মাদ্রাসার ছাত্রদের বেত্রাঘাত ও পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ঢাকায় আনা হয়
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
গত ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ ও সমাবেশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাদ্রাসার ছাত্রদের বেত্রাঘাত ও পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে নিয়ে আসা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সংস্থায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়।
গতকাল বিডি নিউজে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কোন কিছু না জানিয়েই নরসিংদীর একটি মাদ্রাসা থেকে হুজুররা ছাত্রদের ঢাকায় নিয়ে যান বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের এক পরিবার। সোমবার ভোরে মাদ্রাসার দুই শিক্ষক ছাত্র মাহমুদুল হাসান জুবায়েরের (২০) লাশ শহরের সাটিরপাড়ার বকুলতলার বাসায় আনার পরই পরিবারের লোকজন তার ঢাকা যাওয়া এবং সেখানে মৃত্যুর কথা জানতে পারেন।
জুবায়ের সাটিরপাড়া বকুলতলার ট্রাকচালক আবদুল বাসেতের ছেলে। সে মাধবদী খিলগাঁও দরগাবাড়ি মাদ্রাসার কাফিয়া হাফিজিয়া শ্রেণীর ছাত্র। আবদুল বাসেত অভিযোগ করেন, হেফাজতের অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্য জুবায়ের ঢাকা গেছে এটা তিনি জানতেন না।
'ভোরে মাদ্রাসার জিলানী হুজুর ও আবদুল কাদির হুজুর লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে আনার পরই জানতে পারি সে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে', বলেন বাসেত। এ সময় জুবায়েরের বড় ভাই জাহাঙ্গীরও (৩০) পাশে ছিলেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাদ্রাসার হুজুররা পরিবারকে না জানিয়েই জুবায়েরকে ঢাকায় নিয়ে যান। সেখানে সে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। সকাল ১০টায় স্থানীয় নূরীয়া হাফিজিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে জুবায়েরের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় নিহতের আত্মীয়স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। তবে হেফাজতে ইসলামের কোন নেতাকর্মী ছিলেন না। পরে জুবায়েরকে শহরের কাউরিয়াপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ভোরে অ্যাম্বুলেন্স বাসায় পৌঁছে দিয়েই দুই হুজুর চলে যান।
নিহত জুবায়েরের সহপাঠীরাও জানান, মাদ্রাসার শিক্ষকদের নির্দেশেই তারা ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য মাধবদী খিলগাঁও দরগাবাড়ি মাদ্রাসায় গেলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায় এবং মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পালিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
রোববার ঢাকা অবরোধ ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলাম রাজধানীতে ব্যাপক তা-ব চালায়। এতে কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর, অগি্নসংযোগ, লুটপাট ও হামলা চালানো হয় ব্যাপকভাবে।
এদিকে বাংলানিউজের অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের কর্মসূচিতে মতিঝিল গিয়ে যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে তা ভাবতেই খেই হারিয়ে ফেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কওমি মাদ্রাসার কিশোর শরীফ উদ্দিন। ঘটনার দু'দিন পার হলেও বারবার মূর্ছা যাচ্ছে সে। মাদ্রাসার শিক্ষকদের নির্দেশে মতিঝিল এসে হেফাজত নেতাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার হবেন তা কখনোই ভাবেনি শরীফ। তার মতো অনেককে বেত্রাঘাত ?আর পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার হুমকি দেন শিক্ষকরা। আর এ কারণেই তারা বাধ্য হয়েছে সমাবেশে আসতে। সন্ধ্যায় হরতাল শেষে টাঙ্গাইলে চলে যাবে শরীফ। গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর পশ্চিম ধোলাইপাড়ে তারই এক আত্মীয়ের বাসায় কথা হয়। ঘটনার পরদিন সকালেই সন্তানের জন্য দিশাহারা বাবা-মা ছেলের খোঁজে ঢাকায় চলে আসেন।
রাবার বুলেটে কিছুটা আহত হলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে পুরোপুরি। 'কোন ক্লাসে পড়ো?', জিজ্ঞেস করতেই শরীফ বললো, 'সরহে জামি (দশম শ্রেণী)।'
এরপর অবরোধ কর্মসূচিতে আসার বর্ণনা করল শরীফ। '৫ মে তারিখের কয়েকদিন আগে থেকেই মোহাদ্দিসরা (শিক্ষক) বলেন, এবার তোমাদের ঈমানি পরীক্ষা হবে। নিজ থেকে যারা যাবে নাম লেখাও। হুজুরদের এমন কথায় আমাদের অনেকেই নাম লেখায়। যারা ভয়ে নাম লেখায়নি তাদের উদ্দেশ্যে হুজুররা বলে- তোমরা ঈমানি পরীক্ষায় হেরে গেছ। পরকালে কি আছে বুঝতেই পারছ। হুজুরদের এমন কথায়ও আমিসহ কয়েকজন যাওয়ার জন্য খাতায় নাম লেখাইনি। আমার কেন জানি ভয় করছিল। আব্বু-আম্মুকেও বলিনি। একসময় আমার এক সহপাঠী বলেন, হুজুররা নাকি জানিয়েছেন যারা যাবে না তাদের পরীক্ষায় পাস করানো হবে না। এরপর একপর্যায়ে মতিঝিলে আসতে বাধ্য হই...''।
শরীফ বলে চলে, 'রোববার যখন সংঘর্ষ হয়, গুলির বিকট আওয়াজ শুনে আমি কান্নায় ভেঙে পড়ি। আমার এ অবস্থা দেখে আমার এক হুজুর ধমক দিয়ে গায়ে হাত তুলতে চায়।' সংঘর্ষে সে জড়িত ছিল না জানিয়ে বলে, 'আমার সঙ্গে বড় ভাইয়েরা পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়ে মারে। এরপর পুলিশ বাহিনী সমাবেশে গুলি করে। হঠাৎ আমার পায়ে গুলি (রাবার বুলেট) লাগলে আমি শুয়ে পড়ি। যাত্রাবাড়ীর একটি হাসপাতালে আমার মাদ্রাসার এক সহপাঠী আমাকে নিয়ে যায়।'
শরীফের মা আয়েশা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, 'চার সন্তানের মধ্যে এক সন্তানকে ধর্মশিক্ষার জন্য মাদ্রাসায় দিছি। শুনেছি একজন আলেম হইলে পরিবারের অন্যরাও বেহেশতে যায়। আলেম বানাইতে মাদ্রাসায় দিছি, মারামারি করতে নয়। মাদ্রাসার শিক্ষকরা আমাদের অনুমতি না নিয়ে রাস্তায় নামানো ঠিক করে নাই।'
শরীফের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হেফাজতের ১৩ দফা দাবিতে কি আছে সে জানে না। কেবল শিক্ষকের নির্দেশেই তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেদিন এসেছিল। শুধু শরীফ নয়, কওমি মাদ্রাসার অনেক শিশু-কিশোরের জীবন এখন তাদের শিক্ষকের কাছে! শিক্ষকের নির্দেশে তাদের সভা-সমাবেশ, মিছিলে যোগ দিতে হয়। নির্দেশ মানতে গিয়ে অনেক ঝুঁকির মুখে পড়তে হয় তাদের। ধর্মরক্ষার নামে ব্যাপক হারে নাবালক কোমলমতি শিশু-কিশোকে ব্যবহার করছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অনুমতি নেয়ার ধার-ধারছেন না সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের পাশে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহত্তম মাদানীনগর কওমি মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণী সমমানের শিক্ষার্থী আবু তৈয়ব বলেন, 'হুজুররা আমাদের জোর করে সমাবেশে নিয়েছেন। আমরা অনেকেই যেতে চাইনি। যারা যাবে না তাদের বেত্রাঘাত করা হবে বলে হুজুররা জানিয়েছেন।'
লালবাগ জামিয়া কোরআনিয়া মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ফজলুল হক বলে, 'সংঘর্ষের পর দিন হুজুররা আমাদের বলেছেন, ওখানে যারা মারা গেছে তারা শহীদ আর যারা গিয়ে মোকাবেলা করে এসেছে তারা এখন গাজি।' এ মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছে, তাদের বলা হয়েছে বড় হুজুরের (আল্লামা আহমদ শফী) ওয়াজ শুনলে পরকালে শান্তি মিলবে।
Related:
"আমারা হব তালেবান, বাংলা হবে আফগান" ফোন আসছে !
আসবেই তো !
আলবৎ আসবে,
হুজুর দেশটাকে "পাক" করার মহান জিহাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন !!!
লাখো তৌহিদি জনতা এখন হুজুরের হুকুমের অপেক্ষায় !!!
পুরো মতিঝিল কাঁপছে,
কাঁপছে দেশের হাজার কোটি টাকার অর্থনীতির স্তম্ভ !!!
দেশটা নাপাকে ভর্তি, পাক করতে হবে ।
বিশাল এক দায়িত্ব, আমারা হব তালেবান, বাংলা হবে আফগান"
ভালো না, ভালো তো !
হেফাজতের দামে, আফগান পাইলাম ।
রাত গভীর হচ্ছে , হুজুরের আদেশের অপেক্ষা ,
হুজুর একটু হবে নাকি,
এক চুমুক,
একটু একটু করে এক ঢোক,
তারপর একগ্লাস, তারপর এক বোতোল ।
হুজুরের ফোন বাজছে, মুরতাদের আবিষ্কার,
একটু রিছিভ করে হুকুম দেন !
হুজুর একটু নিবেন নাকি, ফরেন ১০০% আংগুরের নির্জাস
On Sat, May 11, 2013 at 11:56 AM, ahmed saleh
<ahmed_saleh326@yahoo.com> wrote:
__._,_.___