কেমন আছেন উপমহাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা?শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।। কেমন আছেন ভারতীয় উপমহাদেশীয় সংখ্যালঘুরা? ভারতীয় উপমহাদেশ বলতে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান। ভারতে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ট এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে মুসলমানরা। ভারতের ১৯৫১ সাল থেকে ২০১১ পর্যন্ত ষাট বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায় সেখানে হিন্দুসহ সকল ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে মুসলমানের সংখ্যা, খৃষ্টান সমান সমান। ওয়েব ঘেটে পাকিস্তানের আদমশুমারী অনুযায়ী ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যার হিসাব পাওয়া বেশ কষ্টকর। সম্ভবত: পাকিস্তান এক্ষেত্রে চালাকির আশ্রয় নিয়েছে। তবে সেখানে এবছর আদমশুমারী সম্পন্ন হয়েছে। পাকিস্তানে সংখ্যালঘুরা মারাত্মক রাষ্ট্রীয় বৈষ্যমের শিকার। বাংলাদেশে অনেকটা পাকিস্তানের ধারায় সংখ্যালঘু বা হিন্দুর সংখ্যা কমছে। যদিও ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে দেশে হিন্দুর সংখ্যা বেড়েছে? উপমহাদেশের এই তিন দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের আদমশুমারীর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। জনসংখ্যার নিন্মগতি যদি কোন ধর্মীয় গোষ্ঠীর নির্যাতনের সূচক হয় তবে সেই তালিকায় পাকিস্তান, বাংলাদেশের পর ভারতের স্থান বা বলা যায়, ভারতের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি অন্য দুই দেশের তুলনায় যথেষ্ট উন্নত।উইকিপিডিয়া জানায়: ভারতীয় সংবিধানের ৪২তম সংশোধনী হিসাবে ১৯৭৬ সালে ভারত ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃত হয়। ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে রাষ্ট্রে সকল ধর্ম সমানভাবে স্বীকৃত হবে। ভারত মুখ্যত ৪টি ধর্মের জন্মস্থানঃ সেগুলো হলো: হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ ও জৈন ধর্ম। ভারতীয় ইতিহাসে ধর্ম সর্বদাই সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসাবে ভূমিকা রেখেছে। ধর্মীয় বৈচিত্র ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতা দুটোই ভারতে স্বীকৃত রীতি। ধর্মীয় স্বাধীনতা সাংবিধানিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত। উত্তর-পশ্চিম ভারত বিশ্বের সবচেয়ে পুরাতন 'সিন্ধু সভ্যতা'-র পীঠস্থান। আজকের ভারতে বিশ্বের ৯০% হিন্দুর বসবাস। হিন্দু ধর্মীয় পীঠস্থান ও মন্দির ভারতের সর্বত্র। এলাহাবাদের 'কুম্ভমেলা' বিশ্বের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান, যেখানে সারাবিশ্বের হিন্দুরা একত্রে মিলিত হয় এবং ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করে। ত্রিবেণীসঙ্গম হচ্ছে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী নদীর সংযোগস্থল। ইন্ডিয়ান ডায়াস্পোরা পশ্চিমাবিশ্বে ভারতীয় ধর্মের প্রভাব বিস্তারে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। ইয়োগা (যোগ), মেডিটেশন (ধ্যান), আয়ুর্বেদ ওষুধ, কর্ম, পুনর্জন্ম ও অধ্যাত্বিকতা এতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। বেশকটি হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন, যেমন ইসকন আন্দোলন, ব্রহ্মকুমারী, আনন্দমার্গ ইত্যাদি ভারতীয় ধর্মীয় বিশ্বাস ও রীতিনীতি প্রসারে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।২০১১ সালের সেন্সাস হিসাবে ভারতে ৭৯.৮% হিন্দু, ১৪.২% ইসলাম এবং বাকি ৬% খৃস্টান, বৌদ্ধ, জৈন ও অন্যান্য ক্ষুদ্র প্রজাতি। খৃস্টানরা তৃতীয়। যোরোস্ট্রিয়ানিজম ও ইহুদীদের ভারতে প্রাচীন ইতিহাস বিদ্যমান। যোরোস্ট্রিয়ানিজম মূলত: পার্শি ও ইরানী এবং বাহাই ধর্মের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের বাস ভারতে, যদিও এসব ধর্মের উৎপত্তি ভারতে নয়। বাহাইরা মূলত কৃষ্ণ ও বৌদ্ধকে তাদের ঈশ্বর হিসাবে মান্য করে থাকে। বিশ্বের অন্যন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধর্মের সাথেও ভারতীয় অধ্যাত্মবাদ সম্পর্কযুক্ত। শিয়া সম্প্রদায়ের তৃতীয় বৃহত্তম সমাবেশ ভারতে। কমপক্ষে ২০ লক্ষ আহমদীয় মুসলিমের বাসস্থল ভারত। সুফিবাদের বেশকিছু পীঠস্থান যেমন, মঈনুদ্দিন চিশতি ও নাজিমুদ্দিন আউলিয়ার মাজার ভারতে অবস্থিত। তাজমহল ও কুতুব মিনারের মত বহু ইসলামী স্থাপত্য ভারতে। এসব পর্যটকদের আকৃষ্ট করে থাকে। ভারতে এখনো সাধারণভাবে মুসলিম ব্যক্তিগত ও পারিবারিক আইনে সম্প্রদায়গত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।আদমশুমারী অনুযায়ী ১৯৫১ সালে ভারতে হিন্দু জনসংখ্যা ছিলো ৮৪.১%, ২০১১-তে সেটা কমে ৭৯.৮০%। ১৯৫১ সালে মুসলমান ছিলো ৯.৮%, ২০১১-তে ১৪.২৩%। খৃস্টান সমান, অর্থাৎ ২.৩% ও বৌদ্ধ ০.৭৪% থেকে কমে ০.৭০% এবং শিখ ১.৭৯% থেকে কমে ১.৭২%। উইকিপিডিয়া সাম্প্রদায়িকতা টীকায় বলেছে, আব্রাহামিক ধর্ম, বিশেষত: ইসলামের আগমনের পূর্বে ভারতীয় অধিবাসীরা কখনোই এতটা বিভক্ত ছিলোনা। আধুনিক ভারতের ইতিহাসে সাম্প্রদায়িকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বৃটিশদের 'ডিভাইড ও রুলস' পলিসি ভারতকে হিন্দু-মুসলমান বিভক্ত করে এবং বৃটিশ শাসনাবসানে মুসলমানদের জন্যে পাকিস্তান ও হিন্দুদের জন্যে ভারত রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। পাকিস্তান এখন ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তান এবং ভারত 'রিপাবলিক অফ ইন্ডিয়া'। ভারত বিভক্তির ফলে দাঙ্গায় ওই সময় প্রায় ৫লক্ষ মানুষ মারা যায়। ১কোটি ২০ লক্ষ মানুষ দেশান্তরী হয়, যা আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে একটি অন্যতম বৃহত্তম দেশান্তরী ঘটনা। ভারতীয় প্রজাতন্ত্র ধর্ম-নিরপেক্ষ এবং সরকারের কোন আনুষ্ঠানিক ধর্ম নেই। যদিও ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষতা অনেক বিখ্যাত সমালোচকের দৃষ্টিতে 'হিন্দু-বিরোধী' ও 'সংখ্যালঘু তোষণ' বলে মনে করা হয়।
Religious
groupPopulation
% 1951Population
% 2011[57]Hinduism
84.1%
79.80%
Islam
9.8%
14.23%
Christianity
2.3%
2.30%
Sikhism
1.79%
1.72%
Buddhism
0.74%
0.70%
Jainism
0.46%
0.37%
Zoroastrianism
0.13%
n/a
Others/Religion not specified
0.43%
0.9%
পাকিস্তানের আদমশুমারী ওয়েবে পাওয়াটা বেশ কষ্টসাধ্য। যাও পাওয়া যায় তাতে ধর্মভিত্তিক পরিসংখ্যান মেলা দুস্কর। উইকিপিডিয়া জানায়, পাকিস্তান জাতি ও ধর্ম ভিত্তিক বৈচিত্রময় সমাজ। পশ্চিমা ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মানবাধিকার মনিটরিং গ্রূপগুলো জানায়, পাকিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মারাত্মক বৈষম্যের শিকার। ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত পাকিস্তানী প্রেসিডেন্টের তথ্য উপদেষ্টা ফারাহনাজ ইস্পাহানী জানান, সেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনসংখ্যা ১৯৪৭ সালে ২৩% থেকে নেমে ৩-৪%-এ দাঁড়িয়েছে। তিনি অবশ্য এজন্যে ইমিগ্রেশনকে দায়ী করেছেন। পাকিস্তান ন্যাশনাল ডাটাবেজ ও রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষের (এনএডিআরএ) ২০১২ সালের তথ্য অনুযায়ী পাকিস্তানে হিন্দুর সংখ্যা ১৪লক্ষ ১৪হাজার ৫২৭জন; খৃষ্টান ১২লক্ষ ৭০হাজার ৫১জন; আহমেদীয় ১২৫৬৮১জন; বাহাই ৩৩৭৩৪; শিখ ৬১৪৬; পার্শি ৪০২০; বৌদ্ধ ১৪৯২ এবং অন্যান্য ৬৬৮৯৮জন। ১৯৯৮ সালের সেন্সাস অনুযায়ী পাকিস্তানে হিন্দু ছিলো ১.২০%; খৃষ্টান ১.৯%;। পাকিস্তানে এক সময় কিছু ইহুদী ছিলো, তারা ১৯৪৮ সালে ইসরাইল চলে যায়।মার্কিন ষ্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা রিপোর্ট ২০০২-এ একটি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেছে, পাকিস্তানে শিয়া জনসংখ্যা ১০-১২%, যারমধ্যে ৯ লক্ষ ইসমাইলি সম্প্রদায়ের, যারা ধর্মীয় গুরু আগা খানের অনুসারী। ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়, খৃষ্টান ২ দশমিক ০৯মিলিয়ন; হিন্দু ১ দশমিক ০৩ মিলিয়ন, পার্শী-বৌদ্ধ-শিখ ২০হাজার করে এবং বাহাই ৩০ হাজার। ইশতিয়াক আহমদ এক বইয়ে লিখেছেন, নিরপেক্ষ ষ্টাডি মতে পাকিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুর সংখ্যা প্রায় ১০% এবং হিন্দু, খৃষ্টান ও আহমদীর সংখ্যা গড়ে প্রত্যেকে ৪০ লক্ষের মত। পাকিস্তানে সচরাচর সংখ্যালঘুর সংখ্যা কম দেখানো হয়। এটি বিশেষভাবে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জন্যে প্রযোজ্য। সরকারিভাবে আহমদিয়া সংখ্যা ৫০ লক্ষের কম বলা হলেও আহমদিয়ারা জানায়, তাদের সংখ্যা ১কোটি। পাকিস্তানে ১৯৫১, ১৯৬১, ১৯৭২, ১৯৮১ ও ১৯৯৮- এ আদমশুমারী হয় এবং ২০১৭-তে ১৯ বছর পর সম্পন্ন হয়েছে ষষ্ট আদমশুমারী।উইকিপিডিয়া জানায় ২০১৬ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৬কোটি ৯০লক্ষ (১৬৮৯৫৭৭৪৫)। এরমধ্যে ৮৭% মুসলমান, ১২% হিন্দু, ১% বৌদ্ধ ও ০.৫% খৃষ্টান। এতে আরো বলা হয়, ১৯৯২, ২০০১, ২০১৩ ও ২০১৪-তে হিন্দু বিরোধী দাঙ্গার ফলে হিন্দু জনসংখ্যা কমে যায়। বাংলাদেশ বিশ্বের ৯ম জনবহুল দেশ। এই দেশের ৯৮% বাঙ্গালী, বাকি ২% আদিবাসী, উপজাতি বা বিহারী। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী মূলতঃ ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী-উপজাতিদের নিয়ে এবং শুধুমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রায় ১১টি আদিবাসী-উপজাতি গ্রূপ বিদ্যমান। এগুলো হচ্ছে, চাকমা, ট্যানচঙ্গা, কুকি, বাওয়ন ও মারমা। ময়মনসিংহে আছে গারো সম্প্রদায়। নর্থ বেঙ্গলে সাঁওতালরা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিলো ৭কোটি ১০লক্ষ। ১৯৮০ সালে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ৯কোটি ৪লক্ষ। ২০১১ সালের মার্চে বাংলাদেশে আদমশুমারী হয় এবং তাতে জনসংখ্যা বলা হয় ১৪কোটি ২৩লক্ষ। জাতিসংঘ সাথে সাথে এই সংখ্যা নিয়ে আপত্তি তুলে এবং বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ সেটি বাতিল করে।পাকিস্তানের মত বাংলাদেশেও আদমশুমারীর বিশ্বাসযোগ্যতা কম। এমনকি প্রকৃত জনসংখ্যা জানাটাও কঠিন। ইউএস ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট ও পপুলেশন রেফারেন্স ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী ২০০৫ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৪৪ মিলিয়ন; ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক ২০০৮ সালে জানায় ১৬০ মিলিয়ন; সিআইএ ফ্যাক্টবুক ২০১০-এ বলে ১৫৬মিলিয়ন এবং ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রেফারেন্স ২০১০-এ বলে ১৬৪মিলিয়ন। কোনটা ঠিক? বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী। এখানে কোন ইহুদী বসবাস আছে বলে জানা যায়না। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা সেদেশে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশ বলে ধারণা করা হয়।
Sourc
Year
Population (millions)
US State Dept
2005
144
Population Reference Bureau
2005
144
World Bank
2008
160
CIA World FactBook
2010
156
World Population Reference
2010
164
২০১৩ সালের এক হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৮৯.১% মুসলমান, ১০% হিন্দু এবং ০.৯% অন্যান্য। ১৯৫১ সালে তদানীন্তন পূর্ব-পাকিস্তানে হিন্দু-মুসলমান জনসংখ্যার অনুপাত ছিলো ২২% ও ৭৮.৯%.। ১৯৭৪-এ এসে সেটি দাঁড়ায় ১৩.৫% ও ৮৫.৪%। ১৯৮১-তে ১২.১% ও ৮৬.৬%। ১৯৯১-এ ১০.৫% ও ৮৮.৩%। ২০০১-এ ৯.২% ও ৮৯.৭% এবং ২০১১-তে ৯.০% ও ৯০.০%। পিউ রিসার্স ষ্টাডি অনুযায়ী ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্য্য হবে ৭% এবং মুসলিম ৯২%। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০১৫-র শেষে এক জরীপ চালিয়ে বলেছে বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৬-র ২৩শে জুন ঢাকায় প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৫কোটি ৮৯লক্ষ। এরমধ্যে হিন্দু জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.৭%, সংখ্যায় যা দাঁড়ায় ১কোটি ৭০লক্ষ। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ছিলো ১কোটি ৫৫লক্ষ। ভারত নেপালের পর বাংলাদেশ তৃতীয় হিন্দু জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশ।ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ-এর আদমশুমারী অনুযায়ী দেখা যায়, ১৯০১ সাল থেকে পূর্ববঙ্গ, বা তদানিন্তন পূর্ব-পাকিস্তান বা আজকের বাংলাদেশে হিন্দুর সংখ্যা অনবরত কমছে। ১৯০১ সালে ওই ভূখণ্ডে হিন্দু জনসংখ্যা ছিলো ৩৩.০০%, ১৯১১-তে ৩১.৫০%; ১৯২১ সালে ৩০.৬০%; ১৯৩১ সালে ২৯.৪০%; ১৯৪১ সালে ২৮.০০%; ১৯৫১ সালে ২২.০৫%; ১৯৬১ সালে ১৮.৫০%; ১৯৭৪ সালে ১৩.৫০%; ১৯৮১ সালে ১২.১৩%; ১৯৯১ সালে ১০.৫১%; ২০০১ সালে ৯.২০% এবং ২০১১ সালে ৮.৯৬%। এখানে দ্রষ্টব্য যে, ভারত বিভাগের ফলে ১৯৪১ থেকে ১৯৫১ পর্যন্ত প্রায় ৬% হিন্দু কমে যায়। আবার ১৯৬১ থেকে ১৯৭৪ পর্যন্ত সময়ে কমে ৫%। এই সময়টায় মুক্তিযুদ্ধ এবং অনেক শরণার্থীর দেশে ফিরে না আসাটা কারণ হলেও এরপর আর হিন্দুর সংখ্যা কমে যাবার কথা নয়। কিন্তু ক্রমান্বয়ে কমেছে, এর কারণ মৌলবাদের উত্থান ও সংখ্যালঘু নির্যাতন। যদিও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান ঠিক হয়, তবে সেটি হবে একটি ব্যতিক্রম। একশ পনের বছরের পরিসংখ্যান কিন্তু সেকথা বলেনা।
Religious
groupPopulation
% 1951Population
% 1961Population
% 1974Population
% 1981Population
% 1991Population
% 2001Population
% 2011Islam
78.9 %
80.4 %
85.4 %
86.6 %
88.3 %
89.7%
90.0 %
Hinduism
22 %
18.5%
13.5%
12.1 %
10.5 %
9.2%
9.0%
Buddhism
0.7 %
0.7 %
0.6 %
0.6 %
0.6 %
0.7 %
0.6%
Christianity
0.3 %
0.3 %
0.2 %
0.3 %
0.3 %
0.3%
0.3%
Other religions / No religion
0.1 %
0.1 %
0.2 %
0.3 %
0.3 %
0.1%
0.1%
Declining Hindu population in Bangladesh region
Year
Percentage (%)
1901
33.00
1911
31.50
1921
30.60
1931
29.40
1941
28.00
1951
22.05
1961
18.50
1974
13.50
1981
12.13
1991
10.51
2001
9.20
2011
8.96
সূত্র: ভারত ১৯০১-১৯৪১; পাকিস্তান ১৯৫১-১৯৬১ এবং বাংলাদেশ ১৯৭৪-২০১১ পর্যন্ত আদমশুমারী পরিসংখ্যান।
উইকিপিডিয়া; গুগুল; তিন দেশের সেন্সাস। মার্কিন ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট। বিবিধ আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান। মিডিয়া এবং ওয়েব।
__._,_.___