Banner Advertiser

Wednesday, December 28, 2016

[mukto-mona] বাংলাদেশ থেকে ভারত এবং আমেরিকা, সাম্প্রদায়িকতার নেতৃত্বে রয়েছেন রাজনীতিবিদরাই!



বাংলাদেশ থেকে ভারত এবং আমেরিকা, সাম্প্রদায়িকতার নেতৃত্বে রয়েছেন রাজনীতিবিদরাই!


ধরুন, আমি আপনাকে একটা গালি দিলাম অথবা আপনার ধর্মীয় কোনো পবিত্র স্থানের ছবি ফটোশপে বিকৃত করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিলাম। খুব বিরক্ত হয়েছেন আপনি? আপনার অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে?

ঠিক আছে, আমারও তো ধর্ম আছে। আপনি যদি ভীষণ প্রতিক্রিয়াশীল হন, তাহলে হয়তো আপনিও আমাকে একটা গালি দিবেন অথবা আমার ধর্মীয় কোনো ছবি ফটোশপে বিকৃত করে প্রকাশ করবেন। আর যদি থানায় অভিযোগ করে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন, তাহলে তো ঝামেলা মিটেই গেল, পুলিশ এখন ব্যবস্থা নেবে। এই জাতীয় ঝামেলা তো এভাবেই মিটে যাওয়ার কথা।

বাড়াবাড়িটা হয় তখনই, যখন একটি বিকৃত ছবিকে কেন্দ্র করে ঝামেলাটা আমাদের বাস্তব জীবনে নেমে আসে।

আপনার ছবি বিকৃত করার কাজটি হয়তো আদৌ আমি করি নি, সেটি আপনি ঠিক মত যাচাইও করলেন না। কিন্তু ঐ যে, আপনার দলে অনেক লোকজন আর আমি সংখ্যায় কম, তাই আপনি আপনার ক্ষমতা দেখানো শুরু করলেন।

দলবল নিয়ে আপনি আমার বাড়িতে এসে হামলা করলেন, আমার প্রতিবেশীদেরও বাদ দিলেন না। ওই একটা ছবির কারণে আমার বাড়িঘর ভেঙে দিয়ে, আমাকে মারধর তো করলেনই, সাথে আমার মত আরও একশোটা পরিবারের ওপর হামলা করলেন!!!

এটাই কি নিজের ধর্মের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের নমুনা? মোটেই না, এটি সাম্প্রদায়িকতা। শুধু সাম্প্রদায়িকতা বললে, বিষয়টা হালকা হয়ে যায়। এই ঘটনা এক ধরণের নৃশংসতা, এটি সংখ্যাগুরুদের নৃশংস রূপ!!

এই সিরিজের আরো লেখা পড়তে চাইলে নিচের লিঙ্কগুলোতে ক্লিক করুন:

পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে দিয়া চক্রবর্তীর কলাম

নারীর সাহস আর ভয় নিয়ে দেবশ্রুতি রায়চৌধুরী



বাংলাদেশের একটি বিরাট অংশ সবসময়ই এসব সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদ জানায়

ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী বা আইএস এর কর্মকাণ্ডের কারণে যখন দেশে দেশে মুসলমানদের সন্ত্রাসী হিসেবে দেখা হয়, তখন আমরাই না বলি দু-একজন সন্ত্রাসীর কারণে যেন সব মুসলমানকে সন্ত্রাসী হিসেবে দেখা না হয়। সেই আমরাই কিভাবে একজন হিন্দু ব্যক্তির কথিত কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে একশোটি হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা করতে পারি! কেন একজনের দায় একশো জনের ওপর চাপানো হলো!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু পরিবারগুলোর ওপর হামলার পর প্রতিবাদ করেছিলাম। বাংলাদেশের একটি সাম্প্রদায়িক অংশ এমন হামলা চালায়, আবার আমার মত একটি বিরাট অংশ সবসময়ই এসব হামলার প্রতিবাদ জানায়, আন্দোলন করে।

তাতে অবশ্য বিশেষ কোনো সুবিধে নেই, কারণ প্রতিবাদ করেও তো আমরা এই সাম্প্রদায়িকতার আগুন নেভাতে পারছি না। সত্যি বলতে কি, আগে আমি ভাবতাম, সাম্প্রদায়িকতা বিষয়টা বোধ হয় অশিক্ষিত ও মাথামোটা ধর্মপাগলদের মনে বাস করে।

কিন্তু না, আমার সেই ভুল ভেঙে যায়, যখন দেখি আমারই কজন সুশিক্ষিত ভারতীয় বন্ধু সেদেশে গরু খাওয়ার কারণে মুসলমানদের ওপর হামলা নিয়ে কোন প্রতিবাদ করেন না, কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা হলেই প্রতিবাদ জানান।

আমি বলছি না, ভারতীয়রা সবাই এমন। সেদেশেও একটি বিশাল অংশ আছে, যারা মানবতাবাদী, যারা মানুষের ধর্মীয় পরিচয় ভুলে গিয়ে নিপীড়িত-নির্যাতিতদের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।

তবে, আমার সেই আশা খুব বেশি দূর এগোয় না, যখন দেখি সুষমা স্বরাজের মত একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ সব ধরণের কূটনৈতিক শিষ্টাচার ভুলে গিয়ে টুইটারের মত একটি খোলা জায়গায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেন।

সুষমা স্বরাজের আলোচিত টুইটImage copyright.
Image captionসুষমা স্বরাজের আলোচিত টুইট

বুঝতে সমস্যা হয় না, আমার যে ভারতীয় বন্ধুরা কেবল হিন্দুদের ওপর হামলা হলেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন, কিন্তু মুসলমানদের দুরবস্থা নিয়ে মাথা ঘামান না, তাদের মত ব্যক্তিদের নেতৃত্বে কে বা কারা রয়েছেন? নাহ, কোনো অশিক্ষিত বা মাথামোটা ধর্মপাগল নয় এদের নেতৃত্বদানকারী।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতেও একাধিকবার গরু খাওয়ার অপরাধে মুসলমান ও নিম্নবর্ণের মানুষের ওপর হামলা হয়েছে। বাংলাদেশও একটি মুসলিম প্রধান দেশ, কিন্তু বাংলাদেশ সরকারকে ভারতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে দেখিনি।

আরো তথ্যের জন্য এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

ফেসবুকে আমার ফলোয়ারদের একটি অংশ কথাবার্তায় ভীষণ উগ্র। আমি যখন বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাই, তখন তারা বলে, ভারতেও তো মুসলমানদের ওপর হামলা করছে হিন্দুরা।

আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারি না, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলাকে কেন ভারতে মুসলমানদের ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে জায়েজ করতে হবে! কারণ, ভারতের মুসলমানরা তো আমাদের দেশের নাগরিক নয়, তেমনি বাংলাদেশের কেউ হিন্দু বা অন্য কোনো ধর্মের অনুসারী হলেও তারা তো আমাদের দেশেরই নাগরিক। কাজেই দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা সবার আগে, আমাদেরকেই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

কিন্তু আমার সেই যুক্তি, এদের মন গলাতে পারে না।

আসলে ধর্ম এমনই এক আফিম, যে কারণে মক্কার চেহারা কখনও দেখেনি এমন মানুষও মক্কা শরীফ নিয়ে কেউ কোনো কুপ্রচারণা চালালে জ্বলে ওঠে; তেমনি আবার বাংলাদেশের হিন্দুদের নাম-পরিচয় জানা নেই, এদের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই, এমন অনেকের জন্য ভারতের কতিপয় হিন্দুদের মন পোড়ায়। অথচ, তাদের দেশেরই একজন মুসলমানের ওপর হামলা হলে নিশ্চুপ থাকছে তারা!

কয়েক বছর আগে ভারতের উত্তর প্রদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর একটি উদ্বাস্তু শিবিরে বাস্তুহারা মুসলিম পরিবারের কয়েকজন।Image copyrightBHASKER SOLANKI
Image captionকয়েক বছর আগে ভারতের উত্তর প্রদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর একটি উদ্বাস্তু শিবিরে বাস্তুহারা মুসলিম পরিবারের কয়েকজন।

এই আফিম যে শুধু বাংলাদেশ ও ভারতের দু-একটি উগ্র মৌলবাদী দলই গিলছে, তা কিন্তু নয়। খোদ রাজনীতিবিদরাই এই আফিম গিলে টলছেন এবং অন্য সবাইকে টলিয়ে দিচ্ছেন।

তা না হলে, সুষমা স্বরাজের মত একজন রাজনীতিবিদের তো উচিৎ ছিলো, তার দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতায় উদ্বিগ্ন থাকা, লজ্জিত হওয়া। তিনি নিজের দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পারছেন না, অথচ বাংলাদেশ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন!

তিনি টুইটারে এক ব্যক্তির উত্তরে লিখেছিলেন যে, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলাকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার জন্য এবং বাংলাদেশে হিন্দুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে ভারত যে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, সেই বার্তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যও রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন।

সুষমা স্বরাজের টুইট সম্পর্কে আরো জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

বেশ তো, তিনিও ধর্মের আফিম গিলে তার রাষ্ট্রদূতকে এই নির্দেশনা দিয়েছেন, ভালো কথা। সেটি কি এভাবে টুইটারে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সবাইকে শুনিয়ে করতে হবে? এত বড় মাপের একজন রাজনীতিবিদ, এইটুকু না বুঝলে চলবে কেন, তার এই ঢাক-ঢোলের শব্দ তো বাংলাদেশে থাকা মৌলবাদী দলগুলোর কানেও যায়।

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা হলে তাঁর যেমন গায়ে লাগে, তেমনি ভারতেও তো দুদিন পরপরই মুসলমানদের ওপর হামলা হয়, আর সেগুলো গায়ে মেখে বাংলাদেশের উগ্র-মৌলবাদীরাও যদি হিন্দুদের ওপর হামলা চালায়? তবে কে তার দায় নেবে? কারণ, উস্কানি তো এভাবেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাচ্ছে!

সুষমা স্বরাজ এই ধর্ম নামক আফিমটা আড়ালে যেয়ে গিললেও পারতেন, তাতে করে শেখ হাসিনার কাছেও তার উদ্বেগটা যেমন পৌঁছে যেত, তেমনি মৌলবাদীরাও তার টুইট দেখে কোনো উস্কানি পেত না।

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে বাংলাদেশে বিক্ষোভ।Image copyrightGETTY IMAGES
Image captionমিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে বাংলাদেশে বিক্ষোভ।

বলতে দ্বিধা নেই, রাজনীতিবিদরাই তাদের অনুসারীদের ধর্মান্ধতা আর সাম্প্রদায়িকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথাই ধরুন, তার নির্বাচনী প্রচারণার একটি বড় অংশই ছিল মুসলিম বিদ্বেষ। তিনি সুর তুলেছেন, আর সেদেশের জনগণ বাজনা বাজিয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদিও তো একই পথের পথিক ছিলেন, তার নির্বাচনী প্রচারণাতেও বাংলাদেশি বিদ্বেষের আড়ালে মুসলিম বিদ্বেষের গন্ধ পাওয়া যেত।

এমনকি শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী অং সান সু চিকে দেখুন, তার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা চলছে। ব্যক্তি অং সান সু চির কথাবার্তায়ও বিভিন্ন সময় ফুটে উঠেছে মুসলিম বিদ্বেষ। আরো জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে, বাংলাদেশেও একই চিত্র দেখা যাবে। এই রাজনীতিবিদরাই তো ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম বানিয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিলেন। বিস্তারিত জানতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।

সেই সাম্প্রদায়িকতা থামেনি একটুও। এখনও কিছুদিন পরপরই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা হয়, সাঁওতালদের ঘর পুড়িয়ে দিয়ে তাদের বুকে গুলি চালানো হয়।

                                                                                                                                                     

                                                                                         


__._,_.___

Posted by: "Jamal G. Khan" <M.JamalGhaus@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___