Banner Advertiser

Tuesday, January 17, 2017

[mukto-mona] Please Read



শুভ নববর্ষ। এ বছরে দু'টি ভাল সংবাদ হচ্ছে: নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের বিচার সম্পন্ন হয়েছে এবং নাসিরনগরে রসরাজ দাসের জামিন হয়েছে। তবে খারাপ সংবাদ হচ্ছে, পাঠ্যবইয়ে প্রতিবিপ্লব ঘটে গেছে এবং সম্ভবত: এ থেকে মুক্তি নেই, যেমন মুক্তি হয়নি ৫ম/৮ম সংশোধনী থেকে। এসব নিয়ে ২/৩ টি প্রকাশিত লেখা পড়ার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ। 



'হাজার টাকার বাগান খাইলো পাঁচসিকের ছাগলে--'
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় তেতাল্লিশটি গ্রামে মাতব্বররা ছাগল পালনে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। কারণ ছাগল ফসল খায়। ওই এলাকায় মহিলাদের ছাগল পালন করে মোটামুটি ভালোই রোজগার হচ্ছিলো, এখন তারা কি করবেন কেজানে; তবে ছাগলের ফসল খাওয়া নিয়ে আমরা ছোটকালে একটি জারিগান শুনতাম, সেটি হলো: "মরি হায় রে হায় দু:খে পরান যায়, হাজার টাকার বাগান খাইলো পাঁচসিকের ছাগলে--"। সেটা এনালগ যুগ; কিন্তু এখনো মনে হয় শৈলকুপার ছাগল ও মাতব্বররা এনালগই রয়ে গেছেন। এরা জানেন না যে, এ যুগের ডিজিটাল ছাগল আম গাছে উঠে জুস্ খায়? বিশ্বাস না হলে নুতন বছরের পাঠ্যবই দেখুন। বাঙ্গালীর স্মৃতিশক্তির অপবাদ আছে, তাই আমরা ভুলে গেলেও কমরেড শিক্ষামন্ত্রী আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, কিছু ছাগল গাছে উঠতে পারে, এদের বলা হয়, 'গেছো ছাগল'। এইসাথে একটি কবিতাও মনে পড়ে, সেটি হলো: 'কপোল ভিজিয়া গেল নয়নের জলে---'। ছাত্র প্রশ্ন করে, স্যার, চোখের জলে কি করে কপাল ভিজে? বিজ্ঞ শিক্ষক উত্তর দিতে দেরি করেন না, বলেন, 'ঠ্যাং দু'টি বাধা ছিলো তমালের ডালে'। তমাল গাছ সম্ভবত: বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিজ্ঞ শিক্ষক ও মন্ত্রী এখনো প্রচুর আছে!  

কেন জানিনা শিক্ষামন্ত্রীর মত আমাদের পুলিশ কর্মকর্তারাও গুলশানে জঙ্গি হামলায় আটক এক জঙ্গীকে বারবার 'রাজীব গান্ধী' বলে পরিচিত করে দিচ্ছেন? ভাবলাম, রাজীব গান্ধী তো কবে মরে ভুত হয়ে গেছে, তিনি কি আবার যীশুখৃষ্টের মত পুনরুত্থান করলেন নাকি? আসলে তা নয়, ঐ ব্যক্তির আরো অনেগুলো নাম আছে, যেমন জাহাঙ্গীর আলম, টাইগার, শান্ত, সুভাষ, আদিল, জাহিদ ইত্যাদি। আমাদের পুলিশ ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে খুব ভালোবাসেন, তাই ধৃত জঙ্গীকে বারবার ঐ নামেই ডাকতে পছন্দ করেন। দুষ্ট লোকেরা অযথাই এরমধ্যে বিদ্বেষ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। পুলিশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সরকারি দল বা এমনকি সরকারের 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা' বাস্তবায়নের সদিচ্ছার প্রতি কারো সন্দেহের কোন অবকাশ থাকা উচিত নয়? স্বয়ং আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সদ্য বলে দিয়েছেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। এরপর আর কোন কথা থাকেনা। পাঠ্যবইয়ের ছাগল গাছে উঠলে বা ওড়না বাতাসে উড়ে গেলেও উন্নয়নের জোয়ার থামবেনা। 

এরমধ্যে দেখলাম, পাবনায় এক আওয়ামী লীগের নেতা চুরাশি বছরে আবার বিয়ে করেছেন এবং এনিয়ে কিছু পাবলিক অযথাই হৈচৈ করছে। একেই বলে ক্ষমতার জোশ। দল ক্ষমতায়, বিয়ে একটা কেন চারটে করলেই কি? ভদ্রলোকের নামটা জানিনা, তবে তাকে সাধুবাদ জানাই, কারণ এরশাদ তার কাছে ফেল। আর শুধু এরশাদ কেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটের আব্দুস সামাদ আজাদও। যাকগে, উত্তর আফ্রিকার সাড়ে তিন কোটি মানুষের দেশ 'কিংডম অফ মরক্কো'-র কথা আমরা সবাই জানি। দেশটি'র রাষ্ট্রভাষা আরবী এবং নাগরিকরা মুসলমান। অতি সম্প্রতি এই দেশটি মরক্কোয় বোরখা তৈরী ও বিক্রী নিষিদ্ধ করেছে। এ ঘটনাটি বাংলাদেশ নুতন বছরে স্কুলের পাঠ্যবইকে সাম্প্রদায়িকতার উপাদানে পরিণত করার সমসাময়িক। দু'টি ঘটনা, একটি অপরটি'র বিপরীতমুখী। অথচ বাংলাদেশ মরক্কো থেকে সবদিক থেকেই অনেক এগিয়ে। তাহলে আমরা কি পেছাচ্ছি? বাংলাদেশ ও তুরস্ক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশ হলেও সাংস্কৃতিকভাবে যথেষ্ট এগিয়ে ছিলো। অধুনা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ এবং কামাল আতাতুর্কের তুরস্ক, দু'টো দেশই মুসলিম বলয়ে ফিরে যাচ্ছে। 

আগে আমাদের দেশে দাবি ছিলো, মাদ্রাসাগুলোকে আধুনিকীকরণের মধ্যে দিয়ে নিয়মিত স্কুলে রূপান্তরিত করার, এখন হচ্ছে উল্টোটা, রেগুলার স্কুলগুলোকে মাদ্রাসায় পরিণত করা হচ্ছে? আগে মুক্তিযোদ্ধারা হুমকি দিতো, এখন রাজাকারের হুমকিতে মুক্তিযোদ্ধা ঘরে ঢুকে গেছে। স্বাধীন বাংলাদেশে এখন হেফাজতি এবং ওলামা পন্থীদের জয়জয়কার। ওদের সতের দফা পূরণ হয়েছে। হয়তো ওরা এবার তেতুল হুজুরকে চাঁদে দেখতে পাবে? চরমোহনার পীর হুমকি দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বড়বড় ভুলগুলো আঠা দিয়ে ঢাকার পরামর্শ দিয়েছেন। একথা শুনে একজন বললেন, ভুল নাহয় আঠা দিয়ে ঢাকলেন, কিন্তু খোলস থেকে আসল চেহারাটা যে বেরিয়ে গেলো, তা ঢাকবেন কি দিয়ে? দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আমাদের বামরা, সেটা মতিয়া চৌধুরী থেকে নাহিদ, বা ইনু এসময়ে বারবার প্রমান করছেন যে, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে মান-মর্যাদা বিসর্জন দিতে তারা সদা-প্রস্তুত। হয়তো তারা জানেন, নৌকায় উঠলেও নৌকা তাদের জায়গা নয়, তাই 'নগদ যা পাও হাত পেতে নাও' নীতি মেনেই তারা চলছেন। তবে নাহিদের কাজ শেষ, শিগগিরই তিনি দিলীপ বড়ুয়া হবেন। 

পাঠ্যবই নিয়ে সামাজিক মিডিয়া তোলপাড় হলেও দেশে কিন্তু তেমন জোরালো প্রতিবাদ নেই। ছাত্র ইউনিয়ন বা বুদ্ধিজীবীরা ব্যাতিত যেন আর কারো কোন দায় নেই? সবাই কেমন চুপচাপ। এরশাদের রাষ্ট্রধর্ম বিল পাশের সময়টাতেও একই দৃশ্য দেখা গিয়েছিলো। আগে গণজাগরণ মঞ্চ টুকটাক প্রতিবাদ করতো। এখন নুতন জামাই শ্বশুরের বিরুদ্ধে দাঁড়ান কি করে? আমাদের দেশে বা এমনকি ভারতের আগেকার ম্যুভিতে প্রায়শ: দেখা যেত যে, গরিবের ভালো ছেলেটির সাথে বড়লোকের কন্যার বিয়ে এবং তারপর ম্যুভি শেষ। বাস্তবেও কি সরকারের সাথে গনজাগরনের বিয়ের মধ্য দিয়েই শাহবাগ আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তি ঘটছে? আমাদের দেশে যেমন সরকারের পাল্টা কোন বিরোধী দল নেই, বা এমনকি 'গৃহপালিত বিরোধী দল' পর্যন্ত নেই, তেমনি দেখা যাচ্ছে, মাঠে-ময়দানেও সরকারের কোন প্রতিপক্ষ নেই। জামাত ঘরছাড়া, বিএনপি দিশেহারা, বামরা কুলহারা, জাতি খেই-হারা এবং এরমধ্যে অজানা এক গন্তব্যের পথে চলছে দেশ! উন্নয়নের জোয়ারে দেশ ভেসে যাচ্ছে, ভাটির টানে কোথায় গিয়ে নৌকা ভিড়বে কেজানে? তবে গণতন্ত্রের জন্যে এটা অশুভ। 

সদ্য বঙ্গবন্ধু'র স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে এক ভাষণে শুনলাম, বঙ্গবন্ধু বলছেন, 'আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান'। দেশে এখন সবাই আগে মুসলমান, তারপর বাঙ্গালী। আর মানুষ? আবার বঙ্গবন্ধু' তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, শর্ষীনার পীর, শিবপুরের পীর ---সকলেই আমার বিরুদ্ধে নেমে পড়লেন, ফতোয়া দিতে কার্পণ্য করলেন না--দুই-চারজন বাদে প্রায় সকল মৌলভী সাহেবরা নেমে পড়লেন, --পীর সাহেবদের সমর্থকরা টাকার লোভে ---ঝাঁপিয়ে পড়লেন আমাকে নির্বাচনে পরাজিত করার জন্যে---'। বঙ্গবন্ধু'র সাথে যারা বেইমানি করেছেন তারা সময়ের ব্যবধানে সবাই ফেরেশতা হয়ে গেছেন নাকি? ফকা চৌধুরী বা সাঈদীর ছেলে কি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ হয়ে গেছে? নিজামী বা কাদের মোল্লার বউ? এহেন শর্ষিনার পীর স্বাধীনতার পুরুস্কার পেয়েছেন। চরমোহনার পীরের ছেলের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাদের মামলা আছে। স্বাধীনতা যুদ্ধকালে এই পীরের একটি আবাসিক মাদ্রাসায় কয়েকশ' মহিলা আশ্রয় নেয়। পীরসাহেব এদের 'গনিমতের মাল' ঘোষণা দিয়ে যা করেছেন, সেটা ইতিহাস। এহেন পীরের ছেলেরা যখন হুমকি দেন বা আমাদের নেতারা তাদের মুরিদ হ'ন তখন দেশ কোনদিকে যাচ্ছে তা বুঝতে কি রকেট সাইন্টিষ্ট হবার দরকার পড়ে? 

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গেও দেখলাম মোল্লাদের বাড়-বাড়ন্ত। কলকাতার টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম নুরুর রহমান বরকতী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কেউ ন্যাড়া করতে সক্ষম হলে পঁচিশ লক্ষ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। সব দেশের মোল্লারাই কি এক? বাংলাদেশেও মোল্লারা সুপ্রিমকোর্টের সামনে দাঁড়িপাল্লা নিয়ে নারীমুর্ক্তির বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছাড়ছেন। ন্যায় বিচারের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা হাতে এই নারীমুর্ক্তি বিশ্বনন্দিত। মোল্লাদের দাবি মেনে এই নারীমুর্ক্তিকে হিজাব পরিয়ে দিলেই তো ল্যাটা চুকে যায়? কারণ নারীমুর্ক্তির হাতে তো জামাতের দাঁড়িপাল্লা আছেই!  তবে ফেসবুকে একটি টিপ্পনি দেখে না-হেসে পারলাম না, এতে লেখা: 'রামদেব বাবা মাল কামায়, দাঁড়ি কামায় না'। মিলিয়ে দেখলাম, আমাদের শফি হুজুরও সরকারের কাছ থেকে মাল কামায়, কিন্তু দাঁড়ি কামায় না? দেশে এখন সবাই মাল কামায়, হুজুরের আর কি দোষ?  পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তনে বড় হুজুর দেখলাম সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। যদিও, এবারের পাঠ্যবইয়ে যা হয়েছে, সেটা সামাজিক ভূমিকম্প এবং এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তরুণ শিক্ষার্থীরা এবং দেশ। শিক্ষামন্ত্রী এর দায় এড়াতে পারেন না।  

শেষ করবো, একটি ভালো সংবাদ দিয়ে। সরকার জিয়া নগরের নাম পাল্টে আগের নাম 'ইন্দুরকানী' রেখেছেন। জিয়ার কবর স্থানান্তরের কথা শোনা যাচ্ছে বহুদিন, ওটা শিগগিরই করা দরকার। দুদুভাই অবশ্য দু:খ পেয়েছেন এবং বলেছেন, ওনারা ক্ষমতায় এলে আগের নাম বহাল রাখবেন এবং ঢাকার নাম ;জিয়া সিটি' করবেন। গোপালগঞ্জ পরিবর্তন করে মুজিবনগর রাখার পরামর্শও তিনি দিয়েছেন। ওনারা ক্ষমতায় আসলে অনেক কিছুই করবেন তা সবাই জানে, তবে আগে ক্ষমতায় আসুন, তারপর দেখা যাবে। প্রশ্ন হলো, সরকার জিয়ার সবকিছুই পাল্টে ফেলছেন, কিন্তু এই খলনায়ক প্রবর্তিত পঞ্চম সংশোধনীর একাংশ বা 'বিসমিল্লাহ' সংবিধানের ললাটে ঠিকই রেখে দিচ্ছেন? আবার সুপ্রিমকোর্টের রায়ে বাতিল হওয়া অষ্টম সংশোধনীর একাংশ 'রাষ্ট্রধর্ম' রেখে দিয়ে সরকার কোন চেতনা প্রতিষ্ঠিত করছেন? সংবিধানে পাকিস্তানী চেতনা জিইয়ে রেখে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা আদৌ সম্ভব? সম্ভব না। এটা জগাখিচুড়ি। এই জগাখিচুড়ির ঢামাঢোলে দেশ আজ একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র, মুক্তচিন্তা অনুপস্থিত এবং ধর্মান্ধতা ক্ষণে ক্ষণে দেশকে গ্রাস করছে। 

শিতাংশু গুহ, কলাম লেখক।
১৫ জানুয়ারি ২০১৭। নিউইয়র্ক।



http://www.bhorerkagoj.net/print-edition/2017/01/12/126143.php

রসরাজ-এর জামিন হওয়া উচিত  


http://www.bhorerkagoj.net/print-edition/2017/01/06/125066.php

পূজার হাসিতে উদ্ভাসিত হোক দেশ'



__._,_.___

Posted by: Sitangshu Guha <guhasb@gmail.com>


****************************************************
Mukto Mona plans for a Grand Darwin Day Celebration: 
Call For Articles:

http://mukto-mona.com/wordpress/?p=68

http://mukto-mona.com/banga_blog/?p=585

****************************************************

VISIT MUKTO-MONA WEB-SITE : http://www.mukto-mona.com/

****************************************************

"I disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it".
               -Beatrice Hall [pseudonym: S.G. Tallentyre], 190





__,_._,___