আরেকবার ফাঁসি প্রাপ্য নিজামী-মীর কাসেম-কামারুজ্জামানের
প্রকাশিত: ১:৩৫ অপরাহ্ন, নভেম্বর ৩, ২০১৪
আপডেট: ১:৩৫ অপরাহ্ন, নভেম্বর ৩, ২০১৪
আনিস আলমগীর॥
হত্যা ও গণহত্যার দায়ে এক সপ্তাহের মধ্যে তিন আল-বদরের ফাঁসির রায় হলো। এর মধ্যে একটি চূড়ান্ত ফাঁসির রায়ও। অবিস্মরণীয়,অভূতপূর্ব ঘটনা এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে। গত ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আল-বদর বাহিনীর প্রধান মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং ২ নভেম্বর চট্টগ্রাম অঞ্চলের আল বদর প্রধান মীর কাসেম আলীর ফাঁসি প্রদান করেছেন। ৩ নভেম্বর দেশের সর্বোচ্চ আদালত আল বদর বাহিনীর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান কামারুজ্জমানের আপিল খারিজ করে ফাঁসির চূড়ান্ত রায় দিয়েছেন। এর আগে গত ৯ মে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এই তিন ঘৃণিত যুদ্ধাপরাধী মুক্তিযুদ্ধকালে যে সংগঠনের ব্যানারে কাজ করতো সে 'আল বদর' বাহিনীটি ছিল তাদের প্রধান সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর তৈরি 'ডেথ স্কোয়াড'। পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলাম 'আল বদর'নামক এই সংগঠনটি গঠন করেছিল হিটলারের গেস্টাপোর আদলে,কিন্তু নামকরণ করেছিল ইসলামের মহান নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর বদর যুদ্ধের নাম অনুসারে। তাদের এই আল বদর বাহিনীর সদস্য সংগ্রহ করা হতো পূর্ব পাকিস্তান ইসলামি ছাত্রসংঘের কর্মীদের থেকে। প্রতিটি ইউনিটে ৩১৩ জন করে সদস্য থাকতো। কারণ বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুসলিম সেনার সংখ্যা ছিল ৩১৩।
প্রকাশিত: ১:৩৫ অপরাহ্ন, নভেম্বর ৩, ২০১৪
আপডেট: ১:৩৫ অপরাহ্ন, নভেম্বর ৩, ২০১৪
আনিস আলমগীর॥
হত্যা ও গণহত্যার দায়ে এক সপ্তাহের মধ্যে তিন আল-বদরের ফাঁসির রায় হলো। এর মধ্যে একটি চূড়ান্ত ফাঁসির রায়ও। অবিস্মরণীয়,অভূতপূর্ব ঘটনা এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে। গত ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আল-বদর বাহিনীর প্রধান মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং ২ নভেম্বর চট্টগ্রাম অঞ্চলের আল বদর প্রধান মীর কাসেম আলীর ফাঁসি প্রদান করেছেন। ৩ নভেম্বর দেশের সর্বোচ্চ আদালত আল বদর বাহিনীর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান কামারুজ্জমানের আপিল খারিজ করে ফাঁসির চূড়ান্ত রায় দিয়েছেন। এর আগে গত ৯ মে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এই তিন ঘৃণিত যুদ্ধাপরাধী মুক্তিযুদ্ধকালে যে সংগঠনের ব্যানারে কাজ করতো সে 'আল বদর' বাহিনীটি ছিল তাদের প্রধান সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর তৈরি 'ডেথ স্কোয়াড'। পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলাম 'আল বদর'নামক এই সংগঠনটি গঠন করেছিল হিটলারের গেস্টাপোর আদলে,কিন্তু নামকরণ করেছিল ইসলামের মহান নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর বদর যুদ্ধের নাম অনুসারে। তাদের এই আল বদর বাহিনীর সদস্য সংগ্রহ করা হতো পূর্ব পাকিস্তান ইসলামি ছাত্রসংঘের কর্মীদের থেকে। প্রতিটি ইউনিটে ৩১৩ জন করে সদস্য থাকতো। কারণ বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুসলিম সেনার সংখ্যা ছিল ৩১৩।
'আল-বদর' নামটি ইসলামে অত্যন্ত মর্যাদাকর বিষয়। বদর যুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদেরকে বদরী বলা হতো। আর ওহুদের যুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদেরকে ওহুদী বলা হতো। এই দুই ঐতিহাসিক যুদ্ধ হযরত মুহাম্মদকে (সঃ) ধর্ম প্রবর্তকের মর্যাদার সঙ্গে রাষ্ট্রপ্রধানের মর্যাদাও প্রদান করেছিল। মদিনার ইসলামিক রিপাবলিকে এই বদরী এবং ওহুদীরা যতদিন বেঁচেছিলেন ততদিন বিশেষ মর্যাদা ভোগ করেছিলেন। অথচ মহান ও পবিত্র বদর যুদ্ধের নামটি এবং যোদ্ধার সংখ্যাকে নিয়ে তামাশা করেছে নিজামী, মীর কাসেম আলী এবং কামারুজ্জামান গং।
হিটলারের গেস্টাপো বাহিনীর মতো আল বদরদের কাজ ছিল সিভিলিয়ানদের থেকে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের ধরে এনে নির্যাতন চালানো এবং হত্যা করা। এরাও গেস্টাপোর মতো সিভিল ড্রেসে থাকতো এবং অস্ত্রধারী ছিল। তারা এতো নির্মম ছিল যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চেয়েও বাংলার মানুষ এদের বেশি ভয় পেত। প্রতিটি জেলায় জেলায় টর্চার ক্যাম্প খুলেছিল আল বদর বাহিনী। চট্টগ্রামে মীর কাসেম আলীর টর্চার ক্যাম্প ছিল পুরনো টেলিগ্রাফ রোডের ডালিম হোটেল। আর ঢাকায় নিজামীর টর্চার ক্যাম্প ছিল মোহাম্মদপুরের শরীরচর্চা কেন্দ্র। কামারুজ্জামানের টর্চার সেল ছিল শেরপুরে। মিলিটারিদের সঙ্গে নিয়ে শেরপুরের একটি গ্রাম ১৯৭১ সালে পুরুষশূন্য করে দিয়েছিল এই নরঘাতক। সোহাগপুর গ্রাম তখন থেকে 'বিধবা পল্লী'নামে পরিচিত।
'আল-বদর' নামটি ইসলামে অত্যন্ত মর্যাদাকর বিষয়। বদর যুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদেরকে বদরী বলা হতো। আর ওহুদের যুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদেরকে ওহুদী বলা হতো। এই দুই ঐতিহাসিক যুদ্ধ হযরত মুহাম্মদকে (সঃ) ধর্ম প্রবর্তকের মর্যাদার সঙ্গে রাষ্ট্রপ্রধানের মর্যাদাও প্রদান করেছিল। মদিনার ইসলামিক রিপাবলিকে এই বদরী এবং ওহুদীরা যতদিন বেঁচেছিলেন ততদিন বিশেষ মর্যাদা ভোগ করেছিলেন। অথচ মহান ও পবিত্র বদর যুদ্ধের নামটি এবং যোদ্ধার সংখ্যাকে নিয়ে তামাশা করেছে নিজামী, মীর কাসেম আলী এবং কামারুজ্জামান গং।
বদর যুদ্ধে মক্কার মুশরেকরা পরাজিত হয়েছিল এবং ৭৬ জন লোক যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বন্দি হয়েছিল মুসলমানদের হাতে। যুদ্ধে মুসলমান সৈন্য ছিল ৩১৩ আর শত্রু বাহিনীর সংখ্যা ছিল এক হাজার। যুদ্ধবন্দিদের মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। শুধু বন্দিদের মধ্যে যারা শিক্ষিত তাদের মুক্তিপণ স্থির হয়েছিল দুই বছর মদিনায় শিক্ষকতা করার বাধ্যবধাকতার মাঝে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার প্রক্রিয়ায় যখন যুদ্ধবন্দিদের রসুলুল্লাহর সামনে আনা হল তখন তাদের মধ্যে একজন নারীকে দেখা গেল। তিনি পরিচয় জানতে চাইলে ওই নারী জানালেন, তিনি হাতেম তাইয়ের কন্যা। হাতেম তাই ছিলেন পাক-ইসলামিক যুগে বিখ্যাত দাতা ব্যক্তি, যার নাম দানবীরের উপমা হিসেবে এখনও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। ওই নারী মুক্তিপণ দিতে চাইলেও মহানবী (সঃ) তার সম্ভ্রান্ততার পরিচয় জেনে মুক্তিপণ রহিত করে দিলেন। শুধু তাই নয়, ১০/১২ জন সাহাবাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তাকে সম্মানের সঙ্গে মক্কায় পৌঁছে দিতে। এই ঘটনা এ জন্যই উল্লেখ করলাম যাতে বুঝা যায় সম্ভ্রান্ত লোকের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ছিল রসুলের সুন্নত। অথচ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিজামীরা আল বদর বাহিনী গঠন করেছিলেন সম্ভ্রান্ত লোকদের জান, মাল, ইজ্জত- সব কিছু লুণ্ঠন করার জন্য। কুমুদিনি ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা আর পি সাহাকে হত্যা করার সময় তাদের কি সুন্নত পালনের কথা মনে ছিল না?হাতেম তাইয়ের কন্যা যেমন মুসলমান ছিলেন না, আর পি সাহার মতো দানবীরও মুসলমান ছিলেন না। আর পি সাহার প্রতি নবযুগের তথাকথিত আল বদরীরা কি কোনও বদান্যতা দেখিয়েছিলেন?
হিটলারের গেস্টাপো বাহিনীর মতো আল বদরদের কাজ ছিল সিভিলিয়ানদের থেকে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের ধরে এনে নির্যাতন চালানো এবং হত্যা করা। এরাও গেস্টাপোর মতো সিভিল ড্রেসে থাকতো এবং অস্ত্রধারী ছিল। তারা এতো নির্মম ছিল যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চেয়েও বাংলার মানুষ এদের বেশি ভয় পেত। প্রতিটি জেলায় জেলায় টর্চার ক্যাম্প খুলেছিল আল বদর বাহিনী। চট্টগ্রামে মীর কাসেম আলীর টর্চার ক্যাম্প ছিল পুরনো টেলিগ্রাফ রোডের ডালিম হোটেল। আর ঢাকায় নিজামীর টর্চার ক্যাম্প ছিল মোহাম্মদপুরের শরীরচর্চা কেন্দ্র। কামারুজ্জামানের টর্চার সেল ছিল শেরপুরে। মিলিটারিদের সঙ্গে নিয়ে শেরপুরের একটি গ্রাম ১৯৭১ সালে পুরুষশূন্য করে দিয়েছিল এই নরঘাতক। সোহাগপুর গ্রাম তখন থেকে 'বিধবা পল্লী'নামে পরিচিত।
'আল-বদর' নামটি ইসলামে অত্যন্ত মর্যাদাকর বিষয়। বদর যুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদেরকে বদরী বলা হতো। আর ওহুদের যুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদেরকে ওহুদী বলা হতো। এই দুই ঐতিহাসিক যুদ্ধ হযরত মুহাম্মদকে (সঃ) ধর্ম প্রবর্তকের মর্যাদার সঙ্গে রাষ্ট্রপ্রধানের মর্যাদাও প্রদান করেছিল। মদিনার ইসলামিক রিপাবলিকে এই বদরী এবং ওহুদীরা যতদিন বেঁচেছিলেন ততদিন বিশেষ মর্যাদা ভোগ করেছিলেন। অথচ মহান ও পবিত্র বদর যুদ্ধের নামটি এবং যোদ্ধার সংখ্যাকে নিয়ে তামাশা করেছে নিজামী, মীর কাসেম আলী এবং কামারুজ্জামান গং।
বদর যুদ্ধে মক্কার মুশরেকরা পরাজিত হয়েছিল এবং ৭৬ জন লোক যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বন্দি হয়েছিল মুসলমানদের হাতে। যুদ্ধে মুসলমান সৈন্য ছিল ৩১৩ আর শত্রু বাহিনীর সংখ্যা ছিল এক হাজার। যুদ্ধবন্দিদের মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। শুধু বন্দিদের মধ্যে যারা শিক্ষিত তাদের মুক্তিপণ স্থির হয়েছিল দুই বছর মদিনায় শিক্ষকতা করার বাধ্যবধাকতার মাঝে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার প্রক্রিয়ায় যখন যুদ্ধবন্দিদের রসুলুল্লাহর সামনে আনা হল তখন তাদের মধ্যে একজন নারীকে দেখা গেল। তিনি পরিচয় জানতে চাইলে ওই নারী জানালেন, তিনি হাতেম তাইয়ের কন্যা। হাতেম তাই ছিলেন পাক-ইসলামিক যুগে বিখ্যাত দাতা ব্যক্তি, যার নাম দানবীরের উপমা হিসেবে এখনও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। ওই নারী মুক্তিপণ দিতে চাইলেও মহানবী (সঃ) তার সম্ভ্রান্ততার পরিচয় জেনে মুক্তিপণ রহিত করে দিলেন। শুধু তাই নয়, ১০/১২ জন সাহাবাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তাকে সম্মানের সঙ্গে মক্কায় পৌঁছে দিতে। এই ঘটনা এ জন্যই উল্লেখ করলাম যাতে বুঝা যায় সম্ভ্রান্ত লোকের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ছিল রসুলের সুন্নত। অথচ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিজামীরা আল বদর বাহিনী গঠন করেছিলেন সম্ভ্রান্ত লোকদের জান, মাল, ইজ্জত- সব কিছু লুণ্ঠন করার জন্য। কুমুদিনি ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা আর পি সাহাকে হত্যা করার সময় তাদের কি সুন্নত পালনের কথা মনে ছিল না?হাতেম তাইয়ের কন্যা যেমন মুসলমান ছিলেন না, আর পি সাহার মতো দানবীরও মুসলমান ছিলেন না। আর পি সাহার প্রতি নবযুগের তথাকথিত আল বদরীরা কি কোনও বদান্যতা দেখিয়েছিলেন?
এই বিচার নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টিটা নতুন না। বিতর্ক সৃষ্টির জন্য যেমন এখানে লোক রয়েছে তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টাকা ছিটানো হয়েছে। এক মার্কিন লবিস্ট ফার্মCassida & Associates কে ২৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে আল বদর মীর কাসেম আলী(ডেইলি স্টার ৩ নভেম্বর ২০১৪)।
বহু হত্যার নায়ক নিজামী এবং তার আল বদর বাহিনীর এই 'নায়ক'রা। এতো সব অপকর্মের মধ্যে আদালতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ১৯৮৫ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাসেমের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, নির্যাতনের ১৪টি অভিযোগের মধ্যে আটটি সন্দেহাতীতভাবে ও দুটি আংশিক প্রমাণিত হয়েছে। আংশিক প্রমাণিত দুটি অভিযোগে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ আটজনকে হত্যার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত আটটি অভিযোগে অপহরণ ও আটকে রেখে নির্যাতনের দায়ে মীর কাসেমকে সব মিলিয়ে ৭২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
একাত্তরে আল বদরের ময়মনসিংহ জেলা শাখা প্রধান ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের রায়ে হত্যা ও গণহত্যার দুটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরো দুটি অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৬টি অভিযোগের মধ্যে বুদ্ধিজীবী গণহত্যা,হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, সম্পত্তি ধ্বংস, দেশত্যাগে বাধ্য করা, আটক, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সংঘটনে সহযোগিতার আটটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে বুদ্ধিজীবী গণহত্যাসহ চার অভিযোগের প্রত্যেকটিতে তাকে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। বাকি চারটি অভিযোগে নিজামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আট অভিযোগে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
এই বিচার নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টিটা নতুন না। বিতর্ক সৃষ্টির জন্য যেমন এখানে লোক রয়েছে তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টাকা ছিটানো হয়েছে। এক মার্কিন লবিস্ট ফার্ম Cassida & Associates কে ২৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে আল বদর মীর কাসেম আলী (ডেইলি স্টার ৩ নভেম্বর ২০১৪)। এরাই দেশে-বিদেশে বিচার প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-এর মান নিয়ে হই চই করছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে দিয়ে শোরগোল তুলছে।
বহু হত্যার নায়ক নিজামী এবং তার আল বদর বাহিনীর এই 'নায়ক'রা। এতো সব অপকর্মের মধ্যে আদালতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ১৯৮৫ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাসেমের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, নির্যাতনের ১৪টি অভিযোগের মধ্যে আটটি সন্দেহাতীতভাবে ও দুটি আংশিক প্রমাণিত হয়েছে। আংশিক প্রমাণিত দুটি অভিযোগে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ আটজনকে হত্যার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত আটটি অভিযোগে অপহরণ ও আটকে রেখে নির্যাতনের দায়ে মীর কাসেমকে সব মিলিয়ে ৭২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
একাত্তরে আল বদরের ময়মনসিংহ জেলা শাখা প্রধান ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের রায়ে হত্যা ও গণহত্যার দুটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরো দুটি অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৬টি অভিযোগের মধ্যে বুদ্ধিজীবী গণহত্যা,হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, সম্পত্তি ধ্বংস, দেশত্যাগে বাধ্য করা, আটক, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সংঘটনে সহযোগিতার আটটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে বুদ্ধিজীবী গণহত্যাসহ চার অভিযোগের প্রত্যেকটিতে তাকে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। বাকি চারটি অভিযোগে নিজামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আট অভিযোগে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
এই বিচার নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টিটা নতুন না। বিতর্ক সৃষ্টির জন্য যেমন এখানে লোক রয়েছে তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টাকা ছিটানো হয়েছে। এক মার্কিন লবিস্ট ফার্ম Cassida & Associates কে ২৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে আল বদর মীর কাসেম আলী (ডেইলি স্টার ৩ নভেম্বর ২০১৪)। এরাই দেশে-বিদেশে বিচার প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-এর মান নিয়ে হই চই করছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে দিয়ে শোরগোল তুলছে।
'লিওনের কসাই' নামে পরিচিত (যেমন কাদের মোল্লাকে ডাকা হতো মিরপুরের কসাই) ক্লাউস বার্বি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। এক সময় ক্লাউস সিআইএ'র হয়ে তাদের সমাজতন্ত্রবিরোধী কার্যক্রমেও অংশ নেয়। আর্জেন্টাইন বিপ্লবী চে গুয়েভারা গ্রেফতারেও তার হাত আছে সন্দেহ করা হয়। জার্মান গোয়েন্দা সংস্থার হয়েও কাজ করে ক্লাউস। ফ্রান্স সরকার এক সময় জানতে পারে ক্লাউস বার্বি ল্যাটিন আমেরিকার কোনও দেশে আত্মগোপন করে আছে। তখন তারা ১০ জন গোয়েন্দা নিয়োগ করে ওই এলাকায় এবং ২৭ বছর পর বলিভিয়া থেকে ১৯৮৩ সালে তাকে ধরে এনে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে চূড়ান্ত দণ্ড প্রদান করে।
অনেকে প্রশ্ন করেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ১৭৫ জন সদস্য, যারা প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী চিহ্নিত হয়েছে তাদেরকে বাদ দিয়ে তাদের বাংলাদেশি সহযোগীদের বিচার হচ্ছে কেন? তারা ভুলে যান যে পাকিস্তানি মিলিটারিরা প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে গিয়ে হত্যা, লুণ্ঠন আর আগুন দিতে সক্ষম হতো না যদি না তাদের বাংলাদেশি দোসররা সাহায্য করতো, তাদেরকে রাস্তা চিনিয়ে, লোক চিনিয়ে দিত। বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি হয়েছিল ফ্রান্সেরও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রান্স দখল করে নিয়েছিল জার্মান বাহিনী। সেখানেও বাংলাদেশের জামায়াতের মতো ফ্রান্সের কিছু ভূমিপুত্র দখলদার জার্মান বাহিনীকে নরহত্যা, লুণ্ঠনে সহায়তা করেছিল। নিকোলাস ক্লাউস বার্বি ওদেরই অন্যতম একজন,যদিও তার জন্ম হয়েছিল জার্মানির বনে। যুদ্ধের পর ফ্রান্সে সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে ট্রাইব্যুলাল গঠন করে এইসব দালালদের বিচার করা হয়েছিল। নয় হাজার নাৎসি সহযোগীর তাৎক্ষণিক সাজা হয়েছে। দেড় হাজার সহযোগীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ৪০ হাজারকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এখনও ফ্রান্স তাদের সাজা দিচ্ছে। এ সব কিছু গোপনীয় নয়, ইন্টারনেটেই পাওয়া যাচ্ছে।
অনেকে প্রশ্ন করেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ১৭৫ জন সদস্য, যারা প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী চিহ্নিত হয়েছে তাদেরকে বাদ দিয়ে তাদের বাংলাদেশি সহযোগীদের বিচার হচ্ছে কেন? তারা ভুলে যান যে পাকিস্তানি মিলিটারিরা প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে গিয়ে হত্যা, লুণ্ঠন আর আগুন দিতে সক্ষম হতো না যদি না তাদের বাংলাদেশি দোসররা সাহায্য করতো, তাদেরকে রাস্তা চিনিয়ে, লোক চিনিয়ে দিত। বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি হয়েছিল ফ্রান্সেরও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রান্স দখল করে নিয়েছিল জার্মান বাহিনী। সেখানেও বাংলাদেশের জামায়াতের মতো ফ্রান্সের কিছু ভূমিপুত্র দখলদার জার্মান বাহিনীকে নরহত্যা, লুণ্ঠনে সহায়তা করেছিল। নিকোলাস ক্লাউস বার্বি ওদেরই অন্যতম একজন,যদিও তার জন্ম হয়েছিল জার্মানির বনে। যুদ্ধের পর ফ্রান্সে সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে ট্রাইব্যুলাল গঠন করে এইসব দালালদের বিচার করা হয়েছিল। নয় হাজার নাৎসি সহযোগীর তাৎক্ষণিক সাজা হয়েছে। দেড় হাজার সহযোগীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ৪০ হাজারকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এখনও ফ্রান্স তাদের সাজা দিচ্ছে। এ সব কিছু গোপনীয় নয়, ইন্টারনেটেই পাওয়া যাচ্ছে।
জামায়াতের টাকায় পশ্চিমা বিশ্বের কিছু ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকার যতোই ভাবুক না কেন, যতই বিচার প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করুক- গোলাম আযম,নিজামী, মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, সাকা চৌধুরী, সাইদী, মীর কাশেম,কামারুজ্জামান গংদের সাজা দিয়ে বাংলাদেশ আজ সঠিক পথেই এগুচ্ছে।
কিন্তু 'লিওনের কসাই' নামে পরিচিত (যেমন কাদের মোল্লাকে ডাকা হতো মিরপুরের কসাই) ক্লাউস বার্বি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। এক সময় ক্লাউস সিআইএ'র হয়ে তাদের সমাজতন্ত্রবিরোধী কার্যক্রমেও অংশ নেয়। আর্জেন্টাইন বিপ্লবী চে গুয়েভারা গ্রেফতারেও তার হাত আছে সন্দেহ করা হয়। জার্মান গোয়েন্দা সংস্থার হয়েও কাজ করে ক্লাউস। ফ্রান্স সরকার এক সময় জানতে পারে ক্লাউস বার্বি ল্যাটিন আমেরিকার কোনও দেশে আত্মগোপন করে আছে। তখন তারা ১০ জন গোয়েন্দা নিয়োগ করে ওই এলাকায় এবং ২৭ বছর পর বলিভিয়া থেকে ১৯৮৩ সালে তাকে ধরে এনে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে চূড়ান্ত দণ্ড প্রদান করে। বাংলাদেশ তাই যুদ্ধাপরাধী দালালদের সাজা দিয়ে নতুন কোনও দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে না, ফ্রান্স বহু আগেই সে প্রমাণ রেখেছে। বয়সের যে দোহাই দেওয়া হয় সেটাও ঠুনকো। ফ্রান্স ৮৭ বছরের আরেক দালাল রেখেছে মরিস পাপনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সাজা দিয়েছে। পাপন ১৬শ' ইহুদিকে ধরে প্যারিসের শহরতলীর একটি ক্যাম্পে পাঠানোর ব্যাবস্থা করেছিল।
জামায়াতের টাকায় পশ্চিমা বিশ্বের কিছু ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকার যতোই ভাবুক না কেন, যতই বিচার প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করুক- গোলাম আযম, নিজামী, মুজাহিদ, কাদের মোল্লা,সাকা চৌধুরী, সাইদী, মীর কাশেম, কামারুজ্জামান গংদের সাজা দিয়ে বাংলাদেশ আজ সঠিক পথেই এগুচ্ছে। সরকার স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর হলেও জাতির আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছে। ট্রাইব্যুনাল অপরাধীদের সাজা প্রদান অব্যাহত রেখেছেন। এদেরকে সাজা পেতেই হবে। তবে ইসলামের বদর যুদ্ধের সমগ্র মূল্যবোধকে বিকৃত করার কারণে, 'আল বদর' বাহিনী নাম ধারণ করে নিরীহ মানুষকে হত্যা, নির্যাতন, লুণ্ঠনের জন্য মুসলমানদের আদালতে নিজামী-কামারুজ্জামান-মীর কাসেমের মতো আল বদরদের আরেকটা বিচার হওয়া উচিত। আরেকবার ফাঁসি হওয়া উচিত তাদের।
লেখক: সাংবাদিক ও শিক্ষক
Email: anisalamgir@gmail.com
কিন্তু 'লিওনের কসাই' নামে পরিচিত (যেমন কাদের মোল্লাকে ডাকা হতো মিরপুরের কসাই) ক্লাউস বার্বি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। এক সময় ক্লাউস সিআইএ'র হয়ে তাদের সমাজতন্ত্রবিরোধী কার্যক্রমেও অংশ নেয়। আর্জেন্টাইন বিপ্লবী চে গুয়েভারা গ্রেফতারেও তার হাত আছে সন্দেহ করা হয়। জার্মান গোয়েন্দা সংস্থার হয়েও কাজ করে ক্লাউস। ফ্রান্স সরকার এক সময় জানতে পারে ক্লাউস বার্বি ল্যাটিন আমেরিকার কোনও দেশে আত্মগোপন করে আছে। তখন তারা ১০ জন গোয়েন্দা নিয়োগ করে ওই এলাকায় এবং ২৭ বছর পর বলিভিয়া থেকে ১৯৮৩ সালে তাকে ধরে এনে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে চূড়ান্ত দণ্ড প্রদান করে। বাংলাদেশ তাই যুদ্ধাপরাধী দালালদের সাজা দিয়ে নতুন কোনও দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে না, ফ্রান্স বহু আগেই সে প্রমাণ রেখেছে। বয়সের যে দোহাই দেওয়া হয় সেটাও ঠুনকো। ফ্রান্স ৮৭ বছরের আরেক দালাল রেখেছে মরিস পাপনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সাজা দিয়েছে। পাপন ১৬শ' ইহুদিকে ধরে প্যারিসের শহরতলীর একটি ক্যাম্পে পাঠানোর ব্যাবস্থা করেছিল।
জামায়াতের টাকায় পশ্চিমা বিশ্বের কিছু ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকার যতোই ভাবুক না কেন, যতই বিচার প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করুক- গোলাম আযম, নিজামী, মুজাহিদ, কাদের মোল্লা,সাকা চৌধুরী, সাইদী, মীর কাশেম, কামারুজ্জামান গংদের সাজা দিয়ে বাংলাদেশ আজ সঠিক পথেই এগুচ্ছে। সরকার স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর হলেও জাতির আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছে। ট্রাইব্যুনাল অপরাধীদের সাজা প্রদান অব্যাহত রেখেছেন। এদেরকে সাজা পেতেই হবে। তবে ইসলামের বদর যুদ্ধের সমগ্র মূল্যবোধকে বিকৃত করার কারণে, 'আল বদর' বাহিনী নাম ধারণ করে নিরীহ মানুষকে হত্যা, নির্যাতন, লুণ্ঠনের জন্য মুসলমানদের আদালতে নিজামী-কামারুজ্জামান-মীর কাসেমের মতো আল বদরদের আরেকটা বিচার হওয়া উচিত। আরেকবার ফাঁসি হওয়া উচিত তাদের।
লেখক: সাংবাদিক ও শিক্ষক
Email: anisalamgir@gmail.com
কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড বহাল
__._,_.___