মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: হিলারী-ট্রাম্প সম্ভবনা ৫০-৫০
ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান সম্মেলন শেষ। দুই দলের প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত। শুরু হয়েছে হোয়াইট হাউজ দখলের মূল লড়াই: হিলারী ভার্সেস ট্রাম্প। একজন মহিলা একটি বড় দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে মনোনীত হয়ে হিলারী রডহ্যাম ক্লিন্টন রেকর্ড করেছেন। যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তবে তিনি হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট। একই সাথে স্বামী-স্ত্রী প্রেসিডেন্ট হবার ইতিহাসও রচিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা প্রেসিডেন্ট পদে সরাসরি প্রতিদ্ধন্দীতাও এই প্রথম। পিতা-পুত্র প্রেসিডেন্টের রেকর্ড আছে বুশ পরিবারের দখলে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত হবে ট্রাম্প ডাইনেষ্টি। হিলারী বা ট্রাম্প ছাড়াও এই নির্বাচনে আরো ক'জন প্রার্থী আছেন, এদের মধ্যে লিবার্টেরিয়ান পার্টীর গ্যারী জনসন এবং গ্রীন পার্টীর জিল স্টেইন অন্যতম। আপাতত: ৪জন প্রার্থীর দু'জন পুরুষ; দু'জন মহিলা। শেষের দু'জনের তেমন পরিচিতি না থাকলেও তারা প্রার্থী, যদিও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে হিলারী ও ট্রাম্পের মধ্যে। কে হবেন প্রেসিডেন্ট অফ 'দি ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা'?
ট্রাম্প তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসাবে ইন্ডিয়ানার গভর্ণর মাইক পেনস এবং হিলারী ক্লিন্টন ভার্জিনিয়ার সিনেটর টম কেইন-কে নিয়েছেন। দুই ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বহু গুনে গুণান্বিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুখ্যত: ফোকাস থাকে দুই প্রধান প্রার্থীর ওপর, এবারো ট্রাম্প ও হিলারী মুখ্য থাকবেন। হিলারী ফার্স্ট লেডী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সিনেটর ছিলেন; তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ব্যাপক, ৪০ বছরের। পক্ষান্তরে বিলোনিয়ার ব্যবসায়ী ট্রাম্পের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ভান্ডার শূন্য। হিলারীর মত ব্যাপক পরিচিতিও তার ছিলোনা। প্রাইমারীর শুরু থেকে হিলারীর মনোনয়নের বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত থাকলেও ট্রাম্প রিপাবলিকান মনোনয়ন পাবেন সেটা কেউ ভাবেননি। যেই ক্যারিশমা দেখিয়ে তিনি দলীয় প্রার্থী হয়েছেন, একই কায়দায় প্রেসিডেন্ট হবেন না, একথা বলার কোন সুযোগ নেই। হিলারী বা ট্রাম্প, দু'জনেই নিগেটিভ প্রার্থী, ভোটারদের এদের মধ্যেই একজনকে বেছে নিতে হবে।
প্রাইমারীর শুরুতে রিপাবলিকান শিবিরে ১৭জন এবং ডেমোক্রেট শিবিরে ৬জন প্রার্থী ছিলেন। রিপাবলিকান টেড ক্রূজ এবং ডেমোক্রেট বার্নি স্যান্ডার্স শেষপর্যন্ত লড়েছেন এবং ট্রাম্প-হিলারীর ঘাম ছুটিয়েছেন। বার্নি হিলারীকে অনেকটা ধরে ফেলেছিলেন। শেষপর্যন্ত তিনি হিলারীকে সমর্থন জানালেও ক্রূজ ট্রাম্পকে এন্ডোর্স করেননি। এবারকার নির্বাচন নানান দিক থেকেই বৈচিত্রময়, দুই বড়দলের সম্মেলনও ছিলো উত্তেজনায় ভরপুর। ডেমোক্রেট ন্যাশনাল কনভেনশন (ডিএনসি) ব্যাপক হেভিওয়েট নেতাদের পদচারণায় মুখর ছিলো। প্রেসিডেন্ট ওবামা, ভাইস-প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফার্স্ট লেডী মিশেল ওবামা, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, কংগ্রেসের বিরোধী দলীয় নেত্রী ন্যান্সী পেলোসি-সহ সবাই হিলারীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। এথেকে স্পষ্ট যে, ট্রাম্পকে ঠেকাতে ওপর লেভেলে ডেমোক্রেটরা এককাট্টা। রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনও (আরএনসি) জমকালো ছিলো, কিন্তু বুশ পরিবার যাননি। যাননি সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মিট রামনি।এরপরও প্রশ্ন, ট্রাম্পকে কি ঠেকানো যাবে?
ডিএনসি শুরুর প্রাক্কালে সিএনএন জরীপে ট্রাম্প ৫% পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন (৪৪%-৩৯%)। সিবিএস জরিপ ১৪ই জুলাই বলেছে, জাতীয় পর্যায়ে ট্রাম্প-হিলারী সমান সমান, ৪০%। জুন মাসে একই জরীপে হিলারী ৬পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। ১৩ ই জুলাই অপর এক জরীপে বলা হয়েছে, ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেট ফ্লোরিডা ও ফিলাডেলফিয়ার ট্রাম্প এগিয়ে, এবং ওহাইওতে সমান সমান। ডিএনসি'র পর হয়তো হিলারীর এগিয়ে যাবার সম্ভবনা থাকবে, কিন্তু সেটাই শেষকথা নয়। কে জিতবেন তা জানার জন্যে আরো অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশের মিডিয়া হিলারীর জয়গান গাইলেও তাতে বিভ্রান্ত হবার সুযোগ নেই। এই মুহূর্তে দু'জনেরই সম্ভবনা ৫০-৫০। অবশ্য যেই জিতুক, তাতে বাংলাদেশের কিছু আসে-যায় না। যদিও ট্রাম্প জিতলে বিশ্বব্যাপী ডানপন্থীরা শক্তিশালী হবে। ট্রাম্প-পুটিন-মোদী এক লাইনে এলে বিশ্বে নুতন মেরুকরণ হবার সম্ভবনা থাকবে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে ইসলামী মৌলবাদীরা। মুসলিম বিশ্ব মোটামুটিভাবে এন্টি-ট্রাম্প। তবে ইসলামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বলেই ট্রাম্প জিতে যেতে পারেন।
ডিএনসি সম্মেলনের শুরুটা খুব ভালো ছিলোনা। উইকিলিক ডিএনসি'র ই-মেইল ফাঁস করে দিলে চেয়ারওম্যান ডেভি ওয়েসম্যান শুলজ পদত্যাগে বাধ্য হন। এটা ছিলো প্রথম ধাক্কা। সম্মেলনস্থলে বার্নি সমর্থকরা ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পরে।উইকলিংক ডিএনসি'র ই-মেইল প্রকাশ করলে তাতে দেখা যায় ডেমোক্রেট নেতারা হিলারীকে প্রাইমারীতে জেতানোর জন্যে পক্ষপাতিত্ব করেছেন। সিনেটর বার্নি আগেই এই অভিযোগ এনেছিলেন, তার কথা সত্য প্রমাণিত হয়। ডেভি শুলজ অবশ্য এমনিতেই তিনি পদত্যাগ করেননি, ওবামা তাকে সরে যেতে বলেন। ডেভির পদত্যাগে বার্নি সমর্থকরা খুশি হন, তারা বিক্ষোভ করেন এবং হিলারী সমর্থকদের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। বার্নি প্রথম দিনের সম্মেলনে জোরালো বক্তব্য রাখেন এবং ট্রাম্পকে হারানোর জন্যে ডেলিগেটদের প্রতি আহ্বান জানান। দ্বিতীয় দিন হিলারীর মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়ে গেলে অনেক বার্নি সমর্থক সম্মেলনস্থল থেকে ওয়াক-আউট করেন। সম্মেলনের চূড়ান্ত দিন বার্নি সমর্থকদের প্রথম সারি থেকে সরিয়ে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, বার্নি সমর্থকরা কি সবাই হিলারীকে ভোট দেবেন?
৪দিন ব্যাপী ডেমোক্রেট ন্যাশনাল কনভেনশন (ডিএনসি) আরম্ভ হয় সোমবার ২৫শে জুলাই ২০১৬ ফিলাডেলফিয়াতে। প্রথম দিনে ফার্স্ট লেডী মিশেল ওবামা এবং সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বক্তব্য রাখেন। বুধবার সম্মেলনের তৃতীয় দিনে নিউইয়র্ক সিটির সাবেক মেয়র ব্লুম্বার্গ হিলারির প্রতি তার সমর্থন জানান। ব্লুম্বার্গ প্রথমে ছিলেন ডেমোক্রেট, তারপর রিপাবলিকান এবং বর্তমানে নির্দলীয়। শিকাগো টাইমস বলেছে, ডিএনসি বার্নি স্যান্ডার্স এবং একই সঙ্গে আমেরিকার সাথে বিশ্বাসভঙ্গ করেছে। দ্বিতীয় দিনে রোলকলে হিলারী বিজয়ী হলে হাউজে বিপুল হাততালি পরে। হিলারির মনোনয়নের সাথে সাথে 'বার্নি অর বাস্ট' আন্দোলনের যবনিকা ঘটে। এরপর সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্লিন্টন ভাষণ দেন, যদিও তাকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিলো। প্রথম রাতে মিশেল ওবামার বক্তব্যে ডিএনসি আলোড়িত হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, 'আমি হিলারির সাথে আছি'। মিশেল হিলারীকে 'এন্ডোর্স' করেন। মিডিয়া অবশ্য মিশেলের ২০১৬-র ভাষণের পাশাপাশি ২০০৮-এ তিনি কিভাবে হিলারীকে নাস্তানাবুদ করেছিলেন সেই ভিডিও প্রকাশ করতে খুব দেরী করেনি। তৃতীয় দিনে ওবামা, ভাইস-প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বক্তিতা দেন। ওবামা বলেছেন, আমি নই, বিলও নয়, হিলারী আমাদের চেয়েও বেশি অভিজ্ঞ এবং যোগ্য। ওবামা ট্রাম্পকে ঠেকাতে সম্মোলনে ঝলসে ওঠেন।
রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশন (আরএনসি) শুরু হয় ১৮ জুলাই ক্লিভল্যান্ডে। শেষ হয় বৃহস্পতিবার। প্রথম দিনে ফ্লোরে কিছুটা হৈচৈ হয়। বিদ্রোহীরা চাচ্ছিলো সময় নষ্ট করতে, তারা দাবি জানায়, ডেলিগেটদের রোলকল করতে হবে। ট্রাম্প সমর্থকরা ইউএসএ ইউএসএ বলে পাল্টা চিৎকার করতে থাকে। এদিন রুডি জুলিয়ানী তার ভাষণে সবাইকে উজ্জীবিত করে তোলেন। প্রথম দিনে ট্রাম্পের স্ত্রী মেলাইনি ট্রাম্প সুন্দর ভাষণ দেন। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে যে, তার বক্তব্যের কিয়দংশ ২০০৮-এর মিশেল ওবামার ভাষণের হুবহু একই। পরে মেলাইনি'র স্টাফ রাইটার মেরেডিথ ম্যাক্লেভার এই ভুল স্বীকার করে দায়িত্ব নিয়ে দু:খ প্রকাশ করেন এবং পদত্যাগ করেন। ট্রাম্প পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেননি।তৃতীয় দিনে সাবেক স্পীকার নিউট গ্রীনিচ, টেড ক্রুজ, ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মাইক পেনস বক্তব্য রাখেন। গ্রীনিচ বলেন, আমরা রেডিক্যাল ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আছি। টেড তার ভাষণে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান, কিন্তু এন্ডোর্স করেননি। ট্রাম্প পরে বলেছেন, তিনি ক্রুজের সমর্থন চান না, এবং দিলেও তা ফিরিয়ে দেবেন। ট্রাম্পের পুত্রকন্যা, স্ত্রী সম্মেলনে জোরালো ভূমিকা রাখেন।
আরএনসি নিয়ে ডেমোক্রেট শিবির বেশ ক্ষুদ্ধ হয়, কারণ ক্লিভল্যান্ডে ওবামা, তার প্রশাসন ও হিলারীকে তুলাধোনা করা হয়। পূর্বাহ্নে ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ানার গভর্ণর মাইক পেনস-কে পরিচয় করিয়ে দেয়ার অনুষ্ঠানে রেডিক্যাল ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে ইভাঞ্জেলিকান ক্রিষ্টানদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এভাঞ্জেলিকানদের ক্ষমতা কেঁড়ে নেয়া হয়েছে, আমি সেটা ফেরত দেবো। তার মনোনীত ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রথম ভাষণে বলেন, আমি ক্রিষ্টান, রিপাবলিকান এবং রক্ষনশীল। ডিএনসি'র ই-মেইল কেলেঙ্কারী প্রেক্ষিতে হিলারী বলেছেন, এনিয়ে তার কিছু জানা নেই। ট্রাম্প বলেছেন, হিলারির উচিত ডেভির পদাঙ্ক অনুসরণ করে নির্বাচন থেকে সরে পড়া। সিনেটর সুমার বলেছেন, সম্মেলনের পূর্বমুহূর্তে এই লিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত। সম্মেলনের আগে হিলারী তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসাবে ভার্জিনিয়ার সিনেটর টীম কেইন-এর নাম ঘোষণা করেন। কেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, তিনি লেফটেনেন্ট-গভর্ণর থাকাকালীন দেড়লক্ষ ডলার উপঠৌকন নিয়েছিলেন। ক্লারিওন প্রজেক্ট নামের একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক অভিযোগ তুলেছে যে, কেইনের সাথে ইসলামিষ্টদের যোগাযোগ আছে। এতে বলা হয়, তিনি একজন হামাস সমর্থককে স্টেট্ ইমিগ্রেশন কমিশনে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি সন্দেহজনক মুসলিম ব্রাদারহুড সন্ত্রাসীর রিসিপশন ডিনারে অংশ নিয়েছেন এবং ভাষণ দিয়েছেন। আরো অভিযোগ যে, তিনি ইসলামিস্টদের থেকে ডোনেশন নিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেছেন, হিলারীর ই-মেইলগুলো থাকলে রাশিয়া যেন তাড়াতাড়ি তা প্রকাশ করে। পরে এনিয়ে সমালোচনা উঠলে, তিনি বলেছেন, ওটা তিনি তামাশা করেছেন। ট্রাম্প সাদ্দাম হোসেনের প্রশংসা করেছেন। এরআগে তিনি ইরাক যুদ্ধকে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক ভুল বলে আখ্যায়িত করেন। নর্থ ক্যারোলিনাতে মঙ্গলবার ৫জুলাই তিনি বলেছেন, ইরাক এখন সন্ত্রাসীদের হার্ভার্ড। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এফবিআই হিলারীর ই-মেইল কেলেঙ্কারী তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারী ব্যবস্থা নেয়া হবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছে। তবে এই অধ্যায়ের পুরোপুরি যবনিকা ঘটেছে কিনা স্পষ্ট নয়। স্টেট ডিপার্টমেন্ট ৭ জুলাই ঘোষণা করেছে যে তারা বিভাগীয় তদন্ত পুনরায় শুরু করেছে। জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট বুধবার ৬জুলাই বলেছে, হিলারীর বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা হবেনা। রিপাবলিকানরা এতে ক্ষিপ্ত। স্পীকার পল রায়ান এফবিআই ডিরেক্টর ও এটর্নী জেনারেলকে কংগ্রেসে ডেকে এনে সাক্ষ্য নিয়েছেন। রিপাবলিকানরা এফবিআই-কে বলেছে, হিলারী মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে কিনা তা তদন্ত করতে। ট্রাম্প বলেছেন, মিথ্যাবাদী হিলারী তার ই-মেইল রক্ষা করতে পারেনা, তিনি দেশ রক্ষা করবেন কিভাবে? এফবিআই মামলার সুপারিশ না করলেও বলেছে, হিলারী 'চরম অবজ্ঞাভরে' ক্লাসিফাইড ডকুমেন্টস হ্যান্ডেল করেছেন। সুতরাং ই-মেইল বিতর্ক নির্বাচনে ইস্যু থাকছে।
হিলারীকে যেমনি তার দল অন্যায়ভাবে সমর্থন দিয়েছে, ঠিক তেমনি রিপাবলিকান দল এবং ডেলিগেটরা ট্রাম্পকে কম জ্বালায়নি। এজন্যে জুনের শেষে রেগে ট্রাম্প বলেছিলেন যে, তার দল তাকে সমর্থন না করলেও তিনি জিতবেন। ডেলিগেট বিদ্রোহের জন্যে তিনি জেব বুশকে দায়ী করেন। সম্মেলনে তিনি বলেছেন, বার্ণির প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। নিশ্চিতভাবে সন্ত্রাস এবারকার নির্বাচনে মুখ্য হয়ে উঠবে। নিউজম্যাস্ক বলেছে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে হিলারী নমনীয়, এটা বোঝাতে প্যারোল ট্রাম্প জয়ী হবেন। জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে ট্রাম্প হিলারীকে 'নমনীয় প্রমানের চেষ্টা করলেও সেটা কঠিন হবে। কারণ গত একযুগ ধরে হিলারী বারবার প্রমান করেছেন যে , তিনি ওবামার চেয়ে বেশি কঠিন এবং মিলিটারী ব্যবহারে অনেক বেশি আগ্রহী। ট্রাম্প ডিএনসি'র সম্মেলন নিয়ে অভিযোগ করেন যে, প্রথম দিন দু'দিন সেখানে কোন আমেরিকান পতাকা ছিলোনা। বার্নি সমর্থকরা যেমনি অনেকে হিলারীকে ভোট দেবেন না, তেমনি রিপাবলিকানরাও অনেকে ট্রাম্পকে ভোট দেবেন না। তবে এই সংখ্যাটা বেশি হেরফের হলে ফলাফলেও হেরফের হবে। নির্বাচতি হচ্ছে, ৮ই নভেম্বর মঙ্গলবার। ক্ষমতার হাতবদল হবে ২০শে জানুয়ারী ২০১৭।