Banner Advertiser

Wednesday, August 27, 2014

[mukto-mona] পলাতক আসামির ইতরামির মোকাবেলায় জাতির লড়াকু বিবেক কোথায়?



বৃহস্পতিবার, ২৮ আগষ্ট ২০১৪, ১৩ ভাদ্র ১৪২১
পলাতক আসামির ইতরামির মোকাবেলায় জাতির লড়াকু বিবেক কোথায়?
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
মাঝে মাঝে মনে হয় এই কলাম লেখা, এই সাংবাদিকতা ছেড়ে দেই। এই কিছুকাল আগেও বাঙালীকে চল্লিশ বছর বয়সে বানপ্রস্থে যেতে বলা হতো। আমি এই আশি বছর বয়সেও বানপ্রস্থে যাইনি। সমানে কলম চালাচ্ছি। শিং ভেঙে এঁড়ে বাছুরদের সঙ্গে যুদ্ধ করছি। এটা আমার জন্য সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্যের কারণ, তাও বুঝতে পারছি না। আবুল মনসুর আহমদ ছিলেন আমাদের সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় এক বটবৃক্ষ। একবার আমার কলামিস্ট জীবনের সূচনায় তাঁর সঙ্গে একটি রাজনৈতিক বিষয়ে কলমযুদ্ধে জড়িত হয়েছিলাম। তিনি তখন বৃদ্ধ, আমি ছিলাম যুবক। কিন্তু বয়সের এই সীমারেখাটা মানি নাই। 
পরে একদিন 'ইত্তেফাক' অফিসে দেখা হতেই তিনি আমাকে বললেন, "আমি শুধু সাহিত্যিক নই, রসস্রষ্টা সাহিত্যিক হিসেবে জীবন শুরু করেছিলাম। যদি মাঝপথে এসে সাংবাদিকতা ও রাজনীতিতে ডুবে না যেতাম, তাহলে আমি কি হতাম বলো ত?" আমি মাথা চুলকে বলেছি, আপনি দুই বাংলার বাংলা সাহিত্যেই একজন দিকপাল হতেন। আবুল মনসুর আহমদ মৃদু হেসে বলেছেন, "তাহলে দ্যাখো, নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরেছি। সাংবাদিকতায় নেমে এই বয়সে এসে আমাকে এখন এঁড়ে বাছুরদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।''
এই এঁড়ে বাছুর বলতে তিনি কাকে বা কাদের বেঝাচ্ছেন সেটা বুঝতে সেদিন সেই অল্পবয়সেও আমার দেরি হয়নি। সেদিন তাঁর ওপর মনে মনে কুপিত হয়েছিলাম। কিন্তু আজ তাঁরই মতো পরিণত বয়সে পৌঁছে দীর্ঘায়ু সাংবাদিক হওয়ার যাতনা কোথায় তা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি। আমিও তো সাহিত্য চর্চা দ্বারা জীবন শুরু করেছিলাম। একটু নামটামও করেছিলাম। তারপর জীবিকার ধান্ধায় সাংবাদিকতায় চলে এলাম। তাও আবার রাজনৈতিক সাংবাদিকতায়। তার খেসারত এখন পদে পদে দিচ্ছি। আমার চারদিকে এখন এঁড়ে বাছুরদের হাম্বা রব । এই হাম্বা রবের সঙ্গে যখন গলা মেলাতে হয় তখন ভাবি, এই সাংবাদিকতা ছেড়ে দেই। 'অন্নচিন্তা চমৎকারাহ' ভেবে সিদ্ধান্ত আবার পাল্টাই।
গত শতকের ত্রিশের দশকে অজিত দত্ত ছিলেন একজন বিখ্যাত কবি। খুবই কম লিখতেন, মাঝ বয়সে একবার কবিতা লেখা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। তা দেখে তাঁর এক অল্পবয়সী শিষ্য-কবি ঠাট্টা করে তাঁকে উদ্দেশ করে একটি কবিতা লিখেছিলেন। তাতে ব্যঙ্গ করে বলা হয়েছিল, অজিত দত্ত ফুরিয়ে গেছেন। তাই আর কবিতা লিখতে পারছেন না। অজিত দত্ত সঙ্গে সঙ্গে একটি কবিতা লিখে ওই ছোকরা কবির ব্যঙ্গের জবাব দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, "তুমিও বিখ্যাত হলে সেই দুঃখে লিখিনা কবিতা।"
আমারও চারপাশে এখন অনেক এঁড়ে বাছুর বিখ্যাত কলামিস্ট হয়েছে, বিখ্যাত রাজনীতিক হয়েছে। তাদের অনেকের অর্বাচীন কথাবার্তা প্রচারের মিডিয়ার সংখ্যাও অস্বাভবিক হারে বেড়েছে। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ । এই মিডিয়া টকশোগুলোর লাগামহীন কথাবার্তা যদি বাকস্বাধীনতার প্রমাণ হয়, তাহলে অভিধানে স্বাধীনতা শব্দটির অর্থ বদলাতে হবে। আর এই টকশোগুলোর অধিকাংশের 'বিখ্যাত প-িতদের' কথাবার্তা শুনলে দুঃখে কলাম লেখা বন্ধ করতে ইচ্ছে হয়।
আমার কলামিস্ট জীবনের সূচনায় ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিব, তাজউদ্দীনের মতো নেতাদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করেছি। আগেই বলেছি, আবুল মনসুর আহমদ, খোন্দকার আব্দুল হামিদ, আবুল কালাম শামসুদ্দীনের মতো বটবৃক্ষ সাংবাদিক ও সাহিত্যিকদের সঙ্গে সেই অল্প বয়সে কলমযুদ্ধ করেছি। আর এই পরিণত বয়সে পৌঁছে আমাকে এখন খালেদা জিয়া (তাও ভাল), তারেক রহমানদের নিয়ে লিখতে হচ্ছে। তাদের অসত্য ও অর্বাচীন বক্তব্যের সমালোচনা করতে হচ্ছে। এটা কি আমার কলামিস্ট জীবনের উন্নতি, না অধঃপতন?
যুক্তির বদলে যুক্তি দেখানো যায়। কেউ ভুল বললে সেই ভুলও দেখিয়ে দেয়া যায়। কিন্তু যারা জেনেশুনে মিথ্যা বলেন, মিথ্যাকে তাদের রাজনীতির মূলধন করেন এবং দেশে একদল সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী গজায় সেই মিথ্যাকে তাদের পা-িত্য দ্বারা মুড়ে প্রচারের জন্য, সেই দেশে যুক্তি ও ইতিহাসের সত্যের কোন মূল্য আছে কি? নেহরু বলেছিলেন, "ইংরেজরা আমাদের দু'শ' বছর যাবত শাসন ও শোষণ করে একেবারে একটি রিক্ত জাতিতে পরিণত করে রেখে গেছে। সেজন্য তাদের দোষ দেই না। তাতে আমাদের বড় ক্ষতি হয়নি। ইংরেজেরা আমাদের বড় ক্ষতি করেছে, আমাদের ইতিহাস-বিকৃত করায়। এই ইতিহাস-বিকৃতি দ্বারা তারা আমাদের একটি হীনম্মন্যতা বোধসম্পন্ন জাতিতে পরিণত করে গেছে। এই হীনম্মন্যতা বোধমুক্ত হয়ে মাথা তুলতে আমাদের বহু শতাব্দী লাগবে।"
বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের মাত্র সাড়ে তিন বছর পর সামরিক অভ্যুত্থান এবং জিয়াউর রহমানের বন্দুকের শাসন দেশটির যে ক্ষতি করেনি; সেই ক্ষতি করেছে জিয়াউর রহমানের নিজের এবং তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলটির অবিরাম মিথ্যা-প্রচার ও ইতিহাস-বিকৃতির ফলে। '৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদারদের সঙ্গে কোলাবরেশন করে জামায়াত এবং স্বাধীনতার শত্রুরা যে অপরাধ করেছে, তার তুল্য অপরাধ করেছে বাংলাদেশেরই একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক এবং একটি তথাকথিত সুশীল সমাজ পরবর্তীকালে এই ইতিহাস-বিকৃতির সঙ্গে কোলাবরেশন করে। একশ্রেণীর সংবাদপত্রে কলাম লেখক হিসেবে এবং টেলিভিশনের একশ্রেণীর টকশোতে অংশগ্রহণকারী হিসেবে এদের আধিপত্ত ও প্রতিপত্তি এখন বেশি দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতার জন্য এরাই সবচাইতে বড় শত্রু।
এদের উৎসাহ ও সহযোগিতাতেই বহু দুষ্কর্মের জন্য অভিযুক্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান বিদেশে বসে গোয়েবলসীয় কায়দায় ইতিহাসের নামে নিত্যনতুন মিথ্যা প্রচার করছেন এবং এই প্রচারণা সম্পূর্ণ মিথ্যা জেনেও দেশে বসে সেই মিথ্যা পুনর্ব্যক্ত করছেন তার মা খালেদা জিয়া, তারপর তার দলের চাঁইরা এবং পরে এই মিথ্যাচারকে দেশময় প্রচার করে বেড়ান একশ্রেণীর সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী। 

লন্ডনে 'সানডে অবজার্ভার' নামে একটি বিখ্যাত সাপ্তাহিকের নাম সকলেরই জানা। তার মালিকানা বহুবার বদল হয়েছে। এই পত্রিকায় এক সময়ের মালিক তার নবনিযুক্ত সম্পাদকের সাংবাদিক সততা পরীক্ষার জন্য সম্পাদকের কাছে গিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল সম্পর্কে একটি মিথ্যা সংবাদ দিয়ে বলেছিলেন, "সংবাদটি সঠিক। আপনি এটি ছাপতে পারেন। সম্পাদক বলেছিলেন, আমি জানি সংবাদটি সত্য নয়। এই সংবাদটি অবজার্ভারে ছাপাতে হলে আগে আমাকে সম্পাদক পদ থেকে বরখাস্ত করতে হবে।"
বাংলাদেশে মালিকের মুখের ওপর এমন কথা বলার সৎ সাহস ও নৈতিক বল ক'জন সম্পাদকের বা সাংবাদিকের আছে তা নিয়ে প্রশ্ন করা চলে। দু'চার জন অবশ্যই আছেন। কিন্তু তাঁরা পালের গোদাদের কাছে হালে পানি পান না। আমার অনুজপ্রতিম বন্ধু-সম্পাদক আবেদ খানের অনেকে সমালোচনা করেন। বলেন, তাঁর লেখনি শক্তিশালী। কিন্তু কোন কাগজে তিনি টিকতে পারেন না। আমি এই সমালোচক/নিন্দুকদের বলি, আবেদ খান সম্পর্কে তাঁদের অভিযোগ সত্য। কিন্তু তাঁরা কি কখনও খুঁচিয়ে দেখেছেন আবেদ খান কেন কোন কাগজে টিকতে পারেন না? সেটা কি তাঁর 'জি হুজুর সম্পাদক' না হওয়ার নৈতিক সাহসের জন্য নয়? আজ যে কারণে তিনি নিন্দিত হচ্ছেন, ভবিষ্যতে একদিন এ কারণেই তিনি নন্দিত হবেন। বলা হবে, এক ভয়ানক দুঃসময়ে সম্পাদকের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য নিজের সুনাম নষ্ট করে লড়াই করেছেন।
বাংলাদেশে সংবাদপত্র শিল্পের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। কিন্তু সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উন্নতি হয়নি। একদল সাংবাদিক কিছু একটা হলেই সরকারের বিরুদ্ধে (বিশেষ করে সেই সরকার যদি আওয়ামী লীগের হয়) শোরগোল তোলেনÑ সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশেও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা যে আগের মতো সরকারের হাতে নেই; চলে গেছে বিগ বিজনেস ও কর্পোরেটগুলোর হাতে, এই সত্যটা কি সাংবাদিকরা বুঝেও বুঝে উঠতে পারছেন না?
বাংলাদেশ সরকার এখন জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করছেন। বর্তমানে বাজার থেকে সৎ সাংবাদিকতাকে তাড়িয়ে অসৎ সাংবাদিকতা যেভাবে মাথাচাড়া দিচ্ছে, তাতে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা অবশ্যই প্রণীত হওয়া যে প্রয়োজন, একথা সকলেই স্বীকার করছেন। ব্রিটেনেও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার নামে এমন যথেচ্ছাচার শুরু হয়েছিল যে, টাইমস প্রকাশনার মতো বিগ মিডিয়া গ্রুপের বিরুদ্ধে সরকার পুলিশী ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হয়েছেন। একজন সম্পাদক, একাধিক সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিডিয়া-মোগল নামে পরিচিত টাইমস প্রকাশনার মালিককে পর্যন্ত পুলিশের জেরার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তার বহুল প্রচারিত 'নিউজ অব দা ওয়ার্ল্ড' কাগজটি বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
ব্রিটেনের মতো অবাধ বাক স্বাধীনতার দেশে সরকার নতুন প্রেস কমিশন বসিয়েছেন, নতুন প্রেস ল' তৈরি করতে যাচ্ছেন, এই প্রেস ল'য়ের কঠোরতা শিথিল করার জন্য সাংবাদিকরা দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু তাঁরা একথা বলছেন না যে, সরকার মিডিয়ার স্বাধীনতা হরণ করতে চাচ্ছেন। বাংলাদেশে সরকার জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা প্রকাশ করতে না করতেই একশ্রেণীর সংবাদপত্র ও সাংবাদিক চিৎকার জুড়ে দিয়েছেন, "তাদের স্বাধীনতা গেল গেল।" দেশের মিডিয়া-জগতে এখন যে নৈরাজ্য তাতে একটি সম্প্রচার নীতিমালা অবশ্যই দরকার। তবে এই নীতিমালায় অনাবশ্যক বাধ্যবাধকতা থাকলে মিডিয়ার প্রতিনিধি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসে তার মীমাংসা করতে পারেন। তার আগেই সরকারকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বাক স্বাধীনতা হরণের ঢক্কানিনাদ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক প্রচারণাকে সাহায্য জোগাতে পারে, মিডিয়ার স্বাধীনতাকে সাহায্য জোগাবে না।
বাংলাদেশে এখন একটা ব্যাপার লক্ষণীয়, সৎ ও সাহসী সাংবাদিকরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন এবং নিজেদের সম্পাদকের দ্বারা যতটা নির্যাতিত হন, সরকারের হাতে আজকাল ততটা নির্র্যাতিত হন না। আমার আরেক অনুজপ্রতিম সাংবাদিক-বন্ধু চট্টগ্রামের আবুল মোমেন (শিক্ষাবিদ প্রয়াত আবুল ফজলের পুত্র) তার সৎ ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার জন্য খ্যাত। 'প্রথম আলো' দৈনিকের জন্মাবধি এই পত্রিকাটির সঙ্গে যুক্ত এবং এই পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরোর প্রধান ছিলেন। সৎ সাংবাদিকতার কারণে তিনি সম্পাদকের রোষে পড়েন এবং চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন। তিনি সরকারী রোষের শিকার হননি। সম্পাদকের দ্বারা নির্যাতিত এরকম সাংবাদিকের এক ডজনের মতো নাম আমি উল্লেখ করতে পারি।
সম্প্রতি লন্ডনে বসে বহু মামলায় অভিযুক্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান বিপুল অর্থ ব্যয়ে একটার পর একটা বৈঠক ডেকে যে সব মিথ্যাচার করছে, তা শুধু অসভ্যতা নয়, অনেক আইনজীবীর মতে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতার পর্যায়ে পড়ে। এই মিথ্যাচারের মুখোশ উন্মোচনের চাইতে আমাদের একশ্রেণীর নব্যবুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক তাকে বিপুলভাবে প্রচার করছেন। যে পরিবারের হাতে বঙ্গবন্ধু, চার জাতীয় নেতা, কর্নেল তাহের, তেরো শ' মুক্তিযোদ্ধার (জেলে ফাঁসি দিয়ে হত্যা) এবং আহসানউল্লা মাস্টার থেকে সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া পর্যন্ত অসংখ্য মানুষের রক্ত লেগে আছে বলে ব্যাপক অভিযোগ; সেই পরিবারের এক দুর্বৃত্ত পলাতক সন্তানের মুখে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে খুনী বলে উল্লেখ শুধু রাষ্ট্রের নয়, ইতিহাসেরও অমর্যাদা।
ক্ষমতায় থাকাকালে কত টাকা লুট করলে বছরের পর বছর বিদেশে রাজকীয় বিলাসে নির্বাসিত রাজা ফারুকের মতো বাস করা যায় এবং দু'হাতে টাকা বিলিয়ে অভিজাত সম্মেলন কক্ষে ভাড়াটে লোক জড়ো করে মিথ্যা প্রচার চালানো যায় তারেক রহমান তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই মিথ্যা প্রচারে যারা তাকে সাহায্য জোগাচ্ছেন তারা তার মতোই অপরাধী।
জর্জ বুশ জুনিয়র যখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হন তখন এক মার্কিন সাংবাদিক লিখেছিলেন, জর্জ বুশের মতো এক অর্ধশিক্ষিত ব্যক্তি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবে এবং তাকে নিয়ে লিখতে হবে, এটাই আমার সাংবাদিক জীবনের সবচাইতে বড় দুর্ভাগ্য। আমারও মনে হয় দীর্ঘ সাংবাদিক জীবনে আমার লেখায় তারেকের মতো দুর্বৃত্তের নামোচ্চারণ করতে হবে, এটাই আমারও সাংবাদিক জীবনের বড় দুর্ভাগ্য। এই দুর্ভাগ্যের কথা মনে হলেই ইচ্ছা জাগে এই কলাম লেখা ছেড়ে দেই।
তারেক রহমান লন্ডনে তার সাম্প্রতিক সভায় যেসব কথা বলেছেন, তার উল্লেখ করার বা প্রতিবাদ করার কোন দরকার নেই। এগুলো প্রতিবাদের অযোগ্য মিথ্যা। তারেক রহমান নিজে একথা জানেন এবং যারা তার এই মিথ্যচারকে ফলাও করে প্রচার করছেন, তারাও তা জানেন। এই অশ্লীল মিথ্যা দেশে-বিদেশে কাউকে বিশ্বাস করানো যাবে না জেনেও তারেক রহমান বিরাট অর্থ ব্যয়ে সম্মেলন ডেকে এগুলো কেন প্রচার করছেন?
আমার ধারণা, তিনি এখন ডেসপারেশনের ও হতাশার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছেন। তার মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে থাকলে বিস্ময়ের কিছু নেই। বিদেশে বসে একটার পর একটা চক্রান্ত চালিয়েও হাসিনা সরকারকে তারেক রহমান ক্ষমতাচ্যুত করতে পারেনি। জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশে জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিভীষিকার রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেও তারেক সফল হননি। শেষ আশা ছিল ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় এলে নরেন্দ্র মোদি তাকে 'ভাইপো' বলে আদর করে কাছে ডাকবে। সেই আশাতেও গুড়ে বালি। আর আন্দোলন করার মতো বিএনপির কোমরে জোর নেই। জামায়াতও দূরে দাঁড়িয়ে মজা দেখছে।
তারেক শয়নে স্বপনে এখন দুঃস্বপ্ন দেখছেন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, লুটপাট, দুর্নীতির এত সব মামলা, তা থেকে রক্ষা পাওয়ার এবং দেশে ফেরারও কোন উপায় নেই। চোখের সামনে আদালতের দ-ের দড়ি ঝুলতে দেখছেন। দেখতে পাচ্ছেন দল সাংগঠনিকভাবে ভেঙে পড়ছে। মা খালেদা ক্রমশ অথর্ব হয়ে পড়ছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারেক ক্রমশ প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছেন। ফলে খাঁচায় বন্দী হিংস্র চিতার মতো তার অবস্থা। তাকে বাঁচার জন্য রাজনীতিতে টিকে থাকতেই হবে। তাই একটার পর একটা ডেসপারেট এটেম্পট দ্বারা দেশের মানুষের দৃষ্টি তার দিকে ফেরানোর এই অবিরাম চেষ্টা। আন্দোলন করার ক্ষমতা নেই। দেশে ফেরার উপায় নেই। তাই বিদেশে বসে টাকা ছড়িয়ে মিথ্যাবাদী রাখাল বালকের এই ভূমিকা গ্রহণ। কিন্তু তার জন্য সেই মিথ্যবাদী রাখাল বালকের পরিণতিই যে অপেক্ষা করছে এটুকু বোঝার সুবুদ্ধি তার নেই। কেউ তাকে তা বোঝাচ্ছেও না।
ইংরেজীতে একটা কথা আছে 'লাইক ফাদার লাইক সান।' অর্থাৎ যেমন পিতা তেমন পুত্র। কথাটা জিয়া-পুত্র তারেকের জন্য সর্বাংশে সত্য। নির্মম চক্রান্তের রাজনীতিতে তারেক তার কালো চশমাধারী পিতা জিয়াউর রহমানকেও হারিয়ে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উচিত হবে, এই স্বখাত সলিলে নিমজ্জমান ব্যক্তির অতলে তলিয়ে যাওয়ার আগের প্রলাপোক্তিকে কোন গুরুত্ব না দেয়া। তাকে এবং তার বক্তব্যকে কোন প্রকার গুরুত্ব না দেয়াই হবে তার অতলে তলিয়ে যাওয়াকে দ্রুততর করা। আমাকেও যেন এই দুর্বৃত্তের নাম লেখার আবার তুলে এনে নিজের কলামিস্ট জীবনকে ধিক্কার জানাতে না হয়। কোন সন্দেহ নেই, বাংলার ইতিহাসে এই নাম একদিন মীরজাফর-পুত্র মীরনের সঙ্গে তুলিত হবে এবং সর্বকালের জন্য ধিকৃত হবে। আজ শুধু দরকার একদল সত্যসাধক সাংবাদিক ও ইতিহাসবিদের, যারা একুশ শতকের বাংলার জন্য ঘোর অভিশাপস্বরূপ এই পরিবারটির মিথ্যাচারের মুখোশ সাহসের সঙ্গে উন্মোচন করবেন।
লন্ডন মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৪।
 প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ২৮ আগষ্ট ২০১৪, ১৩ ভাদ্র ১৪২১




__._,_.___

Posted by: SyedAslam <Syed.Aslam3@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___

[mukto-mona] And How Does That Make You Feel, Bibi?



Ah ha ha -- buk Da fattya jai - --


This image of a combative Netanyahu, however, is misleading.
* * * * * * * * *
<< Netanyahu is risk-averse in terms of both his own political survival and Israel's national security -- and that extends to both making peace and making war. A peace agreement could endanger his political coalition or, potentially, the lives of Israelis, so he has avoided doing everything he can to reach one. Similarly, military operations can incur Israeli casualties and political fallout from dead soldiers, so he has generally avoided those too. If Netanyahu can stick to a safe status quo, that's his preferred option. >>


The psychology behind Israel's Gaza war and the truce that followed.
foreignpolicy.com





__._,_.___

Posted by: Farida Majid <farida_majid@hotmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___