Readers, please see the in-consistency of the same cross-examination on the Sayeede's case. Notice also the contrast in the head lines made by two different dailies. One, totally failed 'defense lawyers' in their argument and the other highlighted the personal integrity of the witness which came in the cross-examinations. They headlined 'integrety' or 'credibilty' of the witness. Please make a note and judge who is better in reporting. What a party line the two dailies had taken. In terms of party line who reported more aggressively and to which party? First report was published in the Sangram and the second report was pulished in the Janakantha. Please be honest in your analysis. It will be appreciated. Shahadat Suhrawardy সুলতান আহমেদের জেরা সমাপ্ত || মঙ্গলবার ৫ নম্বর আসামীর জবানবন্দি
৪ নম্বর আসামী কলাচোর ট্রলার চোর ও ভূমিদস্যু
শহীদুল ইসলাম : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মোফাসসিরে কুরআন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে আসা ৪ নম্বর সাক্ষী সুলতান আহমেদ হাওলাদার একজন কলাচোর, ট্রলার চোর এবং চর এলাকায় দশ বিঘা জমি দখলকারী একজন ভূমিদস্যু। এছাড়াও দেওয়ানী মামলা ঝুলছে তার বিরুদ্ধে। এসব মামলা থেকে খালাস পাওয়া, জবর দখলকৃত জমি দখলে রাখা এবং মুক্তিযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও তালিকাভুক্ত হয়ে মাসিক ভাতা পাওয়ার সরকারি আশ্বাসের প্রেক্ষিতে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে এসেছেন। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রতিপক্ষ বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ কে আওয়াল জনসম্মুখে দেশবরেণ্য এই আলেমে দ্বীন ও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত জনসম্মুখে হেয় করার জন্য প্রত্যক্ষদর্শী না হয়েও প্রত্যক্ষদর্শী সেজে এই সাক্ষ্য দিতে এসেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ৪ নম্বর সাক্ষী সুলতান আহমেদ হাওলাদারকে জেরার মাধ্যমে এসব তথ্য বেড়িয়ে এসেছে। গত বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনি জবানবন্দি দেয়ার পর গতকাল তাকে জেরা করা হয়। সকাল ১০টা ৩৫ মিনিট থেকে শুরু করে দুপুরে ১ ঘণ্টা বিরতির সময় বাদে বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত প্রায় সোয়া ৪ ঘণ্টা তাকে জেরা করা হয়। তাকে জেরা করেন রাজশাহী বার থেকে আগত এডভোকেট মিজানুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বার থেকে আগত কফিল উদ্দিন চৌধুরী ও মনজুর আহমেদ আনসারী। আগামী মঙ্গলবার ৫ নম্বর সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি প্রদান করবেন। এডভোকেট তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানভীর আল আমিন, ফরিদ উদ্দিন খান ও শাজাহান কবির জেরায় সহযোগিতা করেন। গুরুতর অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গতকাল ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।
৪ নম্বর সাক্ষী সুলতান আহমেদ হাওলাদারকে গতকাল জেরা করেন এডভোকেট মিজানুল ইসলাম, কফিল উদ্দিন চৌধুরী ও মনজুর আহমেদ আনসারী। জেরার বিবরণ নিম্নরূপ :
প্রশ্ন : আপনি কোন তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা নন।
উত্তর : না। আমি তো মুক্তিযোদ্ধাই নই।
প্রশ্ন : আপনি নতুনভাবে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার আবেদন করেছেন। আওয়াল সাহেব সুপারিশ করে ডিও লেটার দিয়েছেন।
উত্তর : সত্য নয়। আমি সহায়ক মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম।
প্রশ্ন : পাড়েরহাট এলাকার কাদের গাজী পিতা জনাব আলী গাজীকে চেনেন আপনি?
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : তিনি আপনার বিরুদ্ধে তার ক্ষেতের কলা চুরির অভিযোগে মামলা করেছেন এবং জেল হয়েছে যা বহাল আছে?
উত্তর : ঠিক নয়। উনার সাথে আমার জমাজমি নিয়ে মামলা আছে। আমি জামিনে আছি।
প্রশ্ন : কলা চুরির মামলাটি এখন কোন কোর্টে বিচারাধীন?
উত্তর : হাইকোর্টে।
প্রশ্ন : জজকোর্টের রায় কি হয়?
উত্তর : নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখা হয়েছে। আমার অনুপস্থিতিতে। আমি হাইকোর্টে জামিনে আছি। আপিল বিচারাধীন আছে।
প্রশ্ন : তিনি কি আপনার আত্মীয়?
উত্তর : কাদের গাজীর সাথে আমার ফুপাতো বোনের বিয়ে হয়।
প্রশ্ন : বরিশাল আদালতে আপনার বিরুদ্ধে ট্রলার চুরির দু'টি মামলা বিচারাধীন আছে।
উত্তর : আছে।
প্রশ্ন : ইব্রাহিম কুট্টির পিতার নাম কি?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : তার বাড়ি কোথায়?
উত্তর : সম্ভবত বারইখালি শ্বশুরবাড়ী। মূল বাড়ি কোথায় খেয়াল নেই।
প্রশ্ন : বাদুরা গ্রামের সহিদ উদ্দিনকে চেনেন?
উত্তর : আমার জানা নেই।
প্রশ্ন : চিতলিয়া এবং বাদুরা গ্রাম পাশাপাশি?
উত্তর : জি।
প্রশ্ন : ইব্রাহিম ওরফে কুট্টির স্ত্রীর নাম কি?
উত্তর : বলতে পারবো না।
প্রশ্ন : '৭১ সালে কোন ছেলেমেয়ে ছিল কিনা তারা এখন কি করে? তাদের বয়স কত?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : তার শ্বশুরবাড়ি কোথায়?
উত্তর : সম্ভবত বারইখালী।
প্রশ্ন : এই গ্রামে আজহার আলী তার শ্বশুর?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : শ্যালকের নাম সাহেব আলী ওরফে সিরাজ উদ্দিন।
উত্তর : বলতে পারবো না।
প্রশ্ন : দানেশ আলী মোল্লা চেয়ারম্যান পাড়েরহাট ইউনিয়ন, পিতা নইম উদ্দিন মোল্লা। চেনেন?
উত্তর : তিনি আমার শিক্ষক ছিলেন। তাকে চিনতাম। তবে পিতার নাম বলতে পারবো না।
প্রশ্ন : আতাহার আলী হাওলাদার, পিতামৃত আইনউদ্দিন হাওলাদার, গ্রাম বারইখালী- চেনেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আশ্রাফ আলী, পিতা আসমত আলী, গ্রাম টেংরাখালীকে চেনেন?
উত্তর : স্মরণ নেই।
প্রশ্ন- আব্দুল মান্নান হাওলাদার, পিতা- হাসেম হাওলাদার, সাং- বাদুয়া।
উত্তর- চিনি।
প্রশ্ন- আইয়ুব আলী, গ্রাম বারইখালী, চেনেন?
উত্তর- চিনি না।
প্রশ্ন- বারইখালী গ্রামের কালাম চৌকিদারকে চেনেন?
উত্তর- চিনি না।
প্রশ্ন- আনোয়ার হোসেনের ছেলে রুহুল আমিনকে চেনেন?
উত্তর- এই নামে একজন রাজাকার ছিল। তাকে চিনতাম।
প্রশ্ন- আব্দুল হাকিম মুন্সী, পিতা- মজিনল মুন্সী, গ্রাম- বারইখালীকে চেনেন?
উত্তর- চিনি না।
প্রশ্ন- মমিন উদ্দিন, পিতা- আব্দুল গনি, গ্রাম- গাজীপুরকে চেনেন?
উত্তর- মবিন নামে একজনকে চিনি। তিনিও রাজাকার ছিলেন।
প্রশ্ন- সেকান্দার আলী সিকদার, পিতা- মনসুর আলী সিকদার, গ্রাম- হোগলাবুনিয়াকে চেনেন?
উত্তর- তাকে চিনি। তিনি আমার ফুপাতো ভগ্নিপতি। তিনি পিস কমিটির সভাপতি ছিলেন।
প্রশ্ন- ঐ পিস কমিটির সেক্রেটারি ছিলেন দানেস আলী মোল্লা?
উত্তর- জি।
প্রশ্ন- শামছুর রহমান পিরোজপুর থানার তৎকালীন এএসআই তাকে চিনতেন?
উত্তর- না। উনার সাথে আমার পরিচয় ছিল না। এই নামে কোনো এএসআই ছিল কিনা জানি না।
প্রশ্ন- মোসলেম মাওলানা, পিতা- মোদাসসের আলী, সাং- বাদুয়াকে চেনেন?
উত্তর- চিনি। তিনি পিস কমিটির সাথে জড়িত ছিলেন।
প্রশ্ন- তিনি এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত?
উত্তর- সত্য নয়।
প্রশ্ন- মোসলেম মাওলানা এখন আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি। আপনি জেনেও গোপন করছেন?
উত্তর- সত্য নয়।
প্রশ্ন- আমি এতক্ষণ যে নামগুলো বললাম তাদের মধ্যে ৩ জনকে পিস কমিটির সাথে জড়িত ছিলেন। বাকিরা সবাই রাজাকার ছিলেন।
উত্তর- বাকি ৮ জন কি ছিলেন তা আমার জানা নেই। তারা রাজাকার ছিলেন কিনা আমি জানি না।
প্রশ্ন- বারইখালী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, দেলোয়ার হোসেন, কায়েন আলী হাওলাদার, আব্দুস সাত্তার হাওলাদার, সেতারা বেগম, রানী, আজহার আলী হাওলাদার, মোহাম্মদ আলী, মকবুল সিকদার- এদেরকে চেনেন?
উত্তর- দেখলে কাউকে কাউকে চিনি। নাম জানি না।
প্রশ্ন- ৭ই মার্চের ভাষণের পর পিরোজপুর এলাকায় পাক হানাদারবাহিনীর আগমনের আগে পুরো পিরোজপুর এলাকা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির নিয়ন্ত্রণে ছিল?
উত্তর- সত্য নয়।
প্রশ্ন- জিয়ানগর উপজেলা তখন পিরোজপুর সদর থানার অধীনে ছিল?
উত্তর- জি।
প্রশ্ন- শান্তি কমিটি পূর্ব পাকিস্তানে কখন কোথায় গঠিত হয়?
উত্তর- আমার জানা নেই।
প্রশ্ন- এর সভাপতি ও সেক্রেটারি কে ছিলেন?
উত্তর- জানা নেই।
প্রশ্ন- রাজাকারবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে কবে কোথায় গঠিত হয়?
উত্তর- স্মরণ নেই।
প্রশ্ন- পূর্ব পাকিস্তান রাজাকারবাহিনীর প্রধান কে ছিলেন?
উত্তর- শুনেছি গোলাম আযম ছিলেন।
প্রশ্ন- পিস কমিটি পিরোজপুর মহকুমার ক'তারিখে গঠন হয়?
উত্তর- স্মরণ নেই।
প্রশ্ন- এই পিস কমিটি পিরোজপুর মহকুমার সভাপতি ও সেক্রেটারি কে ছিলেন?
উত্তর- সভাপতি জানি না। আফজাল সাহেব সেক্রেটারি ছিলেন শুনেছি।
প্রশ্ন- পিরোজপুর মহকুমার রাজাকার কমান্ডার চরখালী গ্রামের মানিক খন্দকার রাজাকার ছিলেন।
উত্তর- শুনেছি।
প্রশ্ন- মানিক খন্দকার চাচাতো ভাই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাজু খন্দকার কর্তৃক নিহত হয়?
উত্তর- জানা নেই।
প্রশ্ন- রাজাকার কমান্ডার আমীর আলীর নাম শুনেছেন?
উত্তর- না। শুনি নাই।
প্রশ্ন- পিরোজপুর মহকুমার থানাগুলোর পিস কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারি এবং রাজাকার কমান্ডারদের নাম আপনি বলতে পারবেন?
উত্তর- আমি শুধু পারেরহাটটা বলতে পারব।
প্রশ্ন- আপনার বাড়ি শংকর পাশা ইউনিয়নে?
উত্তর- জি।
প্রশ্ন- শংকর পাশা ইউনিয়নের লোকজনই পারেরহাট বাজারের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতো।
উত্তর- সত্য নয়।
প্রশ্ন- ঐ বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ী শংকর পাশা ইউনিয়নের?
উত্তর- আংশিক সত্যতা আছে।
প্রশ্ন- শংকর পাশা ইউনিয়নের কত নং ওয়ার্ডে আপনার বাড়ি ছিল?
উত্তর- ৩ নং ওয়ার্ড। তখন কি ওয়ার্ড ছিল কি না জানি না।
প্রশ্ন- ঐ সময় মেম্বার নির্বাচন একত্রে হতো, না ওয়ার্ড ভিত্তিক হতো?
উত্তর- ওয়ার্ড ভিত্তিক হতো। '৭১ সাল বা তার আগে হতো কি না জানা নেই।
প্রশ্ন- শংকর পাশা ইউয়িনের পিস কমিটির চেয়ারম্যান কে ছিল?
উত্তর- শংকর পাশা ইউনিয়নে কোন পিস কমিটি ছিল না।
প্রশ্ন- রাজাকার কমান্ডার কে ছিলেন?
উত্তর- রাজাকার ছিল না।
প্রশ্ন- একরাম খলিফা নামে কে পিস কমিটির সদস্য ছিলেন?
উত্তর- ছিলেন না।
প্রশ্ন- শংকর পাশা গ্রামের একরাম খলিফাকে চেনেন?
উত্তর- চিনি।
প্রশ্ন- ১৯৭১ সালের ১ মে পর্যন্ত আপনি কোথায় ছিলেন?
উত্তর- পিরোজপুরে ছিলাম।
প্রশ্ন- সোহরাওয়ার্দী কলেজ সরকারি কলেজ থেকে কত দূরে?
উত্তর- '৭১ সালে কোন সরকারি কলেজ পিরোজপুরে ছিল না। পরে সোহরাওয়ার্দী কলেজই সরকারি কলেজ হয়েছে।
প্রশ্ন- ঐ সময় মোট কতটা কলেজ ছিল পিরোজপুর সদরে?
উত্তর- একটাই কলেজ ছিল।
প্রশ্ন- আপনি যেখানে ছিলেন সেখান থেকে কলেজের দূরত্ব কত ছিল?
উত্তর- দেড় থেকে ২ শ' গজ।
প্রশ্ন- ঐ সময় কলেজের প্রিন্সিপ্যাল কে ছিলেন?
উত্তর- স্মরণ নেই।
প্রশ্ন- এই মামলায় ২ নং সাক্ষী রুহুল আমিন নবীন তখন আপনার সিনিয়র না জুনিয়রর ছিলেন?
উত্তর- সিনিয়র ছিলেন।
প্রশ্ন- সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদার আপনার জুনিয়ার ছিলেন কি না?
উত্তর- সত্য নয়।
প্রশ্ন- মাহবুবুল আলম হাওলাদার পিরোজপুর আদালতে একটি মামলা করে। আপনি তার সাক্ষী ছিলেন?
উত্তর- সত্য।
প্রশ্ন- মানিক পসারী আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। তাতে আপনি সাক্ষী ছিলেন?
উত্তর- সাক্ষী ছিলাম কিনা জানি না। তবে মানিক পসারী আমাকে ডেকে আনেন।
প্রশ্ন- ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ থেকে ১ মে পর্যন্ত আপনি পিরোজপুর এলাকায় কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন না?
উত্তর- জি।
প্রশ্ন- আপনার বর্তমান পেশা কি?
উত্তর- ছোট-খাটো ব্যবসা এবং কৃষি কাজ।
প্রশ্ন- এই মামলার সাক্ষী দেওয়ার আগে অন্য কোথাও আল্লামা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগ আনেননি বা সাক্ষী দেননি?
উত্তর- দিয়েছি।
প্রশ্ন- আপনি ১৯৯২ সালে গণ আদালতে সাক্ষী দিয়েছিলেন?
উত্তর- না।
প্রশ্ন- ১৯৯৪ সালে গণতদন্ত কমিশনের কাছেও আপনি কোনো অভিযোগ দেননি সাঈদীর বিরুদ্ধে?
উত্তর- না।
প্রশ্ন- ১৯৯৪ সালের আগে আপনি আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেননি?
উত্তর- না।
প্রশ্ন- আপনি সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে কোথায়ও ইতঃপূর্বে কোনো অভিযোগ করেননি?
উত্তর- না।
প্রশ্ন- সাক্ষী দেওয়ার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের কাছে অপর সাক্ষী রুহুল আমিন নবীনের সাথে গিয়েছিলেন কি না?
উত্তর- নিজেই গিয়েছিলাম।
প্রশ্ন- এই সাক্ষী দেয়ার কথা কে আপনাকে দেয়?
উত্তর- মানিক পসারীর মাধ্যমে জেনেছিলাম।
প্রশ্ন- তিনি কত তারিখে খবর দেন?
উত্তর- সম্ভবত ১৮-০৮-২০১০ তারিখে খবর পাই এবং ঐ দিনই জবানবন্দী দিতে যাই হেলাল উদ্দিনের কাছে।
প্রশ্ন- ক'টার সময় জবানবন্দী রেকর্ড করেন?
উত্তর- ১১/সাড়ে ১১টার সময়।
প্রশ্ন- এই জবানবন্দী কোথায় দেন?
উত্তর- মানিক পসারীর বাড়ির সামনের রাস্তার ওপর।
প্রশ্ন- উনি জবানবন্দী ভিডিও করেন কি?
উত্তর- উনি লিখিত আকারে নেন এবং ল্যাপটপেও নেন।
প্রশ্ন- ঐ সময় মাহবুবুল আলম হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন?
উত্তর- ছিলেন না।
প্রশ্ন- ঐ সময় হোগলাবুনিয়া গ্রামের মোস্তফা হাওলাদার ছিলেন?
উত্তর- অনেকেই ছিলেন। সম্ভবত উনিও ছিলেন।
প্রশ্ন- উপস্থিত আরো ২/১ জনের নাম জানেন?
উত্তর- মুক্তিযোদ্ধা সেলিম খান, মানিক পসারীর ভাইরা এবং সাংবাদিকরা ছিলেন।
প্রশ্ন- কত সময় আপনি ঐ এলাকায় ছিলেন?
উত্তর- জাবানবন্দী শেষ করে ১২/সাড়ে ১২টায় চলে যাই।
প্রশ্ন- ঐ সময় কি আর কারো জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়?
উত্তর- আমার আগে মানিক পসারীর জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। এছাড়াও মোস্তফা, অন্য এক মানিক যার বাড়ি ওমেদপুর তাদের জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। বাকিদের কথা স্মরণ নেই।
প্রশ্ন- মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই ঐ এলাকার অধিকাংশ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ভারতে চলে যায়?
উত্তর- সত্য নয়।
প্রশ্ন- আপনি পিরোজপুর সদর এলাকায় কারো আরবিতে কথা বলা শুনেছেন? পারেরহাটসহ।
উত্তর- আমি কোনটা আরবি কোনটা ঊর্দু তা বুঝি না বিধায় বলতে পারব না যে, পিরোজপুর এলাকায় কেউ কারো সাথে আরবিতে কথা বলে কিনা।
প্রশ্ন- মাটি খুঁড়ে মাখন সাহার দোকানের নীচ থেকে ২২ সের সোনা বের করতে কত সময় লেগেছিল?
উত্তর- আমি শুনেছি। সময় বলতে পারব না।
প্রশ্ন- আপনি পরে গিয়ে গর্তটি দেখেছিলেন? তা বড় গর্ত? সময় কতটুকু লাগতে পারে?
উত্তর- যেহেতু গর্ত খোঁড়ার অভিজ্ঞতা আমার নেই, তাই বলতে পারব না যে, কত সময় লাগতে পারে।
প্রশ্ন- আরো ২৫/৩০টি গর্ত খুঁড়তে কত সময় লাগতে পারে। সেটাও আপনি বলতে পারেন না?
উত্তর- না।
প্রশ্নঃ ২০০৮ সালের নির্বাচনে আপনি আল্লামা সাঈদীর প্রতিপক্ষের হয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন?
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ যে মামলায় আপনার শাস্তি হয় তার তারিখ কত ছিলো?
কলা চুরির মামলায়!
উত্তরঃ তারিখ স্মরণ নেই।
প্রশ্নঃ কলা চুরির মামলার মামলায় কত তারিখে আপিল করেন?
উত্তরঃ আপিল তারা করে। তারিখ স্মরণ নেই।
প্রশ্নঃ হাইকোর্টে কত তারিখে আপিল করেন?
উত্তরঃ স্মরণ নেই।
প্রশ্নঃ এ বছর ঈদ-উল-ফিতর কত তারিখে হয়েছে?
উত্তরঃ দিন তারিখ খেয়াল নেই।
প্রশ্নঃ আপনি কুরবানী দেন?
উত্তরঃ এই বছর দেইনি।
প্রশ্নঃ এবারের কুরবানীর দিন-তারিখ বলতে পারবেন?
উত্তরঃ স্মরণ নেই।
প্রশ্নঃ কয়েক দিন আগে মন্ত্রিসভা পরিবর্তন হয়েছে। দিন তারিখ জানেন?
উত্তরঃ আমি গ্রামে থাকি। মন্ত্রিসভা পরিবর্তন হয়েছে কি না আমি তা বলতে পারবো না।
প্রশ্নঃ পারেরহাট বাজারে '৭১ সালে আপনার বা আপনার পরিবারের কারো কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য ছিলো।
উত্তরঃ ছিলো না।
প্রশ্নঃ কলেজে পড়াকালে পিরোজপুরে কোন জায়গায় থাকতেন?
উত্তরঃ শহরের মাছিমপুর এরাকায় থাকতাম।
প্রশ্নঃ ওটা কি কৃষ্ণনগরের পাশে? ওটা চেনেন।
উত্তরঃ কৃষ্ণনগর এখন চিনি। তখন চিনতাম না।
প্রশ্নঃ আপনার কলেজ থেকে কৃষ্ণনগর কত দূরে?
উত্তরঃ আনুমানিক এক দেড় কিলোমিটার।
প্রশ্নঃ ঐ এলাকাটি শহরের কোন স্থানে।
উত্তরঃ অফিস-আদালত পাড়ায়।
প্রশ্নঃ ঐ এলাকার ইউসুফ আলী মল্লিক, তার ছেলে আনোয়ার হোসেন মল্লিক, দেলোয়ার হোসেন মল্লিক ও লিয়াকত আলী মল্লিককে আপনি চিনতনে?
উত্তরঃ এ ধরনের নামের ব্যক্তির নাম আমি যুদ্ধকালে শুনি নাই।
প্রশ্নঃ দেলোয়ার হোসেন মল্লিক নামে কোনো স্বাধীনতা বিরোধীর নাম জানতেন?
উত্তরঃ শুনি নাই।
প্রশ্নঃ আপনি যে দেলোয়ার সিকদারের নাম বলেছেন, তার পিতার নাম রসুল সিকদার?
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বর্তমান সাঈদী কথা সত্য বলেননি। সিকদার বর্তমানে আপনি বলেছেন!
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ দেলোয়ার হোসেন সিকদার কথাটি এই ট্রাইব্যুনালে বলার আগে কোথায়ও বলেননি।
উত্তরঃ আমি বলেছি।
প্রশ্নঃ আপনাকে যারা পরিচালনা করছেন তারাই আপনাকে দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী বলতে বলেছেন? তাদের শেখানো মতে বলেছেন।
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ আপনারা ভাইবোন ক'জন।
উত্তরঃ আমরা ৭ ভাই ২ কোন।
প্রশ্নঃ আপনার ভাইয়েরা কে কি করেন?
উত্তরঃ ৪ ভাই মারা গেছেন। ৩ ভাই জীবিত আছেন।
প্রশ্নঃ বাকি ২ ভাইয়ের পেশা কি? কি?
উত্তরঃ সবাই কৃষিজীবী। মেট্রিক কেউই পাস করেনি।
প্রশ্নঃ আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যান বা কোনো জনপ্রতিনিধি ছিলেন কি না?
উত্তরঃ কখনো অংশগ্রহণ করি নাই।
প্রশ্নঃ পিরোজপুর ও জিয়ানগর মিলে কি সংসদীয় এলাকা একটি?
উত্তরঃ জি।
প্রশ্নঃ আপনাদের এলাকায় স্বাধীনতা বিরোধী না পক্ষের বেশি।
উত্তরঃ স্বাধীনতার পক্ষের লোক বেশি।
প্রশ্নঃ রাজাকার আল বদরের সংখ্যা তো খুব কম। তারা তো চিহ্নিত?
উত্তরঃ জি।
প্রশ্নঃ ১৯৯৬, ২০০১ এই দুটি নির্বাচনে সাঈদী সাহেব ঐ এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
উত্তরঃ সত্য।
প্রশ্নঃ ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি প্রতিদ্বনিদ্বতা করে অল্প ভোটে হেরেছেন।
উত্তরঃ হরেছেন। তবে অল্প ভোটে না বেশি ভোটে তা জানি না।
প্রশ্নঃ ভোটাররা কি তাহলে জানতেন না যে তিনি স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন।
উত্তরঃ উত্তর নেই।
প্রশ্নঃ নির্বাচনকালে কি সাঈদীর বিরুদ্ধে কোনো স্বাধীনতা বিরোধী বলে পোস্টার, লিফলেট ছাড়া হয়?
উত্তরঃ না।
প্রশ্নঃ সাঈদী সাহেব নির্বাচিত হওয়ার আগে সব সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী হতেন?
উত্তরঃ জি।
প্রশ্নঃ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বর্তমান স্থানীয় আওয়ামী লীগ এমপি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী তত্ত্বাবধানে ও পরামর্শে আপনি এই মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে এসেছেন।
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ ২০০৯ সালে মানিক পসারী এবং মাহবুবুল আলম পিরোজপুর কোর্টে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে যে মামলা করেন তাতে আপনাকে সাক্ষী দেয়ার জন্য ডাকা হলেও আপনি যাননি।
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ আপনি ৪ জন মানুষের (রাজাকার) নাম বলেছেন? তারা কি আপনার এলাকার?
উত্তরঃ মোসলেম মাওলানা বাদুরা গ্রামের, সেকান্দার সিকদারের বাড়ি হোগলাবুনিয়া, দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী পারেরহাটে শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন, দানেশ মোল্লা পারেরহাটে থাকতেন। তার বাড়ি বাড়ইখালী গ্রামে।
প্রশ্নঃ দানেশ আলী মোল্লা কি করতেন?
উত্তরঃ হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন।
প্রশ্নঃ সেকান্দার সিকদার কি করতেন?
উত্তরঃ তার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিলো। এলাকায় বিচার আচার করে বেড়াতেন।
প্রশ্নঃ মোসলেম মাওলানা কি করতেন?
উত্তরঃ কিছু করতেন না তখনও তিনি মাওলানা ছিলেন।
প্রশ্নঃ দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী কি করতেন।
উত্তরঃ যখন বিবাহ করেন তখন আমরা শুনেছি উনি মৌলবী।
প্রশ্নঃ এদের সাথে আপনার কিভাবে পরিচয় হয়?
উত্তরঃ দানেশ আলী মোল্লা আমাদের শিক্ষক ছিলেন।
প্রশ্নঃ আপনি ৪০ বছর আগের ঘটনা যেভাবে বলেছেন তাকি মুখস্ত বলেছেন না নোট করে রেখেছিলেন?
উত্তরঃ স্মরণ থেকেই বলেছি।
প্রশ্নঃ রাজাকার, শান্তি কমিটির লোকেরা যখন সিদ্ধান্ত নেয় তখন কি আপনি তাদের আশপাশে ছিলেন?
উত্তরঃ উল্লেখিত অঙ্গীকার গ্রহণের সময় আমি সেখানে ছিলাম না।
প্রশ্নঃ আর্মিদের হাতে নারীদের তুলে দিয়েছে ধর্ষণের উদ্দেশে আপনি কারোটা কি দেখেছেন?
উত্তরঃ দেখি নাই, শুনেছি।
প্রশ্নঃ আপনি শুনেছেন এটাও বানোয়াট।
উত্তরঃ শুনেছি।
প্রশ্নঃ মফিজকে নির্যাতনের বিষয়টি আপনি দেখেছিলেন?
উত্তরঃ মফিজ পালিয়ে আসার পরে আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম।
প্রশ্নঃ কোথায় কোথায় আঘাত ছিলো? রক্তাক্ত ছিলো?
উত্তরঃ পিঠে, পায়ের রানে রক্তাক্ত জখম দেখেছি।
প্রশ্নঃ এটা কোন দিন, কোথায় দেখেছিলেন।
উত্তরঃ পালিয়ে যাওয়ার পরের দিন মানিক পসারীর বাড়িতে গিয়ে দেখেছিলেন। তখন সময় সকাল সাড়ে ৮টা বা ৯টা হবে।
প্রশ্নঃ আপনি কি মফিজের সাথে কথা বলেছিলেন? সে ক'টায় পালিয়ে আসে?
উত্তরঃ কথা হয়েছিল। সে বলেছিল শেষ রাতে সে অন্ধকারে পালিয়ে এসেছিল।
প্রশ্নঃ আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি এবং আপনাদের কারো কোনো বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
উত্তরঃ আমাদের সম্পদই ছিলো না।
বিরতি
প্রশ্নঃ আপনাদের পরিবারের কারো বিশেষ কোনো সম্পত্তি নেই।
উত্তরঃ সত্য নেই।
প্রশ্নঃ দেখানোর মতো প্রতিষ্ঠিত কোনো ব্যবসাও নেই।
উত্তরঃ নেই।
প্রশ্নঃ আপনি আপনার এলাকায় নিরক্ষর লোকদের সম্পদ জোর করে দখল করেন।
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ সম্পত্তি দখলের দায়ে আপনার বিরুদ্ধে দেওয়ানী আদালতে মামলা আছে নিষেধাজ্ঞা আছে, তাও জানেন না।
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ আপনি চিতলিয়ার চরে ১০ বিঘার মতো জমি জোর করে দখলে আছেন আপনার ভাইদের সহযোগিতা নিয়ে।
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ বর্তমান মামলার তদন্তকালে যতবার সাক্ষ্য দিয়েছেন তাতে কি আপনি স্বাক্ষর করেছেন?
উত্তরঃ না, করি নাই। তদন্ত কর্মকর্তার কাছে শুধু একবারই স্বাক্ষর করেছি।
প্রশ্নঃ আপনি এই আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য কত দিন আগে এসেছেন। কে কে সাথে ছিল?
উত্তরঃ ৩/৪ দিন আগে এসেছি। একাই ঢাকায় এসেছি।
প্রশ্নঃ এর কত দিন আগে এসেছিলেন?
উত্তরঃ এর আগে একবার এসেছিলাম। কবে এসেছি খেয়াল নেই। সে সময় ২ দিন ছিলাম।
প্রশ্নঃ প্রথমবার কার সাথে ঢাকায় আসেন?
উত্তরঃ তদন্ত কর্মকর্তার সাথে এসেছিলাম।
প্রশ্নঃ আর কেউ এসেছিল সাথে?
উত্তরঃ মানিক পসারী।
প্রশ্নঃ আপনি এই আদালতে সাক্ষ্য দানকালে মাহবুবুল আলম ও মিজানুর রহমান তালুকদার উপস্থিত ছিলেন কিনা?
উত্তরঃ ছিলেন।
প্রশ্নঃ আদালতে যা জবানবন্দী দিয়েছেন তার বেশি কিছু কি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেছেন?
উত্তরঃ মনে নেই।
প্রশ্নঃ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আপনি কখনো সুন্দরবনে গিয়েছেন?
উত্তরঃ সেপ্টেম্বরে গিয়েছিলাম।
প্রশ্নঃ মানিক পসারীর বাড়ি আপনার বাড়ির পশ্চিম পাশে।
উত্তরঃ পশ্চিম পাশে দেড়/দুই শ' গজ দূরে।
প্রশ্নঃ আপনাদের দুই বাড়ির মাঝে তোতা হাওলাদারের বাড়ি আছে।
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ হালিম তালুকদারের বাড়ি চেনেন।
উত্তরঃ আমার বাড়ির সাথে লাগোয়া দক্ষিণ পাশে।
প্রশ্নঃ পারেরহাট বাজারের সাথে লাগোয়া দক্ষিণ পাশে পুল আছে রিকশা স্টান্ডের পাশে।
উত্তরঃ জি।
প্রশ্নঃ পুলের পাড়ে কালী মন্দির আছে।
উত্তরঃ বর্তমানে আছে। তখন ছিলো না।
প্রশ্নঃ কালী মন্দির '৭১ সালের আগে থেকেই ছিল।
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ কালী মন্দিরের দক্ষিণ পাশে গনি হাজীর বাড়ি।
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্নঃ ১ মে ১৯৭১ আপনি পিরোজপুর থেকে গ্রামের বাড়ি চলে যান। একথা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেননি।
উত্তরঃ স্মরণ নেই।
প্রশ্নঃ পারেরহাটে দেলোয়ার হোসেন সিকদারের (বর্তমান সাঈদী)র নেতৃত্বে শান্তি কমিটি গঠিত হয় এ কথা আপনি তদন্ত কর্মকর্তার নিকট বলেননি।
উত্তরঃ সত্য নয়।
প্রশ্ন : পারেরহাটে ফকির দাসের দালান দখল করে রাজাকার ক্যাম্প গঠন করেছে- একথা আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : মে মাসের ৭ তারিখে আপনি পারেরহাট বাজারে গিয়েছিলেন একথাও তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : খবর শুনে আপনি পারেরহাটের রিকশা স্ট্যান্ডে ব্রিজের গোড়ায় এক নিকটাত্মীয় গনি হাজির বাড়িতে অবস্থান করেন এবং তার বাসার উত্তর দিকের জানালা খুলে কিরশা স্ট্যান্ডে দেখি শান্তি কমিটির লোকেরা দানেশ মোল্লা, দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী, সেকান্দার সিকদার, মোসলেম মাওলানা, আরো অনেক রাজাকার বাহিনীর লোকজন পাকিস্তান বাহিনীর আগমনের জন্য অপেক্ষা করছে। একথা আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?
উত্তর : একথা সত্য নয়।
প্রশ্ন : রিকশা স্ট্যান্ডের পুল পার হয়ে বাজারের দিকে যাচ্ছিল তাদের সম্মুখে ছিলেন পাকিস্তান সেনা অফিসার এবং তার ডানে-বামে ছিলেন দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী, দানেশ আলী মোল্লা, সেকান্দার সিকদার, মোসলেম মাওলানা, পুল পার হয়ে বাজারের দিকে যাওয়ার সময় একটু সামনে এগুলে আমি আমার ঐ আত্মীয়ের বাসা থেকে বের হই এবং তাদের পিছু পিছু কিছু দূর যাই। তখন আমি দেখতে পাই দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী হাত উঁচু করে হিন্দু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগের লোকদের দোকানঘর ও বসতবাড়ি দেখাইয়া দিতেছে। আমি তাদের অনুসরণ করে পরে দাঁড়িয়ে থাকি। রাজাকার ও শান্তি কমিটির লোকেরা বাজারের মধ্য গলি হয়ে সোজা বাজারের দক্ষিণ দিকে চলে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে বাজারের দক্ষিণ দিক থেকে বহু লোক দৌড়াদৌড়ি করছে এবং দোকানপাট লুটপাট শুরু হয়ে গেছে। এরপর আমি আমার ঐ নিকটাত্মীয়ের বাসায় ফিরে যাই এবং সেখানে অবস্থান করি। প্রায় আনুমানিক দেড়/দুই ঘণ্টা পরে জানতে পারি পাকহানাদার বাহিনীরা বাজারের দক্ষিণ দিকে রাজলক্ষ্মী বিদ্যালয়ের দিকে গিয়েছে ক্যাম্প স্থাপন করার জন্য আমি তখন আবার বাজারের দিকে বাইর হইয়া মধ্যবাজারে যাইতেই বহু লোকে বলাবলি করিতেছিল যে, ৩০/৩৫টি ঘর লুট করা হইয়াছে। যার ভাল ভাল ঘরের মালামাল দেলোয়ার হোসেন সিকাদারের নেতৃত্বে খেয়াঘাটের সামনে স্তূপ আকারে রাশ দিয়ে রেখেছে এই কথাগুলি আপনি তদন্ত কর্মকর্তার নিকট বলেননি?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : মাখন সাহার দোকানের নিচে থেকে ২২ সের স্বর্ণ লুট হয়। আপনি জনাববন্দীতে মাখন সাহার নাম বলেননি?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : এই কথা শোনার পরে আমি আরো একটু দক্ষিণ দিকে লুটের মাল দেখার জন্য অগ্রসর হই। খেয়াঘাটের কাছাকাছি গিয়ে ঐ লুটের মালামালের স্তূপ দেখতে পাই। আরও দেখতে পাই দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদীর নেতৃত্বে এ মালামাল ভাগ হচ্ছে। ইহা দেখিয়া বাড়িতে চলে যাই। পরে জানতে পারি নগরবাসী সাহার ঘর দখল করে উল্লেখিত লুটের মালামাল তারা বিক্রির জন্য একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলছে। যার পরিচালক দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী এই কথা আপনি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেননি?
উত্তর : সম্ভবত বলেছি।
প্রশ্ন : ইব্রাহিম কুট্টি ও মফিজকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে গেছে। একথাও আপনি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেননি?
উত্তর : বলেছি।
প্রশ্ন : বাজারের পশ্চিম পাশে ব্রিজ পার হয়ে উত্তর দিকে রাস্তা দিয়ে থানার হাট পর্যন্ত গিয়ে দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী সাহেব পাকবাহিনীর সাথে কি যেন কথা বলাবলি করছিলেন। তখনই বিকট শব্দে গুলীর আওয়াজ ও মানুষের চিৎকার শুনতে পাই। আমরা গুলীর শব্দে পেছনে বাড়ির দিকে চলে যাই। পরের দিন জানতে পাই যে, মানিক পসরীর বাড়ির কাজের লোক ইব্রাহিমকে গুলী করে হত্যা করে মফিজকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যায়। একথা তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : জুন মাসের সম্ভবত মাঝামাঝি ঐ দিন পারেরহাটের বাজারের দিন (হাটবার) আমি আমার বাবার সাথে বাজারে যাই। মাছ কেনার জন্য বাজারের উত্তর পাশে মাছ বাজারের দিকে যাই। পথিমধ্যে রিকশা স্ট্যান্ডে পুলের দক্ষিণ পাড়ে পশ্চিম গলিতে মদন সাহার ঘর দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী সাহেব ঘর ভাঙ্গিয়া বড় কাঠারিতে (বড় নৌকা) করে ঐ ঘরের মালামাল উঠাইতেছে। ইহা দেখিয়ে আমি ঐখানে কিছু সময় দাঁড়ায় নৌকায় বোঝাই করে মালামাল খালের পূর্ব পাড়ে। একথা আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ভানু সাহার বাবা-ভাই সকলকে জোরপূর্বক মুসলমান বানাইয়া নামায পড়তে বাধ্য করে। একথা তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?
উত্তর : সত্য নেই।
প্রশ্ন : ভানু সাহা এবং পারেরহাটে যারা ধর্ষিতা হয়েছে তারা সকলেই দেশ স্বাধীনের পরে ভারতে চলে গেছে। একথা তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি?
উত্তর : স্মরণ নেই।
প্রশ্ন : ঐ দিন রাজলক্ষ্মী স্কুলে পাকবাহিনী কতক্ষণে ক্যাম্প স্থাপন করে?
উত্তর : সময় জানি না।
প্রশ্ন : আপনি কত সালে এসএসসি পাস করেন?
উত্তর : '৬৯ সালে পরীক্ষা দিয়েছি। '৭০ সালে পাস করেছি।
প্রশ্ন : যে ৩ ভাই বেঁচে আছে তারা কি আপনার ছোট?
উত্তর : ২ ভাই আমার বড়।
প্রশ্ন : সাঈদী সাহেবের শ্বশুর ইউনুস মুনশীর কোন ঘর বাড়ি পারেরহাট বাজারে ছিল কিনা?
উত্তর : ভিটি ছিল। বসতঘর ছিল না। দোকানঘর ছিল।
প্রশ্ন একাববর বিশ্বাসকে চিনেন। তিনি ২০০৭ সালে মামলা করেছেন অভিযোগ ধানকাটা। এখনো বিচারাধীন আছে পিরোজপুর সদর থানায়?
উত্তর : আমার মনে নেই।
প্রশ্ন : গনি হাজি কোনভাবেই আপনার আত্মীয় নন?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : সাঈদী সাহেবের নেতৃত্বে শান্তি কমিটি বা রাজাকার বাহিনী গঠন করা বা অন্যদের সাথে পারেরহাটে পাকবাহিনীর জন্য অপেক্ষা করা মর্মে এই আদালতে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : সাঈদী সাহেব পাকসেনাদেরকে হিন্দু সম্প্রদায় ও অন্যান্যদের দোকান ও বসতঘর দেখিয়ে দেন মর্মে যা বলেছেন তাও সত্য নয়।
উত্তর : ইহা সত্য নয়।
প্রশ্ন : মাখন সাহার দোকানের নিচে সিন্দুক থেকে ২২ সের স্বর্ণ লুট ও ২৫/৩০টি দোকান লুটের যে কথা আপনি বলেছেন তা সত্য বলেননি।
উত্তর : ইহা সত্য নয়।
প্রশ্ন : খেয়াঘাটের কাছাকাছি গিয়ে রাস্তার ওপর লুটের মালামাল এবং দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর নেতৃত্বে তা ভাগাভাগি হওয়া সবই মিথ্যাভাবে বলেছেন।
উত্তর : সত্য বলেছি।
প্রশ্ন : নগরবাসী সাহার ঘর দখল করে লুটের মালামাল দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেয়া যার পরিচালক ছিলেন দেলোয়ার হোসেন সিকদার এবং ফকির দাসের দালান দখল করে রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করার যে বিষয় শুনেছেন মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্য নয়?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ৮/৫/১৯৭১ তারিখে মানিক পসারীর বাড়িসহ আরও ১৫/২০টি বাড়িতে আগুন দেয়া ও লুটপাট সম্পর্কে আপনি মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন?
উত্তর : এটা সত্য নয়।
প্রশ্ন : দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ অন্যান্য রাজাকার মানিক পসারীর ফুপাতো ভাই মফিজ ও কর্মচারী ইব্রাহিম কুট্টিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাওয়া, ব্রিজ পার হয়ে বাজারের পশ্চিম পাড়ে রাস্তা দিয়ে থানার ঘাট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া দেলোয়ার হোসেন সিকদার পাকবাহিনীর সাথে কি যেন কথা বলেন, বিকট শব্দে গুলীর আওয়াজ ও মানুষের চিৎকার শুনতে পাওয়া মর্মে যে বক্তব্য আপনি দিয়েছেন তা মিথ্যা?
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : দেলোয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী আরবী ও উর্দু ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা ও বাকপটু হওয়ার সুবাদে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সকল প্রকার যোগাযোগসহ সমস্ত কর্মকান্ড তার নির্দেশে পরিচালিত হতো মর্মে আপনি মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : দেলোয়ার হোসেন সাঈদী সাহেবে তার অনুগত রাজাকাদের নিয়ে লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, নিরীহ মানুষ হত্যা, নারী ধর্ষণ এবং নারীদের ধর্ষণ করানোর উদ্দেশ্যে জোরপূর্বক পাকসেনাদের হাতে তুলে দিতেন মর্মে আপনি মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : জুন মাসের সম্ভবত মাঝামাঝি সময়ে পারেরহাটের বাজারে গিয়ে আপনার বাবার সাথে বাজার করতে যাওয়া, মাছ কেনার উদ্দেশ্যে উত্তর পাশে মাছ বাজারে যাওয়া, পথিমধ্যে রিকশা স্ট্যান্ডের পুলের দক্ষিণপাড়ে পশ্চিম গলিকে মদন সাহার ঘর দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর লোকজন নিয়ে ঘর ভাঙ্গিয়া বড় কাঠারি নৌকায় ঘরের মালামাল তোলা উক্ত ঘটনা আপনার দাঁড়িয়ে দেখা নৌকা বোঝাই মালামাল খালের পূর্বপাড়ে তার শ্বশুর বাড়ি ইউনুস মনুশীর বাড়ির উঠানে নেয়া সংক্রান্ত যে বক্তব্য আপনি দিয়েছেন তা মিথ্যা?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : পারেরহাটের বিনদ সাহার মেয়ে ভানু সাহাকে দেলোয়ার হোসেন সাঈদী নিয়মিত ধর্ষণ করতেন মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ভানু সাহার বাপ-ভাইকে জোরপূর্বক মুসলমান বানিয়ে মসজিদে নামায পড়িতে বাধ্য করিতেন মর্মে আপনি মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি ভানু সাহার বাড়িতে গিয়েছেন কিনা? কখন?
উত্তর : আমরা সব সময়ই যেতাম। সামনে দোকান পেছনে বাসা। বাসায় নয় দোকানে যেতাম।
প্রশ্ন : ভানু সাহার সমানের দোকান কে চালাতো?
উত্তর : তার বাবাই চালাতো। ভাই সহেযাগিতা করতো।
প্রশ্ন : আল্লামা সাঈদী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পারেরহাট বা পিরোজপুর এলাকাতেই ছিলেন না?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনার সুনির্দিষ্ট কোন পেশা নেই?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি বর্তমানে এমপি এবং ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের পরামর্শে সরকার থেকে বিভিন্ন সুবিধা নেয়া, যেসব মামলা আপনর বিরুদ্ধে আছে তা থেকে খালাস পাওয়া এবং চরে যে জমি দখল করেছেন তা দখল বাজায় রাখার জন্য সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে এসেছেন? রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও জনসম্মুখে তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য?
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনার কোন পেশা না থাকায় বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়াল সাহেবকে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়ে ভাতা পাওয়ার আশায় মিথ্যা সাক্ষী দিয়েছেন?
উত্তর : সত্য নয়।
দেলু সাঈদীর কৌসুলির নিষ্ফল জেরা
যুদ্ধাপরাধীর বিচার
স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে চতুর্থ সাক্ষী সুলতান আহমেদ হাওলাদারের জেরা শেষ হয়েছে। সোমবার পঞ্চম সাৰী জবানবন্দী প্রদান করবেন। বিচারপতি মোঃ নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এ বিচার কার্যক্রম শুরু হয়ে পৌনে চারটায় মুলতবি হয়ে যায়। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে সকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
আসামিপৰের আইনজীবী সাক্ষীকে এক পর্যায়ে বলেন, গত ঈদ-উল-ফিতর কোন তারিখ কোন দিন হয়েছে। তখন সাৰী অনেকটা বিব্রতবোধ করে বলেন, এই মুহূর্তে সঠিক খেয়াল নেই। আসামি পৰের আইনজীবী বলেন, আপনি অসাধারণ, এটা বলতে পারছেন না। আর ৪০ বছর আগের ঘটনা মুখসত্ম বলে যাচ্ছেন। এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল বলে, এমন কথা বলবেন না। সাৰীর প্রটেকশন দেয়া আমাদের দায়িত্ব। হিট দেয়ার মতো কথা বলা যাবে না।
জেরার শুরুতে সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম সাক্ষী সুলতান আহমেদ হালদারের কাছে জানতে চান তিনি তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা কিনা। জবাবে সুলতান আহমেদ বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন। পরে আইনজীবীর অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন। তাই তিনি সহায়ক মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু এজন্য পিরোজপুরের স্থানীয় সাংসদ একেএমএ আউয়াল সুপারিশ করেছেন বলে আসামি পৰের আইনজীবীর দাবি সত্য নয়। এরপর আইনজীবীর জেরায় সাক্ষী বলেন, নিম্ন আদালতে তাঁর এক আত্মীয়ের করা 'কলা চুরি'র মামলায় তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন।
আসামি পৰের আইনজীবী নিজামুল ইসলাম, মনজুর আহমেদ আনসারী ও কফিলউদ্দিন চৌধুরী সাৰী সুলতান আহেমেদকে যে জেরা করেন নিচে তা দেয়া হলো :
প্রশ্ন : আপনি তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা কিনা।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আপনি নতুনভাবে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য বর্তমান এমপি একেএমএ আউয়াল সাহেব জিও লেটারের সুপারিশ করেছেন।
উত্তর : সত্য নয়। আমি সহায়ক মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আবেদন করেছি।
প্রশ্ন : পারেরহাট এলাকায় কাদের গাজী, পিতা-জনাব আলী গাজী তাকে চেনেন।
উত্তর : চিনি।
প্রশ্ন : তিনি আপনার বিরম্নদ্ধে কলা চুরির মামলা করলে দ- হয়েছিল। তা বহাল আছে।
উত্তর : সত্য নয়। জমিজমা নিয়ে মামলা আছে। তারই জের ধরে মামলা করেছিল। মামলা বিচারাধীন আছে।
প্রশ্ন : এই মামলা কোন আদালতে বিচারাধীন আছে।
উত্তর : হাইকোর্টে বিচারাধীন আছে। আমি জামিনে আছি।
প্রশ্ন : জজকোর্টে কি রায় হয়েছিল।
উত্তর : অনুপস্থিতিতে নিম্ন আদালতের সাজা বহাল আছে।
প্রশ্ন : কাদের গাজী আত্মীয় নয়?
উত্তর : আত্মীয়।
প্রশ্ন : বরিশাল আদালতে আপনার বিরম্নদ্ধে দুটি ট্রলার চুরির মামলা বিচারাধীন আছে।
উত্তর : আছে।
প্রশ্ন : ইব্রাহিম ওরফে কুট্টি নাম বললেন, পিতার নাম কি।
উত্তর : স্মরণে নেই।
প্রশ্ন : বাদুরা গ্রামের সইজ উদ্দিনকে চেনেন।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : চিথলিয়া এবং বাদুরা গ্রাম পাশাপাশি।
উত্তর : জি।
প্রশ্ন : তার স্ত্রীর নাম বলতে পারবেন।
উত্তর : জি না।
প্রশ্ন : তার ঐ সময়ে কোন ছেলেমেয়ে ছিল কিনা। থাকলে বয়স কত ।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : তার শ্বশুরবাড়িটা কোথায়?
উত্তর : সম্ভবত বারইখালি।
প্রশ্ন : আজাহার আলী তার শ্বশুরের নাম।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : তার শ্যালকের নাম সাহেব আলী ওরফে সিরাজউদ্দিন।
উত্তর : জানি না।
প্রশ্ন : দানেশ আলী মোলস্না চেয়ারম্যান, পিতা-রহিমউদ্দিন মোলস্না পারেরহাট, উনাকে চিনতেন।
উত্তর : চিনতাম। দানেশ মোলস্না আমার শিৰক। পিতার নাম জানি না।
প্রশ্ন : আতাহার আলী হাওলাদার পিতা-মৃত আয়েন উদ্দিন হাওলাদার সাং বরইখালি। তাকে চেনেন।
উত্তর : চিনি না।
প্রশ্ন : আস্রাব আলী, পিতা-আসমন আলী, টেংরাখালী। তাকে চিনেন।
উত্তর : স্মরণে নেই।
প্রশ্ন : আব্দুল মান্নান, পিতা-হাসেম হাওলাদার, সাং বাদুরা, তাকে চেনেন।
উত্তর : চিনি না।
প্রশ্ন : আইয়ুব আলী, পিতা-মৃত আরব আলী, বরইখালী, তাকে চেনেন।
উত্তর : চিনি না।
প্রশ্ন : একই গ্রামের কালাম চৌকিদারকে চেনেন।
উত্তর : চিনি না।
প্রশ্ন : রম্নহুল আমিন পিতা- আনোয়ার হোসেন। পারেরহাট তাকে চিনেন।
উত্তর : পদবী ছাড়া বলতে পারব না। রম্নহুল নামের একজনকে চিনি। সে রাজাকার।
প্রশ্ন : আব্দুল হাকিম মুন্সি তাকে চিনেন। সাং বরইখালি।
উত্তর : চিনি না।
প্রশ্ন : মবিন উদ্দিন, পিতা-আঃ গনি। সাং-গাজীপুর। তাকে চেনেন।
উত্তর : চিনি। সে রাজাকার ছিল।
প্রশ্ন : সেকান্দার আলী সিকদার, পিতা-মুনসুর আলী সিকদার, হুগলাবুনিয়া তাকে চেনেন?
উত্তর : চিনি। পিস কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। সাধারণন সম্পাদক ছিলেন দানেশ আলী মোলস্না।
প্রশ্ন: সামছুর রহমান ১৯৭১ সালে পিরোজপুর থানার এসআই ছিলেন, তাকে চিনেন।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : মোসলেম মাওলানা, পিতা-মৃত মোদ্দাচ্ছের গাজী, সাং বাদুরা তাকে চিনেন।
উত্তর : চিনি। তিনিও পিস কমিটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
প্রশ্ন : এতৰণ যে নামগুলো বললাম তার মধ্যে ৩ জনের পরিচয় দিয়েছেন। বাকিরা কি রাজাকার ছিল।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : বাবুইখালি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, দেলোয়ার হোসেন, কাহের আলী হাওলাদার, সেতারা বেগম, রানী, আজাহার আলী হাওলাদার, মোঃ আলী, মকবুল সিকদার এদেরকে চিনেন।
উত্তর : নামে চিনি না। দেখলে হয়ত চিনতে পারি।
প্রশ্ন : ৭ মার্চের ভাষণের পর পিরোজপুর এলাকায় পাক বাহিনী আসার আগ পর্যনত্ম পুরো এলাকা মুক্তিযুদ্ধের শক্তির নিয়ন্ত্রণে ছিল।
উত্তর : সত্য নয়।
্প্রশ্ন : জিয়ানগর উপজেলা পিরোজপুরের অধীনে ছিল।
উত্তর : জি্ব।
প্রশ্ন : পূর্ব পাকিসত্মানে প্রথম শানত্মি কমিটি কোথায় কত তারিখ গঠিত হয়।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে ছিলেন।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : পারেরহাটে রাজকার ও শানত্মি কমিটি কোথায় গঠিত হয়।
উত্তর : স্মরণে নেই।
প্রশ্ন : পূর্ব পাকিসত্মানের রাজাকার প্রধান কে ছিলেন।
উত্তর : শুনেছি গোলাম আযম।
প্রশ্ন : পিস কমিটি পিরোজপুর মহকুমায় কত তারিখ গঠিত হয়।
উত্তর : স্মরণে নেই।
প্রশ্ন : এই পিস কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নাম বলতে পারবেন।
উত্তর : সভাপতি কে ছিলেন বলতে পারব না। আফজাল সাহেব ছিলেন তার নাম শুনেছি আর কে ছিলেন স্মরণে নেই।
প্রশ্ন : পিরোজপুর মহকুমায় রাজাকার কমান্ডার যার বাড়ি ছিল চরখালি, মানিক কমান্ডার তার চাচাত ভাই মুক্তিযোদ্ধা সানু খন্দকার কর্তৃক নিহত হয়।
উত্তর : কমান্ডারের নাম শুনেছি। মানিক খন্দকারে চাচাত ভাই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কতর্ৃক নিহত হয় কিনা জানি না।
প্রশ্ন : পিরোজপুরে রাজাকার কমান্ডার আমীর আলীর নাম শুনেছেন।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : পিরোজপুরের মহকুমার যে থানাগুলো ছিল সেই থানাগুলোর কোনটারই পিস কমিটির সভাপতি বা সম্পাদকের নাম জানা নেই?
উত্তর : নাম বলতে পারব না।
প্রশ্ন : আপনার বাড়ি শংকরপাশা ইউনিয়নে।
উত্তর : জি্ব।
প্রশ্ন : এই শংকরপাশা ইউনিয়নের লোকজন পারেরহাট বাজার নিয়ন্ত্রণ করত।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : অধিকাংশ ব্যবসায়ী শংকরপাশা ইউনিয়নের।
উত্তর : এটার আংশিক সত্যতা আছে।
প্রশ্ন : শংকরপাশা ইউনিয়েনের কত নম্বর ওয়ার্ডে আপনার বাড়ি। ১৯৭১ সালের কথা বলছি।
উত্তর : ঐ সময়ে শংকরপাশা ইউনিয়েনে ওয়ার্ড ছিল কিনা আমার মনে নেই। পরবতর্ীতে ওয়ার্ড হলে ৩ নং ওয়ার্ডে পড়েছে।
প্রশ্ন : ঐ সময় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হতো। এলাকাভিত্তিক, না গোটা ইউনিয়ন ভিত্তিক।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : শংকরপাশা ইউনিয়নে বাড়ি বললেন, সেখানে পিস কমিটির চেয়ারম্যান কে ছিলেন।
উত্তর : শংকরপাশা ইউনিয়নে পিস কমিটি ছিল না।
প্রশ্ন : ঐ ইউনিয়নে রাজাকার কমান্ডার কে ছিলেন।
উত্তর : পৃথক কোন রাজাকার কমিটি ছিল না।
প্রশ্ন : আপনার এলাকার বা আশপাশের পিস কমিটির একরাম খলিফাকে চিনতেন।
উত্তর : পিস কমিটির কেউ ছিলেন না।
প্রশ্ন : শংকরপাশা গ্রামের একরাম খলিফাকে চেনেন।
উত্তর : চিনি।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ থেকে ১ মে পর্যনত্ম পারেরহাটে ছিলেন, না পিরোজপুরে ছিলেন। সোহরাওয়ার্দী কলেজটা সরকারী কলেজ থেকে কতদূর।
উত্তর : '৭১ সালে পিরোজপুরে কোন সরকারী কলেজ ছিল না। সোহরাওয়ার্দী কলেজই পরবতর্ীতে সরকারী কলেজ হয়েছে।
প্রশ্ন : '৭১ সালে পিরোজপুরে কয়টা কলেজ ছিল।
উত্তর : পিরোজপুর সদরে তখন একটাই কলেজ ছিল।
প্রশ্ন : আপনি সেখানে থাকতেন, সেখান থেকে কলেজের দূরত্ব কতটুকু।
উত্তর : অনুমান দেড় থেকে ২শ' গজ।
প্রশ্ন : ঐ সময়ে কলেজের অধ্যৰ কে ছিলেন।
উত্তর : এই মুহূর্তে ঐ সময়ের কলেজের অধ্যৰের নাম মনে পড়ছে না।
প্রশ্ন : এই মামলার দুই নম্বর সাৰী রম্নহুল আমিন নবীন তিনি সিনিয়র না জুনিয়র।
উত্তর : আমার সিনিয়র।
প্রশ্ন : এক নম্বর সাৰী মাহবুবুল আলম হাওলাদার জুনিয়র ছিলেন।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : মাহবুবুল আলম হাওলাদার পিরোজপুরে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরম্নদ্ধে মামলা করেছিল, সে মামলায় সাৰী দিয়েছিলেন।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : মানিক পসারী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরম্নদ্ধে আরেকটি মামলা, সেই মামলায় সাৰী ছিলেন না।
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : '৭১ সালের ৭ মার্চ থেকে ১ মে পর্যনত্ম আপনি পিরোজপুর এলাকায় কোন রাজনীতির সঙ্গে কোন কর্মকা-ে জড়িত ছিলেন না।
উত্তর : জিনা।
প্রশ্ন : আপনার পেশা কি?
উত্তর : বর্তমান পেশা ছোটখাটো ব্যবসা ও কৃষিকাজ।
প্রশ্ন : এই মামলায় সাৰী দেবার আগে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরম্নদ্ধে অন্য কোথায়ও কোন অভিযোগ বা সাৰী দেননি?
উত্তর : সত্য নয় যে, এই মামলায় সাৰী দেয়ার পূর্বে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরম্নদ্ধে আর কোথাও সাৰী দেইনি।
প্রশ্ন : ১৯৯২ সালে গণআদালতে সাৰী দিয়েছিলেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৯৪ সালে গণতদনত্ম কমিশনেও কোন অভিযোগ দেননি।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : এই মামলায় হেলাল উদ্দিনকে চিনতে পারেন। জবানবন্দী দেবার জন্য রম্নহুল আমিন নবীনের সঙ্গে সেখানে যান।
উত্তর : সত্য নয় যে, বর্তমান মামলায় তদনত্মকারী কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের কাছে জবানবন্দী দেয়ার জন্য এই মামলার অপর সাৰী রম্নহুল আমিন নবীনের সঙ্গে একত্রে গিয়েছিলাম। আমি নিজে থেকেই গিয়েছিলাম।
প্রশ্ন : খবরটা কে দিয়েছিল।
উত্তর : সাৰ্য দিতে হবে মানিক পসারীর কাছ থেকে শুনেছিলাম।
প্রশ্ন : মানিক পসারী কত তারিখ খবর দিয়েছিল।
উত্তর : সম্ভবত মানিক পসারী ১৮/৮/২০১০ তারিখে আমাকে সাৰী দেবার বিষয়টি জানিয়েছিল। ঐ দিনই সাৰী দিতে যাই।
প্রশ্ন : কয়টার দিকে জবানবন্দী নিয়েছে।
উত্তর : ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে।
প্রশ্ন : জবানবন্দী কোথায় দিয়েছিলেন।
উত্তর : আমি জবানবন্দী মানিক পসারীর বাড়ির সামনে রাসত্মার উপর দিয়েছি।
প্রশ্ন : উনি কি ভিডিও আকারে না লিখিত আকারে নিয়েছে।
উত্তর : তদনত্মকারী কর্মকর্তা লিখিত আকারে ও ল্যাপটপেও নিয়েছে।
প্রশ্ন : ঐ সময় মাহবুবুল আলম হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
উত্তর : ছিলেন না।
প্রশ্ন : ঐ সময় হুগলাবুনিয়া গ্রামের মোসত্মফা হাওলাদার পিতা-ইউসুফ আলী হাওলাদার ছিলেন।
উত্তর : সম্ভবত ছিলেন।
প্রশ্ন : আর ২/৩ জনের নাম বলেন।
উত্তর : মুক্তিযোদ্ধা সেলিম খান, মানিক পসারীর ভাইয়েরা এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রশ্ন : কতৰণ এলাকায় ছিলেন। কত সময় পর এলাকা ত্যাগ করেন।
উত্তর : জবানবন্দী দিয়ে চলে আসি। অনুমান ১২ থেকে সাড়ে ১২টার দিকে চলে আসি।
পশ্ন : ঐ সময় আগে পিছে আরও কারও জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়েছে।
উত্তর : করেছে।
প্রশ্ন : কাদের।
উত্তর : মানিক পসারী, মোসত্মফা, অপর এক মানিক (উমেদপুর) আরও অনেকের নিয়েছে। বাকিদের স্মরণে নেই।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের শুরম্নতেই অধিকাংশ হিন্দু এলাকা ছেড়ে ভারতে চলে যায়।
উত্তর : সত্য নয় যে, পিরোজপুর সদর থানার অধিকাংশ হিন্দু ভারতে চলে যায়।
প্রশ্ন : আপনি পিরোজপুর এলাকাতে পারেরহাটসহ আরবীতে কোন লোকের কথা শুনতে দেখেছেন।
উত্তর : আমি কোনটা আরবী কোনটা উর্দু সেটা জানি না বিধায় বলতে পারব না যে, পিরোজপুরে কেউ কারও সঙ্গে আরবীতে কথা বলে কিনা।
প্রশ্ন : আপনি কার দোকানে সোনা রম্নপার লুটের কথা বললেন, এই সোনা মাটির নিচে ছিল। খুড়তে কত সময় লেগেছে?
উত্তর : মাখন সাহার দোকান খুড়ে সিন্দুক তোলার সময় ছিলাম না বিধায়, মাটি খুড়তে কতৰণ লেগেছে বলতে পারব না।
প্রশ্ন : গর্তটা দেখেছেন? কত বড়?
উত্তর : মাখন সাহার দোকানের গর্তটা দেখেছিলাম। আমি যেহেতু গর্ত খুড়িনি, অভ্যাসও নেই। সেহেতু উক্ত গর্তটি খুড়তে কত সময় লেগেছে জানি না।
প্রশ্ন : ২০০৮ সালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নির্বাচনে প্রতিপৰের হয়ে নির্বাচনী প্রচার করেছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : নিম্ন আদালতে মামলার শাসত্মি হয়েছে। আপীল করেছেন। মামলার শাসত্মি হওয়ার তারিখটি মনে আছে।
উত্তর : স্মরণে নেই।
প্রশ্ন : ঐ মামলার জজকোর্টে আপীল করেছেন। সেই রায়ের তারিখ মনে আছে।
উত্তর : স্মরণ নেই।
প্রশ্ন : আপনি সুপ্রীমকোর্টে আপীল করেছেন সেটা কত তারিখ।
উত্তর : স্মরণে নেই।
প্রশ্ন : ঈদ-উল-ফিতর কোন তারিখে হয়েছিল বলতে পারবেন।
উত্তর : সঠিক খেয়াল নেই।
প্রশ্ন : কোরবানি দেন।
উত্তর : এ বছর দেইনি।
প্রশ্ন : কয়েকদিন আগে মন্ত্রিসভা পরিবর্তন হয়েছে।
উত্তর : গ্রামে থাকি মন্ত্রিসভা কোন দিন কোন তারিখ পরিবর্তন হয়েছে, তা বলতে পারব না।
প্রশ্ন : পারেরহাট বাজারে '৭১ সালে আপনার বা পরিবারে বাবসাবাণিজ্য ছিল।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : পিরোজপুর কোন জায়গায় থাকতেন।
উত্তর : কলেজে পড়াশোনার সময় মাছিমপুরে থাকতাম।
প্রশ্ন : কৃষ্ণনগর কি পাশে ।
উত্তর : কৃষ্ণনগর এখন চিনি। তখন চিনতাম না।
প্রশ্ন : কলেজ থেকে কৃষ্ণনগর কতদূর।
উত্তর : সম্ভবত ১ থেকে দেড় কিলোমিটার।
প্রশ্ন : কৃষ্ণনগর হেডকোয়ার্টার।
উত্তর : জি।
প্রশ্ন : ঐ এলাকার ইউসুফ আলী মলিস্নক ছেলে আনোয়ার হোসেন মলিস্নক দেলোয়ার হোসেন মলিস্নক, লিয়াকত আলী মলিস্নককে চিনেন।
উত্তর : এ নামে কাউকে চিনি না।
প্রশ্ন : আপনি দেলাওয়ার হোসেন সিকদার বলেছেন, তার পিতার নাম রসুল সিকদার।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আদালতে বলেছেন, দেলাওয়ার হোসেন সিকদার বর্তমান সাঈদী সত্য নয়। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বর্তমান সিকদার।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : দেলাওয়ার হোসাইন সিকদার কথাটি ট্রাইবু্যনাল ও তদনত্মকারী কর্মকর্তার কাছে বলার পূর্বে কোথায়ও বলেননি?
উত্তর : সত্য নয়, এ কথা বলেছি।
প্রশ্ন : আপনি দেলাওয়ার হোসাইন সিকদার বললেন, আপনাকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ঘাড়ে দায় চাপানোর জন্যই দেলোয়ার হোসেন মলিস্নকের অভিযোগ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কাঁধে চাপানোর জন্য মিথ্যা বলেছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনারা কয় ভাই।
উত্তর : ৪ ভাই মারা গেছে। বর্তমান তিন ভাই আছি।
প্রশ্ন : যারা জীবিত তাদের পেশা কি।
উত্তর : কৃষিজীবী।
প্রশ্ন : আপনি নিজে পিতা বা আপনার পরিবারের সদস্যরা এলাকার জনপ্রতিনিধিত্বমূলক কাজে অংশ নিয়েছিল।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : পিরোজপুর শহর সদর ও জিয়ানগর একই সংসদীয় এলাকা।
উত্তর : জি।
প্রশ্ন : আপনার এলাকায় স্বধীনতাবিরোধীর সংখ্যা বেশি না স্বাধীনতার পৰের সংখ্যা বেশি।
উত্তর : এই এলাকায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা পৰের লোকের সংখ্যা বেশি।
প্রশ্ন : রাজাকারের সংখ্যা কম।
উত্তর: কম।
প্রশ্ন : '৯৬, ২০০১ এই ২টি নির্বাচনে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব ঐ এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
উত্তর : হয়েছে।
প্রশ্ন : ২০০৮ সালে নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী করে অল্পসংখ্যক ভোটে পরাজিত হয়েছে।
উত্তর : অল্প ভোটে না বেশি বেশি তা জানি না। তবে হেরেছেন।
প্রশ্ন : দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুর থেকে নির্বাচিত হওয়ার পূর্বে সব সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়লাভ করত।
উত্তর : জি।
প্রশ্ন : ঐ এলাকায় বার বার পরাজয়ের কারণে ঈর্ষান্বিত হয়ে তারা আপনাকে দিয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : মাহবুবুল আলম হাওলাদার ও মানিক পসারী পিরোজপুরে দুটি মামলা করে সাৰী দেয়ার জন্য আপনাকে ডেকেছিল। আপনি যাননি।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি সাৰ্যে ৪ জনের নাম বলেছেন দানেশ মোলস্না, দেলাওয়ার হোসাইন সিকদার বর্তমান সাঈদী, সেকেন্দার সিকদার, মোসলেম মাওলানা। এরা কি আপনার এলাকার।
উত্তর : আমি যে চার জনের নাম বলেছি তাদের মধ্যে মোসলেম মাওলানা বাদুরা গ্রামের, সেকেন্দার হুগলাবুনিয়া, দেলাওয়ার হোসাইন সিকদার বর্তমান সাঈদী পারেরহাটে শ্বশুরবাড়িতে থাকত। দানেশ মোলস্না পারেরহাটে থাকতেন। তবে মূলবাড়ি বরইখালি।
প্রশ্ন : দানেশ আলী কী করতেন।
উত্তর : শিৰকতা করতেন।
প্রশ্ন : সেকেন্দার সিকদার।
উত্তর : তেমন কাজ করতেন না।
প্রশ্ন : মোসলেম মাওলানা কী করতেন।
উত্তর : কিছু করতেন না।
প্রশ্ন : দেলাওয়ার হোসাইন সিকদার বর্তমান সাঈদী।
উত্তর : দেলাওয়ার হোসাইন সিকদার বর্তমান সাঈদী তখন শুনেছি মৌলভী ছিলেন।
প্রশ : আপনি ৪০ বছরের পূর্বের ঘটনা যেভাবে বলছেন, সেটা মুখসত্ম না নোট করে।
উত্তর : ৪০ বছর আগের ঘটনা মুখসত্ম করে বলিনি। কোন নোটও রাখিনি।
প্রশ্ন : শানত্মি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী লোকেরা পাকিসত্মান রৰার জন্য সর্বপ্রকার সাহায্য সহযোগিতার অঙ্গীকার করেন এবং তারা বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরম্নদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন। উলিস্নখিত অঙ্গীকার গ্রহণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আরও বলেছেন, জোরপূর্বক নারীদের পাক সেনাদের হাতে তুলে দিতেন, দেখেছেন।
উত্তর : দেখিনি, শুনেছি।
প্রশ্ন : শোনা কথাটা বানোয়াট।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : মফিজকে নিয়ে অনেক অত্যাচার করেছে, পরে পালিয়েছে, অত্যাচারে কোথায় আঘাত পেয়েছে।
উত্তর : মফিজ আসার পর আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম।
প্রশ্ন : তার শরীরের কোথায়ও আঘাতের চিহ্ন ছিল।
উত্তর : সমসত্ম শরীরেই আঘাতের চিহ্ন ছিল।
প্রশ্ন : রক্তাক্ত।
উত্তর : পায়ের রানে, পিঠে, রক্তাক্ত জখম দেখেছি।
প্রশ্ন : কোন দিন কতৰণে দেখেছেন।
উত্তর : মফিজ যে রাতে পালিয়ে আসে, তার পরের দিন মানিক পসারীর বাড়িতে গিয়ে দেখেছি।
প্রশ্ন : মফিজের সঙ্গে কথা বলেছেন।
উত্তর : জি।
প্রশ্ন : কয়টায় পালিয়ে এসেছিল?
উত্তর : কথা হয়েছিল। শেষ রাতে অন্ধকারে পালিয়ে এসেছিল।
প্রশ্ন : আপনি, আপনার পরিবারের কেউ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। বাড়িঘরও ৰতিগ্রসত্ম হয়নি।
উত্তর : হয়নি।
প্রশ্ন : সম্পত্তি নেই।
উত্তর : ইহা সত্য নয়।
প্রশ্ন : দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে পাক সেনাবাহিনী, হিন্দু ও মুক্তিযুদ্ধের সপৰের শক্তির লোকদের দোকানপাট হাত উঁচু করে দেখিয়ে দেয় মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : খেয়াঘাটের কাছাকাছি গিয়ে লুটের মালামাল সত্মূপ দেখতে পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে ভাগাভাগি মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : পারেরহাটের বিপদসাহার মেয়ে ভানুসাহাকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নিয়মিত ধর্ষণ করত মর্মে যে বক্তৃব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ভানুসাহার বাবা ভাইকে জোরপূর্বক মুসলমান বানিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে বাধ্য করেছেন মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ভানুসাহার বাড়ি গেছেন।
উত্তর : পারেরহাটে বাজারের সামনে দোকানে গেছি। বাসায় যাইনি।
প্রশ্ন : দোকান কে চালাত।
উত্তর : বাবা পরিচালনা করতেন। ভাইয়েরা দেখাশোনা করতেন।
প্রশ্ন : আপনাদের এলাকার বর্তমান আওয়ামী লীগদলীয় এমপি ও সরকারী দল আওয়ামী লীগের পরামর্শে এবং আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ার সুবাদে তার বিরম্নদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত এবং আপনার বিরম্নদ্ধে পরিচালিত বিভিন্ন মামলা হতে খালাস পাওয়ার আশায় সহযোগিতার এবং চরের অবৈধ দখলকৃত জমি জবরদখল রাখার আশায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরম্নদ্ধে আনীত মিথ্যা মামলায় মিথ্যা সাৰ্য প্রদান করেছেন।
উত্তর : ইহা সত্য নয়।