Banner Advertiser

Saturday, August 5, 2017

[mukto-mona] কবিগুরু ঠাকুর বাঙালীর আত্মপরিচয় : আজ ২২শে শ্রাবণ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৬তম প্রয়াণ বার্ষিকী



Video:

Jokhon Porbe Na Mor Payer Chinho || যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন || Susmita


আজ ২২শে শ্রাবণ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৬তম প্রয়াণ বার্ষিকী

তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে...

০৬ আগস্ট ২০১৭, ২২ শ্রাবণ ১৪২৪  

তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে...

মোরসালিন মিজান ॥ রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু হয় কখনও? কবিগুরু চোখের সামনে নেই। নেই বটে। 'আছে সে নয়নতারায় আলোকধারায়।' বাঙালীর অন্তরাত্মায় যার চির বসবাস তাঁর, না, মৃত্যু হয় না। তবুও একটি আনুষ্ঠানিকতা। চোখের সামনে যে নেই, সে কথাটি স্মরণ করার দিন আজ। আজ রবিবার বাইশে শ্রাবণ। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে জীবন থেকে নিস্তার নিয়েছিলেন এই মহামানব। বছর ঘুরে আবারও এসেছে সেই দিন। চিরপ্রস্থানের ৭৬তম দিবসে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় তাঁকে স্মরণ করবে কৃতজ্ঞ বাঙালী।

প্রথম জীবনে ভানুসিংহের পদাবলীতে কবি লিখেছিলেন- মরণ রে,/ তুঁহু মম শ্যামসমান... মৃত্যু অমৃত করে দান। অমৃতের পুত্র মৃত্যুকে জীবনের নিস্তাররূপে ভেবে গ্রহণ করেছিলেন। লিখেছিলেনÑ প্রেম বলে যে যুগে যুগে, তোমার লাগি আছি জেগে, মরণ বলে আমি তোমার জীবনতরী বাই। শেষ দিকে এসে কবি জীবনের প্রতি নিজের তৃষ্ণার কথা জানিয়ে লিখেছিলেন বিখ্যাত সেই পঙ্ক্তিÑ মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে/ মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই। বলাবাহুল্য, মানবের মাঝে রবীন্দ্রনাথের বেঁচে থাকার স্বপ্ন শতভাগ পূর্ণতা পেয়েছে।

চেয়ে দেখি তিমিরগহন রাতি।/কেঁদে বলি মাথা করে নিচু,/'শক্তি আমার রইল না আর কিছু!'/ সেই নিমেষে হঠাৎ দেখি কখন পিছু পিছু/ এসেছে মোর চিরপথের সাথী...। বাঙালীর চিরপথের সাথী রবীন্দ্রনাথ। আজ যখন শুভ বোধ মার খাচ্ছে, মানবিক সমাজ ভালবাসার পৃথিবী যখন দূরে আরও দূরে চলে যাচ্ছে বলে মনে হয় তখন কবিগুরু যেন আশার বাণী শোনাতে আসেন। এসেছেন। নতুন করে। চুকিয়ে দেব বেচা কেনা,/মিটিয়ে দেব গো, মিটিয়ে দেব লেনা দেনা,/বন্ধ হবে আনাগোনা এই হাটেÑ/ তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে...। বাঙালী নিজের আত্মার স্পন্দনে, রক্ত ধারায় বাঁচিয়ে রেখেছেন রবীন্দ্রনাথকে। আলোর অনন্ত উৎস হয়ে আছেন এই মহামানব।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালীর আত্মপরিচয়। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সঙ্গীতস্রষ্টা, নট ও নাট্যকার, চিত্রকর, প্রাবন্ধিক, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর সাহিত্য। ১৯১৩ সালে 'গীতাঞ্জলি' কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। তাঁর এ প্রাপ্তি বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে বড় অর্জন।

কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ জন্মগ্রহণ করা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজ কর্মের মাধ্যমে সূচনা করে গেছেন একটি কালের। একটি সংস্কৃতির। কৈশোর পেরোনোর আগেই বাংলা সাহিত্যের দিগন্ত বদলে দিতে শুরু করেন তিনি। তাঁর পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিণত হয়েছে বাঙালীর শিল্প-সাহিত্য। বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথের ৫২ কাব্যগ্রন্থ, ৩৮ নাটক, ১৩ উপন্যাস ও ৩৬ প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসঙ্কলন প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর সর্বমোট ৯৫ ছোটগল্প ও ১৯১৫ গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সঙ্কলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খন্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের কাব্য-সাহিত্যের বৈশিষ্ট্যÑভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা, চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোমান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদ ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তাঁর রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সাহিত্যের পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের গান বাংলা সঙ্গীত ভা-ারকে দারুণভাবে সমৃদ্ধ করেছে। আজকের বদলে যাওয়া সময়েও বিপুল ঐশ্বর্য নিয়ে টিকে আছে রবীন্দ্রসঙ্গীত। এর আবেদন কোনদিন ফুরোবার নয়। বরং যত দিন যাচ্ছে ততই রবীন্দ্রসঙ্গীতের বাণী ও সুরের ইন্দ্রজালে নিজেকে জড়িয়ে নিচ্ছে বাঙালী। তাঁদের আবেগ-অনুভূতি কবিগুরুর গানের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের লেখা 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি' গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের জাতীয় সঙ্গীতেরও রচয়িতা তিনি। বহু প্রতিভার অধিকারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায় সত্তর বছর বয়সে নিয়মিত ছবি আঁকা শুরু করেন। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যে অঙ্কিত তাঁর স্কেচ ও ছবির সংখ্যা আড়াই হাজারের বেশি। দক্ষিণ ফ্রান্সের শিল্পীদের উৎসাহে ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁর প্রথম চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় প্যারিসের পিগাল আর্ট গ্যালারিতে। এরপর সমগ্র ইউরোপেই কবির একাধিক চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। তাঁর আঁকা ছবিতে আধুনিক বিমূর্তধর্মিতাই বেশি প্রস্ফুটিত হয়েছে।

মানবতাবাদী রবীন্দ্রনাথ মানুষের ওপর দৃঢ়ভাবে আস্থাশীল ছিলেন। তাঁর মতে, মানুষই পারে অসুরের উন্মত্ততাকে ধ্বংস করে পৃথিবীতে সুরের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে। তাই 'সভ্যতার সঙ্কট' প্রবন্ধে তিনি লিখেছিলেন- 'মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ।' ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকা-ের প্রতিবাদে ওই উপাধি বর্জন করেন রবীন্দ্রনাথ।

সমাজের কল্যাণেও নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সমাজকল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র জনসাধারণকে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে। তিনি দেববিগ্রহের পরিবর্তে কর্মী অর্থাৎ মানুষ ঈশ্বরের পূজার কথা বলেছিলেন।

রবীন্দ্রনাথের জীবনের শেষ চার বছর ঘন ঘন অসুস্থতার মধ্য দিয়ে গেছে। এ সময়ের মধ্যে দুবার অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় শয্যাশায়ী থাকতে হয়েছিল কবিকে। ১৯৩৭ সালে একবার অচৈতন্য হয়ে গিয়েছিলেন। আশঙ্কাজনক অবস্থা হয়েছিল। তখন সেরে উঠলেও ১৯৪০ সালে অসুস্থ হওয়ার পর আর তিনি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। নিজের সৃষ্টির মাঝে এখন লীন হয়ে আছেন কালজয়ী স্রষ্টা। জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে,/বন্ধু হে আমার রয়েছ দাঁড়ায়ে...। জীবন মৃত্যুর উর্ধে যে রবীন্দ্রনাথ, তাঁর মৃত্যু নেই।

প্রতিবারের মতো এবারও নানা আয়োজনে কবিগুরুকে স্মরণ করছে বাঙালী। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার উদ্যোগে শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। সংস্থার শিল্পীরা একক ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা-ভালবাসা জানান কবিগুরুকে।

আজ রবিবার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হবে। বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বিশেষজ্ঞ বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। 'পরিবেশ, নির্মাণসংস্কৃতি ও রবীন্দ্রনাথ' শীর্ষক বক্তৃতা করবেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট স্থপতি, রবীন্দ্র গবেষক ও পরিবেশবিদ অরুণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে একক রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করবেন বিশিষ্ট শিল্পী কাদেরী কিবরিয়া।

শিল্পকলা একাডেমিতে সন্ধ্যায় আয়োজন করা হবে 'রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। বিষয়ের ওপর মূল আলোচনা করবেন ড. হায়াৎ মামুদ।

এসবের বাইরে আরও অনেক আয়োজন থাকবে। সবকটি আয়োজন থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে কবিগুরুকে স্মরণ করবে বাঙালী।

http://www.dailyjanakantha.us/details/article/285597/তখন-আমায়-নাইবা-মনে-রাখলে

          ০৬ আগস্ট ২০১৭, ২২ শ্রাবণ ১৪২৪    ঢাকা, বাংলাদেশ  



__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___