Thanks
বিচার হওয়া উচিত খোলামেলা প্রয়োজনে টিভিতে সম্প্রচার
লেখক: বিশেষ প্রতিনিধি | মঙ্গল, ২৯ নভেম্বর ২০১১, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪১৮
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার
প্রসঙ্গে মার্কিন
বিশেষ দূত
সফররত যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফেন জে র্যাপ বলেছেন, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম উন্মুক্ত হতে হবে। জনগণ যাতে সরাসরি বিচার সম্পর্কে জানতে পারে সেজন্য প্রয়োজনে টেলিভিশন বা রেডিওতে সরাসরি সম্প্রচার করা যায়। সাক্ষী গ্রহণ, যুক্তিতর্ক ও রুলিং সম্পর্কে সাপ্তাহিক রিপোর্ট প্রচার করা যায় গণমাধ্যমে। সত্তরের দশকে কম্বো-ডিয়ার যুদ্ধে সংঘটিত নিষ্ঠুরতার বিচার এভাবে সম্প্রচার করা হয়।
রাষ্ট্রদূত স্টিফেন জে র্যাপ গতকাল সোমবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন। তিনদিনের সফর শেষে আজ তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক এই বিশেষ দূত এর আগে দুইবার বাংলাদেশ সফর করেন। তৃতীয় সফরে এবারও তিনি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সদস্য, আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমদের সঙ্গেও মার্কিন দূত সাক্ষাত্ করেন।
রাষ্ট্রদূত স্টিফেন জে র্যাপ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, গত মার্চ মাসে আমি বিচার কাজের ধারাসমূহ সংশোধনীর জন্য দশটি প্রস্তাব রেখেছিলাম। এর মধ্যে পাঁচটি গৃহীত হলেও দুঃখজনকভাবে পাঁচটি যোগ করা হয়নি এখনো। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ' এখনো সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। আন্তর্জাতিক আদালতের সংবিধি ও মামলার মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে অন্যান্য দেশে।
ট্রাইব্যুনালের সদস্যদের সম্পর্কে আপত্তি বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন দূত বলেন, কারো পক্ষ অবলম্বন করে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। সেটা আমার কাজও নয়। এ দেশের আইনে ট্রাইব্যুনাল বদল করা যায় না। অন্য দেশে বিচারক নিয়ে প্রশ্ন উঠলে আদালত পরিবর্তন করা হয়। বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের আইনে বিদেশ থেকে আইনজীবী আনার বিধান নেই। তবে বিদেশি কৌঁসুলিকে আসার অনুমতি দেয়া যায় এবং আদালতের বাইরে তাদের পরামর্শ বা মতামত গ্রহণ করা যায়। ২০০৭ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পরামর্শ দিতে বৃটিশ আইনজীবী চেরি ব্লেয়ার এসেছিলেন।
স্টিফেন র্যাপ আরো বলেন, একাত্তরের সংঘটিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ, লুটপাটের জন্য বিচার হওয়া দরকার। ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। একইসঙ্গে অভিযুক্তদের নিজেদের পক্ষে আইনী সুযোগ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হলে মুক্তি দেয়া উচিত এবং দোষী সাব্যস্তদের শাস্তি দেয়া উচিত। এমনভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে হবে যাতে তা স্বচ্ছ ও সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।
তিনি আরো বলেন, ৪০ বছর আগে নৃশংস অপরাধের যারা শিকার হন তাদের জন্য এই বিচার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ বিচার সমগ্র বিশ্বের জন্য মডেল হতে পারে। আর এ ধরনের অপরাধীদের জন্যও বার্তা পৌঁছে দেবে যে, বিচারের ব্যবস্থা হবেই।
রাষ্ট্রদূত র্যাপ বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া আরো স্বচ্ছ ও নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সবধরনের সহায়তা দিবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি সরকার আর ২০১১ সালের ওবামা সরকারের নীতি এক নয়। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচারে সবধরনের সহায়তা দিবে।
__._,_.___