ক্ষমা না চাইলে দর্পণ কবীরের
বিরুদ্ধে মামলা হবে
তথাকথিত সাংবাদিক দর্পণ কবীর-কে তার হিন্দু-বৌদ্ধ-ক্রিস্টান বিরোধী হেট্-স্পীচের জন্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, অন্যথায় তার বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে আরো বৃহৎ সমাবেশ ও আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইসাথে তাকে 'বয়কট' কথাও বলা হয়। শুক্রবার ২রা জুলাই ২০১৫ সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ফুডকোর্টে এক প্রতিবাদ সভায় একথা বলা হয়। সভায় তার কর্মস্থলের বাইরে প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানানো হয় এবং প্রগতিশীল মুসলিম সমাজকে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি নষ্টের জন্যে দর্পণ কবীরের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়। এসময় বিভিন্ন বক্তারা বলেন, হিন্দুদের আর কত দেশপ্রেমের পরীক্ষা দিতে হবে? আর কত আমরা সহ্য করবো?
কবি নিখিল রায়ের সভাপতিত্বে এ সভায় আরো বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যখন ঐতিহাসিক পর্যায়ে উন্নীত হচ্ছে, তখন দর্পণ কবিরের মত পাকিস্তানী প্রেতাত্মারা নুতন করে সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়াচ্ছে। এরাই খেলার মাঠে পাকিস্তানি পতাকা ওড়ায় এবং খেলার অজুহাতে সম্প্রীতি বিনস্ট করার চেস্টা করে। ভারত হারায় হিন্দুদের মন খারাপ; হিন্দুরা ভারতে টাকা পাঠায়, বাংলাদেশে পাঠায় না; ঐক্য পরিষদ একটি জঙ্গী সংগঠন এবং এর নেতারা জঙ্গী; হিন্দু সম্প্রদায়ের দেশপ্রেম বটে জনাব দর্পণ কবিরের এমত মন্তব্যের প্রতিবাদে আহুত এসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ঐক্য পরিষদ নেতা নবেন্দু বিকাশ দত্ত এবং লেখক সুব্রত বিশ্বাস।
সভায় নবেন্দু দত্ত বলেন, আমাদের সিলেটে বলে কুত্তা, ভদ্রভাষায় বলে কুকুর, যার মাথা কেটে কুকুরের মাথা বসানো হয়, তারপরও তার লজ্জা হয় নাই, লজ্জা থাকলে তিনি এই সমাজে আর মুখ দেখাতেন না। প্রবীর রায় বলেন, আমি হলে দর্পন্যার মাথায় কুত্তার বদলে কায়োটি বসতাম, কারণ এই কুত্তা পাকিস্তানী প্রভুভক্ত, কিন্তু কায়োটির চেহারা আরো কুত্সিত, ভয়ঙ্কর, ঠিক দর্পণ কবিরের মত। প্রদীপ মালাকার বলেন, দর্পণ কবির নিজেকে আওয়ামীপন্থী হিসাবে পরিচয় দেন, আসলে তিনি পাকিস্তানপন্থী! সুব্রত বিশ্বাস বলেন, দর্পণ কবিরের আসল চেহারা বেরিয়ে গেছে। বাংলাদেশ-ভারত নুতন ঐতিহাসিক সম্পর্ক সইতে না পেরে দর্পণ কবিররা পাকিস্তানী স্টাইলে হিন্দু-মুসলমান বিভেদ সৃষ্টি করতে চান। তিনি বলেন, তাই তিনি খেলাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়াচ্ছেন।
ঐক্য পরিষদের নেতা সুশীল সাহা বলেন, ঐক্য পরিষদ জঙ্গি সংগঠন তা দর্পণ কবিরকে প্রমান করতে হবে, না পারলে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি বলেন, দর্পণ কবির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সুরসুড়ি দিচ্ছেন, আমি তাকে ঘৃনা করি, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, ক্রিস্টান সবাই তাকে ঘৃনা করে। সুশীল সাহা বলেন, ক্ষমা না চাইলে তাকে খেসারত দিতে হবে; এখন প্রতিবাদ হচ্ছে, সামনে তাকে প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত। ডা: নিহার রঞ্জন সরকার বলেন, দর্পণ কবিরের বক্তব্য হেইট-ক্রাইম কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, আমি মনে করিনা এই বক্তব্য দেশের সব মুসলমানের কথা, কিন্তু তারা তো কোন কথা বলছেন না। তারা কথা বললে নাহয় বুঝতাম তারা অন্য কমুনিটির সাথে শান্তি চান! ডা: নিহার বলেন, ক্রনিক ম্যালনিউট্রিশনে হাজার হাজার শিশু মারা যায়, কোন হৈচৈ হয়না, কিন্তু ডায়রিয়ায় ১০টি শিশু মারা গেলে তুমুল হইচই হয়, হিন্দুরা ক্রনিক ম্যালনিউট্রিশনের মত দেশ ছাড়ছে, কোন হৈচৈ হয়না। ইংরেজীতে তিনি বলেন, 'হোয়াট ফুল ইউ আর দ্যাট ইউ আর ট্রায়িং টু ক্লিনজ দ্য মাইনরিটি'?
মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারী বলেন, দর্পণ কবিরদের তো আমরা নুতন দেখছি না। ১৯৪৭ সাল থেকেই এদের দেখছি, এরা পাকিস্তানী প্রেতাত্মা, পাকিস্তানী নীতি ধরে রাখার জন্যে এরা এসব করে। এদের প্রতিহত করতে হবে, দেশরক্ষার জন্যে এটা করা প্রয়োজন। তিনি সবাইকে নিয়ে আরো বড় করে সভা করার কথা বলেন। তিনি বলেন, ঐক্য পরিষদ প্রোগ্রাম দেয়না কেন? সবাইকে নিয়ে বড় কর্মসূচি দিতে হবে। তিনি বলেন, দর্পণ কবিররা পাকিস্থানী প্রেতাত্মা, অসম্প্রাদিকতায় বিশ্বাস করেনা, দেশেও সমস্যা করে, এদেশে এসেও সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায়। তিনি বলেন, কবির একা নন, আরো কবির আছে। এরা পয়সার বিনিময়ে এসব লিখে। জনাব বারী বলেন, এটা তো সত্য, আমরা হিন্দুদের ধরে রাখতে পারছিনা।
সভায় দর্শক সারি থেকে বাবুল রোজারিও জানতে চান, দর্পণ কবিরের বিরুদ্ধে মামলা হবে কিনা? তিনি বলেন, দর্পণ কবির ধর্মীয়, সম্প্রদায়গত, ব্যক্তিগতভাবে এবং বাংলাদেশী হিসাবে আমাদের আক্রমন করেছেন, তাকে ৭দিনের সময় দেয়া হোক, নইলে মামলা করা হোক। তিনি চান প্রবীর রায় এই মামলার দাযিত্ব নিক এবং বলেন, তাহলে এটা সহজ হয়ে যাবে। সভায় প্রবীর রায় এই দাযিত্ব নিতে সন্মত হন। তিনি আরো বলেন, মামলা করলে দর্পণ কবির দৌড়ে এসে ক্ষমা চাইবে।
অনুষ্ঠানের সমাপ্তিতে সভাপতি কবি নিখিল রায় বলেন, আর পিছনে ফিরে তাকানো নয়, আমরা দর্পণ কবিরের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চালাবো, নরপিচাশের শুদ্ধি অভিযান। নরিয়েগাকে যেমন আমেরিকা ধরে এনেছিলো, আমরা চিমটি দিয়ে দর্পণ কবিরকে ধরে আনবো। তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিকভাবে, সমষ্টিগত্ভাবে, ব্যক্তিগতভাবে তার প্রতিরোধ করবো। ক্ষমা না চাইলে আইনের ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। সভায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন, এমএ কাসেম; ডা: টমাস দুলু রায়; প্রদীপ মালাকার; স্বীকৃতি বড়ুয়া; অরিজিত ঘোষ; প্রবীর কুমার গুন; সঞ্জয় সাহা, শিতাংশু গুহ; মানিক কুমার চন্দ; ঝিলম চৌধুরী; ড্যানিয়েল এস বোস; অমিত ঘোষ; রেজাউল বারী; প্রবীর রায়; সুশীল সাহা; নিহার সরকার; বাবুল রোজারিও; সুব্রত বিশ্বাস, নবেন্দু দত্ত, নিখিল রায় প্রমুখ।
বার্তা প্রেরক
কবি নিখিল রায়
7/03/2015
__._,_.___