Banner Advertiser

Friday, February 1, 2008

[ALOCHONA] What terrific damage CTG has caused to bangladesh????????

কি ভয়াবহ সর্বনাশ হয়ে গেছে তা টের পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১০:৩৭

                       
 


আমীর খসরু


কয়েক মাস আগে 'প্রথম আলো'র এক জরিপ হয়েছিল বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা এবং এ সরকারকে কতদিন ক্ষমতায় তারা দেখতে চান সে সম্পর্কে। ওই জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, ৬৫ শতাংশের বেশি মানুষ এ সরকার এক বছর ক্ষমতায় থাকুক তা প্রত্যাশা করেছিলেন।
সে বিবেচনায় এই সরকার এখন শতকরা ৬৫ ভাগ মানুষের আকাক্সক্ষার বিপরীতে অবস্থান করছে

সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সংস্কার, রোডম্যাপসহ নানা শব্দের সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটে। আমরাও তখন আশান্বিত হয়েছিলাম যে, এ শব্দগুলোর বাস্তবায়ন ঘটবে। কিন্তু বাস্তবে এর বিপরীত চিত্র এখন দেখা যাচ্ছে। সরকার যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছিল, তা কতটা সফল হয়েছে তা আমরা বুঝতে পারছি। আমরা বুঝতে পারছি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান এখন একটা বাকসর্বস্ব বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বরং বাছবিচারহীন ও পরিকল্পনাহীন দুর্নীতি দমনের অভিযান অর্থনীতিতে মন্থরতা, গতিহীনতা এবং অস্থিরতার সৃষ্টি করেছে।
ভয়ভীতি দেখানো আর দুর্নীতি দমন এক করে ফেলেছিলেন হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র ব্যক্তি।

অবস্থাটা তখন ছিল এমন এবং যার কিছুটা এখনও আছেÑ তাতে তারা ধরেই নিয়েছিলেন, উপদেষ্টা পরিষদের ১১ জন এবং দু'-একটি প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন মানুষ বাদে দেশবাসী সবাই দুর্নীতিবাজ। এভাবে পুরো দেশকে প্রতিপক্ষ ভেবে দুর্নীতি দমনের অভিযান যে সফল হয় না তা এখন প্রমাণিত হয়েছে। আর দুর্নীতি দমনের জন্য বেশি কথার চেয়ে পরিকল্পনা, সুষ্ঠু তদন্ত এগুলো যে বেশি প্রয়োজন সে বিষয়টিও তাদের মাথায় ছিল কিংবা এখনও আছে বলে মনে হয় না। তালিকা প্রকাশের ভয়ে কিংবা আয়কর বিভাগের এক ব্যক্তির তর্জন-গর্জন পুরো দেশকেই পরিণত করেছিল এক আতঙ্কের দেশ এবং সে আতঙ্ক এখনও আছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য নানা কাগুজে প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা হলেও বাস্তবে কোন সুফল পাওয়া যায়নি। অর্থনীতি এখন স্থবির এবং নেতিবাচক দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

এ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ২১ শতাংশ। যা পুরো এক যুগের মধ্যে সর্বনিম্ন।

গ্রামের খোঁজ-খবর যারা রাখেন, তারা এটা খুব ভালভাবে জানেন যে, মানুষ এখন কর্মহীন বসে আছেÑ কোন কাজ নেই। এর ওপর দ্রব্যমূল্যের যে আকাশছোঁয়া গতি তা সরকার কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। মূল্যস্ফীতির এমন লাগামহীন গতি গত ২০ বছরেও ছিল কিনা সন্দেহ। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারি নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বললে মনে হয় সবকিছু ঠিকঠাক আছেÑ যা দোষ শুধু আন্তর্জাতিক বাজারের। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং এর ব্যবস্থাপনার যে বিষয়গুলো আছে সে বিষয়ে সরকারের কোন ধারণা আছে বলে মনে হয় না। আমদানি-রপ্তানির কি অবস্থা তা সবাই জানেন। খাদ্যশস্যের মজুত কতটা তার কোন স্পষ্ট হিসাব সরকারিভাবে দেয়া হচ্ছে না। দেয়া হচ্ছে না সম্ভবত পরিস্থিতি খুব সঙ্গিন এ কারণেই। গত বছর পর পর দু'দফা বন্যার পরে বিশেষজ্ঞরা যখন বলছিলেন যে, খাদ্যশস্যের ঘাটতি এ বন্যায়ই ১০ লাখ টনের বেশি হবেÑ তখন সরকারের কেউ কেউ বলেছেন, কোন সমস্যা হবে না। আবার ঘূর্ণিঝড়ের পরে যখন আবার বলা হলো, এই ঘূর্ণিঝড়েই খাদ্যঘাটতি হবে আরও ১০ লাখ টন তখন স্বয়ং অর্থ উপদেষ্টা বলেছিলেন, কোন সমস্যা হবে না। আমার কাছে বিষয়টি মনে হয়েছে যে, অনভিজ্ঞতা চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে যা হয় সরকার খাদ্যশস্যের ব্যাপারে সে বিষয়টি দেখিয়েছে। অর্থনীতির অন্যান্য দিক যদি আমরা ধরি তাহলে দেখা যাবে বিনিয়োগ কমেছে, ব্যবসায়ীদের উদ্যম কমেছে, কমেছে মানুষের আস্থা।

কি ভয়াবহ সর্বনাশ হয়ে গেছে তা টের পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।

কারণ সেনাবাহিনী কিংবা বিডিআর দিয়ে বাজার ব্যবস্থার স্থায়ী সমাধান হয় না। আর দেয়ালে টাঙিয়ে দিলেই বাজারদর ধপ করে পড়ে যাবে না। অতীতেও বাজার ব্যবস্থাপনার যে বিষয়গুলো ছিল তা এখন পুরোটাই ভেঙে গেছে।

এ তো গেল অর্থনীতির বিষয়, রাজনীতির কথা যদি আমরা ধরি তাহলে দেখা যায় রোডম্যাপ, সংস্কারÑ এগুলো এখন বাকসর্বস্ব বুলিতে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক দলের সংস্কারের বদলে দল ভাঙন কিংবা দলের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি ছাড়া কি হয়েছে? পুরো রাজনৈতিক যে কাঠামো তাকে লণ্ডভণ্ড করে দেয়া হয়েছে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণ খুব সহজে সম্ভব হবে না। রাজনৈতিক দলের সংস্কার এখন আর কোন উচ্চারিত শব্দ নয়, রোডম্যাপের রোডের এখন বেহাল দশা। বলা হচ্ছে, গাড়ি এখন সঠিক পথে উঠেছে। কিন্তু আসলে গাড়িও নেই, রোডও নেইÑ এমন একটা পরিস্থিতি আমজনতা দেখতে পাচ্ছে।

১১ই জানুয়ারি এ সরকার ক্ষমতায় আসার সময় জনগণের সমর্থন এবং প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু এ এক বছরের মাথায় এসে এ জনপ্রিয়তা দ্রুত কমে এখন একেবারে তলানিতে চলে এসেছে। বরং বিপদ যেটা এখন দেখা যাচ্ছে, সরকার আসলে যারা চালান তাদের মধ্যে সমন্বয় কতটা আছে তা এখন হয়ে পড়েছে প্রশ্নসাপেক্ষ বিষয়। একটি বিষয় খুব ভাল বোঝা যায় যে, 'ক্ষমতার কেন্দ্র' (ঈবহঃৎব ড়ভ চড়বিৎ) এখন অনেকগুলো হয়ে গেছে। এ কারণে বর্তমানে যে চরম একটা সঙ্কটকালীন অবস্থা চলছে তার উত্তরণ খুব সহজ সরলভাবে, এক গতিতে চলতে পারছে না।

প্রধান উপদেষ্টা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের কথা বলেছেন। কিন্তু কবে কখন তা তিনি বলেননি। আর তার পক্ষে বলাও সম্ভব নয়। কারণ আসলে যারা সরকার চালান, তাদের সিদ্ধান্ত ছাড়া এ জরুরি অবস্থা কবে উঠবে তা কেউ বলতে পারবে না।
আর এ বিষয়টি মাথায় রাখা প্রয়োজন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আসে অন্য স্থান থেকে। আর এ কারণে সমস্যাগুলোর কি সমাধান হবে তা সুস্পষ্টভাবে কেউ বলতে পারছেন না।

এ জন্য একেক সময় একেক কথা শোনা যায়। এখন শোনা যাচ্ছে, সংলাপের কথা। এ সংলাপ কবে কখন কিভাবে হবে তার কোন সুস্পষ্ট ইঙ্গিতও নেই। কিন্তু আমরা অবিরাম বলে যাচ্ছি সংলাপের কথা। এ সংলাপ কেন হবে? আমার মনে হয়, যারা ক্ষমতা চালান তারা চান সংলাপকে একটা সমঝোতার মাধ্যম হিসেবেÑ কিভাবে এ পরিস্থিতি থেকে নির্বিঘেœ বেরিয়ে যাওয়া যায় সে জন্য। এটা যে তাদের সবার ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত আমার কিন্তু তা মনে হয় না। এখন দু'টো বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছেÑ এক. কোনভাবে একটা নির্বাচন করে পরিস্থিতি থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে নেয়া; দ্বিতীয়ত. একটি বিকল্প ব্যবস্থা বের করা। এই বিকল্প ব্যবস্থার একটি হতে পারে জাতীয় সরকার। এই জাতীয় সরকার নিয়ে এখন নানা দৌড়-ঝাঁপ হচ্ছে, রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কারও কারও বৈঠক হচ্ছে, আর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য থেকেও কোন কোন নেতা এর পক্ষে কথা বলছেন। কোন কোন নেতা দলের মধ্যে একটা সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থানও নিতে চাইছেন এই জাতীয় সরকারের পক্ষে। যতদূর জানা যাচ্ছে, তাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং অতীতে রাজনীতি করতে এসেছিলেন এবং ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছেন এমন লোকদের দিয়ে এ সরকারটি গঠন করা হবে। কিন্তু এই জাতীয় সরকার সত্যিকারের জাতীয় সরকার হবে না, বরং ক্ষমতার যারা মূল শক্তি তাদের রাজনৈতিক লেবাস পরিয়ে ক্ষমতার স্থায়ীকরণের একটা নতুন কৌশল হবে মাত্র। আর এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ এতদিনের ব্যর্থতা বেসামরিক রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের কাঁধে চাপিয়ে দেয়া।

অনাবাসী বাংলাদেশী (এনআরবি) সম্মেলনে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠন এবং সেনাবাহিনীর ভবিষ্যৎ ভূমিকা কি হবে সে প্রশ্নে সুস্পষ্ট কিছু বক্তব্য রেখেছিলেন। আমার ধারণা এ বিষয়টি তারা এখনও সক্রিয়ভাবেই বিবেচনা করছেন। জাতীয় সরকারের সঙ্গে সঙ্গে এ প্রশ্নটিও সামনে চলে আসবেÑ এমনটা ধরে নেয়া যায়। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল এখনও গঠন করা যায়, কিন্তু তার একটা রাজনৈতিক আবরণ প্রয়োজন। এক্ষেত্রে জাতীয় সরকার একটা বড় আবরণ হতে পারে, এমনটা তারা মনে করছেন।

আমার মনে হয়, জাতীয় সরকারের দাবি যত জোরালো হবে ততই নির্বাচন নিয়ে আমাদের মনে সন্দেহ প্রবল হবে। কারণ এই জাতীয় সরকার হচ্ছে নির্বাচনের বিকল্প পন্থা। ২০০৮-এর মধ্যে নির্বাচন হবেই এমন ঘোষণায়ও মানুষের মনের অবিশ্বাস দূর হচ্ছে না। সংলাপ, জাতীয় সরকার এসব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা প্রমাণ করে ওই অবিশ্বাস এবং সন্দেহ অমূলক কিছু ছিল না কিংবা এখনও নয়। আরেকটি বিষয় বলা প্রয়োজন, মাইনাস টু অর্থাৎ দুই নেত্রীকে বাদ দেয়ার বিষয়টি কিন্তু এখনও বাদ যায়নি। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হচ্ছেÑ দুই নেত্রী এখনও প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রধান নেত্রী হিসেবেই রয়ে গেছেন। এ অবস্থায় যতই জাতীয় সরকারসহ যে কোন ধরনের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই নেয়া হোক না কেন তাতে যদি এই দুই নেত্রী সমর্থন না দেন তাহলে কোনই লাভ হবে না। কাজেই জাতীয় সরকার বর্তমান সঙ্কট এবং সমস্যা সমাধানের কোন বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে না। এতে বরং সঙ্কট আরও বাড়বে।


একজন উপদেষ্টা বলেই দিয়েছেন, সংলাপে নির্বাচনের পরে কি হবে সে বিষয়েও আলোচনা হতে হবে। এখানে তার ইঙ্গিত সুস্পষ্ট। তারা একটা সেইফ একজিট বা নির্বিঘেœ ক্ষমতা থেকে কিভাবে চলে যাবেন তার একটি সুস্পষ্ট নিশ্চয়তা চান। কিন্তু এই নিশ্চয়তা কেউ দিয়ে ভঙ্গ করবেন না, এমনটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। [/sb


তাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এতদিন ক্ষমতা চালিয়েও তারা একটা সুস্পষ্ট অবস্থান সৃষ্টি করতে পারেননি। ক্ষমতা গ্রহণের স্বল্প সময়ের দুর্নীতি দমনের একটি কাঠামো সৃষ্টি করে, নির্বাচন দিয়ে চলে গেলে 'সংবিধানের অভিভাবক' (তুরস্কে যাকে 'গার্ডিয়ান অব দ্য কনস্টিটিউটশন' বলা হয়) হওয়ার সম্ভাবনাটা ছিল উজ্জ্বল। এখন আর ওই সুযোগ নেই বললেই চলে।
 
 

  • ২ টি মন্তব্য
  • ৫৫বার পঠিত
আপনি রেটিং দিতে পারবেন না
পোস্টটি ২ জনের ভাল লেগেছে, ১ জনের ভাল লাগেনি