Banner Advertiser

Friday, December 30, 2011

[mukto-mona] Re: MODERATE -- udarakash08@yahoo.com posted to mukto-mona



I am not talking about misdeeds of Mr. Sahjahan Mia, obviously - he is a first class criminal; I am talking about his appearance. Won't you agree – that - he appears to be an innocent pious man? There are millions of criminals Camouflage themselves under religious garbs.  In my opinion, there should be additional punishment for exploiting religion, on top of their punishments for convicted crimes. Look at Jamatis; they are now Deshbondhus, and Awami leaguers are traitors.
 
But, I see a twinkle of light coming out of Bangladesh, the "14-party rally started at Suhrawardy Udyan, under the leadership of Sajeda Chowdhury. I have been begging Awami League for a long time to go back to their roots. We need a movement like '68 – '69. I believe - the 'Joy-Bangla' slogan will do the magic again to unite secular/progressive Bangladeshis. I congratulate Sajeda Chowdhury for initiating that movement, even though it's a late start.
 
The other day, we were discussing politics; we arrived at a conclusion that – only women can save the world, since uncorrupt male-politicians are so hard to find.
 
Jiten Roy


৫। মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনের কোটিপতি কর্মচারী আওয়ামী লীগার শাহজাহান মিয়ার বিদায় : চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির অভিযোগ
বহু জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে অপসারিত হয়েছে লেবার কাউন্সিলারের বহুল আলোচিত কোটিপতি কর্মচারী মোঃ শাজাহান মিয়া। মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানীতে দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক মাসেই বহুকোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। বিভিন্ন সূত্রমতে তার অসদোপায়ে উপার্জিত অর্থের পরিমান ১০ কোটি টাকার উপর হবে। জনশক্তি রপ্তানীকে ঘিরে মালয়েশিয়ায় যে অস্থিরতা বিরাজ করেছে তার জন্য অন্যতম দায়ী এই শাজাহান মিয়া। তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ বিপুল অংকের টাকায় তিনি অসাধু আদম বেপারীদের শত শত ভূয়া কাজের ফাইল অনুমোদন করিয়ে দিয়েছেন। টাকা ছাড়া কোন ফাইলই চলতো না। পরবর্তীতে ঐসব ভূয়া কাজে হাজার হাজার শ্রমিক এসে দিনের পর দিন মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করেছে। তাকে খুশী করাতে না পারলে শ্রমিক রপ্তানীর ফাইল হারিয়ে যেত, ডাষ্টবিন বা কার্পেটের তলায় পরে থাকতো। তিনি অবৈধ সুবিধার জন্য হাইকমিশনে একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে তুলেছিলেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দরোজা বন্ধ করে চলেছে লেন দেনের গোপন হিসাব নিকাশ। হাইকমিশনে তার দূর্নীতি ছিল ওপেন সিক্রেট। গর্ব করে তিনি বলেন, গত বছর এমন দিন গেছে ২০ হাজার রিঙ্গিত (প্রায় ৪ লাখ টাকা) না নিয়ে বাসায় গেলে রাতে ভালো ঘুম হতো না। কিন্তু বাংলাদেশের মিডিয়া তার এই আয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। গত বছর সংশ্লিষ্ট সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল মালয়েশিয়া এসে তার দুর্নীতি অনিয়মের প্রমান পেলে তাকে ঢাকায় বদলীর আদেশ করা হয়। কিন্তু তারপরও প্রায় ১ বছর তিনি বিভিন্ন অজুহাতে কর্মরত থাকেন। তবে হাইকমিশনেরই একটি গোপন সূত্র জানায়, ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে তিনি তখন ঐ বদলীর আদেশ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এমনকি মালয়েশিয়া সফরে আসা বিভিন্ন মাধ্যমকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে সবকিছু ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করতেন। কিন্তু দেশের পত্র পত্রিকায় ক্রমশঃ তার দুর্নীতির সংবাদ প্রচার হলে সরকার তাকে ষ্ট্যান্ড রিলীজ করে। কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে, ষ্ট্যান্ড রিলীজ হবার পরও অদৃশ্য সূতোর টানে বহুদিন তিনি বহাল তবীয়তেই বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মরত ছিলেন। বারবার তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবার উদ্যোগের কথা প্রচার হলেও রহস্যজনক কারনে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। কাজেই মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানীতে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও সৌভাগ্যবশতঃ রেহাই পেয়েছেন লেবার কাউন্সিলের সহকারী কোটিপতি কর্মচারী শাজাহান মিয়া।
মোঃ শাজাহান মিয়ার একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায় – মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ব্যাংকে তার বিপুল অংকের টাকা জমা রয়েছে। এর আগে কুয়েতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে চাকুরীরত থাকা অবস্থায় জনশক্তি রপ্তানীর অনুরূপ দুর্নীতির মাধ্যমেও অনেক টাকার মালিক হয়েছেন। তখনকার অসদোপার্জিত পুরো টাকাই দেশে কাজে লাগাতে পারলেও এবার তা করতে পারেন নি বর্তমান সরকারের ভয়ে। তিনি এখন চাকুরী হারানোর কোন ভয় করেন না বলেও ঐ সূত্রটি জানায়। চাকুরী চলে গেলে আবার তিনি মালয়েশিয়া এসে ব্যাবসা করবেন। মালয়েশিয়ায় ব্যাবসার পরিকল্পনা চুড়ান্তও করে রেখেছেন বলে সূত্রমতে জানা গেছে। তবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দাবী – যেভাবে এক বনরাক্ষসকে ধরে সরকার জনগনের প্রশংসা লাভ করেছিল, ঠিক তেমনি এই ধূর্ত কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নিতে পারলে প্রবাসীদের কাছেও অনুরূপ প্রশংসা পাবে সরকার। তার আয়ের উৎস তদন্ত করলে আরো অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে তারই ঐ ঘনিষ্ঠ সূত্রটি।

এমপি যখন আদম-পাচারকারী !সরকারি দল আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে মালয়েশিয়ায় 'আদম' পাচার নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনুষ্ঠানে যোগদানের নামে মোট ১৯ জনকে মালয়েশিয়ায় নেয়ার চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত ১৪ জনের ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান। মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক পরিচয়ে একটি ভুঁইফোড় সংগঠনের কর্মকর্তা সাজিয়ে শ্রমিক পাচারের এ ঘটনায় মালয়েশিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের এসব যুবককে 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক একটি ভুয়া অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা বলে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যান এমপি। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরে সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের আটকে দেয় এবং ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অসংলগ্ন বক্তব্য দিলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। সংসদ সদস্যও এ নিয়ে ইমিগ্রেশনের জেরার মুখে পড়েন। উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে এবং মালয়েশিয়াপ্রবাসী এক বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর (বর্তমানে মালয়েশীয় নাগরিক) সহযোগিতায় ১৪ জনকে ঢুকতে দেয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। পাঁচজনকে ফিরতি ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরে আসতে হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য ডা. এমএ মান্নান ঘটনা স্বীকার করে বলেন, দেশের কত ছেলেপেলে সাগর সাঁতরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। আমার সঙ্গে যারা গেছে, তারা তো টিকিট কেটে গেছে। তিনি এ প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন, আপনার কোনো অসুবিধা হয়েছে কি-না, হলে লেখেন। আমি হাইকমিশনারকে বলব ওদের ধরে দেশে পাঠিয়ে দিতে। আদমপাচারের উদ্দেশ্যে সাজানো ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছের আলী ও ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জমান খানের নামও অতিথি হিসেবে ছিল। সন্দেহ হওয়ায় এবং আগে থেকেই অবৈধ তত্পরতা আঁচ করতে পেরে তারা ওই সফর থেকে বিরত থাকেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, যে অনুষ্ঠানের কথা বলে তাদের মালয়েশিয়ায় নেয়া হয়, সে ধরনের কোনো অনুষ্ঠান মালয়েশিয়ায় হয়নি। প্রতারণার মাধ্যমে যাওয়া 'আদম'রা ইতোমধ্যে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্যের এ কেলেঙ্কারি নিয়ে মালয়েশিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। ন্যক্কারজনক এ ঘটনার কারণে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের ভাবমর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতারা। এমনিতে সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের সত্যিকারের পর্যটক বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদানে গমনেচ্ছুরা কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশনে অধিকতর অনাস্থার মুখোমুখি হবেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান তার সংসদ সদস্যের প্যাডে তিনদিনের ব্যবধানে ঢাকায় মালয়েশিয়ান হাইকমিশনে দুটি চিঠি দেন। দুটি চিঠিতেই ইস্যু নম্বর একই- ডিওসি ০৩০২-৬৩/১১। গত ১৯.৪.১১ তারিখে তিনি প্রথম চিঠি দিয়ে জানান, ২৪ এপ্রিল কুয়ালালামপুরে মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) মালয়েশিয়া ইউনিটের পক্ষ থেকে 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কুয়ালালামপুরের হোটেল ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুমে ২৪ এপ্রিল বিকাল ৩টায় এ অনুষ্ঠান হবে বলে চিঠিতে জানানো হয়। চিঠিতে সংসদ সদস্য নিজেকে এমজেএফের উপদেষ্টা জানিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে আমন্ত্রিত বলে উল্লেখ করেন। প্রথম চিঠিতে অনুষ্ঠানের অগ্রবর্তী দল হিসেবে তিনি পাঁচজনের নাম দিয়ে তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষকে। অগ্রবর্তী দলের এই পাঁচজন হচ্ছেন, কথিত এমজেএফের বাংলাদেশ শাখার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভাইস চেয়ারম্যান এরশাদুল হক দুলাল (পাসপোর্ট নং-ই ১১৯২৮০৭), যশোর থেকে এমজেএফের কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রতিনিধিত্বকারী চার সদস্য মো. শিমুল হোসাইন (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৮১৮৩৩), এ মাজেদ (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৭৭৮৭৫), শামীম হোসাইন (পাসপোর্ট নং-সি ১৩৫১০৪৫) এবং মিলন হোসাইন (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৭৩৯০০) অগ্রবর্তী এ দলটি ২০ এপ্রিল রাতে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হন যে, তারা মূলত অবৈধভাবে থেকে গিয়ে কাজ করার জন্যই মালয়েশিয়া গেছেন। দীর্ঘ সময় আটক রাখার পর ইমিগ্রেশন তাদের ফিরতি ফ্লাইটে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় বলে সূত্র জানায়।
সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান দ্বিতীয় চিঠিটি দেন দু'দিন পর ২১ এপ্রিল। এই চিঠিতেও একই অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা বলে মোট ১৮ জনের মালয়েশিয়া গমনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন তিনি। এই ১৮ জনের মধ্যে চারজনের নাম আলাদাভাবে ভিআইপি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অপর ১৪ জনকে এমজেএফের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলা নেতা হিসেবে দেখানো হয়। চিঠিতে উল্লিখিত চার ভিআইপি ছিলেন প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান এমপি নিজে, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, আসাদুজ্জমান খান এমপি ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার এপিএস মো. মোহসিন উদ্দিন। অপর ১৪ জন হচ্ছেন— মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী চেয়ারম্যান মোল্লা আতাউর রহমান মিন্টু (পাসপোর্ট নং-ই ০৩৮৮৩৮৫), প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি মো. রেজাউল হক টিটু (পাসপোর্ট নং-এএ ৯৭১৪৭৯১), কেন্দ্রীয় সদস্য চাঁদপুরের অর্জুন (পাসপোর্ট নং-এফ ০৬৩২১৭৬), এমজেএফের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস সহকারী মনির (পাসপোর্ট নং-এএ ৬৬৪৮৮৪৪), পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপকমিটির সদস্য মনির (পাসপোর্ট নং-সি ১৫০২০৩০), যশোরের সদস্য আলমগীর (পাসপোর্ট নং-এএ ৭৩৩৮১৪০), কুষ্টিয়ার সদস্য মহিবুর (পাসপোর্ট নং-ই ১০৪৯৪২৬), পাবনার সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন (পাসপোর্ট নং-জেড ০৬৩৮৫৪৭), যশোরের সদস্য আনারুল (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৮২১১৯), গাজীপুরের সদস্য সালেমন শেখ (পাসপোর্ট নং-ই ০৬০৫১৮০), শরীয়তপুরের আল-আমীন বেপারী পাসপোর্ট নং-এফ ০৬৪১৪৩৬), যশোরের সদস্য খোরশেদ আলম (পাসপোর্ট নং-সি ০৯৪৮০০৪), পিরোজপুরের সদস্য আবদুর রাজ্জাক (পাসপোর্ট নং-ই ০৬০৪১৯৫) এবং শরীয়তপুরের রহীম মাতবর (পাসপোর্ট নং-এফ ০২০৯২৪৫)। দু'দিন আগের প্রথম চিঠিতে ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুমে অনুষ্ঠানের সময় বিকাল ৩টা উল্লেখ করা হলেও দ্বিতীয় চিঠিতে জানানো হয় অনুষ্ঠান হবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।
সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে এই দলটি বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ২৩ এপ্রিল ৭টায় ঢাকা ত্যাগ করে। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে যখন তারা পৌঁছান, তখন সেখানকার স্থানীয় সময় রাত দেড়টা।
সূত্র জানায়, 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে যোগদানেচ্ছু বাংলাদেশী 'প্রতিনিধি দলের' অধিকাংশ সদস্যের চেহারা দেখে মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ রীতিমত তাজ্জব বনে যায়। সন্দেহ ঘনীভূত হলে তাদের আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সংসদ সদস্য ড. আবদুল মান্নানও তার সঙ্গীদের বিষয়ে ইমিগ্রেশনের জেরার মুখে পড়েন। যোগাযোগ করা হয় দু'দেশের উচ্চপর্যায়ে। একপর্যায়ে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশী এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরও সহায়তা চাওয়া হয়। তিনি ছুটে যান ৮৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিমানবন্দরে। সেখানে দেনদরবার করে সন্দেহভাজন ১৪ জনকে ইমিগ্রেশন পার করিয়ে আনেন। এমপি সাহেবও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। 'প্রতিনিধি দলের' কুয়ালালামপুরে থাকা-খাওয়ার কোনো পূর্বব্যবস্থা ছিল না। এমপির অনুরোধে ওই ব্যবসায়ী তাদের কুয়ালালামপুরের বিস্তানা হোটেলে তোলেন। খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তাত্ক্ষণিকভাবে ১ হাজার ৫২০ রিঙ্গিত পরিশোধ করেন।
পরের ঘটনা সম্পর্কে অনুসন্ধানে জানা যায়, মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন বা এমজেএফ নামক সংগঠনটি ভুঁইফোড়। এর কোনো কার্যক্রম কুয়ালালামপুরে নেই। হোটেল ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুম তো দূরের কথা, অন্য কোথাও ওই ধরনের কোনো আলোচনা অনুষ্ঠান হয়নি। হোটল বলরুমে কোনো বুকিংও ছিল না। ঢাকায় এমজেএফের একটি কমিটি আছে বটে, তার সঙ্গে বর্ণিত 'প্রতিনিধি দলের' জেলাওয়ারী সদস্যদের কোনো সম্পর্ক নেই। আদমপাচারের অংশ হিসেবেই ওই অনুষ্ঠানের বানোয়াট আমন্ত্রণপত্র তৈরি করা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যারা গেছেন, তারা কাজের সন্ধানে নিজেদের মতো করে গা-ঢাকা দিয়েছেন। সূত্র জানায়, ওদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এ নিয়ে কুয়ালালামপুরের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক নেতার সঙ্গে বিরোধ বাধে বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। এমপির সামনেই একজন ধোলাইয়ের শিকার হন। সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুয়ালালামপুরের এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, সংসদ সদস্য দেশের মান-সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে আদমপাচারের যে কাণ্ড করেছেন, তাতে আমরা বিব্রত। আওয়ামী লীগের আরেক নেতা মহসিনের মতে, কেলেঙ্কারির সঙ্গে মালয়েশিয়ায় নিয়োজিত বাংলাদেশ হাইকমিশনার আতিকুর রহমান জড়িত। হাইকমিশনারের এক নিকটাত্মীয় পুরো প্রক্রিয়ায় ছিলেন বলেও আওয়ামী লীগের এই নেতার দাবি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য হাইকমিশনার একেএম আতিকুর রহমানের সেলফোনে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি। বিমানবন্দর থেকে যে ব্যবসায়ী উদ্ধার করেছেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেন। ওই ব্যবসায়ী জানান, সরকারদলীয় লোকজনের অনুরোধে দেশের মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন। ওই রাতের মতো একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে তিনি সটকে পড়েন বলে জানান। তার নাম প্রকাশ না করারও অনুরোধ করেন তিনি। গোটা ঘটনাটি যে একটি কেলেঙ্কারি ছিল, তাও স্বীকার করেন ওই ব্যবসায়ী।
টেলিফোনে সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. এমএ মান্নানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, কত লোকই তো অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাচ্ছে। অবৈধভাবে সেখানে থেকে কাজের সন্ধান করছে। কেউ কাজ পাচ্ছে কেউ পাচ্ছে না। আমার সঙ্গে যারা গেছে, তারা তো টিকিট কেটে গেছে, সাগর সাঁতরে যায়নি। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে অবৈধভাবে আদম পাচারের মতো কাজে সম্পৃক্ত হওয়া কতটা সমীচীন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিক না হলে আপনি লিখে দিন। আমি মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারকে বলব ওদের ধরে যেন দেশে পাঠিয়ে দেন। মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সংগঠন আমাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি করে। আমি সংগঠনটির উপদেষ্টা। ওরা ক'দিন আগেও আরও কিছু ছেলেকে বিদেশে নেয়ার জন্য এসেছিল। অন্য দেশে প্রোগ্রাম দিয়েছিল। আমি বলেছি, সময় নেই। কুয়ালালামপুরে যে অনুষ্ঠানের কথা বলে লোক নেয়া হয়েছে, সে অনুষ্ঠান যে হয়নি তাও স্বীকার করেন সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, ওই অনুষ্ঠান না হলেও আমি যেহেতু আওয়ামী লীগদলীয় এমপি, তাই দলীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। হাইকমিশনারকে বলেছি, আমাদের ছেলেদের ভালো-মন্দ দেখাশোনা করার জন্য।
অনুষ্ঠানের আরেক আমন্ত্রিত এমপি আসাদুজ্জমান খান আমার দেশকে বলেন, দাওয়াত দেয়ার পরই আমার সন্দেহ হয়েছে। তাই আমি খোঁজখবর নিই। স্বাস্থ্য উপদেষ্টাও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চান। আমার সন্দেহের কথা আমি তাকেও জানাই। পরে তিনি ও আমি ওই সফর থেকে বিরত থাকি।
আরো পড়ুনঃ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার শিগগিরই খোলার গল্পের যেন শেষ নেই : সরকারের সঙ্গে দূরত্ব ও দুর্নীতি-অনিয়ম বড় অন্তরায়

এইসব বান্দরদের হাতে পড়েছে দেশের মর্যাদা! এদের না আছে বিদ্যা-বুদ্ধি, না আছে লজ্জা-শরম। দেশের রিপ্রিজেন্টেটিভ হওয়া তো দূরের কথা, এরা বিদেশের যেকোন হোটেলের বয় হওয়ার যোগ্যতাও রাখে না। গ্লোবালাইজেশনের যুগে আজ বাংলাদেশ কোনঠাসা। উন্নত বিশ্বের কোন দেশের মন্ত্রীদের সাথেই এরা কথা বলতে জানে না, ডিপ্লোম্যাটিক জ্ঞান তো দূরের কথা!

[আমেরিকা, কানাডা, ইউকে'র রাষ্ট্রদূতদেরও একই অবস্থা। দলবাজি করাই এদের বড় যোগ্যতা। ডক্টরেট ডিগ্রীধারী হলেও আওয়ামী লীগ করলে যা হয়! আওয়ামী লীগের রিক্সাওয়ালা আর প্রেসিডেন্ট একই রকম চিন্তা করে। পরবর্তীতে আরো ফিরিস্তি প্রকাশ করার ইচ্ছা রইল। ]

বিদেশের মাটিতে দেশের বারোটা বাজাচ্ছে যারা-২

লিখেছেন নয়ন খান ২৭ ডিসেম্বর ২০১১, রাত ১১:২০
৪। জাপানে রাষ্ট্রদূত এ কে এম মাজিবুর রহমান


পেশাদার কূটনীতিক এ কে এম মাজিবুর রহমান ভূইয়া গত বছর জাপানে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। রাষ্ট্রদূতের সোস্যাল সেক্রেটারি হিসেবে একজন জাপানি মহিলা কর্মরত ছিলেন। কিন্তু সেই মহিলা রাষ্ট্রদূত মাজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেছেন। এ-সংক্রান্ত অভিযোগ তিনি টোকিওতে অবস্থিত সব বিদেশী দূতাবাসকে ই-মেইলের মাধ্যমে অবহিত করেছেন। পদত্যাগকারী মহিলা সম্প্রতি যৌন হয়রানির অভিযোগে
রাষ্ট্রদূত মাজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
Majibur new envoy to Japan

পড়ুন তিন রাষ্ট্রদূতের অপকর্মে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ভূলুণ্ঠিত

নারী কেলেঙ্কারি - জাপানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে

উল্লেখ্য, বর্তমানে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের নাম শেখ হাসিনার পারিবারিক বন্ধু - জীবন রঞ্জন মজুমদার। অবশেষে উন্মাদ নেত্রী রতন চিনেছেন।

৫। মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনের কোটিপতি কর্মচারী আওয়ামী লীগার শাহজাহান মিয়ার বিদায় : চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির অভিযোগ
বহু জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে অপসারিত হয়েছে লেবার কাউন্সিলারের বহুল আলোচিত কোটিপতি কর্মচারী মোঃ শাজাহান মিয়া। মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানীতে দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক মাসেই বহুকোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। বিভিন্ন সূত্রমতে তার অসদোপায়ে উপার্জিত অর্থের পরিমান ১০ কোটি টাকার উপর হবে। জনশক্তি রপ্তানীকে ঘিরে মালয়েশিয়ায় যে অস্থিরতা বিরাজ করেছে তার জন্য অন্যতম দায়ী এই শাজাহান মিয়া। তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ বিপুল অংকের টাকায় তিনি অসাধু আদম বেপারীদের শত শত ভূয়া কাজের ফাইল অনুমোদন করিয়ে দিয়েছেন। টাকা ছাড়া কোন ফাইলই চলতো না। পরবর্তীতে ঐসব ভূয়া কাজে হাজার হাজার শ্রমিক এসে দিনের পর দিন মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করেছে। তাকে খুশী করাতে না পারলে শ্রমিক রপ্তানীর ফাইল হারিয়ে যেত, ডাষ্টবিন বা কার্পেটের তলায় পরে থাকতো। তিনি অবৈধ সুবিধার জন্য হাইকমিশনে একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে তুলেছিলেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দরোজা বন্ধ করে চলেছে লেন দেনের গোপন হিসাব নিকাশ। হাইকমিশনে তার দূর্নীতি ছিল ওপেন সিক্রেট। গর্ব করে তিনি বলেন, গত বছর এমন দিন গেছে ২০ হাজার রিঙ্গিত (প্রায় ৪ লাখ টাকা) না নিয়ে বাসায় গেলে রাতে ভালো ঘুম হতো না। কিন্তু বাংলাদেশের মিডিয়া তার এই আয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। গত বছর সংশ্লিষ্ট সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল মালয়েশিয়া এসে তার দুর্নীতি অনিয়মের প্রমান পেলে তাকে ঢাকায় বদলীর আদেশ করা হয়। কিন্তু তারপরও প্রায় ১ বছর তিনি বিভিন্ন অজুহাতে কর্মরত থাকেন। তবে হাইকমিশনেরই একটি গোপন সূত্র জানায়, ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে তিনি তখন ঐ বদলীর আদেশ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এমনকি মালয়েশিয়া সফরে আসা বিভিন্ন মাধ্যমকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে সবকিছু ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করতেন। কিন্তু দেশের পত্র পত্রিকায় ক্রমশঃ তার দুর্নীতির সংবাদ প্রচার হলে সরকার তাকে ষ্ট্যান্ড রিলীজ করে। কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে, ষ্ট্যান্ড রিলীজ হবার পরও অদৃশ্য সূতোর টানে বহুদিন তিনি বহাল তবীয়তেই বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মরত ছিলেন। বারবার তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবার উদ্যোগের কথা প্রচার হলেও রহস্যজনক কারনে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। কাজেই মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানীতে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও সৌভাগ্যবশতঃ রেহাই পেয়েছেন লেবার কাউন্সিলের সহকারী কোটিপতি কর্মচারী শাজাহান মিয়া।
মোঃ শাজাহান মিয়ার একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায় – মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ব্যাংকে তার বিপুল অংকের টাকা জমা রয়েছে। এর আগে কুয়েতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে চাকুরীরত থাকা অবস্থায় জনশক্তি রপ্তানীর অনুরূপ দুর্নীতির মাধ্যমেও অনেক টাকার মালিক হয়েছেন। তখনকার অসদোপার্জিত পুরো টাকাই দেশে কাজে লাগাতে পারলেও এবার তা করতে পারেন নি বর্তমান সরকারের ভয়ে। তিনি এখন চাকুরী হারানোর কোন ভয় করেন না বলেও ঐ সূত্রটি জানায়। চাকুরী চলে গেলে আবার তিনি মালয়েশিয়া এসে ব্যাবসা করবেন। মালয়েশিয়ায় ব্যাবসার পরিকল্পনা চুড়ান্তও করে রেখেছেন বলে সূত্রমতে জানা গেছে। তবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দাবী – যেভাবে এক বনরাক্ষসকে ধরে সরকার জনগনের প্রশংসা লাভ করেছিল, ঠিক তেমনি এই ধূর্ত কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নিতে পারলে প্রবাসীদের কাছেও অনুরূপ প্রশংসা পাবে সরকার। তার আয়ের উৎস তদন্ত করলে আরো অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে তারই ঐ ঘনিষ্ঠ সূত্রটি।

এমপি যখন আদম-পাচারকারী !সরকারি দল আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে মালয়েশিয়ায় 'আদম' পাচার নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনুষ্ঠানে যোগদানের নামে মোট ১৯ জনকে মালয়েশিয়ায় নেয়ার চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত ১৪ জনের ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান। মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক পরিচয়ে একটি ভুঁইফোড় সংগঠনের কর্মকর্তা সাজিয়ে শ্রমিক পাচারের এ ঘটনায় মালয়েশিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের এসব যুবককে 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক একটি ভুয়া অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা বলে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যান এমপি। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরে সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের আটকে দেয় এবং ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অসংলগ্ন বক্তব্য দিলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। সংসদ সদস্যও এ নিয়ে ইমিগ্রেশনের জেরার মুখে পড়েন। উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে এবং মালয়েশিয়াপ্রবাসী এক বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর (বর্তমানে মালয়েশীয় নাগরিক) সহযোগিতায় ১৪ জনকে ঢুকতে দেয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। পাঁচজনকে ফিরতি ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরে আসতে হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য ডা. এমএ মান্নান ঘটনা স্বীকার করে বলেন, দেশের কত ছেলেপেলে সাগর সাঁতরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। আমার সঙ্গে যারা গেছে, তারা তো টিকিট কেটে গেছে। তিনি এ প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন, আপনার কোনো অসুবিধা হয়েছে কি-না, হলে লেখেন। আমি হাইকমিশনারকে বলব ওদের ধরে দেশে পাঠিয়ে দিতে। আদমপাচারের উদ্দেশ্যে সাজানো ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছের আলী ও ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জমান খানের নামও অতিথি হিসেবে ছিল। সন্দেহ হওয়ায় এবং আগে থেকেই অবৈধ তত্পরতা আঁচ করতে পেরে তারা ওই সফর থেকে বিরত থাকেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, যে অনুষ্ঠানের কথা বলে তাদের মালয়েশিয়ায় নেয়া হয়, সে ধরনের কোনো অনুষ্ঠান মালয়েশিয়ায় হয়নি। প্রতারণার মাধ্যমে যাওয়া 'আদম'রা ইতোমধ্যে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্যের এ কেলেঙ্কারি নিয়ে মালয়েশিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। ন্যক্কারজনক এ ঘটনার কারণে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের ভাবমর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতারা। এমনিতে সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের সত্যিকারের পর্যটক বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদানে গমনেচ্ছুরা কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশনে অধিকতর অনাস্থার মুখোমুখি হবেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান তার সংসদ সদস্যের প্যাডে তিনদিনের ব্যবধানে ঢাকায় মালয়েশিয়ান হাইকমিশনে দুটি চিঠি দেন। দুটি চিঠিতেই ইস্যু নম্বর একই- ডিওসি ০৩০২-৬৩/১১। গত ১৯.৪.১১ তারিখে তিনি প্রথম চিঠি দিয়ে জানান, ২৪ এপ্রিল কুয়ালালামপুরে মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) মালয়েশিয়া ইউনিটের পক্ষ থেকে 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কুয়ালালামপুরের হোটেল ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুমে ২৪ এপ্রিল বিকাল ৩টায় এ অনুষ্ঠান হবে বলে চিঠিতে জানানো হয়। চিঠিতে সংসদ সদস্য নিজেকে এমজেএফের উপদেষ্টা জানিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে আমন্ত্রিত বলে উল্লেখ করেন। প্রথম চিঠিতে অনুষ্ঠানের অগ্রবর্তী দল হিসেবে তিনি পাঁচজনের নাম দিয়ে তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষকে। অগ্রবর্তী দলের এই পাঁচজন হচ্ছেন, কথিত এমজেএফের বাংলাদেশ শাখার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভাইস চেয়ারম্যান এরশাদুল হক দুলাল (পাসপোর্ট নং-ই ১১৯২৮০৭), যশোর থেকে এমজেএফের কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রতিনিধিত্বকারী চার সদস্য মো. শিমুল হোসাইন (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৮১৮৩৩), এ মাজেদ (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৭৭৮৭৫), শামীম হোসাইন (পাসপোর্ট নং-সি ১৩৫১০৪৫) এবং মিলন হোসাইন (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৭৩৯০০) অগ্রবর্তী এ দলটি ২০ এপ্রিল রাতে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হন যে, তারা মূলত অবৈধভাবে থেকে গিয়ে কাজ করার জন্যই মালয়েশিয়া গেছেন। দীর্ঘ সময় আটক রাখার পর ইমিগ্রেশন তাদের ফিরতি ফ্লাইটে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় বলে সূত্র জানায়।
সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান দ্বিতীয় চিঠিটি দেন দু'দিন পর ২১ এপ্রিল। এই চিঠিতেও একই অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা বলে মোট ১৮ জনের মালয়েশিয়া গমনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন তিনি। এই ১৮ জনের মধ্যে চারজনের নাম আলাদাভাবে ভিআইপি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অপর ১৪ জনকে এমজেএফের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলা নেতা হিসেবে দেখানো হয়। চিঠিতে উল্লিখিত চার ভিআইপি ছিলেন প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান এমপি নিজে, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, আসাদুজ্জমান খান এমপি ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার এপিএস মো. মোহসিন উদ্দিন। অপর ১৪ জন হচ্ছেন— মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী চেয়ারম্যান মোল্লা আতাউর রহমান মিন্টু (পাসপোর্ট নং-ই ০৩৮৮৩৮৫), প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি মো. রেজাউল হক টিটু (পাসপোর্ট নং-এএ ৯৭১৪৭৯১), কেন্দ্রীয় সদস্য চাঁদপুরের অর্জুন (পাসপোর্ট নং-এফ ০৬৩২১৭৬), এমজেএফের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস সহকারী মনির (পাসপোর্ট নং-এএ ৬৬৪৮৮৪৪), পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপকমিটির সদস্য মনির (পাসপোর্ট নং-সি ১৫০২০৩০), যশোরের সদস্য আলমগীর (পাসপোর্ট নং-এএ ৭৩৩৮১৪০), কুষ্টিয়ার সদস্য মহিবুর (পাসপোর্ট নং-ই ১০৪৯৪২৬), পাবনার সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন (পাসপোর্ট নং-জেড ০৬৩৮৫৪৭), যশোরের সদস্য আনারুল (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৮২১১৯), গাজীপুরের সদস্য সালেমন শেখ (পাসপোর্ট নং-ই ০৬০৫১৮০), শরীয়তপুরের আল-আমীন বেপারী পাসপোর্ট নং-এফ ০৬৪১৪৩৬), যশোরের সদস্য খোরশেদ আলম (পাসপোর্ট নং-সি ০৯৪৮০০৪), পিরোজপুরের সদস্য আবদুর রাজ্জাক (পাসপোর্ট নং-ই ০৬০৪১৯৫) এবং শরীয়তপুরের রহীম মাতবর (পাসপোর্ট নং-এফ ০২০৯২৪৫)। দু'দিন আগের প্রথম চিঠিতে ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুমে অনুষ্ঠানের সময় বিকাল ৩টা উল্লেখ করা হলেও দ্বিতীয় চিঠিতে জানানো হয় অনুষ্ঠান হবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।
সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে এই দলটি বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ২৩ এপ্রিল ৭টায় ঢাকা ত্যাগ করে। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে যখন তারা পৌঁছান, তখন সেখানকার স্থানীয় সময় রাত দেড়টা।
সূত্র জানায়, 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে যোগদানেচ্ছু বাংলাদেশী 'প্রতিনিধি দলের' অধিকাংশ সদস্যের চেহারা দেখে মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ রীতিমত তাজ্জব বনে যায়। সন্দেহ ঘনীভূত হলে তাদের আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সংসদ সদস্য ড. আবদুল মান্নানও তার সঙ্গীদের বিষয়ে ইমিগ্রেশনের জেরার মুখে পড়েন। যোগাযোগ করা হয় দু'দেশের উচ্চপর্যায়ে। একপর্যায়ে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশী এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরও সহায়তা চাওয়া হয়। তিনি ছুটে যান ৮৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিমানবন্দরে। সেখানে দেনদরবার করে সন্দেহভাজন ১৪ জনকে ইমিগ্রেশন পার করিয়ে আনেন। এমপি সাহেবও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। 'প্রতিনিধি দলের' কুয়ালালামপুরে থাকা-খাওয়ার কোনো পূর্বব্যবস্থা ছিল না। এমপির অনুরোধে ওই ব্যবসায়ী তাদের কুয়ালালামপুরের বিস্তানা হোটেলে তোলেন। খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তাত্ক্ষণিকভাবে ১ হাজার ৫২০ রিঙ্গিত পরিশোধ করেন।
পরের ঘটনা সম্পর্কে অনুসন্ধানে জানা যায়, মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন বা এমজেএফ নামক সংগঠনটি ভুঁইফোড়। এর কোনো কার্যক্রম কুয়ালালামপুরে নেই। হোটেল ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুম তো দূরের কথা, অন্য কোথাও ওই ধরনের কোনো আলোচনা অনুষ্ঠান হয়নি। হোটল বলরুমে কোনো বুকিংও ছিল না। ঢাকায় এমজেএফের একটি কমিটি আছে বটে, তার সঙ্গে বর্ণিত 'প্রতিনিধি দলের' জেলাওয়ারী সদস্যদের কোনো সম্পর্ক নেই। আদমপাচারের অংশ হিসেবেই ওই অনুষ্ঠানের বানোয়াট আমন্ত্রণপত্র তৈরি করা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যারা গেছেন, তারা কাজের সন্ধানে নিজেদের মতো করে গা-ঢাকা দিয়েছেন। সূত্র জানায়, ওদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এ নিয়ে কুয়ালালামপুরের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক নেতার সঙ্গে বিরোধ বাধে বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। এমপির সামনেই একজন ধোলাইয়ের শিকার হন। সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুয়ালালামপুরের এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, সংসদ সদস্য দেশের মান-সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে আদমপাচারের যে কাণ্ড করেছেন, তাতে আমরা বিব্রত। আওয়ামী লীগের আরেক নেতা মহসিনের মতে, কেলেঙ্কারির সঙ্গে মালয়েশিয়ায় নিয়োজিত বাংলাদেশ হাইকমিশনার আতিকুর রহমান জড়িত। হাইকমিশনারের এক নিকটাত্মীয় পুরো প্রক্রিয়ায় ছিলেন বলেও আওয়ামী লীগের এই নেতার দাবি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য হাইকমিশনার একেএম আতিকুর রহমানের সেলফোনে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি। বিমানবন্দর থেকে যে ব্যবসায়ী উদ্ধার করেছেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেন। ওই ব্যবসায়ী জানান, সরকারদলীয় লোকজনের অনুরোধে দেশের মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন। ওই রাতের মতো একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে তিনি সটকে পড়েন বলে জানান। তার নাম প্রকাশ না করারও অনুরোধ করেন তিনি। গোটা ঘটনাটি যে একটি কেলেঙ্কারি ছিল, তাও স্বীকার করেন ওই ব্যবসায়ী।
টেলিফোনে সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. এমএ মান্নানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, কত লোকই তো অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাচ্ছে। অবৈধভাবে সেখানে থেকে কাজের সন্ধান করছে। কেউ কাজ পাচ্ছে কেউ পাচ্ছে না। আমার সঙ্গে যারা গেছে, তারা তো টিকিট কেটে গেছে, সাগর সাঁতরে যায়নি। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে অবৈধভাবে আদম পাচারের মতো কাজে সম্পৃক্ত হওয়া কতটা সমীচীন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিক না হলে আপনি লিখে দিন। আমি মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারকে বলব ওদের ধরে যেন দেশে পাঠিয়ে দেন। মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সংগঠন আমাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি করে। আমি সংগঠনটির উপদেষ্টা। ওরা ক'দিন আগেও আরও কিছু ছেলেকে বিদেশে নেয়ার জন্য এসেছিল। অন্য দেশে প্রোগ্রাম দিয়েছিল। আমি বলেছি, সময় নেই। কুয়ালালামপুরে যে অনুষ্ঠানের কথা বলে লোক নেয়া হয়েছে, সে অনুষ্ঠান যে হয়নি তাও স্বীকার করেন সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, ওই অনুষ্ঠান না হলেও আমি যেহেতু আওয়ামী লীগদলীয় এমপি, তাই দলীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। হাইকমিশনারকে বলেছি, আমাদের ছেলেদের ভালো-মন্দ দেখাশোনা করার জন্য।
অনুষ্ঠানের আরেক আমন্ত্রিত এমপি আসাদুজ্জমান খান আমার দেশকে বলেন, দাওয়াত দেয়ার পরই আমার সন্দেহ হয়েছে। তাই আমি খোঁজখবর নিই। স্বাস্থ্য উপদেষ্টাও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চান। আমার সন্দেহের কথা আমি তাকেও জানাই। পরে তিনি ও আমি ওই সফর থেকে বিরত থাকি।
আরো পড়ুনঃ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার শিগগিরই খোলার গল্পের যেন শেষ নেই : সরকারের সঙ্গে দূরত্ব ও দুর্নীতি-অনিয়ম বড় অন্তরায়

এইসব বান্দরদের হাতে পড়েছে দেশের মর্যাদা! এদের না আছে বিদ্যা-বুদ্ধি, না আছে লজ্জা-শরম। দেশের রিপ্রিজেন্টেটিভ হওয়া তো দূরের কথা, এরা বিদেশের যেকোন হোটেলের বয় হওয়ার যোগ্যতাও রাখে না। গ্লোবালাইজেশনের যুগে আজ বাংলাদেশ কোনঠাসা। উন্নত বিশ্বের কোন দেশের মন্ত্রীদের সাথেই এরা কথা বলতে জানে না, ডিপ্লোম্যাটিক জ্ঞান তো দূরের কথা!

[আমেরিকা, কানাডা, ইউকে'র রাষ্ট্রদূতদেরও একই অবস্থা। দলবাজি করাই এদের বড় যোগ্যতা। ডক্টরেট ডিগ্রীধারী হলেও আওয়ামী লীগ করলে যা হয়! আওয়ামী লীগের রিক্সাওয়ালা আর প্রেসিডেন্ট একই রকম চিন্তা করে। পরবর্তীতে আরো ফিরিস্তি প্রকাশ করার ইচ্ছা রইল। ]
 
Here was the previous part:
 
 
 
৪। জাপানে রাষ্ট্রদূত এ কে এম মাজিবুর রহমান


পেশাদার কূটনীতিক এ কে এম মাজিবুর রহমান ভূইয়া গত বছর জাপানে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। রাষ্ট্রদূতের সোস্যাল সেক্রেটারি হিসেবে একজন জাপানি মহিলা কর্মরত ছিলেন। কিন্তু সেই মহিলা রাষ্ট্রদূত মাজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেছেন। এ-সংক্রান্ত অভিযোগ তিনি টোকিওতে অবস্থিত সব বিদেশী দূতাবাসকে ই-মেইলের মাধ্যমে অবহিত করেছেন। পদত্যাগকারী মহিলা সম্প্রতি যৌন হয়রানির অভিযোগে
রাষ্ট্রদূত মাজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
Majibur new envoy to Japan

পড়ুন তিন রাষ্ট্রদূতের অপকর্মে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ভূলুণ্ঠিত

নারী কেলেঙ্কারি - জাপানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে

উল্লেখ্য, বর্তমানে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের নাম শেখ হাসিনার পারিবারিক বন্ধু - জীবন রঞ্জন মজুমদার। অবশেষে উন্মাদ নেত্রী রতন চিনেছেন।

৫। মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনের কোটিপতি কর্মচারী আওয়ামী লীগার শাহজাহান মিয়ার বিদায় : চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির অভিযোগ
বহু জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে অপসারিত হয়েছে লেবার কাউন্সিলারের বহুল আলোচিত কোটিপতি কর্মচারী মোঃ শাজাহান মিয়া। মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানীতে দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক মাসেই বহুকোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। বিভিন্ন সূত্রমতে তার অসদোপায়ে উপার্জিত অর্থের পরিমান ১০ কোটি টাকার উপর হবে। জনশক্তি রপ্তানীকে ঘিরে মালয়েশিয়ায় যে অস্থিরতা বিরাজ করেছে তার জন্য অন্যতম দায়ী এই শাজাহান মিয়া। তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ বিপুল অংকের টাকায় তিনি অসাধু আদম বেপারীদের শত শত ভূয়া কাজের ফাইল অনুমোদন করিয়ে দিয়েছেন। টাকা ছাড়া কোন ফাইলই চলতো না। পরবর্তীতে ঐসব ভূয়া কাজে হাজার হাজার শ্রমিক এসে দিনের পর দিন মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করেছে। তাকে খুশী করাতে না পারলে শ্রমিক রপ্তানীর ফাইল হারিয়ে যেত, ডাষ্টবিন বা কার্পেটের তলায় পরে থাকতো। তিনি অবৈধ সুবিধার জন্য হাইকমিশনে একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে তুলেছিলেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দরোজা বন্ধ করে চলেছে লেন দেনের গোপন হিসাব নিকাশ। হাইকমিশনে তার দূর্নীতি ছিল ওপেন সিক্রেট। গর্ব করে তিনি বলেন, গত বছর এমন দিন গেছে ২০ হাজার রিঙ্গিত (প্রায় ৪ লাখ টাকা) না নিয়ে বাসায় গেলে রাতে ভালো ঘুম হতো না। কিন্তু বাংলাদেশের মিডিয়া তার এই আয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। গত বছর সংশ্লিষ্ট সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল মালয়েশিয়া এসে তার দুর্নীতি অনিয়মের প্রমান পেলে তাকে ঢাকায় বদলীর আদেশ করা হয়। কিন্তু তারপরও প্রায় ১ বছর তিনি বিভিন্ন অজুহাতে কর্মরত থাকেন। তবে হাইকমিশনেরই একটি গোপন সূত্র জানায়, ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে তিনি তখন ঐ বদলীর আদেশ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এমনকি মালয়েশিয়া সফরে আসা বিভিন্ন মাধ্যমকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে সবকিছু ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করতেন। কিন্তু দেশের পত্র পত্রিকায় ক্রমশঃ তার দুর্নীতির সংবাদ প্রচার হলে সরকার তাকে ষ্ট্যান্ড রিলীজ করে। কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে, ষ্ট্যান্ড রিলীজ হবার পরও অদৃশ্য সূতোর টানে বহুদিন তিনি বহাল তবীয়তেই বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মরত ছিলেন। বারবার তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবার উদ্যোগের কথা প্রচার হলেও রহস্যজনক কারনে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। কাজেই মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানীতে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও সৌভাগ্যবশতঃ রেহাই পেয়েছেন লেবার কাউন্সিলের সহকারী কোটিপতি কর্মচারী শাজাহান মিয়া।
মোঃ শাজাহান মিয়ার একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায় – মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ব্যাংকে তার বিপুল অংকের টাকা জমা রয়েছে। এর আগে কুয়েতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে চাকুরীরত থাকা অবস্থায় জনশক্তি রপ্তানীর অনুরূপ দুর্নীতির মাধ্যমেও অনেক টাকার মালিক হয়েছেন। তখনকার অসদোপার্জিত পুরো টাকাই দেশে কাজে লাগাতে পারলেও এবার তা করতে পারেন নি বর্তমান সরকারের ভয়ে। তিনি এখন চাকুরী হারানোর কোন ভয় করেন না বলেও ঐ সূত্রটি জানায়। চাকুরী চলে গেলে আবার তিনি মালয়েশিয়া এসে ব্যাবসা করবেন। মালয়েশিয়ায় ব্যাবসার পরিকল্পনা চুড়ান্তও করে রেখেছেন বলে সূত্রমতে জানা গেছে। তবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দাবী – যেভাবে এক বনরাক্ষসকে ধরে সরকার জনগনের প্রশংসা লাভ করেছিল, ঠিক তেমনি এই ধূর্ত কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নিতে পারলে প্রবাসীদের কাছেও অনুরূপ প্রশংসা পাবে সরকার। তার আয়ের উৎস তদন্ত করলে আরো অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে তারই ঐ ঘনিষ্ঠ সূত্রটি।

এমপি যখন আদম-পাচারকারী !সরকারি দল আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে মালয়েশিয়ায় 'আদম' পাচার নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনুষ্ঠানে যোগদানের নামে মোট ১৯ জনকে মালয়েশিয়ায় নেয়ার চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত ১৪ জনের ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান। মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক পরিচয়ে একটি ভুঁইফোড় সংগঠনের কর্মকর্তা সাজিয়ে শ্রমিক পাচারের এ ঘটনায় মালয়েশিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের এসব যুবককে 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক একটি ভুয়া অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা বলে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যান এমপি। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরে সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের আটকে দেয় এবং ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অসংলগ্ন বক্তব্য দিলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। সংসদ সদস্যও এ নিয়ে ইমিগ্রেশনের জেরার মুখে পড়েন। উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে এবং মালয়েশিয়াপ্রবাসী এক বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর (বর্তমানে মালয়েশীয় নাগরিক) সহযোগিতায় ১৪ জনকে ঢুকতে দেয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। পাঁচজনকে ফিরতি ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরে আসতে হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য ডা. এমএ মান্নান ঘটনা স্বীকার করে বলেন, দেশের কত ছেলেপেলে সাগর সাঁতরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। আমার সঙ্গে যারা গেছে, তারা তো টিকিট কেটে গেছে। তিনি এ প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন, আপনার কোনো অসুবিধা হয়েছে কি-না, হলে লেখেন। আমি হাইকমিশনারকে বলব ওদের ধরে দেশে পাঠিয়ে দিতে। আদমপাচারের উদ্দেশ্যে সাজানো ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছের আলী ও ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জমান খানের নামও অতিথি হিসেবে ছিল। সন্দেহ হওয়ায় এবং আগে থেকেই অবৈধ তত্পরতা আঁচ করতে পেরে তারা ওই সফর থেকে বিরত থাকেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, যে অনুষ্ঠানের কথা বলে তাদের মালয়েশিয়ায় নেয়া হয়, সে ধরনের কোনো অনুষ্ঠান মালয়েশিয়ায় হয়নি। প্রতারণার মাধ্যমে যাওয়া 'আদম'রা ইতোমধ্যে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্যের এ কেলেঙ্কারি নিয়ে মালয়েশিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। ন্যক্কারজনক এ ঘটনার কারণে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের ভাবমর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতারা। এমনিতে সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের সত্যিকারের পর্যটক বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদানে গমনেচ্ছুরা কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশনে অধিকতর অনাস্থার মুখোমুখি হবেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান তার সংসদ সদস্যের প্যাডে তিনদিনের ব্যবধানে ঢাকায় মালয়েশিয়ান হাইকমিশনে দুটি চিঠি দেন। দুটি চিঠিতেই ইস্যু নম্বর একই- ডিওসি ০৩০২-৬৩/১১। গত ১৯.৪.১১ তারিখে তিনি প্রথম চিঠি দিয়ে জানান, ২৪ এপ্রিল কুয়ালালামপুরে মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) মালয়েশিয়া ইউনিটের পক্ষ থেকে 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কুয়ালালামপুরের হোটেল ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুমে ২৪ এপ্রিল বিকাল ৩টায় এ অনুষ্ঠান হবে বলে চিঠিতে জানানো হয়। চিঠিতে সংসদ সদস্য নিজেকে এমজেএফের উপদেষ্টা জানিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে আমন্ত্রিত বলে উল্লেখ করেন। প্রথম চিঠিতে অনুষ্ঠানের অগ্রবর্তী দল হিসেবে তিনি পাঁচজনের নাম দিয়ে তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষকে। অগ্রবর্তী দলের এই পাঁচজন হচ্ছেন, কথিত এমজেএফের বাংলাদেশ শাখার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভাইস চেয়ারম্যান এরশাদুল হক দুলাল (পাসপোর্ট নং-ই ১১৯২৮০৭), যশোর থেকে এমজেএফের কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রতিনিধিত্বকারী চার সদস্য মো. শিমুল হোসাইন (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৮১৮৩৩), এ মাজেদ (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৭৭৮৭৫), শামীম হোসাইন (পাসপোর্ট নং-সি ১৩৫১০৪৫) এবং মিলন হোসাইন (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৭৩৯০০) অগ্রবর্তী এ দলটি ২০ এপ্রিল রাতে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হন যে, তারা মূলত অবৈধভাবে থেকে গিয়ে কাজ করার জন্যই মালয়েশিয়া গেছেন। দীর্ঘ সময় আটক রাখার পর ইমিগ্রেশন তাদের ফিরতি ফ্লাইটে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় বলে সূত্র জানায়।
সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান দ্বিতীয় চিঠিটি দেন দু'দিন পর ২১ এপ্রিল। এই চিঠিতেও একই অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা বলে মোট ১৮ জনের মালয়েশিয়া গমনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন তিনি। এই ১৮ জনের মধ্যে চারজনের নাম আলাদাভাবে ভিআইপি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অপর ১৪ জনকে এমজেএফের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলা নেতা হিসেবে দেখানো হয়। চিঠিতে উল্লিখিত চার ভিআইপি ছিলেন প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান এমপি নিজে, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, আসাদুজ্জমান খান এমপি ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার এপিএস মো. মোহসিন উদ্দিন। অপর ১৪ জন হচ্ছেন— মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী চেয়ারম্যান মোল্লা আতাউর রহমান মিন্টু (পাসপোর্ট নং-ই ০৩৮৮৩৮৫), প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি মো. রেজাউল হক টিটু (পাসপোর্ট নং-এএ ৯৭১৪৭৯১), কেন্দ্রীয় সদস্য চাঁদপুরের অর্জুন (পাসপোর্ট নং-এফ ০৬৩২১৭৬), এমজেএফের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস সহকারী মনির (পাসপোর্ট নং-এএ ৬৬৪৮৮৪৪), পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপকমিটির সদস্য মনির (পাসপোর্ট নং-সি ১৫০২০৩০), যশোরের সদস্য আলমগীর (পাসপোর্ট নং-এএ ৭৩৩৮১৪০), কুষ্টিয়ার সদস্য মহিবুর (পাসপোর্ট নং-ই ১০৪৯৪২৬), পাবনার সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন (পাসপোর্ট নং-জেড ০৬৩৮৫৪৭), যশোরের সদস্য আনারুল (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৮২১১৯), গাজীপুরের সদস্য সালেমন শেখ (পাসপোর্ট নং-ই ০৬০৫১৮০), শরীয়তপুরের আল-আমীন বেপারী পাসপোর্ট নং-এফ ০৬৪১৪৩৬), যশোরের সদস্য খোরশেদ আলম (পাসপোর্ট নং-সি ০৯৪৮০০৪), পিরোজপুরের সদস্য আবদুর রাজ্জাক (পাসপোর্ট নং-ই ০৬০৪১৯৫) এবং শরীয়তপুরের রহীম মাতবর (পাসপোর্ট নং-এফ ০২০৯২৪৫)। দু'দিন আগের প্রথম চিঠিতে ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুমে অনুষ্ঠানের সময় বিকাল ৩টা উল্লেখ করা হলেও দ্বিতীয় চিঠিতে জানানো হয় অনুষ্ঠান হবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।
সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে এই দলটি বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ২৩ এপ্রিল ৭টায় ঢাকা ত্যাগ করে। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে যখন তারা পৌঁছান, তখন সেখানকার স্থানীয় সময় রাত দেড়টা।
সূত্র জানায়, 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে যোগদানেচ্ছু বাংলাদেশী 'প্রতিনিধি দলের' অধিকাংশ সদস্যের চেহারা দেখে মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ রীতিমত তাজ্জব বনে যায়। সন্দেহ ঘনীভূত হলে তাদের আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সংসদ সদস্য ড. আবদুল মান্নানও তার সঙ্গীদের বিষয়ে ইমিগ্রেশনের জেরার মুখে পড়েন। যোগাযোগ করা হয় দু'দেশের উচ্চপর্যায়ে। একপর্যায়ে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশী এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরও সহায়তা চাওয়া হয়। তিনি ছুটে যান ৮৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিমানবন্দরে। সেখানে দেনদরবার করে সন্দেহভাজন ১৪ জনকে ইমিগ্রেশন পার করিয়ে আনেন। এমপি সাহেবও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। 'প্রতিনিধি দলের' কুয়ালালামপুরে থাকা-খাওয়ার কোনো পূর্বব্যবস্থা ছিল না। এমপির অনুরোধে ওই ব্যবসায়ী তাদের কুয়ালালামপুরের বিস্তানা হোটেলে তোলেন। খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তাত্ক্ষণিকভাবে ১ হাজার ৫২০ রিঙ্গিত পরিশোধ করেন।
পরের ঘটনা সম্পর্কে অনুসন্ধানে জানা যায়, মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন বা এমজেএফ নামক সংগঠনটি ভুঁইফোড়। এর কোনো কার্যক্রম কুয়ালালামপুরে নেই। হোটেল ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুম তো দূরের কথা, অন্য কোথাও ওই ধরনের কোনো আলোচনা অনুষ্ঠান হয়নি। হোটল বলরুমে কোনো বুকিংও ছিল না। ঢাকায় এমজেএফের একটি কমিটি আছে বটে, তার সঙ্গে বর্ণিত 'প্রতিনিধি দলের' জেলাওয়ারী সদস্যদের কোনো সম্পর্ক নেই। আদমপাচারের অংশ হিসেবেই ওই অনুষ্ঠানের বানোয়াট আমন্ত্রণপত্র তৈরি করা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যারা গেছেন, তারা কাজের সন্ধানে নিজেদের মতো করে গা-ঢাকা দিয়েছেন। সূত্র জানায়, ওদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এ নিয়ে কুয়ালালামপুরের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক নেতার সঙ্গে বিরোধ বাধে বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। এমপির সামনেই একজন ধোলাইয়ের শিকার হন। সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুয়ালালামপুরের এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, সংসদ সদস্য দেশের মান-সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে আদমপাচারের যে কাণ্ড করেছেন, তাতে আমরা বিব্রত। আওয়ামী লীগের আরেক নেতা মহসিনের মতে, কেলেঙ্কারির সঙ্গে মালয়েশিয়ায় নিয়োজিত বাংলাদেশ হাইকমিশনার আতিকুর রহমান জড়িত। হাইকমিশনারের এক নিকটাত্মীয় পুরো প্রক্রিয়ায় ছিলেন বলেও আওয়ামী লীগের এই নেতার দাবি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য হাইকমিশনার একেএম আতিকুর রহমানের সেলফোনে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি। বিমানবন্দর থেকে যে ব্যবসায়ী উদ্ধার করেছেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেন। ওই ব্যবসায়ী জানান, সরকারদলীয় লোকজনের অনুরোধে দেশের মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন। ওই রাতের মতো একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে তিনি সটকে পড়েন বলে জানান। তার নাম প্রকাশ না করারও অনুরোধ করেন তিনি। গোটা ঘটনাটি যে একটি কেলেঙ্কারি ছিল, তাও স্বীকার করেন ওই ব্যবসায়ী।
টেলিফোনে সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. এমএ মান্নানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, কত লোকই তো অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাচ্ছে। অবৈধভাবে সেখানে থেকে কাজের সন্ধান করছে। কেউ কাজ পাচ্ছে কেউ পাচ্ছে না। আমার সঙ্গে যারা গেছে, তারা তো টিকিট কেটে গেছে, সাগর সাঁতরে যায়নি। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে অবৈধভাবে আদম পাচারের মতো কাজে সম্পৃক্ত হওয়া কতটা সমীচীন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিক না হলে আপনি লিখে দিন। আমি মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারকে বলব ওদের ধরে যেন দেশে পাঠিয়ে দেন। মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সংগঠন আমাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি করে। আমি সংগঠনটির উপদেষ্টা। ওরা ক'দিন আগেও আরও কিছু ছেলেকে বিদেশে নেয়ার জন্য এসেছিল। অন্য দেশে প্রোগ্রাম দিয়েছিল। আমি বলেছি, সময় নেই। কুয়ালালামপুরে যে অনুষ্ঠানের কথা বলে লোক নেয়া হয়েছে, সে অনুষ্ঠান যে হয়নি তাও স্বীকার করেন সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, ওই অনুষ্ঠান না হলেও আমি যেহেতু আওয়ামী লীগদলীয় এমপি, তাই দলীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। হাইকমিশনারকে বলেছি, আমাদের ছেলেদের ভালো-মন্দ দেখাশোনা করার জন্য।
অনুষ্ঠানের আরেক আমন্ত্রিত এমপি আসাদুজ্জমান খান আমার দেশকে বলেন, দাওয়াত দেয়ার পরই আমার সন্দেহ হয়েছে। তাই আমি খোঁজখবর নিই। স্বাস্থ্য উপদেষ্টাও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চান। আমার সন্দেহের কথা আমি তাকেও জানাই। পরে তিনি ও আমি ওই সফর থেকে বিরত থাকি।
আরো পড়ুনঃ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার শিগগিরই খোলার গল্পের যেন শেষ নেই : সরকারের সঙ্গে দূরত্ব ও দুর্নীতি-অনিয়ম বড় অন্তরায়

এইসব বান্দরদের হাতে পড়েছে দেশের মর্যাদা! এদের না আছে বিদ্যা-বুদ্ধি, না আছে লজ্জা-শরম। দেশের রিপ্রিজেন্টেটিভ হওয়া তো দূরের কথা, এরা বিদেশের যেকোন হোটেলের বয় হওয়ার যোগ্যতাও রাখে না। গ্লোবালাইজেশনের যুগে আজ বাংলাদেশ কোনঠাসা। উন্নত বিশ্বের কোন দেশের মন্ত্রীদের সাথেই এরা কথা বলতে জানে না, ডিপ্লোম্যাটিক জ্ঞান তো দূরের কথা!

[আমেরিকা, কানাডা, ইউকে'র রাষ্ট্রদূতদেরও একই অবস্থা। দলবাজি করাই এদের বড় যোগ্যতা। ডক্টরেট ডিগ্রীধারী হলেও আওয়ামী লীগ করলে যা হয়! আওয়ামী লীগের রিক্সাওয়ালা আর প্রেসিডেন্ট একই রকম চিন্তা করে। পরবর্তীতে আরো ফিরিস্তি প্রকাশ করার ইচ্ছা রইল। ]

বিদেশের মাটিতে দেশের বারোটা বাজাচ্ছে যারা-২

লিখেছেন নয়ন খান ২৭ ডিসেম্বর ২০১১, রাত ১১:২০
৪। জাপানে রাষ্ট্রদূত এ কে এম মাজিবুর রহমান


পেশাদার কূটনীতিক এ কে এম মাজিবুর রহমান ভূইয়া গত বছর জাপানে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। রাষ্ট্রদূতের সোস্যাল সেক্রেটারি হিসেবে একজন জাপানি মহিলা কর্মরত ছিলেন। কিন্তু সেই মহিলা রাষ্ট্রদূত মাজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেছেন। এ-সংক্রান্ত অভিযোগ তিনি টোকিওতে অবস্থিত সব বিদেশী দূতাবাসকে ই-মেইলের মাধ্যমে অবহিত করেছেন। পদত্যাগকারী মহিলা সম্প্রতি যৌন হয়রানির অভিযোগে
রাষ্ট্রদূত মাজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
Majibur new envoy to Japan

পড়ুন তিন রাষ্ট্রদূতের অপকর্মে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ভূলুণ্ঠিত

নারী কেলেঙ্কারি - জাপানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে

উল্লেখ্য, বর্তমানে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের নাম শেখ হাসিনার পারিবারিক বন্ধু - জীবন রঞ্জন মজুমদার। অবশেষে উন্মাদ নেত্রী রতন চিনেছেন।

৫। মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনের কোটিপতি কর্মচারী আওয়ামী লীগার শাহজাহান মিয়ার বিদায় : চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির অভিযোগ
বহু জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে অপসারিত হয়েছে লেবার কাউন্সিলারের বহুল আলোচিত কোটিপতি কর্মচারী মোঃ শাজাহান মিয়া। মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানীতে দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক মাসেই বহুকোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। বিভিন্ন সূত্রমতে তার অসদোপায়ে উপার্জিত অর্থের পরিমান ১০ কোটি টাকার উপর হবে। জনশক্তি রপ্তানীকে ঘিরে মালয়েশিয়ায় যে অস্থিরতা বিরাজ করেছে তার জন্য অন্যতম দায়ী এই শাজাহান মিয়া। তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ বিপুল অংকের টাকায় তিনি অসাধু আদম বেপারীদের শত শত ভূয়া কাজের ফাইল অনুমোদন করিয়ে দিয়েছেন। টাকা ছাড়া কোন ফাইলই চলতো না। পরবর্তীতে ঐসব ভূয়া কাজে হাজার হাজার শ্রমিক এসে দিনের পর দিন মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করেছে। তাকে খুশী করাতে না পারলে শ্রমিক রপ্তানীর ফাইল হারিয়ে যেত, ডাষ্টবিন বা কার্পেটের তলায় পরে থাকতো। তিনি অবৈধ সুবিধার জন্য হাইকমিশনে একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে তুলেছিলেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দরোজা বন্ধ করে চলেছে লেন দেনের গোপন হিসাব নিকাশ। হাইকমিশনে তার দূর্নীতি ছিল ওপেন সিক্রেট। গর্ব করে তিনি বলেন, গত বছর এমন দিন গেছে ২০ হাজার রিঙ্গিত (প্রায় ৪ লাখ টাকা) না নিয়ে বাসায় গেলে রাতে ভালো ঘুম হতো না। কিন্তু বাংলাদেশের মিডিয়া তার এই আয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। গত বছর সংশ্লিষ্ট সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল মালয়েশিয়া এসে তার দুর্নীতি অনিয়মের প্রমান পেলে তাকে ঢাকায় বদলীর আদেশ করা হয়। কিন্তু তারপরও প্রায় ১ বছর তিনি বিভিন্ন অজুহাতে কর্মরত থাকেন। তবে হাইকমিশনেরই একটি গোপন সূত্র জানায়, ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে তিনি তখন ঐ বদলীর আদেশ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এমনকি মালয়েশিয়া সফরে আসা বিভিন্ন মাধ্যমকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে সবকিছু ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করতেন। কিন্তু দেশের পত্র পত্রিকায় ক্রমশঃ তার দুর্নীতির সংবাদ প্রচার হলে সরকার তাকে ষ্ট্যান্ড রিলীজ করে। কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে, ষ্ট্যান্ড রিলীজ হবার পরও অদৃশ্য সূতোর টানে বহুদিন তিনি বহাল তবীয়তেই বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মরত ছিলেন। বারবার তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবার উদ্যোগের কথা প্রচার হলেও রহস্যজনক কারনে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। কাজেই মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানীতে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও সৌভাগ্যবশতঃ রেহাই পেয়েছেন লেবার কাউন্সিলের সহকারী কোটিপতি কর্মচারী শাজাহান মিয়া।
মোঃ শাজাহান মিয়ার একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায় – মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ব্যাংকে তার বিপুল অংকের টাকা জমা রয়েছে। এর আগে কুয়েতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে চাকুরীরত থাকা অবস্থায় জনশক্তি রপ্তানীর অনুরূপ দুর্নীতির মাধ্যমেও অনেক টাকার মালিক হয়েছেন। তখনকার অসদোপার্জিত পুরো টাকাই দেশে কাজে লাগাতে পারলেও এবার তা করতে পারেন নি বর্তমান সরকারের ভয়ে। তিনি এখন চাকুরী হারানোর কোন ভয় করেন না বলেও ঐ সূত্রটি জানায়। চাকুরী চলে গেলে আবার তিনি মালয়েশিয়া এসে ব্যাবসা করবেন। মালয়েশিয়ায় ব্যাবসার পরিকল্পনা চুড়ান্তও করে রেখেছেন বলে সূত্রমতে জানা গেছে। তবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দাবী – যেভাবে এক বনরাক্ষসকে ধরে সরকার জনগনের প্রশংসা লাভ করেছিল, ঠিক তেমনি এই ধূর্ত কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নিতে পারলে প্রবাসীদের কাছেও অনুরূপ প্রশংসা পাবে সরকার। তার আয়ের উৎস তদন্ত করলে আরো অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে তারই ঐ ঘনিষ্ঠ সূত্রটি।

এমপি যখন আদম-পাচারকারী !সরকারি দল আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে মালয়েশিয়ায় 'আদম' পাচার নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনুষ্ঠানে যোগদানের নামে মোট ১৯ জনকে মালয়েশিয়ায় নেয়ার চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত ১৪ জনের ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান। মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক পরিচয়ে একটি ভুঁইফোড় সংগঠনের কর্মকর্তা সাজিয়ে শ্রমিক পাচারের এ ঘটনায় মালয়েশিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের এসব যুবককে 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক একটি ভুয়া অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা বলে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যান এমপি। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরে সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের আটকে দেয় এবং ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অসংলগ্ন বক্তব্য দিলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। সংসদ সদস্যও এ নিয়ে ইমিগ্রেশনের জেরার মুখে পড়েন। উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে এবং মালয়েশিয়াপ্রবাসী এক বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর (বর্তমানে মালয়েশীয় নাগরিক) সহযোগিতায় ১৪ জনকে ঢুকতে দেয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। পাঁচজনকে ফিরতি ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরে আসতে হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য ডা. এমএ মান্নান ঘটনা স্বীকার করে বলেন, দেশের কত ছেলেপেলে সাগর সাঁতরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। আমার সঙ্গে যারা গেছে, তারা তো টিকিট কেটে গেছে। তিনি এ প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন, আপনার কোনো অসুবিধা হয়েছে কি-না, হলে লেখেন। আমি হাইকমিশনারকে বলব ওদের ধরে দেশে পাঠিয়ে দিতে। আদমপাচারের উদ্দেশ্যে সাজানো ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছের আলী ও ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জমান খানের নামও অতিথি হিসেবে ছিল। সন্দেহ হওয়ায় এবং আগে থেকেই অবৈধ তত্পরতা আঁচ করতে পেরে তারা ওই সফর থেকে বিরত থাকেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, যে অনুষ্ঠানের কথা বলে তাদের মালয়েশিয়ায় নেয়া হয়, সে ধরনের কোনো অনুষ্ঠান মালয়েশিয়ায় হয়নি। প্রতারণার মাধ্যমে যাওয়া 'আদম'রা ইতোমধ্যে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্যের এ কেলেঙ্কারি নিয়ে মালয়েশিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। ন্যক্কারজনক এ ঘটনার কারণে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের ভাবমর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতারা। এমনিতে সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের সত্যিকারের পর্যটক বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদানে গমনেচ্ছুরা কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশনে অধিকতর অনাস্থার মুখোমুখি হবেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান তার সংসদ সদস্যের প্যাডে তিনদিনের ব্যবধানে ঢাকায় মালয়েশিয়ান হাইকমিশনে দুটি চিঠি দেন। দুটি চিঠিতেই ইস্যু নম্বর একই- ডিওসি ০৩০২-৬৩/১১। গত ১৯.৪.১১ তারিখে তিনি প্রথম চিঠি দিয়ে জানান, ২৪ এপ্রিল কুয়ালালামপুরে মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) মালয়েশিয়া ইউনিটের পক্ষ থেকে 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কুয়ালালামপুরের হোটেল ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুমে ২৪ এপ্রিল বিকাল ৩টায় এ অনুষ্ঠান হবে বলে চিঠিতে জানানো হয়। চিঠিতে সংসদ সদস্য নিজেকে এমজেএফের উপদেষ্টা জানিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে আমন্ত্রিত বলে উল্লেখ করেন। প্রথম চিঠিতে অনুষ্ঠানের অগ্রবর্তী দল হিসেবে তিনি পাঁচজনের নাম দিয়ে তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষকে। অগ্রবর্তী দলের এই পাঁচজন হচ্ছেন, কথিত এমজেএফের বাংলাদেশ শাখার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভাইস চেয়ারম্যান এরশাদুল হক দুলাল (পাসপোর্ট নং-ই ১১৯২৮০৭), যশোর থেকে এমজেএফের কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রতিনিধিত্বকারী চার সদস্য মো. শিমুল হোসাইন (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৮১৮৩৩), এ মাজেদ (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৭৭৮৭৫), শামীম হোসাইন (পাসপোর্ট নং-সি ১৩৫১০৪৫) এবং মিলন হোসাইন (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৭৩৯০০) অগ্রবর্তী এ দলটি ২০ এপ্রিল রাতে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হন যে, তারা মূলত অবৈধভাবে থেকে গিয়ে কাজ করার জন্যই মালয়েশিয়া গেছেন। দীর্ঘ সময় আটক রাখার পর ইমিগ্রেশন তাদের ফিরতি ফ্লাইটে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় বলে সূত্র জানায়।
সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নান দ্বিতীয় চিঠিটি দেন দু'দিন পর ২১ এপ্রিল। এই চিঠিতেও একই অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা বলে মোট ১৮ জনের মালয়েশিয়া গমনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন তিনি। এই ১৮ জনের মধ্যে চারজনের নাম আলাদাভাবে ভিআইপি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অপর ১৪ জনকে এমজেএফের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলা নেতা হিসেবে দেখানো হয়। চিঠিতে উল্লিখিত চার ভিআইপি ছিলেন প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান এমপি নিজে, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, আসাদুজ্জমান খান এমপি ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার এপিএস মো. মোহসিন উদ্দিন। অপর ১৪ জন হচ্ছেন— মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী চেয়ারম্যান মোল্লা আতাউর রহমান মিন্টু (পাসপোর্ট নং-ই ০৩৮৮৩৮৫), প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি মো. রেজাউল হক টিটু (পাসপোর্ট নং-এএ ৯৭১৪৭৯১), কেন্দ্রীয় সদস্য চাঁদপুরের অর্জুন (পাসপোর্ট নং-এফ ০৬৩২১৭৬), এমজেএফের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস সহকারী মনির (পাসপোর্ট নং-এএ ৬৬৪৮৮৪৪), পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপকমিটির সদস্য মনির (পাসপোর্ট নং-সি ১৫০২০৩০), যশোরের সদস্য আলমগীর (পাসপোর্ট নং-এএ ৭৩৩৮১৪০), কুষ্টিয়ার সদস্য মহিবুর (পাসপোর্ট নং-ই ১০৪৯৪২৬), পাবনার সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন (পাসপোর্ট নং-জেড ০৬৩৮৫৪৭), যশোরের সদস্য আনারুল (পাসপোর্ট নং-ই ১৩৮২১১৯), গাজীপুরের সদস্য সালেমন শেখ (পাসপোর্ট নং-ই ০৬০৫১৮০), শরীয়তপুরের আল-আমীন বেপারী পাসপোর্ট নং-এফ ০৬৪১৪৩৬), যশোরের সদস্য খোরশেদ আলম (পাসপোর্ট নং-সি ০৯৪৮০০৪), পিরোজপুরের সদস্য আবদুর রাজ্জাক (পাসপোর্ট নং-ই ০৬০৪১৯৫) এবং শরীয়তপুরের রহীম মাতবর (পাসপোর্ট নং-এফ ০২০৯২৪৫)। দু'দিন আগের প্রথম চিঠিতে ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুমে অনুষ্ঠানের সময় বিকাল ৩টা উল্লেখ করা হলেও দ্বিতীয় চিঠিতে জানানো হয় অনুষ্ঠান হবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।
সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে এই দলটি বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ২৩ এপ্রিল ৭টায় ঢাকা ত্যাগ করে। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে যখন তারা পৌঁছান, তখন সেখানকার স্থানীয় সময় রাত দেড়টা।
সূত্র জানায়, 'বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ' শীর্ষক আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে যোগদানেচ্ছু বাংলাদেশী 'প্রতিনিধি দলের' অধিকাংশ সদস্যের চেহারা দেখে মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ রীতিমত তাজ্জব বনে যায়। সন্দেহ ঘনীভূত হলে তাদের আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সংসদ সদস্য ড. আবদুল মান্নানও তার সঙ্গীদের বিষয়ে ইমিগ্রেশনের জেরার মুখে পড়েন। যোগাযোগ করা হয় দু'দেশের উচ্চপর্যায়ে। একপর্যায়ে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশী এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরও সহায়তা চাওয়া হয়। তিনি ছুটে যান ৮৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিমানবন্দরে। সেখানে দেনদরবার করে সন্দেহভাজন ১৪ জনকে ইমিগ্রেশন পার করিয়ে আনেন। এমপি সাহেবও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। 'প্রতিনিধি দলের' কুয়ালালামপুরে থাকা-খাওয়ার কোনো পূর্বব্যবস্থা ছিল না। এমপির অনুরোধে ওই ব্যবসায়ী তাদের কুয়ালালামপুরের বিস্তানা হোটেলে তোলেন। খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তাত্ক্ষণিকভাবে ১ হাজার ৫২০ রিঙ্গিত পরিশোধ করেন।
পরের ঘটনা সম্পর্কে অনুসন্ধানে জানা যায়, মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন বা এমজেএফ নামক সংগঠনটি ভুঁইফোড়। এর কোনো কার্যক্রম কুয়ালালামপুরে নেই। হোটেল ক্রিস্টাল ক্রাউনের বলরুম তো দূরের কথা, অন্য কোথাও ওই ধরনের কোনো আলোচনা অনুষ্ঠান হয়নি। হোটল বলরুমে কোনো বুকিংও ছিল না। ঢাকায় এমজেএফের একটি কমিটি আছে বটে, তার সঙ্গে বর্ণিত 'প্রতিনিধি দলের' জেলাওয়ারী সদস্যদের কোনো সম্পর্ক নেই। আদমপাচারের অংশ হিসেবেই ওই অনুষ্ঠানের বানোয়াট আমন্ত্রণপত্র তৈরি করা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যারা গেছেন, তারা কাজের সন্ধানে নিজেদের মতো করে গা-ঢাকা দিয়েছেন। সূত্র জানায়, ওদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এ নিয়ে কুয়ালালামপুরের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক নেতার সঙ্গে বিরোধ বাধে বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। এমপির সামনেই একজন ধোলাইয়ের শিকার হন। সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুয়ালালামপুরের এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, সংসদ সদস্য দেশের মান-সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে আদমপাচারের যে কাণ্ড করেছেন, তাতে আমরা বিব্রত। আওয়ামী লীগের আরেক নেতা মহসিনের মতে, কেলেঙ্কারির সঙ্গে মালয়েশিয়ায় নিয়োজিত বাংলাদেশ হাইকমিশনার আতিকুর রহমান জড়িত। হাইকমিশনারের এক নিকটাত্মীয় পুরো প্রক্রিয়ায় ছিলেন বলেও আওয়ামী লীগের এই নেতার দাবি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য হাইকমিশনার একেএম আতিকুর রহমানের সেলফোনে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি। বিমানবন্দর থেকে যে ব্যবসায়ী উদ্ধার করেছেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেন। ওই ব্যবসায়ী জানান, সরকারদলীয় লোকজনের অনুরোধে দেশের মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন। ওই রাতের মতো একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে তিনি সটকে পড়েন বলে জানান। তার নাম প্রকাশ না করারও অনুরোধ করেন তিনি। গোটা ঘটনাটি যে একটি কেলেঙ্কারি ছিল, তাও স্বীকার করেন ওই ব্যবসায়ী।
টেলিফোনে সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. এমএ মান্নানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, কত লোকই তো অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাচ্ছে। অবৈধভাবে সেখানে থেকে কাজের সন্ধান করছে। কেউ কাজ পাচ্ছে কেউ পাচ্ছে না। আমার সঙ্গে যারা গেছে, তারা তো টিকিট কেটে গেছে, সাগর সাঁতরে যায়নি। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে অবৈধভাবে আদম পাচারের মতো কাজে সম্পৃক্ত হওয়া কতটা সমীচীন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিক না হলে আপনি লিখে দিন। আমি মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারকে বলব ওদের ধরে যেন দেশে পাঠিয়ে দেন। মিলেনিয়াম হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সংগঠন আমাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি করে। আমি সংগঠনটির উপদেষ্টা। ওরা ক'দিন আগেও আরও কিছু ছেলেকে বিদেশে নেয়ার জন্য এসেছিল। অন্য দেশে প্রোগ্রাম দিয়েছিল। আমি বলেছি, সময় নেই। কুয়ালালামপুরে যে অনুষ্ঠানের কথা বলে লোক নেয়া হয়েছে, সে অনুষ্ঠান যে হয়নি তাও স্বীকার করেন সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, ওই অনুষ্ঠান না হলেও আমি যেহেতু আওয়ামী লীগদলীয় এমপি, তাই দলীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। হাইকমিশনারকে বলেছি, আমাদের ছেলেদের ভালো-মন্দ দেখাশোনা করার জন্য।
অনুষ্ঠানের আরেক আমন্ত্রিত এমপি আসাদুজ্জমান খান আমার দেশকে বলেন, দাওয়াত দেয়ার পরই আমার সন্দেহ হয়েছে। তাই আমি খোঁজখবর নিই। স্বাস্থ্য উপদেষ্টাও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চান। আমার সন্দেহের কথা আমি তাকেও জানাই। পরে তিনি ও আমি ওই সফর থেকে বিরত থাকি।
আরো পড়ুনঃ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার শিগগিরই খোলার গল্পের যেন শেষ নেই : সরকারের সঙ্গে দূরত্ব ও দুর্নীতি-অনিয়ম বড় অন্তরায়

এইসব বান্দরদের হাতে পড়েছে দেশের মর্যাদা! এদের না আছে বিদ্যা-বুদ্ধি, না আছে লজ্জা-শরম। দেশের রিপ্রিজেন্টেটিভ হওয়া তো দূরের কথা, এরা বিদেশের যেকোন হোটেলের বয় হওয়ার যোগ্যতাও রাখে না। গ্লোবালাইজেশনের যুগে আজ বাংলাদেশ কোনঠাসা। উন্নত বিশ্বের কোন দেশের মন্ত্রীদের সাথেই এরা কথা বলতে জানে না, ডিপ্লোম্যাটিক জ্ঞান তো দূরের কথা!

[আমেরিকা, কানাডা, ইউকে'র রাষ্ট্রদূতদেরও একই অবস্থা। দলবাজি করাই এদের বড় যোগ্যতা। ডক্টরেট ডিগ্রীধারী হলেও আওয়ামী লীগ করলে যা হয়! আওয়ামী লীগের রিক্সাওয়ালা আর প্রেসিডেন্ট একই রকম চিন্তা করে। পরবর্তীতে আরো ফিরিস্তি প্রকাশ করার ইচ্ছা রইল। ]
 


__._,_.___


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190




Your email settings: Individual Email|Traditional
Change settings via the Web (Yahoo! ID required)
Change settings via email: Switch delivery to Daily Digest | Switch to Fully Featured
Visit Your Group | Yahoo! Groups Terms of Use | Unsubscribe

__,_._,___