On Sunday, November 17, 2013 11:18 PM, SyedAslam <syed.aslam3@gmail.com> wrote:
জামায়াত চরমপন্থী দল! ব্রিটেনে জুড়ে সতর্কতা জারি
- See more at: http://www.khabor.com/?p=12752#sthash.4uxNl55i.dpuf
- 0
- 0
inShare - digg
- CevherShare
দলগতভাবে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ক্রিমিনাল সংগঠন জামায়াত ও তার নেতাদের উগ্রপন্থী কর্মকান্ডের চেহারা এবার প্রকাশ হয়ে পড়েছে ব্রিটেনের আন্তঃধর্মীয় সংগঠনগুলোর কাছে। ব্রিটেনের মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান, হিন্দু, ইহুদী ও শিখসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কাছে প্রকাশ হয়ে পড়েছে ধর্মীয় চেহারার আড়ালে মানবতাবিরোধী কর্মকান্ড সহ চরমপন্থী সন্ত্রাসী দল হিসেবে জামায়াতের তৎপরতা। বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালে দন্ডিত যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মাঈনুদ্দীনের ব্রিটিশ ইন্টারফেইথ গ্রুপগুলোতে অনুপ্রবেশ বিষয়ে ব্রিটিশ সোসাইটিকে এরই মধ্যে সতর্ক করে দিয়েছে আন্তঃধর্মীয় সহাবস্থানে সক্রিয় 'অলফেইথ নেটওয়ার্ক।' একই সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে চরমপন্থী দল আখ্যা দিয়ে এর বিষয়েও সতর্কতা জারি করেছে নেটওয়ার্কটি। জামায়াতের সঙ্গে উগ্রবাদী সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডও ব্রিটিশ ইন্টারফেইথ গ্রুপগুলোকে ব্যবহার করে তাদের সাংগঠনিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ব্রিটেনের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সংগঠনগুলোর প্রতিবেদনে। 'দ্য ইন্টারফেইথ ইন্ডাস্ট্রি' শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এই সতর্কতার কথা জানিয়েছে অলফেইথ নেটওয়ার্ক।
যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মাঈনুদ্দীনকে দেশে ফিরিয়ে দিতে ব্রিটিশ সরকারের কাছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখা, যুক্তরাজ্য গণজাগরণ মঞ্চ ও ওয়ার্কিং ফর জাস্টিস অনেক আগেই আবেদন জানিয়েছিল। তবে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশে দন্ডিত যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মাঈনুদ্দীনের ব্রিটিশ ইন্টারফেইথ গ্রুপগুলোতে অনুপ্রবেশ বিষয়ে ব্রিটিশ সোসাইটিকে সতর্ক করে দিয়েছে অলফেইথ নেটওয়ার্ক। একই সঙ্গে জামায়াতকে চরমপন্থী দল আখ্যা দিয়ে সতর্কতাও জারি করা হলো।
জামায়াতসহ উগ্রবাদীদের বিষয়ে ব্রিটেনে বসবাসরতদের এই অবস্থানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, এটা অনেক বড় একটা উদ্যোগ। জামায়াতের সঙ্গে এখন কাজ করছে হেফাজত। এদের সঙ্গে আছে আল কায়েদা কানেকশন। এদের সম্পর্কে ব্রিটেনের মানুষ সতর্ক হচ্ছে। সেখানে বসবাসরত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে এ উগ্রবাদী জামায়াতের হাত থেকে বাঁচাতে হবে।
তিনি এ বিষয়ে আরও কাজ করার কথা উল্লেখ করে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা ছাড়া যেমন আমরা জঙ্গীবাদীদের একা দমন করতে পারব না, তেমনি ব্রিটিশ সমাজকেও এদের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে, ব্রিটেনের মুসলিম সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে হলে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। ব্রিটেনে বসবাসকারী মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে উগ্রবাদীদের বিষয় নিয়ে। জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে নেটওয়ার্কটির আয়োজনে 'ডায়লগ এ্যান্ড দ্য চ্যালেঞ্জ অব এক্সট্রিমিজম: হয়্যার হ্যাজ ইন্টারফেইথ গন রং' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এতে বলা হয়, ধর্মীয় চরমপন্থা যারা উস্কে দেয় তাদের সঙ্গে রেখে ইন্টারফেইথ গ্রুপগুলো ব্রিটিশ সমাজে আন্তঃধর্মীয় সহাবস্থান বজায় রাখতে কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারবে তা অবশ্যই ভাবতে হবে। হাউস অব লর্ডসে অনুষ্ঠিত অলফেইথ নেটওয়ার্কের এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রিটিশ অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ ফর ফ্রিডম অব রিলিজিয়ন-এর ভাইস চেয়ার ব্যারোনেস কক্স। মূল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন 'দ্য ইন্টারফেইথ ইন্ডাস্ট্রি' প্রতিবেদনের রচয়িতা সাম ওয়েস্টপ। বক্তব্য রাখেন চার্চ টুগেদার ইন ব্রিটেন এ্যান্ড আয়ারল্যান্ডের পিটার কলওয়েল, অলফেইথ নেটওয়ার্কের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ার খলিল ইউসুফ, হেনরি জ্যাকসন সোসাইটির ডগলাস মুর ও ওয়েস্ট মিনস্টার ইনস্টিটিউটের শেখ মোহাম্মদ আল হোসাইনি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান, হিন্দু, ইহুদী ও শিখসহ বিভিন্ন ধর্মের শীর্ষ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম ব্রাদারহুড ব্রিটিশ ইন্টারফেইথ গ্রুপগুলোকে ব্যবহার করে তাদের সাংগঠনিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।
জামায়াতে ইসলামীর কর্মকান্ড সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের একটি বড় অংশের মধ্যে নিজেদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ব্রিটেনের মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করতে চায় এই মৌলবাদী সংগঠনটি। আর এই প্রতিনিধিত্বের নামেই টাওয়ার হ্যামলেটস ইন্টারফেইথ ফোরাম ও ইস্ট লন্ডন কমিউনিটি অর্গানাইজেশনসহ ব্রিটিশ ইন্টারফেইথ গ্রুপের কোন কোনটিতে তারা সম্পৃক্ত হয়েছে। শুধু সম্পৃক্ততাই নয়, নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারও করছে এই ইন্টারফেইথ গ্রুপগুলোকে। জামায়াতকে ইসলামিক ফোরামের নিয়ন্ত্রণাধীন ইস্ট লন্ডন মসজিদকে ধর্মীয় সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা হিসেবেও অভিযুক্ত করা হয় প্রতিবেদনে।
বলা হয়, জামায়াত সমর্থকদের দাপটের কারণে উদারপন্থী মুসলমানরা ইন্টারফেইথ গ্রুপগুলো থেকে সরে আসছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা সংঘটনে জামায়াতের ভূমিকা ও একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দলটির নেতাদের মৃত্যুদন্ডের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয় 'দ্য ইন্টারফেইথ ইন্ডাস্ট্রি' প্রতিবেদনে। ইন্টারফেইথ গ্রুপের অন্যতম অংশীদার মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের (এমসিবি) সঙ্গে সম্পৃক্ত দাওয়াতুল ইসলামের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা চৌধুরী মাঈনুদ্দীন একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যা সম্প্রতি বাংলাদেশের ওয়ারক্রাইম ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিতও হয়েছে।
মাঈনুদ্দীনকে একজন ওয়ান্টেড ওয়ার ক্রিমিনাল হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়, একাত্তর সালে আলবদর বাহিনীর কিলিং স্কোয়াডের নেতা চৌধুরী মাঈনুদ্দীনকে ১৮ সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীকে অপহরণ ও হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে চলতি মাসে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ারক্রাইম ট্রাইব্যুনাল। চৌধুরী মাঈনুদ্দীনকে যে ইন্টারফেইথ ইভেন্টগুলোতে নিয়মিত বক্তব্য রাখার সুযোগ দেয়া হতো সে কথা উল্লেখ করে তার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় প্রতিবেদনে।
মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ আব্দুল বারীকে 'এক্সট্রিমিস্ট সংগঠন' ইসলামিক ফোরাম ইউরোপের সাবেক সভাপতি ও ইস্ট লন্ডন মসজিদের বর্তমান চেয়ার হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়, ২০০৬ সালে মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের জেনারেল সেক্রেটারি থাকাকালীন একাত্তরে গণহত্যার দায়ে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ইস্ট লন্ডন মসজিদ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছিলেন আবদুল বারী। মৃত আল কায়েদা নেতা আনোয়ার আল আওলাকীকে ইস্ট লন্ডন মসজিদের একটি অনুষ্ঠানে যোগদানের পক্ষে মসজিদ কমিটির সিদ্ধান্তকেও সমর্থন দিয়েছিলেন ড. বারী প্রতিবেদনে এমন তথ্যও স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় ব্রিটিশ সোসাইটিকে। ব্রিটিশ সেনা ও ইহুদী সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের পক্ষে রচিত ইস্তাম্বুল ঘোষণায় মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের (এমসিবি) তৎকালীন ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল দাউদ আব্দুল্লার স্বাক্ষরের পর ২০০৯ সালে ব্রিটিশ সরকার এমসিবি বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছিল সে কথারও উল্লেখ রয়েছে 'দ্য ইন্টারফেইথ ইন্ডাস্ট্রি'র প্রতিবেদনে।
বলা হয়েছে, দাউদ আব্দুল্লাহ বাংলাদেশের ওয়ারক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিপক্ষে লেখা একটি চিঠিতেও স্বাক্ষর করেছিলেন, যে চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের আরেক শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমকে 'ইসলামিক ব্যক্তিত্ব' হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
__._,_.___