Banner Advertiser

Saturday, June 25, 2016

Re: [mukto-mona] ক্রসফায়: বিশিষ্ট : এভাবে ব��



Lions kill cubs to persuade lionesses for mating.

2016-06-21 6:40 GMT+06:00 Jiten Roy jnrsr53@yahoo.com [mukto-mona] <mukto-mona@yahoogroups.com>:
 

You are right about crocodiles; in fact, all animals are better than humans.  Animals only kill for food, but - never from their own specie, as humans do. Humans mostly kill their own species.




From: "Sukhamaya Bain subain1@yahoo.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com>
To: mukto-mona@yahoogroups.com
Sent: Monday, June 20, 2016 8:58 AM
Subject: Re: [mukto-mona] ক্রসফায়: বিশিষ্ট : এভাবে ব��

 
Actually, the alligators are innocent animals that do not kill for any imaginary being like Allah; they do it for their stomach. The human-shaped creatures called jihadists are a lot worse than the alligators. They are unworthy of being born as humans; they are an insult to their natural human intelligence. In fact, all seriously God-fearing religious people are an insult to their natural human intelligence.

SuBain

=================================


On Sunday, June 19, 2016 10:08 PM, "Jiten Roy jnrsr53@yahoo.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com> wrote:


 
[Attachment(s) from Jiten Roy included below]
Recently, in the Disney Land Resort at Orlando, Florida, a crocodile pulled a 2-years' old boy into the water, and killed him.  Afterwards, resort authorities  caught 5 crocodiles, and euthanized them. Was it just? Not at all, but, this was needed to prevent such incidence in the future.
Now, let's talk about the Jihadists. These Jihadists also prey on week/defenseless people and kill them, just like the crocodile did in Orlando, Florida. Crocodile wait under the water near the shore for its victim, and spring on the victim at an opportune moment, as Jihadists do. So,  I do not see any difference between these incidences and the incidence of the crocodile, I mentioned above.
As per reports, these Jihadists are members of some outlawed organizations in Bangladesh. As a result, these people are committing illegal acts, just by being active members of those organizations. Consequently, rights that are available to the ordinary citizens are not applicable to these individuals.
Jiten Roy



From: "'Jamal G. Khan' M.JamalGhaus@gmail.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com>
To: mukto-mona@yahoogroups.com
Sent: Sunday, June 19, 2016 9:04 PM
Subject: [mukto-mona] ক্রসফায়ার: বিশিষ্ট নাগরিকদের অভিমত : এভাবে বন্দুকযুদ্ধ প্রশ্ন ও অবিশ্বাস তৈরি করেছে

 
       Inline image 2

ক্রসফায়ার: বিশিষ্ট নাগরিকদের অভিমত            

এভাবে বন্দুকযুদ্ধ প্রশ্ন ও অবিশ্বাস তৈরি করেছে

শফিক আহমেদ,সাবেক আইনমন্ত্রী | আপডেট: ০১:৫৯, জুন ২০, ২০১৬ | প্রিন্ট সংস্করণ      
শফিক আহমেদদুই জঙ্গি তরুণকে 'বন্দুকযুদ্ধে' হত্যার কথা শুনে বিস্মিত হয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি সন্দেহেঅভিযুক্ত কয়েকজন বন্দুকযুদ্ধে মারা গেল। এভাবে মৃত্যু না ঘটিয়ে তাদের স্বীকারোক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে সুষ্ঠু বিচার করতে পারলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পেত, বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য উদ্ঘাটন করা ছিল পুলিশের প্রথম ও প্রধান কাজ। কিন্তু এভাবে বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ার ঘটনা প্রশ্ন ও অবিশ্বাস তৈরি করেছে।
ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় 'বন্দুকযুদ্ধ' শব্দের স্থান নেই। তবে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর সশস্ত্র আক্রমণ হলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে পারে। সেই পরিস্থিতি হয়েছে কি না, তা প্রশ্নসাপেক্ষ। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা চায় জনগণ।
এখনকার মতো পরিকল্পিত বা গুপ্তহত্যা অতীতে ছিল না। আইনের শাসনে বাধা সৃষ্টি করার জন্য পরিকল্পিত হত্যা করা হচ্ছে। অন্য ধর্মের মানুষের ওপর যেমন আঘাত করা হচ্ছে, তেমনি স্বাধীন ও মুক্তচিন্তার মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। এসব হত্যার পেছনে যারা আছে বা যারা অভিযুক্ত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অবশ্যই দিতে হবে। কিন্তু এভাবে মেরে ফেলা বিবেকবান ও সচেতন কেউ সমর্থন করতে পারে না।
মাদারীপুরে কলেজশিক্ষককে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় স্থানীয় জনতা একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে। পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়েছে। আদালত রিমান্ডও দিয়েছেন। রিমান্ড দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে, হাতেনাতে ধরা পড়া ওই তরুণকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্য যারা হত্যায় অংশ নিয়েছে তাদের সম্পর্কে জানা এবং জঙ্গিবাদের শেকড় সম্পর্কে অবহিত হওয়া। কিন্তু রিমান্ডের প্রথম দিনই তাকে মেরে ফেলা হলো। আদালতে হাজির করার সময় তাকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা দেখা গেল, কিন্তু তাকে নিয়ে অভিযানে বের হওয়ার সময় গেঞ্জি পরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ধরে নিলেও প্রশ্ন থাকে, তাকে নিয়ে অভিযানে বের হওয়ার সময় বেশিসংখ্যক পুলিশ যায়নি কেন? তাহলে তো আরও কিছু জঙ্গি গ্রেপ্তার করতে পারত। একইভাবে অভিজিৎ রায় হত্যায় জড়িত সন্দেহে যাকে মেরে ফেলা হয়েছে, তাকেও বাঁচিয়ে রাখা জরুরি ছিল।
বিচার নিজস্ব গতিতে চলা উচিত। আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার নিষ্পত্তি কিন্তু হয়েছে বিচারিক প্রক্রিয়ায়। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, বিডিআর হত্যা মামলা, মানবতাবিরোধী ও গণহত্যাকারীদের অপরাধের বিচার কিন্তু সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। এসব বিচার করাও এমন কঠিন কাজ নয়।
আরও পড়ুন:












__._,_.___

Posted by: Kamal Das <kamalctgu@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

[mukto-mona] Re: {PFC-Friends} Fwd: হিন্দুদের ২২ পুরুষের জমি মুসলমানরা শোধ করবে কিভাবে ?



Not sure why people have so much love for an Arabian despotic Nabob than for another foreign ruler, which happened to be educated/enlightened English? If that Nabob had not lost that battle that time, he would have been taken down later with a larger force. That was the name of the game of that time. Obviously, not all Bengalees, Asamese and Orissans fell in love with this drunken philanderer, Nabob. Departure of that ruler was rather a blessing in disguise!

As for SK. Hasina's rule, she is not perfect but alternative is simply unthinkable. People who have been patronizing murderers and accommodating genocidal killers with ministerial posts have shown their true faces. They need to be fully civilized before they cry for a perfect democracy. Wake me up when you hatemongers stop killing innocent people in name of religion.

2016-06-25 14:50 GMT-04:00 'zainul abedin' via PFC-Friends <pfc-friends@googlegroups.com>:
Salam,

"বাস্তবে পলাশীর যুদ্ধে নবাব হারেননি, হেরেছে বিশ্বাসঘাতকদের ষড়যন্ত্রের কাছে বাংলার স্বাধীনতা।" That is going on again with Hasina, a bonafide grand-grand-sister of Mirzafar and Ghosheti Begum!

Zainul


--------------------------------------------
On Sat, 6/25/16, Post Card <abahar.canada@gmail.com> wrote:

 Subject: Re: {PFC-Friends} Fwd: হিন্দুদের ২২ পুরুষের জমি মুসলমানরা শোধ করবে কিভাবে ?
 To: "Syed Serajul Islam" <sseraji99@yahoo.com>
 Cc: "pfc-friends@googlegroups.com" <pfc-friends@googlegroups.com>, "nabdc@googlegroups.com" <nabdc@googlegroups.com>, "Zoglul Husain" <zoglul@hotmail.co.uk>, "zainul abedin" <zainul321@yahoo.com>, "qamruddin chowdhury" <qamruddinc@yahoo.com>, "RANU CHOWDHURY" <ranu51@hotmail.com>, "Mohammad Gani" <mgani69@gmail.com>, "Hussain Suhrawardy" <shahadathussaini@hotmail.com>, "Suhas Barua" <suhasboston@gmail.com>, "Isha Khan" <bdmailer@gmail.com>
 Date: Saturday, June 25, 2016, 12:49 PM

 HASINa's Cabinet is essentially RAW appointed.
 The notorious Hasina is simply happy to make foreign trips
 and live like a queen. When time comes she will quickly
 leave Bangladesh with her looted money.
 2016-06-24 19:24 GMT-04:00
 Syed Serajul Islam <sseraji99@yahoo.com>:
 মাসুদ
 মজুমদার 
 digantaeditorial@gmail.comধেয়ে আসছে
 রাজনৈতিক সাইক্লোন!22 June 2016,
 Wednesday১. ২৩ জুন
 পলাশী দিবস। ১৭৫৭ সালের
 এই দিনে ভাগীরথী নদীর
 তীরে পলাশীর আমবাগানে
 ষড়যন্ত্রমূলক যুদ্ধে
 সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়
 নিশ্চিত হয়ে যায়।
 সিরাজ তখন সুবে বাংলা
 তথা
 বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার
 নবাব। মুর্শিদাবাদ
 সুবে বাংলার রাজধানী।
 বাস্তবে পলাশীর যুদ্ধে
 নবাব হারেননি, হেরেছে
 বিশ্বাসঘাতকদের
 ষড়যন্ত্রের কাছে
 বাংলার স্বাধীনতা। এই
 হার জিতের নাটকীয়তায়
 বাংলার স্বাধীনতা
 উপনিবেশবাদী ইংরেজদের
 হাতে চলে যায়। এর জের
 ধরেই একে একে ভারতের
 দেশীয় রাজ্যগুলোর
 দখলি স্বত্বও চলে যায়
 সেই ব্রিটিশ
 বেনিয়াদের হাতে। ১৯৪৭
 সাল পর্যন্ত বিভিন্ন
 প্রক্রিয়ায় ভারতীয়
 উপমহাদেশে ব্রিটিশ
 শাসন কার্যকর ছিল।
 পলাশী ট্র্যাজেডির পর
 নামে মাত্র মীর জাফর
 আলী খানকে সিংহাসনে
 বসানো হলেও সুবে বাংলা
 পরিচালিত হচ্ছিল
 ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া
 কোম্পানির ক্লাইভের
 মর্জি মতো। মীরজাফরের
 পরিণতিও ভালো হয়নি।
 বিশ্বাসঘাতকতার পরও
 ইংরেজ বেনিয়াদের পক্ষ
 থেকে কোনো পুরস্কার তার
 ভাগ্যে মেলেনি।
 তিরস্কার আর লাঞ্ছনাই
 জুটেছে তার কপালে। এখন
 'মীরজাফর'
 বিশ্বাসঘাতকতার
 প্রতিশব্দ। এর ক'দিন পর
 মীরকাশিম বাংলার নবাব
 হয়ে বুঝতে পারেন,
 নবাবী আর তাদের হাতে
 নেই। সন্ধি আর চুক্তির
 বেড়াজালে এবং
 স্বার্থের বোঝাপড়ায়
 সুবে বাংলার
 স্বাধীনতাসূর্য
 অস্তমিত প্রায়।
 মীরকাশিম তখন তার
 শ্বশুর বিশ্বাসঘাতক
 মীরজাফর ও অপরাপর
 রাজন্যের সব ষড়যন্ত্র
 টের পেয়ে যান। তত দিনে
 হিন্দু জমিদার ও
 রাজন্যবর্গের
 প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়
 ইংরেজ বণিকদের মানদণ্ড
 রাজদণ্ডের পর্যায়
 পৌঁছে গেছে। বাধ্য হয়ে
 মীরকাশিম
 সশস্ত্রশক্তি দিয়ে
 স্বাধীনতা রক্ষার শেষ
 চেষ্টা চালান।
 দুর্ভাগ্য, ১৭৬৪ সালে
 বক্সারের যুদ্ধে
 মীরকাশিম পরাজয় মেনে
 নিতে বাধ্য হন।
 ভাগ্যবিড়ম্বিত
 মীরকাশিমের শেষ পরিণতি
 সম্পর্কে ইতিহাস নীরব।
 তবে 'স্বাধীনতার
 অস্তমিত সূর্যে'র
 খ্যাতি তার বিলম্বিত
 বোধোদয়ের পুরস্কার
 হিসেবে ইতিহাস তাকে
 সম্মানের আসনে
 বসিয়েছে। বাংলার
 মানুষের কাছে পলাশী
 ট্র্যাজেডি অসহনীয় এক
 ব্যথাতুর স্মৃতি।
 বিশেষত মুসলমানদের
 কাছে স্বাধীনতা হারানো
 ও অস্তিত্ববিনাশী
 হিসেবে দেখা দেয়।
 হিন্দুরা মুসলিম
 শাসকের বদলে ইংরেজ শাসক
 আগমনের বিষয়টি সমর্থন
 ও সহযোগিতা করে। অবশ্য
 বিলম্বে তাদেরও কিছুটা
 বোধোদয় ঘটেছিল।

 একটা জাতির
 ওপর পরাধীনতার গ্লানি
 তাৎক্ষণিক আপতিত হয়
 না। নিজেদের ভুলের
 মাশুলগুলো দিনে দিনে
 দূরতিক্রম্য হয়ে ওঠে।
 তত দিনে আগ্রাসী শক্তি
 সর্বত্র শেকড় গেড়ে
 বসে। জাতির অনৈক্যের
 ফাটল দিয়ে ঢুকে পড়ে
 আধিপত্যবাদী শক্তি।
 জাতির ঘাড়ে চেপে বসে
 অর্থনৈতিক শোষণের
 জোয়াল। সাংস্কৃতিক
 আগ্রাসন ঘরে ঘরে সৃষ্টি
 করে বশংবদ। রাজনৈতিক
 নিপীড়ন বাড়িয়ে তোলা
 হয়; যাতে আগ্রাসনকে
 সার্বভৌমত্ব হারানোর
 বিষয় না ভেবে শাসক
 পরিবর্তন ছাড়া সাধারণ
 মানুষ আর কিছু চিন্তাও
 না করে।
 পলাশীর
 প্রেক্ষাপট সৃষ্টি
 হয়েছিল সম্রাট
 জাহাঙ্গীরের
 বদান্যতার সুযোগে।
 ইংরেজ বণিকেরা সুই হয়ে
 ঢুকে ফাল হয়ে বেরোতে
 শুরু করল। নবাব
 আলীবর্দী খাঁর আমলের
 শেষ দিকে ইংরেজ
 ষড়যন্ত্র প্রকাশ্য
 রূপ পেতে শুরু করে।
 আলীবর্দী টের
 পেয়েছিলেন। সতর্কও
 করেছিলেন।
 স্বার্থবাজরা আমলে
 নেয়নি। আলীনগর সন্ধিও
 ছিল বশ্যতামূলক। ইস্ট
 ইন্ডিয়া কোম্পানির
 দুরভিসন্ধি, নবাব
 পরিবারের ভেতরের
 ষড়যন্ত্র, হিন্দু
 জমিদারদের দ্বিমুখী
 আচরণ এবং মীর জাফরগং-এর
 বিশ্বাসঘাতকতার ফলেই
 পলাশী ট্র্যাজেডি
 সংঘটিত হয়েছিল।
 রাজনৈতিক
 বিশ্লেষক এবং
 নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে
 যারা ভাবেন, তারা
 পলাশীর
 পরিপ্রেক্ষিতের সাথে
 আজকের বাংলাদেশের
 সামগ্রিক অবস্থার
 মিল-অমিল মিলিয়ে দেখতে
 চান। তাতে এক কথায়
 উপসংহার টানা সম্ভব না
 হলেও চলমান পরিস্থিতি
 মোটেও শঙ্কামুক্ত
 থাকার মতো নয়। আমাদের
 জাতীয়
 নিরাপত্তাবেষ্টনী ও
 জাতীয় স্বার্থ
 চ্যালেঞ্জের মুখে।
 পড়শিদের
 নিরাপত্তাকৌশলের কাছে
 আমাদের অবস্থান
 জিম্মির মতো। আমাদের
 বার্গেনিং ক্ষমতা
 অনুল্লেখযোগ্য ও
 নতজানু। এ অবস্থা দেখেই
 সম্ভবত ব্রিটিশ
 প্রভাবশালী দৈনিক দ্য
 গার্ডিয়ানের
 রোববারের সংস্করণ দ্য
 অবজারভারের
 সম্পাদকীয়তে মন্তব্য
 করেছে, 'ভবিষ্যতে
 বাংলাদেশ একটি
 ধ্বংসাত্মক
 আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক
 সাইক্লোনে ক্ষত-বিক্ষত
 হতে পারে এবং দেশটির
 একার পক্ষে এই সাইক্লোন
 নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব
 নয়।' একই সম্পাদকীয়
 মন্তব্যে বাংলাদেশের
 রাজনৈতিক পরিস্থিতির
 যে ভয়াবহ চিত্র
 রয়েছে, এর সাথে দ্বিমত
 পোষণ করা যায়, এটা
 অস্বীকার করা যায় না।
 তাহলে আরেকটি পলাশী
 ধরনের বিপর্যয় ধেয়ে
 আসছে না-তো? অন্তত এর
 পটভূমি সৃষ্টিতে আমরা
 সবাই জড়িয়ে যাইনি
 তো?
 ২.
 জঙ্গি ও সন্ত্রাসী
 গ্রেফতার অভিযানের
 একটি খণ্ডচিত্র হচ্ছে,
 চার দিনে ৯ হাজারের
 বেশি গ্রেফতার হয়েছে।
 সাত দিনের অভিযানে
 গ্রেফতার হয়েছে
 প্রায় ২০ হাজার।
 পুলিশের দাবি অনুযায়ী,
 তার মধ্যে মাত্র ১৯৪ জন
 জঙ্গি। তবে চাঞ্চল্যকর
 খুনের সাথে জড়িত কেউ
 নেই। প্রশ্ন ওঠে তাহলে
 অবশিষ্টরা কারা?
 নিঃসন্দেহে বিভিন্ন
 বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক
 দলের কর্মী, নেতা কিংবা
 সাধারণ মানুষ। এক দিকে
 ঘোষণা দিয়ে
 গণগ্রেফতারের সমাপ্তি
 টানা হলো, আবার অভিযান
 অব্যাহত থাকলো কেন? ১২
 দিনে বন্দুকযুদ্ধে
 নিহত হলো ১৬। উত্তরায়
 বিপুল অস্ত্র ও গুলি
 উদ্ধার হলো। রিমান্ডে
 থাকা ফাহিম
 বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ
 দিলো। গুপ্তহত্যার
 সাথে সংশ্লিষ্ট
 ব্যক্তিদের মধ্যে
 একমাত্র ফাহিম জনতার
 হাতে ধরা পড়েছে? তাকে
 হত্যা করে কাদের আড়াল
 করা হচ্ছে? কেন আলামত
 রাখা হচ্ছে না? খালেদা
 জিয়ার অভিযোগ সরকার কি
 প্রমাণ করতে চায়?
 পরিস্থিতি এতটাই
 বাড়াবাড়িমূলক যে,
 সাঁড়াশি অভিযানে আটক
 হাজার হাজার অতিরিক্ত
 বন্দীর চাপে
 কারাগারগুলোতে তিল
 ধারণের ঠাঁই নেই। সব
 কারাগার মিলিয়ে
 ধারণক্ষমতা রয়েছে ৩৪
 হাজার, বন্দী রয়েছে ৭৬
 হাজার। ধারণক্ষমতার
 দ্বিগুণেরও বেশি বন্দী
 নিয়ে কারাগারগুলোতে
 মানবিক বিপর্যয়
 অসহনীয় হয়ে উঠেছে। এক
 দিকে পুলিশের
 চাঁদাবাজির অত্যাচারে
 স্বজনদের আহাজারি, অন্য
 দিকে শত শত রোজাদার
 পরিবারে নির্ঘুম রাত,
 প্রতীক্ষার প্রহর গোনা,
 পুলিশের ভয়ে বাড়ি
 ছাড়া হয়ে নিরুদ্দেশে
 ঘুরে বেড়ানোÑ এ যেন
 মানবসৃষ্ট হয়রানির
 বীভৎস চিত্র। স্বাধীন
 দেশে রাষ্ট্রের পক্ষে
 সরকার সন্তানতুল্য
 নাগরিকদের বিরুদ্ধে
 এমন অমানবিক রাজনৈতিক
 প্রতিশোধ নিতে পারে, তা
 কল্পনাও করা যায় না।
 আমরা জানি না 'হেড অব
 দ্য গভ্মেন্ট' হিসেবে
 প্রধানমন্ত্রীর
 ধার্মিক মনে রোজার
 অনুভূতি চ্যালেঞ্জ
 হয়ে যাচ্ছে কি না, তাকে
 কি ভুল বোঝানো হচ্ছে, না
 তিনি ভয়াবহ বাস্তব
 পরিস্থিতি সম্পর্কে
 সবটা জানেন না। রোজায়
 আল্লাহ ঈমানদারদের
 জন্য তো বটেই, পাপী
 তাপীদের জন্যও রহমতের
 দরজা খুলে দেন। আমরা
 কেন হাজার হাজার
 মানুষকে গজবের দিকে
 ঠেলে নিয়ে যাচ্ছি?
 ৩.
 আবার জাসদ নিয়ে মুখ
 খুললেন সৈয়দ আশরাফ।
 জবাব দিলেন রব, ইনু,
 শিরীনসহ অনেকেই। সৈয়দ
 আশরাফ এই প্যান্ডোরার
 বাক্স এখন আবার খুলতে
 গেলেন কেন? একই সংসদ ও
 মন্ত্রিপরিষদের
 সদস্যদের মধ্যে এই
 বিতণ্ডা, হঠাৎ করে
 অনেককে ভাবিয়েছে।
 বিতর্কে যোগ দিয়েছেন
 কাজী ফিরোজ রশিদ এবং
 অন্যরাও। ১৪ দলীয়
 জোটের ভেতর এই খুনসুটি
 পুরনো। ঐক্যের ভেতর
 অনৈক্যের সুর বাজানোর
 তাৎপর্য কী! জাসদ ইস্যু
 এই মুহূর্তে জাতীয়
 সমস্যা নয়। এখন জাসদ
 নিজস্ব রাজনীতি করছে
 না, সরকারের অংশ। তাহলে
 আসল উদ্দেশ্য কী? কখনো
 মনে হয়, যখন রাজনৈতিক
 পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়,
 জনগণের দৃষ্টি ফেরানোর
 একটা দায় বর্তায়, তখন
 এ ধরনের কুতর্কের ইস্যু
 ছুড়ে দেয়া হয়। আজকের
 জাসদ যেমন বিতর্কের
 ঊর্ধ্বে নেই, তেমনি
 আওয়ামী লীগও রাজনীতির
 ধোয়া তুলসী নয়। '৭১
 অবধি আওয়ামী লীগ ভিন্ন
 ধরনের। '৭২ থেকে '৭৫
 আওয়ামী লীগের রাজনীতি
 শতভাগ কুয়াশাচ্ছন্ন।
 স্বাধীনতার পর জাতীয়
 সরকার গঠনের প্রস্তাব
 উপেক্ষিত হলে,
 স্বাধীনতার স্বপ্ন
 ভঙ্গের প্রেক্ষাপটে
 তারুণ্যের ক্ষোভের
 আগুন থেকে জাসদের
 উত্থান ছিল অনিবার্য।
 জাসদ রাজনৈতিক
 অসঙ্গতির কারণে কাচের
 মতো ভেঙেছে। আদর্শিক
 কমিটমেন্টের অভাবে
 বিচ্যুত হয়েছে।
 নেতৃত্বের
 সুনির্দিষ্ট
 দিকনির্দেশনার অভাবে
 পথ হারিয়েছে।
 সুনির্দিষ্ট
 টার্গেটের অভাবে
 হঠকারী হয়েছে।
 আদর্শহীন অতি বাম ভাবনা
 আর অর্থহীন ভান জাসদের
 রাজনৈতিক মতাদর্শকে
 স্থিতি দেয়নি। তাই বলে
 জাসদের উত্থান 'পাপ'
 ছিল না, সময়ের চাহিদা
 পূরণের তাড়না ছিল।
 বঙ্গবন্ধু
 প্রধানমন্ত্রী হলেন,
 প্রেসিডেন্ট হলেন; শেষ
 পর্যন্ত বাকশাল করে
 একদলীয় পথে হাঁটলেন।
 তত দিনে চাটার দল শুধু
 কম্বল নয়, ভিক্ষে করে
 আনা সব সম্বলই খাবলে
 খেয়েছে। দুর্ভিক্ষ
 কেড়ে নিয়েছে হাজার
 হাজার প্রাণ। তলাবিহীন
 ঝুড়ি নিয়ে বঙ্গবন্ধু
 যখন চোখে অন্ধকার
 দেখছিলেন,
 ষড়যন্ত্রকারীরা তখনই
 সুযোগ খুঁজেছে। এভাবেই
 হত্যার প্রেক্ষাপট
 তৈরি হয়ে যায়। আজ
 জাসদের বিরুদ্ধে আঙুল
 তুলতে হলে নিজেদের বড়
 মাপের ভুলগুলোও সামনে
 আনতে হবে। সর্বহারা,
 নকশালপন্থী, জাসদ,
 সিরাজ শিকদার, মওলানা
 ভাসানী, জাতীয় লীগসহ
 তৎকালীন সবাই বিরোধী
 দলের স্রোত সৃষ্টি করতে
 চেয়েছে। মস্কোপন্থী
 ন্যাপ-কমিউনিস্ট
 পার্টি সরকারের সাথে
 বাকশালে ছিল।
 পরিস্থিতি সৃষ্টির
 দায় যদি বর্তায়,
 তৎকালীন সব বিরোধী দলকে
 নয় সরকারকেই দায় মেনে
 নিতে হবে। প্রতিকূল
 পরিস্থিতিতে যাদের
 রাজনীতি করার
 অধিকার-এখতিয়ার ছিল
 না, তাদের টেনে লাভ কী?
 লালবাহিনী গণবাহিনী
 রক্ষীবাহিনী বাকশাল
 বাহিনী-সবার কাহিনী
 জনগণ জানে। দেশ শাসনের
 ব্যর্থতার দায় থেকেও
 আওয়ামী লীগ মুক্ত নয়।
 তারাই বঙ্গবন্ধুকে
 পয়েন্ট নো রিটার্নের
 পথে নিয়ে গেছেন। দলের
 ভেতর ষড়যন্ত্র
 ডালপালা মেলেছিল।
 আজকের
 জাসদ আশাজাগানিয়া দল
 নয়, যদিও একসময়
 তারুণ্যের মনে স্বপ্ন
 জাগিয়েছিল। আজকের
 গলাবাজরা চাঁদাবাজ
 উচ্ছিষ্টভোগী, সেদিন
 ছিলেন পেছনের কাতারে।
 যে দু-চারজন সামনে
 বাড়ানো ছিলেনÑ তাদের
 বেশ ক'জন ছিলেন
 গণবাহিনীর সদস্য।
 গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ
 আশ্রয়ী রাজনীতি তাদের
 ধাতে নেই। কারণ নেগেটিভ
 অ্যাপ্রোচ নিয়েই
 জাসদের উত্থান।
 বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র
 সম্পর্কে তাদের ধারণা
 মার্কসবাদ মাওবাদ
 সমর্থিত নয়। কাচের মতো
 ভাঙার পর জাসদের আর
 কোনো নিজস্ব রাজনীতি
 নেই। স্বভাবতই ক্ষমতার
 কোলবালিশ হওয়ার
 মধ্যেই কিছু নেতা
 সার্থকতা খুঁজে
 পেয়েছেন। এখন
 জাসদ-আওয়ামী লীগের
 বিতণ্ডা-বিতর্ক লোক
 দেখানো এবং পাতানো
 তামাশা ছাড়া আর কিছু
 নয়। যারা উপভোগ্য ভেবে
 তক্কাতক্কি করছেন তারা
 ভেবে বসলেন, জাতীয়
 সমস্যা থেকে দৃষ্টি
 ফেরানোর এটাই একটা ভালো
 প্রেসক্রিপশন হতে
 পারে। অমনি ইস্যুটিকে
 লুফে নিলেন। এই কুতর্ক
 আরেকটি ট্র্যাজেডিকে
 ডেকে আনবে না তো?
 গার্ডিয়ান
 যে রাজনৈতিক
 সাইক্লোনের আলামত
 দেখছে, সেটাই কি সত্য
 হয়ে যাবে? গণগ্রেফতার,
 ক্রসফায়ার, গুপ্ত
 হত্যা, সংখ্যালঘুদের
 হুমকি দিয়ে ভারতের
 সিম্প্যাথি আদায়ের
 চেষ্টা, আইএস ধূম্রজাল
 কোনটাই মূল রোগ নয়,
 উপসর্গ। সাইক্লোনের
 আগে নিম্নচাপ কি না,
 সেটাও ভেবে দেখা
 প্রয়োজন।
 masud2151@gmail.com উৎসঃ
   নয়া
 দিগন্ত



  On
 Friday, June 24, 2016 7:19 PM, Capt Hossain <atlanticmarinecanada@gmail.com>
 wrote:


  We need
 to change this Slave govt.
 2016-06-23 10:28 GMT-04:00 Mohamed
 Nazir <nazir0101@gmail.com>:



 হিন্দুদের ২২
 পুরুষের জমি মুসলমানরা
 শোধ করবে কিভাবে
 ?

 সম্প্রতি কালী
 প্রদীপ চৌধুরী নামক এক
 ফ্রড ১৪২ তলা ভবন
 নির্মাণের উছিলা দিয়ে
 বাংলাদেশে ঢুকেছে। সে
 দাবি করেছে, ঢাকায়
 নাকি তার ২২ পুরুষের
 জমিজমা আছে, মুসলমানরা
 সেগুলো দখল করে রেখেছে,
 সেগুলো সে ফেরত চায়।
 ফ্রড কালী প্রদীপের
 কথায় মজে প্রতিবন্ধী
 অর্থমন্ত্রী মুহিত
 বলেছে- "যারা কালী
 প্রদীপের ২২ পুরুষের
 জমি দখল করেছে, তাদের
 অবশ্যই জমি ছেড়ে দিতে
 হবে" । (http://goo.gl/zgWI9e)

 কি সুন্দর, কি সুন্দর,
 বাংলাদেশী মুসলমানরা
 যে কি ভুল করেছিলো যার
 খেসারত এখন তাদের দিতে
 হচ্ছে কালী প্রদীপদের
 ২২ পুরুষের ইচ্ছা পুরণ
 করে। শুধু কালী প্রদীপ
 একা না, ভারত থেকে এখন
 নিয়মিত অনেকেই আসছে,
 বলছে অমুক যায়গায় তার
 পুর্বপুরুষের বাড়ি,
 তমুক যায়গা তার চৌদ্দ
 পুরুষের বাড়ি।
 নচিকেতা, পার্বতী বাউল,
 পাউলী দাম সবাই ভারত
 থেকে এসে বলেছে
 বাংলাদেশে তাদের
 পুর্বপুরুষের বাড়ি
 নাকি মুসলমানরা দখল করে
 রেখেছে, তাই সেই বাড়ি
 তাদের ফেরত চাই।

 (http://goo.gl/qkVWvK)

 আমরা জানি, বঙ্গবন্ধু
 কিন্তু ভারতের দাবি
 অর্পিত সম্পত্তি আইন
 পাশ করে নাই। কিন্তু
 ২০০১ সালে ঠিকই আওয়ামী
 সরকার ভারতকে সন্তুষ্ট
 করতে অর্পিত সম্পত্তি
 আইন পাশ করে। ইতিমধ্যে
 অর্পিত আর দেবোত্তর
 সম্পত্তির নাম দিয়ে
 হিন্দুরা মুসলমানদের
 প্রায় ৫০ লক্ষ বিঘা
 জমি দাবি করেছে (http://goo.gl/I6IgQT)
 হিন্দুরা যেন সহজেই
 মুসলমানদের জমি কেড়ে
 নিতে পারে, এ সুবিধার
 জন্য সরকার ট্রাইবুনাল
 পর্যন্ত করে দিয়েছে।
 এই তো কিছুদিন আগে
 সিলেটের রাগিব রাবেয়া
 মেডিকেল কলেজের
 সম্পত্তি বুঝে নিয়েছে
 হিন্দুর। ঐ এলাকার
 সম্পত্তির পরিমাণ
 প্রায় ১৬০০ বিঘা।
 এছাড়া ঢাকার পুরো
 নীলক্ষেতকে নিজের জমি
 বলে দাবি করেছে এক
 হিন্দু। একই সাথে
 ঢাকাস্থ ঢাকেশ্বরী
 মন্দিরের
 চর্তুপার্শ্বে শতাধিক
 মুসলিম বাড়িঘর উচ্ছেদ
 করে মন্দির প্রশস্থ
 করার কাজ করছে সরকার।

  ইতিহাস বলছে, ফের
 'চিরস্থায়ী
 বন্দোবস্ত' ঘটনার
 শুরু হয়ে গেছে। আজ
 থেকে ২শ' বছর আগে
 চিরস্থায়ী বন্দোবস্থ
 করে যেমন মুসলমানদের সব
 সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে
 হিন্দুদের দিয়েছিলো
 ব্রিটিশ দস্যুরা, এখনও
 মুসলমানদের থেকে
 জমিজমা কেড়ে নিয়ে
 হিন্দুদের দিচ্ছে
 সরকার। অথচ মিডিয়ায়
 প্রকাশ হচ্ছে হিন্দুরা
 নাকি নির্যাতিত, কিন্তু
 বাস্তবতা সম্পূর্ণ
 উল্টো। হিন্দু
 নির্যাতনের কভার এটে
 মুসলমানদের শিকল পরানো
 হচ্ছে, যেন বেখবর থাকে
 সবাই।


















 ঢাকাদক্ষিণের
 দত্ত চৌধুরী পরিবারের
 সম্পত্তি অবৈধ
 দখলকারীদরে ছেড়ে দিতে
 হবে - অর্থমন্ত্রী
 -...



  























 --

 You received this message because you are subscribed to the
 Google Groups "PFC-Friends" group.

 To unsubscribe from this group and stop receiving emails
 from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.

 For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.




 --

 Thank you,

 Capt.Farid Hossain





 --

 You received this message because you are subscribed to the
 Google Groups "PFC-Friends" group.

 To unsubscribe from this group and stop receiving emails
 from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.

 For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.









--
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "PFC-Friends" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to pfc-friends+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/d/optout.



__._,_.___

Posted by: Shah DeEldar <shahdeeldar@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

Re: [mukto-mona] অভিজিৎ হত্যা : অনুসরণকারী সাত হামলাকারী পাঁচ [3 Attachments]

[Attachment(s) from Shah Deeldar shahdeeldar@yahoo.com [mukto-mona] included below]

Bangladesh has taken out the right person but in a wrong way. Could it do in a different way? Of course! But there would have been people, who would not have taken the death sentence lightly as we have seen with Bangobhandhu murderers. To our Islamist brothers and sisters, a good Muslim can't commit such heinous crime. They love when these kinds of crime continue and make government look bad.


On Thursday, June 23, 2016 9:43 PM, "'Jamal G. Khan' M.JamalGhaus@gmail.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com> wrote:


 

অনুসরণকারী সাত হামলাকারী পাঁচ

প্রধান সন্দেহভাজনের লাল শার্টে মিলতে পারে আরও ক্লু
alt
সাহাদাত হোসেন পরশ

বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায় হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১২ জনকে শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। জড়িতরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য। ডিবি বলছে, এবিটি একক কোনো 'অপারেশনে' সর্বোচ্চ পাঁচ-ছয়জন সদস্য নিয়ে মাঠে নামলেও ব্যতিক্রম ছিল অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। এই প্রথম কোনো হত্যা মিশনে এবিটির অন্তত ১২ সদস্য মাঠে ছিল। তাদের মধ্যে সাতজন ছিল অনুসরণকারী, বাকি পাঁচজন সরাসরি হামলায় অংশ নেয়। তবে অভিজিৎ হত্যায় সরাসরি জড়িত কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্তের সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে এক বছরের বেশি সময় যুক্তরাষ্ট্রে এফবিআইর ল্যাবে আটকে রয়েছে অভিজিৎ হত্যার ঘটনায় ১১ আলামতের ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন। তদন্তে বেশ কিছু অগ্রগতি থাকলেও ওই প্রতিবেদন পাওয়ার আগে এই মামলায় চার্জশিট দাখিল করা সম্ভব হবে না। এ ছাড়া অভিজিৎ হত্যায় জড়িত অন্যতম প্রধান সন্দেহভাজন মুকুল রানা ওরফে শরিফুলের সেই হালকা লাল রঙের শার্ট খুঁজছে পুলিশ। পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনার দিন অভিজিৎ ও তার স্ত্রী ডা. রাফিদা আহমেদ বন্যার পেছনে পেছনে একজন অনুসরণ করছে। পুলিশ বলছে, অনুসরণকারী ওই ব্যক্তি শরিফুল। যদিও পরে জানা যায়, তার প্রকৃত নাম মুকুল রানা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মাশরুকুর রহমান খালেদ সমকালকে বলেন, এরই মধ্যে অভিজিৎ হত্যার ঘটনার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত

পাওয়া গেছে। প্রধান সন্দেহভাজনের একটি শার্ট খোঁজা হচ্ছে।

অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় গতকাল সমকালকে বলেন, 'আমার প্রত্যাশা দ্রুত অভিজিৎ হত্যার রহস্য উন্মোচিত হোক। তবে এরই মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে প্রধান সন্দেহভাজন মারা গেছে। সব সময় আমি বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে কথা বলে এসেছি। পুলিশ না-কি সহযোগীদের গুলিতে অভিজিৎ হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন আসামি নিহত হয়েছে, আদালতের মাধ্যমে তার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি। কেউ হয়ত মূল সন্দেহভাজনের মুখ বন্ধ করতে চেয়েছে।'

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবিটির সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিজিৎ রায়কে হত্যার টার্গেট করে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিজিৎ দেশে ফেরার পর তারা হামলার জন্য লক্ষ্য চূড়ান্ত করে। ২০১৫ সালে অমর একুশে বইমেলা চলাকালে প্রথমে ২৫ ফেব্রুয়ারি অভিজিতের ওপর হামলার দিন ঠিক করা হয়। ওই দিন তিনি মেলায় না যাওয়ায় হামলাকারীদের প্রথম টার্গেট বাস্তবায়ন হয়নি। পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় এবিটির সাত সদস্য অভিজিৎ ও তার স্ত্রীকে অনুসরণ করে। অপারেশনে অংশ নেওয়া পাঁচজনের মধ্যে চারজনের হাতে ছিল চাপাতি, অন্যজনের কাছে ছিল ক্ষুদ্রাস্ত্র। তবে অভিজিৎকে কুপিয়েছে দু'জন। মুকুল হামলায় মূল কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করে। অভিজিতের মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারীরা রাজধানীর কুড়িলের একটি বাসায় জড়ো হয়। এরপর যে যার মতো পরিকল্পা অনুযায়ী পালিয়ে যায়।

দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, অভিজিতের হামলাকারীরা উত্তরার একটি বাসায় প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। সেখানে তিন মাস প্রশিক্ষণ শেষে হামলার সপ্তাহখানেক আগে টার্গেট করার ব্যক্তির ছবি দেখিয়ে চূড়ান্ত ব্রিফিং দেওয়া হয়। হামলায় জড়িতদের কয়েকজন এক সময় মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত।

সূত্র বলছে, সম্প্রতি সন্দেহভাজন একাধিক এবিটির সদস্যকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অভিজিৎ হত্যার অনেক তথ্য উঠে আসে। এ ছাড়া এবিটির সদস্য শিহাবও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে উগ্রপন্থিদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। প্রথমে পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, অভিজিৎ হত্যার ঘটনায় মুকুলসহ ছয়জন জড়িত। পরে বেরিয়ে আসে, ওই অপারেশনে ১২ জন সদস্য ছিল। অভিজিতের অপারেশনে অংশ নেওয়াদের কয়েকজন প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা ও আহমেদুর রশীদ টুটুল হত্যাচেষ্টায়ও সম্পৃক্ত। বইমেলা ঘিরে অনেক লোকজনের সমাগম হওয়ায় এবিটির সদস্যরা তাদের প্রচলিত অপারেশনের বাইরে গিয়ে অধিক সংখ্যক সদস্য নিয়ে হামলায় অংশ নেয়।

ডিবির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন সময় অভিজিৎ হত্যার ঘটনায় ফারাবিসহ সন্দেহভাজন আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। মামলার তদন্তে গ্রহণযোগ্য অনেক তথ্য-উপাত্ত এরই মধ্যে পাওয়া গেলেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া আলামতের ডিএনএ প্রতিবেদন না পাওয়ায় কিছু প্রশ্নের উত্তর মেলানো যাচ্ছে না। প্রধান সন্দেহভাজনের শার্ট উদ্ধার করা গেলে ডিএনএ প্রতিবেদনের আলামতের সঙ্গে মিলিয়ে দেখবে ডিবি। দ্রুত ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়ার জন্য এফবিআইর সঙ্গে যোগাযোগ করছে পুলিশ।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে সঙ্গে নিয়ে একুশে বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় তাদের ওপর হামলা করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অভিজিৎ। ঘটনাস্থল থেকে দুটি রক্তমাখা চাপাতি ও একটি ব্যাগ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একটি চাপাতিতে রক্তের সঙ্গে লম্বা চুল আটকে ছিল। ওই চুল অভিজিতের স্ত্রীর। একটি কালো রঙের ব্যাগের ভেতর দুটি ইনজেকশন, একটি সিরিঞ্জ, কিছু ওষুধ ও পুরনো কিছু পত্রিকা পাওয়া গেছে। ওই ব্যাগের ভেতরে একটি প্যান্টও ছিল। অভিজিৎ হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশে আসে এফবিআইর একটি প্রতিনিধি দল। তারা মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবির সঙ্গে বৈঠক করেছিল। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইর ল্যাবরেটরিতে অভিজিৎ রায় হত্যাকা ের আলামত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।

পুলিশ বলছে, এবিটি অনেক অপারেশনে বিশেষ ধরনের ইনজেকশন ব্যবহার করে, যা রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। হামলার পর টার্গেট করা ব্যক্তির শরীরে ওই ইনজেকশন পুশ করে উগ্রপন্থিরা। অভিজিতের ওপর হামলার পর 'রোটেক্স' নামে এক ধরনের ইনজেকশন উদ্ধার করা হয়েছিল।
Inline image 1
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০১৬

আরও পড়ুন:

হত্যার পর খুনিরা বৈঠক করেছিল রেডিসনে, একবছর আগেই খুনিদের প্রোফাইল তৈরি করেন গোয়েন্দারা

জামাল উদ্দিন ০৭:৫০ , জুন ২১ , ২০১৬

alt

ক্রসফায়ার নয়, বিচার 
চান অজয় রায়

অভিজিৎ রায়ের একজন খুনি 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হওয়ায় সান্ত্বনা খুঁজলেও আইনি প্রক্রিয়ায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের দাবি জানিয়েছেন তার বাবা অধ্যাপক অজয় রায়।

AwfwRZ nZ¨v
Lywb‡`i Qwe I wWGbG †cªvdvBj GKeQi Av‡M cywjk ˆZwi K‡ib: ARq ivq

২০ জুন ২০১৬, ৬ আষাঢ় ১৪২৩, সোমবার, ঢাকা, বাংলাদেশ

সিসি ক্যামেরায় অভিজিতের 'খুনি'


  গোলাম মুজতবা ধ্রুব  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম





__._,_.___

Attachment(s) from Shah Deeldar shahdeeldar@yahoo.com [mukto-mona] | View attachments on the web

3 of 3 Photo(s)


Posted by: Shah Deeldar <shahdeeldar@yahoo.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

Re: [mukto-mona] ২৩ জুন পলাশী দিবস



These corrupt Nababs were their own worst enemies. Only thing, they were good about was to play with free resources and whores. Two hundred years of English rule was simply a great blessing in disguise for Bengal and India. I have no doubt.... letting these inbred corrupt foreign Nababs to rule India for another two hundred years would have brought total disaster. The MirJafars of that time need to reevaluated in the light of prevailing chaos in Muslim dominated countries. The poor rule and dictatorial mentalities are not really fluke traditions!  


On Friday, June 24, 2016 9:31 PM, "Shahadat Hussaini shahadathussaini@hotmail.com [mukto-mona]" <mukto-mona@yahoogroups.com> wrote:


 

২৩ জুন পলাশী দিবস

ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম

২৩শে জুন পলাশী দিবস। আজকাল অনেকটা অলক্ষ্যেই কেটে যায় দিনটা।
ভারতবর্ষের বিচিত্র ইতিহাসের মধ্যে পলাশীর মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে। ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন মীর জাফর আর জগৎশেঠদের মত এদেশিয় কিছু মতালিপ্সু স্বার্থান্বেষী বিশ্বাসঘাতকের চরম বিশ্বাসঘাতকতায় চতুর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়। সাথে সাথে এদেশের আকাশে নেমে আসে দুর্যোগের ঘনঘটা; বাংলার জমিনে নেমে আসে দুর্ভেদ্য অমানিশা; এদেশের মানুষের উপর চেপে বসে পরাধীনতার জগদ্দল পাথর। সেই থেকে সমগ্র ভারতবর্ষ ১৯০ বছর ধরে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল। তাই প্রতি বছর জুন মাস আসলেই এদেশের স্বাধীনচেতা মানুষের অন্তরে জেগে উঠে পলাশীর আম্রকাননের বিভীষিকা। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, শুরু থেকেই ভারতবর্ষের মুসলমানদের হেয় করার ল্েয এবং বাঙালি মুসলমান নেতাদের নামে কালিমা লেপনের উদ্দেশ্যে সুস্থ মস্তিষ্কে পলাশীর প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে। সময়ের ব্যবধানে সে চাপাপড়া ইতিহাস অনেকাংশে স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাই নতুন প্রজন্মকে প্রকৃতপে ইতিহাস সচেতন করে গড়ে তোলার ল্েযই আলোচ্য নিবন্ধে ঐতিহাসিক পলাশীর ট্র্যাজেডি সংপ্তিাকারে আলোকপাত করার চেষ্টা করা হয়েছে। 
আজ২৩ জুন।ঐতিহাসিক পলাশী দিবস। এটি বাঙালির ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। দুশসাতান্ন বছর আগে ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ভাগীরথী নদী তীরে পলাশীর আমবাগানেনবাবের বাহিনীর মুখোমুখি হয় ইংরেজ বাহিনী। এ দিনে পলাশীর আম বাগানে ইংরেজদের সঙ্গে এক যুদ্ধে বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার শেষ সূর্য। পরাজয়ের পর নবাবের বেদনাদায়ক মৃত্যু হলেও উপমহাদেশের মানুষ নবাবকে আজও শ্রদ্ধা জানায়। তার সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। ইতিহাসবিদ নিখিল নাথ রায়ের লেখা 'মুর্শিদাবাদ কাহিনী' থেকে জানা যায়, নবাবের সেনা বাহিনীর তুলনায় ইংরেজদের সেনা সংখ্যা ছিল অনেক কম। সেখানে বিশ্বাসঘাতকতা না হলে নবাবের বিজয় ছিল সুনিশ্চিত।
বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার স্বাধীন নবাব ছিলেন আলীবর্দী খাঁ (১৭৪০-১৭৫৬)। তার প্রকৃত নাম মীর্জা বন্দি বা মীর্জা মুহাম্মাদ আলী। তার বড় ভাইয়ের নাম হাজী আহমাদ। তাদের পিতামহ ছিলেন আরব বংশোদ্ভূত, আর মাতা ছিলেন আফগান-তুর্কি বংশোদ্ভূত। সেই সুবাদে তারা ছিলেন সুজাউদ্দীন খাঁর আত্মীয়। সুজাউদ্দীন ছিলেন বাংলার প্রথম নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর জামাতা। শ্বশুরের মৃত্যুর পর তিনি বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাবী লাভ করেন। এদিকে ১৭০৭ সালে সংঘটিত জজুর যুদ্ধে যুবরাজ আজম শাহ নিহত হলে মীর্জা মুহাম্মাদ আলী ও বড় ভাই হাজি আহমাদ নিরুপায় হয়ে আত্মীয় সুজাউদ্দীন খাঁর দরবারে আসেন। সুজাউদ্দীন খাঁ তাদের দুই ভাইকে সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত করেন। দুই ভাই সরকারি চাকরি পেয়ে অত্যন্ত দতা ও বুদ্ধিমত্তার সাথে রাজকার্য পরিচালনা করতে থাকেন। তাদের কাজে সন্তুষ্ট হয়ে সুজাউদ্দীন খাঁ মীর্জা মুহম্মদকে রাজমহলের ফৌজদার নিযুক্ত করেন। তখন থেকে মীর্জা মুহম্মদ আলী 'আলীবর্দী খাঁ' উপাধিতে ভূষিত হন। এরই ধারাবাহিকতায় এক পর্যায় আলীবর্দী খাঁ বিহারের সহকারী শাসনকর্তা নিযুক্ত হন (১৭৩৩)। সুজাউদ্দীন খাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র সরফরাজ খাঁ সিংহাসনে আরোহণ করেন। তখন মারাঠা ও বর্গীদের লুণ্ঠন দমনের জন্য গভর্ণর আলীবর্দী খাঁ নবাবের অনুমতি প্রার্থনা করলে নবাব সেেেত্র গুরুত্ব না দেয়ায় বীর আলীবর্দী খাঁ নবাব সরফরাজ খাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নবাবকে পরাজিত ও নিহত করে আপন বুদ্ধিমত্তা ও রণকৌশলের বলে বাংলার নবাবী লাভ করেন।
নবাব আলীবর্দী খাঁর তিন কন্যা ছাড়া কোন পুত্র সন্তান ছিল না। তিনি তার তিন কন্যাকে আপন বড় ভাই হাজী আহমাদের তিন পুত্রের সঙ্গে বিবাহ দেন। তার তিন জামাতাই তিনটি পরগনার শাসনকর্তা ছিলেন। একজন ঢাকার, একজন পূর্ণিয়ার এবং ছোট জামাতা জৈনুদ্দীন ছিলেন বিহারের নায়েবে-নাযিম। এদিকে নবাব আলীবর্দী খাঁ কর্তৃক পদচ্যুত সমসের খাঁ ও সরদার খাঁ নামে দুই আফগান বীর বিদ্রোহ করলে তাদেরকে বশ্যতা স্বীকার করার জন্য রাজ দরবারে ডেকে পাঠানো হয়। তারা বশ্যতা স্বীকারের ছলে ১৭৪৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি যথাযোগ্য সমাদরে জৈনুদ্দীনের নিকটে উপস্থিত হয়ে অতর্কিতে তার উপর আক্রমণ চালায়। জৈনুদ্দীন নিজ তরবারী কোষমুক্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। মুহূর্তের মধ্যে তার ছিন্নমুণ্ডু মসনদের উপর লুটিয়ে পড়ে। হাজী আহমাদ বন্দী দশায় নিদারুণ উৎপীড়ন সহ্য করতে না পেরে সতের দিনের মাথায় ভগ্নহৃদয় বন্দীশালায় মৃত্যুবরণ করেন। সিরাজুদ্দৌলার মাতা ও নবাব আলীবর্দী খাঁর ছোট মেয়ে আমেনা বেগম সন্তান-সন্ততিসহ আফগান শিবিরে বন্দী হলেন।
এই মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক সংবাদ পাওয়া মাত্রই নবাব আলীবর্দী খাঁ আফগান বিদ্রোহ দমন এবং তাদের হাত থেকে দুহিতার বন্ধন মোচন করতে বিহারের উদ্দেশ্যে সসৈন্যে যাত্রা করেন। এেেত্র তিনি পদচ্যুত ও পদগৌরবান্বিত সকল সেনাপতিকে সম্মিলিত করে কাতর কণ্ঠে যখন এই শোকাবহ কাহিনী বর্ণনা করেন, তখন সকলে একে একে কুরআন স্পর্শ করে নাঙ্গা তরবারি হাতে নিয়ে তার সঙ্গে প্রাণ-বিসর্জ্জনের শপথ করেন। এ উপলে পূর্বের সকল কলহ-বিবাদ মিটে গেল, মীরজাফর পুনরায় সেনাপতি পদে নিযুক্ত হলেন। সিরাজুদ্দৌলা তখন বয়সে বালক হলেও এই আকস্মিক দুর্ঘটনায় অতিমাত্রায় ব্যাকুল হয়ে উঠেন। কারণ তার পিতা ও পিতামহ শত্রু হাতে নিহত এবং মাতা বন্দিনী। এমত পরিস্থিতিতে তিনিও তরবারি হাতে মাতামহের সাথে যুদ্ধে যাত্রা করলেন। অতঃপর ১৭৪৮ সালের ১৬ই এপ্রিল গঙ্গার তীরবর্তী কালাদিয়ারা নামক স্থানে উভয় পরে মধ্যে তুমুল লড়াইয়ে বিদ্রোহী সমসের খাঁ নিহত হয় এবং তার সহযোগী বাহিনীকে বিধ্বস্ত করে আলীবর্দী খাঁ বন্দী কন্যা ও তার সন্তানদের মুক্ত করার মাধ্যমে বিহার পুনরুদ্ধার করেন। নবাব আলীবর্দী খাঁ তখন নিজ স্ত্রী শরফুন্নেসার সাথে পরামর্শ করে নিহত জামাতা জৈনুদ্দীনের সুযোগ্য উত্তরসূরি ও নবাবের প্রিয় দৌহিত্র সিরাজুদ্দৌলাকে বিহারের পরবর্তী নায়েবে-নাযিম নিযুক্ত করেন। এটা ছিল তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার একটা অংশ। যেহেতু সিরাজুদ্দৌলা তখন বয়সে বালক, তাই রাজা জানকীরামকে বিহারে সিরাজের নায়েব নিয়োগ করা হল।
যেহেতু নবাব আলীবর্দী খাঁর কোন পুত্র সন্তান ছিল না, তাই তিনি মৃত্যুর পূর্বেই তার কনিষ্ঠ কন্যার পুত্র প্রিয় দৌহিত্র সিরাজুদ্দৌলাকে বাংলার পরবর্তী নবাব মনোনীত করে যান। এদিকে হঠাৎ করে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে তার অন্য এক দৌহিত্র এবং দুই জামাতার (ও ভ্রাতুষ্পুত্র) মৃত্যুতে তিনি খুবই শোকাভিভূত হয়ে পড়েন এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে যান। যার ফলে মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ১৭৫৬ সালের ১০ই এপ্রিল ৮০ বছর বয়সে নবাব আলীবর্দী খাঁ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। অবশ্য নবাব আলীবর্দী খাঁর জীবদ্দশাতেই তার তিন জামাতাই মৃত্যুবরণ করেন।বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব আলিবর্দী খাঁ মৃত্যুর আগে দৌহিত্র সিরাজ-উদ-দৌলাকে নবাবের সিংহাসনের উত্তরাধিকারি করে যান। নবাব আলিবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর ১৭৫৬ সালের এপ্রিল মাসে তারই মনোনীত প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র সিরাজ-উদ-দৌলা সিংহাসনে বসেন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র তেইশ বছর। তার নিকট আত্মীয়ের মধ্যে অনেকেই নবাব আলীবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর সিংহাসন লাভের আশায় বুক বেঁধে ছিলেন। তাই তিনি যখন সিরাজুদ্দৌলাকে পরবর্তী নবাব মনোনীত করেন, তখন স্বভাবতই অন্যদের অন্তরে চাপা অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। যার ফলে তারা মনে-প্রাণে সিরাজকে নবাব হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। তাই নবাব আলীবর্দী খাঁর জ্যেষ্ঠা কন্যা এবং ঢাকার ভূতপূর্ব শাসনকর্তার বিধবা পতœী মেহেরুন্নেসা ওরফে ঘসেটি বেগম পূর্ণিয়ার ভূতপূর্ব শাসনকর্তার পুত্র শওকত জঙ্গ সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এই সুযোগে ধূর্ত ব্রিটিশ কোম্পানি নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের নিমিত্তে গোপনে শওকত জঙ্গ ও ঘসেটি বেগমের পাবলম্বন করে। এমনকি নতুন নবাব হিসেবে ইংরেজগণ সিরাজকে উপঢৌকন প্রেরণের চিরাচরিত রীতিও অমান্য করে।প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী অন্যাণ্য ইউরোপিয় বনিকরা সিরাজকে উপহার স্বরুপ উপঢৌকন প্রদান সহ তাকে অভিবাদন জানান। কিন্তু ইংরেজরা তা করেনি। এছাড়াও ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কৃষ্ণবল্বভ সহ নবাবের অবাধ্য সকল কে আশ্রয় দেন। এসময় কোম্পানী ব্যাক্তিগত ব্যবসা শুরু করে।এর ফলে সিরাজের রাজস্ব ঘাটতি দেখা দেয়। ইংরেজদের অবাধ্যও অপরাধ স্বরুপ ১৭৫৬ সালে ৪ জুন কাশিম কুটি অদিকার করে। ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির গর্ভনর ড্রেককে নির্দেশে জাহাজে আশ্যয় নেয়। নবাব সিরাজদৌলা বির ধর্পে ১৭৫৬ সালের ২০ জুন কলিকাতা দখল করে। নবাব তার অন্যতম সেনা মানিক চাদেঁর উপর কলিকাতার শাসন ভার অর্পন করে মুর্শিদাবাদে চলে যায়।এর রে শুরু হয় নবাবের বিরুদ্দে অমাত্যবর্গের ঘৃন্য ষড়যন্ত্র।রবার্ট ক্লাইভ ও ওটারসনের অধীনে অন্যান্য একদল সৈন্য ও নৌবহর পাঠান। ইংরেজ নৌবহর ১৭৫৬ সলে ১৪ই ডিসেম্বর ভাগিরতী নদীর তীরে প্রবেশ করে। বিশ্বাস ঘাতক মানিক চাঁদ ষড়যন্ত্র ও নিষ্ক্রিয়তার সুযোকে ১৭৫৭ সালে ২ জানুয়ারী ক্লাইভ ও ওটারসন বিনা বাধায় কলিকাতা দখল করে। এবং ফোর্ট উলিয়াম দুর্গ সুরক্ষিত করে।১৭৫৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আলীগরের সস্ধি স্বাক্ষরীত হলে নবাবক ইষ্ট ইনিডয়া কোম্টানিকে বানিজ্যর সুবিধা প্রদান করে।কিন্তু কোম্পানি সন্ধির স্বান্ধ্য উপেক্ষা করে চন্দন নগর ফরাসি বানিজ্য কুটি আক্রমন করলে নবাব ক্লাইভকে যুদ্ব বিগ্রহ হতে নিষেধ করে। এ সময় রাজা রাজবল্লভ ঢাকার দেওয়ান ছিলেন। নবাব সিরাজুদ্দৌলা তাকে হিসাব দাখিল করতে বললে সে নবাবের নির্দেশ অমান্য করে নিজ পুত্র কৃষ্ণদাস মারফত প্রচুর ধনরতœসহ কলকাতায় পাঠায়। এ সংবাদ নবাব সিরাজ জানতে পেরে কৃষ্ণদাসকে গ্রেফতারের আদেশ দিলে ইংরেজরা তাকে আশ্রয় দেয়।
নবাবের বিরুদ্ধে ঘসেটি বেগম, রাজা রাজবল্লভ প্রভৃতির ষড়যন্ত্রে যে ইংরেজরাও জড়িত, তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ ছিল না। এমতাবস্থায় ইউরোপে সপ্তবর্ষব্যাপী যুদ্ধের (১৭৫৬-১৭৬৩) অজুহাতে ইংরেজ ও ফরাসি বণিকরা বাংলায় দুর্গ নির্মাণ শুরু করে। নবাব এ সংবাদ জানতে পেরে তাদের নিরস্ত্র হতে এবং দুর্গ নির্মাণ বন্ধ করার আদেশ দেন। ফরাসিগণ নবাবের নির্দেশ মত দুর্গ নির্মাণ বন্ধ করলেও উদ্ধত ব্রিটিশ বণিকরা নবাবের আদেশ তো মানেইনি; উপরন্তু তার দূতকে তারা অপমান করতেও দ্বিধা করেনি। এমনকি নবাব কৃষ্ণদাসের সমর্পণ দাবি করলেও তারা তা অমান্য করে। এ প্রসঙ্গে ইংরেজ কর্মচারী রিচার্ড বেচারের মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন, 'এটা কি কখনও কল্পনা করা যায় যে, কোন নৃপতির প্রজাকে একদল বিদেশি বণিক আশ্রয় দেবে? কিংবা তাঁর দূতকে অপমানিত করলে রাজা সে অপমান নির্দ্বিধায় মেনে নেবেন? দূতকে ফেরত দেওয়াটা পুরো দুনিয়াতে রাজার অবমাননা বলে মনে করা হবে'।
ইত্যবসরে বুদ্ধিমান সিরাজ বিনা রক্তপাতে সুকৌশলে বড় খালা অর্থাৎ ঘসেটি বেগমকে নিজ প্রাসাদে আনতে সমর্থ হন। নবাব বিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রধান হোতা এভাবে সিরাজের হাতে বন্দী হয়েছে, জানতে পেরে ব্রিটিশ বণিকরা ঘসেটি বেগমের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার বিপদ আঁচ করতে পারে। এতে তড়িঘড়ি করে পূর্বের আচরণের জন্য সিরাজের নিকট অনুতাপ প্রকাশ করে। নবাব তখন ইংরেজদেরকে অবিলম্বে দুর্গ নির্মাণ বন্ধ এবং নির্মিত অংশ ভেঙে ফেলার আদেশ দেন।
এদিকে ঘসেটি বেগমকে রাজদরবারে অন্তরীণ রেখে অপর ষড়যন্ত্রকারী শওকত জঙ্গকে দমনের উদ্দেশ্যে নবাব ১৭৫৬ সালের ১৬ই মে মুর্শিদাবাদ থেকে সসৈন্যে পূর্ণিয়ার দিকে অগ্রসর হন। ২০ মে নবাব যখন রাজমহল পৌঁছেন তখন রোজার ড্রেকের পত্র তার হস্তগত হয়। এ পত্রে ড্রেক অত্যন্ত বিনম্র ভাষায় ইংরেজদের সদিচ্ছার কথা জানালেও তাতে দুর্গ নির্মাণ বন্ধ কি-না সে বিষয়ের উল্লেখ না থাকায় নবাব অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হন। এতে নবাব পূর্ব সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে পূর্ণিয়ার দিকে না গিয়ে মুর্শিদাবাদে ফিরে এসে ইংরেজদের উপযুক্ত শাস্তিদানের উদ্দেশ্যে সসৈন্যে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে তিনি কাশিম বাজারের ইংরেজ কুঠি দখল করে নিয়ে ১৬ই জুন কলকাতার উপকণ্ঠে পৌঁছেন। যদিও সংবাদ পেয়ে নবাবের গতিরোধ করতে হলওয়েল যথাসাধ্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল, তথাপি কলকাতাস্থ ইংরেজ ঘাঁটি ফোর্ট উইলিয়াম দখল করতে নবাবকে বেগ পেতে হয়নি। যুদ্ধে ইংরেজ পরে বেশ কিছু সৈন্য নিহত হয়। গভর্নর হলওয়েল আত্মসমর্পণ করেন এবং রোজার ড্রেকসহ অপরাপর ইংরেজরা দুর্গ ত্যাগ করে নদী পথে পলায়ন করে ফুলতায় আশ্রয় নেয়। এমনি পরিস্থিতিতে ২০শে জুন নবাব সিরাজুদ্দৌলা বিজয়ী বেশে কলকাতা দুর্গে প্রবেশ করেন। অতঃপর কলকাতার অভিযান সমাপ্ত করে মাণিক চাঁদের উপর কলকাতার ভার অর্পণ করে নবাব পুনরায় মুর্শিদাবাদ ফিরে আসেন।
ইতোমধ্যে শওকত জঙ্গ নবাব সিরাজুদ্দৌলাকে মসনদ থেকে অপসারণের ল্েয যুদ্ধযাত্রা শুরু করেন। এদিকে নবাবও কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদ ফিরে এসে শওকত জঙ্গকে দমনের জন্য ১৭৫৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে সসৈন্যে পূর্ণিয়া অভিমুখে অগ্রসর হন। ১৭৫৬ সালের ১৬ই অক্টোবর নবাবগঞ্জের মনিহারী গ্রামে দু'পরে মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধে শওকত জঙ্গ পরাজিত ও নিহত হন। মতা গ্রহণের মাত্র ছয় মাসের মধ্যে নবাব সিরাজুদ্দৌলা ঘসেটি বেগম, ইংরেজ ও শওকত জঙ্গের মত তিনটি প্রধান ষড়যন্ত্রকারীকে কঠোর হস্তে মোকাবিলা করতে সমর্থ হন।
এদিকে নবাব কর্তৃক কলকাতা অধিকারের সংবাদ মাদ্রাজে পৌঁছলে ব্রিটিশ সেনাপতি রবার্ট কাইভ সঙ্গে সঙ্গে সৈন্য-সামন্ত নিয়ে কলকাতা পুনরুদ্ধারে বেরিয়ে পড়েন। একই সাথে এডমিরাল ওয়াটসনের নেতৃত্বে এক নৌবহরও কলকাতার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। প্রথমে তারা ফুলতায় এসে বিনা বাধায় উদ্বাস্তু ইংরেজদের সাথে মিলিত হয়। অতঃপর সম্মিলিতভাবে কলকাতার দিকে যাত্রা করে। মানিক চাঁদের নেতৃত্বে কিছু সৈন্য অতর্কিতে তাদের উপর হামলা চালালে ইংরেজদের বেশ কিছু সৈন্য নিহত হয়। কিন্তু অর্থের প্রলোভনে শেষ পর্যন্ত মানিক চাঁদ ইংরেজ সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে পালিয়ে যান। এই সুযোগে ইংরেজরা নবাবের বজবজ দুর্গ ধ্বংস করে এবং ১৭৫৭ সালের ২রা জানুয়ারি কলকাতা অধিকার করে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ সুরতি করে। এেেত্র মানিক চাঁদ গোপনে ইংরেজদের পাবলম্বন করে চরম বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দেয়। অথচ কলকাতা পতনের পর যদি উমিচাঁদ, নবকিষেণ, জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ, মানিক চাঁদের মত হিন্দু-প্রধানরা রজার ড্রেক, হলওয়েল, কাইভ, ওয়াটসনদের সাহায্য না করত, তাহলে ইংজেদের আত্মসমর্পণ ছাড়া আর কোন গত্যন্তর ছিল না।
কলকাতা অধিকার করেই ইংরেজরা পরের দিন ৩ জানুয়ারি নবাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। অপর দিকে নবাবও এ সংবাদ জানতে পেরে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করেন। ইতোমধ্যে কাইভ ১০ই জানুয়ারি হুগলী অধিকার করে শহর লুণ্ঠন করে এবং পার্শ্ববর্তী বহু গ্রাম পুড়িয়ে দেয়। ১৯শে জানুয়ারি নবাব হুগলী পৌঁছলে ইংরেজরা পিছু হটে কলকাতায় প্রস্থান করে। ৩ ফেব্রুয়ারি নবাব কলকাতার শহরতলীতে উমিচাঁদের বাগানে শিবির স্থাপন করলে ৫ই ফেব্রুয়ারি শেষ রাতে কাইভ ও ওয়াটসন অকস্মাৎ নবাব শিবিরে অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে নবাবের পরে প্রায় ১৩০০ সৈন্য হত্যা করে। কিন্তু সকালেই নবাবের সৈন্য সুসজ্জিত হয়ে পাল্টা আক্রমণ চালালে কাইভ প্রস্থান করে। সেদিন কলকাতা জয়ের মত নবাবের যথেষ্ট সৈন্য ও শক্তি থাকার পরও ৯ই ফেব্রুয়ারি '৫৭ সেনাপতির পরামর্শে ও ষড়যন্ত্রে নবাব ইংরেজদের সাথে এক অপমানজনক সন্ধি স্থাপনে সম্মত হন। যে সন্ধি 'আলিনগর সন্ধি' নামে অভিহিত হয়। এই সন্ধির ফলে নবাবের প্রতিপত্তি অনেকাংশে হ্রাস পায় এবং ইংরেজের শক্তি, প্রতিপত্তি ও ঔদ্ধত্য বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। এ েেত্র ইংরেজদের পে কাজ করেন বঙ্গের বিখ্যাত ধনী জগৎশেঠ, কলকাতার বড় ব্যবসায়ী উমিচাঁদ ও রাজা রাজবল্লভ, মানিক চাঁদ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ
এ ঘটনায় ইংরেজদের মনোবলও বৃদ্ধি পায়। ফলে ২৩ এপ্রিল '৫৭ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কলকাতা কাউন্সিল নবাব সিরাজুদ্দৌলাকে সিংহাসনচ্যুত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ল্েয মে '৫৭-র প্রথম সপ্তাহে মুর্শিদাবাদে জগৎশেঠের বাড়িতেই উমিচাঁদ, রায়দুর্লভ, রাজা রাজবল্লভ, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র, জগৎশেঠ, মীরজাফর প্রমুখ প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ষড়যন্ত্রমূলক গোপন বৈঠকে কলকাতা থেকে কোম্পানির দূত হিসেবে ওয়াটসনকে স্ত্রীলোকের ছদ্মবেশে পালকিতে করে আনা হয়।
বৈঠকে বসে ওয়াটসন প্রথমে সকলকে প্রলোভনের জালে আঁটকে ফেলে। অতঃপর সিরাজুদ্দৌলার সিংহাসনচ্যুত করার কথা সুকৌশলে ব্যক্ত করে। ওয়াটসন আরো বলে, নবাব মতাচ্যুত হলে সারা ভারতের মুসলমানদের উত্তেজনা প্রশমণের ল্েয তারই আত্মীয় মীরজাফরকে সিংহাসনে বসাতে হবে। মীরজাফর প্রথমে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ তিনি ছিলেন পরলোকগত নবাব আলীবর্দী খাঁর ভগ্নীপতি এবং বাংলার সিপাহসালার। তিনি সিরাজুদ্দৌলা কর্তৃক ক্রমাগত অপমানিত ও পদচ্যুত হলেও নিজে কখনো সিরাজকে সিংহাসনচ্যুত করার কল্পনাও করেননি। তিনি বলেন, 'আমি নবাব আলীবর্দী খাঁর আত্মীয়, অতএব সিরাজও আমার আত্মীয়, এটা কি করে সম্ভব?' তখন উমিচাঁদ বললেন, 'আমরা তো আর সিরাজকে মেরে ফেলছি না অথবা আমরা নিজেরাও নবাব হচ্ছি না, শুধু তাকে সিংহাসনচ্যুত করে আপনাকে বসাতে চাচ্ছি। কারণ শুধু আমি নই, ইংরেজ এবং মুসলমানদের অনেকেই, এক কথায় অমুসলমানদের প্রায় প্রত্যেকেই আপনাকে গভীর শ্রদ্ধার চোখে দেখে'। এরপরও যখন দেখলেন, তিনি রাজি না হলে তারা নবাবকে হটিয়ে সেখানে ইয়ার লতিফকে বসানোর ষড়যন্ত্র করছে; তখন তিনি আর উদাসীন না থেকে তাদের প্রস্তাবে সম্মত হলেন। তখন ওয়াটসন বলেন, এই মুহূর্তে সিরাজের সাথে লড়তে গেলে যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন তা আমাদের নেই। তখন জগৎশেঠ বলেন, 'টাকা যা দিয়েছি আরও যত দরকার আমি আপনাদের দিয়ে যাব, কোন চিন্তা নেই, আপনারা প্রস্তুতি নিন'। তখন উপস্থিত দেশিয় ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে ইংরেজ কোম্পানির মধ্যে শুধু নবাব বিরোধী নয়, সাথে সাথে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী একটি সন্ধিপত্র রচিত হয়। উক্ত সন্ধিপত্রে ওয়াটসন ১৯ মে স্বার করলেও মীরজাফর স্বার করেন ৪ জুন।
এবার রবার্ট কাইভ সামান্য অজুহাতে নবাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। নবাবও ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরে সসৈন্যে ইংরেজদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হন। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন প্রাতঃকালে ভাগীরথীর তীরে পলাশীর প্রান্তরে উভয় পরে মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। নবাবের সৈন্য সংখ্যা ৫০ হাজার, অপর দিকে ইংরেজ সৈন্য সংখ্যা মাত্র ৩ হাজার। মীরজাফর ও রায়দুর্লভদের চক্রান্ত্রে নবাবের সৈন্যের একটা বড় অংশ যুদ্ধ থেকে বিরত থাকে। কেবল মীর মদন, মোহনলাল ও সিনফ্রের অধীনে মুষ্টিমেয় কিছু সৈন্য ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। মীরমদন ও মোহনলালের সমরকুশলতার সম্মুখে ইংরেজ বাহিনী টিকতে না পেরে কাইভের সৈন্য বাহিনী পার্শ্ববর্তী আম্রকাননে আশ্রয় নেয়। নবাব বাহিনীর জয় যখন সুনিশ্চিত, ঠিক সেই মুহূর্তে মীরমদন নিহত হন। অনন্যোপায় হয়ে নবাব তখন মীরজাফরের শরণাপন্ন হন। তিনি আলীবর্দী খাঁর আমলের আনুগত্যপূর্ণ ব্যবহারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নিজ উষ্ণীষ মীরজাফরের সম্মুখে নিপে করে বললেন, 'জাফর খাঁ, এই উষ্ণীষের সম্মান রা করুন'।
তখন মীরজাফর মুখে আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দিলেও তলে তলে সবচেয়ে বড় সর্বনাশটাই করলেন। তিনি সিরাজকে যুদ্ধ বিরতির আত্মঘাতী পরামর্শ দিলেন। অথচ মীর মদনের মৃত্যুর পর মোহনলালের প্রচেষ্টায় যুদ্ধের গতি নবাবের অনুকূলেই ছিল। কিন্তু নিজ অদূরদর্শিতা ও মীরজাফরের সর্বনাশা পরামর্শে তিনি মোহনলালকে যুদ্ধ বন্ধের আদেশ দেন। প্রথমে মোহনলাল তার আদেশ মানেননি। কিন্তু নবাবের নিকট থেকে পুনঃ পুনঃ আদেশের ফলে তিনি যুদ্ধ বন্ধ করেন। এই সুযোগে রবার্ট কাইভ পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে নবাব বাহিনীকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। নবাব পালিয়ে গিয়ে কোনোক্রমে প্রাণে রা পান।
যুদ্ধেেত্রই রবার্ট কাইভ মীরজাফরকে নতুন নবাব বলে অভিনন্দন ও কুর্নিশ করে। ২৬শে জুন তার অভিষেক হয় এবং ২৯ জুন সিংহাসনে আরোহণ করেন। নবাব সিরাজুদ্দৌলা রাজধানীতে ফিরে এসে প্রচুর অর্থ বিতরণ করে সৈন্য সংগ্রহের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। অবশেষে নিরুপায় হয়ে তিনি স্বীয় পতœী ও কন্যাসহ পালিয়ে যান। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস পথিমধ্যে রাজমহলে রাত কাটাতে গিয়ে ৩০ জুন তিনি ধরা পড়েন।
২ জুলাই রাতে সাধারণ বন্দীর মত শৃঙ্খলিত অবস্থায় সিরাজুদ্দৌলাকে নতুন নবাব মীরজাফরের সম্মুখে উপস্থিত করা হয়। ঐ রাতেই মীরজাফরের পুত্র মীরণের আদেশে মুহাম্মাদী বেগ তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
নবাবকে হত্যা করতে মুহাম্মাদী বেগ রাজি না হলে তারা তার ও তার স্ত্রী-পুত্রের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। অনন্যোপায় হয়ে অশ্রু সম্বরণ করে নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে পরিকল্পনামাফিক সংকেত পাওয়া মাত্র সিরাজুদ্দৌলাকে হত্যা করতে সম্মত হন। মুহাম্মাদী বেগ যখন উলঙ্গ তরবারি নিয়ে রাতে তার কে প্রবেশ করেন, তখন নবাবের আর বুঝতে বাকি ছিল না, তার মৃত্যুর সময় সমাগত। তখন তিনি কাতর কণ্ঠে বললেন, 'মুহাম্মাদী বেগ, আমাকে কি তোমরা সামান্য একটা অসহায় গরিবের মত বেঁচে থাকতেও দেবে না?' তখন মুহাম্মাদী বেগও দৃঢ়ভাবে বললেন, 'না তারা তা দেবে না'। তখন নবাব মুহাম্মাদী বেগকে বলে দু'রাকআত ছালাত আদায়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। ইতোমধ্যে ছালাত শেষ হওয়ার আগেই দূর থেকে বাঁশি বাজিয়ে সংকেত দেয়া মাত্র তাঁর উপরে তরবারি চালানো হয়। নবাব সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটে পড়ে 'আল্লাহ' 'আল্লাহ' শব্দ করতে করতে দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নিলেন। এটাই হল পলাশীর প্রান্তরের নির্মম ট্র্যাজেডি। বাহ্যিকভাবে নবাব সিরাজুদ্দৌলার চরম পরিণতির জন্য শেষ দিকের কিছু ঘটনাবলীর সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত কয়েকজন বিশ্বাসঘাতককে দায়ী করা হলেও মূলত পলাশীর বিয়োগান্ত ঘটনা কোন কাকতালীয় বিষয় ছিল না। এটি ছিল ব্রিটিশ বেনিয়াদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার চূড়ান্ত পরিণতি। প্রথম থেকেই যদি জগৎশেঠের মত এদেশের নামি-দামি ধনাঢ্য এবং পরবর্তীতে মতালোভী কিছু মীরজাফররা ইংরেজদের সহযোগিতা না করত, তাহলে কোন দিনই ইংরেজরা এদেশের মানুষদের পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করতে সমর্থ হত না। বাংলার এসব বিশ্বাসঘাতকরা কখনই উপলব্ধি করতে পারেনি যে, নবাব সিরাজুদ্দৌলার পরাজয় শুধু তাঁর একার পরাজয় নয়, শুধু বাংলার পরাজয় নয়, বরং সমগ্র ভারতবাসীর পরাজয়। তবে অতি অল্প সময়ের ব্যবধানেই, অতি সহজেই তারা এই চরম সত্য বিষয়টি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।
১৭৫৭ সালে ২৩ শে জুন পলাশীর যুদ্ব শুরু হয়।মোহন লাল,সিনফ্রের আক্রমনে ইংরেজরা আম্রকাননে আশ্রয় নেয়।জয় যখন নিশ্চিত তখন মীরজাফর যুদ্ব বন্দের পরামর্শ দেয়।
যুদ্ধের নামে এক প্রাসাদষড়যন্ত্রে শিকার হয়ে পরাজিত হন বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা।এই পরাজয়ের মধ্যদিয়ে অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার শেষ সূর্য। ইতিহাসথেকে জানা যায়, আলীবর্দী খাঁর পর ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল সিরাজউদ্দৌলাবাংলা-বিহার-উড়িষ্যার সিংহাসনে আসীন হন। তখন তার বয়স মাত্র ২২ বছর। তরুণনবাবের সাথে ইংরেজদের বিভিন্ন কারণে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।এছাড়া, রাজ সিংহাসনের জন্য লালায়িত ছিলেন, সিরাজের পিতামহ আলীবর্দী খাঁর বিশ্বস্তঅনুচর মীর জাফর ও খালা ঘষেটি বেগম। ইংরেজদের সাথে তারা যোগাযোগ স্থাপন ওকার্যকর করে নবাবের বিরুদ্ধে নীলনকশা পাকাপোক্ত করে। দিন যতই গড়াচ্ছিলো এভূখণ্ডের আকাশে ততোই কালো মেঘ ঘনীভূত হচ্ছিলো।১৭৫৭ সালের ২৩ এপ্রিল কোলকাতা পরিষদ নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করার পক্ষে প্রস্তাব পাস করে। এপ্রস্তাব কার্যকর করতে ইংরেজ সেনাপতি লর্ড ক্লাইভ রাজদরবারের অভিজাত সদস্যউমির চাঁদকে এজেন্ট নিযুক্ত করেন। এ ষড়যন্ত্রের নেপথ্য নায়ক মীরজাফর, তা আঁচ করতে পেরে নবাব তাকে প্রধান সেনাপতির পদ থেকে অপসারণ করেআব্দুল হাদীকে অভিষিক্ত করেন। কূটচালে পারদর্শী মীর জাফর পবিত্র কুরআন শরীফছুঁয়ে শপথ করায় নবাবের মন গলে যায় এবং মীর জাফরকে প্রধান সেনাপতি পদেপুনর্বহাল করেন। সমসাময়িক ঐতিহাসিকরা বলেন, এই ভুল সিদ্ধান্তই নবাব সিরাজেরজন্য কালহয়ে দাঁড়ায়।ইংরেজ কর্তৃক পূর্ণিয়ার শওকত জঙ্গকেসাহায্য করা, মীরজাফরের সিংহাসন লাভের বাসনা ও ইংরেজদের পুতুল নবাব বানানোরপরিকল্পনা, ঘষেটি বেগমের সাথে ইংরেজদের যোগাযোগ, নবাবের নিষেধ সত্ত্বেওফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ সংস্কার, কৃষ্ণ বল্লভকে কোর্ট উইলিয়ামে আশ্রয় দানপ্রভৃতি কারণে ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে সকালসাড়ে ১০টায় ইংরেজ ও নবাবের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মীর মদন ও মোহনলালের বীরত্ব সত্ত্বেও জগৎশেঠ, রায় দুর্লভ, উমির চাঁদ, ইয়ার লতিফ প্রমুখকুচক্রী প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীদের বিশ্বাসঘাতকতার ফলে নবাবের পরাজয় ঘটে। সেইসাথে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য্য পৌনে দু'শ বছরের জন্য অস্তমিত হয়।পরাজয়েরপর নবাবের বেদনাদায়ক মৃত্যু হলেও উপমহাদেশের মানুষ নবাবকে আজও শ্রদ্ধাজানায়। তার সাথে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলো তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি।ঐতিহাসিকমেলেসন পলাশীর প্রান্তরে সংঘর্ষকে 'যুদ্ধ'বলতে নারাজ। তার মতে, 'নবাবেরপক্ষে ছিলো ৫০ হাজার সৈন্য আর ইংরেজদের পক্ষে মাত্র ৩ হাজার সৈন্য কিন্তুপ্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারী ও কুচক্রী মীরজাফর, রায় দুর্লভ ও খাদেম হোসেনের অধীনেনবাব বাহিনীর একটি বিরাট অংশ পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধেকার্যত কোনো অংশগ্রহণই করেনি। এই কুচক্রীদের চক্রান্তে যুদ্ধের প্রহসনহয়েছিলো।
' ইতিহাসবিদ নিখিল নাথ রায়ের লেখা 'মুর্শিদাবাদ কাহিনী' থেকে জানা যায়, 'নবাবের সেনা বাহিনীর তুলনায় ইংরেজদের সেনা সংখ্যা ছিলো অনেককম। সেখানে বিশ্বাসঘাতকতা না হলে নবাবের বিজয় ছিলো সুনিশ্চিত।আরেকঐতিহাসিক ড. রমেশ চন্দ্র বলেন, 'নবাব ষড়যন্ত্রকারীদের গোপন ষড়যন্ত্রের কথাজানার পর যদি মীর জাফরকে বন্দি করতেন, তবে অন্যান্য ষড়যন্ত্রকারী ভয় পেয়েযেতো এবং ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হলে পলাশীর যুদ্ধ হতো না।'ইতিহাসবিদমোবাশ্বের আলী তার 'বাংলাদেশের সন্ধানে' লিখেছেন, 'নবাব সিরাজউদ্দৌলা প্রায়লাখ সেনা নিয়ে ক্লাইভের স্বল্পসংখ্যক সেনার কাছে পরাজিত হন মীর জাফরেরবিশ্বাসঘাতকতায়।'অতি ঘৃণ্য মীর জাফরের কুষ্ঠরোগে মৃত্যু হয়। কিন্তুবাংলাদের ট্রাজেডি এই যে, মীর জাফরেরা বার বার উঠে আসে। ইতিহাস সাক্ষ্যদেয়, মীর জাফর ও ঘষেটি বেগম প্রচণ্ড ক্ষমতালোভী ও জাতীয়তাবিরোধী ছিলেন।
পৃথিবীর ইতিহাসে, বিশেষ করে উপমহাদেশের ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধ একটি অন্যতম মোড় পরিবর্তনকারী যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। মূলত পলাশীর যুদ্ধে বিজয়ই অন্য ইউরোপীয়দের হটিয়ে ভারতে ইংরেজ আধিপত্য বিস্তারের পথ তৈরি করে দেয়। পলাশীর যুদ্ধে জয়ের খবরে লন্ডনে বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শেয়ারের দাম নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়, কারণ বিনিয়োগকারীরা বুঝতে পারছিলেন বাংলার সম্পদে কোম্পানীটি এখন হৃষ্টপুষ্ট হয়ে উঠবে।
বাংলার ঐশ্বর্যে রবার্ট ক্লাইভ এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তিনি মুর্শিবাদাবাদকে তাঁর দেশের লন্ডন নগরীর সাথে তুলনা করেছিলেন। ক্লাইভের মতে তফাত ছিল একটাই, মুর্শিদাবাদে একটা ধনিক শ্রেণী রয়েছে। সে সময় ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশর বণিকগণ ভারতে আসত ব্যবসার উদ্দেশ্যে। কিন্তু মোগল শাসকের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে ইংরেজরা কিছু বিশেষ সুবিধা (বাংলায় শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা) পেয়ে ব্যবসায় সমৃদ্ধি লাভ করে। এক পর্যায়ে বাংলায় ইংরেজ এবং ফরাসীদের মধ্যে ব্যবসায়িক বিরোধ তৈরি হয়। বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যার নবাব ছিলেন আলীবর্দী খান। তিনি স্বাধীনভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল তাঁর মৃত্যুর পর তরুণ সিরাজউদ্দৌলা নবাব হন। এটি নওয়াব পরিবারের অনেকেই মেনে নিতে পারেন নি। পরিবারের এবং প্রশাসনের অনেকের অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে ইংরেজরা সিরাজউদ্দৌলাকে অপসারণের পথ খুঁজতে থাকে। এক বছরের কিছু বেশি সময় তিনি নবাবী করতে পরেছিলেন।

সিরাজ ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই একযোগে তাঁর সকল প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ষড়যন্ত্রকারীদের দমন করতে মনযোগী হন। মুর্শিদাবাদের যে ধনিক গোষ্ঠী সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখছিল নবাব তাদের দমন করে নতুন গোষ্ঠীর উত্থান ঘটানোর চেষ্টা করেন। যখন ইংরেজরা তাঁর নির্দেশ অমান্য করে ফোর্ট উইলিয়াম দূর্গ নির্মাণ করে, তখন সিরাজ কলকাতা আক্রমণ করে দখল করে নেন এবং কলকাতার নাম বদলে আলীনগর রাখেন। পরবর্তীতে ইংরেজরা শক্তিবৃদ্ধি করে কলকাতা পুনর্দখলের চেষ্টা করে। এসময় ইংরেজ এবং নবাবের মধ্যে একটি সমঝোতা হলেও ইংরেজরা সেটি মানে নি।

ইরেজদের সাথে নবাবের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আরও কিছু কারণ ছিল:

ইংরেজরা মোগল সম্রাটের দেয়া বাণিজ্যিক সুবিধার অপব্যবহার করতে থাকলে নবাব সেটি বন্ধ করেন এবং ইংরেজ বণিকদের ব্যক্তিগত ব্যবসা বন্ধ করেন।

নবাবের প্রচুর ধনসম্পদসহ রাজবল্লভ পুত্র কৃষ্ণদাস ইংরেজদের আশ্রয় নিলে নবাব তাকে ফিরিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু ইংরেজরা তার করতে অস্বীকৃতি জানায়।

ইংরেজরা নবাবের দূত নারায়ণ সিংহকে অপমান করার খবরে নবাব ক্রুদ্ধ হন।

যুদ্ধ
একটি পর্যায়ে ইংরেজরা নবাবকে উৎখাতের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সৈন্যবাহিনী নিয়ে মুর্শিদাবাদের পথে অগ্রসর হয়। সিরাজও তাঁর বাহিনী নিয়ে পলাশীর পথে অগ্রসর হন। ২৩শে জুন সকাল আটটার দিকে যুদ্ধ শুরু হয়। ইংরেজদের বাহিনীর তুলনায় নবাবের বাহিনীর আকার অনেক বড় হলেও মীরজাফর, ইয়ার লতিফ এবং রায় দুর্লভের অধীনস্থ প্রায় দুই তৃতীয়াশ সৈন্য নিষ্ক্রিয় দাঁড়িয়ে থাকে। মীর মর্দান, মোহনলাল, খাজা আব্দুল হাদী খান, নব সিং হাজারীর নেতৃত্বাধীন সৈন্যরা এবং ফরাসী সৈনিকদের একটি দল যুদ্ধ চালিয়ে যায়। ক্লাইভ যুদ্ধে ধারণার চেয়ে বেশি প্রতিরোধের সন্মুখীন হন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বৃষ্টিতে নবাব এবং ফরাসীদের কামানের গোলায় ব্যবহৃত গানপাউডার ভিজে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। কিন্তু ইংরেজরা তাদের গান পাউডার সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়। জানা যায়, ক্লাইভ দিনে যুদ্ধ চালিয়ে রাতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধের এক পর্যায়ে বেলা তিনটার দিকে কামানের গোলার আঘাতে মীর মর্দান নিহত হলে নবাব ভেঙে পড়েন এবং মীর জাফরের কাছে পরামর্শ চান। মীরজাফর নাবাবকে যুদ্ধ বন্ধ করে পরবর্তী দিনে নতুন উদ্যমে যুদ্ধ করার পরামর্শ দেন।

মোহনলালের প্রবল আপত্তির মুখে নবাব যুদ্ধ বন্ধের নির্দেশ দেন। নবাবের সৈন্যরা পিছু হটে আসে। মীরজাফরের বার্তা পেয়ে ইংরেজরা নবাবের অপ্রস্তুত বাহিনীর ওপর হামলা চালায় এবং যুদ্ধে জয়লাভ করে। ফলে প্রায় ২০০ বছরের জন্য বাংলা স্বাধীনতা হারায়। প্রতি বছর সে জন্য ২৩ জুন পলাশী দিবস হিসাবে পালিত হয়। ১৭৫৭ সালের এইদিনে পলাশী প্রান্তরে রবার্ট ক্লাইভ, মীরজাফর, রায়দুর্লভ, ইয়ার লতিফচক্র এই কালো দিবসের জন্ম দেয়। ঘৃণিত কলঙ্কজনক এই প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের অধ্যায় সৃষ্টির পেছনে জড়িত ছিল বিশ্বাসঘাতক জগৎশেঠ, মাহতাব চাঁদ, উমিচাঁদ, মহারাজা স্বরূপচাঁদ, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র, রায়দুর্লভ, মীর জাফর, ঘষেটি বেগম, রাজা রাজবল্লভ, নন্দকুমার প্রমুখ কৌশলী চক্র। এই স্বার্থান্বেষী ষড়যন্ত্রীদের প্রথম শিকার ছিল স্বাধীনতার অতন্দ্রপ্রহরী, মুক্তি সংগ্রামের প্রথম সিপাহসালার নবাব সিরাজউদ্দৌলা এবং তার বিশ্বস্ত সেনাপতি মীরমদন ও প্রধান আমাত্য মোহনলাল কাশ্মিরী। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু তা অন্যসব দিনের চেয়ে ছিল আলাদা। কারণ ওইদিন মুর্শিদাবাদ থেকে ১৫ ক্রোশ দক্ষিণে ভাগিরথী নদীর তীরে পলাশীর আম্রকাননে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যাসহ পুরো উপমহাদেশের স্বাধীনতার কবর রচিত হয়েছিল। ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও লর্ড ক্লাইভের মধ্যে এক যুদ্ধ নাটক মঞ্চায়িত হয়। এতে নবাব বাহিনীর পক্ষে সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় ৬৫ হাজার এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষে ছিল মাত্র ৩ হাজার। যুদ্ধের ময়দানে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মীরজাফর ও তার অনুসারী প্রায় ৪৫ হাজার সৈন্য নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। ফলে যুদ্ধে স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির পরাজয় অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের সেবাদাসদের সাহায্যে এভাবেই বাংলায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। এরপর সাম্রাজ্যবাদী শক্তি দীর্ঘ ১৯০ বছর এদেশে শাসন শোষণ করে। কোটি কোটি টাকার অর্থ সম্পদ ইংল্যান্ডে পাচার করে। বাংলাদেশ থেকে লুটকৃত পুজিঁর সাহায্যে ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব ঘটে। আর এককালের প্রাচ্যের স্বর্গ সোনার বাংলা পরিণত হয় শ্মশান বাংলায়, স্থান পায় বিশ্বের দরিদ্রতম দেশে। এ যুদ্ধের রাজনৈতিক ফলাফল ছিল ধ্বংসাত্মক ও সুদূরপ্রসারী। এ যুদ্ধে জয়ের মাধ্যমে ধীরে ধীরে বাংলা ব্রিটিশদের অধিকারে চলে আসে। বাংলা অধিকারের পর ক্রমান্বয়ে ব্রিটিশরা পুরো ভারতবর্ষ এমনকি এশিয়ার অন্যান্য অংশও নিজেদের দখলে নিয়ে আসে। পলাশীর রক্তাক্ত ইতিহাস, পরাধীনতার ইতিহাস, মুক্তিসংগ্রামীদের পরাজয়ের ইতিহাস, ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস, ট্রাজেডি ও বেদনাময় এক শোক স্মৃতির ইতিহাস। এই নৃশংস ও কলঙ্কজনক ঘটনার মাধ্যমে কলকাতা কেন্দ্রিক একটি নতুন উঠতি পুজিঁপতি শ্রেণী ও রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটে। ইংরেজ ও তাদের এ দেশীয় দালালগোষ্ঠী দেশবাসীর ওপর একের পর এক আগ্রাসন চালায়। ফলে দেশীয় কৃষ্টি-সৃংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনে ব্যাপক বিপর্যয় নেমে আসে। বিকাশমান ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরির ক্ষেত্রে তারা মরণ কামড় দেয়। পলাশী বিপর্যয়ের পর শোষিত বঞ্চিত শ্রেণী একদিনের জন্যও স্বাধীনতা সংগ্রাম বন্ধ রাখেনি। এ জন্যই বৃটিশ কর্তৃপক্ষ সাধারণ জনগণকেই একমাত্র প্রতিপক্ষ মনে করত। ফলে দীর্ঘ দুইশ' বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রামের ফলে বৃটিশরা লেজ গুটাতে বাধ্য হয়। পরে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র জন্মলাভ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে নানা রকমের রটনা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন দেশপ্রেমিক নবাব। যিনি বিশ্বাসঘাতকদের ষড়যন্ত্রের কারণে স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারেননি। তিনি নিজের ব্যক্তিগত লাভের জন্য দেশপ্রেমকে বিকিয়ে দেননি। জীবন দিয়ে নবাবের সম্মান বজায় রেখেছিলেন।
প্রশ্ন জাগে! নবাব কি যুদ্বে হেরেছিল? না, কুঠনৈতিক ভাবে হেরেছিল?

নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর উদ্যোগে প্রথম পলাশী দিবস উদযাপিত হয়েছিল কলকাতায়। সাথে ছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং মওলানা আকরম খাঁ। এ ব্যাপারে কবি নজরুলের একটি বিবৃতি প্রকাশ পেয়েছিল দৈনিক আজাদ এবং মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকায় ১৯৩৯ সালের জুনে। বিবৃতিতে নজরুলের আহবান ছিল 'মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁর নেতৃত্বে কলিকাতায় সিরাজউদ্দৌলা স্মৃতি কমিটি উক্ত অনুষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করিবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করিতেছেন। কলিকাতা কমিটিকে সর্বপ্রকার সাহায্য প্রদান করিয়া আমাদের জাতীয় বীরের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করিবার জন্য আমি জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের নিকট আবেদন জানাইতেছি। বিদেশীর বন্ধন-শৃক্মখল হইতে মুক্তি লাভের জন্য আজ আমরা সংগ্রামে রত। সিরাজের জীবনস্মৃতি হইতে যেন আমরা অনুপ্রাণিত হই। ইহাই আমার প্রার্থনা'। (২৯.০৬.১৯৩৯)।
এই প্রার্থনা বিফলে যায়নি। পলাশী দিবস প্রতি বছরই আসে। কখনো সরবে কখনো নীরবে। জাতীয় বীর সিরাজউদ্দৌলাকে স্মরণ করে অনুপ্রাণিত হয়, ব্যথিত হয়। একথা সত্য, নবাব সিরাজ ইতিহাসের এক ভাগ্যাহত বীর, দেশপ্রেমিক। চতুর্মুখি ষড়যন্ত্র তার উত্থানকে ব্যাহত করেছিল।
পরিশেষে করুণ পরিণতি। সিরাজকে হত্যা করা হয় ২রা জুন। এই হত্যাকান্ডের সাথে সাথে বাংলার স্বাধীনতার ঘটে অবসান। যা উদ্ধারে সময় ব্যয় হয়েছিল প্রায় দু'শ বছর। পলাশীর দুর্বিপাক এবং সিরাজ উৎখাতের সাথে যেসব বিশ্বাসঘাতক জড়িত ছিল তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই অপঘাতে মৃত্যু হয়েছিল। জীবনকালেই নানা গঞ্জনা-লাঞ্ছনার ঘূর্ণিপাক তাদের গ্রাস করেছিল। ইতিহাস এমন সত্যকেই উপস্থিত করেছে। বিশ্বাস-হন্তারকদের পরিণতি শুভ হয় না কখনো। দেশ এবং দেশের মানুষকে যারা প্রতারিত করে আখেরে তারা নিজেরাই প্রতারণার ফাঁদে আটকা পড়ে। কিন্তু ইতিহাসের এমন প্রমাণকে অনেকেই আমলে আনতে চায় না। যদিও শতাব্দীর পর শতাব্দী এই জাতীয় ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছে পৃথিবীর মানুষ। বাংলার স্বাধীনতাকে যেসব কুলাঙ্গার বিদেশিদের হাতে সমর্পণ করেছিল নানা কায়দা-কৌশল করে, তাদের প্রতি দেশবাসীর ঘৃণা আর ধিক্কার জুটেছিল অবশেষে। হয়তো এই ধিক্কার এবং ঘৃণা কেয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে। আসলে সর্বকালেই বিশ্বাস হন্তারকদের ভাগ্যে এমনটাই ঘটে। কেউ অনুভব করে কেউ করতে চায় না।
সিরাজউদ্দৌলা বাঙালি ছিলেন না বিদেশি ছিলেন, সাম্প্রতিক কিছু লেখায় এমন প্রশ্নের অবতারণা করেছেন দু'একজন। স্বাভাবিক নিয়মেই প্রশ্ন আসে, ভারত উপমহাদেশের কত সংখ্যক মানুষের স্থায়ী বসতি ছিল এখানে? অধিকাংশ লোকই তো বাইরে থেকে আসা। বিশেষ করে মুসলিম জনগোষ্ঠী। এরা এখানে এসেছে শাসন করেছে। বিয়ে-শাদি করেছে, সন্তান-সন্তুতি নিয়ে বসবাস করেছে। তাদের শেষ আশ্রয়ও এ মাটিতেই। নবাব সিরাজউদ্দৌলাও এদেরই একজন। ব্যতিক্রম কেবল বৃটিশ। এরা এসে সম্পদ লুণ্ঠন করে আবার নিজ দেশে ফিরে গেছে ধন-সম্পদ নিয়ে। এই যে বাংলা, বাংলাদেশের নামকরণ এবং সীমা সহরতওতো করেছিলেন সুলতান ফখরউদ্দিন মুবারক শাহ। তা-ও ১৩৩৮ সালের দিকে। তার রাজ্যের নাম ছিল সুবেহ বাঙ্গালা। তিনি বিশ্বদরবারে নিজেকে পরিচিত করেছিলেন শাহে বাঙ্গালা নামে। তাহলে বাঙালি অবাঙালির ফারাকটা কোথায় গিয়ে ঠেকল? নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে যারা বাঙালি-অবাঙালির বেড়াজালে ফেলতে চায় তারা আসলে মীরজাফর-জগৎশেঠদেরই উত্তরপ্রজন্ম। ক্লাইভ-হেস্টিংসদের তল্পিবাহক। নবাব সিরাজ ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। তিনি বাংলাকে ভালবেসেছিলেন, এদেশের মানুষকে ভালবেসেছিলেন। এদেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছিলেন এটিই ইতিহাসের চরম সত্য। পরবর্তী সময় ইংরেজদের বেতনভুক কিছু কর্মচারী-চাটুকার ইতিহাস রচনা করেছিলেন, যে ইতিহাসে নবাবকে 'অপরিণামদর্শী চরিত্রহীন' ইত্যাকার বিশেষণে বিশেষায়িত করা হয়েছে। যার ধারাবাহিকতা অদ্যাবধি চলমান।'
রজতকান্তি রায় 'পলাশীর ষড়যন্ত্র ও সেকালের সমাজ' শিরোনামে একটি পুস্তক রচনা করেছেন। প্রচুর পরিশ্রম করেছেন, সময় ব্যয় তো অবশ্যই হয়েছে। তবে রজত বাবু পূর্বসুরীদের পদাংকই অনুসরণ করেছেন তার সমগ্র গবেষণায়(?)। এসব পুস্তক রচনার একমাত্র উদ্দেশ্যই যেন সিরাজ-সিরাজের গোটা পরিবারের চরিত্র হনন। রজত বাবুও ইনিয়ে বিনিয়ে কায়দা কৌশলে এই 'মহত' কর্মটি করেছেন। পলাশী ষড়যন্ত্রের মূল চক্রান্তকারী জগৎশেঠকে তিনি 'ঋষি-যুধিষ্ঠি' রূপে চিহ্নিত করেছেন। তিনি লিখেছেন-দেওয়ানী বিভাগের প্রভাবশালী হিন্দু মুৎসুদ্দিয়ান এবং মুর্শিদাবাদ খাজাঞ্চীখানার অধিপতি জগৎশেঠ পরিবার আদপেই কোম্পানীর ধামাধরা ছিলেন না।' চমৎকার গবেষণা তো বটেই। রজত বাবু নবাব সিরাজের চরিত্রের উপর রাজ্যের কলঙ্ক চাপিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত হননি, সিরাজের আম্মা আমেনা বেগমের চরিত্র হননেও যথেষ্ট মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। তিনি লিখছেন-গহসেটি বেগম তাঁর প্রণয়ের পাত্র হোসেন কুলী খানের উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন। হোসেন কুলী খানের অপরাধ তিনি গহসেটি বেগমকে ত্যাগ করে তার ছোট বোন আমিনা বেগমের কাছে যাতায়াত শুরু করেছেন।' রজত বাবু আমেনা বেগমের পরিচয় প্রকাশ করতেও আগ্রহের আতিশয্য দেখিয়েছেন। আমেনা বেগম কে? 'আমিনা বেগম সিরাজের মা।' এগুলো আসলে রজত বাবুদের স্বভাবজাত অভ্যাস। সিরাজের প্রতি রাগ-গোস্যা থেকে উদ্গত। রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ হতে শুরু করে আজকের রজতকান্তি রায়দের চেহারা স্বভাবে তেমন কোন পরিবর্তন লক্ষ্যযোগ্য হচ্ছে না। ক্লাইভের তস্য প্রজন্মরূপেই যেন এদের উপস্থিতি এবং উপছায়া। নবাব সিরাজের চরিত্র হনন করে এমন তথাকথিত গবেষণা পুস্তক রচিত হয়েছে অনেক। বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে বা বিভ্রান্ত হয়ে যারাই সিরাজকে কলঙ্কিত করেছে শেষাবধি এরা নিজেরাই লজ্জিত হয়েছে, অপদস্থ হয়েছে। ইংরেজদের বিষয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলা নাকি প্রায়শই বলতেন, 'এদের শায়েস্তা করতে হলে একজোড়া পয়জার চাই, আর কিছু না'। নবাব সিরাজ যদি জীবিতাবস্থায় তাঁকে নিয়ে অর্বাচীনদের রচিত পুস্তকসমূহ পাঠ করার সুযোগ পেতেন তবে হয়তো তিনি এদের ব্যাপারেও উচ্চারণ করতেন -এইসব তথাকথিত গবেষকদের(?) শায়েস্তা করতে হলে একজোড়া পয়জার চাই। অর্থাৎ একজোড়া চটি।
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার বংশধরগণ এখন ঢাকায়। এটি একটি আনন্দের বার্তা। আনন্দের বার্তা এজন্যে যে তারা ঢাকায় বসবাস করছেন। খোদানাখাস্ত যদি তারা কলকাতা বা ভারতের কোন এলাকায় বসবাস করতেন তবে তাদের অস্তিত্ব নিয়েই সংশয় দেখা দিত। কয়েক বছর আগে পত্রিকায় এসেছিল মহিশূরের বাঘ টিপুর বংশধররা এখন কলকাতায় রিকশা চালক। সে সব এলাকায় এরকম আরো অনেক ঐতিহ্যমন্ডিত পরিবার ধ্বংসের দরজায় উপনীত। সৌভাগ্য যে, নবাব সিরাজের পরিবার মূল বাংলার নাগরিক। যে বাংলার শাসক ছিলেন তাদেরই পূর্বপুরুষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা জং বাহাদুর। নবাব সিরাজ তো কেবল বাংলাই নয় বিহার এবং উড়িষ্যারও নবাব ছিলেন। বিহার ও উড়িষ্যায় সিরাজের অবস্থান কতটুকু? 
শেষকথা
যদিও ইংরেজরা আরও কিছুদিন নবাবী ব্যবস্থা বহাল রাখে, কিন্তু তারা সামরিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে ইংরেজদের অধীনে ছিলেন। এরপর নবাব মীর কাসিম একটি চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ১৭৬৪ সালে বাক্সারের যুদ্ধে ইংরেজদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন।
পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের বিজয় কোন সামরিক বিজয় ছিল না। এটি ছিল একটি রাজনৈতিক বিজয়। সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে আট ঘন্টার এই যুদ্ধকে 'যুদ্ধ' না বলে ছোট দাঙ্গার সাথে তুলনা করা যায়। কিন্তু এ যুদ্ধই ভারতে ইংরেজ উপনিবেশের সূচনা করে এবং বাংলা প্রায় ২০০ বছর ইংরেজদের অধীনে থাকে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন পলাশীর যুদ্ধের ফল বিপরীতটি হলে ইংল্যান্ড নয় বাংলাই বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিতে পারত।
নবাব সিরাজের শাহাদাত দিবস আজ। সিরাজকে স্মরণ করলে বিশ্বাসঘাতকদের চেহারা উন্মোচিত হয়। স্বাধীনতার দুশমনদের চিহ্নিত করা যায়। তাই যত অধিক নবাব সিরাজকে স্মরণে আনা যায় ততই মঙ্গল।

লেখক : ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম , বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও 
রাজনীতিবিদ, জিয়া পরিষদের সহ আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম আহবায়ক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম 
যুক্তরাজ্য শাখার সাবেক সহ সভাপতি, শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক রিসার্চ ইনস্টিটিউট'র প্রতিষ্ঠিতা এবং চার্টাড ইনস্টিটিউট অব লিগ্যাল এক্সিকিউটিভের মেম্বার 





__._,_.___

Posted by: Shah Deeldar <shahdeeldar@yahoo.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___