Banner Advertiser

Saturday, January 11, 2014

[mukto-mona] নির্বাচন, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সুশীলদের বিশাল ক্রোধ এবং তারপর - (প্রথম কিস্তি)




বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০১৪, ২৬ পৌষ ১৪২০
নির্বাচন, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সুশীলদের বিশাল ক্রোধ এবং তারপর (প্রথম  কিস্তি)
মুনতাসীর মামুন
রাগে অনেকের মাথার চুল খাড়া হয়ে গেছে। অনেকে বাকহারা। নির্বাচনের পরদিন এমনই অবস্থা ছিল নাকি নির্বাচনবিরোধী সুশীল সমাজের অনেকের। সেই ক্রোধ আরও বৃদ্ধি পায় আওয়ামী লীগ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সংবাদ-সম্মেলনে। সুশীল বাটপাড়দের অনেকের আশা ছিল, শেখ হাসিনা বলবেন, এই সংসদ হবে স্বল্পকালীন, অচিরেই নির্বাচন হবে। খানিকটা বিষণœ থাকবেন তিনি। কিন্তু দেখা গেল তিনি বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছেন, ভবিষ্যত সংসদ বা নির্বাচন নিয়ে তেমন কিছু বললেন না। যা বললেন, তাতে বোঝা গেল, শীঘ্রই নির্বাচনের তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। এতে ক্রোধ আরও দ্বিগুণ হয়েছে, সুশীল বিশেষ করে টকার ও কলামিস্ট গ্রুপের। কেশহীন সুশীলদের গায়ের লোম ক্রোধে দাঁড়িয়ে গেছে, বয়সের চোটে অনেকের চুলও নাকি পড়ে গেছে, সুশীল পদের কলাম লেখকদের কয়েকবার একই লেখা লিখতে হয়েছে। ক্রোধের বশে ভুল অক্ষরে চাপ দিচ্ছিলেন। আশঙ্কা করা যেতে পারে, এই ক্রোধ খুব সহজে নামবে না। শেখ হাসিনাকে যদি হত্যা করা যায় [যে চেষ্টা কয়েকবার সুশীলবাবুদের সমর্থক বিএনপি-জামায়াত করেছিল], যদি আল্লাহ তাঁকে তুলে নিয়ে যান বা দেশে সর্বশক্তি নিয়োগ করে সন্ত্রাস করে যদি সব বন্ধ করে দেয়া যায় এবং শেখ হাসিনা, সরকার ত্যাগ করে বিদেশ চলে যান, তাহলেই এই বিশাল ক্রোধের অবসান হবে, চুল আবার ঠিকভাবে আঁচড়ানো যাবে। 
এই ক্রোধের কারণটি কী? কারণ, একটিই। মিডিয়াসৃষ্ট এই সুশীলরা এতদিন যে সব পরামর্শ দিয়ে এসেছেন, সে অনুযায়ী সরকারকে অনেক কাজ করতে হয়েছে বিশেষ করে আমেরিকার হুমকিতে। আমেরিকা আবার এই সুশীল বাটপাড়দের পৃষ্ঠপোষক। তারা বিশেষ সম্মান পান সামরিক আমলে, পেয়েছেনও এবং বিএনপি-জামায়াত আমলে। নাম বলতে পারি, লিস্ট বাড়াব না। আমরা যাঁরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে বিশ্বাসী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলি, আমাদের ওপরও তাঁদের ক্রোধ বিষম। টিভি টকশো ও কাগজে তারা বক্রোক্তি করেছেন নাম ধরে। আমাকে একজন বললেন, গণস্বাস্থ্যের ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী টিভি টকশোতেÑ শাহরিয়ার কবির ও আমার সম্পর্কে প্রশ্ন রেখেছেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেইনি কেন? অর্থাৎ, আমরা কেন তাহলে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলি? একই প্রশ্ন করেছেন কাদের সিদ্দিকী ব্রীজোত্তম। তিনি এ তালিকায় নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, এমনকি যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনালের জিয়াদ আল মালুমের কথাও বলেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা কী হবে? যদি হয় যিনি অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করেছেন, তিনিই মুক্তিযোদ্ধা। তা মানতে আমরা রাজি। এ সংজ্ঞা মানলে, বাংলাদেশের সাড়ে ৬ কোটি লোকই মুক্তিযোদ্ধা নয়। এমনকি ডা. জাফরউল্লাহও নন। ভয় পেয়ে সীমান্ত অতিক্রম মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পড়ে না। ডা. জাফরউল্লাহকে দীর্ঘদিন চিনি, ব্যক্তিগত আক্রমণ কখনও করিনি। করার কোন বাসনাও নেই। প্রসঙ্গটি তুললাম এ কারণে যে, সুশীল বাটপাড়রা কী রকম ক্রোধান্ধ হয়ে গেছেন তা বোঝাতে। তাঁদের টার্গেট তাঁরাই যাঁরা এতদিন যুদ্ধাপরাধের বিচার চেয়েছে বা বিরোধীদের জামায়াতপ্রীতির নিন্দা ও প্রতিবাদ করছে। তবে, আমরা যা-ই করি সামরিক শাসকদের থেকে কখনও সুযোগ-সুবিধা নেইনি, তাদের বন্দনাও করিনি, দালালিও করিনি। আর মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাঁরা বিএনপি-জামায়াত সমর্থন করেন তাঁরা কেন মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন সে নিয়েও প্রশ্ন এখন উঠছে। সুশীল বাটপাড়রা যদি এসব প্রশ্ন তুলতে চান, অবশ্যই তুলবেন কিন্তু আমাদের থেকে পাঁক বেশি মেখেছেন তাঁরা। সে পাঁক যখন সবাই মিলে পরিষ্কার করতে নামবে তখন সেটি খুব সুখকর হবে না। আর কেউ সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না দেখে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলতে পারবেন না। এই লজিকটা খুবই ছেলেমানুষী হয়ে গেল। আর মুক্তিযুদ্ধে যদি আমরা না-ই গিয়ে থাকি তাতে তাঁর বা তাঁদের সমস্যাটা কী? 
যাক, সে প্রসঙ্গ। এবার সুশীলদের হুমকি-ধমকিতে সরকার কর্ণপাত করেনি। পাকিস্তান, আমেরিকা, ইইউকে দিয়েও অনেক হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছে শেখ হাসিনা কোন কিছুতেই কর্ণপাত করেননি। তারা ভেবেছিল, আমেরিকা বাংলাদেশকে বাধ্য করতে পারবে তাদের কথা শুনতে। সেটি হয়নি। ৩-৪ তারিখেও তাই তারা নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছিল, সরকার কর্ণপাত করেনি। এটি তাদের আত্মম্ভরিতায় যা দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে। কয়েক শ' মানুষ হত্যা করেছে। ১০০০-এর বেশি যানবাহনে আগুন দিয়েছে। কিন্তু তারপরও নির্বাচন হয়েছে। এটি তাদের স্তম্ভিত করেছে। তারা ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথা বেশি বলেন তুলনা হিসেবে। কিন্তু একটি বিষয় বোঝা দরকার। বেগম জিয়া বাধ্য হয়েছিল নতুন নির্বাচন দিতে। কারণ, মানুষ ছিল রাস্তায়, প্রশাসনও নেমে এসেছিল রাস্তায়, তার হুকুম তামিল করার মতো কেউ ছিল না। তার পক্ষের মানুষজনও রাস্তায় নামেনি। এবারও জামায়াত-বিএনপির পক্ষে ব্যাপকভাবে রাস্তায় মানুষ নামেনি, প্রশাসন সরকারের [নির্বাচন কমিশন] নির্দেশ মেনেছে, ১৪ দলের পক্ষের মানুষজনও প্রতিরোধে প্রস্তুত ছিল, অন্তত শহরাঞ্চলে। সে কারণে, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনপরবর্তী অবস্থা ও ২০১৪ সালের নির্বাচনপরবর্তী অবস্থা এক নয়। তবে, বিরোধীদের, সুশীল বাটপাড়দের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এবং যদি মানুষজন রাস্তায় নামে, প্রশাসনও, তাহলে শেখ হাসিনাও বাধ্য হবেন ১১ দিন পর নির্বাচন ঘোষণা করতে যেটি করেছিলেন খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালে। সে ঘটনা ঘটবে কিনা, তার জন্য অন্তত একমাস অপেক্ষা করতে হবে।

নির্বাচনের বৈশিষ্ট্য 

২০১৪ সালের নির্বাচনের প্রধান বৈশিষ্ট্য প্রবল বিরোধিতা। সন্ত্রাসের পরও সরকার দৃঢ় থেকে তার লক্ষ্যে পৌঁছেছে। সরকার সব সময় বলেছে, তারা সংবিধান থেকে একচুলও নড়বে না। বিরোধীরা বলেছে, নড়তে হবে, সংবিধানের চেয়ে মানুষ ওপরে এবং নির্বাচন করতে হলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করতে হবে। মানুষ সার্বভৌম এ যুক্তি সঠিক। কিন্তু ভোটের হার দেখলে ৪২ ভাগের ওপর মানুষ তো এ তত্ত্বাবধায়ক বিষয়ে একমত নয়। এর অর্থ, ভোটের হার অনুযায়ী ৩৩ ভাগের দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সুতরাং, অন্তত এক্ষেত্রে সুশীল বাটপাড়দের এ যুক্তি সঠিক নয়। 
এর আগে অনেকবার লিখেছি, আবারও লিখতে হচ্ছে, সুপ্রীমকোর্টের রায় যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পক্ষে না যেত, তাহলে হয়ত খালেদা জিয়ার দাবি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যেত। কিন্তু সুপ্রীমকোর্টের রায়ে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে দুটি টার্ম ঐ ধরনের সরকার করা যেতে পারে যদি সংসদের সায় থাকে। দুই টার্ম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংসদের সায় ছিল না। সুতরাং, আইনত সে সরকার আনা সম্ভব ছিল না। যদি নির্বাচনে আবার কেউ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আসে তাহলে হয়ত সংসদের সায় থাকতে পারে। তখন তা করা যাবে কিনা, তাও আইনজ্ঞদের বিষয়। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমেই তো তা পেতে হবে এবং নির্বাচনে আসতে হবে।
জামায়াত-বিএনপির এত বাঘা বাঘা আইনজীবী এ বিষয়টুকু জানেন না এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। কিন্তু তবুও তারা এবং তাদের সহযোগী সুশীলরা কেন বার বার ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন এবং দিচ্ছেন? কারণ একটিই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। এ বিচারের রায়ে জামায়াতের নেতৃত্ব যাঁরা দিচ্ছিলেন তাঁরা থাকবেন না। ইতিহাসের কারণে তাদের সঙ্গে বিএনপির নেতাদের এক ধরনের সখ্য ও বোঝাপড়া আছে। পরের স্তরের নেতৃত্বের সঙ্গে সেটি ক্ষীণ। কিন্তু জামায়াতের ৫ ভাগ ভোটের জন্য বিএনপি কেন নিজেদের সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত করে তুলছে? কারণ, জামায়াতের অস্ত্র, অর্থ ও পেশীশক্তি। আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক। আইএসআইয়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ। গত তিন মাস রাস্তায় সন্ত্রাসে জামায়াত কিন্তু বড় ভূমিকা রেখেছে। সুতরাং যুদ্ধাপরাধ ঠেকাতে নির্বাচনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে হবে এবং করা হয়েছেও। বিএনপি-জামায়াতের কৌশল ছিল। নির্বাচন ইস্যুতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে। নির্বাচন ঠেকানো যাবে। তারপর নির্বাচন কমিশন বদল ও লতিফুর টাইপের কাউকে প্রধান উপদেষ্টা বানিয়ে ২০০১ সালের মতো নির্বাচনে জেতা যাবে। এবং তখন মুক্তিযুদ্ধমনাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া যাবে। সুশীলদেরও তাতে সায় ছিল। কারণ, ঐ ধরনের শাসনে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় পদ পাওয়া সম্ভব এবং নিজেদের প্রভাবশালী করা সম্ভব। তাঁরা কখনও ভাবেননি। এ কৌশল বৃথা যাবে বিশেষ করে আমেরিকার সমর্থন সত্ত্বেও।
২০০৪ সালের নির্বাচনের প্রধান বৈশিষ্ট্য সমাজের সম্পূর্ণ মেরুকরণ যা পরে আলোচিত হয়েছে। আরেকটি বৈশিষ্ট্য প্রবল হিংস্রতা, নিষ্ঠুরতা ও সন্ত্রাস। নির্বাচনে সাধারণত দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। কিন্তু এবার পরিকল্পিতভাবে পুলিশ-আনসারদের হত্যা করা হয়েছে, নির্বাচনী অফিসার হত্যা করা হয়েছে, সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, শিশুদেরও পুড়িয়ে মারা হয়েছেÑ এক কথায় কী হইনি! এ রকম বর্বরতা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। 
সুশীলরা, টকাররা সহিংসতা যে গণতন্ত্রের শত্রু তা মাঝে মধ্যে উল্লেখ করেছেন, সহিংসতা শরীর-স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়, তাও কখনও কখনও উল্লেখ করেছেন কিন্তু কখনও প্রকাশ্যে জোরগলায় বলেননি। এই সহিংসতা বিএনপি-জামায়াত করছে। এটি কাম্য নয়। এটি নিন্দনীয় এবং যে কোন আলোচনার পূর্বশর্ত সহিংসতা দমন। এ কথা এরা কখনও বলেননি। এ জন্যই তাঁরা সুশীল বাটপাড়। কেন তাঁরা সামান্য এই প্রতিবাদটুকুও করলেন না বরং বলতে লাগলেনÑ শেখ হাসিনা একতরফা নির্বাচন করতে চান। গণতন্ত্র হুমকির মুখে ইত্যাদি। তাদের ভ-ামীটা দেখুন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন প্রচেষ্টা হচ্ছে একতরফা, একদলীয় নির্বাচন। প্রতিদিন মানুষ হত্যা, গাড়ি পোড়ানো যেন গণতন্ত্রের অংশ বা জামায়াত-বিএনপির নেত্রী খালেদার ভাষায় 'শান্তিপূর্ণ আন্দোলন।'

নির্বাচন কেমন হলো

দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন কেমন হলোÑ এ প্রশ্নের সরল উত্তর পাওয়া যাবে না। নির্বাচনের আগেই পরিবার, পাড়া, সমাজ, দেশ দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। যদিও বলা হচ্ছিল নির্বাচনই দ্বন্দ্বের মূল কারণ, কিন্তু সেটা যে নয়, তা অচিরেই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। নিছক নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্ব হলে সে দ্বন্দ্ব অনেক আগে মিটে যেত। দ্বন্দ্ব ১৯৭৫ সাল থেকেই ছিল। পোশাকের আড়ালে যা লুকিয়ে রাখার চেষ্টা হচ্ছিল। যুদ্ধাপরাধ বিচার ও দ- কার্যকর করার পর দ্বন্দ্বটার আর কোন রাখ-ঢাক নেই। এই দ্বন্দ্ব আদর্শগত। দুই আদর্শের লক্ষ্য ভিন্ন এবং সমান্তরাল, রেললাইনের মতো। জংশনে লাইন মিলতে পারে তখনই যখন লক্ষ্য হবে এক পথ তখন ভিন্ন হলেও এ ধরনের দ্বন্দ্ব থাকবে না। এক পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। পুরনো মুসলিম লীগ, পিডিপি প্রভৃতি যাঁরা করতেন তাদের উত্তরসূরিরা, ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত যাঁরা সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন, আমলা, এই সময় বড় হয়ে ওঠা দুটিতে বড় প্রজন্মের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এনজিও-মিডিয়াদের একটি বড় অংশ, এতিম বামপন্থীরা, বিভিন্ন বর্ণের রাজনীতিবিদরা বিএনপির সমর্থক। ১৯৭৫-৯৫ এই সময়ের মধ্যে বিএনপির অর্থের ভিত্তিটা শক্তিশালী হয়েছে। এরা প্রচ- আওয়ামীবিরোধী। এদের একটি বড় অংশ কথাবার্তায় খুব মার্জিত, বাংলাদেশের জন্য তারা উৎসর্গকৃতÑ এ রকম একটা পোশাক পরেছিল, এখনও পরে এবং সাধারণকে বিভ্রান্ত করে না, স্বীকার করবেন না। তাঁরা বলবেন, জিয়া ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা 'স্বাধীনতার ঘোষক। কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা আলবদর আবদুল আলীম বা আবদুল মান্নানকে ১৯৭১ সালের পর পরই মন্ত্রী করেন কিভাবে বা শাহ আজিজের মতো সরকারকে প্রধানমন্ত্রী? রাজাকার সবুর খান বা যাদু মিয়াকে তিনি কবর দেন জাতীয় সংসদে। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে ২৪ ঘণ্টা পর পারলৌকিক রীতি প্রায় পালন করতে দিয়ে টুঙ্গিপাড়ার মতো অজপাড়াগাঁয়ে পাঠিয়ে দেন। ধরা যাক। এসব কবর এখান থেকে সরাতে হবে। এ প্রস্তাব করলাম। আমি জানি, ডা. জাফরউল্লা ও ব্রীজোত্তম সিদ্দিকী উল্লিখিত সবাই-শাহরিয়ার, বাচ্চু, ড. আলমগীর, জিয়াদ মালুম এমনকি তরুণরাও এ প্রস্তাব সমর্থন করবে। কিন্তু উল্লিখিত সুশীলরা বা ব্রীজোত্তম বা ডাক্তার উল্লাহ কি তা সমর্থন করে বিবৃতি দেবেন? দেবেন না। পার্থক্যটা এখানেই হয়ে যায়।
নির্বাচনে যাতে ভোট না পড়ে এ জন্য জামায়াত-বিএনপি হত্যা থেকে নির্যাতন যা করার করেছে। সুশীলরা বিদেশীদের দরজায় অনবরত করা নেড়েছেন। মিডিয়া তার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। যদি ভোটার সংখ্যা ১০ ভাগ হতো তা হলে তারা প্রমাণ করতে পারত যে সত্যিই এটি 'প্রহসনের' নির্বাচন। 
৫৯ জেলার ১৪৭টি আসনে ১২টি রাজনৈতিক দলের ৩৯০ প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। ভোটার ছিল ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৩৮ জন। সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে কোন ভোট নেই প্রায় মিডিয়াই এ কথা প্রচার করতে থাকে। কিন্তু কেন ভোটাররা আসছে না তার কারণ তারা উল্লেখ করছিল না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা বাড়তে থাকে। একটি কেন্দ্রে জামায়াত-বিএনপি আক্রমণ করলে যৌথবাহিনীর গুলিতে দু'জন গুলিবিদ্ধ হয়। এ ঘটনা শোনার পর ভোটকেন্দ্র ভরে ওঠে। আমি খুব আশাবাদী ছিলাম না। ৩০ ভাগ ভোট পড়লে তাতেই সন্তুষ্ট ছিলাম। শাহরিয়ার অবশ্য বলেছিল, ব্রিটেনে ২১ ভাগ ভোট পেয়ে ক্ষমতায় গেলে এখানে বিদেশীরা কেন বেশি আশা করে? মিডিয়া প্রচার আমাদের আরও হতাশ করে তুলছিল। এমনকি মানস ঘোষ, দৈনিক স্টেটসম্যানের সম্পাদক, আমাদের সুহৃদ, কয়েক ঘণ্টা পর পর ফোন করে জানতে চাচ্ছিলেন কী অবস্থা। রাতে শোনা গেল ৩৫ ভাগের ওপর ভোট পড়েছে। এখন জানা যাচ্ছে প্রায় ৪১ ভাগ। স্থগিত কেন্দ্রগুলোতে ভোট হলে সেই সংখ্যা ৪৫ ভাগ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ১৯৯১ সালে এ হার ছিল ৫৫.৪৫ ভাগ। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে ২৬ ভাগ। সে সময়ও আওয়ামী লীগ বয়কট করেছিল। পার্থক্যটা হচ্ছে আওয়ামী বয়কটের পর ২৬ ভাগ।
আর এখন বিএনপি-জামায়াত বয়কটের পরও ৪২ ভাগ যা হতে পারে প্রায় ৪৫ ভাগ। এর কারণ হচ্ছে নির্বাচনটিকে ভোটাররা নিছক ক্ষমতা বদলের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করেনি। আদর্শের লড়াই হিসেবে, গাফ্ফার চৌধুরীর ভাষায় 'একাত্তরের নতুন রণাঙ্গন' হিসেবে বিবেচনা করেছে। যে কারণ, মার খেয়ে, সরে গিয়েও এবং যে হিন্দুদের ভোট দেয়ার কথা ছিল না, তারাও ভোট দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছে,্ এ দেশটা জামায়াত-বিএনপি, কিছু সুশীল ও মিডিয়াকে শুধু লিজ দেয়া হয়নি। গাফ্ফার চৌধুরী বোধহয় আবেগ সামলাতে না পেরে, চারযুগ পর একটি কবিতাই লিখে ফেলেছিলেন, যার শেষ স্তবকটি ছিল এ রকমÑ
"নির্বাচনকে রুখতে তাহারা মানুষ মেরেছে পুড়ে
ধ্বংস এবং রক্তের বান ছড়ায়েছে দেশজুড়ে।
নারী-ধর্ষণ শিশু হত্যার ঘটায়েছে মহাপাপ
এরা নররূপী পশু, এরা বাংলার অভিশাপ॥
এই অভিশাপ ঘোচাতেই আজ সুকঠিন সংগ্রাম
দানবের সাথে যুদ্ধের তরে প্রস্তুতি অবিরাম॥
সব ভয়ভীতি কাটিয়ে জাগুক বাংলার জনগণ
এতো নির্বাচন নয়, একাত্তরের নতুন রণাঙ্গন॥"
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০১৪, ২৬ পৌষ ১৪২০





__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___