সমাজের আক্রমণাত্মক ব্যাধি দুর্নীতি
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ভাবলেশহীন হয়ে স্বীকার করেছে আইন করে দুর্নীতি বন্ধ সম্ভব নয়। দুর্নীতি বন্ধে দেশের যে দুর্নীতি দমন বিভাগ বা দুদক রয়েছে- সে দুদকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ অনেক কর্মকর্তারই দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র জাহির হয়েছে। দুর্নীতি সমাজের আক্রমণাত্মক ব্যাধি।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, এসপি, ডিসি থেকে মন্ত্রী- এমনকি খোদ বিচারকের নামেও ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। দেশের সব সরকারই দুর্নীতিতে মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ।
দেশে ও জনগণের টাকা প্রকল্পের নামে হয় চুরি। পুকুর চুরি নয়; সাগর চুরি। কিন্তু জনগণ থাকে অন্ধকারে। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি কোনো পর্যায়েই দুর্নীতি বন্ধ নেই। খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা সবক্ষেত্রেই শুধু দুর্নীতি আর দুর্নীতি। দেশ ও জনগণের সচেতনতার জন্য ধারাবাহিকভাবে এখানে উল্লেখ করা হলো:
এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী
নজরুলের দুর্নীতি; অন্ধকারে দুদক:
এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী (ঢাকা) নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ, টেন্ডার জালিয়াতিসহ শতকোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে এখনো অন্ধকারে রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তার বিরুদ্ধে ৭০০ উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে আত্তীকরণের মাধ্যমে রাজস্ব খাতে নেয়া ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে উৎকোচ নেয়ার মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এসবের প্রমাণ সংগ্রহে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা। যেখানে অভিযোগ অনুসন্ধানে নামার পর কেটে গেছে প্রায় দুই বছর।
ঘুষের রাজ্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ:
দলীয় খোলস পাল্টিয়ে ঘুষ বাণিজ্যে মেতে উঠেছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। বিশেষ করে মিরপুর রূপনগর এলাকায় সেল পারমিশন (বিক্রয় অনুমতি), হস্তান্তর সূত্রে বা দানসূত্রে মিউটেশন (নামজারি), চালান পাস, লিজ দলিলের স্বাক্ষর, দায়মুক্তি সনদ ও হাজিরাসহ বিভিন্ন কাজ করতে এসে সেবাপ্রার্থীদের নির্ধারিত অঙ্কের ঘুষ গুনতে হচ্ছে। এরপর আছে দালালদের বাড়তি উৎপাত। কিছু চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে দালালদের সখ্য ব্যাপক। আর ঘুষ বাণিজ্যের মূলে রয়েছে এখানকার ক্যাশিয়ার দেলোয়ার হোসেন, নিম্নমান সহকারী ফরিদউদ্দীন কামাল, হিসাব সহকারী আশরাফুল আলম ও মোস্তফা কামাল শাহিন সিন্ডিকেট।
জানা গেছে, গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বিএনপি'র সমর্থক পরিচয়দানকারী এসব কর্মচারীরা এখন আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে জমি বরাদ্দ, ফ্ল্যাট বরাদ্দ, আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক রূপান্তরও প্লট একত্রীকরণসহ নানা দুর্নীতির কাজ করে আসছে। এভাবে ফরিদউদ্দীন কামাল সিন্ডিকেট খোলস পাল্টিয়ে সে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে কার্যালয়ের সবাইকে ম্যানেজ করে একই চেয়ারে ১৪ বছর ধরে কাজ করছে। ফলে মোটা অঙ্কের টাকা ছাড়া ফাইল নড়ছে না সেবাগ্রহীতাদের।
অভিযোগ রয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানির কারণে সেবা প্রার্থীরা বছরের পর বছর ঘুরছে। হয়রানির স্বীকার হয়ে তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে চিহ্নিত কর্মচারী ও দালালদের উৎপাত সম্পর্কে অভিযোগ করতে গেলেই বলা হয়ে থাকে- অভিযোগ দেন ব্যবস্থা নিচ্ছি। দায়ীদের বরখাস্ত করাসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসব কথা শুনে সেবাগ্রহীতা তার ফাইলের কথা চিন্তা করে খুব একটা কথা বাড়ায় না। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে তৃতীয় তলায় সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন কাজ করতে গিয়ে পদে পদে মানুষকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেয়া ও ভোগান্তির চিত্র।
মিরপুর থেকে আসা সেবা প্রার্থী সারোয়ার হোসেন জানায়, ফ্ল্যাটের নাম জারি করার জন্য কয়েকদিন ঘুরাঘুরি করছি। কিন্তু টাকা দিতে পারছি না বলে কিছুই হয়নি। সারোয়ার হোসেন ছাড়াও পশ্চিম দিকে সেবা গ্রহীতাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে দেখা যায়।
ঘুষের রেট কত? ঘুষের রেট উঠানামা করে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে। যে চেইন অনুযায়ী ফাইলটি উপরে যায় ওই কর্মকর্তা অনুযায়ী এসব রেটও নির্ধারিত হয় বলে জানালো বিভিন্ন কর্মচারী ও দালালরা। বিভিন্ন কাজের ঘুষ সম্পর্কে তারা জানায়, সেল পারমিশন (বিক্রয় অনুমতি) নিতে গেলে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। এছাড়া ফ্ল্যাটভিত্তিক সেল পারমিশন বাবদ বিভিন্ন টাকা টেবিলে টেবিলে ভাগ হয়। এছাড়া ফ্ল্যাটভিত্তিক সেল পারমিশন বাবদ পাঁচ হাজার টাকা, হস্তান্তর বা দানসূত্রে মিউটেশন বাবদ (নামজারি) দশ হাজার টাকা, মর্টগেজ পারমিশন বাবদ পাঁচ হাজার টাকা, চালান পাস বাবদ ৫০০ টাকা, লিজ দলিলের স্বাক্ষর বাবদ দুই হাজার টাকা, দায়মুক্তি সনদইস্যু বাবদ পাঁচ হাজার টাকা এবং প্রতি জনের হাজিরার জন্য এক হাজার টাকা করে ঘুষ দিতে হয়। এর নিচে অর্থ খরচ করলে কাজ হওয়া দুষ্কর।
এমরান নামের এক দালাল জানায়,ভাই এত কম টাকায় কাজগুলো দ্রুত করতে পারবেন না। কাজ তাড়াতাড়ি করতে গেলে বেশি ঘুষ দিতে হবে। এখন আমাদের পারিশ্রমিক বাদ দিয়েই রেটের কথা জানালাম।
হাউজিং কর্তৃপক্ষে ঘুরে-ফিরে মুখচেনা কর্মকর্তারাই: মুখচেনা কর্মকর্তারাই ঘুরে-ফিরে প্রেষণে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে পোস্টিং নিয়ে থাকে। পোস্টিং পেয়ে তারা নিজেদের নানা শক্তি সামর্র্থ্যের কথা বলে বেড়ায়। কেউ কেউ নিজের এলাকার শক্তিকেও বিশেষভাবে জাহির করে। সুবিধার আসায় এখানে আ'লীগের রাজনীতি করে। আসলেই কি তারা আ'লীগ খতিয়ে দেখলেই বেড়িয়ে আসবে আসল চেহারা।
জনগণের দেয়া ভ্যাট অসৎ- ব্যবসায়ী ও ভ্যাট কর্মকর্তারা আত্মসাৎ করছে; প্রতিকার নেই সরকারের:
পৃথিবীর অনেক দেশেই ভ্যাট উৎপাদক পর্যায়ে বিভিন্ন হারে প্রযোজ্য হয়। আমাদের দেশে বর্তমানে ভ্যাটের আওতা বেশ ব্যাপৃত। কারখানা থেকে উৎপাদিত পণ্যে ভ্যাট ঠিকমত আদায় হলে বিক্রয় পর্যায়ে ভ্যাট আদায় না করলেও চলতো। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে কারখানা থেকে ক্ষুদ্র দোকান পর্যন্ত সব প্রতিষ্ঠানই ভ্যাটের আওতায় রয়েছে। আমাদের দেশে যা কিছুই কেনা-বেচা হোক, তাতে সাড়ে সাত শতাংশ হতে পনের শতাংশ ভ্যাট সংযুক্ত হয়। ভ্যাট আদায়ের জন্য এনবিআর ভ্যাট কমিশনারেটকে দায়িত্ব দিয়েছে। প্রতিটি নগর, মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাট আদায়ের নির্দেশনা রয়েছে। রাজস্ব কর্মকর্তাগণ তাদের অধীনস্থ অঞ্চলে ভ্যাট আদায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত। ব্যবসার সাথে যারা জড়িত আছে তারা ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট কেটে রাখে। রাজস্ব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার দায়িত্ব পালনে যথাযথ ভূমিকা রাখছে না বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। ব্যবসায়ী কর্তৃক আদায়কৃত ভ্যাট যথাযথভাবে সরকারের কোষাগারে জমা না দিয়ে ব্যবসায়ীর সাথে যোগসাজশ করে রাজস্ব কর্মকর্তারা ভ্যাটের প্রকৃত চিত্রটি পাল্টে ফেলে। বলাবাহুল্য, ভ্যাট ক্রেতা পর্যায়ে আদায়ের হার শতভাগ না হলেও ৯০%-এর উপরে । রাজস্ব কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদেরকে দিয়ে আদায়কৃত ভ্যাট নিজের সামান্য লাভের বিনিময়ে ব্যবসায়ীদের আত্মসাৎ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে উন্নয়ন কার্যক্রমে ভ্যাট কেটে রেখে বিল পরিশোধ করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রেও রাজস্ব কর্মকর্তাদের নজরদারী না থাকার কারণে উন্নয়ন কাজ সংশ্লিষ্টরা নানা কায়দা-কানুন করে ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। সরকার প্রতিটি পণ্যের বিক্রিতে ভ্যাট সংযুক্ত করে রেখেছে। তাই দোকানদার বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্টরা এ ভ্যাট ক্রেতার কাছ থেকে 'পাই টু পাই' হিসাব করে আদায় করে নেয়। আদায়ের ক্ষেত্র এত ব্যাপক যে, সেখান থেকে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা পাওয়ার কথা। বাস্তবে দেখা যায়, অসৎ ব্যবসায়ীরা একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তার সামান্য লোভের কারণে আদায়কৃত ভ্যাট নিজেরা আত্মসাৎ করার সুযোগ পায়। ভ্যাটের এত বিস্তৃত একটি ক্ষেত্র থেকে আদায়কৃত ভ্যাটের টাকা কিভাবে সরকারি কোষাগারে জমা করা যায়- তা নিয়ে ভাবা দরকার। কতগুলো এমন খাত রয়েছে, যেখানে ব্যাপক পরিমাণ ভ্যাট ক্রেতারা পরিশোধ করলেও সরকার তার রাজস্ব পায় না। বড় বড় দোকান বা ডিপার্টমেন্টাল সেক্টরগুলোতে ভ্যাটের ডুপ্লিকেট খাতা, ডুপ্লিকেট রিসিট থাকে। সরকারি নির্দেশনা মতে, ভ্যাট সিøপ প্রদান বিক্রেতার জন্য বাধ্যতামূলক। কিন্তু ডুপ্লিকেট সিøপ ক্রেতাকে ধরিয়ে দেয়া হয়। যদি ক্রেতা রিসিট-এর জন্য চাপ দেয়, তাহলেই ডুপ্লিকেট সিøপ দেয়া হয়। যার সত্যতা যাচাই ক্রেতা কখনো এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজস্ব কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, দোকানদার অথবা বিক্রেতার সাথে শলা-পরামর্শ করে মাসে একটি নির্ধারিত অঙ্ক সরকারি কোষাগারে জমা করে, যা আদায়কৃত ভ্যাটের এক দশমাংশও নয়। বাকি নব্বই শতাংশ ভ্যাট রাজস্ব কর্মকর্তার খামখেয়ালীর কারণে আত্মসাৎ হয়। একটি পর্যবেক্ষণে জানা গেছে, একটি গড় মানের খাবার হোটেলে দৈনিক বিক্রির পরিমাণ দেড় হতে দুই লক্ষ টাকা। এ হিসেবে মাসে তার বিক্রির পরিমাণ হয় পঞ্চাশ হতে ষাট লক্ষ টাকা। এখানে তার ভ্যাট সরকারি কোষাগারে মাসে জমা হওয়ার কথা নব্বই হাজার টাকা। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ঐ মানের হোটেল মাসে ভ্যাট দিচ্ছে দশ হাজার হতে বিশ হাজার টাকা। বাকি সত্তর হাজার টাকা রাজস্ব কর্মকর্তার সাথে হোটেল মালিক আঁতাত করে আত্মসাৎ করে প্রতিমাসেই। এ ধরনের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান, ফাস্টফুডের দোকান, মিষ্টির দোকান, কনফেকশনারি থেকে সরকারি কোষাগারে জমা টাকার পরিমাণ খুবই কম। উৎপাদক পর্যায়ে ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে রাজস্ব কর্মকর্তা ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক অবৈধ সমঝোতার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বিক্রেতাকে ভ্যাটের যে চালানটি দেয়া হয় তাও থাকে ভুয়া। এভাবে জনগণের কাছ থেকে আদায়কৃত বিপুল পরিমাণ ভ্যাট দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তা ও দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীর পকেটে যাচ্ছে।
দেশে ফিরেও হাজীদের হয়রানি:
বিমানের জেদ্দা অফিসে হাজীদের লাগেজ সংগ্রহে নিয়োগকৃত এজেন্টের গাফিলতি, অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে নজিরবিহীন অব্যবস্থাপনা আর বিড়ম্বনার শিকার হয়েই দেশে ফিরছেন হাজীরা। ওই এজেন্ট যথাসময়ে ফ্লাইটে লাগেজ না পাঠানোর কারণে দেশে হাজীরা লাগেজ পাচ্ছেন না। লাগেজ আসতে ৪-৫ দিনও লাগছে। এই এজেন্ট নিয়োগে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে জেদ্দা অফিসের স্টেশন ম্যানেজার ও কান্ট্রি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। ১৪৩৫ হিজরী সনের হজ্জেও এই এজেন্ট নিয়োগ করে কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছিলো জেদ্দা অফিসের কান্ট্রি ম্যানেজার আবু তাহের।
দেশে ফিরে আসা হাজীরা বলেছেন, এবারের ফিরতি ফ্লাইটের মতো এত ভোগান্তি আর কখনো হয়নি। একদিকে জেদ্দা বিমানবন্দরে কড়াকড়ি, অপরদিকে লাগেজ নিয়ে বিড়ম্বনা। সব মিলিয়ে এবারের ফিরতি হজ্জ ফ্লাইট নিয়ে হাজীদের অভিযোগের শেষ নেই। বিমান কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিমানের বিদেশী এমডি কাইল হেউড সে হজ্জ পরিবহন নিয়ে এবার চরম গাফিলতি করেছে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত হজ্জ ব্যবস্থাপনায় সে কোনো কর্ণপাত করেনি। হজ্জযাত্রীদের সউদী পৌঁছানো থেকে শুরু করে অতিরিক্ত সøট নেয়া আর ফিরতি ফ্লাইটে হাজীদের সুষ্ঠুভাবে দেশে ফিরিয়ে আনার কোনো ব্যবস্থাপনায় এমডি কাইলকে পাওয়া যায়নি। যার খেসারত দিতে হয়েছে হাজীদের। জানা গেছে, ১৫ থেকে ২৭ ঘণ্টা বিলম্বিত ফ্লাইটে দেশে ফিরলেও হাজীদের অনেকের লাগেজ আসছে না। পবিত্র ভূমির খেজুর ও জমজমের পানির লাগেজ কবে আসবে, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট কোনো জবাব নেই বিমান কর্তৃপক্ষের।
অভিযোগ উঠেছে, হজ্জের দায়িত্ব পালন করতে সউদী আরব গিয়ে আরাম-আয়েশ আর শপিংয়ে ব্যস্ত বিমানের ৬০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। বিমান সূত্রে জানা গেছে, হাজীদের সেবার নামে সউদী গেলেও তারা সেখানে ঠিকভাবে কাজ করছে না। বেশিরভাগ সময় তারা ঘুরে-ফিরে আর কেনাকেটা করে সময় কাটাচ্ছে। জেদ্দা বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট টার্মিনালগুলোতে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে ফিরতি হজ্জ ফ্লাইটগুলো যথাসময়ে ঢাকায় আসতে পারছে না।