Banner Advertiser

Wednesday, May 28, 2014

[mukto-mona] ফেনীর একরাম হত্যা রহস্য উদঘাটন




প্রকাশ : ২৯ মে, ২০১৪ ০০:০০:০০আপডেট : ২৮ মে, ২০১৪ ২৩:৪১:৩৬
অ-অ+
printer
একরাম হত্যা রহস্য উদঘাটন
সাঈদুর রহমান রিমন ও জমির বেগ

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হকের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত বেশির ভাগ খুনি ও নেপথ্যের অর্থায়নকারীকে পুলিশ এবং র্যাব আটক করেছে। বর্তমানে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ক্যাডাররাই মিলেমিশে খুন করেছে একরামকে। হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মিনার চৌধুরীকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একরাম হত্যাকাণ্ডে টাকা লেনদেন ও অস্ত্রের জোগানদানের বিষয়েও প্রকৃত তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। বিএনপি নেতা মাহাতাব চৌধুরী মিনারের দেওয়া অস্ত্র ব্যবহার করেই উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যাকাণ্ড ঘটানোর ব্যাপারে পুলিশ ও গোয়েন্দারা এখন পুরোপুরি নিশ্চিত হয়েছেন। বিগত উপজেলা নির্বাচনের সময় পাঁচটি অস্ত্র কিনেছিলেন সেই নির্বাচনের প্রার্থী মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনার। সব অস্ত্রই সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন ফুলগাজীর এই বিএনপি নেতা। সেসব অস্ত্র মিনার চৌধুরীর ভাতিজা, ভাগ্নে, ভাইদের হাত ঘুরে চলে আসে একরাম হত্যার পরিকল্পনাকারী জাহিদের হাতে। মিনার চৌধুরীর পাঠানো তিন কোটি টাকাও যায় খুনিদের কাছে। ফেনী সমিতির প্রভাবশালী এক নেতার মাধ্যমে টাকাগুলো পাঠানো হয় বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। একরামকে কোণঠাসা করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদ চৌধুরীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন এই ব্যবসায়ী। এসব কারণে একরাম হত্যা মামলায় মিনারকে গুরুত্বপূর্ণ আসামি হিসেবেই দেখছে পুলিশ। মঙ্গলবার মিনারকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এখন অপেক্ষা শুধু আওয়ামী লীগ নেতা, নাটের গুরু আদেলের জন্য। 

গত উপজেলা নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের সঙ্গে বিরোধ ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর আক্রোশের জের ধরেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন একরাম। এলাকাভিত্তিক আধিপত্য ও রাজনৈতিক প্রভাব তছনছ করতেই আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা সরাসরি একরামের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিএনপি প্রার্থী মিনারের পক্ষে কাজ করেছিল। এ সময় তারা একরামকে তিন দফা হত্যারও চেষ্টা চালায়। কিন্তু প্রতিবারই কৌশলে পালিয়ে জীবন বাঁচান একরাম। তবে হামলাকালে একরামের তিনটি গাড়িও পুড়িয়ে দেন তারা। উপজেলা নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালে বকশীবাজার এলাকায় জেহাদের নেতৃত্বে একরামের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণও চালানো হয়। এ ঘটনায় রনি নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়।  

নির্বাচনে বিপুল ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর একরাম ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতালের নির্বাচনেও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ডায়াবেটিক হাসপাতালের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সেখান থেকে জেলা আওয়ামী লীগের দুই প্রভাবশালী নেতা জাহাঙ্গীর আদেল ও হারুনুর রশিদকে সরিয়ে দেন। এতে বিরোধ সৃষ্টির পাশাপাশি পাল্টা রোষ শুরু হয়। কিছুদিন আগে একরামের ঘনিষ্ঠ কাজীরবাগ যুবলীগ নেতা লোকমানের ওপর হামলা এবং পৌর ছাত্রলীগ নেতা আরমানকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। স্থগিত করা হয় একরামের গঠিত কয়েকটি ইউনিয়ন কমিটি। একরাম হত্যাকাণ্ড সংঘটন পর্যন্ত প্রভাবশালী মহলের এ জিঘাংসা চলতেই থাকে। এদিকে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, শুধু উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়েই নয়, একরামের সঙ্গে মিনার চৌধুরীর ছিল অনেক পুরনো আক্রোশ। একরাম ও মিনার চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নে। ২০০১ সালে আনন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন নিয়ে মিনারের সঙ্গে একরামের ব্যক্তি-বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। মিনার সেখানে তার এক আত্দীয়কে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করেন। মর্যাদার প্রশ্নে লাখ লাখ টাকাও বিলিয়ে দেন। কিন্তু একরামের মনোনীত প্রার্থীই সেখানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় নিজের জন্মস্থানেই মিনার বেশ বিপাকে পড়ে যান। এর সমুচিত জবাব দিতে বারবারই মিনার চৌধুরী সুযোগ খুঁজতে থাকেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে যাদের নাম বেরিয়ে আসবে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ফেনীর পুলিশ প্রশাসন শুরু থেকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে রহস্য উদঘাটনে তৎপর রয়েছে। এমনকি র্যাব ঢাকায় খুনিদের গ্রেফতারের যে অভিযান চালায় সেখানেও ফেনী পুলিশ মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে পেঁৗছে যেতে সক্ষম হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত এ ঘটনার কারণ উদঘাটনে ফেনীর পুলিশ সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে র্যাবের ভূমিকাও পুলিশের চেয়ে কম ছিল না বরং তারাও দ্রুত ঘটনা উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করেছে। প্রথম দিনেই পুলিশ ও র্যাব আসামিদের শনাক্ত করার লক্ষ্যে তাদের স্থানীয় সোর্সগুলো ব্যবহার করতে শুরু করে। পাশাপাশি চলে প্রযুক্তির নানামুখী ব্যবহার। ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই খুনিদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারে ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয় বলেও দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ফেনীর পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ জানান, এ পর্যন্ত একরাম হত্যা মামলায় পুলিশ ও র্যাবের পৃথক অভিযানে মোট ২১ জন গ্রেফতার হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় সবাই একরাম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল।  

মিনার চৌধুরী সাত দিনের রিমান্ডে : ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীকে সাত দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় আদালত আবদুর রবকে পাঁচ দিন ও সজীবকে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন। ফেনী মডেল থানার পুলিশ বুধবার বিকালে ফেনীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালত-১ এর বিচারক খায়রুল আমিনের আদালতে মিনার চৌধুরীসহ বাকিদের হাজির করে। পুলিশ মিনারের ১০ দিনের রিমান্ড ও অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড চাইলে আদালত এ রায় দেন। মঙ্গলবার বিকালে মিনারকে ঢাকা থেকে ডিবি পুলিশ আটক করে বুধবার ভোর ৪টায় ফেনী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে পুলিশ মিনারকে পুলিশ লাইনে রেখে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আদালতে নিয়ে আসে। অন্যদিকে ফেনী সদর উপজেলা কাজিরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রবকে পুলিশ মঙ্গলবার সোনাপুর থেকে আটক করে। 

আরেক যুবলীগ নেতা গ্রেফতার : এদিকে রিমান্ডে থাকা আসামিদের স্বীকারোক্তিতে পুলিশ দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর থেকে জিয়াউল হক বাপ্পি নামে আরেক যুবলীগ নেতাকে আটক করেছে। পরে তাকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানোর খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ জানায়, একরাম হত্যার কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া জিয়াউল হক বাপ্পিকে পুলিশ বুধবার দুপুরে দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের একটি পেট্রল পাম্প থেকে গ্রেফতার করে। বাপ্পি খুলনায় পালিয়ে যেতে বাসের জন্য পেট্রল পাম্পে অপেক্ষা করছিল। সে ফেনী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বাপ্পি চাপাতি দিয়ে একরামকে কুপিয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। এদিকে ঢাকার গাজীপুর থেকে র্যাবের হাতে আটক জাহিদুল ইসলামের স্বীকারোক্তিতে সোমবার গভীর রাতে শহরের বিরঞ্চি এলাকা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ সজীবকেও আটক করে র্যাব। র্যাব-৭ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মহিউদ্দিন জানান, জাহিদুল পিস্তলটি সজীবকে রাখতে দিয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। পরে মঙ্গলবার রাতে সজীবকে ফেনী মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব।  

একরামুল হক একরাম হত্যাকাণ্ডের পর তার বড় ভাই রেজাউল হক জসিম উপজেলা নির্বাচনে একরামের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনারকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। 

কিলার গ্রেফতার হলেও সব অস্ত্র উদ্ধার হয়নি : দিনদুপুরে একরামুল হকের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারলেও এতে ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো সব উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিলিং মিশনে অন্তত ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হলেও গ্রেফতারকৃতরা পাঁচটি পিস্তল ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু সেগুলোর মধ্যে মাত্র একটি অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করেছে র্যাব, কিন্তু বাকি অস্ত্রের হদিস এখনো পাওয়া যায়নি। তাদের জবানবন্দির সূত্র ধরে র্যাব বলেছে, হত্যাকাণ্ড সংঘটনের পরপরই অস্ত্রগুলো খুনের অন্যতম পরিকল্পনাকারী জিহাদ চৌধুরী তার কব্জায় নিয়েছে। সেই জিহাদ চৌধুরীও এখন পুলিশের হাতে গ্রেফতার। অথচ অস্ত্রগুলো সব উদ্ধার হয়নি। এ ব্যাপারে র্যাব মুখপাত্র এটিএম হাবিবুর রহমান জানান, ঘটনার পরপরই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পাঁচটি পিস্তল জিহাদ চৌধুরী নিয়ে নেয়। ঢাকায় গ্রেফতারকৃতদের কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। তা ছাড়া ঘটনার পর হত্যাকারীরা দ্রুত এলাকা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করে। ফলে অস্ত্রশস্ত্র নিজেদের কাছে রাখা মোটেও নিরাপদ মনে করেনি তারা। র্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত আট কিলারও জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, জিহাদের কাছেই অস্ত্র রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করা গেলেই অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যাবে। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করার পরও সবগুলো অস্ত্রের নাগাল পাওয়া যায়নি। আবিদও স্বীকার করে, জিহাদ ও রুটি সোহেলের নির্দেশে একরামকে প্রথমে সে গুলি করে। আবিদ ছাড়াও কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া সানান, রুটি সোহেল, জিহাদ এবং পাংকু আরিফের কাছে একটি করে পিস্তল ছিল। এরা প্রত্যেকেই র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউল আলম মিস্টার, আরেক গডফাদারের অস্ত্রভাণ্ডারের নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিত কালা মামুন ও তার দেহরক্ষী রাশেদ এখনো পলাতক। অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে ফেনী পুলিশ সুপার (এসপি) পরিতোষ ঘোষ বলেন, আশা করছি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সব অস্ত্র শীঘ্রই উদ্ধার করা যাবে।  

গতকালও উত্তাল ছিল ফুলগাজী : এদিকে একরাম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে গতকালও ফুলগাজী ছিল উত্তাল। উপজেলার বন্ধুয়া ও দৌলতপুরে সর্বস্তরের নারী-পুরুষ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধন চলাকালে প্রায় ২ ঘণ্টা ফেনীর সঙ্গে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার নাম ধরে তাদের ফাঁসি দাবি করেন। তারা জানান, ফেনীর এই পুলিশ প্রশাসন দিয়ে একরাম হত্যার সুষ্ঠু বিচার হবে না। কারণ একরামের হত্যাকারীদের সঙ্গে পুলিশের অতীত থেকে সখ্য রয়েছে। তারা বিচার বিভাগীয় তদন্তের পাশাপশি মামলাটি সিআইডির কাছে হস্তান্তরের দাবি জানান। একরামের হত্যাকারীদের পুলিশ রিমান্ডে জামাই আদর করা হচ্ছে বলে তারা বিভিন্ন প্লাকার্ড প্রদর্শর্ন করেন।

- See more at: http://www.bd-pratidin.com/2014/05/29/8713#sthash.1MoIx84A.dpuf
http://www.bd-pratidin.com/2014/05/29/8713

খুনের নির্দেশদাতা চিহ্নিত

তোহুর আহমদ, ফেনী থেকে

প্রকাশ : ২৮ মে, ২০১৪

একরাম হত্যায় বিএনপি নেতা মিনার গ্রেপ্তার


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক,  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Published: 2014-05-27 16:26:07.0 BdST Updated: 2014-05-27 19:24:07.0 BdST


ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক হত্যা মামলার আসামি বিএনপি নেতা মাহতাবউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী মিনারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত একরামুল হক (ফাইল ছবি)

নিহত একরামুল হক (ফাইল ছবি)







RELATED STORIES

http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article793342.bdnews



__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

[mukto-mona] পড়ুন



Bhorer Kagoj, 28th May 2014:

fviZ cvi‡j Avgiv cvwi bv †Kb? wkZvsï ¸n

Published in Thikana, 28th May 2014

ভারত পারলে আমরা পারিনা কেন?

ভারতে একটি সুন্দর নির্বাচন হয়ে গেলো এবং একজন নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হলেন। সুন্দর বললাম এজন্যে যে, দেড়মাস ধরে প্রায় ৫৭কোটি ভোটার শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়েছেন। কেউ বয়কট করেননি, মারামারি হয়নি, সংখ্যালঘুর ওপর আক্রমন হয়নি, কোন নারী ধর্ষিতা হয়নি, মানুষ মরেনি, কেউ কারচুপির অভিযোগ তুলেনি, বা নির্বাচন কমিশনের ওপর প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেনি। সবাই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়েছেন। কেউ প্রথম দিন থেকেই সরকারকে টেনে নামানোর হুমকি দেননি। তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীও কেউ তুলেননি। অর্থাৎ নির্বাচনটি হয়েছে গ্রহনযোগ্য চমত্কার। প্রতিটি ভারতীয় এনিয়ে গর্ব করছেন এবং তারা তা করতেই পারেন।

 

প্রশ্ন হলো, ভারত যদি পারে আমরা কেন আমাদের নির্বাচন নিয়ে গর্ব করতে পারিনা? উত্তর সবারই জানা। ভারতে এবার নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। দলের পদ থেকে সভাপতি সোনিয়া গান্দ্বী সহসভাপতি রাহুল গান্দ্বী পদত্যাগ করেছেন। অবশ্য দল তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি এবং বলেছে, পরাজয়ের দায় শুধু দু'জনের নয়, পুরো দলের সবার। ধরনের ঘটনা কি আমাদের দেশে কখনো ঘটেছে? প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তো আগেই পদত্যাগ করেছেন। ক্ষমতা হস্তান্তরে কোন ঝামেলা নেই। আমাদের দেশের ক্ষমতা হস্তান্তরের অতীত একটু ফিরে দেখুন! তবু মন্দের ভালো, আগে ক্ষমতা হস্তান্তর হতো খুন-খারাবী করে বা বন্দুকের নলে; এখন অন্তত: অশান্তি হলেও রক্ত ঝরেনা

 

আমরা কেন পারলাম না, বা এজন্যে দায়ী কে? আমরা পারিনি কারণ স্বাধীন হলেও আমাদের পাকিস্তানী চরিত্র বা ধ্যানধারণা পাল্টায়নি। আর দায়ী সবাই, সবকটি রাজনৈতিক দল যারা ক্ষমতায় ছিলো। আরো বেশি করে দায়ী নির্বাচন কমিশন! দু: হয় আজো আমরা একটি নির্বাচন কমিশন পাইনি যারা রক্তচক্ষু উপেক্ষা করতে পেরেছেন। আমাদের দেশে যে যখন ক্ষমতায় থাকেন তারা মনে করেন ক্ষমতা তাদের সম্পত্তি, কাজেই সেটা ছাড়তে চাননা। এজন্যে তারা  নির্বাচন কমিশনকে ম্যানুপুলেট করেন। সুষ্ঠু নির্বাচন করার ব্যর্থতা বা সহজে ক্ষমতা হস্তান্তরে এটা একটা বড় সমস্যা।

 

ভারতকে মধ্যে রেখে আমরা যদি দুই পাশে বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের দিকে তাকাই তাহলে কি দেখবো? তিনটি দেশে সবকিছু তো প্রায় একইরকম হবার কথা। হলো না কেন? বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের তো সবদিক থেকে ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকাট কথা ছিলো, হয়নি কেন? ১২ই মে ২০১৪ পাকিস্তানের লেখিকা মাহওয়াশ বদর তার ফেইসবুকে ( যা পরে অন্যত্র প্রকাশিত হয়েছে) লিখেছেন, ' জিন্নাহ একটি ভুল করেছিলেন। পাকিস্তানী বলে আমি লজ্জিত।' তিনি আরো লিখেছেন, ' যারা অন্ধত্ব দিয়ে দেশপ্রেম এবং বুলেট দিয়ে ধর্ম রক্ষা করতে চান, আমার আশা তারা জানেন তারা কোন পক্ষ অবলম্বন করছেন, আমার ধারণা তারা জেনেশুনেই শান্তিতে ঘুমান যে তারা খুনিদের পক্ষেই আছেন।' তারেক ফাত্তাহ লিখেছেন, এই পোস্ট ছাপা হবার পর ওই মহিলা গায়েব হয়ে গেছেন। না, আমি আমাদের দেশের হত্যা, ফিল্মী স্টাইলে খুন বা গুম নিয়ে লিখতে বসিনি। তবে দু'দেশের মিলটা দেখাতে চেয়েছি। বাংলাদেশ পাকিস্তান একই পথে হাটছে! যদি তাই হয়, তবে পাকিস্তানের মত বাংলাদেশের কপালেও দু: আছে।

 

ভারত আমার দেশ নয়। বাংলাদেশ আমার জননী-জন্মভূমি। আমি আমার দেশ নিয়ে গর্ব করতে চাই, পারিনা কার জন্যে? আমার দেশের নির্বাচন নিয়ে আমার মুখ উজ্জল হয়না কেন? ড্যান মজিনা যখন র্যাবের সাম্প্রতিক ঘটনার সুষ্টু তদন্তের কথা বলেন, তখন আমার মান-মর্যাদা থাকে কোথায়? তিনি বলার আগেই আমরা তা করিনি কেন? সাত খুনের পরেও যখন মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়না তখন শান্তি শান্তি করে ফায়দা কি! আমি বলছি না যে, মন্ত্রীর কোন দোষ আছে, কিন্তু 'কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট' বলে তো একটা কথা আছে। এই মন্ত্রী তো ভালই, তিনি কি নিজেও দল বা সরকারের স্বার্থ দেখবেন না! আমরা কোন দেশে আছি, জননেত্রী শেখ হাসিনা কি এখনো দেশের প্রধানমন্ত্রী? মুহুর্তে বিশ্ব মোদীর দিকে তাকিয়ে আছে। গুজরাট দাঙ্গার পর বাজপেয়ী কট্টর ভাষায় মোদীর সমলোচনা করে তাকে দল থেকে বহিস্কারের কথা বলেছিলেন, আদবানী 'দিন আগেও তার প্রতিদ্বন্দী ছিলেন; এই দু'জনকে মোদী যেভাবে সন্মানিত করলেন, তাতে আমার মনে হয়েছে তিনি সবাইকে নিয়ে চলতে চান। দু: হয়, ২০০৮- নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর চমক না দেখিয়ে যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে নিয়ে চলতে পারতেন তাহলে হয়তো আজ আর আমাদের মোদীর দিকে তাকিয়ে থাকতে হতোনা। আমরা ভারত বা মোদীর দিকে তাকাতে চাইনা; বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকাতে চাই, কিন্তু আর তো ভরসা পাইনা। দেশ এখন যেভাবে চলছে তাতে খুব বেশিদিন চলবেনা। মানুষের আস্থার স্থল নস্ট হয়ে গেলে আর কিছু থাকেনা। কথায় বলে, 'শেষ ভালো যার সব ভালো তার।' আমাদের শেষটা ভালো তো?'

 

শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক 

কলাম লেখক

২৪শে মে ২০১৪

 



__._,_.___

Posted by: Sitangshu Guha <guhasb@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___