শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০১৪, ৩ শ্রাবণ ১৪২১
৪৩ বছর পর আকাশ দেখল কুলসুম, পালিয়েছে পীর
জনকণ্ঠে রিপোর্ট প্রকাশের পর উদ্ধার
বাবুল সরদার, বাগেরহাট ॥ 'স্ত্রী ঘরে তালাবন্দী ৪৩ বছর, যেন আরেক লালসালু' শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠে প্রতিবেদন প্রকাশের পর অবশেষে মুক্তি পেলেন বাগেরহাট খানকা শরীফের খাদেম শেখ নুর মোহাম্মদের দুই স্ত্রী, ৩ মেয়ে ও ২ ছেলে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে আদালতে সোপর্দ করেন। বাগেরহাটের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু তাহের উদ্ধারকৃতদের সমাজ সেবা অধিদফতর পরিচালিত বাগেরহাটের মহিলা ও শিশু-কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসনকেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাদের নিরাপত্তার জন্য বাগেরহাটের পুলিশ সুপারকে এবং সুচিকিৎসার জন্য সিভিল সার্জনকে দায়িত্ব দেন।
দুপুরে বাগেরহাট সদর থানার এসআই মোঃ শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ খাদেম নুর মোহাম্মদের সরুই বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ধর্মান্ধ খাদেম তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের থাকার ঘরের ভেতর থেকে তালা দিয়ে পেছন থেকে পালিয়ে যায়। তখন ঘরে বন্দী খাদেমের স্ত্রী-ছেলে-মেয়েরা ভেতর থেকে ঘরের তালা ভেঙ্গে পুলিশকে ঘরে ঢুকতে সহায়তা করেন। পুলিশ তখন একে একে খাদেম শেখ নুর মোহাম্মদের দুই স্ত্রী কুলসুম বেগম (৬০), ছোট স্ত্রী পারভীন আক্তার (৩৬) এবং ৩ মেয়ে ফাতেমা আক্তার (৩৩), সালমা আক্তার (১৫), নুরজাহান (৯) এবং ছেলে মাহাফুজ বিল্লা (১৫) ও মাহাবুবব বিল্লাকে (৮) বন্দী ঘর থেকে মুক্ত করে আলোয় নিয়ে আসেন। তখন দেখা যায় খাদেম নুর মোহাম্মদের ঘরটি আসবাবপত্রে সাজানো-গোছানো হলেও তার স্ত্রী-ছেলে-মেয়েদের থাকার ঘরে ঘুমানোর কেবলমাত্র একটি চৌকি (খাট) রয়েছে। তালাবদ্ধ ঘরটিতে ছিল না কোন জালনা, এমনকি সামনে পেছনে ছিল দুটি দরজা। সবসময় তালাবন্ধ করে রাখা হতো। স্ত্রী-মেয়েদের দেখলেই বোঝা যায় এরা প্রায় সকলেই অসুস্থ ও অপুষ্টির শিকার।
উদ্ধারের পর খোলা আকাশের নিচে নিয়ে আসার সময় নুর মোহাম্মদের প্রথম স্ত্রী বৃদ্ধ কুলসুম বেগম যেন কোন ক্রমেই আকাশের দিকে তাকাতে পারছিলেন না। জীর্ণশীর্ণ দেহে তার যেন উঠে দাঁড়াতেই কষ্ট হচ্ছিল। আলোই আনতেই তিনি বলেন, 'আমি কতদিন আলোয় আসিনি, খোলা আকাশ দেখিনি, আমি হাঁটতে ভুলে গেছি, আমাকে হাত ধরে নিয়ে চলেন ...।' এক পর্যায়ে দুই স্ত্রী কুলসুম বেগম ও পারভীন বেগম প্রায় একত্রে বলে ওঠেন, অত্যাচারী স্বামীকে আমরা আর ভয় পাই না, তালাকের ভয় পাই না। আমরা ধর্ম মানি, ধর্মীয় পর্দায় থাকতে চাই, অত্যাচারী স্বামীর বিচার চাই। ওর হাত থেকে আপনারা আমাদের ছেলে-মেয়েদের রক্ষা করেন, ওদের যেন কোন ক্ষতি না হয়' বলেই তারা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকেন।
নুর মোহাম্মদ ১৯৭৩ সালে কুলসুম বেগমকে বিয়ে করেন। পর্দার নামে বিয়ের পর থেকে ৪৩ বছর ধরে তালাবন্ধ ঘরে বন্দী থেকেছেন। দশ বছর আগে তার পিতা বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার রাজৈর গ্রামের মুন্সী আব্দুল হামিদ মারা গেলেও তার স্বামী তাকে দেখতে যেতে দেননি।
ধর্মান্ধ এ খাদেমের ছোট স্ত্রী পারভীন বেগম জানান, দিনরাতে তাদের কেবলমাত্র দু'বেলা রুটি খেতে দিত। পর্দার নামে অমানুষিক নির্যাতন করত। অন্য করও মুখ দেখতে দিত না। মাজায়, হাত-পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখত। মেজ মেয়েটিকে দু'বছর আগে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ছেলে বাকীবিল্লাহ বিয়ে দিলে ছেলের উপর রুষ্ট হন তার স্বামী পীর খ্যাত নুর মোহাম্মদ। বোনকে বিয়ে দেয়ার অপরাধে ছেলে বাকীবিল্লাহকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় নুর মোহাম্মদ।
উদ্ধারের সময় এবং আদালত প্রাঙ্গনে শত শত নারী-পুরুষ, মানবাধিকার কর্মী ও নারী নেত্রী, আইনজীবী, জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তাদের প্রায় সকলেই ধর্মান্ধ অত্যাচারী শেখ নুর মোহাম্মদের বিচার দাবি করেন। এ বিষয়ে হ্যাপী বড়াল এমপি, এ্যাডভোকেট শরীফা হেমায়েত, এ্যাডভোকেট সীতা রানী দেবনাথ, মহিলা পরিষদের সম্পাদিকা শিল্পী সমাদ্দার, নারী নেত্রী আম্বিয়া খাতুন জানান, পর্দার দোহাই দিয়ে স্ত্রী-মেয়েদের ঘরে তালাবন্দী করে রাখা, তাদের ঠিকমতো খেতে না দেয়া অমানবিক এবং আইনে দ-নীয় অপরাধ। মাসুদুল করিম অরিয়ন বলেন, ইসলামে পর্দার কথা থাকলেও এমন নৃশংস অত্যাচারের কোন স্থান নেই।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোঃ নিজামুল হক মোল্লা জানান, বন্দীদশা থেকে এই নারী-শিশুদের উদ্ধার করাটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে শেখ নুর মোহাম্মদের বড় ছেলে বাকীবিল্লাহ তার বাবার এমন অনৈতিক কর্মকা-ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে দুই মা ও ভাইবোনদের এ অবস্থা থেকে উদ্ধারের জন্য গত ২৬ জুন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর আইনী প্রক্রিয়া শেষে পারিবারিক সুরক্ষা আইন ১০(খ) ধারা মোতাবেক তাদের উদ্ধার করা হয়। তিনি উদ্ধারকৃতদের নিরাপত্তার বিষয়টি কড়া নজরে রাখবেন বলে উল্লেখ করেন।
শেখ নুর মোহাম্মদের বড় ছেলে বাকীবিল্লাহর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার বাবার (বাগেরহাটের খানকা শরীফের পীর দাবিকৃত খাদেম শেখ নুর মোহাম্মদ) দুই স্ত্রী। তিনি কখনও তাদের ঘরের বাইরে বের হতে দেন না। সবসময় ঘরের বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাখেন। বিভিন্ন সময় তাদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান। শরীরে অলঙ্কার তো দূরের কথা প্রয়োজনীয় জিনিসও দেন না। বাইরের কাউকে বাড়ি প্রবেশ করতে দেন না। কোন আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও দেয় না।
এ ছাড়া তার বোনদের সঙ্গে তাদের দেখা করতে দেন না। ঘরের বাইরে যেতে পারে না। লেখাপড়ার সুযোগ তাদের দেয়া হয়নি। তার বড় বোনের ফতেমা আকতারের বয়স প্রায় ৩৫। তিনি সহ তার আরেক বোন ঘরে বন্দী থাকতে থাকতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। বাবার মতো পর্দায় রাখবে এমন ছেলে না পাওয়ায় তার বড় দুই বোনের আজও বিয়ে দেয়া হয়নি। লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, তার ছোট মা একবার পালিয়েছিল। পরে তাকে মুরীদের সহযোগিতায় ধরে এনে শিকলে বন্দী করে রাখে। তার বাবার অনেক মুরীদ আছে। এর আগের পুলিশ সুপার বাকীবিল্লাহর এক বোনকে উদ্ধার করে বিয়ে দেয়ার কারণে তার বাবা তার মুরীদদের প্রভাব খাটিয়ে ওই পুলিশ সুপারকে বদলির হুমকি দিয়েছিল। তার বাবা ধর্মের নাম ভাঙ্গিয়ে মুরীদের কাছ থেকে টাকা পয়সা আদায় করে থাকে।
অভিযোগ পেয়ে বাগেরহাট পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা সরজমিনে ঘটনা তদন্তে পাঠান বাগেরহাট সদরের সহকারী পুলিশ সুপার সাদিয়া আফরোজকে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর বন্দীদের উদ্ধারে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করেন। এ নিয়ে দৈনিক জনকণ্ঠে খবর প্রকাশিত হলে মানবাধিকার কর্মী, নারী নেত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিরা সোচ্চার হন।
দুপুরে বাগেরহাট সদর থানার এসআই মোঃ শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ খাদেম নুর মোহাম্মদের সরুই বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ধর্মান্ধ খাদেম তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের থাকার ঘরের ভেতর থেকে তালা দিয়ে পেছন থেকে পালিয়ে যায়। তখন ঘরে বন্দী খাদেমের স্ত্রী-ছেলে-মেয়েরা ভেতর থেকে ঘরের তালা ভেঙ্গে পুলিশকে ঘরে ঢুকতে সহায়তা করেন। পুলিশ তখন একে একে খাদেম শেখ নুর মোহাম্মদের দুই স্ত্রী কুলসুম বেগম (৬০), ছোট স্ত্রী পারভীন আক্তার (৩৬) এবং ৩ মেয়ে ফাতেমা আক্তার (৩৩), সালমা আক্তার (১৫), নুরজাহান (৯) এবং ছেলে মাহাফুজ বিল্লা (১৫) ও মাহাবুবব বিল্লাকে (৮) বন্দী ঘর থেকে মুক্ত করে আলোয় নিয়ে আসেন। তখন দেখা যায় খাদেম নুর মোহাম্মদের ঘরটি আসবাবপত্রে সাজানো-গোছানো হলেও তার স্ত্রী-ছেলে-মেয়েদের থাকার ঘরে ঘুমানোর কেবলমাত্র একটি চৌকি (খাট) রয়েছে। তালাবদ্ধ ঘরটিতে ছিল না কোন জালনা, এমনকি সামনে পেছনে ছিল দুটি দরজা। সবসময় তালাবন্ধ করে রাখা হতো। স্ত্রী-মেয়েদের দেখলেই বোঝা যায় এরা প্রায় সকলেই অসুস্থ ও অপুষ্টির শিকার।
উদ্ধারের পর খোলা আকাশের নিচে নিয়ে আসার সময় নুর মোহাম্মদের প্রথম স্ত্রী বৃদ্ধ কুলসুম বেগম যেন কোন ক্রমেই আকাশের দিকে তাকাতে পারছিলেন না। জীর্ণশীর্ণ দেহে তার যেন উঠে দাঁড়াতেই কষ্ট হচ্ছিল। আলোই আনতেই তিনি বলেন, 'আমি কতদিন আলোয় আসিনি, খোলা আকাশ দেখিনি, আমি হাঁটতে ভুলে গেছি, আমাকে হাত ধরে নিয়ে চলেন ...।' এক পর্যায়ে দুই স্ত্রী কুলসুম বেগম ও পারভীন বেগম প্রায় একত্রে বলে ওঠেন, অত্যাচারী স্বামীকে আমরা আর ভয় পাই না, তালাকের ভয় পাই না। আমরা ধর্ম মানি, ধর্মীয় পর্দায় থাকতে চাই, অত্যাচারী স্বামীর বিচার চাই। ওর হাত থেকে আপনারা আমাদের ছেলে-মেয়েদের রক্ষা করেন, ওদের যেন কোন ক্ষতি না হয়' বলেই তারা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকেন।
নুর মোহাম্মদ ১৯৭৩ সালে কুলসুম বেগমকে বিয়ে করেন। পর্দার নামে বিয়ের পর থেকে ৪৩ বছর ধরে তালাবন্ধ ঘরে বন্দী থেকেছেন। দশ বছর আগে তার পিতা বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার রাজৈর গ্রামের মুন্সী আব্দুল হামিদ মারা গেলেও তার স্বামী তাকে দেখতে যেতে দেননি।
ধর্মান্ধ এ খাদেমের ছোট স্ত্রী পারভীন বেগম জানান, দিনরাতে তাদের কেবলমাত্র দু'বেলা রুটি খেতে দিত। পর্দার নামে অমানুষিক নির্যাতন করত। অন্য করও মুখ দেখতে দিত না। মাজায়, হাত-পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখত। মেজ মেয়েটিকে দু'বছর আগে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ছেলে বাকীবিল্লাহ বিয়ে দিলে ছেলের উপর রুষ্ট হন তার স্বামী পীর খ্যাত নুর মোহাম্মদ। বোনকে বিয়ে দেয়ার অপরাধে ছেলে বাকীবিল্লাহকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় নুর মোহাম্মদ।
উদ্ধারের সময় এবং আদালত প্রাঙ্গনে শত শত নারী-পুরুষ, মানবাধিকার কর্মী ও নারী নেত্রী, আইনজীবী, জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তাদের প্রায় সকলেই ধর্মান্ধ অত্যাচারী শেখ নুর মোহাম্মদের বিচার দাবি করেন। এ বিষয়ে হ্যাপী বড়াল এমপি, এ্যাডভোকেট শরীফা হেমায়েত, এ্যাডভোকেট সীতা রানী দেবনাথ, মহিলা পরিষদের সম্পাদিকা শিল্পী সমাদ্দার, নারী নেত্রী আম্বিয়া খাতুন জানান, পর্দার দোহাই দিয়ে স্ত্রী-মেয়েদের ঘরে তালাবন্দী করে রাখা, তাদের ঠিকমতো খেতে না দেয়া অমানবিক এবং আইনে দ-নীয় অপরাধ। মাসুদুল করিম অরিয়ন বলেন, ইসলামে পর্দার কথা থাকলেও এমন নৃশংস অত্যাচারের কোন স্থান নেই।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোঃ নিজামুল হক মোল্লা জানান, বন্দীদশা থেকে এই নারী-শিশুদের উদ্ধার করাটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে শেখ নুর মোহাম্মদের বড় ছেলে বাকীবিল্লাহ তার বাবার এমন অনৈতিক কর্মকা-ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে দুই মা ও ভাইবোনদের এ অবস্থা থেকে উদ্ধারের জন্য গত ২৬ জুন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর আইনী প্রক্রিয়া শেষে পারিবারিক সুরক্ষা আইন ১০(খ) ধারা মোতাবেক তাদের উদ্ধার করা হয়। তিনি উদ্ধারকৃতদের নিরাপত্তার বিষয়টি কড়া নজরে রাখবেন বলে উল্লেখ করেন।
শেখ নুর মোহাম্মদের বড় ছেলে বাকীবিল্লাহর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার বাবার (বাগেরহাটের খানকা শরীফের পীর দাবিকৃত খাদেম শেখ নুর মোহাম্মদ) দুই স্ত্রী। তিনি কখনও তাদের ঘরের বাইরে বের হতে দেন না। সবসময় ঘরের বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাখেন। বিভিন্ন সময় তাদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান। শরীরে অলঙ্কার তো দূরের কথা প্রয়োজনীয় জিনিসও দেন না। বাইরের কাউকে বাড়ি প্রবেশ করতে দেন না। কোন আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও দেয় না।
এ ছাড়া তার বোনদের সঙ্গে তাদের দেখা করতে দেন না। ঘরের বাইরে যেতে পারে না। লেখাপড়ার সুযোগ তাদের দেয়া হয়নি। তার বড় বোনের ফতেমা আকতারের বয়স প্রায় ৩৫। তিনি সহ তার আরেক বোন ঘরে বন্দী থাকতে থাকতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। বাবার মতো পর্দায় রাখবে এমন ছেলে না পাওয়ায় তার বড় দুই বোনের আজও বিয়ে দেয়া হয়নি। লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, তার ছোট মা একবার পালিয়েছিল। পরে তাকে মুরীদের সহযোগিতায় ধরে এনে শিকলে বন্দী করে রাখে। তার বাবার অনেক মুরীদ আছে। এর আগের পুলিশ সুপার বাকীবিল্লাহর এক বোনকে উদ্ধার করে বিয়ে দেয়ার কারণে তার বাবা তার মুরীদদের প্রভাব খাটিয়ে ওই পুলিশ সুপারকে বদলির হুমকি দিয়েছিল। তার বাবা ধর্মের নাম ভাঙ্গিয়ে মুরীদের কাছ থেকে টাকা পয়সা আদায় করে থাকে।
অভিযোগ পেয়ে বাগেরহাট পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা সরজমিনে ঘটনা তদন্তে পাঠান বাগেরহাট সদরের সহকারী পুলিশ সুপার সাদিয়া আফরোজকে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর বন্দীদের উদ্ধারে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করেন। এ নিয়ে দৈনিক জনকণ্ঠে খবর প্রকাশিত হলে মানবাধিকার কর্মী, নারী নেত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিরা সোচ্চার হন।
শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০১৪, ৩ শ্রাবণ ১৪২১
কথিত পীরের 'কয়েদখানায়' স্ত্রী-সন্তান
বাগেরহাট প্রতিনিধি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2014-07-17 21:39:09.0 BdST Updated: 2014-07-17 22:30:38.0 BdS
__._,_.___