জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুর রব গ্রেফতার
বহুল আলোচিত ভোলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুর রব মিয়াকে অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে।শনিবার সন্ধ্যায় তাকে চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসারের নেতৃত্বে ভোলা সদর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আব্দুর রবকে জেলা দায়রা জজ আদালতে নেওয়া হলে বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওসি আবুল বাসার টাইমনিউজবিডিকে জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলায় সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার ভিওিতে আবদুর রব মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভোলার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মাহাফুজরি রহমান জানান, ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রব মিয়ার স্ত্রী সানজিদা খালেক পলাশ বাদী হয়ে সম্পতি ভোলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালত বাদীর স্বামীকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। অপর একটি সূত্র জানায়, ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রব মিয়া শুক্রবার ভোলা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে যান। আগে থেকে সেখানে অপেক্ষমান পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে চরফ্যাশন ডাকবাংলাতে তিনি এক কিশোরীসহ জনতার রোষানলে পড়েন। ওই সময় তিনি ওই কিশোরীকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে রক্ষা পান। এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়।
ঢাকা, ২১ সেপ্টেম্বর টাইমনিইজবিডি.কম, কেএ
- See more at: http://www.timenewsbd.com/news/detail/26474#sthash.raqsDwiY.dpufচরফ্যাশনে অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে তোপের মুখে ম্যাজিস্ট্রেট
সূত্রে জানা জানা যায়, চরফ্যাশন উপজেলার ওমরপুর গ্রামের মহিউদ্দিনের মেয়ে গজারিয়া ডা: আজহার উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেীণর ছাত্রী আসমা বেগম (১৬) মামলা সংক্রান্ত কারণে আদালতে আসা যাওয়া করতো। এই সুযোগে আসমার সঙ্গে ওই ম্যজিস্ট্রেটের পরিচয় ও সম্পর্ক হয়। সোমবার রাতে আসমা চরফ্যাশন ডাকবাংলোতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এলে 'অনৈতিক' সম্পর্কের অভিযোগে জনতার তোপের মুখে পড়েন এবং রাতভর পুলিশ পাহারায় কথিত স্ত্রীসহ ডাকবাংলোতে অবরুদ্ধ ছিলেন ওই ম্যাজিষ্ট্রেট। আসমাকে নিজের বিবাহিতা স্ত্রী দাবী করলে উত্তেজনা প্রশমিত হয় এবং মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনি প্রত্যাহার করা হয়। পরবর্তীতে উত্তেজিত লোকজন ফের ডাকবাংলো ঘিরে ফেলে। ফলে পুনরায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দুপুর ১২টায় কড়া পুলিশ পাহারায় ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুর রব আদালতের উদ্দেশ্যে ডাকবাংলো ত্যাগ করেন।
ডাকবাংলো ত্যাগ করার আগে ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুর রব সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আমার প্রথম স্ত্রীর ঘরে ৩টি মেয়ে সন্তান আছে। কিন্ত কোন পুত্র সন্তান নেই। পুত্র সন্তান হওয়ার কোন আশাও নেই। পুত্র সন্তানের জন্য আমি গত ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে দ্বিতীয় বিবাহ করি। তবে বিবাহের কাবিন করা হয়নি। দ্বিতীয় বিবাহের জন্য প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেয়া হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুর রব মিয়া বলেছেন, প্রথম স্ত্রীর কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্ত তিনি অনুমতি দেননি। অনুমতি না দিলে আমি আর কি করবো।
কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী আসমা বেগম অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং আইনসিদ্ধ ভাবে তার (দ্বিতীয় স্ত্রী আসমা ) বিবাহের বয়স হয়নি এমন অভিযোগের জবাবে কনের বয়স ১৯ বছরের বেশী বলে মন্তব্য করে ফ্লোর ত্যাগ করেন ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুর রব। এর পরপরই কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী আসমা বেগম সাংবাদিকদের সামনে ফ্লোরে হাজির হয়ে বলেন, ধর্মমতে ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের সাথে আমার বিবাহ হয়েছে। পারিবারিক ভাবে বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়েই বিবাহ হয় বলে তিনি দাবী করেন।
প্রথম স্ত্রীর পুত্র সন্তান হওয়ার আশা নেই এবং পুত্র সন্তানের জন্য দ্বিতীয় বিবাহ করা নিয়ে ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুর রব'র বক্তব্যের জবাবে তার প্রথম স্ত্রী সানজিদা খালেক পলাশ সাংবাদিকদের বলেছেন, সন্তান ছেলে কী মেয়ে হলো এ দায় স্ত্রীর নয়। ছেলে হয়নি এমন অভিযোগ তুলে দ্বিতীয় বিবাহ করে তিনি (ম্যাজিষ্ট্রেট) আমার মাতৃত্ব এবং আমার সন্তানের পিতৃত্বকে অপমান করেছেন। আমাকে বলেছেন, বিবাহ করেননি। এখন বিবাহ করে থাকলে অন্যায় করেছেন। আমি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আইনী প্রতিকার প্রার্থী হবো। সানজিদা খালেক পলাশ আরো বলেন, আমাদের প্রথম মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে, দ্বিতীয় মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং তৃতীয় মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়েন।
এদিকে দ্বিতীয় বিবাহের বিষয়ে নিশ্চিত হতে গতকাল ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুর রব মিয়ার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী আসমা বেগম'র ওমরপুর গ্রামের বাড়িতে সাংবাদিকরা গিয়ে কাউকে পায়নি। প্রতিবেশীরা সাংবাদিকদের জানান, সাংবাদিকদের আগমনের খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে। তবে পাশের গ্রামের (লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ) রাস্তার উপর আসমা বেগমের মা মনোয়ারা বেগমের সাক্ষাত পাওয়া যায়।
মনোয়ারা বেগম জানান, ম্যাজিষ্ট্রেটের সঙ্গে তার মেয়ের মনের বিবাহ হয়েছে কিন্ত কাবিনের বিবাহ হয়নি। বাড়ির আশ পাশের লোকজনের অত্যাচারে তিনি এই নাবালিকা (অপ্রাপ্ত বয়স্কা) মেয়েকে বিবাহ দিতে বাধ্য হয়েছেন। অত্যাচার প্রসঙ্গে মনোয়ারা বেগম জানান, তার স্বামী মহিউদ্দিন গাছ ব্যবসায়ী। এই ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে তাদের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা আছে। একটি ইতিমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে এবং আর দু'টি নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে।
এদিকে পূর্ব রমাগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান বাবুল জানান, আসমা বেগম এ বছর তার বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেছে। বিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার অনুযায়ী আসমা বেগমের জম্ম তারিখ ২০ মার্চ ১৯৯৮ ইং।
চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল বাসার জানান, কে বা কারা ডাকবাংলো এক যুবতীকে নিয়ে ডাকবাংলোতে 'অনৈতিক' সম্পর্কে জড়িয়েছেন এমন গুজবে কিছু লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ালে যাতে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা না ঘটে সে জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরবর্তীতে ম্যাজিষ্ট্র্রেট আব্দুর রব নিজের বিবাহিতা স্ত্রীকে নিয়ে রাত যাপন করেছে বললে উত্তেজনা প্রশমিত হয় এবং সকাল ১১ টায় পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনি প্রত্যাহার করা হয়।
Also read:
__._,_.___