Banner Advertiser

Wednesday, August 14, 2013

[mukto-mona] Re: Bangabandhu Mujib

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে আমরা তাঁর ঋন শোধ করতে পারি -
- জয় বাংলা -- জয় বঙ্গবন্ধু

On 15/08/2013, Asoke Bose <anjbose@hotmail.com> wrote:
> I have pasted one review of Mujib's unfinished auto biography posted in
> Muktomona.
> Asoke Bose
>
>
>
>
>
> অসমাপ্ত
> আত্মজীবনী
>
> লিখেছেন: তানভী বিভাগ: ইতিহাস তারিখ: ২৮ শ্রাবণ ১৪২০ (আগস্ট ১২, ২০১৩)
>
>
>
>
>
>
> বই প্রিভিউঃ
>
> অসমাপ্ত আত্মজীবনী
>
> লেখকঃ- শেখ মুজিবুর রহমান
>
>
> (পুরো লেখাটাতে আমি একবারও জাতির জনক বা বঙ্গবন্ধু সম্ভাষণ ব্যবহার না করার
> চেষ্টা করব.. কারন পুরো লেখাটাতেই আমি তাকে শুধুমাত্র এ বইয়ের লেখক হিসেবেই
> দেখতে চাই)
>
>
> এ বইটা মুলত ১৯৩৮/৩৯ -১৯৫৫ পর্যন্ত
> সময়কালের ঘটনা প্রবাহ নিয়ে
> লেখা। এছাড়া শুরুতে লেখকের
> গ্রামের বাড়ি, জন্মবৃত্তান্ত, বংশ,
> ও তরুন কালের কিছু
> ঘটনা পাঠকের সুবিধার্থে লেখক
> দিয়েছেন। বইটা ঠিক ডায়েরী
> না। ১৯৬৭ সালে কারাগারে
> থাকাকালীন তিনি এই বই
> লেখা শুরু করেন।
> তাই এটিকে লেখকের প্রত্যক্ষ
> স্মৃতিচারনমূলক আত্মজীবনীই বলা যায়। বইটি
> শ্রুতি লিখন বা অনুলিখনের
> মাধ্যমে অন্য কারো হাতে
> লিপিবদ্ধ নয় বরং লেখক
> নিজেই জেলখানায় বসে নিজের স্মৃতি
> থেকে বইটি রচনা করেন।
> তার দুই মেয়ে শেখ
> হাসিনা এবং শেখ রেহানা
> শুধুমাত্র প্রকাশের আগে কিছু ভাষাগত
> সম্পাদনা করেন। এছাড়া তথ্যগত
> কোন সম্পাদনা করা হয়নি বলেই
> উল্লেখিত রয়েছে।
>
>
> ১৯৩৮/৩৯-১৯৫৫ এর
> সময়কার রাজনীতি সম্পর্কে আমি খুব বেশি
> কিছু জানিনে বলে বইটির
> রিভিউ করতে গিয়ে আমি
> ঐ সময়কার সরাসরি মাঠ পর্যায়ের
> রাজনীতির অংশটুকু নিয়ে খুব বেশি
> কিছু লিখব না।
> এরচে বরং লেখকের রাজনৈতিক
> চিন্তা ভাবনা, দেশভাবনা, বিভিন্ন
> রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে লেখকের চিন্তাভাবনা
> মতামত ও ছোটখাট কিছু
> বিতর্ক নিয়ে লেখার চেষ্টা
> করব। যেহেতু বইয়ের প্রধানতম
> অংশটুকুই আমি অনেক খানি
> উহ্য রাখার চেষ্টা করব
> বলতেসি (যেটা প্রায় অসম্ভব!) তাই এই
> লেখাটাকে সরাসরি রিভিউ হিসাবে
> না দেখাই ভালো। তারচে
> বরং এটাকে আমরা পাঠকের
> নিজস্ব চিন্তা ভাবনা হিসাবেই
> দেখি!
>
>
> আর লেখার ক্ষেত্রে আমি
> টানা এক প্যরাগ্রাফে বা
> গদ্য আকারে লিখে যাওয়ার
> চেয়ে পয়েন্ট আকারে লিখে যাওয়াটাকে
> প্রাধান্য দিব। কারন গদ্য
> আকারে লিখতে গেলে ধারাবাহিকতা
> বজায় রাখা আবশ্যক। সে
> তুলনায় পয়েন্ট আকারে লিখলে আমি
> যেকোন পয়েন্টেই বইয়ের যেকোন বিষয়
> তুলে আনতে পারব। তাই
> সেক্ষেত্রে আরেকটা গুরুত্বপুর্ন কথা
> বলে দিতে চাই যে,
> পয়েন্ট গুলাকে আলাদা গুরুত্ব
> দেবার দরকার নেই। শুধু
> মাত্র চিহ্নিত করার জন্যই সংখ্যা
> গুলো ব্যবহার করব। সংখ্যা গুলোর
> আলাদা কোন গুরুত্ব থাকবে
> না।
>
>
> যাহোক! এবার শুরু করি!
>
>
>
> ১- প্রথমেই বইটার লেখনি নিয়ে
> কিছু বলা যাক। খুব
> জটিল কিছু সময়ের রাজনৈতিক
> পরিক্রমা আর রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে
> নিয়ে এক নিবেদিত প্রাণ
> রাজনীতিবিদের লেখা এই বই।
> কিন্তু মজার ব্যপার
> হচ্ছে পুরো বইটা অত্যন্ত
> সহজ সরল ভাষায় লেখা।
> কোন ভারী ভারী কথাবার্তা
> বা উপদেশমূলক বাণী দেয়ার চেষ্টা
> করেন নাই। অত্যন্ত সহজ
> ভাষায়, বলা যায় একরকম
> নির্লিপ্ত আবেগ বর্জিত ভাষায়
> পুরো ঘটনা প্রবাহ লিখে
> গেছেন। কিছু জায়গায় ঘটনার
> প্রয়োজনে কিছু আবেগতাড়িত কথাবার্তা
> এসেছে। কিন্তু সেটার পরিমান
> খুব বেশি নয়। আর
> ভাষা অত্যন্ত সাবলীল, পড়তে কোন অসুবিধা
> হয় না, বিরক্তও লাগে
> না।
>
>
> ২- এবার লেখকের বংশ
> পরিচয় নিয়ে কিছু কথাবার্তা
> বলা যাক। কোথায় কবে
> কিভাবে জন্ম সেসব বিস্তারিত
> ব্যপারে না যাই। যে
> কথা বলতে চাই সেটা
> হচ্ছে এ বই
> পড়ার আগ পর্যন্ত আমার
> একটা ভ্রান্ত ধারনা ছিল। সেটা
> বেশ অনেকদিন আগে কোথায় যেন
> একটা লেখা পড়ে হয়েছিল।
> ধারনাটা হলো এই যে
> শেখ মুজিবুর রহমান ও তার
> পরিবার বংশগত ভাবে পাঠান
> ছিল। তার পূর্বপুরুষগণ এ
> দেশের অধিবাসী ছিলেন না বরং
> দেশবিভাগের পর তারা পুর্ববাংলায় এসে থাকতে
> শুরু করেন, এবং এটা
> নাকি দেশ বিভাগের একটা
> প্লাস পয়েন্ট (এই অদ্ভুত কথাটা
> ঠিক কোথায় পড়সিলাম মনে
> পড়তেসে না!! :/ )! কিন্তু এ বই
> পড়ার পর জানতে পারলাম
> এই যে লেখকের বংশের
> গোড়াপত্তনকারী শেখ বোরহানউদ্দিন কবে
> থেকে পুর্ববাংলায় লেখকের জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায়
> এসে বসবাস করতে থাকেন
> তার কোন আদি ইতিহাস
> পাওয়া যায় না… যে
> টুকু স্মৃতি অবশিষ্ট ছিল
> তা হচ্ছে প্রায় দুইশত
> বছরের (লেখকের লেখনির সময়
> থেকে) পুরাতন কিছু দালান।
> অর্থাৎ ইংরেজ আমলেরও বহু
> পূর্ব থেকেই তার বংশের
> বাংলায় বসবাস এবং এর
> সাথে দেশ বিভাগের কোন
> সম্পর্ক নাই!
>
>
> ৩- এই বইয়ে সবচেয়ে
> বেশি বার যার কথা
> এসেছে তিনি হোসেন শহীদ
> সোহরাওয়ার্দী। প্রায় পুরো বইয়েই
> লেখক তাকে শহীদ সাহেব
> বলে সম্বোধন করে গেছেন। সোহরাওয়ার্দী
> ছিলেন একাধারে লেখকের রাজনীতিতে আসার
> প্রেরণা, রাজনৈতিক পরামর্শদাতা এবং পরম শ্রদ্ধার
> পাত্র। এ বই পড়ার
> আগে আমার সোহরাওয়ার্দীকে নিয়েও
> বেশ ভ্রান্ত ধারনা ছিল যে
> তিনি পাকিস্তানপন্থী রাজনীতিবিদ ছিলেন, সাধারন মানুষের
> সাথে তার দূরত্ব ছিল,
> তিনি চান নাই যে
> পাকিস্তান ভাঙুক এবং তিনি
> ছিলেন একজন বিতর্কিত রাজনীতিবিদ।
> এ বই পড়ে সোহরাওয়ার্দী
> সম্পর্কে বেশ অনেকখানি ধারনা
> পাওয়া যায়। এবং সেটা
> পজেটিভ ধারনাই। তবে লেখক যেহেতু
> রাজনৈতিক ভাবে সোহরাওয়ার্দীর দ্বারা
> অনুপ্রাণীত, তাই লেখায় ঋণাত্নক
> কথা বার্তা আসবেনা সেটাই
> স্বাভাবিক। আর যেহেতু শুধুমাত্র
> ১৯৫৫ পর্যন্তই এই বইয়ের ব্যপ্তিকাল
> তাই পরের ঘটনা প্রবাহ
> এবং তাতে সোহরাওয়ার্দীর ভূমিকাও
> আর জানা যায় না।
> শুধু উনাকে নিয়ে লিখেই
> এ বইয়ের রিভিউ শেষ
> করে দেয়া যায়! তাই
> উনাকে নিয়ে বেশি দূর
> লিখব না……
>
>
> ৪- লেখকের রাজনৈতিক জীবনের
> শুরু মোটামুটি ১৯৩৮ সালের দিকে
> (১৮ বছর বয়স) যখন
> সোহরাওয়ার্দী তাদের স্কুল পরিদর্শনে
> আসেন তখন থেকে। তবে
> সরাসরি তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে
> পড়েন ১৯৪১ সালে তার
> মেট্রিক পরীক্ষার পর থেকে। ৪৩
> এর দূর্ভিক্ষের সময় লেখক পুরোপুরি
> মাঠ পর্যায়ের কর্মী হিসাবে নিজেকে
> নিয়োজিত করেন। রাজনীতি করতে
> গিয়ে পরিবার থেকে কখনোই
> বাধাপ্রাপ্ত হন নাই। বরং
> তার বাবা তাকে সবসময়
> উৎসাহ যোগাতেন এবং স্ত্রীর
> কাছ থেকেও কখনো পিছুটান
> পেতে হয় নি। তার
> বাবা তাকে বলেছিলেন,
>
>
> "বাবা রাজনীতি কর
> আপত্তি করব না, পাকিস্তানের
> জন্য সংগ্রাম করছ এ তো
> সুখের কথা, তবে লেখাপড়া
> করতে ভুলিও না। লেখাপড়া
> না শিখলে মানুষ হতে
> পারবে না। আর একটা
> কথা মনে রেখ,' sincerity of purpose and honesty of purpose'থাকলে জীবনে পরাজিত
> হবানা।"
>
>
> ৫- এরপর বলতে হয়
> শেরে বাংলা এ কে
> ফজলুল হকের কথা। পুরো
> বইয়ে লেখক তাকে হক
> সাহেব বলে সম্বোধন করে
> গেছেন। আরো অনেকবার ফজলুল
> হকের কথা এ লেখায়
> আসবে। তবে তৎকালীন সময়ে
> শেরে বাংলার জনপ্রিয়তা কিরুপ
> ছিল সেটা বোঝাতে একটা
> কথা উল্লেখ না করলেই
> নয়।
>
>
> একদিনের কথা মনে আচ্ছে,
> আব্বা ও আমি রাত
> দুইটা পর্যন্ত রাজনীতির আলোচনা করি। আব্বা
> আমার আলোচনা শুনে খুশি
> হলেন। শুধু বললেন, শেরে
> বাংলা এ.কে. ফজলুল
> হক সাহেবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তিগত আক্রমণ
> না করতে। একদিন আমার
> মা-ও আমাকে বলেছিলেন,"বাবা যাহাই
> কর, হক সাহেবের বিরুদ্ধে
> কিছুই বলিও না।" শেরে
> বাংলা মিছি মিছিই 'শেরে
> বাংলা' হন নাই। বাংলার
> মাটিও তাকে ভালোবেসে ফেলেছিল।
> যখনই হক সাহেবের বিরুদ্ধে
> কিছু বলতে গেছি, তখনই
> বাধা পেয়েছি। একদিন আমার মনে
> আছে একটা সভা করছিলাম
> আমার নিজের ইউনিয়নে, হক
> সাহেব কেন লীগ
> ত্যাগ করলেন, কেন পাকিস্তান
> চাননা এখন? কেন তিনি
> শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির সাথে মিলে মন্ত্রীসভা
> গঠন করেছেন? এই সমস্ত আলোচনা
> করছিলাম, হঠাৎ একজন বৃদ্ধ
> লোক যিনি আমার দাদার
> খুব ভক্ত, আমাদের বাড়িতে
> সকল সময়েই আসতেন, আমাদের
> বংশের সকলকে খুব শ্রদ্ধা
> করতেন- দাঁড়িয়ে বললেন,"যাহা কিছু
> বলার বলেন, হক সাহেবের
> বিরুদ্ধে কিছুই বলবেন না।
> তিনি যদি পাকিস্তান না
> চান, আমরাও চাই না।
> জিন্নাহ কে? তার নামও
> তো শুনি নাই। আমাদের
> গরিবের বন্ধু হক সাহেব।"
> এ কথার পর আমি
> অন্যভাবে বক্তৃতা দিতে শুরু করলাম।
> সোজাসুজিভাবে আর হক সাহেবকে
> দোষ দিতে চেষ্টা
> করলাম না। কেন পাকিস্তান
> আমাদের প্রতিষ্ঠা করতেই হবে তাই
> বুঝালাম। শুধু এইটুকু না,
> যখনই হক সাহেবের বিরুদ্ধে
> কালো পতাকা দেখাতে গিয়েছি,
> তখনই জনসাধারণ আমাদের মারপিট করেছে।
> অনেক সময় ছাত্রদের নিয়ে
> পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি,
> মার খেয়ে।
>
>
> এ ছিল পুর্ব বাংলায়
> এ.কে. ফজলুল হকের
> জনপ্রিয়তা।
>
>
> ৬- এ ফাঁকে আরেকটা
> কথা বলে নেই। লেখক
> পুরো বইতেই এরকম অমায়িক
> আচরণ বজায় রেখেছেন। তার
> সাথে অনেক সময়ই অনেকের
> মতের মিল হয় নাই,
> অনেকের সাথেই ভুল বোঝাবুঝি
> হয়েছে। কিন্তু কারো নামেই
> তিনি পুরো বইয়ে বাজে
> কথা বলেননি। কোন নেগেটিভ কথা
> বলতে হলেও আগে যথাযোগ্য
> শ্রদ্ধা আর সম্মান দেখিয়ে
> যথেষ্ট পরিমান ব্যখ্যা করে
> তবেই বলেছেন। যেমন উপরের পয়েন্টের
> কাহিনীটুকু লেখকের না দিলেও
> চলত! পাবলিকের কাছে দাবড়ানি দৌড়ানি
> খাইসেন সে কথা এভাবে
> না বললেও কোন ক্ষতি
> ছিল না। কিন্তু তিনি
> হক সাহেবের প্রতি সম্মান ও
> শ্রদ্ধার যায়গাটুকু বোঝানোর জন্যই এই কাহিনীটুকু
> লিখে দিয়েছেন।
>
>
> ৭- একটা মজার ব্যপার
> এই যে পাকিস্তান আন্দোলনের
> সাথে লেখক ওতপ্রত ভাবে
> জড়িত ছিলেন, পাকিস্তান গড়ার
> লক্ষ্য নিয়েই তার রাজনৈতিক
> জীবন শুরু কিন্তু পুরা
> বইয়ের কোথাও পাকিস্তানের জনক,
> পাকিস্তান আন্দোলনের নেতা মোহাম্মদ আলী
> জিন্নাহ সম্পর্কে কোন কথা নাই!
> অল্প যা-ও কিছু
> আছে তা-ও সরাসরি
> লেখকের কথা না এবং
> পজেটিভ কিছু না। যেমন
> শেরে বাংলা মুসলিম লীগ
> ছেড়ে দেয়ার পর মুজিব
> নিজে একবার উনার কাছে
> গিয়েছিলেন উনাকে মুসলিম লীগে
> ফেরত আসার জন্য। তখন
> শেরে বাংলা মুজিব সহ
> আরো যে কয়জন সাথে
> গিয়েছিল তাদের নিয়ে খেতে
> বসে বলেন," আমি কি
> লীগ ত্যাগ করেছি? না,
> আমাকে বের করে দেয়া
> হয়েছে? জিন্নাহ সাহেব আমাকে ও
> আমার জনপ্রিয়তাকে সহ্য করতে পারেন
> না। আমি বাঙালি মুসলমানদের
> জন্য যা করেছি জিন্নাহ
> সাহেব সারা জীবনে তা
> করতে পারবেন না।
> বাঙালিদের স্থান কোথাও নাই,
> আমাকে বাদ দিয়ে নাজিমুদ্দীনকে
> নেতা করার ষড়যন্ত্র।" কথায়
> কথায় তিনি আরো বলেন,"১৯৪০ সালের লাহোর
> প্রস্তাব কে করেছিল, আমিই
> তো করেছিলাম! জিন্নাহকে চিনত কে?" এতে
> বোঝা যায় যে জনসাধারনের
> সাথে জিন্নাহের তেমন কোন সংযোগ
> ছিল না। এমনকি মুজিব
> নিজেও পাকিস্তান দাবীর প্রেক্ষিতে সোহরাওয়ার্দীকে
> নেতা মেনেই আন্দোলন করে
> গেছেন, জিন্নাহকে নিয়ে তার মাথাব্যথা
> ছিল বলে পুরো বইয়ে
> একবারও মনে হয় নাই!
>
>
> ৮- সোহরাওয়ার্দীকে নিয়ে লেখকের আরেকটা
> ভালো উক্তি তুলে দেই…
>
>
>
> শহীদ সাহেব ছিলেন উদার,
> নীচতা ছিলনা, দল মত
> দেখতেন না, কোটারি করতে
> জানতেন না, গ্রুপ করারও
> চেষ্টা করতেন না। উপযুক্ত
> হলেই তাকে পছন্দ করতেন
> এবং বিশ্বাস করতেন। কারণ, তার
> আত্মবিশ্বাস ছিল অসীম। তার
> সাধুতা,নীতি, কর্মশক্তি ও
> দক্ষতা দিয়ে মানুষের মন
> জয় করতে চাইতেন। এ
> জন্য তাকে বারবার অপমানিত
> ও পরাজয়বরণ করতে হয়েছে।
> উদারতা দরকার, কিন্তু নীচ
> অন্তঃকরণের ব্যক্তিদের সাথে উদারতা দেখালে
> ভবিষ্যতে ভালর থেকে মন্দই
> বেশি হয়, দেশের ও
> জনগণের ক্ষতি হয়।
>
>
> ৯- বাঙালির স্বভাব নিয়ে লেখকের
> একখানা কড়া উক্তি শেয়ার
> না করে পারছি না…
>
>
>
> আমাদের বাঙালির মধ্যে দুইটা দিক
> আছে। একটা হল 'আমরা
> মুসলমান, আরেকটা হল, আমরা
> বাঙালি।' পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের
> রক্তের মধ্যে রয়েছে। বোধহয়
> দুনিয়ার কোন ভাষায়ই এই
> কথাটা পাওয়া যাবে না,'পরশ্রীকাতরতা'। পরের
> শ্রী দেখে যে কাতর
> হয় তাকে 'পরশ্রীকাতর' বলে।
> ঈর্ষা, দ্বেষ সকল ভাষায়ই
> পাবেন, সকল জাতির
> মধ্যেই কিছু কিছু আছে,
> কিন্তু বাঙালিদের মধ্যে আছে পরশ্রীকাতরতা।
> ভাই, ভাইয়ের উন্নতি দেখলে খুশি
> হয় না। এই জন্যই
> বাঙালি জাতির সকল রকম
> গুণ থাকা সত্ত্বেও জীবনভর
> অন্যের অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে।
> সুজলা, সুফলা বাংলাদেশ সম্পদে
> ভর্তি। এমন উর্বর জমি
> দুনিয়ার খুব অল্প দেশেই
> আছে। তবুও এরা গরিব।
> কারণ যুগ যুগ ধরে
> এরা শোষিত হয়েছে নিজের
> দোষে। নিজকে এরা চেনে
> না, আর যতদিন চিনবে
> না এবং বুঝবে না
> ততদিন এদের মুক্তি আসবে
> না অনেক সময় দেখা
> গেছে,একজন অশিক্ষিত লোক
> লম্বা কাপড়,সুন্দর চেহারা,
> ভাল দাড়ি, সামান্য আরবি
> ফার্সি বলতে পারে, বাংলাদেশে
> এসে পীর হয়ে গেছে।
> বাঙালি হাজার হাজার টাকা
> তাকে দিয়েছে একটু দোয়া পাওয়ার
> লোভে। ভাল করে খবর
> নিয়ে দেখলে দেখা যাবে
> এ লোকটা কলকাতার কোন
> ফলের দোকানের কর্মচারী অথবা ডাকাতি বা
> খুনের মামলার আসামী। অন্ধ
> কুসংস্কার ও অলৌকিক বিশ্বাসও
> বাঙালির দুঃখের আর একটা
> কারন।
>
>
> ১০- লেখক খুব সুন্দর
> করে তার ভ্রমন কাহিনী
> লিখে গেছেন। পুরো বইয়ে
> তিন চারবার তার বিভিন্ন
> স্থানে ভ্রমনের বিবরন এসেছে। উনি
> খুব গুছিয়ে বেশ কিছু খুটিনাটি
> সহ ভ্রমন কাহিনী গুলো
> লিখেছেন। এক দুটোর কথা
> পরের দিকে বলা যেতে
> পারে…
>
>
> ১১- ভাষা আন্দোলনের সময়ে
> প্রবেশ করছি আমরা। সরাসরি
> লেখকের লেখনি থেকে তুলে
> দেই,
>
>
> বাংলা পাকিস্তানের শতকরা ছাপ্পান্ন ভাগ
> লোকের মাতৃভাষা। তাই বাংলাই একমাত্র
> রাষ্ট্রভাষা হওয়া উচিত। তবুও
> আমরা বাংলা ও উর্দু
> দুইটা রাষ্ট্রভাষা করার দাবি করেছিলাম।
> পাঞ্জাবের লোকেরা পাঞ্জাবি ভাষা
> বলে, সিন্ধুর লোকেরা সিন্ধি ভাষায়
> কথা বলে, সীমান্ত প্রদেশের
> লোকেরা পশতু ভাষায় কথা
> বলে, বেলুচরা বেলুচি ভাষায় কথা
> বলে। উর্দু পাকিস্তানের কোন
> প্রদেশের ভাষা নয়, তবুও
> যদি পশ্চিম পাকিস্তানের ভায়েরা
> উর্দু ভাষার জন্য দাবি
> করে, আমরা আপত্তি করব
> কেন? যারা উর্দু ভাষা
> সমর্থন করে তাদের একমাত্র
> যুক্তি হল উর্দু 'ইসলামিক
> ভাষা'। উর্দু
> কি করে যে ইসলামিক
> ভাষা হল আমরা বুঝতে
> পারলাম না।
>
> দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা বিভিন্ন
> ভাষায় কথা বলে। আরব
> দেশের লোকেরা আরবি বলে।
> পারস্যের লোকেরা ফার্সি বলে,
> তুরষ্কের লোকেরা তুর্কি ভাষা
> বলে, ইন্দোনেশিয়ার লোকেরা ইন্দোনেশিয়ান ভাষায়
> কথা বলে, মালয়শিয়ার লোকেরা
> মালয় ভাষায় কথা বলে,
> চীনের মুসলমানরা চীনা ভাষায় কথা
> বলে। এ সম্বন্ধে অনেক
> যুক্তিপুর্ণ কথা বলা চলে।
> শুধু পূর্ব পাকিস্তানের ধর্মভীরু
> মুসলমানদের ইসলামের কথা বলে ধোঁকা
> দেওয়া যাবে ভেবেছিল, কিন্তু
> পারে নাই।
>
>
> ১২- এই ঘটনা প্রবাহে
> এবার দৃশ্যপটে মাওলানা ভাসানীর আগমন। সম্ভবত ১৯৪৮
> এ মাওলানা ভাসানী আসাম ছেড়ে
> বাংলায় চলে আসেন (বইয়ে
> কোন নির্দিস্ট সময় বলা নেই)।
>
>
> ১৩- আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠাকালীন
> ঘটনা। ১৯৪৯ সালের সম্ভবত
> জুন-জুলাইয়ের দিকের ঘটনা। লেখক
> তখন জেলে। এর মধ্যেই
> মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে মানুষের
> অসন্তোষ বেড়ে গেছে। নতুন
> বিরোধী রাজনৈতিক দল সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা
> দেখা দিয়েছে। তখন ২৩ জুন
> ঢাকায় পুরানো লীগ কর্মী
> ও অন্য অনেক নেতা
> কর্মীদের সম্মেলন ডাকা হয়। শেরে
> বাংলা এ.কে. ফজলুল
> হক, ভাসানী, আল্লামা মাওলানা রাগীব আহসান, এমএলএ
> দের ভিতর থেকে জনাব
> খয়রাত হোসেন, বেগম আনোয়ারা
> খাতুন, আলী আহমদ খান
> ও হাবিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে
> ধনু মিয়া এবং বিভিন্ন
> জেলার অনেক প্রবীণ নেতাও
> যোগ দিয়েছিলেন এ সম্মেলনে। তাদের
> সকলের সম্মতিক্রমে নতুন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান
> গঠন করা হয় যার
> নাম দেয়া হয় 'পূর্ব
> পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ'।
> এই প্রতিষ্ঠার কাহিনী বলার আমার
> কোন দরকার নাই। তবে
> যে কথার অবতারনা করার
> জন্য এ পয়েন্ট সেটাতে
> আসি। জেলে বসে দল
> প্রতিষ্ঠার খবর পেয়ে লেখকের
> মানসিক প্রতিক্রিয়া ছিল এমন,
>
>
> আমি মনে করেছিলাম, পাকিস্তান
> হয়ে গেছেসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের দরকার নাই। একটা
> অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হবে, যার একটা
> সুষ্ঠু ম্যানিফেস্টো থাকবে। ভাবলাম, এখনো
> সময় আসে নাই, তাই
> বাইরে যারা আছেন তারা
> চিন্তা ভাবনা করেই করেছেন।
>
>
>
> ১৪- সৈয়দ নজরুল ইসলাম,
> কামারুজ্জামান, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর
> আলী আর খন্দকার মোশতাক
> আহমেদ এর কথা পুরো
> বইয়ে এসেছে আলাদা ভাবে
> একবার কি দুবার। যার
> অর্থ দাঁড়ায় এই বইয়ের সময়কাল
> পর্যন্ত (১৯৫৫) এই কজনের
> সাথে লেখকের সরাসরি সম্পর্ক
> ছিল না। উনারা লেখকের
> সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হন
> আরো পরে। আমি পুরো
> বইয়ে আকুপাকু করে তাজউদ্দীনের নাম
> খুঁজে গেছি। কিন্তু ঘটনাপ্রবাহে
> লেখকের সাথে তিনি ছিলেন
> না বলে বইয়েও তাঁর
> কথা খুব একটা আসেনি।
> পুরো বইয়ের মধ্যে শুধু
> এই ব্যপারটাই আমার জন্য খানিক
> হতাশাজনক ছিল!! তবে যে
> একটা ঘটনা এসেছে তা-ই অন্যদের তুলনায়
> আলাদা এবং স্পেশাল ছিল।
>
>
> ১৫- এইটুকু একটা বইয়ের
> প্রায় অর্ধেক অংশ লেখক
> জেলে পার করেছেন! এই
> বই লিখেছেনও জেলে বসে! পুরো
> বইয়ে কয়বার তার জেলে
> যাবার কথা আছে তা
> মনে রাখার দুঃসাহস করতে
> পারিনি! এই জেল জীবন
> ও রাজনৈতিক জীবনের কারনে পরিবারকে
> সময় দিতে পেরেছেন খুব
> অল্পই। এ প্রেক্ষিতে একটা
> ঘটনা উল্লেখ না করলেই
> না। বইয়ের ব্যাক কভারে
> এ ঘটনাটা আলাদা ভাবে
> দেয়া আছে,
>
>
> একদিন সকালে আমি ও
> রেণু (লেখকের স্ত্রী) বিছানায়
> বসে গল্প করছিলাম। হাচু(হাসিনা) ও কামাল নিচে
> খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে
> খেলা ফেলে আমার কাছে
> আসে আর আব্বা আব্বা
> বলে ডাকে। কামাল চেয়ে
> থাকে। এক সময় কামাল
> হাচিনাকে বলছে,"হাচু আপা
> হাচু আপা তোমার আব্বাকে
> আমি একটু আব্বা বলি।"
> আমি আর রেণু দুজনেই
> শুনলাম। আস্তে আস্তে বিছানা
> থেকে উঠে যেয়ে ওকে
> কোলে নিয়ে বললাম,"আমি
> তো তোমারও আব্বা।" কামাল
> আমার কাছে আসতে চাইত
> না। আজ গলা ধরে
> পড়ে রইল। বুঝতে পারলাম,
> এখন আর ও সহ্য
> করতে পারছে না। নিজের
> ছেলেও অনেক দিন না
> দেখলে ভুলে যায়! আমি
> যখন জেলে যাই তখন
> ওর বয়স মাত্র কয়েক
> মাস।
>
>
> ১৬- লেখকের ১৯৫২ সালের
> সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চীনে শান্তি সম্মেলনে
> যোগদান এবং পুরো চীন
> ভ্রমন নিয়ে খুব সুন্দর
> ভ্রমন কাহিনী লেখক লিখে
> গেছেন। লিখতে গেলে পুরোটাই
> তুলে দিতে হয়… শুধু
> একটা ছোট ঘটনা তুলে
> দেই। ২রা অক্টোবর শান্তি
> সম্মেলনের দিনে। ৩৭৮জন সদস্য
> সাইত্রিশটা দেশ থেকে এসেছে।
> বিভিন্ন দেশের নেতারা বক্তব্য
> দিচ্ছেন। পূর্ব পাকিস্তান থেকে
> লেখক এবং আতাউর রহমান
> খান বক্তব্য দিলেন। লেখক বাংলায়
> বক্তৃতা করলেন। আতাউর রহমান
> খান সেটা ইংরেজি করে
> দিলেন। এ নিয়ে লেখক
> বলছেন,
>
>
> … ইংরেজি থেকে চীনা,রুশ ও স্পেনিশ
> ভাষায় প্রতিনিধিরা শুনবেন। কেন বাংলায় বক্তৃতা
> করব না? ভারত থেকে
> মনোজ বসু বাংলায় বক্তৃতা
> করেছেন। পূর্ব বাংলার ছাত্ররা
> জীবন দিয়েছে মাতৃভাষার জন্য। বাংলা পাকিস্তানের
> সংখ্যাগুরু লোকের ভাষা। কবিগুরু
> রবীন্দ্রনাথকে না জানে এমন
> শিক্ষিত লোক চীন কেন
> দুনিয়ায় অন্যান্য দেশেও আমি খুব
> কম দেখেছি। আমি ইংরেজিতে বক্তৃতা
> করতে পারি। তবু আমার
> মাতৃভাষায় বলা কর্তব্য। আমার
> বক্তৃতার পরে মনোজ বসু
> ছুটে এসে আমাকে জড়িয়ে
> ধরে বললেন, "ভাই মুজিব, আজ
> আমরা দুই দেশের লোক,
> কিন্তু আমাদের ভাষাকে ভাগ
> করতে কেউ পারে নাই।
> আর পারবেও না। তোমরা
> বাংলা ভাষাকে জাতীয় মর্যাদা
> দিতে যে ত্যাগ স্বীকার
> করেছ আমরা বাংলা ভাষাভাষী
> ভারতবর্ষের লোকেরাও তার জন্য গর্ব
> অনুভব করি।
>
>
> এই সম্মেলনেই লেখকের সাথে দেখা
> হয় রুশ লেখক অ্যাসিমভের
> (যা মনে হল আইজাক
> অ্যাসিমভের কথাই লেখক বলসেন!
> ) আরো দেখা হয় তুরস্কের
> কবি নাজিম হিকমতের সাথে।
>
>
> ১৭- চীন আর চীন
> ভ্রমন নিয়ে লেখার শেষ
> পর্যায়ে লেখকের সমাজতন্ত্রের প্রতি
> অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে। লেখক
> বলেন,
>
>
> আমি নিজে কমিউনিস্ট নই।
> তবে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং পুঁজিবাদী
> অর্থনীতিতে বিশ্বাস করি না। একে
> আমি শোষণের যন্ত্র হিসাবে
> মনে করি। এই পুঁজিপতি
> সৃষ্টির অর্থনীতি যতদিন দুনিয়ায় থাকবে
> ততদিন দুনিয়ার মানুষের উপর থেকে শোষণ
> বন্ধ হতে পারে না।
> পুঁজিপতিরা নিজেদের স্বার্থে বিশ্বযুদ্ধ লাগাতে বদ্ধ পরিকর। নতুন
> স্বাধীনতাপ্রাপ্ত জনগণের কর্তব্য বিশ্ব
> শান্তির জন্য সংঘবদ্ধভাবে চেষ্টা
> করা। যুগ যুগ ধরে
> পরাধীনতার শৃঙ্খলে যারা আবদ্ধ ছিল
> , সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যাদের সর্বস্ব
> লুট করেছে- তাদের প্রয়োজন
> নিজের দেশকে গড়া ও
> জনগণের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক মুক্তির
> দিকে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। বিশ্বশান্তির
> জন্য জনমত সৃষ্টি করা
> তাই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
>
>
> ১৮- এরপরেই আসে ১৯৫৪
> এর নির্বাচন ও যুক্তফ্রন্ট। ১৯৫৩তে
> এ কে ফজলুল হক
> সরাসরি আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। আওয়ামীলীগে
> থাকা এক পক্ষ তখন
> যুক্তফ্রন্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র
> করতে থাকল। ভাসানী স্পষ্ট
> ভাষায় লেখক কে জানিয়ে
> দেন যে হক সাহেব
> সরাসরি আওয়ামীলীগে আসলে তবেই তাকে
> গ্রহন করা হবে, অন্য
> দল করলে তার সাথে
> যুক্তফ্রণ্ট করা চলবে না।
> এ ঘটনার পরবর্তী প্রবাহ
> বর্ননা করতে গিয়ে লেখক
> বেশ কয়েকবার ভাসানীর কিছু কাজের উপর
> বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। প্রথমে
> যুক্তফ্রন্টের তীব্র বিরোধিতা করলেও
> পরে ভাসানী সোহরাওয়ার্দী বা
> লেখকের মতামত না নিয়েই
> যুক্তফ্রন্ট করার জন্য ফজলুল
> হকের সাথে একমত হয়ে
> দস্তখত করে ফেলেন। এরপর
> কিছু অযাচিত অদ্ভুৎ ও
> পরগাছা ধরনের দলের উদ্ভব
> ঘটে… যারা বিভিন্ন ভাবে
> যুক্তফ্রন্টের সাথে যুক্ত হয়ে
> পড়ে।
>
>
> ১৯- সেই পাকিস্তান আমল
> থেকেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একই
> ধুয়া চলে আসছে! তখন
> ধুয়া তুলত মুসলিম লীগ!
> সে বেলায় দলের নামের
> সাথে মুসলিম যুক্ত থাকলেও
> আওয়ামী মুসলিম লীগ 'ভারতের
> চর', হিন্দুদের দালাল এসব অপবাদ
> থেকে মুক্তি পায় নাই!
> যদিও শেষমেশ এ ধুয়াতে
> খুব বেশি লাভ হতো
> না!
>
>
> ২০- যাহোক… যুক্ত ফ্রন্ট
> হবার পর থেকে আরো
> নানাবিধ কিছু গন্ডগোলের ভেতর
> দিয়ে কাহিনী প্রবাহ আগাতে
> গিয়ে হঠাৎ করেই লেখা
> শেষ হয়ে যায়। অর্থাৎ
> হয় লেখক এর পরে
> আর লেখার সুযোগ পাননি
> অথবা তার লেখার খাতা
> পরে হারিয়ে গেছে। … আমার লেখাও বইয়ের
> মতই হঠাৎ করেই শেষ
> হতে চলল!!
>
>
> পুরোটা আবার পড়ে বেশ
> ভালো বুঝতে পারছি যে
> এটা মোটেও রিভিউ গোত্রের
> কিছু হয় নাই! হয়ত
> এটা বইটা পড়ার জন্যে
> পাঠককে আগ্রহীও করে তুলবে না।
> কিন্তু এই বইয়ের রিভিউ
> কিভাবে করা সম্ভব তা
> আমার জানা নাই! রিভিউ
> করতে গেলে বাংলা রচনার
> মত সোজা সোজা কিছু কথা বার্তা
> চলে আসবে যে,
> লেখক অতি মহান নেতা ছিলেন, আজীবন মানুষের তরে কাজ করে গেছেন, জেল খেটেছেন
> বহুবার… তার এই বইটা পরে আমরা অনুপ্রানিত হব, ইত্যাদি
> ইত্যাদি!! তাই ও ধরনের
> কিছু লেখার থেকে বই
> থেকে সরাসরি কিছু ঘটনা
> বা লেখকের উক্তি তুলে
> দেয়াটা বেশি কাজের বলে
> মনে করেছি।
>
>
> তবে বইটা পড়ে ব্যক্তি
> মুজিবকে হয়তো অনেকখানিই উদ্ধার
> করা যায়। তার রাজনৈতিক
> চিন্তা ভাবনা, সংগ্রাম সবকিছুরই
> অনেক ধারনা পাওয়া যায়।
> যে পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য যেই মুসলিম
> লীগে সমর্থন করে আন্দোলন
> করেছিলেন পরে সেই মুসলিম
> লীগের অত্যাচার এবং দুঃশাষনের বিরুদ্ধে
> প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিরোধী
> দল গঠন করলেন এবং
> হয়ে গেলেন মুসলিম লীগ
> আর পাকিস্তানের সর্বোচ্চ শত্রু!
>
>
>
>
>
>


--
---------- --- Please ignore or spam if feel unwanted -------------

-----------------ভালো না লাগলে আমার ঠিকানাটি spam করে দিন -------

*আমার তথ্যসহ ফাইল দেখতে এখানে মাউস ক্লিক করুন CLICK HERE TO SEE MY PUBLIC
FILES* <http://sites.google.com/site/akhtarudduza>


thanks and best regards
Engr Akhtarudduza


------------------------------------

****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration:
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
-Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190Yahoo! Groups Links

<*> To visit your group on the web, go to:
http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/

<*> Your email settings:
Individual Email | Traditional

<*> To change settings online go to:
http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/join
(Yahoo! ID required)

<*> To change settings via email:
mukto-mona-digest@yahoogroups.com
mukto-mona-fullfeatured@yahoogroups.com

<*> To unsubscribe from this group, send an email to:
mukto-mona-unsubscribe@yahoogroups.com

<*> Your use of Yahoo! Groups is subject to:
http://docs.yahoo.com/info/terms/

[mukto-mona] Bangabandhu Mujib



I have pasted one review of Mujib's unfinished auto biography posted in Muktomona.
Asoke Bose

অসমাপ্ত আত্মজীবনী

লিখেছেন: তানভী বিভাগ: ইতিহাস তারিখ: ২৮ শ্রাবণ ১৪২০ (আগস্ট ১২, ২০১৩)

 
বই প্রিভিউঃ
অসমাপ্ত আত্মজীবনী
লেখকঃ- শেখ মুজিবুর রহমান
(পুরো লেখাটাতে আমি একবারও জাতির জনক বা বঙ্গবন্ধু সম্ভাষণ ব্যবহার না করার চেষ্টা করব.. কারন পুরো লেখাটাতেই আমি তাকে শুধুমাত্র বইয়ের লেখক হিসেবেই দেখতে চাই)
বইটা মুলত ১৯৩৮/৩৯ -১৯৫৫ পর্যন্ত সময়কালের ঘটনা প্রবাহ নিয়ে লেখা। এছাড়া শুরুতে লেখকের গ্রামের বাড়ি, জন্মবৃত্তান্ত, বংশ, তরুন কালের কিছু ঘটনা পাঠকের সুবিধার্থে লেখক দিয়েছেন। বইটা ঠিক ডায়েরী না। ১৯৬৭ সালে কারাগারে থাকাকালীন তিনি এই বই লেখা শুরু করেন। তাই এটিকে লেখকের প্রত্যক্ষ স্মৃতিচারনমূলক আত্মজীবনীই বলা যায়। বইটি শ্রুতি লিখন বা অনুলিখনের মাধ্যমে অন্য কারো হাতে লিপিবদ্ধ নয় বরং লেখক নিজেই জেলখানায় বসে নিজের স্মৃতি থেকে বইটি রচনা করেন। তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা শুধুমাত্র প্রকাশের আগে কিছু ভাষাগত সম্পাদনা করেন। এছাড়া তথ্যগত কোন সম্পাদনা করা হয়নি বলেই উল্লেখিত রয়েছে।
১৯৩৮/৩৯-১৯৫৫ এর সময়কার রাজনীতি সম্পর্কে আমি খুব বেশি কিছু জানিনে বলে বইটির রিভিউ করতে গিয়ে আমি সময়কার সরাসরি মাঠ পর্যায়ের রাজনীতির অংশটুকু নিয়ে খুব বেশি কিছু লিখব না। এরচে বরং লেখকের রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা, দেশভাবনা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে লেখকের চিন্তাভাবনা মতামত ছোটখাট কিছু বিতর্ক নিয়ে লেখার চেষ্টা করব। যেহেতু বইয়ের প্রধানতম অংশটুকুই আমি অনেক খানি উহ্য রাখার চেষ্টা করব বলতেসি (যেটা প্রায় অসম্ভব!) তাই এই লেখাটাকে সরাসরি রিভিউ হিসাবে না দেখাই ভালো। তারচে বরং এটাকে আমরা পাঠকের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা হিসাবেই দেখি!
আর লেখার ক্ষেত্রে আমি টানা এক প্যরাগ্রাফে বা গদ্য আকারে লিখে যাওয়ার চেয়ে পয়েন্ট আকারে লিখে যাওয়াটাকে প্রাধান্য দিব। কারন গদ্য আকারে লিখতে গেলে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা আবশ্যক। সে তুলনায় পয়েন্ট আকারে লিখলে আমি যেকোন পয়েন্টেই বইয়ের যেকোন বিষয় তুলে আনতে পারব। তাই সেক্ষেত্রে আরেকটা গুরুত্বপুর্ন কথা বলে দিতে চাই যে, পয়েন্ট গুলাকে আলাদা গুরুত্ব দেবার দরকার নেই। শুধু মাত্র চিহ্নিত করার জন্যই সংখ্যা গুলো ব্যবহার করব। সংখ্যা গুলোর আলাদা কোন গুরুত্ব থাকবে না
যাহোক! এবার শুরু করি!
- প্রথমেই বইটার লেখনি নিয়ে কিছু বলা যাক। খুব জটিল কিছু সময়ের রাজনৈতিক পরিক্রমা আর রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে এক নিবেদিত প্রাণ রাজনীতিবিদের লেখা এই বই। কিন্তু মজার ব্যপার হচ্ছে পুরো বইটা অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় লেখা। কোন ভারী ভারী কথাবার্তা বা উপদেশমূলক বাণী দেয়ার চেষ্টা করেন নাই। অত্যন্ত সহজ ভাষায়, বলা যায় একরকম নির্লিপ্ত আবেগ বর্জিত ভাষায় পুরো ঘটনা প্রবাহ লিখে গেছেন। কিছু জায়গায় ঘটনার প্রয়োজনে কিছু আবেগতাড়িত কথাবার্তা এসেছে। কিন্তু সেটার পরিমান খুব বেশি নয়। আর ভাষা অত্যন্ত সাবলীল, পড়তে কোন অসুবিধা হয় না, বিরক্তও লাগে না
- এবার লেখকের বংশ পরিচয় নিয়ে কিছু কথাবার্তা বলা যাক। কোথায় কবে কিভাবে জন্ম সেসব বিস্তারিত ব্যপারে না যাই। যে কথা বলতে চাই সেটা হচ্ছে বই পড়ার আগ পর্যন্ত আমার একটা ভ্রান্ত ধারনা ছিল। সেটা বেশ অনেকদিন আগে কোথায় যেন একটা লেখা পড়ে হয়েছিল। ধারনাটা হলো এই যে শেখ মুজিবুর রহমান তার পরিবার বংশগত ভাবে পাঠান ছিল। তার পূর্বপুরুষগণ দেশের অধিবাসী ছিলেন না বরং দেশবিভাগের পর তারা পুর্ববাংলায় এসে থাকতে শুরু করেন, এবং এটা নাকি দেশ বিভাগের একটা প্লাস পয়েন্ট (এই অদ্ভুত কথাটা ঠিক কোথায় পড়সিলাম মনে পড়তেসে না!! :/ )! কিন্তু বই পড়ার পর জানতে পারলাম এই যে লেখকের বংশের গোড়াপত্তনকারী শেখ বোরহানউদ্দিন কবে থেকে পুর্ববাংলায় লেখকের জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় এসে বসবাস করতে থাকেন তার কোন আদি ইতিহাস পাওয়া যায় নাযে টুকু স্মৃতি অবশিষ্ট ছিল তা হচ্ছে প্রায় দুইশত বছরের (লেখকের লেখনির সময় থেকে) পুরাতন কিছু দালান। অর্থাৎ ইংরেজ আমলেরও বহু পূর্ব থেকেই তার বংশের বাংলায় বসবাস এবং এর সাথে দেশ বিভাগের কোন সম্পর্ক নাই!
- এই বইয়ে সবচেয়ে বেশি বার যার কথা এসেছে তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। প্রায় পুরো বইয়েই লেখক তাকে শহীদ সাহেব বলে সম্বোধন করে গেছেন। সোহরাওয়ার্দী ছিলেন একাধারে লেখকের রাজনীতিতে আসার প্রেরণা, রাজনৈতিক পরামর্শদাতা এবং পরম শ্রদ্ধার পাত্র। বই পড়ার আগে আমার সোহরাওয়ার্দীকে নিয়েও বেশ ভ্রান্ত ধারনা ছিল যে তিনি পাকিস্তানপন্থী রাজনীতিবিদ ছিলেন, সাধারন মানুষের সাথে তার দূরত্ব ছিল, তিনি চান নাই যে পাকিস্তান ভাঙুক এবং তিনি ছিলেন একজন বিতর্কিত রাজনীতিবিদ। বই পড়ে সোহরাওয়ার্দী সম্পর্কে বেশ অনেকখানি ধারনা পাওয়া যায়। এবং সেটা পজেটিভ ধারনাই। তবে লেখক যেহেতু রাজনৈতিক ভাবে সোহরাওয়ার্দীর দ্বারা অনুপ্রাণীত, তাই লেখায় ঋণাত্নক কথা বার্তা আসবেনা সেটাই স্বাভাবিক। আর যেহেতু শুধুমাত্র ১৯৫৫ পর্যন্তই এই বইয়ের ব্যপ্তিকাল তাই পরের ঘটনা প্রবাহ এবং তাতে সোহরাওয়ার্দীর ভূমিকাও আর জানা যায় না। শুধু উনাকে নিয়ে লিখেই বইয়ের রিভিউ শেষ করে দেয়া যায়! তাই উনাকে নিয়ে বেশি দূর লিখব না……
- লেখকের রাজনৈতিক জীবনের শুরু মোটামুটি ১৯৩৮ সালের দিকে (১৮ বছর বয়স) যখন সোহরাওয়ার্দী তাদের স্কুল পরিদর্শনে আসেন তখন থেকে। তবে সরাসরি তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন ১৯৪১ সালে তার মেট্রিক পরীক্ষার পর থেকে। ৪৩ এর দূর্ভিক্ষের সময় লেখক পুরোপুরি মাঠ পর্যায়ের কর্মী হিসাবে নিজেকে নিয়োজিত করেন। রাজনীতি করতে গিয়ে পরিবার থেকে কখনোই বাধাপ্রাপ্ত হন নাই। বরং তার বাবা তাকে সবসময় উৎসাহ যোগাতেন এবং স্ত্রীর কাছ থেকেও কখনো পিছুটান পেতে হয় নি। তার বাবা তাকে বলেছিলেন,
"বাবা রাজনীতি কর আপত্তি করব না, পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করছ তো সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না। লেখাপড়া না শিখলে মানুষ হতে পারবে না। আর একটা কথা মনে রেখ,' sincerity of purpose and honesty of purpose'থাকলে জীবনে পরাজিত হবানা।"
- এরপর বলতে হয় শেরে বাংলা কে ফজলুল হকের কথা। পুরো বইয়ে লেখক তাকে হক সাহেব বলে সম্বোধন করে গেছেন। আরো অনেকবার ফজলুল হকের কথা লেখায় আসবে। তবে তৎকালীন সময়ে শেরে বাংলার জনপ্রিয়তা কিরুপ ছিল সেটা বোঝাতে একটা কথা উল্লেখ না করলেই নয়।
একদিনের কথা মনে আচ্ছে, আব্বা আমি রাত দুইটা পর্যন্ত রাজনীতির আলোচনা করি। আব্বা আমার আলোচনা শুনে খুশি হলেন। শুধু বললেন, শেরে বাংলা .কে. ফজলুল হক সাহেবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তিগত আক্রমণ না করতে। একদিন আমার মা- আমাকে বলেছিলেন,"বাবা যাহাই কর, হক সাহেবের বিরুদ্ধে কিছুই বলিও না।" শেরে বাংলা মিছি মিছিই 'শেরে বাংলা' হন নাই। বাংলার মাটিও তাকে ভালোবেসে ফেলেছিল। যখনই হক সাহেবের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেছি, তখনই বাধা পেয়েছি। একদিন আমার মনে আছে একটা সভা করছিলাম আমার নিজের ইউনিয়নে, হক সাহেব কেন লীগ ত্যাগ করলেন, কেন পাকিস্তান চাননা এখন? কেন তিনি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির সাথে মিলে মন্ত্রীসভা গঠন করেছেন? এই সমস্ত আলোচনা করছিলাম, হঠাৎ একজন বৃদ্ধ লোক যিনি আমার দাদার খুব ভক্ত, আমাদের বাড়িতে সকল সময়েই আসতেন, আমাদের বংশের সকলকে খুব শ্রদ্ধা করতেন- দাঁড়িয়ে বললেন,"যাহা কিছু বলার বলেন, হক সাহেবের বিরুদ্ধে কিছুই বলবেন না। তিনি যদি পাকিস্তান না চান, আমরাও চাই না। জিন্নাহ কে? তার নামও তো শুনি নাই। আমাদের গরিবের বন্ধু হক সাহেব।" কথার পর আমি অন্যভাবে বক্তৃতা দিতে শুরু করলাম। সোজাসুজিভাবে আর হক সাহেবকে দোষ দিতে চেষ্টা করলাম না। কেন পাকিস্তান আমাদের প্রতিষ্ঠা করতেই হবে তাই বুঝালাম। শুধু এইটুকু না, যখনই হক সাহেবের বিরুদ্ধে কালো পতাকা দেখাতে গিয়েছি, তখনই জনসাধারণ আমাদের মারপিট করেছে। অনেক সময় ছাত্রদের নিয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি, মার খেয়ে
ছিল পুর্ব বাংলায় .কে. ফজলুল হকের জনপ্রিয়তা
- ফাঁকে আরেকটা কথা বলে নেই। লেখক পুরো বইতেই এরকম অমায়িক আচরণ বজায় রেখেছেন। তার সাথে অনেক সময়ই অনেকের মতের মিল হয় নাই, অনেকের সাথেই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। কিন্তু কারো নামেই তিনি পুরো বইয়ে বাজে কথা বলেননি। কোন নেগেটিভ কথা বলতে হলেও আগে যথাযোগ্য শ্রদ্ধা আর সম্মান দেখিয়ে যথেষ্ট পরিমান ব্যখ্যা করে তবেই বলেছেন। যেমন উপরের পয়েন্টের কাহিনীটুকু লেখকের না দিলেও চলত! পাবলিকের কাছে দাবড়ানি দৌড়ানি খাইসেন সে কথা এভাবে না বললেও কোন ক্ষতি ছিল না। কিন্তু তিনি হক সাহেবের প্রতি সম্মান শ্রদ্ধার যায়গাটুকু বোঝানোর জন্যই এই কাহিনীটুকু লিখে দিয়েছেন
- একটা মজার ব্যপার এই যে পাকিস্তান আন্দোলনের সাথে লেখক ওতপ্রত ভাবে জড়িত ছিলেন, পাকিস্তান গড়ার লক্ষ্য নিয়েই তার রাজনৈতিক জীবন শুরু কিন্তু পুরা বইয়ের কোথাও পাকিস্তানের জনক, পাকিস্তান আন্দোলনের নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সম্পর্কে কোন কথা নাই! অল্প যা- কিছু আছে তা- সরাসরি লেখকের কথা না এবং পজেটিভ কিছু না। যেমন শেরে বাংলা মুসলিম লীগ ছেড়ে দেয়ার পর মুজিব নিজে একবার উনার কাছে গিয়েছিলেন উনাকে মুসলিম লীগে ফেরত আসার জন্য। তখন শেরে বাংলা মুজিব সহ আরো যে কয়জন সাথে গিয়েছিল তাদের নিয়ে খেতে বসে বলেন," আমি কি লীগ ত্যাগ করেছি? না, আমাকে বের করে দেয়া হয়েছে? জিন্নাহ সাহেব আমাকে আমার জনপ্রিয়তাকে সহ্য করতে পারেন না। আমি বাঙালি মুসলমানদের জন্য যা করেছি জিন্নাহ সাহেব সারা জীবনে তা করতে পারবেন না। বাঙালিদের স্থান কোথাও নাই, আমাকে বাদ দিয়ে নাজিমুদ্দীনকে নেতা করার ষড়যন্ত্র।" কথায় কথায় তিনি আরো বলেন,"১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব কে করেছিল, আমিই তো করেছিলাম! জিন্নাহকে চিনত কে?" এতে বোঝা যায় যে জনসাধারনের সাথে জিন্নাহের তেমন কোন সংযোগ ছিল না। এমনকি মুজিব নিজেও পাকিস্তান দাবীর প্রেক্ষিতে সোহরাওয়ার্দীকে নেতা মেনেই আন্দোলন করে গেছেন, জিন্নাহকে নিয়ে তার মাথাব্যথা ছিল বলে পুরো বইয়ে একবারও মনে হয় নাই!
- সোহরাওয়ার্দীকে নিয়ে লেখকের আরেকটা ভালো উক্তি তুলে দেই
শহীদ সাহেব ছিলেন উদার, নীচতা ছিলনা, দল মত দেখতেন না, কোটারি করতে জানতেন না, গ্রুপ করারও চেষ্টা করতেন না। উপযুক্ত হলেই তাকে পছন্দ করতেন এবং বিশ্বাস করতেন। কারণ, তার আত্মবিশ্বাস ছিল অসীম। তার সাধুতা,নীতি, কর্মশক্তি দক্ষতা দিয়ে মানুষের মন জয় করতে চাইতেন। জন্য তাকে বারবার অপমানিত পরাজয়বরণ করতে হয়েছে। উদারতা দরকার, কিন্তু নীচ অন্তঃকরণের ব্যক্তিদের সাথে উদারতা দেখালে ভবিষ্যতে ভালর থেকে মন্দই বেশি হয়, দেশের জনগণের ক্ষতি হয়
- বাঙালির স্বভাব নিয়ে লেখকের একখানা কড়া উক্তি শেয়ার না করে পারছি না
আমাদের বাঙালির মধ্যে দুইটা দিক আছে। একটা হল 'আমরা মুসলমান, আরেকটা হল, আমরা বাঙালি।' পরশ্রীকাতরতা এবং বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের রক্তের মধ্যে রয়েছে। বোধহয় দুনিয়ার কোন ভাষায়ই এই কথাটা পাওয়া যাবে না,'পরশ্রীকাতরতা' পরের শ্রী দেখে যে কাতর হয় তাকে 'পরশ্রীকাতর' বলে। ঈর্ষা, দ্বেষ সকল ভাষায়ই পাবেন, সকল জাতির মধ্যেই কিছু কিছু আছে, কিন্তু বাঙালিদের মধ্যে আছে পরশ্রীকাতরতা। ভাই, ভাইয়ের উন্নতি দেখলে খুশি হয় না। এই জন্যই বাঙালি জাতির সকল রকম গুণ থাকা সত্ত্বেও জীবনভর অন্যের অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। সুজলা, সুফলা বাংলাদেশ সম্পদে ভর্তি। এমন উর্বর জমি দুনিয়ার খুব অল্প দেশেই আছে। তবুও এরা গরিব। কারণ যুগ যুগ ধরে এরা শোষিত হয়েছে নিজের দোষে। নিজকে এরা চেনে না, আর যতদিন চিনবে না এবং বুঝবে না ততদিন এদের মুক্তি আসবে না অনেক সময় দেখা গেছে,একজন অশিক্ষিত লোক লম্বা কাপড়,সুন্দর চেহারা, ভাল দাড়ি, সামান্য আরবি ফার্সি বলতে পারে, বাংলাদেশে এসে পীর হয়ে গেছে। বাঙালি হাজার হাজার টাকা তাকে দিয়েছে একটু দোয়া পাওয়ার লোভে। ভাল করে খবর নিয়ে দেখলে দেখা যাবে লোকটা কলকাতার কোন ফলের দোকানের কর্মচারী অথবা ডাকাতি বা খুনের মামলার আসামী। অন্ধ কুসংস্কার অলৌকিক বিশ্বাসও বাঙালির দুঃখের আর একটা কারন
১০- লেখক খুব সুন্দর করে তার ভ্রমন কাহিনী লিখে গেছেন। পুরো বইয়ে তিন চারবার তার বিভিন্ন স্থানে ভ্রমনের বিবরন এসেছে। উনি খুব গুছিয়ে বেশ কিছু খুটিনাটি সহ ভ্রমন কাহিনী গুলো লিখেছেন। এক দুটোর কথা পরের দিকে বলা যেতে পারে
১১- ভাষা আন্দোলনের সময়ে প্রবেশ করছি আমরা। সরাসরি লেখকের লেখনি থেকে তুলে দেই,
বাংলা পাকিস্তানের শতকরা ছাপ্পান্ন ভাগ লোকের মাতৃভাষা। তাই বাংলাই একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হওয়া উচিত। তবুও আমরা বাংলা উর্দু দুইটা রাষ্ট্রভাষা করার দাবি করেছিলাম। পাঞ্জাবের লোকেরা পাঞ্জাবি ভাষা বলে, সিন্ধুর লোকেরা সিন্ধি ভাষায় কথা বলে, সীমান্ত প্রদেশের লোকেরা পশতু ভাষায় কথা বলে, বেলুচরা বেলুচি ভাষায় কথা বলে। উর্দু পাকিস্তানের কোন প্রদেশের ভাষা নয়, তবুও যদি পশ্চিম পাকিস্তানের ভায়েরা উর্দু ভাষার জন্য দাবি করে, আমরা আপত্তি করব কেন? যারা উর্দু ভাষা সমর্থন করে তাদের একমাত্র যুক্তি হল উর্দু 'ইসলামিক ভাষা' উর্দু কি করে যে ইসলামিক ভাষা হল আমরা বুঝতে পারলাম না।
দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা বিভিন্ন ভাষায় কথা বলে। আরব দেশের লোকেরা আরবি বলে। পারস্যের লোকেরা ফার্সি বলে, তুরষ্কের লোকেরা তুর্কি ভাষা বলে, ইন্দোনেশিয়ার লোকেরা ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় কথা বলে, মালয়শিয়ার লোকেরা মালয় ভাষায় কথা বলে, চীনের মুসলমানরা চীনা ভাষায় কথা বলে। সম্বন্ধে অনেক যুক্তিপুর্ণ কথা বলা চলে। শুধু পূর্ব পাকিস্তানের ধর্মভীরু মুসলমানদের ইসলামের কথা বলে ধোঁকা দেওয়া যাবে ভেবেছিল, কিন্তু পারে নাই।
১২- এই ঘটনা প্রবাহে এবার দৃশ্যপটে মাওলানা ভাসানীর আগমন। সম্ভবত ১৯৪৮ মাওলানা ভাসানী আসাম ছেড়ে বাংলায় চলে আসেন (বইয়ে কোন নির্দিস্ট সময় বলা নেই)
১৩- আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠাকালীন ঘটনা। ১৯৪৯ সালের সম্ভবত জুন-জুলাইয়ের দিকের ঘটনা। লেখক তখন জেলে। এর মধ্যেই মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে মানুষের অসন্তোষ বেড়ে গেছে। নতুন বিরোধী রাজনৈতিক দল সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। তখন ২৩ জুন ঢাকায় পুরানো লীগ কর্মী অন্য অনেক নেতা কর্মীদের সম্মেলন ডাকা হয়। শেরে বাংলা .কে. ফজলুল হক, ভাসানী, আল্লামা মাওলানা রাগীব আহসান, এমএলএ দের ভিতর থেকে জনাব খয়রাত হোসেন, বেগম আনোয়ারা খাতুন, আলী আহমদ খান হাবিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে ধনু মিয়া এবং বিভিন্ন জেলার অনেক প্রবীণ নেতাও যোগ দিয়েছিলেন সম্মেলনে। তাদের সকলের সম্মতিক্রমে নতুন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয় যার নাম দেয়া হয় 'পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ' এই প্রতিষ্ঠার কাহিনী বলার আমার কোন দরকার নাই। তবে যে কথার অবতারনা করার জন্য পয়েন্ট সেটাতে আসি। জেলে বসে দল প্রতিষ্ঠার খবর পেয়ে লেখকের মানসিক প্রতিক্রিয়া ছিল এমন,
আমি মনে করেছিলাম, পাকিস্তান হয়ে গেছেসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের দরকার নাই। একটা অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হবে, যার একটা সুষ্ঠু ম্যানিফেস্টো থাকবে। ভাবলাম, এখনো সময় আসে নাই, তাই বাইরে যারা আছেন তারা চিন্তা ভাবনা করেই করেছেন।
১৪- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কামারুজ্জামান, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী আর খন্দকার মোশতাক আহমেদ এর কথা পুরো বইয়ে এসেছে আলাদা ভাবে একবার কি দুবার। যার অর্থ দাঁড়ায় এই বইয়ের সময়কাল পর্যন্ত (১৯৫৫) এই কজনের সাথে লেখকের সরাসরি সম্পর্ক ছিল না। উনারা লেখকের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হন আরো পরে। আমি পুরো বইয়ে আকুপাকু করে তাজউদ্দীনের নাম খুঁজে গেছি। কিন্তু ঘটনাপ্রবাহে লেখকের সাথে তিনি ছিলেন না বলে বইয়েও তাঁর কথা খুব একটা আসেনি। পুরো বইয়ের মধ্যে শুধু এই ব্যপারটাই আমার জন্য খানিক হতাশাজনক ছিল!! তবে যে একটা ঘটনা এসেছে তা- অন্যদের তুলনায় আলাদা এবং স্পেশাল ছিল
১৫- এইটুকু একটা বইয়ের প্রায় অর্ধেক অংশ লেখক জেলে পার করেছেন! এই বই লিখেছেনও জেলে বসে! পুরো বইয়ে কয়বার তার জেলে যাবার কথা আছে তা মনে রাখার দুঃসাহস করতে পারিনি! এই জেল জীবন রাজনৈতিক জীবনের কারনে পরিবারকে সময় দিতে পেরেছেন খুব অল্পই। প্রেক্ষিতে একটা ঘটনা উল্লেখ না করলেই না। বইয়ের ব্যাক কভারে ঘটনাটা আলাদা ভাবে দেয়া আছে,
একদিন সকালে আমি রেণু (লেখকের স্ত্রী) বিছানায় বসে গল্প করছিলাম। হাচু(হাসিনা) কামাল নিচে খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে আসে আর আব্বা আব্বা বলে ডাকে। কামাল চেয়ে থাকে। এক সময় কামাল হাচিনাকে বলছে,"হাচু আপা হাচু আপা তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি।" আমি আর রেণু দুজনেই শুনলাম। আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে যেয়ে ওকে কোলে নিয়ে বললাম,"আমি তো তোমারও আব্বা।" কামাল আমার কাছে আসতে চাইত না। আজ গলা ধরে পড়ে রইল। বুঝতে পারলাম, এখন আর সহ্য করতে পারছে না। নিজের ছেলেও অনেক দিন না দেখলে ভুলে যায়! আমি যখন জেলে যাই তখন ওর বয়স মাত্র কয়েক মাস
১৬- লেখকের ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চীনে শান্তি সম্মেলনে যোগদান এবং পুরো চীন ভ্রমন নিয়ে খুব সুন্দর ভ্রমন কাহিনী লেখক লিখে গেছেন। লিখতে গেলে পুরোটাই তুলে দিতে হয়শুধু একটা ছোট ঘটনা তুলে দেই। ২রা অক্টোবর শান্তি সম্মেলনের দিনে। ৩৭৮জন সদস্য সাইত্রিশটা দেশ থেকে এসেছে। বিভিন্ন দেশের নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন। পূর্ব পাকিস্তান থেকে লেখক এবং আতাউর রহমান খান বক্তব্য দিলেন। লেখক বাংলায় বক্তৃতা করলেন। আতাউর রহমান খান সেটা ইংরেজি করে দিলেন। নিয়ে লেখক বলছেন,
ইংরেজি থেকে চীনা,রুশ স্পেনিশ ভাষায় প্রতিনিধিরা শুনবেন। কেন বাংলায় বক্তৃতা করব না? ভারত থেকে মনোজ বসু বাংলায় বক্তৃতা করেছেন। পূর্ব বাংলার ছাত্ররা জীবন দিয়েছে মাতৃভাষার জন্য। বাংলা পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু লোকের ভাষা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে না জানে এমন শিক্ষিত লোক চীন কেন দুনিয়ায় অন্যান্য দেশেও আমি খুব কম দেখেছি। আমি ইংরেজিতে বক্তৃতা করতে পারি। তবু আমার মাতৃভাষায় বলা কর্তব্য। আমার বক্তৃতার পরে মনোজ বসু ছুটে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, "ভাই মুজিব, আজ আমরা দুই দেশের লোক, কিন্তু আমাদের ভাষাকে ভাগ করতে কেউ পারে নাই। আর পারবেও না। তোমরা বাংলা ভাষাকে জাতীয় মর্যাদা দিতে যে ত্যাগ স্বীকার করেছ আমরা বাংলা ভাষাভাষী ভারতবর্ষের লোকেরাও তার জন্য গর্ব অনুভব করি।
এই সম্মেলনেই লেখকের সাথে দেখা হয় রুশ লেখক অ্যাসিমভের (যা মনে হল আইজাক অ্যাসিমভের কথাই লেখক বলসেন! ) আরো দেখা হয় তুরস্কের কবি নাজিম হিকমতের সাথে
১৭- চীন আর চীন ভ্রমন নিয়ে লেখার শেষ পর্যায়ে লেখকের সমাজতন্ত্রের প্রতি অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে। লেখক বলেন,
আমি নিজে কমিউনিস্ট নই। তবে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে বিশ্বাস করি না। একে আমি শোষণের যন্ত্র হিসাবে মনে করি। এই পুঁজিপতি সৃষ্টির অর্থনীতি যতদিন দুনিয়ায় থাকবে ততদিন দুনিয়ার মানুষের উপর থেকে শোষণ বন্ধ হতে পারে না। পুঁজিপতিরা নিজেদের স্বার্থে বিশ্বযুদ্ধ লাগাতে বদ্ধ পরিকর নতুন স্বাধীনতাপ্রাপ্ত জনগণের কর্তব্য বিশ্ব শান্তির জন্য সংঘবদ্ধভাবে চেষ্টা করা। যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার শৃঙ্খলে যারা আবদ্ধ ছিল , সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যাদের সর্বস্ব লুট করেছে- তাদের প্রয়োজন নিজের দেশকে গড়া জনগণের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক মুক্তির দিকে সর্বশক্তি নিয়োগ করা। বিশ্বশান্তির জন্য জনমত সৃষ্টি করা তাই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে
১৮- এরপরেই আসে ১৯৫৪ এর নির্বাচন যুক্তফ্রন্ট। ১৯৫৩তে কে ফজলুল হক সরাসরি আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। আওয়ামীলীগে থাকা এক পক্ষ তখন যুক্তফ্রন্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র করতে থাকল। ভাসানী স্পষ্ট ভাষায় লেখক কে জানিয়ে দেন যে হক সাহেব সরাসরি আওয়ামীলীগে আসলে তবেই তাকে গ্রহন করা হবে, অন্য দল করলে তার সাথে যুক্তফ্রণ্ট করা চলবে না। ঘটনার পরবর্তী প্রবাহ বর্ননা করতে গিয়ে লেখক বেশ কয়েকবার ভাসানীর কিছু কাজের উপর বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। প্রথমে যুক্তফ্রন্টের তীব্র বিরোধিতা করলেও পরে ভাসানী সোহরাওয়ার্দী বা লেখকের মতামত না নিয়েই যুক্তফ্রন্ট করার জন্য ফজলুল হকের সাথে একমত হয়ে দস্তখত করে ফেলেন। এরপর কিছু অযাচিত অদ্ভুৎ পরগাছা ধরনের দলের উদ্ভব ঘটেযারা বিভিন্ন ভাবে যুক্তফ্রন্টের সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে
১৯- সেই পাকিস্তান আমল থেকেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একই ধুয়া চলে আসছে! তখন ধুয়া তুলত মুসলিম লীগ! সে বেলায় দলের নামের সাথে মুসলিম যুক্ত থাকলেও আওয়ামী মুসলিম লীগ 'ভারতের চর', হিন্দুদের দালাল এসব অপবাদ থেকে মুক্তি পায় নাই! যদিও শেষমেশ ধুয়াতে খুব বেশি লাভ হতো না!
২০- যাহোকযুক্ত ফ্রন্ট হবার পর থেকে আরো নানাবিধ কিছু গন্ডগোলের ভেতর দিয়ে কাহিনী প্রবাহ আগাতে গিয়ে হঠাৎ করেই লেখা শেষ হয়ে যায়। অর্থাৎ হয় লেখক এর পরে আর লেখার সুযোগ পাননি অথবা তার লেখার খাতা পরে হারিয়ে গেছে।আমার লেখাও বইয়ের মতই হঠাৎ করেই শেষ হতে চলল!!
পুরোটা আবার পড়ে বেশ ভালো বুঝতে পারছি যে এটা মোটেও রিভিউ গোত্রের কিছু হয় নাই! হয়ত এটা বইটা পড়ার জন্যে পাঠককে আগ্রহীও করে তুলবে না। কিন্তু এই বইয়ের রিভিউ কিভাবে করা সম্ভব তা আমার জানা নাই! রিভিউ করতে গেলে বাংলা রচনার মত সোজা সোজা কিছু কথা বার্তা চলে আসবে যে, লেখক অতি মহান নেতা ছিলেন, আজীবন মানুষের তরে কাজ করে গেছেন, জেল খেটেছেন বহুবারতার এই বইটা পরে আমরা অনুপ্রানিত হব, ইত্যাদি ইত্যাদি!! তাই ধরনের কিছু লেখার থেকে বই থেকে সরাসরি কিছু ঘটনা বা লেখকের উক্তি তুলে দেয়াটা বেশি কাজের বলে মনে করেছি
তবে বইটা পড়ে ব্যক্তি মুজিবকে হয়তো অনেকখানিই উদ্ধার করা যায়। তার রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা, সংগ্রাম সবকিছুরই অনেক ধারনা পাওয়া যায়। যে পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য যেই মুসলিম লীগে সমর্থন করে আন্দোলন করেছিলেন পরে সেই মুসলিম লীগের অত্যাচার এবং দুঃশাষনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিরোধী দল গঠন করলেন এবং হয়ে গেলেন মুসলিম লীগ আর পাকিস্তানের সর্বোচ্চ শত্রু!

 




__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___