যেভাবে পতিত হচ্ছে আওয়ামী লীগ!
গোলাম মাওলা রনি |
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং দলীয় সভানেত্রীর অনুষ্ঠানে লোক সমাগম দেখে অন্তরের ক্ষত বোঝা যাবে না। বুঝতে হলে আপনাকে যেতে হবে পথে-প্রান্তরে যেখানে, যেখানে বিএনপি জামায়াত সরকারবিরোধী সন্ত্রাস চালাচ্ছে। আগেরকার দিনে আওয়ামী লীগ দলীয় লোকজন রাজপথে থাকত। ইদানীং থাকছে না এবং আগামী দিনে আরও থাকবে না। এর কারণ আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে ক্ষতবিক্ষত করেছি ভয়াবহ অন্তর্দ্বন্দ্বের মাধ্যমে।
সারাদেশে মন্ত্রী-উপদেষ্টা-এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং পৌর মেয়ররা একে অপরের সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়িয়ে এক বহুমুখী সংঘাতের ক্ষেত্র তৈরি করে দলকে প্রায় নির্জীব করে ফেলেছে। এই স্থান থেকে রাতারাতি ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় দলীয় প্রধানই জানেন।
সরকারের অরাজনৈতিক ও অযোগ্য মন্ত্রীগুলো ক্ষতি করছেন সবচেয়ে বেশি। কোনো এলাকার যে কেউ এসে তাদেরকে একটু তোষামোদ করলেই তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার এমপিকে বাদ দিয়ে এমন সব কর্মকাণ্ড করে বসেন যাতে করে এলাকার দলীয় শৃঙ্খলা বলতে কিছু থাকে না। কয়েকজন মন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদতে গত এক বছরে সারাদেশে দলীয় হানাহানি মারাত্মকভাবে বেড়েছে। সেইসব অযোগ্য মন্ত্রীরা তাদের নিজেদের এলাকায় যেমনি অজনপ্রিয়, তেমনি জাতীয় পর্যায়ে চরমভাবে ঘৃণিত এবং সমালোচিত বটে। এই অবস্থায় তাদের হতাশার আগুন তারা ছড়িয়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশের সেইসব এলাকায় যেখানে আওয়ামী লীগ তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে ছিল। দলীয় প্রধান এই সর্বনাশা খেলার ইতিকথা জানেন কি না তা আমি বলতে পারব না।
এ প্রসঙ্গে আমার নিজের এলাকার উদাহরণটি টানছি। বাংলাদেশের ২/১টি সংসদীয় আসনে যদি আওয়ামী লীগের ১০০ ভাগ জয়লাভের নিশ্চয়তা ছিল তার মধ্যে আমার এলাকাটির নাম আসত সর্বাগ্রে। কিন্তু ২ মন্ত্রীর কারণে গত ৩ মাসে পটুয়াখালী-৩ আসনের সেই সুদিন আর নেই। আমি যখন জেলে তখন গলাচিপা থানায় আমার বিরুদ্ধে ছিনতাই, ডাকাতি, দোকান লুটের বেশ কয়েকটি মামলা হয় ওই মন্ত্রীদের সরাসরি নির্দেশে। প্রায় ২০০ নেতৃস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে জড়ানো হয় সেইসব মিথ্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে। আমার ৫০ দিনের জেলবাসের সময় এসব নেতা এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। তাদের পরিবার পরিজনের ওপর নেমে আসে প্রশাসনিক নির্যাতন, হুমকি-ধামকি এবং সামাজিকভাবেও তারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের শিকার হন।
আমি জেল থেকে বের হওয়ার পর অনেককে জামিনে মুক্ত করার চেষ্টা করেছি। অনেকে আবার ১০/১৫ দিন জেলও খেটেছেন। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের সুরক্ষিত দৃষ্টিতে বিএনপি-জামায়াতের লোকরা বার বার হানা দিয়ে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করে নিয়েছেন। গত হরতালে তারা নজিরবিহীন তাণ্ডব চালিয়েছে, আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। কারণ, আমি দলীয় কোনো নেতাকর্মীকে মাঠে জমাতে পারছি না। তারা সবাই একই খোমী দিয়ে বলছেন, সরকারি দল করে বিনা দোষে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই মামলার আসামি হলাম, জেল খাটলাম আর এখনও পুলিশি হয়রানির শিকার হচ্ছি! এর ওপর আবার বিএনপি-জামায়াতের প্রতিরোধের ধকল সইব কেমনে! বা কিসের জন্য!
আমি ওসির সঙ্গে কথা বললাম, ওসি বলল এসপির কথা, এসপি বলল মন্ত্রীর কথা, আর মন্ত্রী বলল...। এই অবস্থায় আমি কী করতে পারি তা ভেবে পাচ্ছি না। এ তো গেল কেবল একটি এলাকার কথা। গোটা পটুয়াখালী জেলার সর্বত্র পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। আর যদি বরিশাল বিভাগের কথা বলি, তবে আপনারা আরও হতাশ হবেন। কাজেই জননেত্রী তার সুযোগ্য পুত্র যদি সরকারের ক্ষমতার একক অর্থাত্ এমপিদের জঞ্জালমুক্ত করে স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতার বলয়টি পাকাপোক্ত করার উদ্যোগ না নেন, তবে কোনো শুভফল আসবে বলে আমার মনে হচ্ছে না।
সৌজন্যে : নিউজগার্ডেনবিডিডটকম
সারাদেশে মন্ত্রী-উপদেষ্টা-এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং পৌর মেয়ররা একে অপরের সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়িয়ে এক বহুমুখী সংঘাতের ক্ষেত্র তৈরি করে দলকে প্রায় নির্জীব করে ফেলেছে। এই স্থান থেকে রাতারাতি ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় দলীয় প্রধানই জানেন।
সরকারের অরাজনৈতিক ও অযোগ্য মন্ত্রীগুলো ক্ষতি করছেন সবচেয়ে বেশি। কোনো এলাকার যে কেউ এসে তাদেরকে একটু তোষামোদ করলেই তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার এমপিকে বাদ দিয়ে এমন সব কর্মকাণ্ড করে বসেন যাতে করে এলাকার দলীয় শৃঙ্খলা বলতে কিছু থাকে না। কয়েকজন মন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদতে গত এক বছরে সারাদেশে দলীয় হানাহানি মারাত্মকভাবে বেড়েছে। সেইসব অযোগ্য মন্ত্রীরা তাদের নিজেদের এলাকায় যেমনি অজনপ্রিয়, তেমনি জাতীয় পর্যায়ে চরমভাবে ঘৃণিত এবং সমালোচিত বটে। এই অবস্থায় তাদের হতাশার আগুন তারা ছড়িয়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশের সেইসব এলাকায় যেখানে আওয়ামী লীগ তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে ছিল। দলীয় প্রধান এই সর্বনাশা খেলার ইতিকথা জানেন কি না তা আমি বলতে পারব না।
এ প্রসঙ্গে আমার নিজের এলাকার উদাহরণটি টানছি। বাংলাদেশের ২/১টি সংসদীয় আসনে যদি আওয়ামী লীগের ১০০ ভাগ জয়লাভের নিশ্চয়তা ছিল তার মধ্যে আমার এলাকাটির নাম আসত সর্বাগ্রে। কিন্তু ২ মন্ত্রীর কারণে গত ৩ মাসে পটুয়াখালী-৩ আসনের সেই সুদিন আর নেই। আমি যখন জেলে তখন গলাচিপা থানায় আমার বিরুদ্ধে ছিনতাই, ডাকাতি, দোকান লুটের বেশ কয়েকটি মামলা হয় ওই মন্ত্রীদের সরাসরি নির্দেশে। প্রায় ২০০ নেতৃস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে জড়ানো হয় সেইসব মিথ্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে। আমার ৫০ দিনের জেলবাসের সময় এসব নেতা এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। তাদের পরিবার পরিজনের ওপর নেমে আসে প্রশাসনিক নির্যাতন, হুমকি-ধামকি এবং সামাজিকভাবেও তারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের শিকার হন।
আমি জেল থেকে বের হওয়ার পর অনেককে জামিনে মুক্ত করার চেষ্টা করেছি। অনেকে আবার ১০/১৫ দিন জেলও খেটেছেন। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের সুরক্ষিত দৃষ্টিতে বিএনপি-জামায়াতের লোকরা বার বার হানা দিয়ে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করে নিয়েছেন। গত হরতালে তারা নজিরবিহীন তাণ্ডব চালিয়েছে, আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। কারণ, আমি দলীয় কোনো নেতাকর্মীকে মাঠে জমাতে পারছি না। তারা সবাই একই খোমী দিয়ে বলছেন, সরকারি দল করে বিনা দোষে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই মামলার আসামি হলাম, জেল খাটলাম আর এখনও পুলিশি হয়রানির শিকার হচ্ছি! এর ওপর আবার বিএনপি-জামায়াতের প্রতিরোধের ধকল সইব কেমনে! বা কিসের জন্য!
আমি ওসির সঙ্গে কথা বললাম, ওসি বলল এসপির কথা, এসপি বলল মন্ত্রীর কথা, আর মন্ত্রী বলল...। এই অবস্থায় আমি কী করতে পারি তা ভেবে পাচ্ছি না। এ তো গেল কেবল একটি এলাকার কথা। গোটা পটুয়াখালী জেলার সর্বত্র পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। আর যদি বরিশাল বিভাগের কথা বলি, তবে আপনারা আরও হতাশ হবেন। কাজেই জননেত্রী তার সুযোগ্য পুত্র যদি সরকারের ক্ষমতার একক অর্থাত্ এমপিদের জঞ্জালমুক্ত করে স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতার বলয়টি পাকাপোক্ত করার উদ্যোগ না নেন, তবে কোনো শুভফল আসবে বলে আমার মনে হচ্ছে না।
সৌজন্যে : নিউজগার্ডেনবিডিডটকম
__._,_.___