আকাশে উড়ল ড্রোন : তরুণ গবেষকদের শ্রম সফল : জাফর ইকবাল
মো. নাসির উদ্দিন, সিলেট
বুধবার বেলা ১২টা। শাবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সামনে সাস্টিয়ানদের ভিড়। সবাই অপেক্ষমাণ। শাবির আকাশে কখন উড়বে সাস্টিয়ানদের সাফল্য-প্রথম তৈরি ড্রোন। অবশেষে দুপুর ১টায় শাবির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আকাশে সফলভাবে উড়ল প্রথম তৈরি মানববিহীন ড্রোন। প্রায় আধা ঘণ্টা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে ড্রোনের উড্ডয়নের সূচনা করেন ড্রোন গবেষক টিমের তত্ত্বাবধায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। উড্ডয়নকালে প্রায় পঞ্চাশ সেকেন্ড আকাশে উড়ার পর ড্রোনটি সফলভাবে মাঠিতে অবতরণ করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাস্ট রোবটিক্স, আ্যরোনটিক্স অ্যান্ড ইন্টারফেসিং রিসার্চ গ্রুপের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও গবেষণা দলের প্রধান সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল। টিমের অন্য সদস্য একই বিভাগের ৪র্থ বর্ষের রবি কর্মকার এবং ২য় বর্ষের মারুফ হোসেন রাহাত। এ সময় আগন্তুক সহস্রাধিক দর্শনার্থী ও শিক্ষার্থীরা মুহুর্মুহু করতালিতে আশপাশ ভরিয়ে তুলেন। ড্রোনটি আকাশে ঘুরে সফলভাবে মাটিতে অবতরণ করা পর্যন্ত সবাই আনন্দে ফেটে পড়েন।
এ বিষয়ে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, 'ড্রোন তৈরি করতে তরুণ গবেষকরা অনেক চেষ্টা ও শ্রম বিনিময় করেছে। শেষ পর্যন্ত তারা সফল। তিনি বলেন, মূলত সেনাবাহিনীর জন্যই ড্রোন। তবে অন্য কাজেও এটি ব্যবহার করা যাবে। খুবই কম শব্দে চলা ড্রোনটি যেকোন জায়গায় গিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি তুলে বা হামলা করে চলে আসতে পারবে।' ড. জাফর ইকবাল বলেন, প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক এই ড্রোন বানানোর টাকা নিজের পকেট থেকেই তিনি ছাত্রদের দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা ক্লাসভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। তাই থিওরিটিক্যালভাবে ছাত্র নাবিলকে ড্রোন বানাতে বলি। তিনি বলেন, '২০-২৫ লাখ টাকা হলে একটি ভালোমানের ড্রোন বানানো সম্ভব হবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আমন্ত্রণ জানান তিনি।
যেভাবে তৈরি হলো ড্রোন
গবেষক দলনেতা সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল জানান, গত বছরের এপ্রিলে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম এ বছরের এপ্রিলে ড্রোন পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করা হবে। ঘোষিত সময়ের ৩ মাস আগেই মানববিহীন এয়ারক্রাফটের ম্যানুয়াল মুডে ড্রোনের পরীক্ষামূলক সফল উড্ডয়ন হয়। তবে এটা এখনও ড্রোনের বৈশিষ্ট্যে আসেনি। এটাকে এবার ড্রোনে রূপান্তরের কাজ চলছে। তবে ড্রোনের জন্য যে ডিসিসি (ড্রোন কন্ট্রোল সেন্টার) সেটার সফটওয়্যারের কাজ শেষ হয়েছে। যা দেখতে অনেকটা ফাইটার জেটের ককপিটের মতো। ডিসিরি সঙ্গে বর্তমান এয়ারক্রাফটের ইন্টারফোর্সিং শেষ হলে সেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এবং প্রয়োজনে ডিসিসির অপারেটরের সাহায্যে চালানো যাবে।
সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল জানান, ড্রোন বানাতে অনেক টাকা লাগে। আর্থিক স্বল্পতার কারণে প্রয়োজনের তুলনায় আমরা অল্প খরচে এটি ডেভলপ করেছি। যার পুরোটাই বহন করেছেন জাফর ইকবাল স্যার। প্রথম ড্রোন বানানোর জন্য সাফল্য একা নিতে রাজি নন নাবিল। তিনি বলেন, এটা সাস্টিয়ানদের সাফল্য। কারণ এখানে উপস্থিত সহপাঠিদের যেভাবে আগ্রহ আমাদের বানানো ড্রোনের সফল উড্ডয়ন দেখতে, তেমনি অন্য কেউ বানালে আমিও দৌড়ে আসতাম দেখার জন্য।
নাবিল জানান, চলতি বছরের প্রথম দিনেই এপ্রিলে মেনুয়্যাল মোডে ড্রোন উড়াব বলে ঘোষণা দেই। সে অনুযায়ী প্রাকটিক্যাল কাজ শুরু করি। যদিও কাজ শুরুর ২৭ দিনের মধ্যেই আমরা উড়াতে এবং ডিসিসির সফটওয়্যার বানাতে সক্ষম হই। গবেষকরা এতদিন গোপনে বিভিন্ন পরীক্ষা চালান। গত মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রথম জনসমক্ষে সফলভাবে উড়ানো হয়। নাবিল বলেন, ড্রোনটি আমাদের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবিরাও দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন যুদ্ধে ব্যবহার করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৩-এর এপ্রিল থেকে ড্রোনের থিওরিটিক্যাল কাজ শুরু করা হয়। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের তত্ত্বাবধায়নে প্রজেক্টে কাজ করেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল, রবি কর্মকার এবং মারুফ হোসেন রাহাত। গবেষকরা আরও জানান, আমরা বিভিন্ন ধরনের ড্রোন ডেভেলপমেন্টের দিকে নজর দিচ্ছি। এর মধ্যে প্লেইন, গ্লাইডার, জেট, মাল্টিকপ্টার। আর্মি এবং এয়ারফোর্স সাহায্য করলে আমরা মিলিটারি ড্রোন বানানোর দিকে নজর দেব।
কেমন এই ড্রোন
বর্তমান প্রযুক্তির যুগের উন্নতমানের ড্রোনের মতোই বাংলাদেশি এই চালকবিহীন বিমান যেকোন সময়, যেকোন স্থানে দ্রুততার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যে অভিযান চালাতে পারবে। এতে যে মডেলগুলোতে তৈরি করা হয়েছে তার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলোর কোন রানওয়ে লাগে না, ল্যান্ডিংয়ের জন্য কোন রানওয়ে লাগে না। শুধু হাত দিয়ে থ্রো করলেই হবে। খুব দ্রুত গিয়ে সংশ্লিষ্ট জায়গায় তথ্যগুলো সংগ্রহ করে ফেলবে। দ্রুত সময়ে তথ্য পাঠাতে সক্ষম হবে। তাছাড়া শত্রুপক্ষ যদি সেটা ধ্বংস কিংবা খুলে ফেলে বা হ্যাক করে ফেলে, তাহলে ওটার ভেতরে তারা এ ধরনের কোন তথ্য পাবে না। সেখানে ইমেজ প্রসেসর লাগানো হবে। ফলে ড্রোন শত্রুপক্ষ, মিত্রপক্ষ চিহ্নিত করতে পারবে।
- See more at: http://www.thedailysangbad.com/index.php?ref=MjBfMDFfMzBfMTRfMV8xM18xXzE1NDI4NA==#sthash.mIkNXsNf.dpufএ বিষয়ে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, 'ড্রোন তৈরি করতে তরুণ গবেষকরা অনেক চেষ্টা ও শ্রম বিনিময় করেছে। শেষ পর্যন্ত তারা সফল। তিনি বলেন, মূলত সেনাবাহিনীর জন্যই ড্রোন। তবে অন্য কাজেও এটি ব্যবহার করা যাবে। খুবই কম শব্দে চলা ড্রোনটি যেকোন জায়গায় গিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি তুলে বা হামলা করে চলে আসতে পারবে।' ড. জাফর ইকবাল বলেন, প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক এই ড্রোন বানানোর টাকা নিজের পকেট থেকেই তিনি ছাত্রদের দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা ক্লাসভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। তাই থিওরিটিক্যালভাবে ছাত্র নাবিলকে ড্রোন বানাতে বলি। তিনি বলেন, '২০-২৫ লাখ টাকা হলে একটি ভালোমানের ড্রোন বানানো সম্ভব হবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আমন্ত্রণ জানান তিনি।
যেভাবে তৈরি হলো ড্রোন
গবেষক দলনেতা সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল জানান, গত বছরের এপ্রিলে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম এ বছরের এপ্রিলে ড্রোন পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করা হবে। ঘোষিত সময়ের ৩ মাস আগেই মানববিহীন এয়ারক্রাফটের ম্যানুয়াল মুডে ড্রোনের পরীক্ষামূলক সফল উড্ডয়ন হয়। তবে এটা এখনও ড্রোনের বৈশিষ্ট্যে আসেনি। এটাকে এবার ড্রোনে রূপান্তরের কাজ চলছে। তবে ড্রোনের জন্য যে ডিসিসি (ড্রোন কন্ট্রোল সেন্টার) সেটার সফটওয়্যারের কাজ শেষ হয়েছে। যা দেখতে অনেকটা ফাইটার জেটের ককপিটের মতো। ডিসিরি সঙ্গে বর্তমান এয়ারক্রাফটের ইন্টারফোর্সিং শেষ হলে সেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এবং প্রয়োজনে ডিসিসির অপারেটরের সাহায্যে চালানো যাবে।
সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল জানান, ড্রোন বানাতে অনেক টাকা লাগে। আর্থিক স্বল্পতার কারণে প্রয়োজনের তুলনায় আমরা অল্প খরচে এটি ডেভলপ করেছি। যার পুরোটাই বহন করেছেন জাফর ইকবাল স্যার। প্রথম ড্রোন বানানোর জন্য সাফল্য একা নিতে রাজি নন নাবিল। তিনি বলেন, এটা সাস্টিয়ানদের সাফল্য। কারণ এখানে উপস্থিত সহপাঠিদের যেভাবে আগ্রহ আমাদের বানানো ড্রোনের সফল উড্ডয়ন দেখতে, তেমনি অন্য কেউ বানালে আমিও দৌড়ে আসতাম দেখার জন্য।
নাবিল জানান, চলতি বছরের প্রথম দিনেই এপ্রিলে মেনুয়্যাল মোডে ড্রোন উড়াব বলে ঘোষণা দেই। সে অনুযায়ী প্রাকটিক্যাল কাজ শুরু করি। যদিও কাজ শুরুর ২৭ দিনের মধ্যেই আমরা উড়াতে এবং ডিসিসির সফটওয়্যার বানাতে সক্ষম হই। গবেষকরা এতদিন গোপনে বিভিন্ন পরীক্ষা চালান। গত মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রথম জনসমক্ষে সফলভাবে উড়ানো হয়। নাবিল বলেন, ড্রোনটি আমাদের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবিরাও দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন যুদ্ধে ব্যবহার করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৩-এর এপ্রিল থেকে ড্রোনের থিওরিটিক্যাল কাজ শুরু করা হয়। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের তত্ত্বাবধায়নে প্রজেক্টে কাজ করেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল, রবি কর্মকার এবং মারুফ হোসেন রাহাত। গবেষকরা আরও জানান, আমরা বিভিন্ন ধরনের ড্রোন ডেভেলপমেন্টের দিকে নজর দিচ্ছি। এর মধ্যে প্লেইন, গ্লাইডার, জেট, মাল্টিকপ্টার। আর্মি এবং এয়ারফোর্স সাহায্য করলে আমরা মিলিটারি ড্রোন বানানোর দিকে নজর দেব।
কেমন এই ড্রোন
বর্তমান প্রযুক্তির যুগের উন্নতমানের ড্রোনের মতোই বাংলাদেশি এই চালকবিহীন বিমান যেকোন সময়, যেকোন স্থানে দ্রুততার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যে অভিযান চালাতে পারবে। এতে যে মডেলগুলোতে তৈরি করা হয়েছে তার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলোর কোন রানওয়ে লাগে না, ল্যান্ডিংয়ের জন্য কোন রানওয়ে লাগে না। শুধু হাত দিয়ে থ্রো করলেই হবে। খুব দ্রুত গিয়ে সংশ্লিষ্ট জায়গায় তথ্যগুলো সংগ্রহ করে ফেলবে। দ্রুত সময়ে তথ্য পাঠাতে সক্ষম হবে। তাছাড়া শত্রুপক্ষ যদি সেটা ধ্বংস কিংবা খুলে ফেলে বা হ্যাক করে ফেলে, তাহলে ওটার ভেতরে তারা এ ধরনের কোন তথ্য পাবে না। সেখানে ইমেজ প্রসেসর লাগানো হবে। ফলে ড্রোন শত্রুপক্ষ, মিত্রপক্ষ চিহ্নিত করতে পারবে।
-
Read details at:
-
[ব্রেকিং] বাংলাদেশের আকাশে উড়ল শাবি'র তৈরি প্রথম ড্রোন! - The ...
14 hours ago - এর আগে এবছরের শুরু দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেয় তারা খুব শীগ্রই সম্পূর্ণ দেশী প্রযুক্তিতে আকাশে উড়ার মনুষ্যবিহীন ড্রোন তৈরিকরবে। তাদের নির্ধারিত ড্রোন তৈরির সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছিল মার্চ এপ্রিল। তবে ঘোষিত সময়ের আগেই এই ড্রোনের ম্যানুয়াল মুড তৈরি করা ... ড্রোন উদ্ভাবনের প্রথম পদক্ষেপে সফল শাবি | পরিবর্তন
চালক বিহীনবিমান 'ড্রোন' উদ্ভাবনের প্রথম পদক্ষেপেই সফল হয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গবেষণারত দলটি ... ৪/৫ মাস আগে তাদের একটি দায়িত্ব দিয়েছি, এই অল্প সময়ে তারা একটি ফ্লাইং মেশিন তৈরি করেছে যাকে কিছু দিনের মধ্যে পূণাঙ্গ ড্রোনহিসেবে তৈরি করা হবে। এটি ছিল আমার নিজস্ব ...
__._,_.___