[Attachment(s) from Sitangshu Guha guhasb@gmail.com [mukto-mona] included below]
Please read my column. also poated below: আকায়েদ উল্ল্যাহ'র ঘটনার পরও কি আমরা চুপ থাকবো? http://www.bhorerkagoj.net/print-edition/2017/12/19/ 170498.php Subrata Biswas wrote an excellent piece, please see attached, published in weekly Ajkal this week.Please watch the video, 8min by Asad Noor.
Merry Christmas.Sitangshu Guhaআকায়েদ উল্ল্যাহ'র ঘটনার পরও কি আমরা চুপ থাকবো?
http://www.bhorerkagoj.net/
print-edition/2017/12/19/ 170498.php আকায়েদ উল্ল্যাহ 'সুইসাইড বোম্বার' হয়ে অনেক বিধর্মীকে মারতে চেয়েছিলো। এজন্যে সকল ধরণের প্রস্তুতি বা প্ল্যান-প্রোগ্রাম তার ছিলো। এমনকি ৯/১১-এর আদলে তারিখটিও তিনি বেছে নেন ১২/১১ বা ১১ই ডিসেম্বর ২০১৭। বিধি বাম। আকায়েদ সফল হননি। তিনি আহত হয়েছেন। তার ব্যর্থতায় কিছু নিরীহ মানুষ বেঁচেছে। সাম্প্রতিক কালে বিশ্বে অনেক আত্মঘাতী বোমা ফুটেছে, হাজারো হাজারো মানুষ মরেছে। মানবতার এই দুর্গতিতে মানুষ দু:খ পেয়েছে। চিৎকার করে বলেছে, ধর্মের নামে এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক। বন্ধ হয়নি। সর্বশেষ মিশরে একদল মুসলমান মসজিদের ভেতর ঢুকে আর একদল মুসলমানকে মেরেছে। পাকিস্তান বা মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশে এসব এখন দৈনন্দিন ঘটনা হয়ে গেছে। সেটা বাংলাদেশের গাঁয়ে লাগেনি। হোলি আর্টিজানের ঘটনায় দেশের মানুষ হোঁচট খেয়েছিলো। আকায়েদ উল্ল্যাহ'র ঘটনায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা হোঁচট খেলো! আকায়েদ উল্ল্যাহ বাংলাদেশী। ২০১১-তে আমেরিকা এসেছেন। স্বপ্ন পূরণের জন্যে নাকি বাঙ্গালীরা আমেরিকা আসেন, মানুষ মারাই কি উল্ল্যাহ'র স্বপ্ন ছিলো?
আকায়েদ উল্ল্যাহ এদেশে এসে রেডিক্যাল হয়েছেন, না দেশে থাকতেই রেডিক্যাল ছিলেন, এ প্রশ্ন স্বাভাবিক। একজন মানুষ যখন দেশ থেকে প্রবাসে আসেন, তিনি সাথে করে তার দোষগুন্, শিক্ষা-দীক্ষা সবই নিয়ে আসেন। আকায়েদ উল্ল্যাহ তাই এসেছেন। সেক্ষেত্রে দেশে থাকতেও তিনি কিছুটা চরমপন্থী মনোভাবাপন্ন ছিলেন তা স্বাভাবিক। প্রশ্ন হলো, আকায়েদ উল্ল্যাহ'র মত বিভ্রান্ত জঙ্গীর সংখ্যা দেশে কত? সংখ্যাটা খুব কম হবার কথা নয়? এরপর বোধহয়, দেশে জঙ্গী নাই, একথাটা না বলাই ভালো। স্কুলে আমরা ভাব-সম্প্রসারণ পড়েছিলাম, "অমঙ্গলকে হাসিয়া উড়াইয়া দিলে মঙ্গল সমেত উড়িয়া যাইবে"। দেশে জঙ্গী আছে। সমাজের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এরা বাড়ছে। মৌলবাদ এদের উৎসাহিত করছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ধর্মের খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির ফসল আকায়েদ উল্ল্যাহ। আকায়েদ উল্ল্যাহ প্রথম নন, হয়তো শেষও নন। দেশে ক্রমবর্ধমান মৌলবাদ হয়তো আরো এ ধরণের ঘটনার জন্ম দেবে। সেটা দেশে বা বিদেশ, যেখানেই হোক না কেন?
হোলি আর্টিজান হত্যাকান্ড আমাদের 'সুখনিদ্রা' ভাঙ্গতে পারেনি। গোটা হত্যাকান্ডটি, বিশেষত: ভারতীয় হিন্দু যুবতীর নৃশংস হত্যা যে ঘৃণা থেকে উত্থিত তা আমরা মানতে চাইনি। হয়তো এখনো তাই, আকায়েদ উল্ল্যাহ-কে কখনো জামাত-বিএনপি বা মুক্তিযোদ্ধার পুত্র বানিয়ে গা-বাঁচাতে চাইছি? আকায়েদ উল্ল্যাহ বাংলাদেশী। মুসলমান। এটাই তার পরিচয়। বিশ্ববাসী জেনেছে, আকায়েদ উল্ল্যাহ একজন বাংলাদেশী সন্ত্রাসী। ঘটনার দিন সকালে নিউইয়র্কের জ্যামাইকার একজন প্রিয়তোষ দে ডাক্তারের চেম্বারে অপেক্ষা করছিলেন। টিভিতে এ সংবাদ দেখানোর পর অপেক্ষারত এক কালো রুগী চিৎকার করে বলে ওঠে, 'বাংলাদেশী সন্ত্রাসী'! প্রিয়তোষ বিব্রত হন। জ্যামাইকা এলাকায় অনেক বাংলাদেশির বসবাস। অনেক কালোও থাকেন। ঐ কালো ব্যক্তি নিশ্চয়ই বাংলাদেশিদের সাথে পরিচিত? কুইন্সে এক স্কুলে এক শিক্ষিকাকে তার সহকর্মীরা বলে, 'এই তামার দেশের লোক কি করেছে দেখো'। এটা স্বাভাবিক। কেউ কিছু না বললেও আমাদের মাথাটা নীচু হয়ে গেছে।
না, এরবেশি কিছু হবেনা। ৯/১১-র পরেও হয়নি। নাইজেরিয়ায় চার্চ ভাঙ্গলে এদেশে কেউ মসজিদ ভাঙ্গে না? বা মুসলমানের বাড়িঘরে আগুন দেয়না? এই ঘটনা যদি বাংলাদেশে হতো, এবং গুজব ছড়িয়ে দেয়া হতো যে, এটা হিন্দুরা করেছে, তাহলে কি হতো কি ভাবা যায়? বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার পর কি ঘটেছিলো? বা সামান্য ঘটনার প্রেক্ষিতে ১৯৬৪ সালের দাঙ্গার ভয়াবহতা কি খুব দূরের? অথবা রামু। বা নাসিরনগর। তবে আকায়েদ উল্ল্যাহ ঘটনার পর প্রবাসী বাংলাদেশিরা 'লজ্জিত' বটে। কিছুটা বিব্রতও। সাফাই গাওয়া কিছুটা কমেছে। কারণ সন্ত্রাস এবার নিজের ঘরে। জ্যাকসন হাইটসে মানব বন্ধন হয়েছে। নিউইয়র্কের দশটি বাংলা সাপ্তাহিক একত্রে একটি পুরো পাতা কালো করে দিয়ে তাতে সন্ত্রাসের নিন্দা করেছে। এসব ভালো লক্ষণ। কারণ এতদিন দেখা গেছে, শুধু হালাল ফুড (হালাল রোজগার নয়), কবরস্থান, রোহিঙ্গা নিয়ে আন্দোলন। রামু, নাসিরনগর বা অন্যদের ঘটনায় কেউ মাঠে নামেননি। এতকাল সবাই পুরানো 'ভাঙ্গা রেকর্ড' বাজিয়েছেন। এবার সুরটা একটু ভিন্ন। এভাবেই সুর বদলায়। আরো বদলাবে। কারণ সম্ভবত: আকায়েদ উল্ল্যাহ আমাদের মনে ভীতি জাগিয়েছে। কারণ ধর্মের নামে আমরা সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিয়েছি এবং দিচ্ছি।
কেউ বলছেন, আকায়েদ উল্ল্যাহ হোমগ্রোন। বাংলাদেশের এতে কোন দায় নেই? প্রবাসী বাংলাদেশী হিসাবে আমরা কি দায় এড়াতে পারি? ক'দিন আগে বৃটেনের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা ষড়যন্ত্রের দায়ে এক বাংলাদেশিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। নাম নাঈমুর জাকারিয়া রহমান, তার জন্ম বাংলাদেশ। তিনিও কি হোমগ্রোন? বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং হোমগ্রোন কি আমাদের নুতন 'অজুহাত'? আর কত পাশ কাটিয়ে যাবো? নভেম্বর মাসের শেষ দিকে ভারতে যে দু'জন ধরা পড়লো, শামসাদ মিয়া ওরফে তুষার বিশ্বাস এবং রিয়াজুল ইসলাম ওরফে সুমন, তারা তো বাংলাদেশী? ভারতের মিডিয়া বলেছে তারা আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য এবং ভারতে সন্ত্রাসের জন্যে গিয়েছিলো। নিউইয়র্কের ওজন পার্কের ২২ বছরের পারভেজ আহমদের কথা মনে আছে? তিনি যাচ্ছিলেন আইসিস-এ যোগ দিতে। তার জন্ম বাংলাদেশে। ইন্টারপোল এ বছর আগষ্ট মাসে বাংলাদেশে জন্ম নেয়া কানাডিয়ান তাবিরুল হাসিব-কে সম্ভাব্য 'সুইসাইড বোম্বার' হিসাবে চিহ্নিত করে ওয়ারেন্ট জারি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে নেলাস মোহাম্মদ দাস-কে বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে বর্ণনা করে বাল্টিমোর সান বলেছে, তিনি মার্কিন সৈন্যদের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করছিলেন। হোলি আর্টিজান ঘটনার পর আইসিস যে তিনজনের ভিডিও প্রকাশিত করে আরো সন্ত্রাসের হুমকি দিয়েছিলো তাদের একজন সাবেক ইলেকশন কমিশনারের পুত্র তাহমিদ রহমান শফি? সিঙ্গাপুরে জুনে সন্ত্রাসে জড়িত থাকা বা পরিকল্পনার জন্যে ৪ বাংলাদেশির জেলের কথা নাইবা বললাম।
এ সবগুলো ঘটনা গত দেড় বছরের। এর আগের ঘটনার প্রসঙ্গ টানলাম না? ২০১৮-তে কি হবে? ঘটনা ধামাচাপা দেয়া আমাদের একটি মানসিক রোগ। সন্ত্রাস নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হওয়া দরকার। কেউ চায়না, বঙ্গবন্ধু'র বাংলাদেশ সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হোক? বুদ্ধিজীবীদের এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা থাকা দরকার, যা দেখা যাচ্ছেনা? সবাই মিলে যদি আমরা চুপচাপ থাকি তাহলে সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন আমাদের বলতে হবে, 'গড সেভ বাংলাদেশ'। কোন মনীষীর সেই বিখ্যাত উক্তিটি আবার স্মরণ করিয়ে দিই: 'কিছু সংখ্যক দুস্কৃতিকারীরা জন্যে একটি সমাজ ধ্বংশ হয়না, একটি সমাজ ধ্বসে পরে যখন ঐ সমাজের ভালো লোকগুলো কথা বলেনা বা প্রতিবাদ করেনা'। একজন সাইয়িদ রফিকুল হক ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ লিখেছেন, 'বাঙ্গালী মুসলমানরা ধর্মান্ধ, জঙ্গী ও সন্ত্রাসী হয়ে উঠছে, এর প্রমান আকায়েদ উল্ল্যাহ'। এ কথা আমরা মানতে রাজি নই। আসুন, আমরা আগে বাঙ্গালী হই। একজন ভালো বাঙ্গালী, ভালো মুসলমান বা ভালো হিন্দু হতে কোন আপত্তি নেই। সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।
১৬ ডিসেম্বর ২০১৭। নিউইয়র্ক।
__._,_.___