Banner Advertiser

Monday, December 23, 2013

[mukto-mona] NO WONDER THEY ACT LIKE DOG !!!!!



মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত,কারন মানুষের আছে মনুষ্যত্ব ও বিবেক।আর যদি কোন মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও বিবেক না থাকে তখন সে পশুর সমতুল্য।তাহলে কি পশুর ন্যায় আচরন হওয়ায় পাকিস্তানের দেশ ম্যাপ ও শেষ পর্যন্ত পশুর রুপে গিয়ে থেমেছে।
সবাই একটু ভালভাবে লক্ষ্য করুন তো পশুর সাথে কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় কিনা।
মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত,কারন মানুষের আছে মনুষ্যত্ব ও বিবেক।আর যদি কোন মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও   বিবেক না থাকে তখন সে পশুর সমতুল্য।তাহলে কি পশুর ন্যায় আচরন হওয়ায় পাকিস্তানের দেশ ম্যাপ ও শেষ পর্যন্ত পশুর রুপে গিয়ে থেমেছে।  সবাই একটু ভালভাবে লক্ষ্য করুন তো পশুর সাথে কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় কিনা।


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

[mukto-mona] Fw: [Bangladesh-Zindabad] The News!





On Monday, December 23, 2013 10:05 AM, Gonojagoron Moncho <projonmochottar@gmail.com> wrote:
 
alt





__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

[mukto-mona] [মুক্তমনা বাংলা ব্লগ] 'বৌদ্ধশাস্ত্রে পুরুষতন্ত্র (পর্ব ০৩)'

মুক্তমনা বাংলা ব্লগ has posted a new item,
'বৌদ্ধশাস্ত্রে পুরুষতন্ত্র
(পর্ব ০৩)'

কুণাল জাতকের পর এইবার আমরা
আলোচনা করবো ৫৪৫ নম্বর জাতক যার
নাম বিদূরপণ্ডিত জাতক।
বিদূরপণ্ডিত জাতকের মূল
চরিত্রে আছেন মহাপণ্ডিত
বিদূর। এই মহাপণ্ডিত মহাপুরুষ
বিদূরের ছিল মাত্র এক সহস্র
ভার্যা এবং শপ্তশত গণিকা। যৌন
সম্পর্কে অত্যাধিক অভিজ্ঞ
পণ্ডিত বিদূরের কাছে আমরা
জানতে পারি যৌন বিজ্ঞান
সম্পর্কে। পণ্ডিত বিদূরের মতে
অত্যাধিক নারীর সহিত মিলনে
পুরুষের বীর্যক্ষয় [...]

You may view the latest post at
http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=38690

You received this e-mail because you asked to be notified when new updates are
posted.

Best regards,
মুক্তমনা বাংলা ব্লগ ।



------------------------------------

****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration:
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
-Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190Yahoo Groups Links

<*> To visit your group on the web, go to:
http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/

<*> Your email settings:
Individual Email | Traditional

<*> To change settings online go to:
http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/join
(Yahoo! ID required)

<*> To change settings via email:
mukto-mona-digest@yahoogroups.com
mukto-mona-fullfeatured@yahoogroups.com

<*> To unsubscribe from this group, send an email to:
mukto-mona-unsubscribe@yahoogroups.com

<*> Your use of Yahoo Groups is subject to:
http://info.yahoo.com/legal/us/yahoo/utos/terms/

[mukto-mona] Fw: BD's honest elected representatives!



Forwarded as received.

- AR

----- Forwarded Message -----
From: Reaz Talukder <reaztalukder@hotmail.com>
To: Anisur rahman <anisur.rahman@btinternet.com>; Kamal Siddiqqui <ksidiqui@yahoo.com>; Farhad Hossain <farhad@manchester.ac.uk>; abdul quddus <quddus@googlemail.com>
Sent: Monday, 23 December 2013, 19:47
Subject: FW: Interesting article

সহজিয়া কড়চা

বঙ্গীয় হলফনামা

সৈয়দ আবুল মকসুদ | আপডেট: ০০:০৪, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৩ প্রিন্ট সংস্করণ
তুলিগণতন্ত্রের সঙ্গে হলফনামার কোনো সম্পর্ক আগে ছিল না। এই শব্দটিই আগে ভোটাররা শোনেননি। কেউ, যদি তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হন, তাঁর সম্পদ ও অর্থকড়ি মাসে কত গুণ বাড়বে তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তা জানার অধিকার কারও নেই। বিশেষ করে গরিব ভোটারদের, যাঁদের দুবেলা ভাত বা রুটি জোটে না, তাঁদের জানার প্রয়োজন কী?
মানবেতিহাসের সবচেয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রার্থীদের হলফনামার সচিত্র প্রতিবেদন কয়েক দিন যাবৎ কাগজে বেরোচ্ছে। পাঁচ বছরে কারও আয় বেড়েছে ৩৫১ গুণ। কারও ১০৭ গুণ। কারও ৬৭ গুণ। কারও বা ৪০ গুণ। কেউ পাঁচ কোটি টাকায় ৭০ একর জমি কিনেছেন। স্ত্রীর নামে শেয়ার আছে এক কোটি ২২ লাখ টাকার। এক কোটি ১৮ লাখ টাকায় দুটি গাড়িও কিনেছেন। পাঁচ বছর আগে ছিল একজনের এক কোটি ৪৪ লাখ টাকা ও সাড়ে পাঁচ একর জমি। এখন ১৪৬ একর জমি ও পাঁচ কোটি টাকা। প্রার্থীদের ধর্মপত্নীরা পাঁচ বছরে ধনী হয়েছেন গ্রিক ধনকুবের ওনাসিসের স্ত্রী জ্যাকুলিন কেনেডির চেয়ে বেশি। বিল গেটসের সম্পদ প্রতি পাঁচ বছরে কত গুণ বাড়ে তা বলতে পারব না, তবে এ হারে নিশ্চয়ই নয়।
কী হয়নি তাঁদের পাঁচটি বছরে? প্রাসাদের মতো বাড়ি, পূর্বাচল প্রভৃতিতে প্লট (নিজের ও স্ত্রীর নামে), বহু ফ্ল্যাট, কৃষিজমি, দোকান, কোম্পানির শেয়ার, ব্যাংকের গচ্ছিত অর্থ জলোচ্ছ্বাসের মতো ফুলে উঠেছে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বহু রকম, কোটি কোটি টাকার গাড়ি, কয়েক কেজি সোনাদানা। কী নয়? গণতন্ত্র সব দেয়।
তাঁদের নিজেদের হলফনামার সংবাদ কাগজে পড়ে অনেকে অট্টহাসিতে ফেটে পড়েছেন। এতে বেইজ্জতির কিছু নেই। গৌরবের কথা। হলফনামায় আছে অর্থ-সম্পদের অংশমাত্র। এত বোকা তাঁরা নন। বরং দেশবাসীকে বোকা বানিয়ে দিয়েছেন। খবর পড়ে বিচলিত শাশুড়ি ফোন করেন। হলফনামাওয়ালা বলেন, মা/আম্মা, কিচ্ছু ভাববেন না। এ তো আমার আর আপনার মেয়ের সম্পদের পাঁচ-সাত ভাগের এক ভাগ। বাকি আমার আর আপনার মেয়ের নামে-বেনামে আছে। তা ছাড়া হলফ তো করেছি দেশের ভেতরের সম্পদের। দেশের বাইরে বাড়ি, ফ্ল্যাট, ডলার, ইউরো, পাউন্ড স্টার্লিং যা আছে, তা আলাদা।
'তা বাবা, না হয় আর একটু কমাইয়া দিতা', শাশুড়ি মায়ের উদ্বেগ যায় না।
'আপনি বুঝবেন না। এটা না দিয়া উপায় ছিল না। ভবিষ্যতে ওই এগারো-টেগারোর মতো যদি কোনো বালা-মুসিবত আসে, এই হলফ কাজে লাগব। দুদক বেকায়দায় ফেলতে পারব না। ওই কাজ সাইরা রাখলাম।'
বাংলাদেশি গণতন্ত্র রাষ্ট্রের চার মূলনীতি ও চেতনা বাস্তবায়নের গণতন্ত্র। এ গণতন্ত্র হলো বাঙালি জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র। ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র। সর্বোপরি সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র। ক্ষমতার পাঁচ বছরেই এসএসসি পাস মাননীয় কী করে এত সম্পদ গড়লেন, তা তাঁর প্রতিবেশীদেরও তাজ্জব করেছে। তাঁরা বলেন, 'একটা সাইকেল কেনার আর্থিক সংগতি ছিল না' পাঁচ বছর আগে, তিনি 'এখন রাজার হালে তিনটা গাড়িতে চড়েন।' সকালে যে গাড়িতে বাজারে যান, দুপুরে পার্টি অফিসে সেটায় যান না। স্ত্রী ওটা নিয়ে যান বাপের বাড়ি। সন্ধ্যায় জেলা সদরে যান অন্য গাড়িতে।
অবশ্য মাননীয় নিজে দাবি করেছেন, 'জেলার ছয় এমপির মধ্যে আমি খুবই ভালো লোক।' সে কথা তো সত্যজিৎ রায়ের পিতৃদেবই বলে গেছেন: 'এ দুনিয়ায় সকল ভালো/ আসল ভালো/ নকল ভালো/...কিন্তু সবার চাইতে ভালো পাউরুটি আর ঝোলা গুড়।' [সুকুমার রায়] ভোটাররা তিনখানা পাজেরোর চেয়ে তিন পিস পাউরুটি আর এক বাটি ঝোলা গুড় দিনের শেষে পেলেই খুশি।
এই হলফনামার ঝামেলাটা বাধিয়েছে নাগরিক সমাজ। আগে এসব ছিল না। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে আট ধরনের তথ্য হলফনামা আকারে নির্বাচন কমিশনে দেওয়ার নির্দেশ উচ্চতর আদালত থেকে দেওয়া হয়েছে। তথ্যের মধ্যে সার্টিফিকেটসহ শিক্ষাগত যোগ্যতা, কত মামলার খুনখারাবির আসামি, পেশা, আয়ের উৎস প্রভৃতি। এই তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি সরকার চায়নি। প্রধান দল দুটি করেছে তীব্র বিরোধিতা। নির্বাচনে প্রার্থীদের তথ্য দেওয়ার বিধান চালু করতে অন্যান্য ব্যক্তি ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার কোর্টের বারান্দায় দৌড়াদৌড়ি করে জুতার সুকতলি ক্ষয় করেছেন।
শেষ পর্যন্ত ড. কামাল হোসেন দৃঢ় অবস্থান না নিলে হলফনামা বাংলাদেশে চালু হতো না। ভোটাররাও জানতেন না তাঁদের নেতারা রকফেলার, ফোর্ড, টাটা, বিড়লা বা বিল গেটসের চেয়ে কম প্রতিভাবান নন। ২০০৫ সালে সুনামগঞ্জের এক উপনির্বাচনে প্রথম হলফনামা দাখিল করা হয়। সে এক বিরাট কাহিনি।
প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য যাতে মিডিয়ায় প্রকাশিত না হয়, তার জন্য নানা ফন্দি আমাদের পরিপূর্ণ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন এঁটেছিল। কিন্তু সম্প্রতি তথ্য অধিকার কমিশন গণমাধ্যমকে তথ্য দিতে তাদের কড়া নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ তো আছেই। তবে আলামত যা দেখছি তাতে হলফনামার তথ্য যাতে প্রকাশ না হয় তার জন্য 'হলফনামা প্রতিরোধ কমিটি' গড়ে উঠতে দেরি নেই। হবে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন। নীল পতাকা মিছিল। গণ-অনশন পর্যন্ত। আমাদের অতি নিরপেক্ষ দুদক কর্মকর্তারাও প্রার্থীদের সম্পদের উৎস সন্ধানে আগ্রহী নন। তাতে নাকি অপূর্ব নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের ওপর সরকারি নেতারা নাখোশ। টক শোর ওপর মহা ক্ষিপ্ত। পুরোনোদের বাদ দিয়ে নতুন নতুন চেতনাপন্থীদের ঢোকানোর সুপারিশ হচ্ছে। যদিও আমরা হলফনামা থেকেই দেখতে পাচ্ছি অনেক মহাজোট নেতার টক শো থেকেও আয়টা কম নয়।
এভাবে পাহাড়, ফসলি জমি, বনভূমি— দেশের সব সম্পদ হলফনামাওয়ালাদের হাতে চলে যেতে থাকলে আর মাত্র দুটি নির্বাচনের প্রয়োজন হবে। এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে শুধু বাংলা ভাষাটা বাঙালির মুখে থাকবে, তার পায়ের তলায় পলিমাটির বাংলাদেশটা থাকবে না। একাত্তরের শহীদ ও জনগণের ভাগ্যের কী সুন্দর পরিহাস— স্বাধীনতার চেতনার সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে সম্পদের চেতনা।
দেশে দেশে উগ্র মাওবাদী আন্দোলন অকারণে হচ্ছে না।
সৈয়দ আবুল মকসুুদ: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।

--
 
---
You received this message because you are subscribed to the Google Groups "duecon1970" group.
To unsubscribe from this group and stop receiving emails from it, send an email to duecon1970+unsubscribe@googlegroups.com.
For more options, visit https://groups.google.com/groups/opt_out.




__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

[mukto-mona] Happy Holidays



Trouble viewing this email? Read it online
 

Dear Patrons, Colleagues and Friends,



From all of us here at Touchdown Media Inc.



Touchdown Media
40 Bridge St
Metuchen New Jersey 08840
United States

You are subscribed to this newsletter as mukto-mona@yahoogroups.com. Please click here to modify your message preferences or to unsubscribe from any future mailings. We will respect all unsubscribe requests.



__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

[mukto-mona] কাদের মোল্লার আসল নকল: একটি নির্মোহ অনুসন্ধান



This article has been published in BDNews24:

=========================================

অভিজিৎ রায়আরিফ রহমান

কাদের মোল্লার আসল নকল: একটি নির্মোহ অনুসন্ধান

ডিসেম্বর ২৩, ২০১৩
একাত্তরের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী ও 'মিরপুরের কসাই' খ্যাত আবদুল কাদের মোল্লা
একাত্তরের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী ও 'মিরপুরের কসাই' খ্যাত আবদুল কাদের মোল্লা
যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটা বিরাট অর্জন, বলাই বাহুল্য। এবারের বিজয় দিবস এবং সেই সঙ্গে নতুন বছরের আগমনটাই যেন ভিন্নমাত্রায় পৌঁছে গেছে এই অর্জনের ফলে। যুদ্ধাপরাধী রাজাকার-আলবদরদের বিচারের যে আকাঙ্ক্ষা একটা সময় আমাদের রক্তে শিহরণ তুলত, একটা অপ্রাপ্তির বেদনা গ্রাস করে ফেলত বছর খানেক আগেও, সেটা থেকে যেন আমরা মুক্তি পেয়েছি।
অন্তত একজন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি নানা ধরনের বিতর্ক, প্রতিবন্ধকতা, বিশ্বমোড়লদের তরফ থেকে দেওয়া আন্তর্জাতিক চাপ সবকিছু অগ্রাহ্য করে। এটা যে কত বড় অর্জন তা বোধহয় আমরা কেউ বুঝতে পারছি না। এই দিনটা দেখার স্বপ্ন আমরা বুকের মধ্যে লালন করেছিলাম বহুদিন ধরে।
কিন্তু আমরা কী দেখলাম? কাদের মোল্লার ফাঁসির পর বাংলাদেশের আপামর জনগণ যখন আনন্দোচ্ছ্বাস করছে, ঠিক তখনই এক মুখচেনা মহল সারা দেশে শুরু করেছিল সহিংসতা আর নৈরাজ্যের বিস্তার। জ্বালাও-পোড়াও, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর আক্রমণ, বিচারকদের বাসায় বোমাবাজি সবই শুরু হল পুরোদমে। পাশাপাশি আরেকটা কাজও জামাতিদের তরফ থেকে করার প্রচেষ্টা চালানো হল– যেটা তারা সবসময়ই করে থাকে– বিভ্রান্তি ছড়ানো।
সত্য যখন উন্মোচিত আর দিনের আলোর মতো উদ্ভাসিত, বিভ্রান্তি আর মিথ্যে প্রচারণা– এটাই বোধহয় একমাত্র অস্ত্র হয়ে দাঁড়ায় তখন। সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর চাঁদে সাঈদীর মুখচ্ছবি দেখা নিয়ে কী প্রচারণাটাই না চালানো হয়েছিল। অথচ পুরোটাই ছিল ফটোশপে এডিট করা খুব কাঁচা হাতের কাজ। যারা নিজেদের ধর্মের একনিষ্ঠ সেবক মনে করেন, তাদের সাচ্চা সৈনিকেরা এভাবে ফটোশপে ছবি এডিট করে যাচ্ছেতাই প্রচারণা চালায়-– ভাবতেও হয়তো অনেকের অবাক লাগবে।
কিন্তু যারা এই গোত্রটির কাজকর্মের নাড়ি-নক্ষত্রের হদিস জানেন, তারা অবাক হন না। শাহবাগ আন্দোলন শুরুর সময় একে কলঙ্কিত করতে নানা ধরনের রগরগে ছবি জোড়াতালি দিয়ে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেছিল-– 'প্রজন্ম চত্বর' নাকি আসলে 'প্রজনন চত্বর'। ওখানে নাকি রাত্রিবেলা গাঁজা খাওয়া হয়, ফ্রি সেক্স হয়, তরুণীরা সেখানে গেলেই ধর্ষিত হতে হয়, আরও কত কী।
কী না করেছিল তারা! মুম্বাই মেডিকেলের স্ক্যান্ডালের ছবির সঙ্গে ইমরান এইচ সরকারের চেহারা জোড়া দেওয়া, শাহবাগের জমায়েতে নাইট ক্লাবের নগ্নবক্ষা নারীর ছবি কাট অ্যান্ড পেস্ট করে লাগিয়ে দিয়ে ফেসবুকে ছড়ানো, নামাজরত এক পাকিস্তানি পুলিশকে শিবিরের কর্মী হিসেবে চালিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে প্রতীকী রশি নিয়ে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবি সম্বলিত ছবির শিরোনাম বদলে 'ফাঁসির অভিনয় করতে গিয়ে শাহবাগে যুবক প্রাণ হারাল' টাইপ মিথ্যে নিউজ তৈরি করা-– কোনো কিছুই বাদ যায়নি।
মুক্তমনা ব্লগে আমাদের সতীর্থ দিগন্ত বাহার 'কথিত ইসলামি দল জামায়াতে ইসলামীর মিথ্যাচার সমগ্র' শিরোনামের পোস্টে খুলে দিয়েছিলেন তাদের মিথ্যের মুখোশ; লিঙ্কটি পাঠকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া গেল:
কাদের মোল্লার ফাঁসির পরেও নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো হবে তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। ফাঁসির আগে থেকেই কাদেরের তথাকথিত 'অ্যালিবাই' উপজীব্য করে ছড়ানো হয়েছিল মিথ্যে। কাদের ট্রাইব্যুনালকে বলেছিল:
"আজ এই কোরআন শরীফ হাতে নিয়ে আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, ১৯৭১ সালে মিরপুরে কসাই কাদের কর্তৃক যেইসব হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল তার একটি অপরাধের সঙ্গেও আমার দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। কাদের মোল্লা বলেন, আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি আমি ১৯৭৩ সালের আগে কোনোদিন মিরপুরেই যাইনি।"
এই অ্যালিবাইকেই সত্য ধরে নিয়ে অনেকে জল ঘোলা করছেন। কিন্তু এটাই কি স্বাভাবিক নয় যে কাদের মোল্লার মতো এত বড় একটা পাষণ্ড এবং ঠাণ্ডা মাথার খুনি এ ধরনের অ্যালিবাই হাজির করেই নিজেকে আত্মরক্ষা করতে চাইবে? তার তো এটাই বলার কথা যে ঘটনার সময় সে ঘটনাস্থলে ছিল না।
এ নিয়ে সম্প্রতি ব্লগার নিঝুম মজুমদার কিছু গবেষণা করেছেন। মুক্তমনায় প্রকাশিত তার দি কিউরিয়াস কেইস অব কাদের মোল্লা এবং সাক্ষী মোমেনা শিরোনামের লেখাটি থেকে জানা যায়, এই কাদের মোল্লার একসময়ের সবচাইতে বড় ইয়ার দোস্ত 'আক্তার গুণ্ডা' ছিল কাদের মোল্লার মতোই এক ভয়াবহ খুনি। কাদের মোল্লা এই আক্তার গুণ্ডার সঙ্গে মিলেই মূলত ১৯৭১ সালে মিরপুরে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।
১৯৭২ সালের দালাল আইনে এই আক্তার গুণ্ডার বিচার হয় এবং বিচারে তার ফাঁসিও হয়। মজার ব্যাপার হল, এই আক্তার গুণ্ডাও আজ থেকে ৪০ বছর আগে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করতে গিয়ে সেই একই ধরনের অ্যালিবাই হাজির করেছিল যে, সে ঘটনাস্থলে ছিল না, ছিল পাকিস্তানে। গণহত্যার সে কিছুই জানে না ['আক্তার গুণ্ডা ভার্সেস বাংলাদেশ রায়' দ্র:]।
রায়ের ফটোকপি দ্রষ্টব্য
রায়ের ফটোকপি দ্রষ্টব্য
কিন্তু কেউ এ ধরনের 'ভেজা বিড়াল' সাজতে চাইলেই যে সেটা ঠিক তা তো নয়। বহু চাক্ষুষ সাক্ষীই আক্তার গুণ্ডার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিল এবং সে দোষী প্রমাণিত হয়েছিল।
কাদের মোল্লাও বিয়াল্লিশ বছর পরে তার প্রিয় গুণ্ডা বন্ধুর মতোই অ্যালিবাই হাজির করতে গিয়ে বলেছে, সে কস্মিনকালেও মিরপুরে যায়নি, গণহত্যা তো কোন ছাড়! এমন একটা ভাব যে, কাদের মোল্লা ভাজা মাছটিও উল্টে খেতে জানে না। সহজ সরল এক ভালো মানুষকে যেন 'কসাই কাদের' ভেবে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একই কাজ তারা অন্য আসামির বেলায়ও করেছে। এই 'সাকাচৌ' সেই সাকা চৌধুরী নয়, সে ছিল পাকিস্তানে। এই দেলু রাজাকার সেই 'দেইল্যা' নয়। একই ধারাবাহিকতায় এখন বলছে, এই কাদের মোল্লা সেই কসাই কাদের নয়। কিন্তু তাদের এই কথা ঠিক কতটুকু যৌক্তিক– এই প্রবন্ধে আমরা সেটা পুংখানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে দেখব।
একাত্তরে কাদের মোল্লার মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার ব্যাপারটা বহুভাবেই আসলে প্রমাণ করা যায়। শুরু করা যাক ইন্টারনেটে পাওয়া একটি বহুল প্রচারিত ছবি দিয়ে, যেখানে নিয়াজীর পেছনে আশরাফুজ্জামান এবং কাদের মোল্লাকে দেখা যাচ্ছে। আশরাফুজ্জামান বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে মূল ভূমিকা পালন করেছিল, বর্তমানে ব্রিটেনে পলাতক আলবদর নেতা মুঈনুদ্দীনের সঙ্গে মিলে। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান খ্যাত ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে তারা। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মুঈনুদ্দীনের সঙ্গে আশরাফুজ্জামান খানেরও ফাঁসির আদেশ হয়েছে সম্প্রতি। সেখানেই বীরদর্পে কাদের মোল্লা দণ্ডায়মান। মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত 'মুক্তিযুদ্ধ কোষ' বইয়ে ছবিটির হদিস পাওয়া যায়। ইউটিউবেও এর একটি ভিডিও আছে।
সেই ঐতিহাসিক ছবি, নিয়াজীর পাশে কাদের মোল্লা
সেই ঐতিহাসিক ছবি, নিয়াজীর পাশে কাদের মোল্লা
সেই বিয়াল্লিশ বছর আগের ছবিটির কথা যদি আমরা বাদও দিই, আজকের দিনের প্রসঙ্গ গোণায় ধরলেও, কাদের মোল্লার পরিচয় গোপন থাকে না। তার ফাঁসির পর পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান বলেছেন–
"১৯৭১ সালের ঘটনার বিয়াল্লিশ বছর পর কাদের মোল্লার ফাঁসি একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের প্রতি বিশ্বস্ততা ও সংহতির জন্য কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তার মৃত্যুতে সকল পাকিস্তানি মর্মাহত এবং শোকাহত।''
তিনি আরও বলেন, "এ ঘটনার মাধ্যমে পুরনো ক্ষত আবারও জাগিয়ে তোলা হয়েছে।"
জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের প্রধান মুনাওয়ার হাসান কাদের মোল্লাকে তাদের 'বাংলাদেশি সহচর' এবং 'পাকিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা' আখ্যায়িত করে তার ফাঁসিকে 'শোচনীয়' বলে মন্তব্য করেন। শুধু তাই নয়, কাদেরের ফাঁসি দেওয়ায় বাংলাদেশ আক্রমণের জন্য নিজেদের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল জামায়াত-ই-ইসলামী। 'কসাই কাদের' আর 'কাদের মোল্লা' এক ব্যক্তি না হলে পাকিস্তানি জামাতের এত শখ হল কেন এই বিবৃতি দেবার?
বারবারই বাংলাদেশের জামাত দাবি করে এসেছে কসাই কাদের আর কাদের মোল্লা এক ব্যক্তি নয়, তারা হাজির করে কাদেরের জবানবন্দি, যেখানে কাদেরের অ্যালিবাই ছিল:
"১৯৭১ সালের ১২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আমিরাবাদ চলে যান এবং মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়ই তিনি গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করেন। গ্রামে অবস্থানকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও হাইস্কুলের প্রায় ৩০ জন ছাত্রের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ থেকে ১ মে পর্যন্ত (পাকিস্তান সেনাবাহিনী ফরিদপুরে পৌঁছার দিন পর্যন্ত) অন্যদের সঙ্গে তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ চালিয়ে যান। সেনাবাহিনীর জুনিয়র কমিশনড অফিসার (জেসিও) মফিজুর রহমান ডামি রাইফেল দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেন।" (ইত্তেফাক)
কাদের এবং তার দলবলের দাবি অনুযায়ী সে একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধা ছিল; অথচ পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিন্তু স্পষ্ট করেই বলেছেন–
''কাদের মোল্লা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অখণ্ড পাকিস্তানের সমর্থক ছিলেন এবং তা তিনি নিজের মুখেই বলেছিলেন।''
নিজের মুখে কাকে এ কথা বলেছেন কাদের? তিনি বিরাট মুক্তিযোদ্ধা হয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে তো নিজেকে 'অখণ্ড পাকিস্তানের সমর্থক ছিলেন' সেটা বলার কথা নয়। যেভাবে নিউজগুলো পত্রিকায় এসেছে তাতে মনে হয় নিসার সাহেবের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিল এবং তিনি কাদেরের পরিচয় সম্বন্ধে যথেষ্টই ওয়াকিবহাল। না হলে নিসার সাহেব বলবেন কেন যে, পাকিস্তানের প্রতি বিশ্বস্ততা ও সংহতির জন্য কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই?
এগুলো থেকে কী প্রমাণিত হয়? কসাই কাদের আর কাদের মোল্লা দুই ব্যক্তি? সেই হিন্দি সিনেমার মতো আসল কাদেরকে জীবিত রেখে তার 'জরুয়া' ভাইকে ঝোলানো হয়েছে? মোটেও তা নয়। বরং সম্প্রতি একটি পত্রিকায় ড. জিনিয়া জাহিদ যে কথাগুলো তার 'কাদের মোল্লা মরিয়া প্রমাণ করিল' শিরোনামের লেখায় উল্লেখ করেছেন সেটাই সত্য হিসেবে প্রকট হয়ে উঠেছে–
''সেই যে রবীন্দ্রনাথের কাদম্বিনী গল্পে পড়েছিলাম, 'কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল যে, সে মরে নাই', ঠিক তেমনি কাদের মোল্লার ফাঁসিতে মৃত্যুর পর তাদের সমগোত্রীয় পাকি-জামায়াতের স্বীকারোক্তিতে এটাই প্রমাণ হল যে, এই কাদের মোল্লাই একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা এবং এই কাদের মোল্লাই আমৃত্যু পাকি-সমর্থক ছিলেন। এই কাদের মোল্লা একাত্তরেও যেমন বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন।''
মিথ্যাচারী এবং মিথ্যার বেসাতি করা জামাত-শিবির কেবল কাদের মোল্লাকে কসাই কাদের থেকে পৃথক করার মিশন নিয়েই মাঠে নামেনি, তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পর্যন্ত প্রমাণ করতে চেয়েছে। সে নাকি একাত্তরের যুদ্ধে গ্রামে বসে কলেজ ও হাইস্কুলের প্রায় ৩০ জন ছাত্রের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ থেকে ১ মে পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ চালিয়ে গেছে। মিথ্যাচারের একটা সীমা থাকে! অথচ এই কাদের মোল্লাই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে করেছিল চরম বিদ্রূপাত্মক উক্তি, যেটা ২০০৭ সালে দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত হয়েছিল:
"কেউ সুন্দরী নারীর লোভে, কেউ হিন্দুর সম্পদ লুণ্ঠন, কেউ ভারতীয় স্বার্থরক্ষায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। কেউই আন্তরিকতা কিংবা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি।" (কাদের মোল্লা, সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ৩১ অক্টোবর, ২০০৭)
এর বাইরেও বহুবারই কাদের মোল্লার বাংলাদেশ বিরোধিতা এবং বাংলাদেশের প্রতি অবজ্ঞার ব্যাপারটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। যেমন এ বছরের নভেম্বর মাসে বিডিনিউজ টোয়েন্টি ফোর ডটকমে প্রকাশিত এই নিউজটি দ্রষ্টব্য:
কাদের মোল্লার দম্ভোক্তি
কাদের মোল্লার দম্ভোক্তি
এই লোক 'কসাই কাদের'না হয়ে মুক্তিযোদ্ধা হবে, সেটা কি কোনো পাগলেও বিশ্বাস করবে?
এবার কিছু চাক্ষুষ সাক্ষীর বয়ান শোনা যাক।
এক: ফজর আলী
"মিরপুর ১১ নম্বর বি ব্লকের বাসিন্দা ফজর আলী গণতদন্ত কমিশনকে দেওয়া সাক্ষ্যে তার ছোট ভাই মিরপুর বাংলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেন কাদের মোল্লাকে। ২৯ মার্চ নবাবপুর থেকে পল্লবকে তুলে নিয়ে আসে কাদের মোল্লার সাঙ্গপাঙ্গরা। এরপর তার নির্দেশে ১২ নম্বর থেকে ১ নম্বর সেকশনের শাহ আলী মাজার পর্যন্ত হাতে দড়ি বেঁধে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ছাত্রলীগ কর্মী পল্লবকে। এরপর আবার ১ নম্বর থেকে ১২ নম্বর সেকশনের ঈদগাহ মাঠে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে টানা দু'দিন একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয় পল্লবকে। ঘাতকরা এরপর তার দু'হাতের সবকটি আঙুল কেটে ফেলে।
৫ এপ্রিল একটি মজার খেলা খেলে কাদের মোল্লা। সঙ্গীদের নির্দেশ দেওয়া হয় গাছে ঝোলানো পল্লবকে গুলি করতে, যার গুলি লাগবে তাকে পুরষ্কার দেওয়া হবে। পরে কাদের মোল্লার সঙ্গী আক্তার পল্লবের বুকে পাঁচটি গুলি করে পরপর। পল্লবের লাশ আরও দু'দিন ওই গাছে ঝুলিয়ে রাখে কাদের মোল্লা, যাতে মানুষ বোঝে ভারতের দালালদের জন্য কী পরিণাম অপেক্ষা করছে। ১২ নম্বর সেকশনে কালাপানি ঝিলের পাশে আরও ৭ জন হতভাগার সঙ্গে মাটিচাপা দেওয়া হয় পল্লবকে।
অক্টোবরে মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনে একজন মহিলা কবি মেহরুন্নেসাকে প্রকাশ্যে নিজের হাতে নির্মমভাবে হত্যা করে কাদের মো্ল্লা। প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন সিরাজ এই নৃশংসতায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। মূলত বিহারিদের নিয়ে একটি খুনে দল তৈরি করেছিল কাদের মোল্লা। আর বুলেট বাঁচাতে জবাই করা ছিল তার কাছে বেশি প্রিয়।"
দুই: ফিরোজ আলী
"ফিরোজ আলী তখন মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি, একাত্তর সালে সপরিবারে মিরপুরে থাকতেন। ২৫ মার্চের পর তার ভাই পল্লবকে শুধু 'জয় বাংলা'র অনুসারী হওয়ার অপরাধে কাদের মোল্লার নির্দেশে অবাঙলি গুণ্ডারা অকথ্য নির্যাতন করে নির্মমভাবে হত্যা করে। তখন সমগ্র মিরপুরে হত্যা আর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে কাদের মোল্লা ও তার অনুসারী অবাঙালিরা। জবাই করে বাঙালি হত্যা ছিল তাদের প্রতিদিনের রুটিনমাফিক কাজ। একেকটি জবাই'র আগে ঘোষণা দিত যারা বাংলাদেশ তথা 'জয় বাংলা'র অনুসারী, তারা বিধর্মী-নাস্তিক-ভারতের দালাল, এদের হত্যা করা সওয়াবের কাজ!
এমন জবাই'র নেশা বেড়ে যাওয়ায় কাদের মোল্লার নাম তখন এ তল্লাটে আতঙ্কের সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। স্থানীয়রা আবদুল কাদের মোল্লাকে 'কসাই কাদের'নামকরণ করে। গরু জবাই-এর মতো মানুষ জবাই-এ দক্ষতার নামডাকে (!) কসাই কাদের 'মিরপুরের কসা‌ই' নামেও পরিচিতি লাভ করে ব্যাপক।
কসাই কাদের মোল্লার প্রতিহিংসার শিকার শহীদ পল্লবের ডাক নাম ছিল 'টুনটুনি'। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে বেশ কিছু চলচ্চিত্রে পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে অভিনয় করে সুখ্যাতি অর্জন করে প্রতিপক্ষের চক্ষুশূল হন পল্লব। এ কথা জানান ফিরোজ আলীর স্ত্রী।
পল্লব ছাড়াও কবি মেহেরুন্নেছা নামের এলাকায় খুবই শান্ত-নিরীহ প্রকৃতির বাঙালি গৃহবধূ কসাই কাদের মোল্লার প্রতিহিংসার বলি হন। মিরপুর ৬ নং সেকশন, ডি ব্লক মুকুল ফৌজের মাঠের কাছাকাছি একটি বাড়িতে থাকতেন কবি মেহেরুন্নেছা। তিনি ছিলেন কবি কাজী রোজীর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী।
কসাই কাদের মোল্লার নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে লেখালেখির অপরাধে মেহেরুন্নেছাসহ তার পুরো পরিবারকে বটি দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়েছিল! এরপর টুকরো করা মাংসখণ্ডগুলো নিয়ে ফুটবলও খেলা হয়েছিল ৬ নং মুকুল ফৌজের মাঠে! কসাই কাদেরের নির্দেশে ৩০/৩৫ জনের একটি অবাঙালি ঘাতকের দল, মাথায় লাল ফিতা বেঁধে, ধারালো তলোয়ারে সজ্জিত হয়ে অংশ নেয় কবি মেহেরুন্নেছা ও তার পরিবারের হত্যাযজ্ঞে!"
তিন: কাদের মোল্লার বন্ধু মোজাম্মেল এইচ খান
ড. মোজাম্মেল এইচ খান ছিলেন রাজেন্দ্র কলেজে কাদের মোল্লার সহপাঠী। তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন কাদের মোল্লার কাজকর্ম, একাত্তরে এবং তার পরবর্তী সময়। তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দৈনিক জনকণ্ঠে একটি চমৎকার লেখা লিখেছিলেন, ''কাদের মোল্লাকে নিয়ে 'আমার দেশ' পত্রিকার আষাঢ়ে কাহিনী'' শিরোনামে:
"কাদের মোল্লা হলেন আমাদের রাজেন্দ্র কলেজের ১৯৬৪-১৯৬৬ এইচএসসি ব্যাচের সবচেয়ে পরিচিত মুখ এবং তিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমধিক পরিচিত ব্যক্তি, তা সে যে কারণেই হোক না কেন। এমনকি তিনি আমাদের সে সময়ের আরেক সহপাঠী বেগম জিয়ার বিগত শাসনামলের মন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদকেও পরিচিতির দিক দিয়ে ছাড়িয়ে গেছেন; যদিও মুজাহিদও একইভাবে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলার অপেক্ষায় রয়েছেন, যদি না সুপ্রীম কোর্ট তার দণ্ডকে উল্টে দেয়।''
ড. মোজাম্মেল খান তাঁর প্রবন্ধে বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে, এমনকি কাদেরের পরিবারের দেওয়া বিবরণেও তিনি ১৯৭২ সালে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে 'তার ডিপার্টমেন্টে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন' এ ধরনের কোনো দাবি নেই; বরং তিনি যে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন সে কথাই বলা হয়েছে। এমনকি তিনি যে কোনো ডিগ্রি পেয়েছেন সেটার কোনো উল্লেখ নেই।
তেমনিভাবে 'যুদ্ধের পুরো সময় তিনি গ্রামেই অবস্থান করেন' সে কথা বলা হয়েছে, কিন্তু তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন সেটার কোনো উল্লেখ নেই। 'শেখ মুজিবুর রহমান তাকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে চাকরিও দিয়েছিলেন' সেটাও কাদেরের পরিবার উল্লেখ করেনি; অথচ 'আমার দেশ' এবং 'বাঁশের কেল্লা'রা চাঁদে সাঈদীর মুখচ্ছবি দর্শনের মতো করে ঠিকই 'সত্যের সন্ধান' পেয়ে গেছে!
জামাতিদের পক্ষ থেকে আরও ছড়ানো হয়েছে যে, কাদের মোল্লা নাকি 'ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট' হওয়া 'গোল্ড মেডেলিস্ট' ছাত্র ছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা মোটেই সে রকমের নয়। মোল্লার 'ভালো ছাত্রত্বের' গুমোর ফাঁস করে দিয়েছেন মোজাম্মেল খান তাঁর কলামে:
''এইচএসসির ফলাফলে কাদের গড়পড়তা ছাত্রের থেকে নিচে ছিল যার ফলে সরাসরি সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ার যোগ্যতা অর্জন করেনি। সে রাজেন্দ্র কলেজেই বিএসসি পড়ে (১৯৬৬-১৯৬৮) এবং ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস কোর্সে এমএসসিতে ভর্তি হয় যেটা তার পরিবারের দেওয়া সময়ের সঙ্গে সম্পূর্ণ মিলে যাচ্ছে; যদিও তার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী সে এসএসসি পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। অথচ কাদের আমাদের সঙ্গে এইচএসসি পাস করেছে ১৯৬৬ সালে।
তাহলে এর মাঝে দুই বছরের বেশি সময় সে কী করেছে? তার পরিবার বলেছে সে স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসে এবং ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সেখানে অধ্যয়ন করে। এ বক্তব্যের প্রথম অংশটুকু সত্য নয় এবং যে কোনো পাঠকই বুঝতে পারবেন দুই বছরের এমএসসি ডিগ্রির জন্য ৮ বছর (১৯৬৯-১৯৭১, ১৯৭২-১৯৭৭) বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করার হিসেব মেলানো যায় না।''
বর্তমানে কানাডাপ্রবাসী অধ্যাপক মোজাম্মেল খান সেই একই প্রবন্ধে বর্ণনা করেছেন যখন তিনি ১৯৭৯ সালে দেশে বেড়াতে গিয়েছিলেন, কীভাবে কাদের মোল্লার সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়ে গিয়েছিল এবং কীভাবে সে উল্লসিত হয়ে মোজাম্মেল সাহেবকে বলেছিল 'জয় বাংলা'কে সরিয়ে 'জিন্দাবাদ' রাজত্ব করে চলেছে:
"১৯৭৩ সালের প্রথমার্ধ্বে আমি যখন উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে আসি তখন জানতাম না কাদের কোথায় আছে। ১৯৭৯ সালে আমি দেশে বেড়াতে গেলে একদিন যখন ঢাকার মগবাজারের রাস্তা দিয়ে হাঁটছি তখন পেছন থেকে একজন আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, 'তুই কি মোজাম্মেল? আমি কাদের।' আমার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল, 'কাদের, তুই বেঁচে আছিস?' কাদেরের উত্তর ছিল, 'হ্যাঁ, আমি ভালোভাবে বেঁচে আছি এবং এখন আমি দৈনিক সংগ্রামের নির্বাহী সম্পাদক। তোর জয় বাংলা এখন এদেশ থেকে নির্বাসিত; ফিরে এসেছে আমাদের জিন্দাবাদ এবং এটা এখন প্রচণ্ডভাবে জাগ্রত।' যেহেতু কাদের সত্য কথাই বলেছিল, সেহেতু আমি ওর কথার কোনো জবাব দিতে পারিনি।
কয়েক সপ্তাহ পরে আমি যখন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাই তখন সংবাদপত্রে পড়লাম প্রেসক্লাবে একটি বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিল কাদের মোল্লা; একেই বলে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস!"
মোজাম্মেল এইচ খান ইংরেজিতেও এ নিয়ে একটি লেখা লিখেছেন Quader Mollah: fact versus fiction শিরোনামে যেটা মুক্তমনা সাইটের ইংরেজি ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে।
ড. মোজাম্মেল এইচ খান কাদের মোল্লার ফাঁসির পর স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন, ''বিদায় এককালের সহপাঠী কাদের মোল্লা। তোমার এ পরিণতিতে আমি শোক করতে পারছি না'' বলে:
মোজাম্মেল খানের ফেসবুক স্ট্যাটাস
মোজাম্মেল খানের ফেসবুক স্ট্যাটাস
পাঠক নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন আমরা এ লেখায় এখন পর্যন্ত মোমেনা বেগমের কথা আনিনি। এই নারী কাদের মোল্লার দ্বারা ধর্ষিত হয়েছিলেন। তাঁর পরিবারের সব সদস্যকে চোখের সামনে মরতে দেখেছেন। বিডিনিউজ টোয়েন্টি ফোর ডটকমে প্রকাশিত তাঁর ভাষ্য থেকে জানা যায়, বেলা ডোবার আগে কাদের মোল্লার নেতৃত্বে মোমেনাদের বাড়িতে হামলা হয়। "আব্বা দৌড়াইয়া দৌড়াইয়া আসে এবং বলতে থাকে 'কাদের মোল্লা, মেরে ফেলবে'। আক্তার গুণ্ডা, বিহারিরা তারা ও পাক বাহিনীরা দৌড়াইয়া আসছিল। আব্বা ঘরে এসে দরজার খিল লাগায়ে দেয়।"
হযরত দরজা এঁটে সন্তানদের খাটের নিচে লুকাতে বলেন। মোমেনার সঙ্গে তার বোন আমেনা বেগমও খাটের নিচে ঢোকে। তখন দরজায় শোনেন কাদের মোল্লাসহ বিহারিদের কণ্ঠস্বর, 'এই হারামি বাচ্চা, দরজা খোল, বোম মার দেঙ্গা।' শুরুতে দরজা না খোলায় বাড়ির দরজার সামনে একটি বোমা ফাটানো হয়। এক পর্যায়ে হযরতের স্ত্রী একটি দা হাতে নিয়ে দরজা খোলেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গুলি করা হয়।
"আব্বা তখন আম্মাকে ধরতে যায়। কাদের মোল্লা পেছন থেকে শার্টের কলার টেনে ধরে বলে, 'এই শুয়ারের বাচ্চা, এখন আর আওয়ামী লীগ করবি না? বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যাবি না? মিছিল করবি না? জয় বাংলা বলবি না?' আব্বা হাতজোড় করে বলে, 'কাদের ভাই, আমাকে ছেড়ে দাও'। আক্তার গুন্ডাকে বলল, 'আক্তার ভাই, আমাকে ছেড়ে দাও'।" তবু না ছেড়ে হযরত আলীকে টেনে-হিঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে যায় বিহারিরা।
সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এরপর কাঁদতে কাঁদতে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেন মোমেনা। "দাও দিয়ে আমার মাকে তারা জবাই করে। চাপাতি দিয়ে খোদেজাকে (বোন) জবাই করে। তাসলিমাকেও (বোন) জবাই করে। আমার একটি ভাই ছিল বাবু, বয়স ছিল দুই বছর, তাকে আছড়িয়ে মারে। বাবু মা মা করে চিৎকার করছিল," বলতে গিয়ে অঝোরে কাঁদেন মোমেনা।
বাবুর চিৎকার শুনে খাটের তলায় লুকানো আমেনা চিৎকার দিলে তার অবস্থান জেনে যায় হামলাকারীরা। মোমেনা বলেন, "আমেনাকে তারা টেনে বের করে, সব কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে ফেলে। এরপর তাকে নির্যাতন করতে থাকে। আমেনা অনেক চিৎকার করছিল, একসময় চিৎকার থেমে যায়।"
কাঁদতে কাঁদতে প্রায় অজ্ঞান মোমেনা এরপর শোনান নিজের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা।
মোমেনার সাক্ষ্য নিয়ে কম জল ঘোলা করেনি জামাতিরা। বলা হচ্ছে মোমেনা নাকি তিনবার সাক্ষ্য দিয়েছেন। একেক জায়গায় নাকি তার একেক রকম বক্তব্য। তিনি নাকি মিরপুরের জল্লাদখানার জাদুঘর কর্তৃপক্ষকে যে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তাতে কাদের মোল্লার নাম ছিল না। তিনি নাকি বোরকা ও নেকাবে মুখ আবৃত করে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছিলেন, ইত্যাদি ইত্যাদি।
এগুলো আসলে একেবারেই বানোয়াট প্রোপাগাণ্ডা। ব্লগার নিঝুম মজুমদার মুক্তমনায় প্রকাশিত দি কিউরিয়াস কেইস অব কাদের মোল্লা এবং সাক্ষী মোমেনা প্রবন্ধে প্রতিটি কুযুক্তিই খণ্ডন করেছেন। পাঠকেরা প্রবন্ধটি পড়ে দেখতে পারেন।
আসলে মোমেনা মূলত তার জীবনে একবারই সাক্ষ্য দিয়েছেন তাঁর পিতা-মাতা আর ভাই-বোন হত্যা মামলায়। আর সারাজীবন যদি অন্য কোনো বক্তব্য দিয়ে থাকেন তবে সেটি আদালতে সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হয়নি, হবার কথাও নয়।
মোমেনার যে জবানবন্দির কথা বলে জল ঘোলা করার চেষ্টা করা হয়– যেটি তিনি মিরপুরের জল্লাদখানার জাদুঘর কর্তৃপক্ষকে দিয়েছেন বলে 'বাঁশের কেল্লা'রা ক্রমাগতভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছে, সেটি কিন্তু মাননীয় আদালতের চোখে সম্পূর্ণভাবে অসাড় হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। যে অভিযোগ আদালতে ধোপে টেকেনি, সেটা যদি 'কন্সপিরেসি থিওরি' হিসেবে কেউ ছড়িয়ে বেড়ায় তখন তার ঘাড়েই দায় বর্তায় সেটা প্রমাণ করার, আমাদের ওপর নয়।
নিঝুম মজুমদারের অনুসন্ধানী পোস্ট থেকে জানা যায়, ''কাদেরের আইনজীবী একটা কাগজ নিয়ে এসেছে ছবি ফরম্যাটে [ফটোস্ট্যাট] যাতে কোনো কর্তৃপক্ষের সাক্ষর নেই, সাক্ষ্যদাতার সাক্ষর নেই, এটি কীভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে সেটির ব্যাখ্যা নেই কিংবা বলতে পারেনি, এই বিচারের আইনের ধারা ৯, সাব সেকশন ৫-এর নিয়ম ফলো করা হয়নি, এটা কোনো সাক্ষ্য নয়।'' [ট্রাইব্যুনাল-২ এর মামলার রায়, পৃষ্ঠা ১১৯, প্যারা ৩৯১-৩৯২ দ্র:]
আর কোনো জাদুঘরের সাক্ষাতকারে যদি মোমেনা কাদের মোল্লার নাম উল্লেখ না করে থাকেন কিংবা আদালতে যদি বোরকা পরে সাক্ষ্য দিতে এসে থাকেন তাতেই-বা কী সমস্যা ছিল? যে মানুষটি তাঁর পরিবারের প্রত্যেককে চোখের সামনে নৃশংসভাবে খুন হতে দেখেছেন, যে ব্যক্তি গত বিয়াল্লিশটি বছর শোক-দুঃখ-হাহাকার নিয়ে বড় হয়েছেন, কাতর হয়েছেন অমানুষিক যন্ত্রণায়, তিনি কি নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রয়োজনমাফিক ব্যবস্থা নেবেন না? মোমেনা বেগম নিজ মুখেই তো বলেছেন যে, আদালতে সাক্ষ্যের আগে তিনি ভয় এবং নিরাপত্তার কারণে অনেক সময়ই নাম গোপন করে গেছেন:
"অনেক মানুষ আমার কাছে এসেছিল ও আমার ছবি নিয়েছিল; কিন্তু ভয়ের কারণে আমি কাউকে কাদের মোল্লা এবং আক্তার গুণ্ডার নাম বলি নাই।"
তাঁর ভয়ের ব্যাপারটা তো অমূলক নয়। জামাত-শিবিরের সন্ত্রাস সম্বন্ধে কেউ তো অজ্ঞ নয়। সাঈদীর মামলায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী গোলাম মোস্তফা নিহত হননি? তারা বোধহয় একই পরিণতি মোমেনা বেগমের জন্যও চেয়েছিল। সেটা বাস্তবায়িত না হওয়াতেই কি এত ক্ষোভ আর মিথ্যাচার?
আর এই মামলায় তো কেবল মোমেনা বেগম নয়, অনেক সাক্ষীই 'ক্যামেরা ট্রায়ালে' সাক্ষ্য দিয়েছেন। পৃথিবীর প্রতিটি দেশে এই জাতীয় ট্রায়ালের ক্ষেত্রে যে নিয়মগুলো প্রচলিত রয়েছে, সে ধরনের নিয়ম মেনেই সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অথচ হঠাৎ করেই মোমেনা বেগমের সাক্ষ্য কেন্দ্র করে গোয়েবলসীয় প্রচারণায় মেতে উঠেছেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী মহল।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, অনেকেরই হয়তো জানা নেই– সাক্ষী নিয়ে বরং ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছিলেন কাদের মোল্লার পক্ষের আইনজীবীরাই। মোল্লার এক ভিকটিম পল্লবের ভাইয়ের স্ত্রী মোসাম্মৎ সায়েরাকে তারা হাত করতে চেষ্টা করেন, তাকে দিয়ে মিথ্যে সাক্ষ্য দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু মিথ্যে কথা বলতে গিয়ে লেজেগোবরে করে ফেলেছেন তিনি। (ট্রাইব্যুনালের রায়ের প্যারা ১৮২-১৮৯ দ্রঃ)। মজা হচ্ছে এগুলো নিয়ে গোয়েবলস বাবাজি আর তার সাগরেদরা সব নিশ্চুপ।
পাঠকদের অবগতির জন্য জানাই, কেবল মোমেনা বেগম নয়, অনেকের সাক্ষ্য থেকেই জানা গেছে এই কাদের মোল্লাই– আক্তার গুণ্ডা, নেহাল, হাক্কা গুণ্ডা যারা মীরপুরে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল একাত্তরে– তাদের সহচর ছিল। এদের অনেকেই সরাসরি কাদেরকে নিজ চোখে শনাক্ত করেছিল। সেই চাক্ষুষ সাক্ষীর মধ্য থেকেই দু'জনের বয়ান উপরে এই লেখাতেই উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আছেন প্রধান সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল হক মামা, যিনি আদালতে দাঁড়িয়ে কাদের মোল্লাকে শনাক্ত করেছিলেন। কাদের মোল্লার আসল-নকল নিয়ে প্রধান সাক্ষী শহিদুল হক মামা 'একাত্তর' টিভিতে ১৩.১২.২০১৩, ইউটিউব ভিডিও:
তারপরও বেশিরভাগ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, জামাত-সমর্থক গোষ্ঠীর ধারণা কাদের নির্দোষ ভালো মানুষ। কিছু "বিকৃত তথ্য"এবং তার সঙ্গে একগাদা নির্জলা 'মিথ্যাচার' জড়িয়ে সারাদিন এরা করে যাচ্ছে ধর্মব্যবসা। গোয়েবলসীয় কায়দায় তারা বলেই চলেছে কাদের মোল্লা আর কসাই কাদের নাকি এক নয়। যারা এখনও বলে, কসাই কাদের আর মোল্লা কাদের এক নয়, তাদের কাছে আমাদের একটাই প্রশ্ন–
'কসাই কাদের'টা তাইলে গেল কোথায়? রাতারাতি হাওয়ায় মিলিয়ে গেল নাকি?
আমরা মনে করি, কাদের আর কসাই একই লোক সেটা আদালতেই প্রমাণিত হয়ে গেছে আর শাস্তিও দেওয়া হয়েছে, আমাদের নতুন করে আর কিছু প্রমাণের নেই। 'বার্ডেন অব প্রুফ'টা তাদের কাঁধেই যারা মনে করেন দুই কাদের ভিন্ন ব্যক্তি। আমরা মনে করি, তারা সেটা প্রমাণ করতে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। অন্যদিকে মোমেনার মতো চাক্ষুষ সাক্ষীরাই যথেষ্ট যাদের পরিবার কাদের মোল্লার হাতে নিগৃহীত হয়েছিলেন। তাকে চিনতেন তার বন্ধু এবং সহপাঠীরাও, যেমন ড. মোজাম্মেল এইচ খানের মতো ব্যক্তিরা।
বিপরীত পক্ষ বরাবরই সেগুলো অস্বীকার করে 'বাঁশের কেল্লা' আর গোলাম মওলা রনির মতো লোকজনের কথাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। আসুন দেখি কতটা নির্ভরযোগ্য এই গোলাম মাওলা রনি, যে সরকারদলীয় সাংসদ অতীতে সাংবাদিক পেটানোসহ বহু কারণেই বিতর্কিত হয়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলেন।
কাদের মোল্লার ফাঁসির আগ মুহূর্তে তিনি একটি চিরকুট প্রকাশ করেন ফেসবুকে এবং দাবি করলেন রনির সঙ্গে মোল্লা সাহেবের কারাগারে সাক্ষাত হয়েছিল এবং সেই সুবাদে মোল্লা রনিকে একটা চিঠি দেন, সেখানে ইনিয়ে বিনিয়ে কাদের মোল্লার 'একটু উস্তাভাজি খাওয়ার' বাসনা ছিল আর মোল্লা নাকি রনিকে এও অনুরোধ করে বলেছিলেন, 'আমার ফাঁসির পর একবার হলেও বল বা লিখ যে, কাদের মোল্লা আর কসাই কাদের এক ব্যক্তি নয়'। এই সেই চিঠি:
রনিকে লেখা মোল্লার তথাকথিত চিরকুট
রনিকে লেখা মোল্লার তথাকথিত চিরকুট
এই চিঠি পুঁজি করেই সহানুভূতির বাণিজ্য শুরু করেছিলেন গোলাম মওলা রনি ফেসবুকে। গোলাম শুরু করেছিলেন কাদেরের গোলামী।
কিন্তু আমরা যখন এ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করলাম তখন বেরিয়ে এল অন্য তথ্য, বিশেষ করে যখন কাদের মোল্লার স্ত্রীকে লেখা একটি চিঠি অনলাইনে প্রকাশিত হয়ে যায়:
স্ত্রীকে লেখা মোল্লার চিঠি
স্ত্রীকে লেখা মোল্লার চিঠি
ব্যাপারটা কি লক্ষ্য করেছেন পাঠক???
পাঠকদের সুবিধার জন্য দুটো ছবি একসঙ্গে দেওয়া গেল। একটু ভালো করে খেয়াল করলেই বোঝা যাবে যে 'ডাল মে কুছ কালা হ্যায়':
দুটো চিঠিতে হাতের লেখার পার্থক্য স্পষ্ট
দুটো চিঠিতে হাতের লেখার পার্থক্য স্পষ্ট
গোলাম মওলা রনি সাহেবের যে ফেসবুক স্ট্যাটাসটা নিয়ে এত চেঁচামেচি, এখন তো থলের বেড়াল বেরিয়ে এসেছে; সেই চিরকুটের সিগনেচার আর কাদের মোল্লার পরিবারের কাছে লেখা চিঠির সিগনেচার ভিন্ন!
লেখাটি শেষ করার আগে একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারও পাঠকদের মনে করিয়ে দিতে চাই। এই ট্রাইব্যুনাল যদি স্বচ্ছ না হয়, যদি কাদের সত্যই মনে করে যে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে, তাহলে ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ের পর কসাই কাদের কেন দুই আঙুল দিয়ে জয়সূচক 'ভিক্টরি চিহ্ন' দেখিয়েছিল? যে ট্রাইব্যুনাল স্বচ্ছ নয়, নিরপেক্ষ নয়, আন্তর্জাতিক নয়– সেই ট্রাইব্যুনালে প্রথম রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়ার পরেও কেন কাদের নিজেকে জয়ী মনে করল?
'নিরপরাধ' মোল্লা যাবজ্জীবন দণ্ড পেয়েও ভি-চিহ্ন দেখিয়েছিল, মনে পড়ে সে কথা?
'নিরপরাধ' মোল্লা যাবজ্জীবন দণ্ড পেয়েও ভি-চিহ্ন দেখিয়েছিল, মনে পড়ে সে কথা?
যদি সে সত্যিই কসাই কাদের না হয়, কস্মিনকালেও যদি মিরপুরে না গিয়ে থাকে, একটি মানুষও হত্যা না করে থাকে, তবে কতবড় পাগল হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাবার পরেও হাত তুলে নিজেকে জয়ী ঘোষণা করে? হিসেবটা কি মেলে?
আশা করি আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াসটি বিভ্রান্তি দূর করে হিসেবগুলো মেলাতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে।
আরিফ রহমান: বস্ত্রপ্রকৌশলে অধ্যয়নরত ব্লগার, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট।
ড. অভিজিৎ রায়: মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক।


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

[mukto-mona] Injustice

কূচক্রী মহলের গভীর সড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছেন এস পি মোস্তফা সাহেব। তিনি
একজন সত নিসষঠাবান ও মেধাবী বিসিএস(পুলিশ) কর্মকর্তা। এস এ পরিবহনের
মালিল একজন অসত লোক।অসদুপায়ে কোটো কোটি টাকা কামাই করে মিথ্যা মামলা দিয়ে
এবং কয়েক কোটি টাকা বিভিন্ন সংস্লিস্ট মহলে ঘুষ দিয়ে মিথ্যা স্বাক্ষী
দাঁড় করিয়ে সাজানো নাটকের মাধ্যমে মিথ্যা রায় প্রদান করিয়েছে।
জনাব এসপি মোস্তফা কামালকে আমি তার জন্মলগ্ন থেকে চানি এবং জানি।তিনি এমন
এ পরিবারের সন্তান যে পরিবারের মানুষদের ঘুষ খাওয়ার বা দুর্নীতি করার
নজির বা প্রয়োজন নেই।তাঁর পিতা বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য শিক্ষক।
আমি মামনীয় প্রধানমন্তী ও আইন বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি আকরষ্ণ করছি যেন
তাঁর মামলাটি যথাযত ভাবে পূন্রমূল্যায়ণ পূর্বক প্রকৃত অপরাধীর প্রাপ্য
সাস্তি পদান করা হয় এবং দেশে সত্যিকারের আইনের শাসন প্রতিস্ঠিত হয়।
সেফাত উল্লাহ্
ভিয়েনা
http://mzamin.com/details.php?mzamin=MzY1OA%3D%3D&s=Mg%3D%3D


------------------------------------

****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration:
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
-Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190Yahoo Groups Links

<*> To visit your group on the web, go to:
http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/

<*> Your email settings:
Individual Email | Traditional

<*> To change settings online go to:
http://groups.yahoo.com/group/mukto-mona/join
(Yahoo! ID required)

<*> To change settings via email:
mukto-mona-digest@yahoogroups.com
mukto-mona-fullfeatured@yahoogroups.com

<*> To unsubscribe from this group, send an email to:
mukto-mona-unsubscribe@yahoogroups.com

<*> Your use of Yahoo Groups is subject to:
http://info.yahoo.com/legal/us/yahoo/utos/terms/

[mukto-mona] KM Birla view- needs critical (unbiased) feedback.



Butter chicken at Birla

What succeeds at home may not work overseas. The chairman of Aditya Birla Group, Kumar Mangalam Birla, says Indian companies must be prepared to change long-held traditions if they are to thrive on the global stage.

Dec 2013 (http://www.mckinsey.com/insights/asia-pacific/butter_chicken_at_birla?cid=reimagining_india-eml-alt-mip-mck-oth-1312)

Mahatma Gandhi was killed in my great-grandfather's home. Near the end of his life, India's founding father used to stay at Birla House when he came to Delhi, and in January 1948 an assassin shot him point-blank as he walked out into the grassy courtyard where he held his daily prayer meetings. The house and garden are now a shrine and museum, visited by tens of thousands of admirers every year.

Growing up, I hardly needed to visit the memorial to be reminded of the values held by my close-knit Marwari family. Our tiny community, originally from Rajasthan, has had spectacular success in business, in part because we have maintained tight familial relations and traditional values—including many of those promoted by Gandhi himself. Marwari traders apprenticed their sons to other Marwari firms, loaned each other money, and insured one another's goods, confident that their partners held to these same codes. To some in the West, our ways probably looked old-fashioned: when I took over the company, in 1996, at age 29, after the sudden death of my father, no meat was cooked in Birla cafeterias; no wine or whiskey was served at company functions.

Seven years later, we bought a small copper mine in Australia. The deal wasn't a huge one, worth only about $12.5 million, but it presented me with a unique challenge of the sort I had not yet faced as chairman. Our newest employees were understandably worried about how life might change under Indian ownership. Would they have to give up their Foster's and barbecues at company events? Of course not, we reassured them.

But then several of my Indian managers asked why they should have to go meatless at parties, if employees abroad did not. At Marwari business houses, including Birla, the top ranks of executives traditionally have been filled with other Marwaris. I had introduced some managers from other firms and other communities, and they had a valid point. I was genuinely flustered. My lieutenants were relentless: I had never faced a situation where my own people felt so strongly about something. Yet at the same time, I knew vegetarianism was a part of our values as a family and as a company. A core belief! I had broken a lot of family norms, but I thought this one was going to be multidimensionally disastrous for me.

Fortunately, my grandparents merely laughed when I approached them with my dilemma: they understood better than I did that our company had to change with the times. If we wanted to make our mark on the world, we had to be prepared for the world to leave its mark on us.

The Aditya Birla Group is now one of India's most globalized conglomerates. We have operations in 36 countries on five continents and employ 136,000 people around the world. Over 60 percent of our revenues come from overseas. In the 1970s, my father, frustrated by the heavy-handed and corrupt "license raj" at home, expanded widely in Southeast Asia. Since I took over as chairman, we've made a dozen acquisitions overseas, worth a total of more than $8 billion, in sectors as varied as mining, pulp, aluminum, and insurance. We've branched out into Australia, America, Canada, and Europe. For the moment, our top management remains all-Indian, even if not all-Marwari. But I would guess that within a decade, half of our most senior staff will be non-Indian.

We have expanded internationally for many reasons—sometimes to spread our bets, sometimes because we found it impossible to open a plant in India as fast and as cheaply as we could abroad. In each case, we've based our decision on whether or not the deal would increase shareholder value. Yet when I look around me, I see too many Indian companies eager simply to be written about as global players. Sometimes that clouds the fundamentals of making an overseas acquisition or having an overseas presence. To globalize for the sake of globalizing, as a matter of ego, is perilous. Expanding internationally is hard, risky work. And as I was reminded the first time I saw butter chicken being served in a Birla canteen, the most difficult challenges turn out to be the ones you least expect.

One thing I've learned throughout this process of international expansion is that if Indian companies want to reinvent themselves as world-beaters, they should be prepared for some humbling experiences. Birla is a sixth-generation industrial concern; we sponsor hundreds of schools and temples around the country. Virtually every Indian recognizes our name. But when we decided to acquire a Canadian pulp mill in 1998, none of the 1,200 residents of Atholville, New Brunswick, had any idea who we were. We had to present ourselves, our credentials, our philosophy to everyone, from the local shopkeepers to the unions and provincial government. The team I'd sent to Canada to sign the deal was initially quite upset; they felt demeaned, as if they were being treated like fly-by-night operators.

The process of building trust does not end once the deal goes through. With any foreign acquisition, the new employees watch for signals to see if you are walking the talk, if your decisions match your promises. You have to be very careful that people don't read into things more than they should—how many people have been sent out from India, how often they report back to headquarters, whether they're treated any differently from non-Indian employees. All these things can make the difference between a company that integrates well into the larger group and one that resents being taken over.

Globalization is not just about putting up a plant. It's not about making an acquisition. It's much, much more. One has to tread cautiously, patiently. It has to be an evolutionary process. Before we made our biggest purchase to date—the $6 billion buyout of aluminum giant Novelis, in 2007—I asked the due-diligence team I sent out to give me substantive feedback about the attitudes of the company's American employees. I told them to engage the Novelis people in deep conversations to find out how they felt about working for an Indian conglomerate and what questions they had about our culture. The deal would be the second-largest Indian acquisition ever in North America and would make us the biggest producer of rolled aluminum in the world. But "soft" concerns were as important to me as statistics about plant machinery, profitability, productivity. I don't know if I'll ever write a check that big again; I certainly didn't want it to buy a hostile, disgruntled workforce.

Integrating all these global operations is obviously a challenge in itself. Some Indian companies prefer to leave their foreign acquisitions to operate on their own, almost as independent outposts. But if you want all your employees to share the same values and to feel a sense of kinship with one another, as we do, you've got to work at creating an emotional bond—the kind of thing that an Indian growing up hearing the name Birla, or attending a Birla school, would take for granted. By the same token, you have to be prepared to treat all your employees and managers, Indian and non-Indian, equally. The views of people outside India have to count as much as those of people here at home. It might take them longer to bond with the parent company, to think about the larger good rather than maximizing their silo operations. But the effort is worth it.

What's even more difficult for a tradition-bound company like ours, but just as valuable, is learning and importing values from the new acquisitions. This goes well beyond the food in the cafeteria. Before we started expanding overseas, the corporate presentations in our commodities businesses never discussed safety and the environment. Then we saw how our new employees operated. Their first slides always dealt with safety. They talked about near misses, fatal accidents. It was a huge deal—it came before any discussion of the competitive environment or profitability. Now we do the same. We have a deeper appreciation for the value of environmental sustainability.

Some lessons surprised me even more. Ironically, before we became more international, I used to be much more impressed by someone who could speak the Queen's English than, say, by a chartered accountant from Jodhpur whose spoken English required some effort to understand. Now when I look across all our operations in places like Brazil or Egypt or Thailand, I see a whole host of people who aren't comfortable in English, who need interpreters, but who are very, very good at what they do. Sadly, it took that experience for me to respect an accountant from Rajasthan—my home state—as much as a graduate of St. Stephen's in Delhi. At one time, we even wanted to run English classes for some of our employees! Now it's not an issue in my mind. If you can get your point across, if you are adding value, if you are competent, then bloody hell to your English.

More concretely, as we've grown, we've also had to learn new ways of structuring our organization. We've created positions for sector heads who control billions of dollars' worth of business—just as some of our foreign acquisitions did—rather than hundreds of millions.

The good news is that globalization gets easier over time: there is a snowball effect. The next time we bought a pulp mill in Canada, we were known. The New Brunswick government was comfortable with us; the mill workers knew who we were. Interestingly, as we become more global, people have real feedback to fall back on. When we acquired Columbian Chemicals, in 2011, executives at Columbian headquarters in Atlanta were able to go across town to the Novelis headquarters and ask about us—what we were all about, how we're run, what sort of autonomy we encouraged. They were talking to people to whom they could relate easily and who could give them honest and accurate information. Maybe not all of it was positive, of course, but at least it was real.

Now, when we want to recruit expat talent to move to India, it's much easier as well because they know about our global operations. They know that opportunities across the group are getting bigger and more interesting. That's made us a more attractive employer to non-Indians. As we are "going global," we're also finding that global executives are becoming more willing to "go Indian."

As I've said, this has taken years of painstaking work. It's not an overnight process, and it's not as easy as writing a check. There are opportunities out there for ambitious and well-run Indian companies—as long as they remember that the world will change them as much as they hope to change the world.

 


Get your own FREE website, FREE domain & FREE mobile app with Company email.  
Know More >


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___

[mukto-mona] Pizza outlet attacked as India, US fail to cool diplomat row



Pizza outlet attacked as India, US fail to cool diplomat row



NEW DELHI: Indian protesters ransacked a Dominos Pizza outlet in a Mumbai suburb, demanding a ban on US goods as officials from the two countries struggled to defuse a row over the arrest of an Indian diplomat in New York.

Police and the Indian franchise of the US chain said no-one was hurt in the attack, which came amid unrelenting rage in India over the arrest and subsequent strip-search of Devyani Khobragade for visa fraud and under-payment of her housekeeper.

India has demanded that the charges be dropped against the diplomat and her father threatened to start a fast if US authorities pressed ahead with the case.
US Secretary of State John Kerry expressed regret over the case in a phone call to India's national security adviser this week, but US prosecutors have defended the investigation against Khobragade and her treatment.
Police in Mumbai said they were stepping up patrolling of major US outlets including McDonald's after workers of the small Republican Party of India attacked the Dominos store. The group sent pictures to media organizations showing a broken glass door.

"The fact is that (the) American authorities have behaved atrociously with an Indian diplomat. And obviously, America has to make good for its actions," said Manish Tiwari, minister for information and broadcasting.
"So therefore, I think it is a legitimate expectation, that if they have erred, and they have erred grievously in this matter, they should come forth and apologize."
Khobragade was arrested last week and released on $250,000 bail after giving up her passport and pleading not guilty to charges of visa fraud and making false statements about how much she paid her housekeeper. She faces a maximum of 15 years in prison if convicted on both counts.

The US Justice Department confirmed that Khobragade was strip-searched after her arrest. A senior Indian government source has said the interrogation also included a cavity search, although US officials have denied this.
"I want these false and fabricated charges to be dropped," said Uttam Khobragade, the diplomat's father, adding that he would go on a hunger strike if his demands aren't met. "That will be my last option."
Protesters also gathered at the US consulate in Hyderabad for a second day on Friday, shouting slogans, local media said.
Furious that one of its foreign service officers had been handcuffed and treated like "a common criminal," India on Tuesday removed security barriers outside the US embassy in New Delhi and withdrew some privileges from US diplomats.

But the reaction was even more intense because none of the political parties preparing for next year's election wanted to be seen as weak against a superpower.
Politicians, including the leaders of the two main parties, refused to meet a delegation of visiting US lawmakers.
"Because of the election, they will try to outdo each other," said Neerja Chowdhury, a political analyst and a former political editor of Indian Express newspaper.
"They don't want to be seen as weak on the issue when the mood in the country is one of huge anger about this."

The party that runs India's most populous Uttar Pradesh state urged Khobragade to stand for parliament, highlighting how public outrage has turned the case into a battleground for votes.
"Whatever happened with her is condemnable," said Azam Khan, the state's urban development minister, according to media reports. "If she returns to India, we are ready to give her a ticket for the 2014 polls."
Breathless and indignant coverage by Indian TV news channels has added to a sense that national pride has been wounded.
There has been little focus, however, on the predicament of the housekeeper, whose lawyer says was denied her wages, underpaid and now feels it would be unsafe to return to India.
"One wonders why there is so much outrage about the alleged treatment of the Indian national accused of perpetrating these acts, but precious little outrage about the alleged treatment of the Indian victim and her spouse," Manhattan US Attorney Preet Bharara said in a statement on Wednesday.


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___