এই রায় মানি না
গুরু পাপে লঘু দণ্ড
কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে মঙ্গলবার বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বাইরে মুক্তিযোদ্ধাদের বিক্ষোভ সমকাল
একাত্তরে রাজধানীর মিরপুরের আলোকদি ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় লোমহর্ষক গণহত্যার জন্য 'কসাই কাদের' হিসেবে পরিচিত কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ জাতি। ট্রাইব্যুনাল গুরু পাপে লঘু দণ্ড দিয়েছেন। এ রায় দেশবাসী প্রত্যাখ্যান করেছে। মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য, আইনজীবী, সুশীল সমাজের বিশিষ্টজনরা মনে করছেন, দুই সপ্তাহ আগে প্রথম রায়ে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। বাচ্চু রাজাকারের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি অপরাধ এবং একাধিক গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়ে 'কসাই' খেতাব অর্জন করা কাদের মোল্লারও একই শাস্তি হবে_ এমন প্রত্যাশা ছিল সবার। আর কত মানুষ হত্যা করলে কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেওয়া হতো, তা জানতে চেয়েছেন অনেকেই। শহর-বন্দর-গ্রামে সর্বস্তরের মানুষ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেছেন, 'আমরা এ রায় মানি না।'
গতকাল মঙ্গলবার সকালে আদালত ১৩২ পৃষ্ঠার রায় পড়ার সময় কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার সর্বোচ্চ শাস্তির প্রত্যাশা আরও জোরালো হয় সাধারণ মানুষের মনে। কয়েক মুহূর্ত পরে আদালত তার যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ ঘোষণা করলে গোটা জাতি হতবাক হয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে সকাল থেকে
অপেক্ষমাণ মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য এবং শত শত সাধারণ মানুষ রায় ঘোষণার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। উপস্থিত সবাই বলেন, কাদের মোল্লার অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি হয়নি। সবার চোখে-মুখে প্রশ্ন ও বিস্ময়_ একাত্তরে একের পর এক গণহত্যায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য কাদের মোল্লা আরও কত বড় অপরাধ করলে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতো? রায়ের পরপরই গণমাধ্যমকে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রথম মামলার বাদী মোজাফফর আহমেদ বলেন, এ রায়ে শুধু তিনি নন, দেশের সব শহীদ পরিবার ও সাধারণ মানুষ ব্যথিত। মামলার অন্যতম প্রধান সাক্ষী একাত্তরের রণাঙ্গনের মামা বাহিনীর প্রধান কমান্ডার শহীদুল হক মামা বলেন, এ রায়ে প্রতিটি শহীদ পরিবারের সদস্যরা চোখের পানি ফেলবেন। তিনি আদালতে অভিযোগ সঠিকভাবে উপস্থাপন না করার জন্য প্রসিকিউশনকে দায়ী করেন।
বিচার শেষে কারাগারে নেওয়ার সময় গাড়িতে ও পরে জেলগেটে কাদের মোল্লা হাসিমুখে আঙুল তুলে বিজয় চিহ্ন দেখান। শাহবাগ মোড়ে গত রাতে শত শত তরুণ কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে অবস্থান শুরু করেছেন। গতকাল সংসদে মহাজোটের তিন সাংসদ কাদের মোল্লাকে লঘু দণ্ড দেওয়ার কঠোর সমালোচনা করেন।
এদিকে রায়ে ব্যাপক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
দেশের প্রতিটি প্রান্তে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের কাছে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ এই রায়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন। এর আগে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশের পর দেশজুড়ে যে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল, কাদের মোল্লার রায়ের পর তা পরিণত হয় ক্ষোভ আর হতাশায়। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, দোয়েল চত্বরে তাৎক্ষণিক রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের খবর আসে। বিকেলে ব্লগার ফোরামের পাঁচ শতাধিক সদস্য শাহবাগের মোড়ে রাস্তায় বসে রায়ের প্রতিবাদ জানান এবং কাদের মোল্লার ফাঁসি দাবি করেন। সন্ধ্যার পর সেখানে অবস্থান নেন নানা শ্রেণী-পেশার তরুণ-তরুণী ও সাধারণ মানুষ। রাজনীতিবিদ ও সংস্কৃতিসেবীরা তাদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। সন্ধ্যায় অমর একুশে গ্রন্থমেলায়ও লেখক-পাঠকরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে রায়ের প্রতিবাদ জানান।
মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের প্রতিক্রিয়া :রায়ে আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে হাইকোর্টের বাইরে বিক্ষোভ করেন তারা। গণহত্যা, ধর্ষণসহ অনেক গুরুতর অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পরও কাদের মোল্লাকে এমন লঘু শাস্তি দেওয়ায় তারা হতাশ হয়েছেন।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল চত্বরে রায় শুনতে জড়ো হওয়া শহীদ পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধারা ছাড়াও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সংস্কৃতিকর্মীরা দাবি করেন, এ রায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ করেনি। এটা জাতির জন্য চরম দুর্ভাগ্য। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত সব মানুষকে হতাশ করেছে দাবি করে তারা মনে করেন, রাষ্ট্রপক্ষের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা উচিত।
মামলার বাদী মোজাফফর আহমেদ বলেন, কাদের মোল্লা অসংখ্য মানুষ হত্যা করেছেন। তার অপরাধের বিরুদ্ধে যথাযথ তথ্য-প্রমাণ ও চাক্ষুষ সাক্ষী সবই ছিল। আদালতও তার বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ার কথা বলেছে। তার পরও কেন তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো না, তা এখন পুরো জাতির প্রশ্ন। তিনি বলেন, 'প্রসিকিউশন মাল খেয়ে দুর্বলভাবে মামলা উপস্থাপন করেছে বলে সন্দেহ রয়েছে।'
কমান্ডার শহীদুল হক মামা বলেন, একাত্তরে যারাই কাদের মোল্লাকে দেখেছেন, তারাই জানেন, কতটা নিষ্ঠুর ছিল সে। তার অপরাধের শাস্তি অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড কাম্য ছিল। এ কারণে এ রায় জাতিকে চরমভাবে হতাশ করেছে। তিনি বলেন, 'এভাবে এই ঘাতকদের আইনি সুবিধা দেওয়ার জন্যই কি একাত্তরে মৃত্যুর পরোয়া না করে যুদ্ধে গিয়েছিলাম? এই কি শহীদদের আত্মাকে দেওয়া প্রতিদান?' তিনিও অভিযোগ করেন, প্রসিকিউশনের দুর্বলতার কারণেই কাদের মোল্লা আইনি সুবিধা পেয়েছে। এখন মনে হচ্ছে, দেশের স্বাধীনতার চেয়ে রাজাকারের জীবন রক্ষা করাই বড়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আবদুল কাদের মোল্লাকে দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদ ের রায় ভুয়া বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবের ছেলে খন্দকার আবুল আহসান। রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, কাদের মোল্লার অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে এই শাস্তি অতি নগণ্য। এ রায় কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। খন্দকার আবুল আহসান আরও বলেন, 'কাদের মোল্লার কারণে আমার বাবা প্রাণ হারিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পরপরই ২৯ মার্চ আমার বাবাকে হত্যা করা হয়। এরপর আমার মা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। বাকি জীবন তাকে এভাবেই কাটাতে হয়। আমরা আশা করেছিলাম, কাদের মোল্লার মৃত্যুদ হবে। তাহলে হয়তো বাবা হারানোর শোক, মায়ের অসুস্থতার ব্যথা কিছুটা কাটাতে পারতাম। কিন্তু এ রায় আমাদের হতাশ করেছে।'
শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, 'এ রায় জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। আমি দুঃখিত, মর্মাহত। যে কাদের মোল্লা ছিল খুনি, যে মানুষের শরীর দ্বিখ িত করেছে, সেই কসাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদ দিলেন ট্রাইব্যুনাল। এখন এ কসাই জামাই আদরে থাকবে কারাগারে, ডিভিশন পাবে।'
শহীদ কবি মেহেরুন্নেছার বন্ধু ও কবি কাজী রোজী বলেন, 'এ রায় আমরা চাইনি, এ রায় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।'
মুক্তিযোদ্ধা ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, রায় প্রত্যাশিত হয়নি। গণহত্যাকারীর জন্য গোটা জাতি, বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম, মুক্তিযোদ্ধারা যে প্রত্যাশা করেছিল, এ রায় সে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম, কাদের মোল্লার ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। তাই এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের আপিল করা উচিত।'
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ বলেন, কাদের মোল্লা কবি মেহেরুন্নেছা হত্যায় জড়িত। সুতরাং এ রায় আমাদের জন্য সন্তোষজনক নয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল করা উচিত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, 'ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি প্রমাণিত হওয়ার পরও কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদ ের যে রায় দেওয়া হয়েছে, তাতে হতাশ হয়েছি। কাদের মোল্ল?ার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও ধর্ষণের মতো অভিযোগগুলো সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই আমরা যাবজ্জীবনের এ রায় প্রত্যাখ্যান করছি।'
বিশিষ্টজনের প্রতিক্রিয়া :সমকালের সঙ্গে আলাপকালে দেশের বিশিষ্টজনরাও তাদের সুচিন্তিত এবং ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বলেন, 'জনগণের প্রত্যাশা ছিল, অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। আমার নিজেরও প্রত্যাশা ছিল তা-ই। অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়ার প্রত্যাশা পূরণ না হলেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যে রায় হয়েছে, তা আমাদের গ্রহণ করতেই হবে।'
টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেন, 'বাংলাদেশের আইনে যেহেতু সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, এ কারণে সাধারণ একটা সেন্টিমেন্ট হচ্ছে এসব ব্যক্তি একাত্তরে যেসব অপরাধ করেছিল, তার জন্য তাদের সর্বোচ্চ শাস্তিটাই হবে। জনগণের সেই সেন্টিমেন্টকে আমি সমর্থন এবং সম্মান করি। কারণ, আমি নিজেকেও একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের কর্মকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে মনে করি জাতির একজন হিসেবে। রায় ঘোষণার পর সাধারণ মানুষ যারা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল, তাদের প্রত্যেকে বলেছে, এই ব্যক্তির অপরাধের তুলনায় শাস্তি কম হয়েছে। তার মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত ছিল। অর্থাৎ এই মানবতাবিরোধী অপরাধীরা সাধারণ মানুষের কাছে কতটা ঘৃণ্য, তাও প্রমাণিত হয়েছে।'
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, "এই বিচারের রায় আমাদের ক্ষুব্ধ, হতাশ ও ব্যথিত করেছে। এ রায় অগ্রহণযোগ্য। কেননা, এ রায় বঙ্গবন্ধুকে অপমান করেছে, ত্রিশ লাখ শহীদকে অপমান করেছে, ছয় লাখ বীরাঙ্গনাকে অপমান করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে। আমার প্রশ্ন, কতজনকে হত্যা করলে তার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায়? আগের রায়ে এর চেয়ে কম অপরাধের জন্য বাচ্চু রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, অথচ তার চেয়ে বহুগুণ বেশি অপরাধ করে সাজা হয়েছে যাবজ্জীবন। এ বৈষম্য সন্দেহের উদ্রেক করেছে। আমি একজন রিকশাওয়ালার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, 'কী দরকার ছিল এই নাটকের?' এ কারণে বলব, নীতিনির্ধারকদের কথা আর শোনার কিছু নেই। এবার আমাদের কথা শুনুন, জনগণের মনের কথা বোঝার চেষ্টা করুন। নোংরা রাজনীতির কোনো খেলা হলে জনগণের আস্থা হারাবেন। আগামী নির্বাচনে উতরে যেতে পারবেন কি-না তা নিয়েও ঘোর সন্দেহ থেকে যাবে।"
ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির প্রধান ড. এমএ হাসান বলেন, 'আমিও সাধারণ মানুষের মতোই হতাশ ও ক্ষুব্ধ। আমার সঙ্গে যারা একাত্তরে যুদ্ধ করেছেন, সেই মুক্তিযোদ্ধারা ফোন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিচারের যে প্রক্রিয়া, সেটা আমাদের মেনে নিতে হবে। এটাই সভ্যতার দিক। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী কী করছে, সেটাও দেখতে হবে। জামায়াতের নেতারা রাস্তায় ট্রাইব্যুনাল ভেঙে দেওয়ার দাবি জানানোর পরও তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না, সাজা দেওয়া হচ্ছে না। জামায়াতের নেতারা রাষ্ট্রদ্রোহেরও অপরাধ করছেন, অথচ তারা নির্বিঘ্নে সব ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করছেন। তারা কেন আইনের আওতায় আসছেন না, এটা এখন জাতির সামনে বড় প্রশ্ন। আর একটা কথা, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে পুরো মামলাটি উপস্থাপন করতে প্রসিকিউশন দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে। অন্যদের মামলার ক্ষেত্রেও এই দুর্বলতা আছে বলে মনে হচ্ছে। অসংখ্য সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকার পরও কেন প্রসিকিউশনের এই দুর্বলতা?'
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. জহির বলেন, 'এই রায়ে আমি বিস্মিত। এ মুহূর্তে এতটুকুই বলব। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।'
বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্দীন মালিক বলেন, অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড যাবজ্জীবন কারাভোগের চেয়ে লঘু দণ্ড হতে পারে। বিশেষত, যে ব্যক্তি আরাম-আয়েশে ন্যায়-অন্যায়ভাবে প্রভাব-প্রতিপত্তিতে অভ্যস্ত জীবনযাপন করেছে, তার জন্য যাবজ্জীবন কারাবাস বেশি কষ্টদায়ক শাস্তি। সেই বিবেচনায় কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সঠিক শাস্তি হয়েছে বলে মনে করি। যে অভিযোগে কাদের মোল্লা দোষী সাব্যস্ত হয়নি, সেটি সম্ভবত প্রসিকিউশনের দুর্বলতা ও দক্ষতার অভাবের কারণে হয়েছে।'
রেটিং দিন :
__._,_.___