Banner Advertiser

Tuesday, January 26, 2016

[mukto-mona] বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে: ২ : জিয়া রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা পূরণে যাদু মিয়াকে ব্যবহার করেছিলেন



বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে: ২

জিয়া রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা পূরণে যাদু মিয়াকে ব্যবহার করেছিলেন

মিজানুর রহমান খান | তারিখ: ২০-০৯-২০১০

'স্টিফেন আইজেনব্রাউনকে অনেকবারই আমাদের বাসায় দেখেছি', স্মরণ করেন মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ছেলে আনোয়ারুল গনি। তাহলে আপনিই কি সেই তরুণ, যে আইজেনব্রাউনকে ডেকে আনতে মার্কিন দূতাবাসে গিয়েছিলেন? প্রতিবেদকের এ প্রশ্নে সায় দেন আনোয়ারুল গনি। তাঁর বয়স এখন ৫৯। ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁর সঙ্গে কথা হয়। দীর্ঘ আলাপে প্রকাশ পায়, জিয়া যাদু মিয়াকে তাঁর রাজনৈতিক অভিলাষ পূরণে ব্যবহার করেছেন। আবার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেও ছাড়েননি। তবে জিয়া কিংবা বিএনপি সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করেননি গনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জিয়া দল গঠনে সেনা গোয়েন্দা সংস্থাকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করেছিলেন। ১৯৭৭ সালে যাদু মিয়াকে গৃহবন্দী ও তাঁর দুই ছেলেকে (আনোয়ারসহ) গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন। পরে জিয়া তাঁর আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপর যাদু মিয়া আবার জিয়ার সঙ্গে সক্রিয় হন। '৭৭ সালের গণভোট প্রশ্নে যাদু মিয়ার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের মতভেদ হয়। সে কারণে তাঁরা হয়রানির শিকার হন। আনোয়ারুল গনির ভাষায়, 'আমি যদিও ন্যাপ করতাম, কিন্তু আমার ভাই তরিকুল গনি (বর্তমানে সুদানে) তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। সাদা পোশাকের পুলিশ বাসা থেকে আমাদের ধরে নিয়ে গেল। প্রথমে মতিঝিল, পরে রমনা থানায়। ডিজিএফআই ও এনএসআই থেকে লোক এসে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করল। একদিন জিয়া নিজেই রমনা থানায় ফোন করলে আমরা ছাড়া পাই।'
'৮৫ সালের ১১ এপ্রিল যাদু মিয়ার ভাই মোখলেসুর রহমান সিধু মিয়া জাতীয় জাদুঘরের কথ্য ইতিহাস প্রকল্পকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও এ বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেন। বরেণ্য শিক্ষাবিদ সরদার ফজলুল করিম ও মুস্তাফা নূরউল ইসলাম যৌথভাবে এই সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। প্রথম আলোকে তাঁরা উভয়ে তা নিশ্চিত করেন। দুই ভাতিজার গ্রেপ্তারের ঘটনা সম্পর্কে সিধু মিয়া তাঁর ওই অপ্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বলেন, 'গণভোটের যে পোস্টার দেয়ালে সাঁটা হয়েছিল, সেগুলো নাকি তারা ছিঁড়েছিল, সেই অভিযোগে তাদের আটক রাখা হয়। যাদু মিয়ার দুই ছেলেকে প্রায় তিন সপ্তাহ, মানে গণভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত থানাহাজতে আটক রাখা হয়। তারা যাদু মিয়ার ছেলে, শুধু এ কারণেই আটক করা হয়েছিল।' সিধু মিয়ার দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জিয়ার বিএনপি গঠন-প্রক্রিয়ায় মদদ, গোয়েন্দা সংস্থা ও সরকারি অর্থব্যয়ের দিকটিও ফুটে উঠেছে।
ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সিধু মিয়া (ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের বাবা) পেশায় ব্যবসায়ী হলেও প্রগতিশীল ধারার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন। তিনি স্বীকার করেন, বিএনপি গঠন-প্রক্রিয়ায় তিনি নেপথ্যে তাঁর ছোট ভাইকে নানাবিধ পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং সেটা ছিল 'গণতন্ত্রে উত্তরণের স্বার্থে, ছোট ভাইকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর জন্য নয়।' 
গণভোট নিয়ে বিরোধ: সিধু মিয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, 'জিয়াউর রহমান হঠাৎ করেই যাদু মিয়ার সঙ্গে আলোচনা বন্ধ করে দিয়ে গণভোটের সিদ্ধান্ত নিলেন। যাদু মিয়া তো একেবারে খেপে লাল। সে আমাকে বলল, "জিয়া আমার সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। আমি একটা সংবাদ সম্মেলন করব।" আমি বললাম, "কীভাবে সংবাদ সম্মেলন করবে? এখন তো মার্শাল ল চলছে।" যাদু বলল, "না, সংবাদ সম্মেলন করবই"।'
সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয় যাদু মিয়ার মগবাজারের বাসা 'লুতেশিয়া'য়। সিধু মিয়ার সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, যাদু মিয়ার সেই সংবাদ সম্মেলনের বিবরণ কোনো দিন ছাপা হয়নি। কারণ, সেটা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে 'বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম' সংযোজনের জন্য কৃতিত্ব দাবি করেছিলেন। যাদু মিয়া তাঁর সংবাদ সম্মেলনে জিয়ার সেই দাবির সূত্র ধরে বললেন, 'উনি তো "বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম" যোগ করার কথা বললেন। তার আগে একটা লাইন ছিল "আউজুবিল্লাহি মিনাসশায়তোয়ানির রাজিম"—ওটা দেন নাই কেন?' এ ধরনের প্রশ্ন তুলে তিনি বেশ সমালোচনা করেন। এরপর যাদু সিধু মিয়াকে টেলিফোন করে বলেন, 'আমি তো যা বলার বলেছি। এখন তো আমার বাড়ি ঘেরাও। বাড়ি থেকে কাউকে বেরোতে দিচ্ছে না, কাউকে ভেতরেও আসতে দিচ্ছে না। যাদু মিয়াকে এভাবে তিন দিন রাখা হয়েছিল।'
যাদু মিয়া রেহাই পেলেন: জিয়া নিজে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে পাঁচ বছর (১৯৫৯-৬৪) ছিলেন। দল ভাঙা-গড়ায় তিনি গোয়েন্দা সংস্থাকে পদ্ধতিগতভাবে ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ-সংক্রান্ত একটি তথ্য হাজির করেছেন সিধু মিয়া। তাঁর কথায়, 'ওই ঘটনার সময় ডিজিএফআইয়ের প্রধান আমিনুল ইসলামের (এরশাদের প্রথম মন্ত্রিসভার যোগাযোগ উপদেষ্টা) পক্ষ থেকে একটা ফাইল দেওয়া হলো জিয়াউর রহমানের কাছে। তাতে যাদু মিয়াকে সামরিক আইনে গ্রেপ্তার করার কথা বলা হলো। জিয়া এরশাদসহ অন্যদের ডাকলেন। এরশাদ তখন ডেপুটি চিফ। মঞ্জুর ছিলেন সিজিএস। এরশাদ প্রথমেই নাকি বলেছিলেন (এটা যাদুর কাছ থেকে শোনা), "যাদু মিয়া আমার আত্মীয়। কাজেই আমি এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে থাকতে চাই না।" জিয়া এ কথা শুনে বলেছিলেন, "ইউ আর এক্সকিউজড।" এরশাদ উঠে চলে গিয়েছিলেন। মঞ্জুরের ওপর দায়িত্ব চাপে। মঞ্জুর বলেছিলেন, "যাদু মিয়া যে সামরিক আইন লঙ্ঘন করেছেন, সেটা আপনি কী করে জানলেন?" জিয়ার জবাব, "আমার কাছে টেপ আছে।" টেপ বাজানো হলো। টেপ শুনে দেখা গেল, সামরিক আইনকে তিনি আক্রমণ করেননি। জিয়াকেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেননি। এসব শোনার পর মঞ্জুর বললেন, "আমার ধারণা, মশিউর রহমান সামরিক আইনের কোনো ধারাই লঙ্ঘন করেননি। সুতরাং তাঁকে গ্রেপ্তার করার আমি কোনো যুক্তি দেখি না"।'
এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল গনি প্রথম আলোকে বলেন, 'আমার বাবা ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। কারণ গণভোট ছিল জিয়ার ব্যক্তিগত বৈধতার প্রশ্নের। এর সঙ্গে জাতীয় রাজনীতি ও গণতন্ত্রে উত্তরণের বিষয় ছিল না।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'হাজতে থাকাকালে ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের লোক জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তবে কয়েক সপ্তাহ নয়, আমরা দুই ভাই ১১ দিন হাজতবাস করেছিলাম। দুইবার রিমান্ডে আনা হয়। আমার বিয়ের তারিখ স্থির ছিল। হাজতবাসের কারণে তা পিছিয়ে যায়।' 
জিয়ার দুঃখ প্রকাশ: ওই সময় এনএসআইয়ের প্রধান ছিলেন এ বি এম সফদার। সিধু মিয়ার বিবরণ অনুযায়ী, 'জিয়া ওই বৈঠকে সফদারকে জিজ্ঞেস করলেন, "আপনার কী মত?" সফদার নাকি বলেছিলেন, "আমরা তো আগের সব খবর জানি স্যার। উনি তো আমাদের বন্ধু। হি ইজ অ্যা ফ্রেন্ড অব দি অথরিটি। আপনার সঙ্গে তো তাঁর অনেক আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তার করার পক্ষে আমি পর্যাপ্ত ভিত্তি বা কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।" যাদু মিয়া সে-যাত্রায় রেহাই পান। এরপর গণভোট হলো। গণভোটে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একটি করে ভোট পড়ল। বিদেশি পত্রপত্রিকায় কঠিন সমালোচনা বেরোল। ২১ এপ্রিল, ১৯৭৭ জিয়া রাষ্ট্রপতির শপথ নেন। এরপর কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দিতে লন্ডনে যান। ফিরে এসে জিয়া যাদুকে ডাকেন। "ভাই, এবার আপনি ছাড়া কেউ আর আমার মানসম্মান রক্ষা করতে পারবে না। মানসম্মান বলতে আর কিছু নেই।" যাদু মিয়া বললেন, "কেমন করে করব?" জিয়া বলেছিলেন, "আমাকে জনসাধারণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে দেন।" জিয়ার সঙ্গে তাঁর এসব কথা হলো অনেক রাত পর্যন্ত। তারপর সকাল ছয়টার দিকে যাদু মিয়ার ফোন পেলাম। ঈষৎ শঙ্কিত গলায় আমি বললাম, "কী হয়েছে তোমার?" বলল, "না, কিছু হয়নি। আপনি একটু আসেন।" আমি গেলাম। যাদু বলল, "জিয়া আমাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমি তো তাঁকে কথা দিয়ে এসেছি যে তাঁকে আমি জনসাধারণের সরাসরি ভোটে পাস করাব।" আমি বললাম, "কথা দিয়ে এসেছ, অথচ তুমি কি তা পারবে? তুমি একলা কথা দিয়ে এলে কেন? জিয়াউর রহমানকে জনসাধারণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার ক্ষমতা কি তোমার আছে?" যাদু মিয়া বলল, "না, আমি পারব না বলেই আপনাকে খবর দিলাম। কথা যখন দিয়ে এসেছি, এখন বলেন, আমি কী করতে পারি"?'
স্টিফেন আইজেনব্রাউন তাঁর সাক্ষাৎকারে অবশ্য যাদু মিয়ার সাংগঠনিক সামর্থ্যের প্রশংসা করেন। আইজেনব্রাউনের কথায়, 'যাদু মিয়ার কারণেই নতুন রাজনৈতিক দল বিএনপি '৭৯-র নির্বাচনে ২০৮টি আসন পেয়েছিল।'
সবুর খানের কাছে ব্র্যান্ডি: সিধু মিয়া তাঁর ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, 'আমরা একটা রাজনৈতিক রণকৌশল ঠিক করেছিলাম। আওয়ামী লীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অংশটিকে আমি বলেছিলাম "সাইলেন্ট মেজরিটি"। তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কিছু বলতেও সাহস পায় না। আবার তাকে সমর্থনও করতে পারছিল না। আমি বললাম, "এদের ডাকা যেতে পারে।'' যাদু মিয়া আমাকে বলল, "আওয়ামী লীগ সামরিক বাহিনীর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই প্রস্তাবিত জোটে আওয়ামী লীগের সে রকমের কোনো প্রতিষ্ঠিত নেতা আসতে পারবেন না।" আমি বললাম, "তাহলে ব্যাপারটা হবে কী করে? তাদের বাদ দিয়ে কিছু হলে সেটা হবে অত্যন্ত দুর্বল কিছু।" যাদু মিয়া বলল, "মুসলিম লীগকে আনতে পারব।" আমি বললাম, "মুসলিম লীগ মানেই তো সবুর খান। তাঁকে তো বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করবে না।" তখন যাদু বলল, "একটা কাজ করা যায়, সবুর ভাইকে কিছু ভালো ব্র্যান্ডি-ট্র্যান্ডি দিয়ে তাঁর সঙ্গে আজ রাতেই একটু কথা বললে হয় না! তাঁকে যদি কিছুদিনের জন্য সরিয়ে দিতে পারি, আর শাহ আজিজকে মুসলিম লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট করতে পারি, অর্থাৎ দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে সবুর খান যদি সরে যায়, তাহলে শাহ আজিজ আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারে।" সবুর সাহেবের কাছে খুব ভালো ব্র্যান্ডি নিয়ে গেলেন যাদু মিয়া। আর রাতের মধ্যেই সবুর সাহেব দু-এক মাসের জন্য শাহ আজিজকে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়ে দেশের বাইরে চলে গেলেন। এসব কিছু করার জন্য সব ধরনের টাকাকড়ির জোগান দিয়েছিল সরকার বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান। এ ঘটনার পরপরই শাহ আজিজ যাদু মিয়ার সঙ্গে যোগ দিলেন। এ ঘটনা ঘটেছিল "জাগদল" হওয়ার পর।'
উর্দু লেখা ও পায়ে হাঁটা: এভাবে একটা রাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি হলো। এর মধ্যে কাজী জাফরও (বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায়) ভিড়লেন। যাদু মিয়া ন্যাপকে আনলেন। সিধু মিয়ার মতে, এই প্লাটফর্ম থেকেই জিয়াকে প্রেসিডেন্ট করা হলো। কারণ, তাঁরা জানতেন যে জিয়াউর রহমানকে প্রেসিডেন্ট করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। তাঁর একটা জনপ্রিয়তা ছিল এবং সত্যি বলতে কি, তাঁকে রাজনীতিবিদ বানানোর যে প্রক্রিয়া, সেটা ছিল খুবই মজার একটা ব্যাপার।
সিধু মিয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, 'জিয়া কিন্তু বাংলা লিখতে-পড়তে জানতেন না। তিনি শেষের দিকে যা কিছুতে সই করতেন, সেটা করতেন শুধু বাংলায় 'জিয়া' লিখে। আপনারা যদি তাঁর সই করা ফাইল ইত্যাদি দেখেন, তাহলে এ ব্যাপারটা লক্ষ করবেন। করাচিতে তিনি লেখাপড়া শিখেছেন। যৎসামান্য বাংলা বলতে পারতেন। প্রথম দিকে তিনি বাংলায় যে বক্তব্য দিতেন, সেগুলো প্রথমে বাংলা উচ্চারণে উর্দুতে লিখতেন। লিখে তারপর তা-ই দেখে দেখে ভাষণ দিতেন। যা-ই হোক, ব্যক্তি হিসেবে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো বদনাম ছিল না। মানুষ তাঁকে পছন্দই করত। কিন্তু ভালো করে বক্তব্য দিতে পারতেন না। দিতে গেলে খালি হাত-পা ছুড়তেন। এসব দেখে-টেখে যাদু একদিন আমাকে বলল, "এ রকম হলে তাঁকে আমি কী করে চালিয়ে নেব?" আমি বললাম, দেখো, জিয়া বক্তৃতা দিতে পারে না ঠিক আছে। কিন্তু তিনি সবচেয়ে ভালোভাবে কী করতে পারেন, সেটা খুঁজে বের করো।' জবাবে যাদু বলল, হাঁটতে পারে একনাগাড়ে ২০ থেকে ৩০ মাইল পর্যন্ত। আমি বললাম, এই তো পাওয়া গেল সবচেয়ে ভালো একটা উপায়। তুমি তাঁকে সঙ্গে নিয়ে পাড়াগাঁয়ে হাঁটাও। হাঁটাও আর যেটা পারে, তাঁকে দিয়ে সেটাই করাও। গাঁও-গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাবে আর মানুষজনকে জিজ্ঞেস করবে, কেমন আছেন? প্রেসিডেন্ট, দেশের সামরিক বাহিনীর প্রধান, তিনি গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে, কানা-কানচি দিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন আর লোকজনের ভালোমন্দের খোঁজখবর করছেন, তাতেই তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠবেন। এভাবে দেখতে দেখতে তিনি বক্তৃতা দেওয়াটাও রপ্ত করে ফেললেন।'
জিয়ার জনপ্রিয়তা: ওই সময় ক্রেইগ বেক্সটার ছিলেন মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল কাউন্সেলর (১৯৭৬-৭৮)। আইজেনব্রাউনকে যাদু মিয়া যেসব তথ্য সরবরাহ করতেন, তা বেক্সটারও জানতেন। আইজেনব্রাউনের বস ছিলেন একদা সেনাবাহিনীতে থাকা বেক্সটার। তিনি পরে দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ (ইতিহাসে পিএইচডি, প্রফেসর ইমেরিটাস এবং আমেরিকায় বাংলাদেশ স্টাডিজ গ্রুপের দীর্ঘকালীন সভাপতি) হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। ২০০৮ সালে বেক্সটার মারা যান। বাংলাদেশি রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা তাঁকে বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবেই গণ্য করেন। জিয়ার আমন্ত্রণে বেক্সটারও সেনানিবাসের বাড়িতে আতিথ্য নিয়েছেন। বাংলাদেশের সেনাশাসন ও রাজনৈতিক বিষয়ে তাঁর একাধিক বই এবং এক ডজনের বেশি নিবন্ধ রয়েছে। আইজেনব্রাউন তাঁর সাক্ষাৎকারে বেক্সটারকে তাঁর পেশাদারি কূটনৈতিক জীবনের প্রভাবশালী গুরু হিসেবে বর্ণনা করেন। বেক্সটার তাঁর একটি বইয়ে লিখেছেন, 'মোশতাক ও সায়েম উভয়ে '৭৬ সালের আগস্টে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরুর অঙ্গীকার করেছিলেন। কারণ তাঁরা '৭৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সামরিক বাহিনীর একাংশ ভেবেছিল, নির্বাচন দেওয়ার সময় হয়নি। সায়েম ক্ষমতা নিয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু ও নির্বাচন দিতে সক্রিয় হন। প্রায় ৬০টি দল অনুমোদনের জন্য দরখাস্ত করেছিল। প্রাথমিকভাবে ২১টি দলকে অনুমোদনও দেওয়া হয়। কিন্তু সায়েমের মতামত অগ্রাহ্য করে '৭৬ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন স্থগিত করা হয়। সায়েম সিএমএলএ পদ থেকে ইস্তফা দেন। জিয়া সিএমএলএ হন। অনেক দল ও রাজনৈতিক নেতা নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্তে আপত্তি করেন। এর মধ্যে মোশতাক ও তাঁর ডেমোক্রেটিক লীগও ছিল। মোশতাকের কিছু সহযোগী এ কারণে গ্রেপ্তার হন।'
মওদুদ আহমদের বর্ণনায়, 'সায়েমকে মূলত প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।' বিচারপতি সায়েম নিজেও তাঁর বইয়ে লিখেছেন, 'তিনি স্বেচ্ছায় ক্ষমতা পরিত্যাগ করেননি।' মওদুদ এটা সমর্থন করেন।
জেনারেল জিয়ার সামনে নতুন দল করা ছাড়া অন্য বিকল্প ছিল কি? এ প্রশ্নের জবাবে মওদুদ প্রথম আলোকে জানান, জিয়ার বড় সুবিধা ছিল তাঁর জনপ্রিয়তা। স্টিফেন আইজেনব্রাউনের কথায়, 'প্রথম কথা হলো, দেশটি দরিদ্র ছিল। কয়েক বছর আগের যুদ্ধে দেশটি ছিল বিধ্বস্ত। চুয়াত্তরে দেশটি হলো দুর্ভিক্ষকবলিত। পঁচাত্তরে শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের ফলে গোটা দেশ যন্ত্রণাক্লিষ্ট হয়ে পড়ে। দেশটি ধীরে ধীরে বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে সেরে উঠছিল।' আইজেনব্রাউন এ অবস্থা থেকে উত্তরণে জেনারেল জিয়াকে অনেকটা কৃতিত্ব দেন। তাঁর কথায়, 'জিয়া দৃঢ় প্রশাসক, উদারপন্থী, তাঁর নীতিগুলো ছিল যুক্তিপূর্ণ। উপরন্তু বাংলাদেশের জনগণকে তিনি তাঁর নেতৃত্বে শামিল করতে পেরেছিলেন।' আবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন এড়িয়ে তাঁর সময়ের মার্কিন রাষ্ট্রদূত এডওয়ার্ড ই মাস্টার্সের জিয়া-বন্দনাকে তিনি সুনজরে দেখেননি। তবে জিয়ার জনপ্রিয়তা অর্জনের নেপথ্যের কারণ আইজেনব্রাউনের গুরু বেক্সটার বর্ণনা করেন এভাবে: 'জিয়া প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে দেশ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রাখতেন। তিনি সামরিক নেতা থেকে যেভাবে নিজেকে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে রূপান্তর করেছিলেন, তাতে বেশির ভাগ পর্যবেক্ষক বিস্মিত হন। পঁচাত্তরে উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন। সামরিক প্রশাসনের বড় অংশ ছিল তাঁর অধীনে। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয় ছিল তাঁর হাতে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে জাহির করার সুযোগ সীমিত। কিন্তু এটাও ঠিক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের সঙ্গে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের নির্ভরশীলতা রয়েছে।'
বেক্সটার লিখেছেন, 'জিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তি গড়ে তোলেন। "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী" হিসেবে পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ছিল তাঁর অধীনে। এর ফলে জিয়ার পক্ষে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখার সুযোগ ঘটে। জিয়া ক্রমশ রাজনীতিকের মতো আচরণ করেন। তিনি ব্যাপকভাবে সারা দেশ সফর করেন। তিনি সম্ভবত ফজলুল হক, মুজিবসহ অন্যান্য নেতার চেয়ে বেশি মাত্রায় গ্রাম-বাংলা সফর করেছিলেন।' (কাল শেষ কিস্তি)

http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-20/news/94920


বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে: ১

মার্কিন দূতাবাসকে গোপন বৈঠক সম্পর্কে জানাতেন যাদু মিয়া

মিজানুর রহমান খান | তারিখ: ১৯-০৯-২০১০

http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-19/news/94638


http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-19/news/94638


বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে: ৩

সেনাছাউনিতে বিএনপির জন্মকে ষড়যন্ত্রমূলক বলেন আইজেনব্রাউন

মিজানুর রহমান খান | তারিখ: ২১-০৯-২০১০

http://archive.prothom-alo.com/detail/news/95186

জিয়ার যেসব কর্মকাণ্ডের কথা জানে না অনেকেই! || মোঃ আমিনুল হক

http://abdullah-al-rahim-rayhan.info/2015/12/23/jiaur-rahman-bnp/

পুরনো পথেই বিএনপি
বাহাউদ্দীন চৌধুরী
http://oldsite.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=13&dd=2009-12-15&ni=2892


Watch the videos (the tips of the iceberg):

 
YouTube -  

 Killer faruk rashid interview



__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

[mukto-mona] Turks making money from all sides!



With such duplicity, ISIS is here to stay and thrive! Is this some zero sum game for the US? What is the goal? It can't differentiate foes from friends? Fool me twice, shame on me!

 

Israeli defence minister accuses Turkey of buying IS oil

http://www.bbc.com/news/world-europe-35415956



__._,_.___

Posted by: Shah DeEldar <shahdeeldar@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

Re: [mukto-mona] বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে: ১ : মার্কিন দূতাবাসকে গোপন বৈঠক সম্পর্কে জানাতেন যাদু মিয়া [2 Attachments]

[Attachment(s) from Jiten Roy included below]

Very informative article; it gives me a glimpse of political background of BNP. This article brought to light the story behind the creation of BNP; it was formed in full collaboration with CIA with the intent to reverse the course of Bangladesh.
I have been only speculating why Zia started rehabilitating Pakistani-collaborators right at the get-go.  Now, with these background information, I can, back my speculation with certainty.
The question remains – whether BNP has changed policies in 40 years?

Jiten Roy



From: "SyedAslam Syed.Aslam3@gmail.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com>
To: mukto-mona@yahoogroups.com
Sent: Monday, January 25, 2016 11:54 PM
Subject: [mukto-mona] বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে: ১ : মার্কিন দূতাবাসকে গোপন বৈঠক সম্পর্কে জানাতেন যাদু মিয়া

 
  জিয়াউর রহমানের সেনানিবাসের বাড়িতে গভীর রাতে বসত গোপন বৈঠক। বিএনপির জন্ম সেখানেই। সেই জন্মবৃত্তান্ত সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল কাউন্সেলর স্টিফেন আইজেনব্রাউন। একই বিষয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদের সঙ্গেও।  মিজানুর রহমান খানের তিন কিস্তির অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পড়ুন:

বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে: ১

মার্কিন দূতাবাসকে গোপন বৈঠক সম্পর্কে জানাতেন যাদু মিয়া

মিজানুর রহমান খান | তারিখ: ১৯-০৯-২০১০


 
বিএনপি গঠনে রাজনীতিকেরা প্রথম বৈঠক করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান সেনানিবাসের বাড়িতেই। বৈঠকগুলো হতো গভীর রাতে। এসব গোপন বৈঠক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানো হতো ঢাকার মার্কিন দূতাবাসকে। জিয়াউর রহমানের পক্ষে এ কাজ করতেন প্রয়াত মশিউর রহমান যাদু মিয়া। তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ-ভাসানী) করতেন। তাঁকে প্রধানমন্ত্রিত্বের টোপ দেওয়া হলেও কথা রাখেননি জিয়া। এমনকি তাঁর মৃত্যু আজও পরিবারের কাছে রহস্যাবৃত।
ঢাকার তখনকার মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল কাউন্সেলর স্টিফেন আইজেনব্রাউনের কাছে যাদু মিয়া গোপন বৈঠক সম্পর্কে তথ্য দিতেন। আইজেনব্রাউনের পেশাগত কূটনৈতিক-জীবনের শুরু পঁচাত্তরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বাংলাদেশ ডেস্কে।
আইজেনব্রাউন ২০০৪ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রবিষয়ক কথ্য ইতিহাস কর্মসূচির পরিচালক চার্লস স্টুয়ার্ট কেনেডিকে সাক্ষাৎকার দেন। এতে তিনি বিএনপির জন্মের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। ১৯৭৬-৭৮ ও ১৯৯৬-৯৮ সালে তিনি ঢাকায় মার্কিন পলিটিক্যাল অফিসার ও পলিটিক্যাল কাউন্সেলর ছিলেন।
যেভাবে আছে সেভাবেই থাক: সম্প্রতি প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আইজেনব্রাউন ও চার্লস স্টুয়ার্ট কেনেডির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে এ বিষয়ে তাঁদের কোনো বক্তব্য বা ব্যাখ্যা জানা সম্ভব হয়নি। সাবেক পেশাদার মার্কিন কূটনীতিক স্টুয়ার্ট কেনেডি এখন ভার্জিনিয়ায় থাকেন। এই প্রতিবেদকের কাছে গত ৩০ আগস্ট পাঠানো ই-মেইল বার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, 'আমি বাংলাদেশ সম্পর্কে অল্পই জানি। আমি কিছু বলে যদি ইতিহাসে ইতিবাচক কিছু যোগ না করতে পারি, তাহলে তা ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ ঘটাবে। তার চেয়ে বরং সাক্ষাৎকারগুলো যেভাবে আছে, সেভাবেই থাকুক।' আইজেনব্রাউন এই প্রতিবেদকের কাছে শুধু তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠাতে সম্মত হন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে আইজেনব্রাউনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। আইজেনব্রাউন জানিয়েছেন, তিনি এখন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও মার্কিন কংগ্রেস অনুমোদিত মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিবেদনসংক্রান্ত সমন্বয়ক হিসেবে কর্মরত আছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ সম্প্রতি প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিএনপির জন্ম-প্রক্রিয়ায় তাঁর ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মশিউর রহমান যাদু মিয়া এবং তিনি বিএনপির গঠন-প্রক্রিয়ায় বড় ভূমিকা রাখেন। তবে ১ সেপ্টেম্বর মওদুদ আহমদ এক প্রশ্নের জবাবে আইজেনব্রাউনের সঙ্গে তাঁর পরিচয়ের সুযোগ ঘটেছিল কি না, তা স্মরণ করতে পারেননি।
ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন কূটনীতিক আইজেনব্রাউন সেনানিবাসে জেনারেল জিয়াউর রহমান কীভাবে বিএনপির জন্ম দিয়েছিলেন, তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করেছেন। ২০০৪ সালে চার্লস স্টুয়ার্ট কেনেডির একটি প্রশ্নের সূত্রে বিএনপি প্রসঙ্গ আসে। আইজেনব্রাউন কথা প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি নামের একটি রাজনৈতিক সংগঠনকে কেন্দ্র করে তাঁর কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছিল। সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীসহ কয়েকজন রাজনীতিকের সঙ্গে যোগাযোগের কথাও স্মরণ করেছেন তিনি। এর মধ্যে 'অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সম্পর্কের' কথা বলেন জাতীয় পার্টির নেতা ও ইত্তেফাক-এর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর পরিবারের সঙ্গে। আবুল হাসান চৌধুরী তাঁর সঙ্গে জানাশোনার বিষয়টি প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন।
আইজেনব্রাউন বেশ নাটকীয়ভাবে এবং যতটা সম্ভব রসিয়ে বিএনপির জন্মবৃত্তান্ত তুলে ধরেছেন। তাঁর কথায়, '১৯৭৮ সালে বিএনপির জন্মের সঙ্গে আমার গল্পের মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। পুরান ঢাকায় (যাদু মিয়ার বাসা ছিল মগবাজারে) আমাদের গোপন বৈঠকগুলো হতো। এর সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম। জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি ডান ও বামপন্থীদের মধ্যকার প্রবল সক্রিয় অংশকে একত্র করেছিলেন। একদিকে মোল্লা, অন্যদিকে বামপন্থী—উভয়ের কাছ থেকে তিনি পরামর্শ নিতেন। বিএনপি গঠন-প্রক্রিয়ায় সেনানিবাসে যেসব গোপন বৈঠক হয়েছিল, তার বিবরণ আমি পেতাম। সে বিষয়ে যিনি আমাকে অবহিত করতেন, তিনি ছিলেন একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। যিনি পরবর্তীকালে জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভার সিনিয়র মিনিস্টার হয়েছিলেন।'
আইজেনব্রাউন বলেছেন, বাম ও ডানপন্থীদের নিয়ে দল গঠনের একটি প্রক্রিয়া তখন ছিল। মন্তব্য চাওয়া হলে মওদুদ আহমদ গত ২১ আগস্ট প্রথম আলোকে বলেন, 'সেটা তো একদম ঠিক কথা। সেটাই ঘটেছিল। কারণ, ন্যাপ থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা সংখ্যায় অনেক। প্রায় ৭০ জন এমপি ছিলেন ন্যাপ থেকেই। আপনি যদি তখনকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেন, তাহলে দেখবেন বামপন্থী দল থেকে বেশি এসেছিল। তখন শহীদ জিয়ার দলে আমরা যাঁদের বামপন্থী বলি, তাঁদের সংখ্যা এতটাই বেশি ছিল যে বিএনপিকে বলা যেত লেফট অব দ্য সেন্টার। যদিও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির যে বিধানটা বাহাত্তরের সংবিধানে ছিল, সেটা তিনি তুলে দিয়েছিলেন। '
'এক সপ্তাহ পরে ভ্রু নাচ': আইজেনব্রাউন তাঁর সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেন যে তিনি বিএনপির গঠন-প্রক্রিয়া সম্পর্কে ওয়াশিংটনকে বিস্তারিত অবহিত রাখতেন। তাঁর কথায়, '৭৮ সালের বসন্তে ঢাকার রাজনৈতিক বিষয় সম্পর্কে ওয়াশিংটনে প্রতিবেদন পাঠাতে পাঠাতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তখনকার বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে তেমন কোনো গল্প বলার কিছু নেই। কারণ, তখন রাজনীতি উন্মুক্ত ছিল না। তবে বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত কিছু ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে একটা সম্পর্ক বজায় রাখতে আমি সচেষ্ট ছিলাম।' আইজেনব্রাউনের এই সাক্ষাৎকারে অবশ্য বিএনপির গঠন-প্রক্রিয়ার প্রশ্নে শুধু যাদু মিয়ার সঙ্গেই ওই সময় তাঁর নিবিড় যোগাযোগের কথা উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে মওলানা ভাসানীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন যাদু মিয়া। দুই প্রবীণ সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ ও এবিএম মূসা অবশ্য নিশ্চিত করেন যে ভাসানী তাঁকে নিয়ে সংশয়গ্রস্ত ছিলেন। সাবেক ন্যাপের (ভাসানী) নেতা রাশেদ খান মেনন এ বিষয়টি সমর্থন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি মিশ্র চরিত্রের ব্যক্তিত্ব ছিলেন। গোঁড়া বুর্জোয়া স্বভাবের সঙ্গে তাঁর একটি গণমুখী দিকও ছিল। এর পর থেকে অব্যাহতভাবে পাকিস্তানি সামরিক প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন। একাত্তরে কলকাতায় গেলেও তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, 'বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি নিঃসন্দেহে বড় চরিত্র। সিনিয়র মিনিস্টার থাকাকালে হাসপাতালে আমি তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। ভাসানী ন্যাপের দক্ষিণপন্থী গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। বাহাত্তরের ১ অক্টোবর রাতে আমি ভাসানীর মুখে পাকিস্তানিদের দালালি করার জন্য জেলহাজতে থাকা যাদু মিয়াকে ভর্ৎসনা করতে শুনেছিলাম।' অপর এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, শুধু যাদু মিয়া নন, সেদিন জেনারেল জিয়ার দল গঠনের সমর্থকদের অনেকেই বর্তমান সরকারের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে আছেন।
জেনারেল জিয়া যখন সেনানিবাসের বাড়িতে গোপন রাজনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছিলেন, তখন এইচ এম এরশাদ সেনাবাহিনীর উপ-সেনাপ্রধান। এরশাদের শ্যালক মহিউদ্দিন হলেন যাদু মিয়ার জামাতা। এরশাদ মহিউদ্দিনকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও যাদু মিয়ার ছেলে শফিকুল গনি স্বপনকে প্রতিমন্ত্রী করেন। যাদু মিয়ার মেয়ে মনসুরা মহিউদ্দিন (মহিউদ্দিনের স্ত্রী) সাংসদ নির্বাচিত হন। যাদু মিয়ার মৃত্যুর পর তাঁর মেয়ে রিতা রহমানের বিয়ে হয় মেজর (অব.) খায়রুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি জেলহত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পান। পঁচাত্তরে তিনি ফারুক-রশীদদের সঙ্গে লিবিয়া যান। বিএনপি তাঁকে মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার করেছিল। আওয়ামী লীগের বিগত আমলে তাঁকে তলব করা হলে তিনি আর দেশে ফেরেননি।
স্টিফেন আইজেনব্রাউনের বর্ণনায়, 'আমি তৃতীয় যে ব্যক্তির দিকে নজর রাখছিলাম, তিনি পুরান ঢাকায় বাস করতেন। তাঁর নাম মশিউর রহমান। তিনি যাদু মিয়া বা ম্যাজিক ম্যান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পঁচাত্তরে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সঙ্গে বামপন্থী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠনে তিনি সহায়তা দিয়েছিলেন। এতে প্রতীয়মান হয়েছিল যে যাদু মিয়া সক্রিয় রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন। বাস করতেন পুরান ঢাকায়। আর বেলকনিতে বসে হুক্কা টানতেন। আমরা একত্রে বসে বাংলাদেশের রাজনীতি বিষয়ে মতবিনিময় করতাম। এ ঘটনার এক সপ্তাহ কিংবা আরও কিছুটা সময় পরে এক তরুণ মার্কিন দূতাবাসে এলেন। আমার সঙ্গে দেখা করলেন। তরুণটি জানালেন যাদু মিয়া আমার সঙ্গে অনতিবিলম্বে সাক্ষাৎ করতে চান। সুতরাং আমি রিকশায় চেপে পুরান ঢাকার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়লাম। তাঁর গায়ে বেশ সৌন্দর্যখচিত জামা-কাপড় লক্ষ করলাম। বেশ ফিটফাট। দাড়ি কামিয়েছেন। তাঁকে এমন কেতাদুরস্ত আমি আগে দেখিনি। এবারে চোখে পড়ল না হুক্কাটিও। আমি তাঁর ভ্রু নাচন (ক্ষমতার ঝিলিক) দেখলাম। একেবারে একজন নতুন মানুষ। ৭০-এর কোঠায় দাঁড়িয়ে কেমন নবীন হয়ে উঠেছেন। তিনি আমাকে বললেন, জেনারেল জিয়া একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান।'
উল্লেখ্য, জিয়া কখন রাজনৈতিক দল করতে চান, সেটা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বিরাট প্রশ্ন। সে কারণে মওদুদ আহমদকে প্রশ্ন করি, আপনার কি এটা স্মরণে আছে যে জেনারেল জিয়া আপনাদের ডেকে দল করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছিলেন, নাকি আপনারাই তাঁকে উৎসাহিত করেছিলেন। মওদুদ বলেন, 'আমরা তাঁকে সহায়তা দিয়েছি। তিনি ছিলেন খুবই তীক্ষ ।' মওদুদ আহমদ ২০০০ সালে প্রকাশিত গণতন্ত্র এবং উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ শীর্ষক বইয়ে উল্লেখ করেন, 'রাজধানীর রাজপথে সৈনিক ও জনতার স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল রাতারাতি তাঁকে এক জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছিল। এই জনপ্রিয় সমর্থন অবলম্বন করে জিয়া সাফল্যজনকভাবে তাহের ও মোশতাককে দমন করতে সফল হন।
গভীর রাতে প্রথম সভা: '৭৮ সালের বসন্তে মশিউর রহমান আইজেনব্রাউনকে বলেছিলেন, জিয়াউর রহমান দল করতে চান। কিন্তু জিয়ার জানা নেই যে এটা কীভাবে করতে হবে। সুতরাং রাজনীতিতে যাঁরা অবসরে গেছেন, তিনি তাঁদের একটা সভা ডাকলেন। এই সভা ডাকা হয়েছিল গভীর রাতে। জিয়া তাঁদের কাছ থেকে উপদেশ নিলেন। সেই বৈঠকে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, যাদু মিয়া আমার কাছে তাঁদের নাম প্রকাশ করলেন।
আইজেনব্রাউনের সাক্ষাৎকারে সেই নামগুলোর উল্লেখ নেই। তবে সেনানিবাসের বাড়িতে পরবর্তীকালে গভীর রাত কোনো ব্যাপারই ছিল না। গভীর রাতই ছিল আকর্ষণ। মওদুদ আহমদের মতে, 'ক্ষমতায় আসার এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে জিয়া ব্যক্তিগতভাবে ও গোপনে নিজের অফিস ও বাড়িতে রাজনীতিবিদদের সঙ্গে দেখা করে সলাপরামর্শের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন।' 
এ বিষয়ে মওদদু আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, 'আমরা তো প্রতিদিন রাত তিনটা-চারটা পর্যন্ত ওনার ওখানে আলোচনা করতাম।' তাঁর তথ্য অনুযায়ী, '৭৭ সালের শেষ ডিসেম্বর বা '৭৮ সালের জানুয়ারির এক রাতে জিয়ার সেনানিবাসের বাসভবনে বসে একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার কাঠামো তৈরি করা হয়। '৭৮ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি জাগদল করা হয়।'
সেনানিবাসের বাড়িতে অনুষ্ঠিত ওই প্রথম বৈঠক সম্পর্কে আইজেনব্রাউন বলেন, 'আমি বেশ বুঝতে পারলাম সেই সভায় বামপন্থী ও দক্ষিণপন্থীদের সম্মিলন ঘটেছিল। যাদু মিয়ার মতো লোক ছিলেন বামপন্থা থেকে। আর ডানপন্থীদের মধ্যে মুসলিম লীগ ও অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দলের নেতারা। বাস্তবে তাঁরা প্রত্যেকেই ষাটের দশকের শেষভাগে শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এখন সেই সব লোক হয় কারাগারে কিংবা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। ঢাকার রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে তখন যাঁরা ছিলেন, তাঁরা হয় অতি বাম না হয় অতি ডান। সুতরাং জিয়া তাঁদের মধ্য থেকে বেছে বেছে কয়েকজনকে গোপনে সেনানিবাসে একত্র করেছিলেন। সেই বৈঠক মধ্য রাতে হয়েছিল।'
উল্লেখ্য, ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিস ইউজিন বোস্টারকে স্টিফেন আইজেনব্রাউন ছয় মাসের জন্য রাষ্ট্রদূত পেয়েছিলেন। বোস্টার '৭৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র দপ্তরকে পাঠানো এক বার্তায় বাংলাদেশের তৎকালীন রাজনৈতিক দৃশ্যপট সম্পর্কে একটি বিশ্লেষণ পাঠিয়েছিলেন। বোস্টার এতে লিখেছেন, 'বামপন্থী দলগুলোর মধ্যে চরম উপদলীয় কোন্দল বিরাজমান। তাদের সংগঠনের দলীয় কাঠামো এবং সদস্যপদ অস্পষ্ট। মওলানা ভাসানীর নামমাত্র নেতৃত্বে পরিচালিত পিকিংপন্থী বামপন্থীরা পুনর্গঠিত হয়েছেন। এর নেতৃত্ব দিয়েছেন মশিউর রহমান। তিনি দলের মহাসচিব হিসেবে আবির্ভূত হন। '৭৪ সালে ন্যাপ তিক্ত অভ্যন্তরীণ বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। মশিউর রহমান ও ডা. আলীম আল রাজি সংশোধনবাদীদের পক্ষে অবস্থান নেন। ওই সময় ন্যাপে বিতর্ক ছিল, সর্বহারার একনায়কতন্ত্র কায়েমের জন্য খাঁটি আদর্শবাদের নীতিতে অবিচল থাকা নাকি সমন্বয় ও সংশোধনবাদের পথে শ্রেণীহীন সমাজ অর্জনের পথে অগ্রসর হওয়া। কাজী জাফর আহমেদ ও রাশেদ খান মেনন তাঁদের প্রতিপক্ষ ছিলেন। '৭৪ সালে ন্যাপ-ভাসানী বিভক্ত হয়। কাজী জাফর ও মেনন গঠন করেন ইউপিপি। ডা. আলীম আল রাজিও নিজের দল গঠনের কথা ভাবছেন। তাই তিনি যাদু মিয়াকে ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।' 
১৯৭৬ সালে ভাসানীর মৃত্যুর পর যাদু মিয়া ন্যাপের সভাপতি হন। চল্লিশের দশকে তেভাগা আন্দোলন ছিল উত্তাল। তদনারায়ণ বর্মণ নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় যাদু মিয়া প্রধান আসামি হন। তিনিই গুলি করেছিলেন বলে মামলা হয়েছিল। সেই খুনের বিচার হয়নি। আলিপুরের আদালতে মামলা প্রত্যাহার হয়। রাশেদ খান মেনন প্রথম আলোকে বলেন, 'যাদু ভাই জিয়ার সঙ্গে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে আমি আর হায়দার আকবর খান রনো তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তিনি আমাদের বলেছিলেন, "বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা, আর্মি ছুঁলে ছত্রিশ ঘা। তাই বুঝেশুনে চলতে হবে"।'
স্টিফেন আইজেনব্রাউন তাঁর সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন, 'যাদু মিয়া আমাকে বললেন, সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিস্তারিত আপনার কাছে প্রকাশ করতে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সুতরাং যাদু মিয়ার সঙ্গে বৈঠক শেষে আমি দূতাবাসে ফিরলাম। সব কথা খুলে বললাম ক্রেইগ বেক্সটারকে (পলিটিক্যাল কাউন্সেলর)। তিনি তা জানিয়ে দিলেন রাষ্ট্রদূতকে। এ সম্পর্কে তখন পর্যন্ত আমাদের কিছুই জানা ছিল না। সুতরাং আমরা এ কথা দ্রুত জানিয়ে দিলাম ওয়াশিংটনকে। এর কয়েক দিন পর যাদু মিয়া আবার আমাকে ডেকে পাঠালেন। তিনি তখন আমাকে সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত রাত্রিকালীন ধারাবাহিক বৈঠক সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন। জিয়া কী করতে চান, কার কী চিন্তাভাবনা, কে কী বলেছেন ইত্যাদি। আমি তখন এসব আলাপ-আলোচনার বিষয় সম্পর্কে রিপোর্ট করেছি ওয়াশিংটনকে। সেই ঘটনাবলি সম্পর্কে আজ যাঁরা কৌতূহলী, তাঁরা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে আর্কাইভে কেব্ল (তারবার্তা) খুঁজে পেতে পারেন। সেখানেই রয়েছে জেনারেল জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দল গঠনের অনুপুঙ্খ ইতিহাস।'
Inline image 1 ঢাকা, শনিবার, ৩১ আগস্ট ২০১৩, ১৬ ভাদ্র ১৪২০, ২৩ শাওয়াল ১৪৩৪
বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে: ২

জিয়া রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা পূরণে যাদু মিয়াকে ব্যবহার করেছিলেন

মিজানুর রহমান খান | তারিখ: ২০-০৯-২০১০

বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে: ৩

সেনাছাউনিতে বিএনপির জন্মকে ষড়যন্ত্রমূলক বলেন আইজেনব্রাউন

মিজানুর রহমান খান | তারিখ: ২১-০৯-২০১০

জিয়ার যেসব কর্মকাণ্ডের কথা জানে না অনেকেই! || মোঃ আমিনুল হক

পুরনো পথেই বিএনপি
বাহাউদ্দীন চৌধুরী
http://oldsite.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=13&dd=2009-12-15&ni=2892


Watch the videos (the tips of the iceberg):

 
YouTube -  

 Killer faruk rashid interview




__._,_.___

Attachment(s) from Jiten Roy | View attachments on the web

2 of 2 Photo(s)


Posted by: Jiten Roy <jnrsr53@yahoo.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___