Banner Advertiser

Friday, May 12, 2017

[mukto-mona] please read



'তিস্তার কারণে দুই বাংলার মধ্যে সমস্যার টানাপোড়ন দেখা দিতে পারে

http://www.bhorerkagoj.net/print-edition/2017/05/13/145660.php

 পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর বাংলাদেশ বিরোধিতা এখন ধীরে ধীরে প্রকাশ্য রূপ নিচ্ছে। বিশেষত: এবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লী সফরের পর মমতার আসল রূপ বেরিয়ে আসছে। তিস্তা নিয়ে তিনি এখন প্রায়শ: কথা বলছেন। সদ্য মমতা সাফ জানিয়েছেন, "বাংলাদেশকে পানি দিতে পারবো না। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশকে আমি ভালবাসি, পানি দিতে চাই, কিন্তু দেব কোত্থেকে? পানি থাকলে তো দেবো" মমতার মতে তিস্তায় বাংলাদেশকে দেয়ার মত অত জল নেইতিস্তা নিয়ে দিল্লিতে শেখ হাসিনা-মোদী মমতার ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি নুতন প্রস্তাব আনেন এবং বলেন, তিস্তার কথা বাদ দেন, এরচেয়ে বরং তোরসা উত্তরবঙ্গের অন্য নদী থেকে পানি নেন। শেখ হাসিনা এই প্রস্তাব আমলে আনেননি। মোদিও নন।  

এরমানে এই নয় যে মমতা তার প্রস্তাব থেকে সরে গেছেন। বরং তিনি এনিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে চাইছেন। তিনি এখন আত্রাই নদী ইস্যু তিস্তার সাথে জুড়ে দিতে চাইছেন। সম্প্রতি মমতা আত্রাই নদীর পানি কমে যাওয়ার জন্যে বাংলাদেশকে দায়ী করছেন। তিনি বলেছেনবালুরঘাটে পানির জন্যে দুর্ভোগের কারণ বাংলাদেশের বাঁধ নির্মাণ। তিনি সম্ভবত: তিস্তার বিপরীতে এই ইস্যুটি হাজির করবেন। মমতার আচরণে দিল্লি নাখোশ। শেখ হাসিনা দিল্লি বসেই তার অসন্তুষ্টি প্রকাশ করতে দ্বিধা করেননি। মমতাকে একহাত নিয়েছেন।  মমতা নাছোড়বান্দা। তিনি বলেছেন, তিস্তার বদলে অন্য নদী নিয়ে আলোচনা হোক। সপ্তাহ দুই আগে মমতা ফারাক্কা নিয়ে কথা বলেন। ছিটমহল প্রসঙ্গেও তিনি বলেন,ছিটমহলে আমাদের ছিলো ১০হাজার একর জমি, বাংলাদেশের হাজার একর; কিন্তু আমরা বাংলাদেশকে ১০হাজার একর দিলাম, আমরা পেলাম ৭হাজার একর জমি।  

মমতা হয়তো একই সাথে শেখ হাসিনা মোদিতে হার্ড-টাইম দিতে চাইছেন। মমতা প্রস্তাব করেছিলেন বাংলাদেশ থেকে আরো ইলিশ রফতানির। শেখ হাসিনা পাত্তা দেননি। মমতা এবার মালদা থেকে যাতে বাংলাদেশে কম আম যায় ব্যাবসায়ীদের সেই পরামর্শ দিয়েছেন।পশ্চিমবঙ্গের অনেকের ধারণা, তিস্তার কারণে দুই বাংলার মধ্যে সমস্যার টানাপোড়ন দেখা দিতে পারে। ত্রিপুরার রাজ্যপাল ডঃ তথাগত রায় স্পষ্ট করেই বলেছেন, তিস্তা চুক্তি হতে হবে। মোদীজি এটা চান। তিনি বলেনঅববাহিকায় বাংলাদেশের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। আমরা এই দায় এড়াতে পারিনা। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের সাথে যদি সিন্ধু নদের চুক্তি হতে পারে তাহলে বন্ধু বাংলাদেশের সাথে তিস্তা হবেনা কেন? তিস্তা না হবার কোন যৌক্তিক কারণ নেই। তিস্তায় জল নেই, এই যুক্তি ডঃ রায় মানতে রাজি নন। তারমতে, একটি মহল বাংলাদেশ-ভারত সু-সম্পর্ক চায়না। তারা পাকিস্তানকে খুশি করতে চায়।  

মমতার রাজ্যে পাকিস্তানপন্থীরা তৃণমূলের ভোটব্যাংক। কদিন আগে কলকাতা গিয়েছিলাম। তিস্তা নিয়ে অনেকের সাথে কথা হয়েছে। তিস্তা চুক্তি হতে কারো তেমন আপত্তি দেখিনি। অনেকের বক্তব্য, মমতা তার ভোটব্যাঙ্ক ঠিক রাখতে তিস্তা দেবেন না। মমতার ভোটব্যাঙ্ক পশ্চিমবঙ্গের ইসলামী মৌলবাদীরা। এই গোষ্ঠীর নেতা ইমরান-সিদ্দিকুল্যা বাহিনী। এরা এন্টি শেখ হাসিনা। এন্টি মোদী। কিন্তু প্রো-পাকিস্তানি। : তথাগত রায় সম্ভবত: ঈঙ্গিত দিতে চেয়েছেন। বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থনে কলকাতায় বিশাল সমাবেশ হয়েছিলো মমতার পূর্ণ সমর্থনে। আমাদের শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধেও কলকাতার মোল্লারা মমতার কাঁধে ভর করে সমাবেশ করেছিলো। মমতা এই ইসলাম পন্থী গোষ্ঠীকে নাখোশ করতে চাচ্ছেন না। এবার এমনকি ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মধ্যস্থতাও কাজে লাগেনি।     

তিস্তা নিয়ে ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ-ভারত 'এডহক জলবণ্টন চুক্তি' স্বাক্ষর হয়। সেখানে বাংলাদেশ ৩৬% এবং ভারত ৩৯% জল পাবার কথা ছিলো। ভারতে জল একটি রাজ্য ভিত্তিক ইস্যু। ২০১১-তে মমতার 'অল-ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস' দিল্লীতে ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারের অংশ ছিলো। মমতার বিরোধিতায় তখন তিস্তাচুক্তি অনুমোদন পায়নি।তার বক্তব্য,এতে শুষ্ক মৌসুমে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল বিরান হয়ে যাব। ২০১১ সালে চুক্তির রূপরেখা ছিলো উভয় দেশ ৫০:৫০ পানি পাবে। দিল্লী তখন চাইছিলো ফারাক্কার মত তিস্তা সমস্যার সমাধান হয়ে যাক। মমতার বিরোধিতা তখন ভারতব্যাপী প্রচন্ড সমালোচিত হয়েছিলো। বাংলাদেশ ভারত ৫৪টি নদীর পানি শেয়ার করে থাকে। ১৯৭২ সালে 'জয়েন্ট নদী কমিশন গঠিত হলেও চুক্তি আছে মুখ্যত একটি, 'ফারাক্কা বা গঙ্গা ব্যারেজ', ৩০ বছরের চুক্তি, যা শেখ হাসিনার আমলে ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিলো।  

২০১১-তে মনমোহন সিং তিস্তা চুক্তি করতে চেয়েও ব্যর্থ হন। বর্তমানে মোদী সরকার ইচ্ছে থাকা সত্বেও তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারছেন নাগঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনার পর তিস্তা হচ্ছে দুদেশের মধ্যে প্রবাহিত চতুর্থ বিশাল আন্তঃসীমান্ত নদী। তিস্তার উৎপত্তি ভারতের সিকিম রাজ্যে। সিকিম হতে সেটি পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে এসে ব্রম্মপুত্র নদে  মিলিত হয়। তিস্তার মোট দৈর্ঘ ৪১৪ কিলোমিটার। এরমধ্যে ১৫১ কিমি সিকিমে, ১৪২ কিমি পশ্চিমবঙ্গ এবং ১২১ কিমি বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়। এটি মূলত: বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট নীলফামারীর অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত। এশিয়া ফাউন্ডেশনের ২০১৩ রিপোর্ট অনুযায়ী তিস্তা বাংলাদেশের ১৪% কৃষিযোগ্য জমি এবং জনসংখ্যার .% মানুষের জন্যে অপরিহার্য।  

তাহলে তিস্তা কি হবেনা? সম্ভবত: আপাতত: নয়। ২০১৯ সালটি গুরুত্বপূর্ণ। ওই সময়টিতে বাংলাদেশ পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন আছে। ভারতে লোকসভা নির্বাচনও সমসাময়িক সময়ে। পশ্চিমবঙ্গে মমতার বিদায়ের ঘন্টা বেজে গেছে। সারদা জংগী ইস্যুতে তৃণমূলের অবস্থা আরো কাহিল হবে। মমতার মৌলবাদ তোষণ সবার অপছন্দ। তাই তিনি এখন হিন্দু হবার চেষ্টা করছেন। বলছেন, বিজেপি আসল হিন্দু না, তিনিই আসল হিন্দু? এত কাজ হবে বলে মনে হয়নাতিনি গেলে তিস্তা হবে। এমনিতে দিল্লীর পক্ষে একটি নির্বাচিত সরকারকে বরখাস্ত করা বেশ শক্ত। তাই মমতার বিদায় পর্যন্ত অপেক্ষা ছাড়া সম্ভবত: আর কোন পথ খোলা নেই। এরমধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচনী দামামা বেজে উঠবে। নির্বাচনটা হোক, একটি জাতির ইতিহাসে দেড়-দুই বছর কিছুই না 

শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।

নিউইয়র্ক। মে ২০১৭। 

 



__._,_.___

Posted by: Sitangshu Guha <guhasb@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

[mukto-mona] মুজিবনগরঃ বাংলাদেশের প্রথম সরকার



বাংলার ইতিহাস ডেস্ক: ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। এই দিনটি বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন। আমাদের স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে দেশের আগামীদিনের প্রত্যাশিত দিক-নির্দেশনা, সাংবিধানিক এবং যৌক্তিক অধিকার রক্ষার জন্য মুজিবনগর সরকার গঠন করা তৎকালীন সময়ে অপরিহার্য ছিল।

১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকচক্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করতে না চাওয়ার কারণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এদেশের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা, বাংলার কৃষক শ্রমিক জনতা যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পতাকা হাতে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য শপথ নিয়েছিল তখনই মুজিবনগর সরকার গঠন করার প্রয়োজনীয়তা তৎকালীন বাংলার জনগণ উপলব্ধি করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের এই দিনে তদানীন্তন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহাকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। তৎকালীন সময়ে মেহেরপুর মুক্ত এলাকা হওয়ার কারণে এবং ১০ এপ্রিল এম. এন. এ ও এমপিদের কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে যুদ্ধ পরিচালনা ও পাক হানাদার বাহিনীকে আমাদের স্বদেশ ভূমি থেকে বিতাড়িত করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান ঘোষিত এবং নির্দেশিত পথে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের জন্য মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি (বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি), তাজউদ্দিন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলীকে অর্থমন্ত্রী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তৎকালীন কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়। এই দিন ১০ এপ্রিল গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। পবিত্র কোরান তেলওয়াতের পর বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন এবং নবগঠিত সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় এবং মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ও প্রধান সেনাপতি কর্নেল এম. এ. জি ওসমানী (পরবর্তীতে জেনারেল) বক্তব্য রাখেন। এমনিভাবেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সংসদের নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক সরকার বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করলো।

মুজিবনগর সরকার গঠনের প্রাক্কালে যে ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছিল তার ৬ষ্ঠ অনুচ্ছেদে লেখা ছিল, ''বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি জনগণের অবিসংবাদিত নেতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার অর্জনের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য বাংলার জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান" ঘোষণাপত্রের নবম অনুচ্ছেদে লেখা ছিল, ''যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ¬বী কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের উপর তাদের কার্যকরী কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করিয়াছে, সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকার বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি যে ম্যান্ডেট দিয়েছেন সেই ম্যান্ডেট মোতাবেক আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আমাদের সমবায়ে গণপরিষদ গঠন করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সমাাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য সেহেতু আমরা বাংলাদেশকে রূপায়িত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি এবং উহা দ্বারা পূর্বেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা অনুমোদন করছি।"

ঘোষণাপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, এতদ্বারা আমরা আরো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি যে, শাসনতন্ত্র প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ-রাষ্ট্র প্রধান পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। রাষ্ট্রপ্রধান প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক পদেও অধিষ্ঠিত থাকবেন। রাষ্ট্রপ্রধানই সর্বপ্রকার প্রশাসনিক ও আইন প্রণয়নের ক্ষমতার অধিকারী।

সদ্যসৃষ্ট রাষ্ট্রের সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা লাভের অদম্য স্পৃহায় মরণপণ যুদ্ধে লিপ্ত সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক জনগণ ও দেশী-বিদেশী সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন, মুজিবনগর সরকার গঠন করার ফলে বিশ্ববাসী স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামরত বাঙালিদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথশ সরকার ''মুজিব নগর সরকার" গঠন বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অনন্য গৌরবগাঁথা সাফল্যের স্বাক্ষরও বটে।

যে সকল মুক্তিযোদ্ধারা এদেশকে স্বাধীন করার জন্য গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল এবং নেতৃত্ব দিয়েছিল মুজিবনগর সরকার ছিল তাদের ঐক্য ও নির্দেশনার প্রতীক। মুজিব নগর সরকারে যারা দায়িত্বে ছিল তারাই মুলতঃ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। দেশকে শত্র" মুক্ত করার জন্য গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হলেও মুজিব নগর সরকারই হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম দায়িত্বশীল সরকার" এই সরকারের মূল দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যৌক্তিকতার প্রশ্নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা, বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে কর্তৃত্ব স্থাপন করা, মুক্তিযোদ্ধাদের তদারকি করা এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা, দেশের ভিতরে এবং বিদেশী সাংবাকিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা এবং পশ্চিমাদের অপপ্রচার প্রতিহত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা।

মুজিবনগর সরকারে আব্দুল মান্নানকে প্রেস, তথ্য রেডিও ও চলচ্চিত্র বিভাগের প্রধান, মো. ইউসুফ আলীকে ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান, মতিউর রহমানকে বাণিজ্য বিভাগের প্রধান, আমিরুল ইসলামকে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান এবং মেজর আব্দুর রবকে (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি উচ্চপদস্থ অনেক কর্মকর্তারা মুজিবনগর সরকারে দায়িত্ব পালন করেন। নুরুল কাদের খান, এস. এ সামাদ, খন্দকার আসাদুজ্জামান, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ড. সাদাত হোসাইন ও ড. আকবর আলী খান তাদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের পর পাড়ায় পাড়ায় মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হলেও মুজিব নগর সরকারই প্রথমে মুক্তিবাহিনীদের বিভিন্ন থানা থেকে অস্ত্র এবং কলকাতা ও আগরতলার ট্রেজারি থেকে টাকা পয়সা এনে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্যক যুদ্ধে সকল প্রকার সহযোগিতা করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের তদারকি করাসহ দেশের ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কর্নেল আতাউল গণি ওসমানী মুজিবনগর সরকারের নির্দেশে সারাদেশে ছয়টি জোনে ভাগ করে মুজিবনগরের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জাতীয় সেনা অফিসারদের দায়িত্ব প্রদান করেন। পশ্চিম জোনে দায়িত্ব পালন করেন আজিজুর রহমান এবং আশরাফুল ইসলাম। পূর্ব জোনে দায়িত্ব পালন করেন লে. কর্নেল এম এ রব, উত্তর জোনে মতিউর রহমান এবং আব্দুর রউফ, উত্তর-পূর্ব জোনে দেওয়ান ফরিদ গাজী এবং শামসুর রহমান খান, দক্ষিণ-পূর্ব জোনে নূরুল ইসলাম চৌধুরী এবং জহুর আহমেদ চৌধুরী, দক্ষিণ-পশ্চিম জোনে ফণি ভূষণ মজুমদার এবং এম. এ রউফ চৌধুরী। মুজিব নগর সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা কামনা করেন এবং তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে বলেই বাংলার জনগণসহ বিশ্ববাসী মনে করে।

মুজিব নগর সরকার ধীরে ধীরে দেশের সর্বস্তরে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে বিভিন্ন সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে ব্যক্তিদের দায়িত্ব প্রদান করেন, তারই ধারাবাহিকতায় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী, মোশাররফ হোসেন, আনিসুজ্জামান, খান সরাওয়ার মোরশেদ, স্বদেশ রঞ্জন দায়িত্ব পালন করেন। যুব ক্যাম্পের পরিচালক হিসেবে এস আর মীর্জা, তথ্য ও প্রচার বিভাগের পরিচালক হিসেবে এম. আর আকতার মুকুল, চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক হিসেবে আব্দুল জব্বার খান, চারুকলা বিভাগের পরিচালক হিসেবে স্থপতি কামরুল হাসান, স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক হিসেবে টি হোসাইন এবং ত্রাণের কমিশনার হিসেবে জে. জি ভৌমিক দায়িত্ব পালন করেন এবং বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ও হোসেন আলীকে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হয়। মুজিব নগর সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গই এই সকল স্তরে নিয়োগ প্রদান করেন।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে আশফাকুর রহমান খান, সহিদুল ইসলাম, টি. এইচ সিকদার, বেলাল মোহাম্মদ, তাহের সুলতান, কামাল লোহানী, নাসিমুল কাদের চৌধুরীকে বাংলা সংবাদ, আলী জাকেরকে ইংরেজী সংবাদ, আলমগীর কবীরকে ইংরেজী সংবাদের ভাষ্যকার, জাহিদ সিদ্দিকীকে উর্দু অনুষ্ঠানের প্রধান, সমর দাস এবং অজিত রায়কে সঙ্গীত, হাসান ইমামকে নাটকের প্রধান, আশরাফুল আলমকে বহিবির্ভাগের অনুষ্ঠান ধারণ এবং সাক্ষাৎকার বিভাগে, সৈয়দ আব্দুল শাকুর ও রেজাউল করিম চৌধুরীকে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

মুজিব নগর সরকারের মাধ্যমে ভারতীয় সৈন্যদের সকল ধরনের সমর্থন আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের অভিষ্ঠ লক্ষে পৌঁছাতে সহযোগিতা করেছে। ভারতীয় সৈন্যরা শুধুমাত্র আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিংই দেননি, যুদ্ধের প্রয়োজনীয় সরঞ্জমাদিও প্রেরণ করেছেন। যার ফলে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন এবং পাক হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করতে পেরেছেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার সৈন্যরা যখন আত্মসমর্পন করলো তখনই মুজিব নগর সরকার রাজধানী ঢাকায় এসে নতুন একটি দেশ বাংলাদেশের সকল দায়িত্ব বুঝে নেয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি যখন ভারতে নামলেন তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ভারত সরকার লালগালিচা সংবর্ধনা দিয়েছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখলে বাংলার জনগণ হৃদয় নিংড়ানো ভালাবাসা দিয়েই তাদের প্রথম রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বরণ করে নেয়। ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থাকে পরিশুদ্ধ করে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের ব্যবস্থার রূপরেখা প্রণয়ন করেন, যার ফলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।

মুজিব নগর সরকার হচ্ছে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম কার্যকরী সরকার, ১৭ এপ্রিল মুজিব নগর দিবসটি বাঙালি জাতির জীবনের এক অবিস্মরণীয় গৌরবগাঁথা দিন। জাতির জন্য এদিনটি একটি ঐতিহাসিক দিনও বটে। এই কারণেই বাংলাদেশের জনগণ দিবসটিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভিকা হিসেবে এবং জাতির চেতনাবোধ জাগ্রতের দিন হিসেবে পালন করে থাকে।

http://khabor.com/archives/105852


আরও পড়ুন:

মুজিবনগর সরকার - বাংলাপিডিয়া


Mar 4, 2015 - 
মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য গঠিত বাংলাদেশের প্রথম সরকার। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর ১০ এপ্রিল এ সরকার গঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা গ্রামে মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বৈদ্যনাথতলা গ্রামের নামকরণ হয় মুজিবনগর। মুজিবনগর .
..



মুজিবনগর সরকার গঠন প্রসঙ্গে


 



__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___