Banner Advertiser

Friday, March 24, 2017

[mukto-mona] গণতন্ত্র, জেনোসাইড ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়



"গণতন্ত্র, জেনোসাইড ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়"
২৫ মার্চ
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ

যে কোনো নতুন রাষ্ট্রের আবির্ভাবের পেছনে দর্শন থাকে, ইতিহাস থাকে; একাধিক বড় ঘটনা থাকে। এমনকি ব্রিটেন ভারতবর্ষ থেকে ১৯৪৭ সালে বিদায় নেওয়ার পর যখন দুটি রাষ্ট্র গঠিত হলো, তার পেছনেও কাজ করেছে দর্শন, ইতিহাস। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা জওয়াহেরলাল নেহরু ১৫ আগস্ট বলেছিলেন, অ ঃৎুংঃ রিঃয ফবংঃরহু. পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেছিলেন, আজ থেকে হিন্দু বা মুসলিম নয়; সবাই পাকিস্তানি। প্রকৃতপক্ষে প্রতিটি রাষ্ট্র্রকেই তৈরি করে দেয় ইতিহাস, ঘটনা। অনেকেই মনে করেন, আমাদের স্বাধীনতার পেছনে জাতীয়তাবাদ কাজ করেছে। তাহলে তো এটা আগেও হতে পারত? কেন ১৯৭১-এ এলো স্বাধীনতা? বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের বারবার সাবধান করে দিয়েছেন, জাতীয়তাবাদের খপ্পরে যেন না পড়ি। ইউরোপে সে সময়ে ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদের উত্থান ঘটেছিল। এশিয়ার জাপানেও তার প্রভাব পড়েছিল। এ ধরনের জাতীয়তাবাদ মানেই ধ্বংস ও মৃত্যু।

বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে মূল দর্শন ছিল গণতন্ত্র। ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেছিলেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। তিনি পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির ভাষা বাংলাকে স্বীকার করতে চাননি। সে সময়ে প্রতিবাদী ছাত্র-জনতার অভিমত ছিল, সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষাকে উপেক্ষা করা যাবে না। এই গণতন্ত্রের জন্যই ষাটের দশকে একের পর এক আন্দোলন হয়েছে। এই সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণেই ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। সেটাই ছিল পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক নির্বাচন। ১৯৬৯ সালে লাহোরে গোলটেবিল বৈঠকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান সংসদীয় পদ্ধতির শাসন প্রশ্নে সম্মত হয়েছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে ইয়াহিয়া খানও বলেছিলেন, সংসদীয় শাসন চালু হবে। কিন্তু ১৯৭১ সালের ১ মার্চ সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান সংখ্যালঘিষ্ঠ দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর সঙ্গে পরামর্শ করে জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেন। এর প্রতিবাদ হয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিটি এলাকা থেকে। শহর-বন্দর-গ্রাম মুহূর্তে যেন রাজপথে নেমে আসে। ১ মার্চ দুপুরের দিকে ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিতের ঘোষণা দেন। সে সময়ে ঢাকার পল্টনের স্টেডিয়ামে একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা চলছিল। হাজার হাজার দর্শক উপস্থিত হয়েছিল পাকিস্তান দলকে সমর্থন করার জন্য। ইয়াহিয়া খান নির্বাচনের রায় উপেক্ষা করে জুলফিকার আলী ভুট্টোর পরামর্শমতো জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত করেছেন- সে বার্তা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারিতেও পেঁৗছে যায় এবং পাকিস্তানকে সমর্থন করতে যাওয়া দর্শকরা মুহূর্তে স্বাধীন বাংলাদেশের সমর্থকে পরিণত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল স্বাধীনতার চেতনা স্ফুরণের স্থান। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবিতে আহূত হরতালে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এ প্রতিষ্ঠানের আমতলা থেকেই ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে মিছিল বের হয়েছিল। এ মিছিলে গুলি হয় এবং তার প্রতিক্রিয়ায় রচিত হয় অমর গাথা 'আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো ২১শে ফেব্রুয়ারি...', যা বাঙালি ভুলবে না। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলাতেই ১৯৭১ সালের ২ মার্চ উত্তোলন করা হয় বাংলাদেশের লাল-সবুজ-সোনালি রঙের পতাকা। এর মাত্র দেড় মাস পর ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরের আম্রকাননে এ পতাকাই স্বীকৃত হয় জাতীয় পতাকা হিসেবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রেসকোর্স ময়দানে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা দেন- এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। তিনি স্পষ্ট করে স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি; কিন্তু তার ইঙ্গিত ছিল। যদি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হামলা হয়, কী করণীয় সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন তিনি। তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার কথাও বলেছিলেন। এ জন্য দিয়েছিলেন চার দফা। এর পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও জুলফিকার আলী ভুট্টো ঢাকায় আসেন। একই সঙ্গে পাকিস্তানের শাসকরা সামরিক প্রস্তুতি চালাতে থাকে। আরও সৈন্য ও অস্ত্র নিয়ে আসা হয়।

২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে গণহত্যা বা জেনোসাইড শুরু করে তার এপিসেন্টার ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর কারণ সহজেই বোধগম্য। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতাকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করায় এ প্রতিষ্ঠানের অনন্য ভূমিকার কারণেই পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী ও সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষোভ-রোষ ছিল প্রবল এবং তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে ২৫ মার্চ। এই জেনোসাইডই পাকিস্তান ভেঙে ফেলল। ২৫ মার্চকে যথাযথ উপলব্ধি ছাড়া আমাদের রাষ্ট্র গঠনের যে দাবি, সেটা বুঝতে পারব না। বিশ্বের অনেক স্থানে জেনোসাইড হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্র চাওয়ায় কোথাও জেনোসাইড হয়নি। জার্মানিতে হিটলার ইহুদিদের নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছেন। রুয়ান্ডায় গণহত্যা হয়েছে হুতি ও তুতসি সম্প্রদায়ের বিরোধের কারণে। কম্বোডিয়ায় পলপট 'শ্রেণিশত্রু' খতমের নামে গণহত্যা করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এটাও মনে রাখা দরকার, জেনোসাইডে কত লোককে হত্যা করা হয়েছে, সেই সংখ্যা বড় বিষয় নয়। এ সংখ্যা ২০ জনও হতে পারে, ৩ লাখ বা ৩০ লাখও হতে পারে। এর আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা সূত্রবদ্ধ আছে। এ ক্ষেত্রে অভিপ্রায়টাই মুখ্য- কেন হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করা হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হত্যাকাণ্ড শুরু করে। তারা জগন্নাথ হলে ঘুমন্ত ছাত্রদের হত্যা করে। কারণ এ হলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা থাকত। তারা সার্জেন্ট জহুরুল হক হলেও হত্যাকাণ্ড চালায়। কারণ এ হলটি ছিল ছাত্র আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। তারা মধুর ক্যান্টিনের মালিক মধুসূধন দে'কে পরিবারের সদস্যদেরসহ হত্যা করে। কারণ এই চা-শিঙ্গাড়া বিক্রেতার ক্যান্টিনে ছাত্রনেতা-কর্মীরা তাদের পরিকল্পনা-কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দারোয়ান-মালী-ঝাড়ূদার- কাউকে তারা রেহাই দেয়নি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী গণহত্যা বিস্তৃত করে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের সর্বত্র, যে কারণে প্রায় এক কোটি নারী-পুরুষ-শিশু প্রাণ বাঁচাতে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এই জেনোসাইড বুঝতে না পারলে কেন বাংলাদেশ স্বাধীন, সেটা বুঝতে পারব না।

আগেই বলেছি, গণহত্যার এপিসেন্টার ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই গণহত্যার চিত্র দেশ-বিদেশে তুলে ধরায় এ প্রতিষ্ঠানের রয়েছে বিশেষ দায়িত্ব। কেন মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের চার দশক পর এ কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ- সে প্রশ্ন করাই যায়। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরপরই এ উদ্যোগ নেওয়া হলে তথ্য-উপাত্ত-প্রমাণ সংগ্রহ সহজ হতো। কিন্তু এটাও ভুললে চলবে না, এখনও মুক্তিযুদ্ধকাল ১৯৭১ সালের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা জানা অনেক অনেক লোক রয়েছেন আমাদের মাঝে। জেনোসাইড স্টাডিজ ডিপ্লোমা কোর্স চালু করেছে। স্কয়ার শিল্পগোষ্ঠীর সহায়তায় ফেলোশিপ শুরু হয়েছে। তাদের মতো আরও স্পন্সরের সহযোগিতায় নতুন কার্যক্রম হাতে নেওয়া যাবে। গত বছর মার্চ মাসে আমরা একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করেছি। এ বছর বিজয় দিবস সামনে রেখে আরও বড় পরিসরে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করার উদ্যোগ চলছে। জাতিসংঘ যেন এ দিবসটিকে আন্তর্জাতিক জেনোসাইড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়- সে জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় সংসদ এ সংক্রান্ত প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। অটোমান সাম্রাজ্যের সময়ে আর্মেনিয়ায় যে গণহত্যা পরিচালিত হয়েছিল, তার স্বীকৃতি আদায়ে বহু বছর সময় লেগেছে। এ ধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞ যেন আর কোথাও না ঘটে, সে জন্যই বিশ্ব-সমাজের স্বীকৃতি প্রয়োজন। আমাদের দেশে যে জেনোসাইড পরিচালিত হয়েছে, তার জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার উপেক্ষার পেছনে রাজনীতিও কম দায়ী নয়। ২৫ মার্চ ও পরের মাসগুলোতে এখানে যে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তার পেছনে ছিল পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। তাদের পেছনে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মতো ক্ষমতাধর রাষ্ট্র। তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়েছে; রাজনৈতিক সমর্থন দিয়েছে। সে সময়ের চীনা নেতৃত্বও ছিল পাকিস্তানের জান্তার পাশে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ হত্যাকাণ্ড শুরুর পর থেকেই ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক আর্চার ব্লাড তার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন, 'সিলেকটিভ জেনোসাইড' শুরু হয়েছে। কিন্তু তার নোট উপেক্ষা করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রস্তাব এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্নমুখী উদ্যোগ ও পরিবর্তিত বিশ্ব প্রেক্ষাপটের কারণে এখন এ প্রত্যাশা জোরদার হয়েছে যে, দিবসটি বিশ্ব-সমাজে স্বীকৃত হবে। আমরা গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটে জড়িতদের বিচারের পদক্ষেপ নিতে পেরেছি। গণহত্যায় সরাসরি জড়িত পাকিস্তানি কমান্ডের সদস্যদের বিচারের দাবিও জোরালো হচ্ছে। বিশ্বের আর কোথাও যেন এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত করার দুঃসাহস না পায়, সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে আমাদের এ উদ্যোগ অবশ্যই ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।


 



__._,_.___

Posted by: Farida Majid <farida_majid@hotmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

Re: [mukto-mona] Fwd: কিশোর জঙ্গী ॥ তাহরীমের জবানবন্দীতে জঙ্গী জীবনের পুরো কাহিনী (প্রকাশিত : ২৩ মার্চ ২০১৭)



A brain disease that is finally spreading like a wild fire. Some people are not satisfied with earthly life of abundance. Hence, the afterlife has become more attractive to these people. Can medical treatment cure this heavenly disease? Probably not!   


On Thursday, March 23, 2017 6:38 PM, "Dristy Pat dristypat5@gmail.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com> wrote:


 
It is hard to understand how such an ideology of death take hold of the mind of highly educated people, who can't wait to die. I heard, when ant grows wings, it can't wait to fly into the fire to die. This suicidal ideology is the wings, which propel ordinary people to plunge into death.



2017-03-22 22:40 GMT-04:00 Jamal G. Khan <m.jamalghaus@gmail.com>:

কিশোর জঙ্গী ॥ তাহরীমের জবানবন্দীতে জঙ্গী জীবনের পুরো কাহিনী

প্রকাশিত : ২৩ মার্চ ২০১৭
 Print  New  0  0 Google +0  0
কিশোর জঙ্গী  ॥ তাহরীমের জবানবন্দীতে জঙ্গী জীবনের পুরো কাহিনী
  • হলি আর্টিজান থেকে আজিমপুর
গাফফার খান চৌধুরী ॥ বাংলাদেশের ইতিহাসে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁ ও বেকারিতে স্মরণকালের ভয়াবহ আত্মঘাতী জঙ্গী হামলা সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে মাইলস্টোন স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র আত্মঘাতী কিশোর জঙ্গী তাহরীম কাদেরী। তার জবানবন্দীতে প্রকাশ পেয়েছে হামলার নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত নানা তথ্য। গত বছরের ১ জুলাই ওই হামলায় জঙ্গীরা দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও সতের জন বিদেশী ও তিন নারীসহ মোট ২২ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। হত্যার দায় স্বীকার করে ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আইএসের নামে বিবৃতি প্রকাশিত হয়। তাহরীম কাদেরীর জবানবন্দীতে সেছাড়াও তার মা, তার যমজ ভাই ও পিতার আত্মঘাতী জঙ্গী হওয়ার কাহিনীও প্রকাশ পেয়েছে। জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়ার কারণে পিতা তানভীর কাদেরী পুলিশের হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে আত্মহত্যা করেন। আর মা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এখন কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দী। আর একমাত্র ভাইয়ের কোন হদিস নেই। জীবন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আর তাহরীম কাদেরীও এখন কিশোর কারাগারে বন্দী। অথচ সুখী সুন্দর সচ্ছল জীবনযাপন ছিল তাদের। দৈনিক জনকণ্ঠের কাছে একাধিক জঙ্গীর ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দীর কপি রয়েছে। তার মধ্যে রাজধানীর আজিমপুর থেকে গ্রেফতারকৃত কিশোর আত্মঘাতী জঙ্গী তাহরীম কাদেরীর জবানবন্দীতে ওঠে এসেছে বহু বিষয়।
হলি আর্টিজানের ঘটনার পর সারাদেশে চলমান সাঁড়াশি অভিযানের ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট রাজধানীর আজিমপুরের লালবাগ সড়কের ২০৯/৫ নম্বর পাঁচতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালায়। অভিযানের সময় আত্মহত্যা করে নব্য জেএমবির আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য তানভীর কাদেরী। গ্রেফতার হয় তার স্ত্রী আবেদাতুল ফাতেমা আশা ওরফে খাদিজা ও তার ছেলে তাহরীম কাদেরী ওরফে আবির ওরফে রাসেল ওরফে অনিক ওরফে মুয়াজ ওরফে ইসমাইল, পলাতক নব্য জেএমবির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা জামান ওরফে বাসারুজ্জামান ওরফে চকলেটের স্ত্রী শায়লা আফরিন ও গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গী হামলার মাস্টারমাইন্ড নুরুল ইসলাম মারজানের স্ত্রী আফরিন ওরফে প্রিয়তি। ইতোমধ্যেই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নুরুল ইসলাম মারজান, তামিম চৌধুরী ও মেজর জাহিদসহ অনেক জঙ্গী নিহত হয়েছে। আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া তিন শিশুকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজিমপুর থেকে এক বছরের শিশুপুত্র নিয়ে পালিয়ে যায় মেজর মুরাদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শিলা। গ্রেফতারকৃত তিন নারী ও এক কিশোর সবাই নব্য জেএমবির আত্মঘাতী দলের সদস্য।
গ্রেফতারকৃত আবেদাতুল ফাতেমা এক মাস পর গত বছরের ১০ অক্টোবর ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক মোঃ নূর নবীর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন। এর আগে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর আশার ছেলে আজিমপুরের আস্তানা থেকে গ্রেফতারকৃত আত্মঘাতী কিশোর জঙ্গী তাহরীম কাদেরী ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক মোহাঃ আহ্সান হাবীবের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়।
জবানবন্দীতে তাহরীম কাদেরী (১৪) জানায়, আমার প্রকৃত নাম তাহরীম কাদেরী আবির। আমার সাংগঠনিক নাম রাসেল ওরফে অনিক ওরফে মুয়াজ ওরফে ইসমাইল। আমি উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল এ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। আমার আফিফ কাদেরী আদর (পরবর্তীতে রাজধানীর আশকোনায় জঙ্গী আস্তানায় পুলিশের অভিযানকালে নিহত) নামে একজন যমজ ভাই আছে। সেও জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। আফিফের সাংগঠনিক নাম নাবিল। সেও আমার সঙ্গে উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল এ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। আমরা রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৩ নম্বর সড়কের ৬২ নম্বর ৬তলা বাড়ির চতুর্থ তলায় অবস্থিত বি/৩ নম্বর ফ্ল্যাটের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলাম।
আমার পিতার নাম তানভীর কাদেরী। তিনি জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। তার পিতার সাংগঠনিক নাম জামশেদ ওরফে আব্দুর করিম ওরফে তৌসিফ আহম্মেদ ওরফে সিপার। ঢাকা কলেজ থেকে এমএ পাশ। আমার পিতা পেশাগত জীবনে ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং, রবি ও কল্লোল গ্রুপে চাকরি করতেন। চাকরি ছেড়ে উত্তরায় আস-সাকিনা নামক প্রতিষ্ঠান খুলে হোম ডেলিভারি ব্যবসা শুরু করেন।
আমার মায়ের নাম আবেদাতুল ফাতেমা ওরফে আশা। মা জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। মায়ের সাংগঠনিক নাম খাদিজা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস। মা সেভ দি চিলড্রেন ও মুসলিম এইডে চাকরি করেছেন। আমরা ছিলাম খুবই সুখী পরিবার।
২০১৪ সালে পিতামাতা হজ করে ফেরেন। তারপর থেকেই দু'জনের আচার আচরণ পরিবর্তিত হতে থাকে। আমরা উত্তরার বাসায় থাকতাম। মেজর জাহিদ (বন্দুকযুদ্ধে নিহত) ও মাইনুল হাসান ওরফে মূসার (গুলশান হামলা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি) সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই পিতার পরিচয় ছিল। তারা একত্রে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি মসজিদে নামাজ পড়তেন। এছাড়া আব্বু, মেজর জাহিদ ও মূসা উত্তরার লাইফ স্কুলের মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করতেন। এরপর হাঁটতেন।
পিতার মাধ্যমে মেজর জাহিদ ও মূসা আংকেলের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। আমি ও আমার যমজ ভাই আদর লাইফ স্কুলের মসজিদে আছরের নামাজ পড়তাম। এরপর মূসা আংকেলকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসতাম। তিনি আমাদের দুই ভাইকে অংক, ইংরেজী ও সাইন্সের বিষয়গুলো পড়াতেন। আমাদের বাসায় মেজর জাহিদের সঙ্গে রাশেদ ওরফে র‌্যাশ আসতেন।
এক রাতে হজের পর আব্বু স্বপ্নে দেখেন এক মরুভূমির মধ্যে তিনি অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আব্বু স্বপ্নের বিষয়টি নিয়ে একজন হুজুরের সঙ্গে কথা বলেন। ওই হুজুর স্বপ্নের কথা কাউকে বলতে নিষেধ করেন। পরবর্তীতে উত্তরা বাসা থেকে হিজরত করার পর আমরা জানতে পারি মেজর জাহিদ প্রথমে আব্বুকে জিহাদ করার ব্যাপারে প্রথম দাওয়াত দিয়েছিলেন।
মেজর জাহিদ, তার স্ত্রী ও মেয়ে জুনায়রা ওরফে পিংকি এবং স্ত্রীসহ মূসা প্রায়ই আমাদের বাসায় আসতেন। মেজর জাহিদের বাসা উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরেই ছিল। তাদের বাসায়ও আমরা ছাড়াও স্ত্রী নিয়ে মূসা আংকেল যাতায়াত করতেন।
২০১৬ সালের এপ্রিলে আমরা উত্তরা থেকে প্রথম হিজরত করি। প্রথমে আম্মু রাজি ছিল না। পরে একদিন হঠাৎ রাজি হয়। পরে আমরা মালয়েশিয়া যাবার কথা বলে বের হই। হিজরতের আগে প্রায়ই আব্বু বলতেন, আমরা যেখানে যাব, যেখানে হয়ত বন জঙ্গল বা আমাদের আবদ্ধ অবস্থায় থাকতে হবে। হিজরতের পর আমরা রাজধানীর পল্লবী আফিফাদের পাঁচতলা বাড়ির চতুর্থ তলায় বসবাস শুরু করি। হিজরতের আগে আমরা উত্তরার বাসায় পিতামাতা ও আমরা দুই ভাই বায়াত (খেলাফতের জন্য আনুগত্য) নেই। এই বলে বায়াত নেই 'আমরা এই খলিফার কাছে বায়াত দিলাম। তার আনুগত্য করব ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ পর্যন্ত তার মধ্যে কুফরী না দেখা যায়'। আমরা আমাদের পিতার হাতে হাত রেখে বায়াত নেই।
পল্লবীর বাসায় থাকার সময় বাসারুজ্জামান চকলেট, মূসা ও রাশেদ ওরফে র‌্যাশ আসত। র‌্যাশকে উত্তরার বাসা থেকে চিনতাম। র‌্যাশ পল্লবীর বাসায় থাকার সময় বাসারুজ্জামান ও কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গী আকিফুজ্জামানের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয়। কল্যাণপুরের অপারেশনের দিন আব্বুকে বলেছিলাম, এরা আমাদের ভাই নাকি? তখন আব্বু বলেছিল হ্যাঁ।
মূসা আংকেলের বয়স ৩৮ বছরের মত। মুখে দাঁড়ি। স্বাস্থ্য মাঝারি। দেখতে শ্যামলা। সে শার্ট প্যান্ট পরে। মূসা, চকলেট ও র‌্যাশ প্রায়ই আমাদের বাসায় আব্বুর সঙ্গে জিহাদ, ইমান, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলতেন। তারা প্রায়ই আমাদের বাসায় যাতায়াত করতেন। তারা সিরিয়ার যুদ্ধের ভিডিও দিতেন। আমরা দেখতাম। দাবিক ম্যাগজিন পড়তে দিত। দাবিক ম্যাগাজিনের কয়েকটা বাংলাতেও ছিল।
রমজানের সময় র‌্যাশ আব্বুকে পল্লবীর বাসার পাশাপাশি অন্য জায়গায় বাসা নিতে বলেন। তাদের কথামতো আব্বু বসুন্ধরায় বাসা নেন। টেনামেন্ট-৩ নম্বর বাড়ির ৬তলার এ/৬ নম্বর ফ্ল্যাটে উঠি। বাসাটি এ্যাপোলো হাসপাতালের পাশে। ওই বাড়িতে ওঠার ৮/১০ দিন পর চকলেট, প্রথমে দুই জন এরপর তিনজনকে নিয়ে ওই বাসায় যান। এই পাঁচজনের সাংগঠনিক নাম ছিল সাদ, মামুন, উমর, আলিফ ও শুভ। এর কয়েকদিন পর তামিম চৌধুরী ও মারজান ওই বাসায় যান। একই দিন জাহাঙ্গীর, তার স্ত্রী, তার ছেলে শুভ এবং হৃদয় আংকেল চকলেট আংকেলের সঙ্গে ওই বাড়িতে যান।
জাহাঙ্গীর আংকেল তার সঙ্গে গল্প করত। গল্প করতে করতে বলেছিল, সে দুইটি ডাকাতি করেছে। যার কাছ থেকে টাকা নিত তাকে আহত করত। ডাকাতি, ছিনতাই করা টাকা সংগঠন চালানোর জন্য দিত। একদিন তামিম, মারজান ও চকলেট তাদের বাসায় ব্যাগ নিয়ে যায়। ব্যাগ ভর্তি অস্ত্র ছিল। তামিম, সাদ, মামুন, উমর, আলিফ ও শুভ ওই বাসাতেই থাকত। তারা বাইরে বের হতো না। দরজা লাগিয়ে কথাবার্তা বলত।
বাসায় ৪টি বেডরুমসহ মোট ৭টি রুম ছিল। তামিমসহ ৫ জন এক রুমে থাকত। আমি, আমার ভাই আদর ও আব্বু ড্রইং রুমে থাকতাম। আম্মু ও শুভর এক রুমে থাকত। এদের মধ্যে আলিফ ও উমর অনেক অপারেশন করেছে বলে তার কাছে গল্প করত। এ দু'জন কুষ্টিয়ায় একজন খিস্টান বা হিন্দুকে মেরে রক্তমাখা প্যান্ট খুলে পালিয়ে আসে বলে গল্প করেছিল। তারা আমাদের জিহাদের কথা বলত। তারা ট্রেনিং নিয়েছে বলে জানায়।
আংকেলরা জানায়, তারা একটি বড় অপারেশন করবে। তবে কি ঘটাবে তা গুলশান হামলার আগে জানতাম না। হলি আর্টিজানে যেদিন হামলা হয়, সেদিন বিকেল পাঁচটা সাড়ে পাঁচটার দিকে সাদ, মামুন, উমর, আলিফ ও শুভ কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বের হয়। তারা বের হওয়ার সময় আমাদের সঙ্গে কোলাকুলি করে বলে, 'জান্নাতে গিয়ে দেখা হবে ইনশাল্লাহ'।
পাঁচজন বের হওয়ার পর তামিম আর চকলেট বের হয়ে যান। যাওয়ার সময় চকলেট আংকেল আব্বুকে দ্রুত বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এমনকি সন্ধ্যার আগেই চলে যাওয়ার কথা বলেন। এর ২/১ দিন আগে জাহাঙ্গীর আংকেল তার পরিবার ও হৃদয় আংকেল বের হয়ে যান।
আমরা ইফতার করে ব্যাগে কাপড়-চোপড় নিয়ে দ্রুত ট্যাক্সিক্যাবে করে পল্লবীর বাসায় চলে আসি। পল্লবীর বাসায় গিয়ে আব্বু খুব দুশ্চিন্তা করছিলেন। বলছিলেন, এতক্ষণ হয়ে গেল অথচ কোন নিউজ পাচ্ছি না। আব্বু আমাদের বলে, দোয়া কর যেন ওরা ধরা না পড়ে এবং ভাল একটা অপারেশন যাতে হয়। আব্বু আমাদের বেশি বেশি ইফতেগফার করতে বলেন। কিছুক্ষণ পর আমি বিডি নিউজে দেখতে পাই, হলি আর্টিজানে গোলাগুলি হচ্ছে। তখন বুঝতে পারি, হলি আর্টিজানে অপারেশন হচ্ছে। সকাল পর্যন্ত নিউজ দেখলাম। সকালে অপারেশনকারীদের ছবি প্রকাশিত হয়। আব্বু আমাদের বলেন, অনেক ভাল অপারেশন হয়েছে এবং তোমার ভাইয়েরা শহীদ হয়েছেন। তখন আমরা সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলি।
পরবর্তীতে বিভিন্ন মিডিয়ায় অপারেশনকারীদের ছবি প্রকাশিত হয়। ওই সময় জানতে পারি সাদ হচ্ছে মালয়েশিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটির মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের ছাত্র নিবরাস ইসলাম, মামুন হচ্ছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, উমর এর আসল নাম খায়রুল ইসলাম পায়েল বাঁধন, আলিফের প্রকৃত নাম শফিউল ইসলাম উজ্জ্বল ও শুভর মূল নাম স্কলাসটিকার ছাত্র মীর সালেহ মোবাশ্বের।
হলি আর্টিজানের পর আমরা খুবই খুশি ছিলাম। কয়েক দিন পর র‌্যাশ জানায়, চকলেটকে পাওয়া যাচ্ছে না। র‌্যাশ দ্রুত আমাদের বাসা পরিবর্তনের কথা বলেন। এরপর আমরা রূপনগরে চলে যাই। আব্বুকে আজিমপুরে বাসা ভাড়া নিতে বলা হয়। এমনকি দুই বাসায়ই থাকতে বলা হয়। ১ আগস্ট (গতবছর) আমরা আজিমপুরের বাসায় আসি। এরপর থেকে দুই বাসাতেই থাকতাম। কয়েকদিনের মধ্যে রূপনগরের বাসায় যাতায়াত বন্ধ করে আজিমপুরের বাসাতেই বসবাস শুরু করি। স্ত্রীসহ মারজান এবং স্ত্রীসহ চকলেট আমাদের আজিমপুরের বাসায় যাতায়াত করতেন।
নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় অপারেশনের পর (পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তামিম আহমেদ চৌধুরী দুই সহযোগীসহ নিহত হন) মেজর জাহিদ ব্যাগসহ আমাদের বাসায় আসে। সে জানায়, নারায়ণগঞ্জের অপারেশনের সময় একজন পালিয়েছে। এরপর থেকে মেজর জাহিদ ও তার স্ত্রী পিংকি তাদের বাসায়ই থাকত। রূপনগরে যেদিন পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জাহিদ আংকেল মারা যান, সেদিনই তিনি বাসা থেকে সন্ধ্যার আগে বেরিয়ে ওই বাসায় গিয়েছিলেন। তারা যথারীতি আজিমপুরের বাসাতেই বসবাস করতে থাকেন।
গত ১০ অক্টোবর (গতবছর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বাসায় কারা যেন দরজায় নক করে। আমি ঘরের ভেতর থেকে দরজার বাইরে দেখা যাওয়ার জন্য দরজায় লাগানো কাচ দিয়ে দেখি অনেক লোক। আব্বুকে বলার পর তিনিও দেখেন। এরপর আব্বু আম্মুকে একটি পিস্তল ও একটি বটি হাতে দেন। দিয়ে বলেন, কাছে রাখো। আব্বু বাইরের লোকদের পরিচয় জানতে চান। তারা পুলিশ বলে জানান। আব্বু পুলিশের পরিচয়পত্র দেখতে চান। পুলিশ বাইর থেকে পরিচয়পত্র দেখায়। আব্বু দরজা খোলে।
পুলিশ দেরিতে দরজা খোলার কারণ জানতে চায়। তারা পরিবারের সবাইকে একত্রিত হওয়ার জন্য বলেন। তারা আমার নাম জিজ্ঞাসা করলে আমি রাসেল বলে পরিচয় দেই। আব্বুর নিজেকে জামশেদ বলে পরিচয় দেয়। পুলিশ আব্বুর মোবাইল নিয়ে নেয়। পিংকির নামও জানতে চায় পুলিশ। পুলিশ পুরো বাসায় তল্লাশি চালাতে চায়।
এ সময় আব্বু ডানদিকের একটি কক্ষে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ ধরে ফেলে। আমি পুলিশকে ধাক্কা দেই। এ সময় প্রিয়তি আন্টি চাকু দিয়ে একজন পুলিশকে আঘাত করে। আমিও চাকু দিয়ে এক পুলিশকে আহত করি।
পরে তিন পুলিশ আমাকে ধরে পাশের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। পুলিশ বের হওয়া মাত্রই আব্বু রুমের দরজা লাগিয়ে দেন। তখন পুলিশ আমাদের কাছে অস্ত্র আছে বলে জোরে জোরে বলতে থাকে। পুলিশ দরজা ভেঙ্গে বের হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আব্বু বের হয়ে বটি দিয়ে এদিক ওদিক ঘুরাতে থাকে। তখন পুলিশ আমাকে আব্বুর সামনে ধরে। আব্বু আমার গলায় বটি ধরে। আমি আব্বুকে বলি, আমার লাগছে। তখন আব্বু বলে, মরলে শহীদ হবা। না মরলে আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দেবে।
এ সময় এক পুলিশ আমাকে বারান্দায় নিয়ে যায়। এরই মধ্যে আম্মু ও আন্টিরা মরিচের গুঁড়ো পুলিশের দিকে ছিটিয়ে দেয়। পুলিশ তোশক দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। পরে অনেক গোলাগুলি হয়। খবর পেয়ে অনেক পুলিশ সেখানে যায়। তারা দরজা ভেঙ্গে আমাকে এবং আমার সঙ্গে থাকা পুলিশদের উদ্ধার করে। আমাকে উদ্ধার করার সময় আব্বুকে গলাকাটা রক্তাক্ত অবস্থায় রুমে পড়ে থাকতে দেখি। প্রিয়তি আন্টি ও আম্মুকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। আব্বু সম্ভবত আত্মহত্যা করেন। কারণ আব্বু আমাদের আগেই বলেছিল, আমি যদি কোন সময় ধরা পড়ি, তখন সুইসাইড করব। পুলিশ আমাদের বাসা থেকে চারটি পিস্তল ও গুলিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করে। আজিমপুরের বাসায় আমার যমজ ভাই আফিফ কাদেরী আদর আমাদের সঙ্গে থাকত না। আব্বু তাকে রাজধানীর রূপনগরের বাসা থেকে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছিল। তবে কোথায় পাঠিয়েছিল তা জানি না।
প্রকাশিত : ২৩ মার্চ ২০১৭
- See more at: http://www.dailyjanakantha.com /details/article/257062/%E0%A6 %95%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8B %E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%99%E 0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A7%80-%E0% A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6% B0%E0%A7%80%E0%A6%AE%E0%A7%87% E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%AC% E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0% A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7% 80%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6% 9C%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97% E0%A7%80#sthash.jT1jJGgd.dpuf


জঙ্গিবাদের ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত কাদেরী পরিবার : - Poriborton

ফাতেমা এখন অনুশোচনার আগুনে পুড়লেও সারা দেশে জঙ্গিবাদের ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে তানভীর কাদেরীর পরিবার। এই পরিবারের কর্তা তানভীর কাদেরী আজিমপুরের বাসায় পুলিশি অভিযানের সময় আত্নহত্যা করেন। ... তাদের জমজ দুই সন্তান আফিফ কাদেরী ও তাহরীম কাদেরী রাজধানীর মাস্টার মাইন্ড স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া করতো।

জঙ্গীবাদের ভয়াল থাবায় তছনছ একটি সংসার - MTnews24.com

 গত বছর আজিমপুর থেকে গ্রেফতারকৃত আত্মঘাতী নারী জঙ্গী আবেদাতুল ফাতেমা আশা ওরফে খাদিজা ও তার ছেলে তাহরীম কাদেরীর ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দীতে এমন চাঞ্চল্যকর ও হৃদয় বিদারক কাহিনী ছাড়াও স্বামীর মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষিত ওই নারী ও তাদের যমজ ছেলের আত্মঘাতী জঙ্গী হয়ে ওঠার অজানা তথ্য এবং গুলশানে হলি আর্টিজানে ...










__._,_.___

Posted by: Shah Deeldar <shahdeeldar@yahoo.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___