SitangshuGuha 646-696-5569
__._,_.___
SitangshuGuha 646-696-5569
Here is that fake ID, pseudonym Noyon Chatterjee, created by Zindabadwallahs to spread virulent communalism.
In our childhood, of course, we all read Upendrakishore Roy Chowdhury, father of the great Sukumar Roy, grandfather of Satyajit Roy. Now those same texts we read are being branded as something terrible, যেটা সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমান ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্যতামূলক পড়তে হচ্ছে।
My nana, Kobi Golam Mostafa, spent his entire professional life as a Bangla language teacher and text-book writer for children. And he included excerpts from Ramayana-Kahini in his 'reader' or paThyapushtak for school-going children. Generations of children grew up reading these wonderfully and delightfully rendered stories of Ramayana and Mahabharata by Upendrakishore Roy Chowdhury. I used these texts while I was teaching Bangla Language and Literature at Columbia University in NYC as a part of extending the cultural horizon of the students
Someone -- please investigate this Noyon Chatterjee. We have to use the arm of LAW (Section 57 of ICT Act) to stop spreading communal hatred and potential of communal violence.
From: pfc-friends@googlegroups.com <pfc-friends@googlegroups.com> on behalf of 'Raza Mia' via PFC-Friends <pfc-friends@googlegroups.com>
Sent: Wednesday, January 6, 2016 11:19 AM
Subject: {PFC-Friends} অষ্টম শ্রেণীতে আনন্দপাঠ বইয়ে রামায়ণ--অষ্টম শ্রেণীতে আনন্দপাঠ বইয়ে রামায়ণ
Noyon Chatterjee Official
Noyon Chatterjee Official, Kolkata, India. 14,051 likes · 7,967 talking about this. Official Page of Blogger Noyon Chatterjee!! Official Twitter:...
ছবিতে যেটা দেখতে পাচ্ছেন, সেটা কিন্তু ভারতের নয় বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক। বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড অনুমোদিত অষ্টম শ্রেণীতে আনন্দপাঠ (দ্রুত বাংলপঠন) নামক বইয়ে রামায়ণ অন্তুর্ভূক্ত করা হয়েছে, যেটা সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমান ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্যতামূলক পড়তে হচ্ছে।
উল্লেখ্য:
১) পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সচিব: বজ্র গোপাল ভৌমিক
২) বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়্যারম্যান: নারায়ন চন্দ্র পাল
৩) পাঠ্যপুস্তকে অধিকাংশ বইয়ে ছবি অঙ্কনকারীর নাম: সুদর্শন বাছার
৪) শিক্ষামন্ত্রীর প্রধান বুদ্ধিদাতা সচিব: মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ (সদ্য বদলিকৃত)
এ পাঠ্যপুস্তক পড়ে মুসলিম শিশু-কিশোররা রামায়নের আদর্শ অনুসারে নিজেদের জীবন গড়বে ?
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "PFC-Friends" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.
www.facebook.com Noyon Chatterjee Official, Kolkata, India. 14,051 likes · 7,967 talking about this. Official Page of Blogger Noyon Chatterjee!! Official Twitter:... |
'অস্ত্র ও গ্রেনেডের খবর পেতে আমার বুড়ো আঙুল কেটে দিয়েছিল মতিউর রহমান নিজামী। আমার চোখের সামনে গেরিলা যোদ্ধা বদি, রুমি, জুয়েল, আজাদ ও সুরকার আলতাফ মাহমুদকে নির্যাতন করেন নিজামী, মুজাহিদ ও ক্যাপ্টেন কাইয়ুম।' একান্ত সাক্ষাৎকারে মুক্তিযোদ্ধা বিচ্ছু জেলাল বুধবার প্রথম আলোকে এসব কথা বলেন। অপরদিকে, মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং কলেজে পাক আর্মিদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতেন নিজামী ও মুজাহিদ। এমন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী যুবক রুস্তম আলী মোল্লা। তিনি বলেন, 'পাক আর্মির পিকঅ্যাপ ভ্যানে করে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল কলেজে আসতেন নিজামী মুজাহিদ, মইনউদ্দিনরা। তাদের কাছে থাকত এলএমজি ও স্টেনগ্যান।'
মুক্তিযুদ্ধকালে নিজামীর অপরাধ কর্মকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী বিচ্ছু জালাল ও রুস্তম আলী মোল্লা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে, কিভাবে নিজামী-মুজাহিদরা পাক আর্মিদের সহযোগিতা করেছে। কীভাবে মুক্তিযোদ্ধা, বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।
বিচ্ছু জালালের চোখে নিজামী: ১৯৭১ সালের ১১ এপ্রিল মতিউর রহমান নিজামী ইস্কাটন গার্ডেন সার্কিট হাউস থেকে আমাদের এক বোনকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল নিজামীরা। সেই সময় যখন হিট অ্যান্ড রান পদ্ধতিতে ঢাকা শহরে পাকিস্তানি আর্মি এবং আল বদরদের ওপর চোরা গোপ্তা চালাচ্ছিলাম, তখন ৩০ আগস্ট আমি আল বদরদের হাতে ধরা পড়ি। নাখাল পাড়ায় এমপি হোস্টেলের পাশে একটা গলির কাছের একটা রুমে নিজামী আমাকে নিজ হাতে টর্চার করেছে। সেখানে আমার সহযোদ্ধা বদি, রুমি, জুয়েল, আজাদ, সুরকার আলতাফ মাহমুদ আরও কয়েকজন ছিল। তাদেরকে অর্ধমৃত অবস্থায় আমার চোখের সামনে মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, চৌধুরী মঈন উদ্দিন, ক্যাপ্টেন কাইয়ুমসহ আরও অনেকে নির্মমভাবে টর্চার করেছে।
খুর দিয়ে নিজামী আমার বুড়ো আঙুল কেটে দিয়েছিল জানিয়ে বিচ্ছু জালাল বলেন, আমার কাছে কী কী অস্ত্র আছে, আমার হ্যান্ড গ্রেডটা কোথায় রেখেছি তা জানার জন্য আমার ওপর টর্চার করেছে নিজামী। রুমী, বদি, আলতাফ ভাইয়ের আঙুল কেটেছে মতিউর রহমান নিজামী, মুজাহিদরা। রাইফেলের বাট দিয়ে আমার মাথার আঘাত করেছিল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ আমাকে একবার নির্যাতন করে, আরেকবার জুয়েল, বদি,, রুমিকে, আলতাফ মাহমুদকে টর্চার করেছে নিজামীরা। এমনকি অর্ধমৃত অবস্থায় তাদের টর্চার করেছে নিজামী, মুজাহিদ ও ক্যাপ্টেন কাইয়ুম। দুর্ধর্ষ আল বদর কমান্ডার নিজামীকে আমি দেখেছি, বাসায় বাসায় তল্লাশি চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে নিয়ে যেতে।
বিচ্ছু জালাল আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে দেখেছি মতিউর রহমান নিজামী আলী আহসান মুজাহিদরা বাসের মধ্যে কাঁদা দিয়ে লেপে কারফিউর মধ্যে যেকোনো ঘরের ভেতর ঢুকে যুবক ছেলেদের ধরে নিয়ে আসছে। তাদের নির্মমভাবে হত্যা করছে।
রুস্তম আলী মোল্লা: মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল কলেজের রুস্তম আলী মোল্লার বাবা নিরাপত্তা প্রহরীর দায়িত্বে ছিলেন। ওই কলেজের কোয়ার্টারেই থাকতেন তিনি। তখন তার বয়স ছিল একুশ। নিজামী ও মুজাহিদ প্রায় প্রতিদিনই ফিজিক্যাল কলেজে আসতেন। এ ব্যাপারে রুস্তম আলী মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, 'আমি তখন ওই কলেজে থাকতাম। আমার বাবাও সে'খানে থাকত। আমার বাবা নিরাপত্তা প্রহরী ছিল। মতিউর রহমান নিজামী প্রতিদিন মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল কলেজ ট্রেনিংয়ে আসতেন। কোনো দিন সকাল আসত আবার কোনো দিন বিকেলে আসত। পাক আর্মিদের সঙ্গে বসে চা-নাশতা করতেন নিজামী ও মুজাহিদ। তাদের সঙ্গে মিটিং করত। পাক আর্মিদের যে পিকআপ ভ্যান ছিল ওই পিকআপ ভ্যানে করে তিনি আসতেন। আর নিজামী, মুজাহিদ, মইনউদ্দিন, আশরাফ এলএমজি, স্টেনগান নিয়ে চলত। আমার চোখের সামনে কলেজে অগণিত মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে গণকবরও রয়েছে। নারীদেরও নির্যাতন করা হতো।
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/732505/ 'বদি-রুমি-জুয়েল-আলতাফ-ভাইয়ের-আঙুল-কেটেছিল-নিজামী'
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/732724/
মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের নীলনকশা বাস্তবায়নকারী গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনীর প্রধান মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ গতকাল বুধবার এ রায় দেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। মামলার কার্যক্রম শেষ হওয়ার প্রায় এক বছর পর এ রায় দেওয়া হলো। এটি ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার দশম রায়। এর আগে ট্রাইব্যুনাল-১ তিনটি ও ট্রাইব্যুনাল-২ ছয়টি মামলার রায় দিয়েছিলেন।
নিজামীর বিরুদ্ধে গঠন করা ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণ করতে পেরেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এর মধ্যে ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এই অপরাধগুলোর মধ্যে ছিল হত্যা, নারী ধর্ষণ, নিপীড়ন ও বিতাড়নের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং বুদ্ধিজীবীদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য চালানো হত্যাকাণ্ড।
এসব অভিযোগে বর্ণিত ঘটনায় মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবীসহ শতাধিক নিরস্ত্র মানুষ প্রাণ হারান, যা ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন। ট্রাইব্যুনালের প্রত্যেক সদস্য এসব অভিযোগে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে একমত। মানবসভ্যতাকে নাড়িয়ে দেওয়া এসব অপরাধ করার পরও আসামিকে যদি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া না হয়, তবে এ মামলায় ন্যায়বিচার মুখ থুবড়ে পড়বে।
১, ৩, ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সহযোগিতা করার দায়ে নিজামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনাল মনে করেন, এসব অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। বাকি আটটি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সেগুলো থেকে তাঁকে খালাস দেন ট্রাইব্যুনাল।
রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি মতিউর রহমান নিজামী গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনী গঠনেরও মূল হোতা ছিলেন। নিজামীর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীন আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, যাতে নিজামী নিজেও অংশ নিয়েছেন। তিনি রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার করেছেন, পবিত্র কোরআন ও হাদিসের অপব্যাখ্যা করেছেন। তিনি ও তাঁর বাহিনী মনেপ্রাণে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে সরাসরি অংশ নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য আজ পর্যন্ত নিজামী কোনো দিন অনুতাপও প্রকাশ করেননি।
ট্রাইব্যুনাল আরও বলেন, অথচ এটা বিশ্বাস করতেই কষ্ট হয়, স্বাধীনতার সক্রিয় বিরোধিতাকারী এমন এক ব্যক্তিকে এই রাষ্ট্রের মন্ত্রী করা হয়েছিল। তাঁকে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করা ছিল তৎকালীন সরকারের গুরুতর ভুল এবং মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রমহারা দুই লাখ নারীর গালে সরাসরি চপেটাঘাত। এ ধরনের লজ্জাজনক কাজ গোটা জাতির জন্য অবমাননাকর।
নিজামী ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শিল্পমন্ত্রী ছিলেন।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতেই গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এনে রাখা হয় নিজামীকে। চট্টগ্রামের দশ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নিজামী কাশিমপুর কারাগারে কনডেম সেলে ছিলেন।
গতকাল সকাল সাড়ে নয়টার মধ্যে ৭১ বছর বয়সী নিজামীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ। বেলা ১১টায় তাঁকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানা থেকে এজলাসে নিয়ে যান দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি, ধূসর রঙের কটি আর মাথায় জিন্নাহ টুপি পরা নিজামী নির্বিকার ভঙ্গিতে কাঠগড়ায় ঢোকেন। পরমুহূর্তেই এজলাসে ঢোকেন ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারপতি। বিচারকেরা নিজ আসনে বসার পর ক্লান্ত ভঙ্গিতে মাথার টুপি খুলে কাঠগড়ায় রাখা চেয়ারে হেলান দিয়ে বসেন নিজামী। রায় ঘোষণার প্রায় দেড় ঘণ্টাজুড়ে কাঠগড়ায় তিনি কোনো কথা বলেননি, বেশির ভাগ সময় চোখ বন্ধ করে ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী, দর্শনার্থীসহ শ দুয়েক মানুষে পরিপূর্ণ এজলাসের দিকে তাকিয়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, এই মামলার রায় দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকার কারণে বিভিন্ন মহল ও গণমাধ্যমে নানা কথা উঠেছে। এসব কথা আমলে নেওয়া ও জবাব দেওয়ার সুযোগ ট্রাইব্যুনালের নেই। তবে বিচারক বা আদালত সম্পর্কে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত, তাঁদের এসব কথার জবাব দেওয়ার সুযোগ থাকে না।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় ২০৪ পৃষ্ঠার। অন্যবারের মতো এবার সংক্ষিপ্ত রায় তৈরি করা হয়নি। তবে এজলাসে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো, আদালতের পর্যবেক্ষণ ও চূড়ান্ত আদেশ পড়ে শোনানো হবে।
বেলা ১১টা আট মিনিটে রায় ঘোষণা শুরু হয়। প্রথমে নিজামীর বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগ পড়ে শোনান বিচারপতি আনোয়ারুল হক। তিনি বলেন, মামলা প্রমাণের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ ৬৭ জন সাক্ষীর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করেছে। আর আসামিপক্ষ ১০ হাজার ১১১ জন সাক্ষীর দীর্ঘ তালিকা জমা দিয়েছিল। যেহেতু এই মামলায় আসামিপক্ষের কোনো প্লি অব অ্যালিবাই (অপরাধস্থলের অন্যত্র থাকার যুক্তি) নেই এবং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের দায় আসামির নেই, এ জন্য ট্রাইব্যুনাল আসামিপক্ষের সাক্ষীদের সংখ্যা কমিয়ে চারজনে নির্ধারণ করে দেন।
১১টা ৩৫ মিনিট থেকে রায়ের পর্যবেক্ষণ অংশ পড়ে শোনান বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিজামী ছাত্র সংঘের সভাপতি ছিলেন। সংগঠনটি বর্তমানে ছাত্রশিবির নামে পরিচিত। গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনী ছিল ছাত্র সংঘের সশস্ত্র শাখা, নিজামী যার মূল পরিকল্পনা ও গঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
দুপুর ১২টায় রায়ের চূড়ান্ত অংশ দোষী সাব্যস্তকরণ ও শাস্তি পড়া শুরু করেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
অভিযোগ, দোষী সাব্যস্তকরণ ও শাস্তি: নিজামীর বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ৪ জুন পাবনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাওলানা কছিমুদ্দিনকে অপহরণ করে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিজামীর উপস্থিতিতে তাঁকে নির্যাতন ও পরে ১০ জুন অন্য দুজনের সঙ্গে তাঁকে ইছামতী নদীর পাড়ে হত্যা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য-প্রমাণে এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নিজামীকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।
দ্বিতীয় অভিযোগ, নিজামীর পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে একাত্তরের ১৪ মে পাবনার রূপসী, বাউশগাড়ী ও ডেমরা গ্রামের প্রায় ৪৫০ জনকে হত্যা ও ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ করে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারেরা। ট্রাইব্যুনাল বলেন, মানুষের বিবেককে নাড়া দেওয়া ওই ঘটনা রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। এ জন্য আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো।
তৃতীয় অভিযোগ, ১৯৭১ সালের মে মাসের শুরু থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শারীরিক শিক্ষা কলেজে পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর ক্যাম্প ছিল। নিজামী ওই ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত করতেন এবং হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণে সহযোগিতা করতেন। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নিজামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।
চতুর্থ অভিযোগ, একাত্তরের ৮ মে নিজামীর পরিকল্পনায় রাজাকার ও আলবদর বাহিনী পাবনার করমজা গ্রামের ১০ জনকে হত্যা করে, চার নারীকে ধর্ষণ করে ও ঘরবাড়িতে আগুন দেয়। নৃশংস ঘটনায় নিজামীর সম্পৃক্ততা প্রমাণ করতে পেরেছে রাষ্ট্রপক্ষ। ট্রাইব্যুনাল বলেন, শাস্তি এমন হওয়া উচিত, যেন তা অপরাধের গভীরতাকে প্রতিফলিত করে। এ জন্য আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো।
নিজামীর বিরুদ্ধে পঞ্চম অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল নিজামীর সহযোগিতায় পাকিস্তানি সেনারা ঈশ্বরদী উপজেলার আড়পাড়া ও ভূতেরবাড়ি গ্রামে ২১ জনকে হত্যা করে এবং ঘরবাড়ি লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে। রাষ্ট্রপক্ষ এ অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় নিজামীকে খালাস দেন ট্রাইব্যুনাল।
ষষ্ঠ অভিযোগ, একাত্তরের ২৭ নভেম্বর নিজামীর নির্দেশে ও সংশ্লিষ্টতায় পাবনার ধুলাউড়ি গ্রামে রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা অভিযান চালিয়ে ৩০ জন নারী-পুরুষ-শিশুকে হত্যা করে। ট্রাইব্যুনাল বলেন, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামির সংশ্লিষ্টতা রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। এ জন্য আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো।
সপ্তম অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর নিজামীর দেওয়া তথ্য অনুসারে বৃশালিকা গ্রামের সোহরাব আলীকে তাঁর স্ত্রী-পুত্রের সামনে পাকিস্তানি সেনারা আটক ও হত্যা করে। এ অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নিজামীকে খালাস দেওয়া হয়।
অষ্টম অভিযোগ, একাত্তরের ৩০ আগস্ট নিজামী রাজধানীর নাখালপাড়ার পুরাতন এমপি হোস্টেলে আটক গেরিলাযোদ্ধা রুমী (জাহানারা ইমামের ছেলে), বদি, জালাল, জুয়েল ও আজাদকে রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আগেই হত্যার জন্য পাকিস্তানি সেনাদের প্ররোচনা দেন। এই অভিযোগটিও প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল নিজামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
নবম থেকে ১৫তম অভিযোগের একটিও প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। নবম অভিযোগে নিজামীর বিরুদ্ধে গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগ, দশম অভিযোগে দেশ থেকে বিতাড়ন এবং ১১ থেকে ১৪ নম্বর অভিযোগে বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধে উসকানির অভিযোগ আনা হয়েছে।
১৫তম অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের মে থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাঁথিয়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের রাজাকার ক্যাম্পে নিজামী নিয়মিত যাতায়াত করতেন এবং রাজাকার সামাদ মিয়ার সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র করতেন। এসব অভিযোগের একটিও রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে না পারায় এগুলো থেকে নিজামীকে খালাস দেন ট্রাইব্যুনাল।
নিজামীর বিরুদ্ধে ১৬তম ও শেষ অভিযোগ, ১৯৭১ সালে বিজয়ের উষালগ্নে দেশের বুদ্ধিজীবীদের ওপর ব্যাপক গণহত্যা চালায় আলবদর বাহিনী। ছাত্র সংঘ ও আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে ওই হত্যাকাণ্ডের দায় নিজামীর ওপর পড়ে। ট্রাইব্যুনাল বলেন, আলবদর বাহিনীর ওপর আসামির কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ছিল, এটা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পেরেছে। এ ছাড়া অন্তত তিনজন বুদ্ধিজীবী: ডা. আলীম চৌধুরী, ডা. আজহারুল হক ও ডা. হুমায়ুন কবির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজামী প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের এ অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
শাস্তিদান প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেন, শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে আসামির তিনটি বিষয় মাথায় রাখা হয়েছে। প্রথমত, আসামির রাজনৈতিক অবস্থান এবং আলবদর বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাবিত করার ক্ষমতা; দ্বিতীয়ত, অপরাধ সংঘটনে অধীনস্থদের সঙ্গে আসামির উৎসাহব্যঞ্জক অংশগ্রহণ এবং তৃতীয়ত, সহিংসতার ধরন ও ক্ষতিগ্রস্তদের নিদারুণ অবস্থা।
শাস্তি কার্যকর প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল বলেন, যখন যেকোনো একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর হবে, ওই সময় স্বাভাবিক নিয়মে বাদবাকি মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা একীভূত হয়ে যাবে। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অধিকার আসামির থাকবে।
দুপুর ১২টা ২৩ মিনিটে রায় পড়া শেষ হলে আসন ত্যাগ করেন তিন বিচারক। মৃত্যুদণ্ডের রায় শোনার পরও নির্বিকার নিজামী আবার টুপি পরে নেন, তারপর পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় যান। পরে তাঁকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় নিজামীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, 'এটা মোস্ট আনহ্যাপি জাজমেন্ট। আমরা এর বিরুদ্ধে আপিল করব।' তিনি বলেন, 'নিজামী ন্যায়বিচার পাননি। কোনো সাক্ষী বলতে পারেননি নিজামীকে হত্যা করতে দেখেছেন।'
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তুরিন আফরোজ বলেন, 'এ রায়ে এই সত্য প্রতিষ্ঠিত হলো যে নিজামী ও তাঁর দোসররা ধর্মবেত্তা হিসেবে নিজেদের দাবি করলেও আসলে তাঁরা পবিত্র কোরআন ও রাসুলের শিক্ষার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন।'
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দশম রায়। জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি
অন্য ৯ মামলার রায়
গোলাম আযমের ৯০ বছর, সাঈদী ও আবদুল আলীমের আমৃত্যু কারাদণ্ড। মুজাহিদ, কামারুজ্জামান, সা কা চৌধুরী, মুঈনুদ্দীন, আশরাফুজ্জামান, আবুল কালাম আযাদ ও কাদের মোল্লার ফাঁসি। কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর। গোলাম আযম ও আবদুল আলীমের কারাগারে মৃত্যু
১৬ অভিযোগ ও রায় অভিযোগ রায়
অপহরণ ও হত্যা যাবজ্জীবন
হত্যার ষড়যন্ত্র ও অংশগ্রহণ ফাঁসি
হত্যা ও নির্যাতনের ষড়যন্ত্র যাবজ্জীবন
হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের ষড়যন্ত্র ফাঁসি
হত্যা, নিপীড়ন ও সহযোগিতা খালাস
হত্যা, নিপীড়ন, বিতাড়ন ফাঁসি
অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যা যাবজ্জীবন
হত্যা ও নির্যাতনে অংশগ্রহণ যাবজ্জীবন
গণহত্যা ও নিপীড়ন খালাস
নিপীড়ন খালাস
উসকানি খালাস
উসকানি খালাস
উসকানি খালাস
উসকানি খালাস
ষড়যন্ত্র ও সহযোগিতা খালাস
বুদ্ধিজীবী হত্যা ফাঁসি
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/358231
নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: ১৩:৩৩, জানুয়ারি ০৬, ২০১৬