কাজী মশহুরুল হুদা :সারা বিশ্ব আজ ট্রামোফোবিয়ায় ভুগছে। ট্রাম্প অফিসিয়ালী আমেরিকায় রেসিজস চালু করলেন। ধীর পদক্ষেপে তিনি ইসলামোফোবিয়া প্রকাশ করলেন। ৭টি মুসলিম দেশের মানুষদের উপর নিষেধাজ্ঞা তার প্রথম পদক্ষেপ। রেসিজম বা বৈসম্যবাদের দিক থেকে ট্রাম্প আমেরিকাকে একশ বছর পিছিয়ে দিলো। ধর্মকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিল। তার ঘোষণার সাথে সাথে ট্রেক্সাসে একটি মসজিদে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তার প্রভাব কানাডাতেও পড়েছে। রেডনেক আমেরিকান মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মুসলিম হটাও আন্দোলন শুরু হয়ে পড়েছে শ্বেতাঙ্গ এলাকায়। আমেরিকান মুসলিম ভীতু ও শঙ্কার মধ্যে বসবাস করছে। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলেস বা নিউ ইয়র্ক সিটিতে তার উত্তাপ বোঝা যায় না। কারণ ইমিগ্রেণ্ট অধ্যুষিত এলাকা। সারা বিশ্বে ট্রাম্প একজন বৈষম্যবাদী। সে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যাক্তি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। তার কথাবার্তা ও কাজ কর্মে হিটলারের ছায়া খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। মুসলিম ব্যাণ্ড আমেরিকার গঠনতন্ত্রের বিপরীতমূখী আইন বিধায় এটর্নি জেনারেল প্রেসিডেন্টের আদেশকে বাতিল ঘোষণা করলে ট্রাম্প দেশপ্রেম পরীপন্থী হিসেবে চাকুরিচ্যুত করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে-ট্রাম্পের এই সকল পন্থা অবলম্বনের জন্য কি ট্রাম্পই দায়ী, নাকি স্বয়ং মুসলিম সম্প্রদায়। নাকি তৃতীয় পক্ষ?
বিষয়টি বিশ্লেষণের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। ট্রাম্প মুসলিমদের প্রতি যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা টেররিষ্ট আক্রমন থেকে দেশকে প্রতিরক্ষার পরিকল্পনা বলে জানিয়েছেন। বিশেষত : বর্তমান সময়ের আতঙ্ক আইসিস। যদিও ট্রাম্প নিজেও ভালো করে জানেন, আইসিস তৃতীয় পক্ষের সৃষ্টি। তাই তিনি বলেছিলেন, আইসিস ইসরাইল ছাড়া সকল দেশেই হামলা করছে।
এখন প্রশ্ন হতে পারে তৃতীয় পক্ষ কারা? তৃতীয় পক্ষ হলো- কতিপয় গ্লোবালিষ্ট বিলিয়নিয়ার জায়োনিষ্ট। যারা আইসিসের মত সন্ত্রাসী দল। কট্টর মুসলিমদেরকে প্রভাবিত করে সারা বিশ্বে ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। যাতে ইসলাম ও মুসলিমদের সম্পর্কে বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টি হয়। বিশ্বে অস্থিরতা বিরাজ করে। যাতে করে ওইসব কতিপয় গ্লোবালিষ্ট বিলিয়নিয়ার ফ্রি ট্রেড, বিজনেস করে মুনাফা লুটতে পারে। ইসরাইল-প্যালেস্টাইন সম্পর্ক তাদের একটি হাতিয়ার। আইসিসের মত দলকে দিয়ে প্রকৃত ইসলামকে হাইজ্যাক করিয়ে সম্প্রদায়কে মূলধারার মানুষদের কাছে ঘৃণার পাত্র হিসেবে চিহ্নিত করিয়েছে। এ জন্য অতীতের আমেরিকান প্রশাষণই দায়ী। গ্লোবালিষ্টগণ পলিটিশিয়ানদের পকেটজাত করে ইসলামিক দেশসমূহে বিভিন্ন ধরণের অরোজগতা সৃষ্টি করেছে। হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। অন্যায়ভাবে ইসরাইলকে সমর্থন জানিয়ে প্যালেষ্টাইনকে দাবিয়ে রেখে পশ্চিমাদের উপর ঘৃণা সৃষ্টি করিয়েছে। অপর দিকে মুসলিম সম্প্রদায় কারণকে অনুসন্ধান না করে ফলাফলকে প্রাধান্য দিয়ে সংখ্যালঘুদের উপর অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচার করেছে।
ট্রাম্প কর্তৃক বর্তমান ঘটনাবলী মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আবারও একটি ওয়েক আপ কল। যারা ইসলামকে হাইজ্যাক করেছে তাদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেনি। সংখ্যালঘুদেরকে নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ হয়েছে। যারা ইসলামের নামে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ট্রাম্প উল্লেখ করে বলেছেন ইসলামিক দেশ সমূহ খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ হয়েছে। ফলে ট্রাম্প এইসব কে পুঁজি করে ইসলামের বিরুদ্ধে আমেরিকার বেশ কিছু মানুষকে নিজের ছাতার তলে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
ক্ষমতা পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে দেশে ও বিশ্বকে তোলপাড় করে তুলেছেন। ইতিপূর্বে আমেরিকার ইতিহাসে ২য় প্রেসিডেন্ট নির্বাহী আদেশে নিজস্ব চিন্তাধারাকে প্রয়োগ করে ছিলেন এবং পরবর্তী হিসেবে ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একই কাজ করলেন।
সিভিল রাইটস গ্রুপ সারা দেশে আন্দোলন শুরু করে দিয়েছে। দেশের সাংগঠনিক কাঠামোতে মানুষের গণতারিন্ত্রক অধিকার এবং বাক স্বাধীনতা খর্ব করার প্রতিবাদে বেশ কিছুদিন ধরে চলছে অরাজগতা। ট্রাম্পতার একনায়কতান্ত্রিক চিন্তা, ধর্মীয় বৈসম্যের প্রতি ঘৃণার বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছেন। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে এধারা অব্যাহত থাকবে। এই মুহুর্তে আমেরিকান মুসলিমদেরকে শান্ত ও দেশাত্মবোধে উদ্ভুত থাকতে হবে। যেকোন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের গন্ধ পেলে তা পুলিশের নজরে আনতে হবে। এই ঘটনায় দুটি প্রক্রিয়ায় মুসলিমদের উপর হামলা সৃষ্টি হতে পারে। এক, ট্রাম্পের কার্যক্রমে টেররিস্ট গ্রুপ প্রতিহিংসার চ্যালেঞ্জ হিসেবে দুর্ঘটনার পরিকল্পনা করতে পারে। উভয় পরিকল্পনাই আমেরিকান মুসলিমদের জন্য বিপদজনক। অতএব, মুসলমানদেরকে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে (পুলিশের সাথে) যে কোন সন্দেহ মূলক আচরণ বা কার্যক্রম জানাতে হবে। দেশে এখন ভিন্ন আবহাওয়া বইছে। যাকে ক্রেজি বলে সম্বোধন করতে চাইছে।
প্রবাদ বের হয়েছে- 'আর ইউ ট্রাম্প?'
http://khabor.com/archives/100348
Quebec mosque attack: Student Alexandre Bissonnette charged
Canadian police have charged Alexandre Bissonnette, a French-Canadian student over the fatal shooting of six Muslim worshippers at a mosque in Quebec.
http://www.bbc.com/news/world-us-canada-38805163