু ও ভোটারদের বাড়িঘর পুড়ত না। যাক, ভেতরের ব্যাপার জানি না। সাধারণের মনোভাব জানালাম মাত্র। তাদের ধারণা যা মিথ্যা নয়, শান্তি রক্ষার চেয়ে তারা নগদে বেশি উৎসাহী এবং গার্মেন্টসের মতো এখন সেনারা রফতানিযোগ্য বিশেষ গণ্য। সেভাবে বিবেচনা করলে দুঃখ থাকবে না। হতাশও হতে হবে না।
(চলবে)
প্রকাশ:শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০১৪, ২৭ পৌষ ১৪২০
Related:
বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০১৪, ২৬ পৌষ ১৪২০
নির্বাচন, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সুশীলদের বিশাল ক্রোধ এবং তারপর - (প্রথম কিস্তি)
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০১৪, ২৬ পৌষ ১৪২০
__._,_.___