http://www.dailynayadiganta.com/details/16975
পাকিস্তানকে দুই টুকরো করেও ভারতের লাভ হয়নি : লে. জেনারেল জ্যাকব
'পাকিস্তানকে ভেঙে দেয়ার উদ্দেশ্য ছিল ভারতকে আরো বেশি নিরাপদ করে তোলা। কিন' তা হয়েছে কি?'- এ প্রশ্নের জবাবে জেনারেল জ্যাকব বলেন, 'না, সে উদ্দেশ অর্জিত হয়নি। বরং সম্পূর্ণ বিপরীত অবস'ায় সৃষ্টি হয়েছে। আগে দুটো ফ্রন্ট ছিল। একটি ছিল আমাদের পশ্চিমে পশ্চিম পাকিস্তান এবং আমাদের পূর্বে পূর্ব পাকিস্তান। দুই ফ্রন্টে ব্যবস'াপনা করতে গিয়ে আমাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করার সামর্থ্য পাকিস্তানের ছিল না। কিন' এখন তাদের সব সেনাবাহিনী এবং অস্ত্রশস্ত্র পাকিস্তানে (পশ্চিম পাকিস্তান) কেন্দ্রীভূত হয়েছে। ফলে তারা আরো সক্ষমভাবে এগুলোর ওপর নজর দিতে পারছে।'
জেনারেল জ্যাকবকে আরো প্রশ্ন করা হয়, 'আমরা কি '৭১-এর সামরিক বিজয় থেকে যথাযথ ফায়দা নিতে ব্যর্থ হয়েছি?'
উত্তরে তিনি বলেন, 'হ্যাঁ, কথাটি সঠিক। ১৯৭২ সালে সিমলা চুক্তির সময় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে আমাদের এক লিখিত চুক্তি করা উচিত ছিল যে, বর্তমান সীমারেখাই জম্বু-কাশ্মিরে অস্ত্রবিরতির সীমারেখা হবে। এ প্রস্তাবে ভুট্টো বলেন, তিনি লিখিতভাবে কিছু দিতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে দেশে ফিরে গেলে তাকে হত্যা করা হবে। পরে ভুট্টো তার মৌখিক বক্তব্য থেকেও সরে আসেন।'
'ওই সময়ের আপনার সব থেকে উল্লেখযোগ্য স্মৃতি কোনটি?'- এ প্রশ্নের জবাবে জেনারেল জ্যাকব বলেন, 'আমার মনে পড়ছে, ঢাকায় জেনারেল নিয়াজির সদর দফতরের কথা। যখন আমি তার কাছে আত্মসমর্পণের শর্তাবলি পড়ে শুনালাম, জেনারেল নিয়াজি কান্নায় ভেঙে পড়লেন। তার পরেই যা মনে পড়ে তা হলো- রমনা রেসকোর্সে প্রকাশ্যে এবং জনসমক্ষে জেনারেল নিয়াজির আত্মসমর্পণের সময় বাংলাদেশীরা তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। জেনারেল নিয়াজিকে সরিয়ে আনতে আমাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।'
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান সম্পর্কে লে. জেনারেল জ্যাকব বলেন, 'অনেকের বিপরীতে আমি কিন' সব সময় এই অবস'ান নিয়েছি যে মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালের অভিযানের সময় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা অনবরত পাকিস্তানিদের হয়রান করে গেছে এবং পাকিস্তানিদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা ছিল সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে আমরা এক হাজার ৪০০ সেনাসদস্যকে হারিয়েছি। চার হাজার সেনা বাংলাদেশ যুদ্ধে আহত হয়। মুক্তিবাহিনী সাহায্য না করলে আমাদের হতাহতের সংখ্যা আরো বেশি হতো। আমিই প্রথম ব্যক্তি যে নিজের লেখা বইয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকাকে তুলে ধরেছি।'
পাকিস্তানকে দুই টুকরো করেও ভারতের লাভ হয়নি : লে. জেনারেল জ্যাকব
আহমদ হাসান ইমরান ভারত
এ বছরের ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ইস্টার্ন কমান্ডের তদানীন্তন চিফ অব স্টাফ লে. জেনারেল জে. এফ. আর. জ্যাকব বেশ ক'টি পত্রপত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সাংবাদিকেরা তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, ১৯৭১ সালে ভারত পাকস্তানকে ভেঙে দিতে সমর্থ হয়েছে। এর ফলে ভারত কি আরো নিরাপদ হয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তরে জেনারেল জ্যাকব বলেন, 'ভারত পাকিস্তানকে রাষ্ট্র হিসেবে দুই টুকরো করে দিতে সমর্থ হলেও সামরিক দিক থেকে তাতে ভারতের লাভ হয়নি। বরং এর ফলে ভারত সামরিক দিক থেকে আরো বেশি চাপের মুখে পড়েছে।''পাকিস্তানকে ভেঙে দেয়ার উদ্দেশ্য ছিল ভারতকে আরো বেশি নিরাপদ করে তোলা। কিন' তা হয়েছে কি?'- এ প্রশ্নের জবাবে জেনারেল জ্যাকব বলেন, 'না, সে উদ্দেশ অর্জিত হয়নি। বরং সম্পূর্ণ বিপরীত অবস'ায় সৃষ্টি হয়েছে। আগে দুটো ফ্রন্ট ছিল। একটি ছিল আমাদের পশ্চিমে পশ্চিম পাকিস্তান এবং আমাদের পূর্বে পূর্ব পাকিস্তান। দুই ফ্রন্টে ব্যবস'াপনা করতে গিয়ে আমাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করার সামর্থ্য পাকিস্তানের ছিল না। কিন' এখন তাদের সব সেনাবাহিনী এবং অস্ত্রশস্ত্র পাকিস্তানে (পশ্চিম পাকিস্তান) কেন্দ্রীভূত হয়েছে। ফলে তারা আরো সক্ষমভাবে এগুলোর ওপর নজর দিতে পারছে।'
জেনারেল জ্যাকবকে আরো প্রশ্ন করা হয়, 'আমরা কি '৭১-এর সামরিক বিজয় থেকে যথাযথ ফায়দা নিতে ব্যর্থ হয়েছি?'
উত্তরে তিনি বলেন, 'হ্যাঁ, কথাটি সঠিক। ১৯৭২ সালে সিমলা চুক্তির সময় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে আমাদের এক লিখিত চুক্তি করা উচিত ছিল যে, বর্তমান সীমারেখাই জম্বু-কাশ্মিরে অস্ত্রবিরতির সীমারেখা হবে। এ প্রস্তাবে ভুট্টো বলেন, তিনি লিখিতভাবে কিছু দিতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে দেশে ফিরে গেলে তাকে হত্যা করা হবে। পরে ভুট্টো তার মৌখিক বক্তব্য থেকেও সরে আসেন।'
'ওই সময়ের আপনার সব থেকে উল্লেখযোগ্য স্মৃতি কোনটি?'- এ প্রশ্নের জবাবে জেনারেল জ্যাকব বলেন, 'আমার মনে পড়ছে, ঢাকায় জেনারেল নিয়াজির সদর দফতরের কথা। যখন আমি তার কাছে আত্মসমর্পণের শর্তাবলি পড়ে শুনালাম, জেনারেল নিয়াজি কান্নায় ভেঙে পড়লেন। তার পরেই যা মনে পড়ে তা হলো- রমনা রেসকোর্সে প্রকাশ্যে এবং জনসমক্ষে জেনারেল নিয়াজির আত্মসমর্পণের সময় বাংলাদেশীরা তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। জেনারেল নিয়াজিকে সরিয়ে আনতে আমাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।'
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান সম্পর্কে লে. জেনারেল জ্যাকব বলেন, 'অনেকের বিপরীতে আমি কিন' সব সময় এই অবস'ান নিয়েছি যে মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালের অভিযানের সময় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা অনবরত পাকিস্তানিদের হয়রান করে গেছে এবং পাকিস্তানিদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা ছিল সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে আমরা এক হাজার ৪০০ সেনাসদস্যকে হারিয়েছি। চার হাজার সেনা বাংলাদেশ যুদ্ধে আহত হয়। মুক্তিবাহিনী সাহায্য না করলে আমাদের হতাহতের সংখ্যা আরো বেশি হতো। আমিই প্রথম ব্যক্তি যে নিজের লেখা বইয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকাকে তুলে ধরেছি।'
__._,_.___